চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাটিতে জেলা বিএনপির সম্মেলন করতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে একাংশের নেতাকর্মীরা। ত্যাগী ও নির্যাতিত এবং বিএনপির মূল ধারার নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে সম্মেলন করতে দেয়া হবে না। ২৬ জানুয়ারি রোববার রাতে সম্মেলনের প্রতিবাদে আয়োজিত মশাল মিছিল থেকে এ হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। মশাল মিছিলটি শহরের শিমরাইলকান্দি এলাকা থেকে বের হয়ে কালিবাড়ি মোড়, টিএরোড, কোর্ট রোড, কুমারশীল মোড়সহ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে লোকনাথ টেংকের পাড় মাঠ প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।
এসময় জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম সারোয়ারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এবিএম মমিনুল হক, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ আলী আজম, জেলা যুবদলের সভাপতি শামীম মোল্লা।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সাবেক কোষাধক্ষ্য জসীম উদ্দিন রিপন, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, বিএনপি নেতা মোঃ নিয়ামুল হক, জেলা যুবদলের সহ সভাপতি রাশেদ কবির আকন্দ প্রমুখ। এসময় বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছরের আন্দেলন সংগ্রামে যারা কারা নির্যাতিত হয়ে পরিবার পরিজন হারিয়েছে, শত ত্যাগ তিতিক্ষা শিকার করেছে তাদের বাদ দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি প্রহসনের সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। মূলত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বিএনপির লেবাসধারী কবির আহমেদ ভূইয়ার কুট কৌশলে একটি মহল এ সম্মেলনের আয়োজন করতে চাচ্ছে। বক্তারা বলেন, বিএনপির মূলধারাকে পাশ কাটিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাটিতে সম্মেলন করতে দেয়া হবে না। সম্মেলন স্থগিত না করা পর্যন্ত তাদের এই আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে সম্মেলন প্রতিহত করতে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।
মশাল মিছিলে জেলা বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা ছাড়াও জেলা যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবকদলসহ বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর ও ১৮ জানুয়ারি জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একপক্ষ সম্মেলন সকলের প্রস্তুতি নিলেও অপর পক্ষের বিরোধিতার জন্য দুটি তারিখই পরিবর্তন করে কেন্দ্রীয় বিএনপি।
চলারপথে রিপোর্ট :
কয়েক মাস ধরে সরকারি জায়গাসহ ফসলি জমি কেটে ট্রাক্টরে করে মাটি নিয়ে কাঠবাড়িয়ার পুকুর ভরাট করেছে প্রভাবশালী এই চক্র।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবাসন প্রকল্প করে প্লট আকারে জায়গা বিক্রি করতে শত বছরের পুরোনো পুকুর ভরাট করছেন যুবলীগ নেতা। কয়েক মাস ধরে সরকারি জায়গাসহ ফসলি জমি কেটে ট্রাক্টরে করে মাটি নিয়ে সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের গৌতমপাড়ার কাঠবাড়িয়ার পুকুর ভরাট করেছে প্রভাবশালী এই চক্র। পুকুরের প্রায় ৯০ শতাংশ ভরাট করে ফেললেও স্থানীয় প্রশাসন নীরব রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মাহিন খন্দকার শত বছরের পুরোনো ওই পুকুর ভরাট করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলার সরকারি দলের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা পরোক্ষভাবে যুবলীগ নেতাকে মদদ দিয়ে যাচ্ছেন। সরকারি জায়গা থেকে বালু উত্তোলন এবং সরকারি কর্মকর্তাকে প্রাণনাশের হুমকির ঘটনায় যুবলীগ নেতা মাহিনকে আসামি করে সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন তালশহর পূর্ব ইউনিয়ন (ভূমি) সহকারী কর্মকর্তা পংকজ কুমার বর্ধন।
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ অনুযায়ী জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গা ভরাট বা এর শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না।
