চলারপথে রিপোর্ট :
বিটঘরে ধর্ষক সন্দেহে আব্দুল খালেক নামে এক যুবককে গণপিটুনি দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২৪ মার্চ সোমবার সকাল ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বিটঘর ইউনিয়নে বিক্ষোভ মিছিলটি বিটঘর উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু হয়ে বিটঘর বাজার প্রদক্ষিণ করে বিটঘর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে এসে এক প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিটঘর গ্রামের মোঃ জসিম, এনামুল ইসলাম, মাসুক মিয়া, ইকবাল হোসেন, মোঃ দুলাল, জেসমিন আক্তার, ইয়াছমিন আক্তার, ফাতেমা বেগম, সাজেদা বেগম, রোজিনা আক্তার ও শেফালি আক্তার। বক্তারা বলেন, আব্দুল খালেক একজন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলে। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী আব্দুল খালেককে গত ১৯ মার্চ সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে ঢেকে এনে ধর্ষক সন্দেহে স্থানীয় ছাত্র-জনতা তাকে গণপিটুনি দেয়। তারা বলেন, ঐদিন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান খালেককে ছাত্র-জনতার গণপিটুনি থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কাছে তুলে দেয়। বর্তমানে সে এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী আব্দুল খালেককে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
বিটঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী জাফর দস্তগীর জানান, ঐদিন ধর্ষণ চেস্টার ঘটনাটি শুনে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই ছাত্র-জনতা খালেককে ধরে এনে গণপিটুনি দেন। বিষয়টি নিয়ে ধোয়াশা আছে। আমি চাই প্রশাসনের তদন্তের মাধ্যমে সঠিক ঘটনাটি বেরিয়ে আসুক।
সফিকুল ইসলাম বাদল, নবীনগর :
সমাজ থেকে অন্যায় অপরাধ দূর করতে আর হারানো ঐতিহ্য ধরে রাখতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার মনতলা ব্রীজের পাশে আজ ২৪ জানুয়ারি শুক্রবার বিকালে ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলার আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাক-ঢোলের বাজনায়, গানের তালে তালে যেন এ আনন্দময় উৎসব আয়োজন। ঢাক, ঢোলের তালে তালে চলে লাঠির কসরত। প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা ও পাল্টা আঘাত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন লাঠিয়ালরা। তাতে উৎসাহ দিচ্ছেন শত শত দর্শক। আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই আয়োজনকে ঘিরে স্থানীয়দের মাঝে ছিলো উৎসবের আমেজ। লাঠি খেলা দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন দর্শকরা। যুবসমাজের মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক আয়োজন রাখতে পারে কার্যকরী ভূমিকা। নিয়মিত এই ধরনের আয়োজনের দাবি দর্শকদের।
এসময় নবীনগর পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু সাঈদের সভাপতিত্বে ও সোহেল খানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন নবীনগর দ্বাদশ নির্বাচনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী নাজমুল হোসেন তাপস।
উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন নবীনগর পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান নূর আজ্জম, রিয়াদস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বকুল হোসাইন, নবীনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বকুল,নবীনগর পৌর যুবদলের আহবায়ক আলী আজম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের সহ সভাপতি ইকবাল হোসেন রাজু,নবীনগর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু খান, নবীনগর উপজেলা জিয়া মঞ্চের সদস্য সচিব রুবেল আকরাম,নবীনগর পৌর জিয়া মঞ্চের আহবায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন, নবীনগর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক আপেল মাহমুদ, নবীনগর পৌর জিয়া মঞ্চের যুগ্ম আহবায়ক সোহেল রানা।
আমন্ত্রিত অতিথিরা বলেন, কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া এই খেলা আজও টিকিয়ে রেখেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার কুড়িঘর গ্রামের লাঠিয়াল বাহিনী। গ্রামীণ এ ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলাকে টিকিয়ে রাখতে পৃষ্ঠপোষকতা দরকার। তাই নিয়মিত আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতার দাবি জানানো হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার পৌরসভার বিজয় পাড়া এলাকার প্রায় দুই শতাধিক পরিবারকে পানিবন্দী অবস্থায় থেকে উদ্ধারের জন্য অবশেষে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ গ্রহন করেছেন।
আজ ৬ জুলাই শনিবার এলাকাটি পরির্দশনে যান মেয়র অ্যাডভোটেক শিব শংকর দাস। নেতৃস্থানীয়দের সাথে আলোচনা করেন এবং আজ ৭ জুলাই রবিবার রাস্তা থেকে পানি নিস্কানের কাজ শুরুর কথা জানান। তিনি আরো বলেন, রাস্তায় যে সমস্ত স্প্রীটবেকার আছে সেগুলো সরিয়ে ফেলা হবে এবং রাস্তার উপর কোন নির্মান সামগ্রী রাখা যাবে না। এ সময়, আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম, কাউন্সিলর আবু সাঈদ, কাউন্সিলর আবু তাহের, সিনিয়র সাংবাদিক মাহাবুব আলম লিটন, গৌরাঙ্গ দেব নাথ অপুসহ স্থানীয় সংবাদকর্মী এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, ওই পাড়ায় পানির নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর, একটিু বৃষ্টি হলেই রাস্তায় হাটু সমান পানি হয়ে যায়। গত ২০ জুন ওই এলাকার সচেতন নাগরিক সমাজ পানি নিষ্কাশনের দাবিতে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
