অনলাইন ডেস্ক :
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার ও পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে গণহত্যার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আজ ১২ মার্চ বুধবার এ আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর, গণজাগরন মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার ও বেনজির আহমদ।
এ ছাড়া অন্য মামলায় কারাগারে থাকায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সাবেক আইজিপি শহিদুল হক, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোল্লা নজরুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চলারপথে ডেস্ক :
ই-হজ ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রা অনেক সহজ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ ১৯ মে শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর আশকোনা হজ ক্যাম্পে চলতি বছরের হজ কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ই-হজ ব্যবস্থাপনার কারণে হজযাত্রা অনেক সহজ হয়েছে। এ বছর শতভাগ হজযাত্রী সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সম্পন্ন করতে পারবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের উন্নয়ন যেন অব্যাহত থাকে, মানুষ যেন মর্যাদা নিয়ে চলতে পারে সে লক্ষ্যেই বর্তমান সরকার কাজ করেছে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, অল্প খরচে হজে পাঠানোর ব্যবস্থা বঙ্গবন্ধু করে দিয়েছিলেন। স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু সৌদির বাদশাহর কাছে অনুরোধ করেছিলেন, যেন দেশের মানুষ হজে যেতে পারেন। সৌদি বাদশাহও ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, বাবা সরকারে এসেই হজ ব্যবস্থা যেন সুষ্ঠুভাবে হয় তার ব্যবস্থা নেন। ওই সময় যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। রিজার্ভ মানি নেই, কারেন্সি নোট নেই, গোলায় খাবার নেই। এর মধ্যে মানুষ যেন অল্প খরচে হজ করতে পারে সেই ব্যবস্থা তিনি করেছিলেন। হিজবুল বাহার নামে একটি জাহাজ ক্রয় করে হজের ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু ’৭৫ পরে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে ওই জাহাজটিকে প্রমোদতরীতে পরিণত করে। তখন আর হজ যাত্রা হতো না। এটা দুঃখজনক।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বিএনপি-জামায়াত আমলের সব অব্যবস্থাপনা কাটিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার হজ ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন এনেছে। বর্তমানে আমরা ই-হজ ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ভিসা জটিলতা দূর হয়েছে। ফ্লাইট বিপর্যয়ও এখন তেমন একটা হয় না। হজ ব্যবস্থাপনাও অনেক সহজ হয়েছে। এছাড়া প্রাক-নিবন্ধন করা, নিবন্ধন রিফান্ড, মক্কা রোড সার্ভিস, ই-হেলথ, ই-ভিসা সব কিছুই এখন অনলাইনে করা যায়।
তিনি আরও বলেন, ধর্ম একটি পবিত্র জিনিস। পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা চলবে না। আমরা জঙ্গীবাদবিরোধী কর্মসূচিতে আলেম ওলামাদেরকে সম্পৃক্ত করেছি। আজ সারাবিশ্বে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি মডেল হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সংসদ সদস্য হাবিব হাছান, ধর্মবিষয়ক সচিক কাজী এনামুল হাসান এনডিসি, ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান প্রমুখ।
এর আগে, সকালে এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন শেখ হাসিনা। জানা গেছে, চলতি হজ মৌসুমে হজযাত্রীদের প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হবে স্থানীয় সময় আগামী ২১মে রাত পৌনে ৪টায়। এ বছর প্রি-হজ ফ্লাইটে মোট ১৬০টি ডেডিকেটেড ফ্লাইট পরিচালনা করবে বাংলাদেশ বিমান। নির্ধারিত সময় ২১মে রাত পৌনে ৪টায় প্রথম ফ্লাইট বিজি ৩০০১ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জেদ্দার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে।
ফ্লাইটটি এদিনই জেদ্দা বিমানবন্দরে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৭টায় অবতরণ করবে। আগামী ২২ জুন বিমানের প্রি-হজ ফ্লাইট শেষ হবে।
চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পবিত্র হজ পালনের অনুমতি পেয়েছেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস হজযাত্রীদের ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ৬৩ হাজার ৫৯৯ জনকে পরিবহন করবে। আগামী ২১ মে থেকে শুরু হবে চলতি হজ মৌসুমের প্রথম হজ ফ্লাইট।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া- ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা রেল পথে চলাচলকারী তিতাস কমিউটার ট্রেন ভাতশালা স্টেশনে যাত্রা বিরতির দাবিতে মানববন্ধন করেছে সুলতানপুর, মাছিহাতা ও বাসুদেব ইউনিয়নের কয়েকশত গ্রামবাসী। আজ ২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাতশালা রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা সহ ১৮টি গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার সাধারণমানুষ অংশগ্রহণ করেন।
