চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে দুই সহস্রাধিক চক্ষু রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা, ঔষধ ও চশমা বিতরণ করেছে বাংলাদেশ লায়ন্স ফাউন্ডেশন। গতকাল ১ ফেব্রুয়ারি শনিবার দিনব্যাপী উপজেলার রওশন আরা জলিল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বাংলাদেশ লায়ন্স ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ও আশুগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় বিনামুল্যে এই চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়।
চক্ষু শিবিরে ঢাকা লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালের সাতজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত একটানা রোগীদের চিকিৎসা দেন। এসময় তারা বিনামুল্যে চিকিৎসা, ঔষধ বিতরণ, চশমা বিতরণ ও ৩’শতাধীক রোগীকে ঢাকায় নিয়ে ফ্রি ছানী অপারেশন করার জন্য মনোনিত করা হয়। লায়ন মোহাম্মদ ফারুক (কালাম) এর তত্ত্বাবধানে এই চক্ষু শিবির পরিচিালিত হয়েছে।
চক্ষু শিবিরে অতিথি হিসাবে লায়ন্স এর কাউন্সিল চেয়ারপারসন লায়ন ফারহানা বক্স, আশুগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি সেলিম পারভেজ, পিসিসি লায়ন এসকে কামরুল, পিডিজি হাবিবুর রহমান নান্নু, পিডিজি শাহিনা রহমান, ১ম ভিডিজি লায়ন সারওয়ার জাহান জামিল, ২য় ভিডিজি লায়ন ড. মাযহারুল আনোয়ার শাজাহান, ভিডিজি কেন্ডিডেট লায়ন মীর শফিকুল ইসলাম কনক, পাষ্ট প্রেসিডেন্ট লিও মহিউদ্দিন মাহী উপস্থিত ছিলেন। লায়ন মোহাম্মদ ফারুক হোসেন (কালাম) বলেন, শত বছর যাবত লায়ন্স ফাউন্ডেশন বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্নদেশে এই চক্ষুশিবির পরিচালনা করে যাচ্ছে।
আশুগঞ্জে ২ হাজারের বেশী চক্ষু রোগীকে চিকিৎসা সেবা, ঔষদ ও চশমা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি যাদের চোখে ছানি পড়েছে তাদের মধ্যে থেকে ৩ শতাধিক লোকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের পর্যায়ক্রমে ঢাকায় নিয়ে বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন করা হবে। এই ব্যয়ভার লায়ন্স ফাউন্ডেশন বহন করবে।
আশুগঞ্জ প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ বাসায় ফিরেছেন। ২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ৫টার দিকে তিনি বাসায় ফেরেন।
২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে সাংবাদিকরা তার বাসায় যান। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘প্রথম থেকে আমার কাছে নির্বাচন অগোছালো মনে হয়েছিল। নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমি বেশি চাপ নিতে পারছিলাম না। বেশি চাপ অনুভব করাতে আমি নির্বাচন থেকে সরে গেছি। চাপ নিয়ে আমি থাকতে পারব না। এ জন্য আমি নির্বাচন ছাইড়া সইরা গেছি।’
আবু আসিফ বলেন, ‘চাপ নিতে পারছিলাম না। আমি মানসিকভাবে ভেঙে গিয়েছিলাম। নির্বাচন শেষ হয়েছে, আমি চলে এসেছি।’ কোথায় ছিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ছিলাম আমার একটি জায়গায়।’ সরে দাঁড়ানোর জন্য কেউ কোনো চাপ বা ভয়ভীতি দেখিয়েছে কিনা, জানতে চাইলে স্ত্রী মেহেরুননিসা মেহেরীন তাকে থামিয়ে দেন।
সন্ধ্যায় আবু আসিফ নিজ কক্ষে বিছানায় কম্বল জড়িয়ে শুয়েছিলেন। কিছুটা অসুস্থ দেখাচ্ছিল তাকে। সেই সময় স্ত্রী মেহেরুননিসা, শ্যালক সায়ায়েত সুমন, দারোয়ান ইছু মিয়াসহ অনেকেই তার কক্ষে ছিলেন।
আসিফের স্ত্রী মেহেরুননিসা মেহেরীন বলেন, ‘আমি আশুগঞ্জের বাসায় ছিলাম। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টার দিকে জানতে পারি, স্বামী ঢাকার বসুন্ধরার বাসায় ফিরেছেন। আমাকে ফোন দেওয়ার পর ঢাকায় চলে যাই। স্বামীকে নিয়ে বিকাল ৫টায় আশুগঞ্জে চলে আসি। তিনি অসুস্থ বোধ করছেন।’
মেহেরুননিসা বলেন, নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন আগে থেকে তিনি চাপ অনুভব করা শুরু করেন। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। তাই চাপমুক্ত থাকতে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এক কাপড়ে গেছেন, এক কাপড়েই ফিরেছেন। এতটাই হতাশায় ভুগছিলেন তিনি, নিজের মুঠোফোনটিও বাসায় রেখে চলে যান।
নিরাপত্তাহীনতার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি ভয় পাচ্ছিলেন। নিজে নিজে ভয় পাচ্ছিলেন। অন্য কোনো কারণ নেই। কোনো সংস্থা বা কেউ ভয় দেখিয়েছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, মানসিক চাপ থেকে ভয় পাচ্ছিলেন। নিখোঁজের দু’দিন আগেও তিনি কাজে বের হননি। মানসিক চাপে থাকলে মানুষ যেমন অসুস্থ থাকে, তেমনই এখন তার অবস্থা।
এর আগে দুপুরে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন মেহেরুননিসার বরাত দিয়ে আসিফের সন্ধান পাওয়ার কথা জানান। তিনি বলেছিলেন, আসিফের স্ত্রী জানিয়েছেন – তিনি রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় তাদের বাসায় আছেন। সন্ধ্যার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৌঁছাবেন।
আবু আসিফ আহমেদ আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচনে বেসরকারিভাবে জয়ী বিএনপির দলছুট নেতা আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তিনি।
এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার পর থেকে আবু আসিফের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। মুঠোফোন বাসায় চার্জারে রেখে বের হন তিনি। এর পর থেকে তার সঙ্গে পরিবারের লোকজন যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। নিখোঁজের ৯২ ঘণ্টা পর তার সন্ধানে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলমের কাছে লিখিত আবেদন করেছিলেন তার স্ত্রী মেহেরুননিসা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচন ৫ নভেম্বর রবিবার। নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আজ ৪ নভেম্বর শনিবার দুপুর ১টা থেকে শুরু হয়েছে নির্বাচনী সরাঞ্জাম বিতরণ।
