চলারপথে রিপোর্ট :
যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে পবিত্র শবে বরাত। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইবাদত বন্দেগি আর দোয়ার মধ্য দিয়ে রাতটি যাপন করবেন। মাগরিবের নামাজের পর থেকেই মসজিদে হাজির হতে থাকেন মুসল্লিরা। সারারাত নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, জিকিরসহ অন্যান্য ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মহান আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের চেষ্টায় ব্যস্ত থাকবেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। অতীতের পাপ ও অন্যায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা এবং ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করবেন রাতের শেষ প্রহরে।
মসজিদ ছাড়াও বাড়িতে থেকে নফল নামাজ আদায় ও কোরআন তিলাওয়াত করছেন অনেকে। অনেকে আবার কবরস্থানে গিয়ে স্বজনদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করবেন।
এদিকে, শবে বরাত উপলক্ষে পাড়া-মহল্লাগুলোতে উৎসবের অমেজ তৈরি হয়েছে। মাংস, হালুয়া, রুটিসহ নানান রকমের খাবার তৈরি হয়েছে বাড়িতে বাড়িতে। আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও গরিব-দুঃখীর মধ্যে এসব খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। অনেক জায়গায় ওয়াজ মাহফিলের আয়োজনও দেখা যাচ্ছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ফরিদপুরের বোয়ালমারীর মধুমতি নদীতে অভিযান চালিয়ে ৩ লাখ টাকা মূল্যের ১০০০ মিটারের অধিক চায়না দুয়ারী এবং অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে। আজ ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকালে উপজেলার হরিহরনগর বাওর সংলগ্ন মধুমতির নদীর তীরে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
উপজেলা মৎস্য বিভাগের সহযোগিতায় এ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোশারেফ হোসাইন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোশারেফ হোসাইন জানান, উপজেলার হরিহর নগর বাওর এলাকায় চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে মধুমতি নদী থেকে অবৈধ জাল দিয়ে ছোট ছোট রেনু পোনা ধ্বংস করে আসছিল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে ৩ লাখ টাকা মূল্যের ১০০০ মিটারের অধিক চায়না দুয়ারী এবং অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তা ধ্বংস করা হয়েছে।
মৎস্য সম্পদ রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোশারেফ হোসাইন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে ছিলেন উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মোঃ জসিম উদ্দিন।
অনলাইন ডেস্ক :
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি থেকে আরো অনেকেই চলে আসবে, একটু অপেক্ষা করলে দেখতে পাওয়া যাবে।
তিনি আজ ২০ সেপ্টেম্বর দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে বিএনপির সিনিয়র নেতা শমসের মবিন চৌধুরী এবং তৈমুর আলম খন্দকারের তৃণমূল বিএনপিতে যোগদান নিয়ে প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু শমসের মবিন চৌধুরী এবং তৈমুর আলম খন্দকার নয় আরো অনেকেই বিএনপি থেকে চলে আসবে, একটু অপেক্ষা করুন। কারণ যে দল নেতাদের সম্মান দিতে জানে না, আর যেই দল কাউকে নির্বাচন করতে দেয় না, সেই দল তো সবাই করবে না।’
বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলন আর নির্বাচনে আসা না আসা নিয়ে এক ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে -এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি জনমনে বিভ্রান্তিই সৃষ্টি করতে চায়। গতবার ২০১৮ সালের নির্বাচনে তারা যেমন বলেছিলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না, কিন্তু শেষমেষ অংশ নিয়েছিলো। এবারও তাদের এখনকার বক্তব্য আর এক মাস আগের বক্তব্যের মধ্যে কিছুটা তফাৎ আছে। যারা একটু অনুসন্ধিৎসু তারা এটা বুঝতে পারেন।’
‘গতবার যেমন গাধা জল ঘোলা করে খেয়েছিলো, এবার কি করে সেটা দেখার বিষয়’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘একটি গণমুখী রাজনৈতিক দল যদি ক্রমাগতভাবে নির্বাচন বর্জন করে তাহলে তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিএনপি নির্বাচনে জেতার গ্যারান্টি চায়। কাউকে নির্বাচনে জেতার গ্যারান্টি তো সরকার, নির্বাচন কমিশন কেউ দিতে পারবে না। আমরা চাই তারা নির্বাচনে আসুক। আর মির্জা আব্বাস সাহেবরা গত সাড়ে ১৪ বছর সরকার পতনের কথা বলছেন, এটা নতুন কিছু নয়।’