তিতাস কমিউটার যাত্রা বিরতি আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসানুজ্জামান ভূইয়া (তায়েফ) বলেন, ভাতশালা স্টেশনে ট্রেনটি গত ৮মাস আগেও যাত্রাবিরতি করতো। কিন্তু হঠাৎ করেই এই যাত্রাবিরতি বাতিল করেন তিতাস কমিউটার কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই এই অঞ্চলে যাত্রী প্রবাসী এবং শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন। তারা ঢাকা যাতায়তের ক্ষেত্রে আখাউড়া অথবা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে চরম দূর্ভোগে পরেছেন যাত্রীরা। ছাত্র জনতা অবিলম্বে ট্রেন টি পুনরায় ভাতশালা স্টেশনে যাত্রা বিরতির দাবি জানাই। আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে গণসাক্ষর জমাদেবো। যদি আগামী ৬ অক্টোবরের মধ্যে আমাদের দাবি না মানা হয়, তাহলে আমরা দ্বিতীয় ধাপে আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
মানববন্ধন চলাকালে জয়নাল আবেদীন ভূইয়া বলেন, “আখাউড়া থেকে ভোরে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় তিতাস কমিউটার ট্রেনটি। আবারো রাতে আখাউড়ার উদ্যোশে ফিরে আসে। যাত্রা পথে গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে স্টেশন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভাতশালা স্টেশনে ট্রেনটি গত ৮মাস আগেও যাত্রাবিরতি করতো। কিন্তু হঠাৎ করেই এই যাত্রাবিরতি বাতিল করেন তিতাস কমিউটার কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই এই অঞ্চলে যাত্রী প্রবাসী এবং শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন। তারা ঢাকা যাতায়তের ক্ষেত্রে আখাউড়া অথবা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে চরম দূর্ভোগে পরেছেন যাত্রীরা। ছাত্র জনতা অবিলম্বে ট্রেন টি পুনরায় ভাতশালা স্টেশনে যাত্রা বিরতির দাবি জানান। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারন করেন বক্তারা।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কবির আহম্মেদ ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক মহিউদ্দিন মুক্তা বলেন এটা আমাদের নাগরিক যুক্তি দাবি এই দাবি অবিলম্বে কার্যকর করা হোক।
মো: আক্কাছ মীর সমন্বয় বলেন, এখানে আগে তিতাস ট্রেন দাঁড়াতো। কিন্তু এখন অজানা কারণে ট্রেন আর দাঁড়ায় না। এতে করে আমরা তিন ইউনিয়নের মানুষ চরম ভোগান্তীতে আছি। আমরা চাই আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তিতাস ট্রেন আমাদের স্টেশনে না দাড়ালে আমরা কঠোর আন্দোলন করতে বাধ্য হবো।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাগেরহাটে সুন্দরবন সংলগ্ন শরণখোলা উপজেলার একটি খালে জেলের জালে মিলেছে ১০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৫ কেজি ওজনের একটি অজগর সাপ।
আজ ১৫ জুন বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার পশ্চিম কদমতলা গ্রামের জেলে হারুন খলিফার জালে আটকা পড়ে ওই অজগরটি। সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় ওয়াইল্ড টিমের মাঠকর্মী মো. আলম হাওলাদার খবর পেয়ে অজগরটি উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত অজগর সাপটি বৃহস্পতিবার দুপুরে সুন্দরবনের শরণখোলা স্টেশন সংলগ্ন বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
জেলে হারুন খলিফা জানান, বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে পশ্চিম কদমতলা গ্রামে তার বাড়ির সামনের খালে মাছ ধরার জন্য জাল পেতে রাখেন। বৃহস্পতিবার সকালে জাল তুলে তিনি দেখেন মাছের পরিবর্তে জালে বিশাল এক অজগর সাপ আটকা পড়েছে। তিনি স্থানীয় লোকজনকে জানালে তারা অজগরটি না মেরে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় ওয়াইল্ড টিমের মাঠকর্মী আলম হাওলাদারকে খবর দেয়। ওয়াইল্ড টিমের মাঠকর্মী আলম হাওলাদার এসে অজগরটি উদ্ধার করে সুন্দরবনের শরণখোলা স্টেশনে নিয়ে যান।