তবে ইউএনও মোহাম্মদ সেলিম শেখ বলেন, ‘পুকুর ভরাট করার কোনো সুযোগ নেই। বিশেষ কোনো প্রয়োজনে পুকুর ভরাট করতে হলে অনুমতি নিতে হবে। সেখানে আগেও একবার অভিযান চালানো হয়েছিল। নির্বাচন ব্যবস্থার জন্য খোঁজ নেওয়ার সুযোগ হয়নি। আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পুকুর থেকে সম্পূর্ণ মাটি উত্তোলন করে নিলামে বিক্রি করা হবে। এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার ঘাটুরা গৌতমপাড়ার কাঠবাড়িয়া এলাকায় শত বছরের পুরোনো একটি পুকুর রয়েছে। একসময় পুকুরটির মালিক ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। পরে পুকুরটির মালিক হন শহরের পৈরতলা এলাকার জাহাঙ্গীর কবির। তিনি সম্পর্কে এরশাদ সরকারের সময়ের সাবেক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবিরের আপন ভাই। জাহাঙ্গীর কবির থেকে আবাসন প্রকল্প করে প্লট আকারে জায়গা বিক্রি করতে পুকুরটি কেনেন মাহিন খন্দকার ও স্থানীয় কাজী রানু মিয়া। তিন–চার মাস ধরে তাঁরা মাটি দিয়ে পুকুরটির ভরাটকাজ শুরু করেন। প্রথমে তাঁরা খননযন্ত্র দিয়ে পুকুর ভরাট করেন। পরে তাঁরা পুকুর থেকে প্রায় এক থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে গৌতমপাড়ার আশ্রয়ণ প্রকল্পের সামনের পশ্চিম দিকের ফসলি জমি খননযন্ত্র দিয়ে কেটে মাটি উত্তোলন শুরু করেন। সেই মাটি ট্রাক্টরে ভরে ফসলি জমির ওপর দিয়ে নিয়ে পুকুরে ফেলে ভরাট করছেন। পাশাপাশি অষ্টগ্রাম মৌজার ১ নম্বর খতিয়ানের ৩৫ শতক সরকারি নাল জায়গা থেকে অবৈধভাবে খননযন্ত্রের সাহায্যে মাটি কেটে ভরাটের জন্য কাঠবাড়িয়ার পুকুরে ফেলেছেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে যুবলীগ নেতা মাহিনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা হয়।
সদর উপজেলার অষ্টগ্রাম মৌজার ১ নম্বর বিএস খতিয়ানের ‘ক’ তফসিলভুক্ত একটি ইজারা মামলার বিএস ৭৩৪৯ দাগে ১১ শতক, ৭৩৫০ দাগে ১২ শতক, ৭৩৫১ দাগে ১২ শতক মোট ৩৫ শতক ভূমি থেকে অবৈধভাবে খননযন্ত্রের মাধ্যমে মাটি কেটে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন মাহিন খন্দকার। তিনি সরকারি সম্পত্তি ব্যাপকভাবে আত্মসাৎ করেছেন। ১৫ জানুয়ারি সকাল ১০টায় বাধা দিলে মাহিন ও তাঁর লোকজন অকথ্য গালিগালাজ করেন। ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেন মাহিন।
প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০ অনুযায়ী, কোনো পুকুর, জলাশয়, নদী, খাল ইত্যাদি ভরাট করা বেআইনি। আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী, প্রাকৃতিক জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন বা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার, ভাড়া, ইজারা বা হস্তান্তর বেআইনি। কোনো ব্যক্তি এ বিধান লঙ্ঘন করলে আইনের ৮ ও ১২ ধারা অনুযায়ী, ৫ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক বাসিন্দা বলেন, পুকুরটি মাহিন ও রানু মিয়ার কাছে বিক্রি করে দেন জাহাঙ্গীর। আবাসন প্রকল্পের জন্য তাঁরা পুকুরটি মাটি দিয়ে ভরাট করছেন। পরে ভরাটকৃত জায়গা প্লট আকারে বেশি দামে তাঁরা বিক্রি করবেন।
অভিযুক্ত সুহিলপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মাহিন বলেন, ‘আমি এর সঙ্গে জড়িত নই। এটি আমার পুকুর না।’ স্থানীয় বাসিন্দারা সবাই আপনার নাম বলছেন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুকুরটি আমার ছিল। এক বছর আগে বিক্রি করে দিয়েছি।’
চলারপথে রিপোর্ট :
বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থানীয় এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার প্রায় দুই শতাধিক কবি সাহিত্যিকদের আনন্দঘন অংশহগ্রহনের মাধ্যমে ২৯ জুন শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দিনব্যাপী বর্ষামঙ্গল কবিতা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। অদ্বৈতমল্লবর্মণ স্মৃতি গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই মহাযজ্ঞের আয়োজন করেন। কয়েকটি পর্বে বিভক্ত এই কবিতা উৎসবে ছিলো উদ্বোধনী আলোচনা। কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ, আবৃত্তি গান ও সম্মাননা প্রদান।
