আল আমিন, মালয়েশিয়া থেকে :
মালয়েশিয়ায় রাস্তা পার হওয়ার সময় গাড়ির নিচে চাপা পড়ে আব্দুল মাজেদ খান (২৯) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। গত সোমবার সকালে রাস্তা পার হতে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের মহেন্দ্রপুর গ্রামের মোয়াজ্জেম খানের ছেলে।
পরিবারের সূত্রে জানা যায়, মাজেদ প্রায় নয় মাস আগে মালয়েশিয়া গিয়ে পেনাং শহরে একটি কোম্পানিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। সোমবার সকালে নতুন ভিসার জন্য মেডিকেল করতে যাওয়ার পথে রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুতগতির একটি গাড়ির নিচে চাপা পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
তার মৃত্যুর খবর বাংলাদেশে পৌঁছানোর পর পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত মাজেদ খানের বাবা মোয়াজ্জেম খান বলেন, আমার ছেলে মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। আমি চাই আমার ছেলের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা হোক। সরকার যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।
কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহুয়া আফরোজ বলেন, মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় আব্দুল মাজেদ খানের নিহতের খবর জানার পর আমরা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় এক প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোরে সৌদি আরবের আবহা শহরের মাহাইল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত প্রবাসী মো. মিজানুর রহমান (৪৮) চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৬ নম্বর গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের আদশা গ্রামের মৃত এরশাদ মিজির বড় ছেলে। মিজানের এক মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে।
নিহতের চাচাতো ভাই মানিক হোসেন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মানিক সৌদি আরবে নিহত মিজানের কাছেই থাকেন। তিনি জানান, প্রতিদিনের মতো সোমবার রাত আনুমানিক ২টার দিকে আমার জেঠাতো ভাই মিজান মালামাল লোড করে গাড়ি নিয়ে ফেরার পথে হঠাৎ একটি দ্রুতগতির গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মানিক হোসেন আরো বলেন, খবর পেয়ে ভোরে আমরা হাসপাতালে এসে দেখি ভাই আর বেঁচে নাই। এখন লাশ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি আরো বলেন, মো. মিজানুর রহমান গত ২২ বছর ধরে সৌদি আরবের আবহা শহরে ছিলেন। তিনি নিজস্ব একটি পণ্যবাহী গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আড়ত থেকে সবজি সংগ্রহ করে খুচরা বাজারে সরবরাহ করতেন। অত্যন্ত পরিশ্রমী মানুষ ছিলেন তিনি।
মিজানুর রহমানের আরেক চাচাতো ভাই পারভেজ জানান, মিজান পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন। তিনি সর্বশেষ ২০২৩ সালের শেষ দিকে দেশে ছুটিতে এসেছিলেন।