সুন্দরবনের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম জানান, সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে চয়ে যাওয়া অজগরটি দৈর্ঘ্য ১০ ফুট এবং ওজন ১৫ কেজি। উদ্ধারকৃত অজগরটি দুপুরে সুন্দরবনের শরণখোলা স্টেশন সংলগ্ন বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। সফররত সংযুক্ত আরব আমিরাতের শিল্প ও উন্নত প্রযুক্তি মন্ত্রী ড. সুলতান আহমেদ আল জাবের আজ ২০ জুলাই বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে আমিরাতের মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রচলিত জ্বালানির পাশাপাশি জ্বালানি খাতে বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতি খুবই আগ্রহী।’
জ্বালানি কোম্পানি মাসদার-এর চেয়ারম্যান এবং আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানির (এডিএনওসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. সুলতান আহমেদ বলেন, তারা সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে বাংলাদেশে দুটি দল পাঠাবেন‒ একটি নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে আলোচনার জন্য এবং অন্যটি ব্যবসা নিয়ে আলোচনার জন্য। বৈঠকে তারা মূলত অর্থনৈতিক সহযোগিতাসহ জলবায়ু পরিবর্তন ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন।
আমিরাতের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিশেষ দূত এবং ২৮তম কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস (কপ২৮) এর মনোনীত প্রেসিডেন্ট ড. সুলতান আহমেদ জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং এ বিষয়ে তাঁর আরো সমর্থন কামনা করেন।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জলবায় পরিবর্তন ও খাদ্য নিরাপত্তা ইস্যুতে সহায়তা বাড়ানোরও অনুরোধ করেন। ‘আমরা একটি গেম চেঞ্জার হতে চাই’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা কপ২৮ এর আগে সমস্যা সমাধানের জন্য জলবায়ু তহবিল সংগ্রহের ওপর জোর দিচ্ছেন। এরপর তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতকে সবুজ করা হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতের কপ২৮ থেকে একটি ইতিবাচক প্রভাব পেতে চান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কপ২৮ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই সম্মেলনে প্যারিস চুক্তির বৈশ্বিক স্টকটেক নিয়ে আলোচনা হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, ইউএই প্রেসিডেন্সি ১.৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য বিশ্বব্যাপী জলবায়ু কর্মপন্থাকে ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে অগ্রগতি এবং তার পাশাপাশি বিশাল ব্যবধানের একটি বাস্তবসম্মত মূল্যায়ন করতে সহায়তা করবে। বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মধ্যে অনেক বিষয়ে মিল রয়েছে।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এবং বাংলাদেশে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আলী আল হামুদি উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : বাসস
অনলাইন ডেস্ক :
সব দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হলো- সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। আমরা সেই নীতিই মেনে চলি। আমাদের উন্নয়নে বা আমাদের অগ্রযাত্রায় কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করুক- সেটা আমরা চাই না, সেটা আমরা বরদাশত করব না।
আজ ২ জুলাই রবিবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ জনগণের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী রূপ তো এ দেশের মানুষ দেখেছে। এদের কাছে রাজনীতি বলে কিছু নেই, ক্ষমতা হচ্ছে তাদের অর্থ বানানোর মেশিন; ক্ষমতা হচ্ছে জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসী দল। ওরা যদি ক্ষমতায় আসে, আবার এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে; এ দেশের সর্বনাশ করে দেবে। কাজেই সেটা যেন তারা করতে না পারে, সেজন্য সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘কানাডার ফেডারেল কোর্ট এই কথাই বলেছিল যে বিএনপি একটা সন্ত্রাসী সংগঠন। ওই সন্ত্রাসী সংগঠনের কোনো অধিকার নেই বাংলাদেশের মানুষ নিয়ে কথা বলার।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু লোক আছে, কথায় কথায় নালিশ করে, তো নালিশ করে কি হয়! ওই যে কথায় আছে না, ‘নালিশ করে বালিশ পাবে’। ওরা কিন্তু ওটাই পাওয়ার যোগ্য।
বিএনপির হাতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতিত হওয়ার বর্ণনা দিতে গিয়ে আওয়ামী সভাপতি বলেন, ‘২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান- কেউই বাদ যায়নি তাদের অত্যাচার-নির্যাতন থেকে, মানুষকে গুলি করে মারা, হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে মারা, চোখ তুলে নেওয়া, হাত কেটে নেওয়া- এমন কোনো সন্ত্রাসী কাজ নাই বিএনপি না করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর কারও প্রতি প্রতিশোধ নিতে চায়নি। প্রতিশোধ যদি নিতে যেতাম, তাহলে ওই বিএনপি বা জামায়াতের অস্তিত্ব থাকত না।’
