চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে নাদিম ইসলাম রোহান নামে এক সমন্বয়কে পিটিয়ে আহত করেছে প্রতিপক্ষের সমন্বয়কেরা। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর আহত নাদিম ইসলাম রোহানকে প্রথমে আশুগঞ্জ পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। আহত রোহান আশুগঞ্জ চরচারতলা মৃত ওমর আলীর ছেলে। এ ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে সমন্বয়কদের একটিপক্ষ আশুগঞ্জ গোল চত্বরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অন্তত ১০ মিনিট অবরোধ করে রাখেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আগামী ৩০ জানুয়ারি আশুগঞ্জ শ্রম ও কল্যাণ কেন্দ্রে তারুণ্যের মেলায় আসার কথা রয়েছে, জাতিয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ মাহাদি ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মূখ্য সংগঠক মোঃ আতাউল্লাহর। কিন্তু মিসেল নামে সোহাগপুর এলাকার এক সমন্বয়ক তাদেরকে আশুগঞ্জ তারুণ্যের মেলায় আসার বিষয় নিয়ে ফেইসবুক গ্রুপ ম্যাসেঞ্জারে প্রতিহতের ঘোষণা দেন। এ নিয়ে নাদিম ইসলাম রোহান প্রতিবাদ করলে সোহাগপুর গ্রামের মিসেলের নেতৃত্বে একদল যুবক রোহানকে পিটিয়ে আহত করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে রাতে এক পক্ষের সমন্বয়ক ও সদস্যরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ গোল চত্বর এলাকা অবরোধ করেন।
জাতীয় নাগরিক কমিটির আশুগঞ্জ প্রতিনিধি জয়ন্তি বিশ্বাস সাংবাদিকদরে জানান, হামলাকারী মিসেল ছাত্রলীগকর্মী সে সমন্বয়ক নয়। আমরা তাকে গ্রেফতার করার জন্যে ২৪ ঘন্টায় আল্টিমেটাম দিয়েছি। তাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার না করা হলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: বিল্লাল মিয়া জানান, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে যুবলীগ নেতার পায়ের রগ কেটে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি সাচ্চু মিয়াকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে র্যাব-৯ সদস্যরা।
গতকাল ৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের পৌরসভা ৫নং ওয়ার্ড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
আসামিকে জেলার আশুগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
গ্রেফতার সাচ্চু মিয়া আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর এলাকার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবু সামার ছেলে।
আজ ১ অক্টোবর রবিবার দুপুরে র্যাব-৯ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১৪ আগস্ট রাত সোয়া ৯টার দিকে তালশহর নতুন বাজার জিল্লুর রহমান ব্রিজে যুবলীগ নেতা জনি মিয়ার (৩৫) ওপর হামলা চালায় সাচ্চু মিয়া ও তার সহযোগীরা। এসময় তারা জনি মিয়ার দুই পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে কুপিয়ে আহত করে। এসময় জনির চাচাত ভাই আউয়াল মিয়ার ওপর হামলা চালায় তারা। পরবর্তীতে স্থানীয়রা দুজনকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে ঢাকায় নিতে বলেন। পথে জনি মিয়ার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা মোকসেন মিয়া বাদী হয়ে আশুগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও তার ছেলে উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যানসহ ১৫ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়।
মামলার পর র্যাব-৯ চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে।
পরবর্তীতে শনিবার বিকেলে প্রধান আসামি সাচ্চু মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরআগে এ মামলায় আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন তালশহর গ্রামের আজহার শেখের ছেলে আজিম শেখ (৩৫) ও একই গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে আব্দুল্লাহ (৩২)।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাহিদ আহমেদ বলেন, পায়ের রগ কেটে হত্যার মামলার প্রধান আসামিকে র্যাব গ্রেফতার করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। আমরা তাকে আদালতে পাঠিয়েছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
লাল গালিচায় হেটে প্রিয় শিক্ষাঙ্গন ছেড়ে আসলেন আশুগঞ্জ ফিরোজ মিয়া সরকারি কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো: এমদাদুল হক। এসময় দু’পাশে দাড়িয়ে ফুল ছিটিয়ে দেন কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী। বাদ্যযন্ত্রে তখন বিদায়ের সুর। রোভার স্কাউট দলের এ আয়োজন ছাড়াও দিনভর কলেজে নানান আয়োজনে গুনী এই শিক্ষককে বিদায় জানানো হয়।
এমদাদুল হক কলেজটিতে তার ৩০ বছরের শিক্ষকতা জীবনের ইতি টেনেছেন বৃহস্পতিবার। প্রিয় শিক্ষকের অবসর জনিত ছুটির এই দিনে অশ্রুসজল ছিলেন সবাই। এদিন সকাল ১১ টায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের উদ্যােগে বিভাগীয় প্রধানকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় সংবর্ধনা জানানো হয় প্রথম। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মিলনায়তনে হওয়া এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাউসার পারভীন। বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় প্রধান শামসুল আলম আরিফ ও মোশাররফ হোসেন, প্রভাষক সানজিদা বেগম ও ফাতেমা বেগম।
