চলারপথে রিপোর্ট :
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, চলতি বছরের জুলাই-আগস্টে ৩৬ দিনের আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। তিনি জানান, শেখ হাসিনার পতনের জন্য তারা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছেন। বিএনপির কর্মীরা এখনো আন্দোলনের পথে রয়েছে। বিএনপির এই নেতার মতে বর্তমান সরকার তাদের সমর্থিত, তবে যদি সরকার নিরপেক্ষতা এবং জনগণের আস্থা হারায়, এর দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে।
আজ ২৪ ফেব্রুয়ারি সোমবার বিকেলে পৌর মুক্তমঞ্চে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি আয়োজিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, বিএনপির লড়াই সংগ্রামে যারা অংশ নিয়েছিল, তারা এখনো ঘরে ফিরে যায়নি।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের প্রতি তাদের কোনো প্রত্যাশা নেই, কারণ জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার ছাড়া দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখা সম্ভব নয়। এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচন হবে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে দেশ আবার শান্তিপূর্ণ অবস্থায় ফিরে আসবে, যেমনটা বিএনপির সময় ছিল, কিন্তু আওয়ামী লীগের আমলে তা দেখা যায়নি।
বিশাল সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেলিম ভুইয়া, হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহমুদ শ্যামল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা প্রমুখ।
প্রসঙ্গত: বিএনপির এই মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে এবং পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে সকাল থেকেই দলে দলে মিছির সহকারে লোকজন সমাবেশে যোগ দেয়। এসময় তারা বিভিন্ন শ্লোগান দেয় এবং দেশের উন্নয়নে বিএনপির কোনো বিকল্প নেই বলে দাবী করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি বিপনী বিতানের দুটি দোকান থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রায় সোয়া কোটি টাকার মোবাইল ফোন সেট চুরি হয়েছে।
গতকাল বুধবার গভীর রাতে শহরের কালীবাড়ি মোড়ের এল.আর প্লাজার “মোবাইল মেলা” নামক দুটি দোকানে এই চুরির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আজ ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
দোকান দুটির মালিক মোবারক হোসেন জিসান জানান, তিনি বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দোকানে গিয়ে দেখেন দোকানের সার্টার লাগানো, তবে তালা গুলো খোলা। পরে তিনি দোকানের ভেতর প্রবেশ করে দেখেন দোকানে থাকা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দুইশতাধিক মোবাইল ফোন সেট চোরেরা নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, চুরি হওয়া মোবাইল ফোনের মধ্যে আইফোন-১৪ প্রো ম্যাক্স,আইফোন-১৩ প্রো ম্যাক্স, আইফোন-১৩, আইফোন-১২ প্রো ম্যাক্স, আইফোন-১১ প্রো ম্যাক্স, গুগল পিক্সেল ৭ প্রো, অপোর বিভিন্ন মডেলের, ভিভোর বিভিন্ন মডেলের, শাওমি বিভিন্ন মডেলের, ওয়ান প্লাস ব্র্যান্ডের বিভিন্ন মডেলের, স্যামসাংয়ের, স্যামসাং ফোল্ড-৩ মডেলের, ফোল্ড-৪ মডেলের, ফ্লিপ-৩ মডেলের ও ফ্লিপ-৪ মডেলের মোবাইল চুরি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি বলেন, তার প্রায় সোয়া কোটি টাকা মূল্যর মোবাইল ফোন সেট চুরি হয়েছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন বলেন, চুরির খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেছি। ইতিমধ্যেই তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের পাইকপাড়া সামাজিক সম্প্রীতি কমিটির উদ্যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির ১৮ জন সদস্যকে সংবর্ধনা দিয়েছে। এই উপলক্ষে ১৩ জুলাই শনিবার রাতে পাইকপাড়া রাম ঠাকুর আশ্রম প্রাঙ্গনে আয়োজিত গণ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পাইকপাড়া সামাজিক সম্প্রীতি কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট ঠিকাদার হাজী মোহাম্মদ আবু জাহিদ।
অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের নবগঠিত কমিটি গঠন করায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে অনিন্দন জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, সুমেশ রঞ্জন রায়, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস, শিল্প বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক স্বপন রায়, উপ দপ্তর সম্পাদক সুজন দত্ত, কার্যকরী সদস্য বাবুল মিয়া।
অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলার নব-নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহাদৎ হোসেন শোভন, পৌর যুবলীগের সভাপতি আল-আমিন সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন লিটন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন লিটন রায়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে জড়ো হয়েছেন মৎস্য শিকারিরা। শেরপুর মীর শাহাবুদ্দীন (রঃ) দারুল উলূম ইসলামিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার মাজার শরীফ সংলগ্ন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী পুকুরে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছে। তাঁদের কারও হাতে বড়শি, আবার কারও হাতে মাছের খাবার। কেউ কেউ আবার মোড়া ও মাছ রাখার জাল নিয়ে এসেছেন।