‘সরকার বিএনপির ওপর নির্যাতন করছে’ বলে বিএনপি মহাসচিবের অভিযোগ খন্ডন করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে কি করেছিলো সেটা পেছনে ফিরে তাকালেই বুঝতে পারবেন, দেখতে পাবেন। মির্জা ফখরুল সাহেবরা অগ্নিবোমা হামলার হুকুমদাতা। সেগুলোর অডিও রেকর্ড, তথ্য প্রমাণ সরকারের কাছে আছে। এরপরও তারা সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন। এতেই প্রমাণিত হয় সরকার মোটেই নির্যাতন চালাচ্ছে না। বরং তারা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টা চালানো থেকে শুরু করে এমপি আহসান উল্লাহ মাস্টার, শাহ এস এম কিবরিয়াসহ আমাদের এমপিদেরকে হত্যা করা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে লাঠিপেটা করা, জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ মতিয়া চৌধুরীকে রাস্তায় টানাহেঁচড়া করাসহ আমাদের নেতাকর্মীদের যে পরিমাণ অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছে তা বর্ণনাতীত।’
‘সদ্য সমাপ্ত কানাডা সফরের সংক্ষিপ্ত বর্ণনায় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী জানান, ‘টরন্টো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ১৩ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু বায়োপিক ‘মুজিব-একটি জাতির রূপকার’ সিনেমার প্রথম প্রদর্শনী হয়েছে। ২ ঘন্টা ৫৮ মিনিটের বিরতিহীন এ প্রদর্শনীতে একজন দর্শকও আসন থেকে নড়েননি। সেখানে বাংলাদেশী, ভারতীয় ছাড়াও বিভিন্ন দেশের দর্শকরা ছিলো, প্রত্যেকেই সিনেমাটির প্রশংসা করেছেন। সিনেমাটি প্রকৃতপক্ষে আমাদের ইতিহাসের দলিল হয়ে থাকবে। আগামী মাসে আমরা বায়োপিকটি বাংলাদেশে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করছি।
তথ্যমন্ত্রী আরো জানান, ‘কানাডা সফরে সে দেশের উচ্চকক্ষ সিনেটের মানবাধিকার কমিটির চেয়ার সিনেটর সালমা আতাউল্লাজানের সাথে বৈঠক হয়েছে এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি একইসাথে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এছাড়া কানাডা পার্লামেন্টের ইমিগ্রেশন এবং নাগরিকত্ব বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ার সালমা জাহিদ এমপি’র সাথে বৈঠকে বাংলাদেশীদের সহজতর ইমিগ্রেশন এবং আমাদের শিক্ষার্থীদের সহজতর ভিসার জন্য তাকে অনুরোধ জানিয়েছি।’
এ সময় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে ফেরার পথে আমি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন আমাদের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপিকে দেখতে গিয়েছিলাম। তিনি খুবই ভালো আছেন। দেশে নানা আলোচনা হয়েছে কিন্তু আমি দেখেছি তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা খুবই ভালো।’ সূত্র : বাসস
অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাংবাদিকরা মোটরসাইকেল ব্যবহার করতে পারবেন। আজ ২৪ ডিসেম্বর রবিবার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়কে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পাঠানো এক নির্দেশনায় বিষয়টি উঠে এসেছে।
ভোটে কোন কোন যানবাহন চলাচল কখন বন্ধ থাকবে, সে নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য জেলা প্রশাসক অথবা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বা অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে ক্ষমতা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবের কাছে নির্দেশনাটি পাঠিয়েছেন ইসির উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তফসিল অনুসারে, ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিবসের পূর্ববর্তী মধ্যরাত অর্থাৎ ৬ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা থেকে ৭ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত ট্যাক্সি ক্যাব, পিক আপ, মাইক্রোবাস, ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকবে।
সেই সঙ্গে ৫ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২ টা থেকে ৮ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
এ নিষেধাজ্ঞা যেসব ক্ষেত্রে শিথিল করার প্রয়োজন হবে-
(ক) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, প্রশাসন ও অনুমতিপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক;
(খ) জরুরি সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন এবং ঔষধ, স্বাস্থ্য-চিকিৎসা ও অনুরূপ কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি ও সংবাদপত্র বহনকারী সব ধরনের যানবাহন;
(গ) আত্মীয়-স্বজনের জন্য বিমানবন্দরে যাওয়া, বিমানবন্দর হতে যাত্রী বা আত্মীয়-স্বজনসহ নিজ বাসস্থানে অথবা আত্মীয়-স্বজনের বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য ব্যবহৃত যানবাহন (টিকিট বা অনুরূপ প্রমাণ প্রদর্শন) এবং দূরপাল্লার যাত্রী বহনকারী অথবা দূরপাল্লার যাত্রী হিসেবে স্থানীয় পর্যায়ে যাতায়াতের জন্য যেকোনো যানবাহন;