এসময় সরাইল উপজেলার ৮৪টি কেন্দ্র ও আশুগঞ্জ উপজেলার ৪৮টি কেন্দ্র মিলিয়ে মোট ১৩২টি ভোটকেন্দ্রের জন্য ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্স, সিলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়। দুই উপজেলার উপজেলা পরিষদ থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারদের কাছে এসব সরাঞ্জাম বুঝিয়ে দেন দুই উপজেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে তারা কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এসব সরাঞ্জাম ভোটকেন্দ্রের উদ্দেশ্যে নিয়ে যান।
জেলা রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, সুষ্ঠু ও স্বতস্ফূর্তভাবে উপ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তায় র্যাব, পুলিশ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ পর্যাপ্ত পরিমাণ আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ সেপ্টেম্বর এ আসনের সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভুইয়া মৃত্যুবরণ করায় উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১০ হাজার ৭২ জন।
বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ ও কুফল বিষয়ে সচেতনতা
স্টাফ রিপোর্টার:
আশুগঞ্জে বাল্যবিয়ের কারণ, কুফল ও বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের করণীয় বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ বেতারের ‘তারুণ্যের কণ্ঠের’ আয়োজনে ও উপজেলা প্রশাসনের সহয়োগিতায় গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদ সম্মেলনকক্ষে এ কর্মসুচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অর্ধ শতাধিক ছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবক, সাংবাদিক ও উপজেলার কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরবিন্দ বিশ^াস।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে ও তারুণ্যের কন্ঠের কর্মকর্তা সজীব দত্তের উপস্থপানায় বাল্য বিয়ের কারণ, কুফল ও প্রতিকার বিষয়ে মতবিনিময় করে শিক্ষার্থী, অভিভাবকগণ। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাল্য বলেন, বিয়ে প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হয়ে মিলিতভাবে প্রতিরোধ করার আহবান জানান।
উল্লেখ্য, মতবিনিময় বিষয়ক এ অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ বেতারে প্রচার করা হবে।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে মাইশা আফরিন সুবর্ণা (১৪) নামের এক কিশোরী বিয়ের তিনমাসের মাথায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রোববার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে কিশোরীর মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মাইশা আফরিন সুবর্ণা উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের বীরপাশা গ্রামের নাসির উদ্দিনের মেয়ে। নাসির উদ্দিন বলেন, তার কিশোরী মেয়ে সুবর্ণা অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পার্শ্ববর্তী বিন্নিঘাট এলাকার ইদ্রিস মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (২২) তার মেয়েকে পছন্দ করতেন। পরে পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য তার মেয়ে সুবর্ণাকে অত্যাচার করতো মনির। বিয়ের সময় মনিরকে ১ লাখ টাকা যৌতুক দেওয়ার পর সে আরও যৌতুককের টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে তার মেয়েকে তালাক দিবে একথা বলেন মনির। সে কথা শুনে সুবর্ণা শনিবার বিকেলে শোবার ঘরের বাশের তীরের সাথে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। তিনি আরও বলেন, মনিরের চাপের কারণে তার মেয়ে সুবর্ণাকে বিয়ে দিতে হয়। মনিরের কারনে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এ ব্যাপারে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এক কিশোরী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মরদেহ উদ্ধারের পর জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছি। থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জ উপজেলায় ২ হাজার ৪০০ কেজি (৮০ বস্তা) ভারতীয় জিরাসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল ২১ অক্টোবর সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার সোনারামপুর রাজমনি হোটেলের সামনে থেকে কাভার্ড ভ্যান বোঝাই জিরাসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সুনামগঞ্জের বিশম্ভরপুর উপজেলার বোনপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে আবু সিদ্দিক, জামালপুরের বকশিগঞ্জ উপজেলার লিলাশিখা (নতুনপাড়া) গ্রামের মো. আলমের ছেলে মো. বাহাদুর, রাজশাহীর শাহমখদুম উপজেলার নবা নতুনপাড়া গ্রামের আব্দুল গাফ্ফারের ছেলে মো. সাগর।
সোমবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আশুগঞ্জ উপজেলার সোনারামপুর রাজমনি হোটেলের সামনে থেকে একটি কাভার্ড ভ্যানসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। কাভার্ডভ্যান তল্লাশি করে ৮০ বস্তা ভারতীয় জিরা উদ্ধার করা হয়। জিরার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা কোনো সঠিক তথ্য দিতে পারেনি।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে জিরা আনা হয়েছে বিধায় তাদের কাছ থেকে ৮০ বস্তা জিরা (প্রতি বস্তায় ৩০ কেজি) ও জিরা বহনকারী কাভার্ড ভ্যান জব্দ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।