সকাল ১০টায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র মিসেস নায়ার কবির। এসময় তিনি এই ধরণের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাহিত্যের সুনাম সারাদেশে ছড়িয়ে দেবার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কবি ও গীতিকার মো. আ. কুদদূস এর ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং তাঁর সকল ভালো কাজে পাশে থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সূচনা পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক সচিব কবি আসাদ মান্নান। এ পর্বে সভাপতিত্ব করেন অনুষ্ঠানের আহবায়ক সাবেক যুগ্ম সচিব কবি শাহ মোহাম্মদ সানাউল হক। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন কবি জয়দুল হোসেন ও কবি মো. আ. কুদদূস। মো. মনির হোসেন এর সঞ্চালনায় এ পর্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন, অনুষ্ঠানের আহবায়ক কমিটির সমস্য সচিব কবি আব্দুর রহিম, উপাধ্যক্ষ একেএম শিবলী।
এর আগে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন তিতাস আবৃত্তি সংগঠণ ও আনন্দলোক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এসময় অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রকাশিত স্যুভেনির মোড়ক উন্মোচন ও বিতরণ করা হয়। তাছাড়াও কবি ও গীতিকার মো. আ. কুদদূস এর সদ্য প্রকাশিত ছিন্নপক্ষ এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এরপর আবৃত্তি পরিবেশন করেন তিতান আবৃত্তি সংগঠণের নাওমী।
কয়েকটি পর্বে বিভক্ত অনুষ্ঠানমালায় কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ, আলোচনা, আবৃত্তি আর গানের মাধ্যমে পুরো অনুষ্ঠান উপভোগ করেন আমন্ত্রিতরা। দ্বিতীয় পর্বে সভাপতিত্ব করেন কবি জয়দুল হোসেন। এই সময় সভাকবির বক্তব্য প্রদান করেন ফরিদ আহমেদ দুলাল, আলোচনা করেন কামরুল হাসান, মজিদ মাহমুদ, মামুন মোস্তফা প্রমুখ। উপস্থাপনা করেন কবি হেলাল উদ্দিন হৃদয়। এসময় আবৃত্তি পরিবেশনা করেন- ভাষা সাহিত্য ও অনুশীলন কেন্দ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া। এসময় সঙ্গীত পরিবেশন করেন কবি আসাদ মান্নানের সহধর্মিনী নাজমা মান্নান।
তৃতীয় পর্বে সভাপতিত্ব করেন কবি জয়দুল হোসেন। এই সময় সভাকবির বক্তব্য প্রদান করেন সম্পাদক-অধ্যাপক ও কবি মাহমুদ কামাল, আলোচনা করেন রানা কুমার সিংহ, কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয়ের ডিন ডক্টর জিএম মনিরুজ্জামান। এ পর্বে উপস্থাপনা করেন কবি মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ। এসময় আবৃত্তি পরিবেশনা করেন- তিতাস সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সভাপতি বরেণ্য আবৃত্তিশিল্পী রোকেয়া দস্তগীর।
অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত প্রায় দুই শতাধিক কবি স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন।
বর্ষামঙ্গল কবিতা উৎসবে বক্তারা বলেন, বর্ষা ঋতু বাংলার অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে। কাজেই বর্ষা ও পানিকে সুরক্ষ করতে হবে। তারা বলেন, এদেশের কৃষিনির্ভর অর্থনীতি বর্ষার পানির উপর নির্ভরশীল। এজন্য আমাদের জলবায়ূ নিয়ে কথা বলতে হবে। প্রকৃতির সব ঋতুর যেনো সুরক্ষা হয়-তা নিয়ে ভাবতে হবে। তারা আরও বলেন, সাহিত্যে বর্ষা নিজস্ব মহিমায় বিস্তৃত। সাহিত্যের প্রাচূর্য বৃদ্ধি পাক। তরুণ প্রজন্মকে সাহিত্যের দিকে টেনে আনার প্রতি গুরুত্বারোপ করে তারা বলেন, তরুণরা এখন কবিতা লিখছেনা, এটা ভাববার বিষয়। তরুণদের কবিতা পড়ায় উৎসাহ দিতে হবে।
বর্ষামঙ্গল কবিতা উৎসব শিরোনামের প্রশংসা করে তারা বলেন, কবিতার জন্য অবশ্যই বিষয় থাকতে হবে। একটা সময় বর্ষা ছিলো আমাদের জন্য আশির্বাদ। বাংলা সাহিত্যে এমন কোনো কবি নেই যিনি বর্ষা নিয়ে কবিতা লিখেন নাই। অথচ আজ প্রকৃতি যেমন বদলে যাচ্ছে তেমনি আমাদের কবিরাও বর্ষা নিয়ে তেমন কবিতা লিখছে না।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে আগত কবিদের মাঝে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
সারাদিনব্যাপী অনুষ্ঠানে ওয়েলকাম ড্রিংকস, চা, মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন ছিলো। পুরো অনুষ্ঠানটির সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কবি ও গীতিকার এবং কবিতাবিষয়ক গবেষক মো. আ. কুদদূস ও সাবেক যুগ্ম সচিব কবি সানাউল হক।
