চলারপথে রিপোর্ট :
ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে পরিচয় যাচাইসহ এনআইডি কার্ড প্রদানের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মানববন্ধন করেছেন পর্দানীসন নারীরা। এছাড়া জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপিও প্রদান করেছেন তারা।
আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে জেলা নির্বাচন অফিসের সামনে এ পর্দানসীন নারী সমাজের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। স্মারকলিপিতে তারা তিন দফা দাবি তুলে ধরেন।
বক্তারা বলেন, ধর্মীয় কারণে ছবি তুলতে না পারায় এনআইডি কার্ড পাচ্ছেন না পর্দানসীন নারীরা। এজন্য নাগরিক সেবা নিতে পারছেন না তারা। প্রায় ৩০ লাখ পর্দানসীন নারীর এনআইডি আটকে রয়েছে। গত ১৬ বছর নির্বাচন কমিশনের কতিপয় স্বৈরাচারী কর্মকর্তা মুখচ্ছবি না তোলার অজুহাতে পর্দানীসন নারীদের নাগরিকত্ব আটকে রেখেছেন। ফলে এনআইডি কার্ড ছাড়া কোনো পর্দানসীন নারী নিজের জমি বিক্রি করতে পারছেন না। সরকারি ত্রাণ সহায়তাও নিতে পারছেন না। এছাড়া সন্তানদের স্কুলেও ভর্তি করাতে সমস্যা হচ্ছে এনআইডি কার্ড না থাকার কারণে। তাই বৈষম্যহীন দেশ গঠনের অংশ হিসেবে মুখচ্ছবির বদলে ফিঙ্গারপ্রিন্টের মতো আধুনিক পদ্ধতিতে পরিচয় যাচাইয়ের মাধ্যমে এনআইডি কার্ড প্রদানের দাবি জানান তারা। মানববন্ধনে পর্দানসীন নারী সমাজের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ফারহানা হক, আহমদ আয়িশা সিদ্দিকা ও শাহনাজ পারভীন প্রমুখ। পরে মানববন্ধন শেষে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দেন মানববন্ধনকারীরা।
মানববন্ধনে তিন দফা দাবি তুলে ধরেন তারা।
দাবিগুলো হলো : বিগত ১৬ বছর যাবত যে সমস্ত সাবেক ইসি কর্মকর্তা পর্দানসীন নারীদের নাগরিকত্ব আটকে রেখে মানবাধিকার বঞ্চিত করেছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। পর্দানসীন নারীদের ধর্মীয় ও প্রাইভেসির অধিকার অক্ষুন্ন রেখে অবিলম্বে এনআইডি ও শিক্ষা অধিকার প্রদান করা। এজন্য সকল ক্ষেত্রে পরিচয় সনাক্তে চেহারা ও ছবি মেলানোর সেকেলে পদ্ধতি বাতিল করে আধুনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাই পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করতে হবে। পর্দানসীন নারীদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেয়ার সময় পুরুষ নয়, নারী সহকারী বাধ্যতামূলক রাখতে হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিতাস নদীর পাশ থেকে সুমন সাহা (৪২) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ ১৪ জুন বুধবার সকালে শহরের পূর্ব পাইকপাড়া তিতাস নদীর পাশ থেকে গলায় রশি প্যাচানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়। সুমন সাহা শহরের কালাইশ্রীপাড়ার অশোক সাহার ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, সকালে তিতাস নদীর পাশে গলায় রশি প্যাচানো অবস্থায় সুমনের লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করে।
সুমনের পড়নের গেঞ্জিতে কলম দিয়ে লিখা ছিলো “আমার বাবার হক আমি পাইলাম না, আমার মেয়েরা যেন সেই হক পায়”। তবে গেঞ্জির লিখাটা সুমনের না হত্যাকারীদের কারো হাতে লিখা এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, এটি হত্যা না আত্মহত্যা ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত করে বলা যাবে। তার লাশ ময়না তদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
কোটা পদ্ধতি সংস্কার ও কর্মসংস্থানের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
আজ ৮ জুলাই সোমবার সকালে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ব্যানারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সামনে এই কর্মসূচি পালন করা হয় জেলা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা।
এ সময় আইরিন মৃধার সভাপতিত্বে ও সানিউর রহমানের সঞ্চালনায় শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা কোটার বিরোধিতা করছি না। আমরা কোটা সংস্কারের জন্য আন্দোলনে নেমেছি। আর কোটার কারণে মেধাবী শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে যাচ্ছে।
এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সানিউর রহমান বলেন, ‘কোটার কারেণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। যা কখনও কাম্য হতে পারে না। পিছিয়ে পড়া জনগৌষ্ঠীর জন্য সরকারের উদ্যোগ অবশ্যই থাকবে। তবে আমরা মনে করি, কোটা পদ্ধতির সংস্কার প্রয়োজন।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর কলেজের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সাম্য চাই। আমাদের চাকরি ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা থাকুক তবে সেটা সহনীয় পর্যায়ে থাকতে হবে। তাহলে মেধাবী শিক্ষার্থীরা কোটার কারণে বঞ্চিত হবে না। আর এর মধ্য দিয়েই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে।’
অনলাইন ডেস্ক :
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে রুনা লায়লা নামের এক হাজতিকে নির্যাতনের অভিযোগে যুব মহিলা লীগের সাবেক নেত্রী শামীমা নুর পাপিয়াকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকাল সাড়ে পাঁচ টার দিকে তাকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে পাঠানো হয় বলে নিশ্চিত করেন কারাগারের জেল সুপার মো. ওবায়দুর রহমান।
এক কারা কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, পাপিয়া গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে প্রায় ৪০ মাস ধরে বন্দি ছিলেন। ২৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি হিসেবে জেল বিধি অনুযায়ী পাপিয়াকে ‘রাইটার’ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তিনি রুনা লায়লা নামে এক হাজতিকে সম্প্রতি নির্যাতন করে তার কাছ থেকে টাকা পয়সা লুট করে নেয়, এমন অভিযোগে রুনার ছোট ভাই জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন। পরে গঠন করা হয়েছে দুটি তদন্ত কমিটি। তার প্রেক্ষিতে সোমবার বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানে হয়েছে।
কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের (ভারপ্রাপ্ত) জেল সুপার মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাকে স্থানান্তর করা হয়েছে।
পাপিয়ার হামলায় আহত রুনা কাতরাচ্ছেন হাসপাতালের বেডে।
গাজীপুরে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে কারাবন্দি বহিষ্কৃত মহিলা যুবলীগ নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার মারধর ও নির্যাতনের শিকার রুনা লায়লা গুরুতর অবস্থায় এখনো গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ৭০৭ নাম্বার কক্ষে ভর্তি আছেন। হাসপাতালের বিছানায় রুনাকে কাতরাতে দেখা গেছে।
কারাগারের মারধরের শিকার হওয়ার পর থেকে রুনা অসংলগ্নভাবে কথা-বার্তা বলছেন। ২ জুলাই রবিবার বিকেলে রুনার বোন রওশন আরা বিষিয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হাসপাতালে তার বোনের অবস্থা এখনো খুব একটা ভালো মনে হচ্ছে না।
রুনা লায়লা গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কড়িহাতা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের মেয়ে। ওই ঘটনায় জেলা প্রশাসক বরাবর তার ভাই আব্দুল করিম অভিযোগ করেন।
ওই হাসপাতালের বেডে শুয়ে রুনা সাংবাদিকদের বলেন, শনিবার (১৭ জুন) ভোর ৫ টায় মাইকিং করে আমাকে কারাগারের বিচার বৈঠকে যেতে বলে। সকাল ৯টায় বিচার বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি ময়লা পরিষ্কার করতে যাই। বিকেল ৪টায় থালা-বাসন পরিষ্কার করি। বিকেলে আমাকে আমার কক্ষ থেকে বদলি করে পাপিয়ার অধিনে ৪০১ নম্বর কক্ষে দেওয়া হয়।