মো. মিজানুর রহমানের মেয়ে জেরিন (২৩) বিবাহিত এবং ছেলে সামির (১৭) এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা রাজিয়া বলেন, সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় মিজানুর রহমানের মৃত্যুর বিষয়টি আমরা জেনেছি। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। লাশ দেশে আনতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশি কানাডিয়ান তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। একাকীত্ব, বর্ণবৈষম্য, অর্থনৈতিক চাপ, অভিভাবকত্বের সমস্যা, শিক্ষাগত চাপ এবং প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহারের মতো বিভিন্ন কারণে তরুণরা মানসিক সমস্যায় ভুগছে। এই বিষয়ে সচেতনতা তৈরি ও সমাধানের পথ খুঁজতে বেঙ্গলি ইনফরমেশন অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসেস (বিআইইএস) একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে।
কানাডার স্থানীয় সময় ১৭ জানুয়ারি সংগঠনের ডেনফোর্থস্থ অফিসে আয়োজিত ‘বাংলাদেশি কানাডিয়ান তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের চ্যালেঞ্জ এবং উত্তরণের পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বিআইইএস-এর নির্বাহী পরিচালক ইমাম উদ্দিনের সঞ্চালনায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট নিজাম উদ্দিন।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর, সোশ্যাল ওয়ার্কার নেসার আহমেদ, বিআইইএস-এর জেনারেল সেক্রেটারি ড. মাহতাব শাওন, বাংলাদেশি চিকিৎসক হুমায়রা তাহিতি, ব্যবসায়ী আজিম উদ্দিন আহমেদ, তরুণদের প্রতিনিধি ফাতেমা সরকার, উন্নয়ন কর্মী রীনা সেন গুপ্তা এবং বিআইইএস-এর পরিচালক গোলাম মোস্তফা।
বিআইইএস প্রেসিডেন্ট নিজাম উদ্দিন তার মূল বক্তব্যে উল্লেখ করেন, মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যাগুলো লুকিয়ে রাখা, অভিভাবকত্বের অভাব, ভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর চ্যালেঞ্জ এবং সচেতনতার অভাব তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের মূল কারণ। তিনি কমিউনিটি-ভিত্তিক মেন্টাল হেলথ প্রোগ্রাম চালু, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং কালচারালি উপযোগী সেবা প্রদান করার সুপারিশ করেন।
সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর শিক্ষাকার্যক্রমে পড়াশোনার চাপ অনেক তরুণকে হতাশাগ্রস্ত করছে। তিনি অভিভাবকদের প্রতি সন্তানদের সমস্যা গভীরভাবে বোঝার এবং তাদের পাশে থাকার আহ্বান জানান। ব্যবসায়ী আজিম উদ্দিন আহমেদ মানসিক স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় পলিসি লেভেলে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সোশ্যাল ওয়ার্কার নেসার আহমেদ উল্লেখ করেন, কমিউনিটির মধ্যে এখনও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়টি গ্রহণযোগ্য নয়। তরুণদের জন্য কার্যকর কাউন্সেলিং সেবা এবং কমিউনিটি রিসোর্স ব্যবহারের ওপর জোর দেন তিনি।
তরুণদের প্রতিনিধি ফাতেমা সরকার বলেন, অভিভাবকরা আমাদের বোঝেন না, ভয় দেখান। তাদের উচিৎ আমাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ হওয়া এবং মন খুলে কথা বলার পরিবেশ তৈরি করা।
সবশেষে, বক্তারা বাংলাদেশি কানাডিয়ান তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে কমিউনিটি সংগঠনগুলোর সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।
হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে :
আমেরিকায় নিজ কাজের মধ্য দিয়ে কমিউনিটির উন্নয়নে অবদান রাখায় সম্মাননা পেলেন সাংবাদিক মো. এহসান উদ্দিন (এহসান জুয়েল)। সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কসের আল-আকসা পার্টি হলে ‘ব্রঙ্কস কমিউনিটি ডিস্ট্রিক্ট নাইন’-এর পক্ষ থেকে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তার হাতে সম্মাননাপত্র তুলে দেয়া হয়।
এসময় সম্মাননা জানানো হয় এনওয়াইপিডিতে কর্মরত বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পেশার বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে। কমিউনিটি ডিস্ট্রিক্ট নাইনের চেয়ারপার্সন মাস্টার অব ল’য মোহাম্মদ এন মজুমদার এ সম্মাননা তুলে দেন।
এসময় তিনি বলেন, সাংবাদিক মো. এহসান উদ্দিন তার কাজের মধ্য দিয়ে কমিউনিটির উন্নয়ন, শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা, মানবাধিকার রক্ষাসহ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস অফিসের কমিউনিটি অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা, ডিস্ট্রিক্ট থার্টি ফোরের সিনেটর নাথালিয়া ফার্নান্দেজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে সম্মাননা তুলে দেন।
‘ব্রঙ্কস কমিউনিটি ডিস্ট্রিক্ট নাইন’ হলো নিউ ইয়র্ক সিটির স্থানীয় সরকার বোর্ড, যার অধীনে সিটির ক্যাসল হিল, ক্লাসন পয়েন্ট, হার্ডিং পার্ক, পার্কচেস্টারসহ বেশ কয়েকটি এলাকা রয়েছে।
সাংবাদিক এহসান জুয়েল বাংলাদেশের সময় টিভি, এখন টিভি, এনটিভি, আরটিভি, দৈনিক জনকণ্ঠ, সাপ্তহিক-২০০০ এ কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি নিউ ইয়র্কের টিবিএন টুয়েন্টিফোর নিউজ নেটওয়ার্কের অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর হিসেবে কাজ করছেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ), ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিক্যাব), ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি), সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সদস্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
হাসান :
মাহে রমজান উপলক্ষে পর্তুগালের প্রবাসী ব্যবসায়িক, সামাজিক, রাজনৈতিক, আঞ্চলিক, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দসহ দেশী বিদেশি অতিথিদের সম্মানে আলোচনা সভা, দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে পর্তুগালে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের নিয়ে গঠিত সংগঠন মোরারিয়া বিজনেস ফোরাম।
গতকাল ১৬ মার্চ রবিবার লিসবনের রোমাস্থ লিটন টার্কিশের হল রুমে প্রায় তিনশ’ অতিথিদের নিয়ে আয়োজিত ইফতার পূর্বক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় সংগঠনের আহ্বায়ক আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মাসুম আহমদ এবং সদস্য ইকবাল আহমদ কাঞ্চনের যৌথ সঞ্চালনায় পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং রমজানের তাৎপর্য নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন মাওলানা কায়েছ আহমদ আব্দুল্লাহ।
প্রধান অতিথি ছিলেন লিসবনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের দূতালয় প্রধান এস এম গোলাম সরওয়ার, পর্তুগাল বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রবীণ ব্যক্তিত্ব পর্তুগাল ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট রানা তাসলিম উদ্দীন, প্রেসক্লাবে সভাপতি রনি মোহাম্মদ, তরুণ উদ্যোক্তা রনি হোসাইন, আব্দুল মুকিত চৌধুরী সেলিম, মিনহাজ, রাসেল আহম্মেদ, শাহাব উদ্দীন, এনামুল হক, শহীদ আহমেদ প্রিন্স, হাফিজ আল আসাদ।
উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক ইমরান খান, যুগ্ম সদস্য সচিব আহমেদ লিটন, সদস্য ডাল্টন জহির, আনোয়ার হোসেন, সুমন হোসেন, লাবনী খাতুন, মোরারিয়া ব্যবসায়ী, পর্তুগাল বাংলা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দসহ পর্তুগালের ব্যবসায়িক, সামাজিক, রাজনৈতিক, আঞ্চলিক নেতৃবৃন্দ। ইফতার পূর্বে মুসলিম উম্মার শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে :
ডেমক্র্যাটিক পার্টির জাতীয় কমিটির (ডিএনসি) ভাইস চেয়ারম্যান (Civic Engagement and Voter Participation ) পদে প্রথম মুসলমান প্রার্থী বাংলাদেশী-আমেরিকান ষ্টেট সিনেটর (জর্জিয়া) শেখ রহমান চন্দন ২৪ জানুয়ারি সাউথ ক্যারলিনায় অনুষ্ঠিত পার্টির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরামে বলেছেন, এখনও সময় হচ্ছে নেতৃত্বে আমার মত লোকের আসার। ট্রাম্পের মত লোকেরা বারবার আসছেন এবং চলেও যাচ্ছেন। কিন্তু আমার মত বাদামি রংয়ের মানুষেরা, মুসলমানেরা কখনোই এদেশ-সমাজ থেকে চলে যাবো না। বিভিন্ন অঞ্চল ও স্টেটের নেতৃবৃন্দের তুমুল করতালির মধ্যে সিনেটর শেখ রহমান চন্দন আরো বলেন, গত নির্বাচনে ডেমক্র্যাটিক পার্টির বিপর্যয়ের মূল কারণগুলো খতিয়ে দেখতে হবে। শুধু হোয়াইট হাউজ আর ক্যাপিটল হীলেই নয়, স্টেট, সিটি ও কাউন্টি প্রশাসনেও ডেমক্র্যাটিক পার্টির বিজয়ের পথ সুগম করতে আমাদের কাজ করতে হবে। আমি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হলে আগামী ৯০দিনের মধ্যে বিজয় নির্দ্ধারণী ৭টি স্টেটে গিয়ে আপামর মানুষের সাথে মতবিনিময় করবো। সামনের দু’বছরের মধ্যে সকল টেরিটরিসহ ৫০টি স্টেট ভ্রমণ করবো এবং ডেমক্র্যাটিক পার্টির প্রতি আমেরিকানদের আস্থার ভিত পুনপ্রতিষ্ঠায় কাজ করবো। এটাই সময়ের দাবি। শেখ রহমান চন্দন আরো উল্লেখ করেছেন, ভোটারের নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথ সুগম করতেও সুদূর প্রসারি পরিকল্পনা জনসমক্ষে উপস্থাপন করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, ধর্ম-বর্ণ-জাতিগোষ্ঠির প্রতিনিধিত্বকারিরা নীতি-নির্দ্ধারণে অংশগ্রহণের অবাধ সুযোগ পেতে হবে। বিশেষ কোন বর্ণ আর জাতি-গোষ্ঠির আধিক্য পরিহার করতে পারলেই নাজুক অবস্থা থেকে ডেমক্র্যাটিক পার্টিকে উদ্ধার করা সহজ হবে। কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার সরারচরের সম্ভ্রান্ত এক পরিবারের সন্তান শেখ রহমান চন্দন ২০১৮ সাল থেকে ডিস্ট্রিক্ট-৫ আসনে জর্জিয়া লোকাল সরকারের স্টেট সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত হয়ে আসছেন। এটা হচ্ছে তার চতুর্থ টার্মের দায়িত্ব। ১৯৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর আমেরিকান স্বপ্ন পূরণের অভিপ্রায়ে উচ্চ শিক্ষায় মনোনিবেশ করেন এবং সেন্ট্রাল পাইডমন্ট কম্যুনিটি কলেজে ভর্তি হন। ১৯৯৫ সালে তিনি জর্জিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যবসা প্রশাসনে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তারপর কর্মজীবনে পেশাগত দক্ষতা প্রদর্শনের পাশাপাশি বসবাসকারি এলাকার বিভিন্ন ভাষা ও বর্ণের মানুষের সাথে সম্পর্ক নিবিড় করতে সক্ষম হন। সেই পথ বেয়েই আফ্রিকান-আমেরিকান ও শ্বেতাঙ্গ আমেরিকান অধ্যুষিত এলাকা থেকে বারবার বিজয়ী হচ্ছেন। স্পষ্টভাষী শেখ রহমান চন্দনের স্ত্রী আফরোজা এবং এক পুত্র আঞ্জার ও এক কন্যা রাওদাকে নিয়ে নির্বাচনী এলাকাতেই স্থায়ীভাবে বাস করছেন। ডিএনসি নির্বাচনে বিজয়ের ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত আশাবাদি।