(ঘ) প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর জন্য একটি, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্টের (যথাযথ নিয়োগপত্র/পরিচয়পত্র থাকা সাপেক্ষে) জন্য একটি গাড়ি (জিপ, কার, মাইক্রোবাস ইত্যাদি ছোট আকৃতির যানবাহন) রিটার্নিং অফিসারের অনুমোদন ও গাড়িতে স্টিকার প্রদর্শন সাপেক্ষে চলাচলের অনুমতি প্রদান;
(ঙ) সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক অথবা জরুরি কোনো কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল রিটার্নিং অফিসারের অনুমোদন সাপেক্ষে চলাচলের অনুমতি প্রদান;
(চ) নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা বা কর্মচারী অথবা অন্য কোনো ব্যক্তির জন্য মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি প্রদান; এবং
(ছ) জাতীয় মহাসড়ক, বন্দর ছাড়াও আন্তঃজেলা বা মহানগর থেকে বের হওয়ার জন্য বা প্রবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, মহাসড়ক ও প্রধান প্রধান রাস্তার সংযোগ সড়ক বা এরূপ সব রাস্তায় নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
অনলাইন ডেস্ক :
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা এলাকায় আজ ২ আগস্ট বুধবার দুপুরে বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে মাদক চোরাকারবারিদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মোহাম্মদ রফিক নামে এক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। তিনি টেকনাফের লেদা ক্যাম্পের এ-ব্লকের বাসিন্দা। এ ঘটনায় বিবিজির এক সদস্যসহ আরও ছয়জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘তথ্য পেয়ে বিজিবির একটি দল ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক চোরাকারবারি জাফরকে আটক করে। এ সময় স্বজনরা তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে প্রধান সড়কে উঠলে তারা জড়ো হয়ে বিজিবির ওপর হামলা চালায়। বিজিবির সদস্যরা তাদের সরানোর চেষ্টা করে। সেখানে লোকজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর আমিও শুনেছি। বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
এলাকাবাসী জানায়, লেদায় দুপুরে মাদক চোরাকারবারি জাফরকে আটক করে বিজিবি। এ সময় তাকে নিয়ে যাওয়ার সময় আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে বিজিবির সংঘর্ষ হয়। স্থানীয় লোকজন ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় বিজিবিও পাল্টা গুলি চালায়। এতে পথচারী এক রোহিঙ্গাসহ ৬ জন আহত হয়েছে। পরে তাদের উদ্ধার করে লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বাস্থ্য ক্লিনিকে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক গুলিবিদ্ধ এক রোহিঙ্গাকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কক্সবাজারে পাঠানো হয়েছে। আহতরা হলেন, টেকনাফের লেদা গ্রামের বাসিন্দা রাজু, ইসমাইল, গুরা মিয়া, হাফেজ মুজিব।
টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, লেদায় স্থানীয়দের সঙ্গে বিজিবির সংর্ঘষে আমার ক্যাম্পের একজন বাসিন্দা মারা গেছে। তিনি পথচারী ছিলেন।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, বিজিবির অভিযানে গ্রামবাসীর সঙ্গে সংর্ঘষের ঘটনায় একজন মারা যাওয়ার খবর শুনেছি। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল হুদা বলেন, একজনকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়দের সঙ্গে বিজিবির সংঘর্ষের ঘটনায় একজন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা ভীতির মধ্য রয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. ফরিদ আলম জানান, জাফর নামে একজনকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবির সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ হয়। এ সময় বিজিবি গুলি চালায়। এতে একজন রোহিঙ্গাসহ আরো কয়েকজন আহত হয়। এ ঘটনায় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল বেড়েছে। ভয়ে আছেন স্থানীয়রা।
অনলাইন ডেস্ক :
বিশ্বশান্তি নিশ্চিত করা অতীতের চেয়ে এখন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রসার ও অগ্রযাত্রার সঙ্গে বাড়ছে নতুন নতুন হুমকি। ফলে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনগুলোর শান্তিরক্ষীদের বহুমাত্রিক জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, শান্তিরক্ষা মিশনগুলো উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে সমৃদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা এখন বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ও বিপজ্জনক অঞ্চলে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারে, সেজন্য তাদের সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আজ ২৯ মে বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ দিবস-২০২৪’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, নারীর অধিকার ও জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করতে আমাদের পদক্ষেপ ‘উইমেন স্পিচ অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাজেন্ডা’ তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে। বাংলাদেশ অন্যতম বৃহৎ নারী শান্তিরক্ষী দেশ হিসেবেও পরিচিতি লাভ করছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ৩ হাজার ৩৮ জন নারী শান্তিরক্ষী অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে জাতিসংঘের শান্তি মিশন সম্পন্ন করেছেন। এখন দাবি আসছে, আরো নারী শান্তিরক্ষী প্রেরণ করার। জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল নিজেই আমাকে বলেছেন, আমরা যেন আরও বেশি করে নারী শান্তিরক্ষী প্রেরণ করি।
সরকারপ্রধান বলেন, আমরা স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ও জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেছি। যেখান থেকে ৩০ প্রকার ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হয়। আমাদের কমিউনিটি ক্লিনিকের অনুকরণে বর্তমানে সেন্ট্রাল আফ্রিকায় জাতিসংঘের শান্তি মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশের রক্ষীদের সহায়তায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের প্রেসিডেন্ট ফস্টিন আর্চেঞ্জ তোয়াদেরার নামে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা হয়েছে। যার নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু-তোয়াদেরা কমিউনিটি ক্লিনিক। বিদেশের মাটিতে জাতির পিতার নামে এমন সম্মাননা বাংলাদেশের জন্য একটি গৌরবের অধ্যায়।
অস্ত্র তৈরি ও প্রতিযোগিতা না করে সেই অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মানুষদের রক্ষার জন্য ব্যয় করার আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দ্বন্দ্ব সংঘাত যুদ্ধ আজ বিশ্বশান্তি বিঘ্নিত করছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজায় ইসরাইলের হামলায় হাজার হাজার নিরীহ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা ইত্যাদি মানবজাতির জন্য এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি ঠিক জানি না এই সংঘাত বা এই যুদ্ধ মানবজাতির জন্য কি কল্যাণ বয়ে আনছে। অস্ত্র প্রতিযোগিতা প্রতিনিয়ত যত বৃদ্ধি পাচ্ছে, মানুষের জীবনও তত বেশি দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। বিশেষ করে নারী-শিশু, তারা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে। যুবকেরা অকাতরে জীবন দিচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না শান্তি চাই, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সব কিছু সমাধান করতে চাই। বিশ্বের এক বিশাল সংখ্যক মানুষ এখনো দারিদ্রসীমার নিচে রয়েছে। কোটি কোটি মানুষ দু’বেলা খাবার পায় না, শিশুরা শিক্ষা পায় না, শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। যারা অস্ত্র তৈরি ও অস্ত্র প্রতিযোগিতায় এত অর্থ ব্যয় করছে, তাদের কাছে আমার আহ্বান, আমরা শান্তির কথা বলি কিন্তু সংঘাতে লিপ্ত হই কেন?
সরকারপ্রধান বলেন, এই যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে, এই অর্থ যদি ক্ষুধার্ত মানুষের আহারের ব্যবস্থায়, শিক্ষায় ব্যবহার করা হতো, চিকিৎসায় ব্যবহার করা হতো তাহলে মানুষের জীবনমান আরও উন্নত হতো, মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচতে পারত। কিন্তু এই সংঘাত মানুষকে আরও কষ্টের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সংঘাত নয়, যদি কোনো সমস্যা থাকে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা, সেটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কাজ। অস্ত্র তৈরি আর প্রতিযোগিতা, এই অর্থটা যেসব দেশ এখনো জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে যাচ্ছে, সেই জলবায়ু অভিঘাত থেকে মানবজাতিকে রক্ষার জন্য সেই ফান্ডে দিতে পারে এবং ক্ষুধার্ত ও শিক্ষা বঞ্চিতদের জন্য ব্যবহার করতে পারে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ অনুসরণ করে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব দেশে আমাদের শান্তিরক্ষী বাহিনী কাজ করছে, তাদের রাষ্ট্র প্রধান, সরকার প্রধান বা মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা হয়, প্রত্যেকেই আমাদের শান্তিরক্ষীদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। আর এই প্রশংসা শুনে সত্যিই আমার গর্বে বুক ভরে যায়।
তিনি বলেন, জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করে আমরা বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছি। শান্তিরক্ষা মিশন ছাড়াও আমরা অন্য আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে অবদান রেখে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে এছাড়াও সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বক্তব্য দেন।