৬ জুলাই শনিবার সকাল ছয়টা থেকে ঐতিহ্যবাহী পুকুরের চার পাড়ে মাছ ধরার প্রতিযোগিতায় মেতে ও উঠেন মৎস্যশিকারিরা। সন্ধ্যা ৬’টা পর্যন্ত টানা ১২ ঘণ্টা চলে মাছ শিকার। এই মাছ ধরার প্রতিযোগিতা বড়শিতে ধরা পড়ে রুই, কাতল, ব্রিগেড, মৃগেল, শোল, বড় তেলাপিয়সহ দেশি বিভিন্ন প্রজাতির কার্প জাতীয় মাছ রয়েছে। পুকুরে মাছ ধরা প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে যেন এক মিলনমেলা হয়। ৬হাজার ৩শত টাকার টিকেট মূল্যে ১৬জন মৎস্য শিকারিএতে অংশ নেন। প্রত্যেকেই তিনটি বড়শি দিয়ে মাছ ধরার এই প্রতিযোগিতায় জড়োহন। শৌখিন মৎস্য শিকারি শাহেদ মিয়া বলেন ছোটবেলা থেকেই বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে খুব মজা লাগে। মাছ ধরা আমার পেশ নয়, এটি শুধু শখ। বড়শিতে মাছ ধরা পড়লে খুব আনন্দ লাগে এজন্যই এই ঐতিহ্যেবাহী পুকুরে মাছ ধরতে এসেছি।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে কমিটির আহবায়ক আরমান হোসেন, মনির খান (মনা) মোতোর্জা কমল জানান, আমরা নিজস্ব অর্থয়েনে প্রতি বছর ন্যায় এবারও এ মাছ ধরার প্রতিযোগিতা আয়োজন করছি, আগামীতে ও তা চলবে। এছাড়া দর্শনাথীদের মধ্যে ভালো লাগার একটি দৃশ্য ফুটিয়ে তুলতে আমরা মাছ ধরা প্রতিযোগিতা আয়োজন করি।
চলারপথে রিপোর্ট :
জামাই পিঠা, বউ পিঠা, মালপোয়া, হৃদয়হরণ, কলাপিঠা, লবঙ্গ লতিকা, জামদানি, জুড়ি, ঝিনুক, নারকেলের ভাজা পুলি, সেদ্ধপুলি, দুধপুলি, ছিটাপিঠা, ফুলঝুড়ি, পাকান পিঠা, মাসকলাই, দুধচিতই, পাটিসাপটা, মুখ চাহনি, পানতোয়া, সন্দেশ-নেভিকুলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রসমালাইসহ বাহারি জাতের শতাধিক পিঠা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনাইটেড কলেজে জেলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা নিয়ে কলেজ প্রাঙ্গণে হাজির হন একাদশ-দ্বাদশ শিক্ষার্থীরা।
আজ ২০ জানুয়ারি সোমবার এই কলেজে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়। এই উৎসবে নানা জাতের পিঠার মাধ্যমে বাংলার ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত কলেজ প্রাঙ্গণে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এ পিঠা উৎসবের আয়োজন করে। বেলা ১১টার দিকে কলেজ প্রাঙ্গণে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইবনে আইন মারুফ পিঠা উৎসবের আয়োজন করেন।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কলেজের উদ্যোক্তা ও পরিচালক হারুন অর রশিদ ও শাহীন মৃধা, পরিচালক ও প্রভাষক সিরাজুল ইসলাম, প্রভাষক শাহাদৎ হোসেনসহ কলেজের সকল শিক্ষক।
কলেজের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির মানবিক, ব্যবসা শাখা ও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছয়টি স্টল বসান। এসব স্টলে তাঁরা বাংলাদেশের বিভিন্ন ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাহারি জাতের পিঠা নিয়ে হাজির হন। এসব স্টলে শতাধিক প্রকারের পিঠা শোভা পেয়েছে। বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে কলেজ প্রাঙ্গণে গিয়ে নবীন শিক্ষার্থীদের বর্ণিল সাজে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। বিভিন্ন স্টলে ছিল নানা ধরনের পিঠা। ব্যবসায় শাখা বিভাগের একটি স্টলে গিয়ে ব্যতিক্রমী কিছু পিঠা চোখে পড়ে।
শিক্ষার্থীরা মালপোয়া, হৃদয়হরণ, কলাপিঠা, লবঙ্গ লতিকা, জামদানি, জুড়ি, ঝিনুক, নারকেলের ভাজা পুলি, সেদ্ধপুলি, দুধপুলি, ছিটাপিঠা, ফুলঝুড়ি, পাকান পিঠা, মাসকলাই, দুধচিতই, পাটিসাপটা, মুখ চাহনিসহ শতাধিক জাতের পিঠা নিয়ে হাজির হয়েছেন।
মানবিক বিভাগের একটি স্টলে জামাই পিঠা, বউ পিঠাসহ নানান জাতের পিঠা চোখে পড়ে। মানবিক বিভাগের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার ও জেরিন আক্তার বলেন, শিক্ষার্থীরা দিনটিকে উৎসবের রং দিয়েছে। তারা দেশের ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পিঠা তৈরি করেছেন। আমরা আজ সবাই মিলের বাংলার ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনাইটেড কলেজের উদ্যোক্তা ও পরিচালক হারুন অর রশিদ ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইবনে আইন মারুফ বলেন, একসময় বাংলার ঘরে ঘরে শীত এলে পিঠা বানানোর ধুম পড়ে যেত। কিন্তু এই ঐতিহ্য অনেকটাই হারিয়ে যাচ্ছে। নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রামবাংলার এই চিরন্তন ঐতিহ্য তুলে ধরতে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতি বছর আমরা এই উৎসবের আয়োজন করে থাকি।
পিঠা উৎসবের স্টলগুলোতে পাপড়ি, ঝিনুক, পাকন, রেশমি, ত্রিভুজ, ঝিলমিল, ডিম সুন্দরী, হৃদয়হরণ, বেণি, চন্দ্রপুলি, চিংড়ি পিঠাও প্রদর্শন করা হয়। বেলা পৌনে ১টার দিকে কলেজের শিক্ষক, অভিভাবক ও কলেজের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।