উল্লেখ্য, গত নির্বাচনে ট্রাম্পের কাছে কমলা হ্যারিসের পরাজয়ের পাশাপাশি সিনেট এবং হাউজেরও সংখ্যাগরিষ্ঠতা খুইয়েছে ডেমক্র্যাটরা। অনেক স্টেটের আসনও হারিয়েছে। এহেন অবস্থায় ডেমক্র্যাটিক পার্টির নেতৃত্বে উদ্যমী-কর্মঠ-মেধাবি এবং ধর্ম-বর্ণ-অঞ্চল নির্বিশেষে সকল আমেরিকানের আস্থা রয়েছে-এমন ব্যক্তিগণের প্রয়োজনীয়তা অনুভ’ত হচ্ছে। সে তাগিদ সম্ভাব্য সকল প্রার্থীর মধ্য থেকেই উচ্চারিত হচ্ছে। উল্লেখ্য, ৩০ জানুয়ারি থেকে ৩দিনের এই জাতীয় সম্মেলন হবে ম্যারিল্যান্ড স্টেটে ন্যাশনাল হার্বারে। পার্টির চেয়ারম্যান, ট্রেজারার, ভাইস চেয়ারসহ বিভিন্ন পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১ ফেব্রুয়ারি। আরো উল্লেখ্য, প্রথম বাংলাদেশী এবং প্রথম মুসলমান প্রার্থী হলেও ষ্টেট সিনেটর শেখ রহমান চন্দনকে ইতিমধ্যেই ৬ টেরিটরি-সহ অধিকাংশ স্টেটের ডেলিগেটরা সাপোর্ট দিয়েছেন। এরফলে তার নির্বাচনের পথ অনেকটা সুগম হয়েছে বলে আশা করা হচ্ছে। ভাইস চেয়ার পদে তার প্রতিদ্বন্দ্বিরা হলেন কংগ্রেসওম্যান (ওহাইয়ো ) জয়েস বীটি, কংগ্রেসওম্যান নিকেমা উইলিয়ামস (জর্জিয়া), বর্তমান কমিটির ভাইস চেয়ার সাবেক স্টেট অ্যাসেম্বলীম্যান (নিউইয়র্ক) মাইকেল ব্ল্যাক প।
সময়ের প্রয়োজনে চার বছর মেয়াদি (২০২৫-২০২৯) ডেমক্র্যাটিক পার্টির জাতীয় কমিটির আসন্ন নির্বাচন নিয়ে সরগরম শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলোও। সচেতন ভোটারেরও অধীর আগ্রহে নয়া নেতৃত্ব প্রত্যাশা করছেন। তেমন একটি আকাঙ্খার পরিপূরক কমিটির চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৮ জন। এর অন্যতম হচ্ছেন ম্যারিল্যান্ড স্টেটের সাবেক গভর্ণর এবং সোস্যাল সিকিউরিটি এডমিনিস্ট্রেশনের কমিশনার মার্টিন ও’ম্যালি, উইসকনসিন স্টেট ডেমক্র্যাটিক পার্টির চেয়ারম্যান বেন উইকলার, বিদায়ী কমিটির ভাইস চেয়ার কেন মার্টিন, ইউএস সিনেট প্রার্থী (ম্যারিল্যান্ড) রবার্ট হোটন, এটর্নী ও রাজনৈতিক বিশ্লেক (ম্যাসেচুসেট্স)জ্যাসন পোল, বাইডেন ও ওবামা প্রশাসনে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকারী ন্যাট স্নাইডার, ডেমক্র্যাটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার টিমে দায়িত্বপালনকারি সংগঠক ও লেখক ম্যারিয়েন উইলিয়ামসন এবং টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটির এডজাঙ্কট প্রফেসর কুইনটেসা হ্যাথাওয়ে। ট্রেজারার পদে লড়ছেন অলাভজনক একটি সংস্থার সিইও এবং নর্থ ক্যারলিনা ডেমক্র্যাটিক পার্টির ওরেঞ্জ কাউন্টি শাখার সাবেক চেয়ারপার্সন ম্যাট হাজেজ এবং বিদায়ী কমিটির ট্রেজার ভার্জিনিয়া ম্যাকগ্রেগর। সেক্রেটারি পদেও সরাসরি লড়াই হচ্ছে দু’প্রার্থীর। এরা হলেন নিউজার্সি শ্রম দফতরের সাবেক ডেপুটি কমিশনার ম্যারিলিন ডেভিস এবং বিদায়ী কমিটির সেক্রেটারি জ্যাসন র্যা। ন্যাশনাল ফাইন্যান্স চেয়ার পদে পুনরায় লড়ছেন বিদায়ী কমিটির চেয়ার ক্রিস কর্গ এবং ডেপুটি চেয়ার ক্রিস্টফার লওই।