এ সময় তিনি বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলসহ বিভিন্ন সময়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রাণহানি ও নির্যাতনের যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেসব বিষয়ে বিচার নিশ্চিতে আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীদের কাজ করার নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, ‘অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ পুড়িয়ে মারা, পুলিশ মারা, বিভিন্ন সময় আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করা, বহু আসামি এখনও ঘুরে বেড়ায়। এরা যেন ঘুরে বেড়াতে না পারে। এদের যেন যথাযথ শাস্তি হয়। এদের যেন বিচার হয়।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফিউজিটিভ (পলাতক) হয়ে ওই লন্ডনে বসে এখন সোশাল মিডিয়ায় বড় বড় কথা বলে। চোরের বড় গলা- কথায় আছে, সেই চোরের বড় গলাই আমরা শুনি। এত সাহস থাকলে বাংলাদেশে আসে না কেন?’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১০ ট্রাক অস্ত্র, একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাদের হত্যার চেষ্টা, আইভী রহমানসহ আমাদের ২২ জন নেতাকর্মী হত্যা করেছে- মানি লন্ডারিং, দুর্নীতি এমন কোনো অপকর্ম নাই যে না করে গেছে। আজকে সাজাপ্রাপ্ত, পলাতক।’
দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে। ‘মাই হাউস, মাই ফার্ম’, কমিউনিটি ক্লিনিক, ডিজিটাল বাংলাদেশ, ‘মাই ভিলেজ, মাই টাউন’ ইত্যদি কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং নানা সামাজিক নিরাপত্তামূলক কাজের মাধ্যমে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। গ্রামগুলো এখন আর গ্রাম নাই। আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছি। রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করেছি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। আমার লক্ষ্যই হলো দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা।
তিনি বলেন, ‘৬ বছর নির্বাসনে থেকে ফেরার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরেছি। দেশের এমন কোনো অঞ্চল নেই যেখানে যাইনি। নৌকা, সাম্পান, লঞ্চ, রিকশা-ভ্যানে চড়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়েছি। সে অভিজ্ঞতা থেকেই গ্রামাঞ্চলের উন্নয়ন করছি।’
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। তিনি দেশবাসীর মুখে হাসি ফোঁটাতে চেয়েছিলেন। যার জন্য দ্বিতীয় বিপ্লব কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ হত্যা করা হয়। একই বছরের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। দেশের অগ্রগতি থামিয়ে দেওয়ার জন্যই এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। বঙ্গবন্ধুকে এমন সময়ে হত্যা করা হয়েছিল যখন দেশ অর্থনৈতিক মুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল।’
টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া আসনের সংসদ সদস্য শেখ হাসিনা তার নির্বাচনী এলাকার মানুষকে কৃতিত্ব দিয়ে বলেন, ‘দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আমাকে অনেক বেশি সময় দিতে হয়। সাধারণত অন্য সংসদ সদস্যরা শুধুমাত্র তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার দেখাশোনা করেন। আমাকে ৩০০টি নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হয়। কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ার বাসিন্দারা আমার এলাকার দায়িত্ব নিয়েছেন বলেই আমি সারা দেশে বেশি নজর দিতে পারছি।’
মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ার উন্নয়ন নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের অভিজ্ঞতার কথা শুনতে চান। এ সময় নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। এজন্য তারা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বার্ধক্যজনিত কারণে অবসরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে উপস্থিত নেতাকর্মীরা তাকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে রাজনীতিতে থাকার অনুরোধ জানান। তারা শেখ হাসিনাকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেন।
মতবিনিময় সভায় সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলী খান ও সাধারণ সম্পাদক জিএম সাহাবুদ্দিন আজম উপস্থিত ছিলেন।
মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খায়ের। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ। দুপুরে মধ্যাহ্নভোজ শেষে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন।