মুরাদ মৃধা, নাসিরনগর :
মো. রাসেল মিয়া- পরিবারকে স্বচ্ছলতার আলো দেখানোর স্বপ্ন নিয়ে ২০২৪ সালে পাড়ি জামান লিবিয়া। কিন্তু স্বপ্ন আর বাস্তবতার মাঝে যে এক নিষ্ঠুর ফাঁদ অপেক্ষা করছিল, তা তিনি কল্পনাও করতে পারেননি। অবশেষে মাফিয়া চক্রের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে নিভে গেল এক তরুণ প্রাণ। তার মৃত্যুর খবরে এখন পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
রাসেল উপজেলার ধরমন্ডল ইউনিয়নের ধরমন্ডল গ্রামের লাউস মিয়া আউলিয়া বেগম দম্পতির বড় ছেলে। পরিবারের দাবি, ২১ ফেব্রæয়ারি লিবিয়ায় মাফিয়া চক্রের লোকজন বিষাক্ত ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করে রাসেলকে হত্যা করে। ২২ ফেব্রুয়ারি এক প্রবাসীর মাধ্যমে মৃত্যুর সংবাদ জানতে পারে পরিবার।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে রাসেল সবার বড়। ২০২৪ সালের প্রথম দিকে, পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে পরিবারের শেষ সম্বল, পৈত্রিক ভিটা বিক্রি করে ১৫ লাখ টাকা তুলে দেন একই গ্রামের মানব প্রাচারকারী লিলু মিয়ার হাতে। কথা ছিলো লিবিয়া থেকে ইতালি পাঠানো হবে। কিন্তু বিদেশের মাটিতে পৌঁছে তার কপালে জোটে এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। সেখানে গিয়ে তাকে ১০ লাখ টাকা দিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয় লিবিয়ার একটি স্থানীয় দালাল চক্রের হাতে। এর পরই শুরু হয় দুঃস্বপ্নের অধ্যায়। মাফিয়া চক্র রাসেলকে নির্যাতন করে একাধিকবার ভিডিও পাঠিয়ে পরিবারের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন ৩০ লাখ টাকা। সবশেষ আরো ১০ লাখ টাকা দাবি করে চক্রটি। কিন্তু টাকা না দেওয়ায় ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগী পরিবারের।
নিহতের বাবা আউয়াল মিয়া বলেন,‘ আমার জীবনের শেষ সম্বল বসত ভিটা ও ফসলি জমি বিক্রি কইরা কয়েক ধাপে ৫০ লাখ টাকা দিছি। আরো টাকা চাইত। কিন্তু পরবর্তীতে টাকা দিতে না পারায় আমার ছেলেরে হত্যা করছে দালাল লিলু মিয়া ও মাফিয়া চক্র।
রাসেলের মৃত্যুর বিষয়ে কথা বলতে দালাল লিলু মিযার বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার পরিবার ও সে পলাতক আছে। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
ধরমন্ডল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, রাসেলকে বাঁচাতে তার পরিবার প্রায় ৫০ লাখ টাকা দিয়েছে। কিন্তু টাকা দিয়েও বাঁচাতে পারেনি। যারা মানব প্রাচারের সাথে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। রাসেলের মতো আর কোন তরুণ যেন অকালে প্রাণ হারায়।
নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল আলম বলেন, ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীনা নাসরিন বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। যারা মানব প্রাচারের সাথে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
নাসিরনগর প্রতিনিধি :
নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থেকে আফিলা আক্তার (৪০) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ১৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তিনি উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের আশুরাইল গ্রামের সুন্দর আলীর মেয়ে।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভাঙ্গারির ব্যবসা করেন গৃহবধূর স্বামী জজ মিয়া। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জজ মিয়া আফিলা আক্তারকে মারধর করে। অত্যাচার সইতে না পেরে অভিমান করে বিষপান করেন গৃহবধূ আফিলা। রাত ৯টার দিকে অচেতন অবস্থায় আফিলাকে উদ্ধার করে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান তিনি। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় জজ মিয়া।
নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকার বলেন, হাসপাতাল থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জানতে পেরেছি, পারিবারিক কলহের জেরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে তিনি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ বুধবার জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হবে। তবে এ ঘটনায় থানায় কেউ মামলা করেনি।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে পাগলা কুকুরে কামড়ে নারী পুরুষসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। সোমবার বিকাল থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নের ফান্দাউক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। উত্তেজিত জনতা একটি কুকুরকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