সঞ্চালনা করেন চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ফয়সাল মিয়া। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন প্রভাষক মাহমুদুল হাসান। এরপর বেলা সাড়ে ১২ টায় কলেজের উদ্যোগে উত্তরা ভবনে বিদায় সংবর্ধনা দেয়া হয় এমদাদুল হককে। বিভাগীয় প্রধান খন্দকার মামুনুর রশিদের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাউসার পারভীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. সাফিউদ্দিন আহমেদ, সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মজিবুর রহমান জিন্নাহ, সাবেক উপাধ্যক্ষ আহমদ উল্লাহ খন্দকার,সাবেক বিভাগীয় প্রধান শামসুল আলম শাহিন, সাবেক শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক শরীফুল ইসলাম মিলন। বক্তব্য রাখেন প্রভাষক আবু হানিফ, প্রভাষক রাশেদ মোশাররফ।
সঞ্চালনায় ছিলেন প্রভাষক আশরাফুল আজিজ। কোরআন তেলাওয়াত করেন প্রভাষক আবু নাঈম। গীতা পাঠ করেন প্রভাষক সমরেন্দ্র পাল। এসব অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন এমদাদুল হক ছিলেন একজন আদর্শ শিক্ষক। কলেজের শিক্ষার সুনাম ছড়িয়ে দেয়ার অগ্রণী নায়ক। শিক্ষার্থীদের তার নীতি আদর্শ অনুসরন করে চলার আহবান জানানো হয়। প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানে ফুলেল শুভেচ্ছা এবং উপহার প্রদান করা হয় তাকে। এমদাদুল হক ফিরোজ মিয়া কলেজের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে শিক্ষকতায় নিয়োজিত হন। সুনামের সাথে দীর্ঘ শিক্ষা জীবন অতিবাহিত করেন। তিনি বিভাগীয় প্রধান ছাড়াও শেষ কর্ম দিবস পর্যন্ত উপাধ্যক্ষের চলতি দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও কলেজের রসায়ন বিষয়ের প্রভাষক ননী গোপাল দাসকে এদিন বিদায় সংবর্ধনা জানানো হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
নৌযান শ্রমিকদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে ২৭ ডিসেম্বর শুক্রবার অচল ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে নদী বন্দরের কার্যক্রম। চাঁদপুরে জাহাজে সাত শ্রমিক হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন এবং জড়িতদের বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ ২৮ ডিসেম্বর শনিবারও চলছে অনির্দিষ্টকালের এ ধর্মঘট।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের এই ধর্মঘটের ডাক দেয়। অনির্দিষ্টকালের এই ধর্মঘটের কারণে জেলার আশুগঞ্জ নদীবন্দরে আটকা পড়েছে মালবাহী কার্গো জাহাজ। বন্ধ রয়েছে পণ্য ওঠা-নামা। এতে বন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বেকার হয়ে পড়েছেন বন্দরের শত শত শ্রমিক। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বন্দরের ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। বন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে বন্দরে সার, রড, সিমেন্ট নিয়ে আসা কার্গো জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। বন্দরের কয়েক হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। এতে বিপুল অঙ্কের লোকসান গুনতে হবে।
আশুগঞ্জ নদীবন্দরে প্রতিদিন সার, রড, সিমেন্ট, ধান, চাল, পাথর, কয়লাসহ কোটি কোটি টাকার বিভিন্ন পণ্য নিয়ে অর্ধশত জাহাজ নোঙর করে। এসব পণ্য আশুগঞ্জ থেকে নদীপথে ঢাকা, চট্টগ্রাম, মোংলা, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, নরসিংদী, কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জসহ সারা দেশে যায়।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ বাহার জানান, চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে হরিনা ঘাটের কাছে মাঝেরচর এলাকায় এম. ভি. আল-বাখেরা জাহাজে সন্ত্রাসী কায়দায় নির্মম হত্যাকাণ্ডে মাস্টারসহ সাতজন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন, হত্যাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেফতার, মৃত শ্রমিকদের প্রত্যেকের পরিবারকে সরকারিভাবে ২০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা, সকল নৌপথে সন্ত্রাস চাঁদাবাজি ডাকাতি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এখনো সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এজন্য বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে তৈল-গ্যাস, বালুসহ সকল প্রকার পণ্যবাহী নৌযানের শ্রমিকরা লাগাতার কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এ ফলাফলে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কলারছড়ি প্রতীকের মোঃ মঈন উদ্দিন। তিনি ৮৪ হাজার ৬৭ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাড: মো: জিয়াউল হক মৃধা ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ৫৫ হাজার ৪৩১ভোট। তৃণমূল বিএনপি মাইনুল হাসান সোনালী আঁশ প্রতীকে ৪৩১৮ ভোট, জাতীয় পার্টি মো: রেজাউল ইসলাম ভূঞা লাঙ্গল প্রতীকে ৩৪০৮ ভোট।
৭ জানুয়ারি রবিবার রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান তার কার্যালয়ে এ ফলাফল ঘোষণা করেন। নির্বাচনে মোট ৩৮ দশমিক ৮১ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এর আগে সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোট শেষ হয় বিকেল ৪টায়। এরপর শুরু হয় গণনা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ দশ হাজার ৭১ জন। আসনটির ১৩২ ভোট কেন্দ্রের ৮৫৯টি ভোটকক্ষে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হয়।