দিনব্যাপী এই বর্ষামঙ্গল কবিতা উৎসবে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেটের ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর কয়েকজন কবি অংশগ্রহন করেন এবং তাদের মাতৃভাষায় রচিত কবিতা পাঠ করেন। অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কবিদের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম, সিলেট, পাবনা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, কুমিল্লা, নোয়াখালি ও ঢাকার কবিরা অংশগ্রহন করেন।
অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শফিকুল্লাহ, অধ্যাপক মানবর্দ্ধন পাল, অধ্যাপক এসআরএম ওসমান গণি সজিব উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ ২ অক্টােবর সকাল ৯ টার দিকে শহরের বাগান বাড়িস্থ বাসভবনে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
আল-মামুন সরকার দলের তৃণমূল পর্যায় থেকে উঠে আসা একজন রাজনীতিবিদ। ১৯৬৯ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদের ভিপি ছিলেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষকলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি সমাজসেবায় রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
আল-মামুন সরকার ১৯৮৯ সালে ভারতের দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এশীয় যুব সম্মেলনে বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। তাছাড়া তিনি ২০১৫ সালে জাতিসংঘের ৭০তম সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগদান করেন।
২০১৭ সালে তিনি একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে অর্থমন্ত্রণালয়ের এনবিআর প্রদত্ত সম্মানজনক ‘ট্যাক্স কার্ড’ লাভ করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
গুজব না ছড়িয়ে বাংলাদেশ থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির শিক্ষা নিতে ভারতের প্রতি আহবান জানিয়েছেন হেফাজত ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান।
আজ ১৩ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের বজাবে তিনি একথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় আছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ ধরণের কোনো হামলা হতে দেওয়া হবে না। আমাদের নেতৃবৃন্দ জেলার সর্বত্র এই নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
এ সময় মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, সংখ্যালঘু বলতে কিছু নেই। আমরা সবাই দেশের নাগরিক এবং সমঅধিকার ভোগ করি। আল্লাহ রসুল বলেছেন, অমুসলিমের ওপর যারা জুলুম করে, তাদের অধিকারে কেউ কম দেয়, সাধ্যের বাইরে কোন কাজ তাদের ওপর চাপিয়ে দেয়, অন্যায় ভাবে তাদের কাছ থেকে কিছু নিয়ে নেয় কিয়ামতের দিন আমি নবী আল্লাহর কাছে বিচার প্রার্থী হবো। এই হচ্ছে সংখ্যালঘুর বিষয়ে নবীর নির্দেশনা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাটিতে কোন সংখ্যালঘু আক্রান্ত হতে পারবে না, করতে দেওয়া হবে না।
এ সময় মাওলানা সাজিদুর রহমান আরো বলেন, বিগত সময়ে হেফাজত ইসলামসহ আলেমদের উপর অনেক অত্যাচার-জুলুম হয়েছে। ২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার এক ছাত্রকে মাদরাসার ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০২১ সালে আমাদের ১৬জনকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের আলেমদের বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন থানায় ৬৩টি মামলা করে তাদেরকে হয়রানি করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও ২০১৬ সালে আমাদের ৬জন ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ওই সময় আমরা যে মামলাগুলো করেছিলাম বৈরী পরিবেশের কারনে মামলাগুলো সঠিক ভাবে পরিচালনা করতে পারিনি। ইনশাল্লাহ ওই মামলাগুলো আমরা চালাব।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগষ্ট স্বৈরাচারি সরকারের পতন হয়েছে। এখন সবাই মিলে দেশটাকে গড়ে তুলতে হবে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হেফাজত ইসলামের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সভাপতি মাওলানা মুফতি মোবার উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মুফতি বোরহান উদ্দিন কাসেমি, সহ-সভাপতি মাওলানা ক্বারী বোরহান উদ্দিন, মাওলানা বোরহান উদ্দিন আল মতিন, প্রচার সম্পাদক মুফতি জাকারিয়া খান প্রমুখ।