স্খানীয়রা ও কুকুরের কামড়ে আক্রান্তরা জানায়, গত সোমবার দুপুরে উপজেলার ফান্দাউক গ্রামে একটি বেওয়ারিশ কুকুর আসে। পরে কুকুরটি রাস্তায় যাকে পেয়েছে তাকেই কামরায়। প্রথমদিন কুকুরটি ১৩ জনকে কামড়িয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
মঙ্গলবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত কুকুরটি আরো ৭ জনকে কামড়ায়। আক্রান্তদেরকে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অভিজিৎ রায় জানান, ১৪ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। আমাদের হাসপাতালে অ্যান্টি রেবিস ভ্যাকসিন নেই তবে ইমিউনোগ্লোবুলিন ডোজ রয়েছে। ৩ জন এ ডোজ নিয়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা কৃষকলীগের বিশেষ কর্মী সভা ১১ নভেম্বর শনিবার বিকেলে স্থানীয় আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ নাজির মিয়া।
উপজেলা কৃষকলীগ সভাপতি মোঃ অলি মিয়ার সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক এস.এম নূরে আলমের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রুমা আক্তার, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আবদুল আহাদ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্বাস উদ্দিন, জেলা কৃষকলীগ নেতা আলী আশরাফ, উপজেলা কৃষকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আরমান নূর।
এসময় কৃষকলীগের দলীয় নেতৃবৃন্দসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা বলেন, নাসিরনগর উপজেলা কৃষকলীগ বর্তমানে আগের চেয়ে অনেক বেশী শক্তিশালী ও সুসংগঠিত। উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ১২৮টি ওর্য়াডে এখন কৃষকলীগের নেতারা সক্রিয়।
বক্তারা আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১-(নাসিরনগর) থেকে কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ নাজির মিয়াকে মনোনয়ন দেয়ার দাবি জানান।
কর্মী সভা শেষে আলহাজ্ব মোঃ নাজির মিয়ার সমর্থনে উপজেলা সদরে একটি র্যালি বের করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
৭ ডিসেম্বর নাসিরনগর হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। মুক্ত হয় নাসিরনগর উপজেলা। প্রতি বছরই এ দিনটিতে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে উপজেলা প্রশাসন। ১৯৭১ সালের ১৫ নভেম্বর পাক হানাদার বাহিনী নাসিরনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামবাসীর ওপর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। উপজেলার ফুলপুর, নুরপুর, কুলিকুন্ডা, সিংহগ্রাম ও তিলপাড়া গ্রামের নিরীহ সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার চালোনো হয়। বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়।
মুক্তিযোদ্ধা ও সংগ্রামী জনতা পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে আজকের দিনে নাসিরনগর থানা অভ্যন্তরে (পুলিশ স্টেশন) স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে জাতীয় ভিটামিন “এ”প্লাস ক্যাম্পেইন সফল করতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উদ্যোগে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পর্যায়ে অবহিতকরণ ও পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলনায়তনে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ অভিজিৎ রায়ের সভাপতিত্বে ও মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট(ইপিআই) শাখাওয়াত হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান ডাঃ রাফিউদ্দিন আহমেদ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফখরুল ইসলাম, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হাবিবুল্লাহ সরকার, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল মিয়া। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডাঃ সুব্রত চক্রবর্তী।
অবহিতকরণ সভায় সরকারি কর্মকর্তা, চিকিৎসক ও সাংবাদিকসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট(ইপিআই) শাখাওয়াত হোসেন জানান, ১৫ জুন থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ৩১৩টি টিকাদান কেন্দ্র থেকে (৬মাস থেকে ১১ মাস পর্যন্ত) ৫ হাজার ৩২১ জন ও (১২ মাস থেকে ৫৯ মাস পর্যন্ত) ৪৬ হাজার ৪’শ ১৯ জন শিশুকে ভিটামিন‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এজন্য উপজেলায় টিকাদান কেন্দ্রে স্বাস্থ্য কর্মীসহ ৬২৬ জন সেচ্ছাসেবক নিয়োজিত রয়েছেন।