তিনি আরো জানান, পরদিন রবিবার ভোর ৫টায় সোনালী নামে একজন মাইকিং করে তাকে বিচার বৈঠকে আসতে বলে। তিনি সেখানে যাওয়ার পর আবার ওপরে উঠেন টয়লেটে যাওয়ার জন্য, এরপর তার নামতে দেরি হয়। এটাই ছিল আমার অপরাধ। সকাল ৭টার দিকে ফাতেমা নামে একজন আমাকে ডেকে নেয়। ফাতেমা লাঠি দিয়ে আমাকে আঘাত করে। আমি আত্মরক্ষার্থে হাতের লাঠি ফেরানোর চেষ্টা করি। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। আরও মারধর শুরু করে। কিছুক্ষণ পড়ে একটা হাতুড়ি নিয়ে এসে আমাকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করলে আমি পড়ে যাই। পড়ে যাওয়ার পর লাথি মারে। এসময় হঠাৎ ছালমা এসে হাজির হয়। ছালমা এসে আমার পরনের কমলা রঙ্গের জামাটা ছিড়ে ফেলে। এমন অবস্থায় আমি পালানোর চেষ্টা করি। পালাতে গিয়ে পড়ে যাই। আমাকে ওরা ধরে নিয়ে আসে। নাজমা ও মিনা নামে দুজন গিয়ে আমাকে হাতকড়া পড়তে বলেন। আমি ভয় পেয়ে হাতকড়া পড়তে চাই না। আমাকে জোর করে হাতকড়া পড়ায়। হাতকড়া পড়িয়ে আমাকে একটা নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে। আবার আমাকে বিচার বৈঠকে নিয়ে আসে। সেখানে দুদিকে ২ হাত উপরে তুলে লোহাড় শিকল দিয়ে বেঁধে দেয়। পাপিয়া এসে পায়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। তখন কারাগারের সবাই আমাকে উঁকি দিয়ে দেখে। আমি আমার শরীর ঢাকতে চেষ্টা করি। পাপিয়ার পিটানিতে আমি প্রস্রাব-পায়খানা আটকাতে পারিনি। আমি তখন পানি চাই। বার বার পানি পানি করে কাঁদতে থাকি। আমাকে ময়লা পানি খাওয়ার কথা বলে। আমাকে পানি দেওয়া হয়নি। আমার মাথায় পানি ঢেলে দেওয়া হয়।
রুনা লায়লা বলেন, একটা সময় পাপিয়ার আঘাতে আমি মাটিতে পড়ে যায়। মুনিয়া নামে একজন আমাকে আমার জামা পরিবর্তনের কথা বলে ময়লা স্তুপের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে। ওইখানে ঘণ্টা খানেক মারধর করলে আমি আর কিছু বলতে পারি না। চেতনা ফিরে পেলে আমাকে ওরা গাছে টানায়। ওড়না দিয়ে গাছে টানিয়ে রাখে। আমি খুব অসুস্থ বোধ করি। সন্ধ্যায় জেল সুপার ওবায়দুর আমার হাতকড়া খুলে দেয়।
রুনা লায়লার ভাই আব্দুল করিম বলেন, এ ঘটনায় গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি’র) কাছে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করেছি। পরে গঠন করা হয়েছে দুটি তদন্ত কমিটি।
গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক শামসুল হুদা বলেন, রোগীর শরীরে রক্ত শূন্যতা দেখা গেছে। বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর রিপোর্ট আসেনি। রিপোর্টগুলো আসার পর রোগীর প্রকৃত অবস্থা জানা যাবে।
কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) ওবায়দুর রহমান বলেন, ওই নারী গোপনে ৭ হাজার ৪০০ টাকা নিয়ে কারাগারে আসেন। বিষয়টি পরদিন তদন্ত করে পাওয়া যায়। টাকার বিষয়ে কারাগারের হাবিলদার ফাতেমা বেগম জানতে চাইলে তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন রুনা।
জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) ওবায়দুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন দুইটি তদন্ত কমিটি গঠণ করেছে। এছাড়া এ ব্যাপারে ২৬ জুন জেলার ফারহানা আক্তার, ডেপুটি জেলার জান্নাতুল তায়েবা এবং মেট্রোনকে শো’কজ করা হয়েছে। তবে এখনও কারো জবাব পাওয়া যায়নি।
চলারপথে রিপোর্ট :
জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস গ্যাস ফিল্ডে স্থাপন করা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিফলক উদ্বোধন করা হয়েছে।
আজ ৯ আগস্ট বুধবার দুপুরে তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ১নং কূপে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্মৃতি ফলকটির উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
জ্বালানি নিরাপত্তায় বঙ্গবন্ধুর অবদান স্মরণীয় করে রাখতেই তার স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়েছে। জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষ্যে তিতাস গ্যাস ফিল্ডসহ পাঁচটি গ্যাস ফিল্ডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে শাহাদাত বরণের মাত্র ছয় দিন আগে বঙ্গবন্ধুর পাঁচটি গ্যাস ফিল্ড কেনার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তেই সোনার বাংলা গড়ার ভিত তৈরি হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতার জন্যই অর্থনৈতিকভাবে বিশ্ব-দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিএসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সুলতান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার ও পরিচালক (প্রশাসন) আলতাফ হোসেন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. রুহুল আমিন প্রমুখ।