শফিকুল ইসলাম বাদল :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।
আজ ২৯ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি (দুপ্রক) নবীনগর উপজেলা শাখার সহযোগীতায় পৌর এলাকার আলিয়াবাদ চারগ্রাম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়। সাপ্তাহিক নবীনগর পত্রিকার সম্পাদক, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য আব্বাস উদ্দিন হেলালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চারগ্রাম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এডহক কমিটির সভাপতি মো: ইকবাল হোসেন। এসময় বক্তব্য দেন উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আবু কামাল খন্দকার, সদস্য সচিব, নবীনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন শান্তি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, চারগ্রাম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহাবুব রহমান, নবীনগর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মাহাবুব আলম লিটন, জালাল উদ্দিন মনির, সাংবাদিক জামাল হোসেন পান্না, হেলাল উদ্দিন সহ চারগ্রাম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকমন্ডলী ও অভিভাবকগণ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, নাগরিক সচেতনতা সৃষ্টি না হলে শুধু আইন দিয়ে দুর্নীতি কমানো সম্ভব নয়। আর ‘দুর্নীতি রেখে দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়, উন্নয়ন হলেও তা টেকসই হবে না। দুর্নীতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে সকলে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।’ আর এ বিষয়ে ছাত্র ও তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। দুর্নীতিকে মনেপ্রানে ঘৃণা করতে হবে। আগামীর বাংলাদেশকে সাজাতে ছাত্র ও তরুণ সমাজকেই বেশী দায়িত্ব নিতে হবে। অনুষ্ঠানে দুর্নীতি দমন কমিশনের দেয়া খাতা, কলম, স্কেল, জ্যামিতি বক্স, ছাতা, টিফিন বক্স, পানির পট, পোস্টার, লিফলেট সহ আরো নানান শিক্ষা উপকরণ শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর ঢেঁড়স চাষ করে বেকারত্ব ঘুঁচিয়েছেন শিবপুর ইউনিয়নের কাজুলিয়া গ্রামের খাইরুল বাসার ও ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর গ্রামের (দ. পাড়া) জয়নাল মিয়া। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে তাঁরা এখন তাদের পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন। স্বল্প সময় ও অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় আরও অনেকেই এখন ঢেঁড়স চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, খাইরুল বাশার এ বছর ৪০ শতক এবং জয়নাল মিয়া ২০ শতক জমিতে ঢেঁড়স চাষ করেন। তাঁরা নিজেরাই জমি থেকে ঢেঁড়স উত্তোলন করছেন। আলাপ কালে জয়নাল মিয়া জানান- তার বাবা অসুস্থ্য হওয়ায় ২০২০ সালে চাকরি ছেড়ে চলে আসেন গ্রামের বাড়িতে। এরপর আর ভাল কোন চাকরি না পাওয়ায় বাড়ীর পাশের জমিতে শুরু করেন সবজি চাষ। তিনি এক বিঘা জমি নিয়ে শুরু করেন ঢেঁড়সের চাষ। স্বল্প সময়ে এই ঢেঁড়স চাষ করে বেশ লাভবানও হয়েছেন তিনি। তিনি বলেন- এখানকার মাটি বেশ উর্বর থাকায় তার উৎপাদন খরচও অনেক কম হয়েছে। তার এক বিঘা জমিতে ঢেঁড়স চাষ করতে ৬/৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৪০ হাজার টাকার বিক্রি করেছেন। একদিন পরপর জমি থেকে ঢেঁড়স উত্তোলন করতে হয়। এতে তেমন কোন শ্রমিকের (লেবার) প্রয়োজন হয় না। জমি থেকেই পাইকারি ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন- “ আমি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শক্রমে বারি উদ্ভাবিত ‘বারি ঢেঁড়স-১’ জাতের ঢেঁড়সের চাষ করেছি। বাজারে ঢেঁড়সের দাম ভাল থাকায় লাভবানও হচ্ছি। এ বছর ঢেঁড়সের পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় খরচও কম হয়েছে ”।
এ ব্যাপারে নবীনগর উপজেলা কৃষি অফিসার জগলুল হায়দার বলেন- “এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে ঢেঁড়সে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হয়েছে। আর ঢেঁড়সের বিভিন্ন জাতের মধ্যে ‘বারি ঢেঁড়স-১’ এর ফলন ভাল। এটা চাষ করা লাভ জনক। তবে তার মত শিক্ষিত অনেক যুবকরাই এগিয়ে আসছে। আমরা কৃষি অফিস তাদের বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা করব”।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে বিভিন্ন অনিয়মের জন্য সাত দোকানিকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
গতকাল ২৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত নবীনগর পৌর শহরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে এই জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নবীনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা জাহান জানান, উপজেলার পৌর এলাকার বিভিন্ন বাজার ও হোটেলে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে বড় বাজারে চালের বাজারে মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় ৩ দোকানিকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি চালের দোকান গুলোতে অধিক মজুদ করা হচ্ছে কিনা তাও তদারকি করা হয়।
তিনি আরো জানান, চালের বাজারের পাশাপাশি হোটেল ও রেস্টুরেন্ট গুলোতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য পরিবেশনের দায়ে ৩টি রেস্টুরেন্ট ও ১টি হোটেলেকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জনস্বার্থে ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ সময় নবীনগর থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।