স্মৃতিফলক উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, সকল কূপ থেকেই গ্যাস উত্তোলনের জন্য স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে যেসব কূপ বন্ধ আছে, সেগুলো জরুরি ভিত্তিতে চালুর কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া তিতাসের নতুন আরও কিছু কূপ অনুসন্ধান এবং বর্তমানে যে স্তর রয়েছে তারচেয়ে আরও গভীরে গিয়ে গ্যাস উত্তোলনের চেষ্টা করছি আমরা।
অনুষ্ঠানে বিজিএফসিএল, পেট্রোবাংলা, গ্যাস ফিল্ডস এবং বাপেক্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান শেল অয়েলের কাছ থেকে তিতাস, বাখরাবাদ, রশিদপুর, হবিগঞ্জ ও কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ড কিনে রাষ্ট্রীয় মালিকানাভুক্ত করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর কেনা পাঁচটি গ্যাস ফিল্ডের মধ্যে তিনটি পরিচালিত হচ্ছে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের অধীনে। আর পাঁচটি গ্যাস ফিল্ডে বর্তমানে মজুত আছে ৫ দশমিক ২৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। যার বাজারমূল্য ৩ লাখ ১৭ হাজার কোটি টাকা।
অনলাইন ডেস্ক:
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য বিএনপিসহ দেশের সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, অপরাধ সংঘটন ও অগ্নিসংযোগের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে বিএনপির আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে দলের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রথম সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করা হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনের দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত। নির্বাচন করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে।
বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতা ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে মানুষ হত্যা ও জানমালের ক্ষতিসাধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের (বিএনপি-জামায়াত) উচিত অপরাধের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং তারপরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তাদের অংশগ্রহণ করা।
আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতায় ভয় না পেয়ে নিয়ম মেনে যথাসময়ে নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এ সময় তিনি সময়মতো নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয় সেজন্য দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে এবং তাদের পছন্দের সরকার গঠনের জন্যই এ নির্বাচন। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশী তাকে দেব’ স্লোগান দিয়ে আপনারা (নির্বাচনে) ভোট দিন।
যুব সমাজের প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করছে। এখন সবাই এর সুফল পাচ্ছে। এখন তার সরকার আগামীতে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা আশা করি, আমরা তাদের (তরুণদের) সহযোগিতা নিয়ে এটি করতে পারব।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, যারা খুন করেছে এবং সাধারণ মানুষকে হত্যার পরিকল্পনা করেছে, তাদের জনগণ কেন ভোট দিতে যাবে, তাদের ওপর আস্থা রাখবে? জনগণ তাদের বিশ্বাস করে না, কারণ তারা খুনি ও ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত।
নির্বাচন জনগণের অধিকার এবং এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, নির্বাচনের সময় এসেছে এবং জনগণ ভোট দেবে। জনগণ ভোট দিয়ে যে দলকে নির্বাচিত করবে, সেই দলই সরকার গঠন করবে। তিনি বলেন, তারা (বিএনপি-জামায়াত) জনগণের ওপর আস্থা রাখতে ব্যর্থ হয়ে হামলা চালাচ্ছে।