চলারপথে রিপোর্ট :
কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল বলেছেন, দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।
ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল বলেন, আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করেছি, কিন্তু সংস্কারের কথা বলে দীর্ঘ সময় নেবার সুযোগ নেই। আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া উচিত। নির্বাচন হলো গণতন্ত্রের অঙ্গ। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের ইচ্ছেমতো সরকার নির্বাচন করতে পারবে।
আজ ৩১ মার্চ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ঈদগাহ মাঠে ঈদ জামাত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, গণতান্ত্রিক সরকার না এলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। আমরা চাই নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার আসুক। যে দলই ক্ষমতায় আসুক, তারা সংস্কারের কাজগুলো করবে। এই সরকারের উচিত নির্বাচনের জন্য যে সংস্কার দরকার, তা করা।
তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সতর্ক করে বলেন, ‘যদি নির্বাচন শীঘ্রই না হয়, তাহলে আবার আরেকটি স্বৈরাচার বা ফ্যাসিস্ট সরকার প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। নির্বাচন যত দেরি হবে, ততই ফ্যাসিস্ট সরকারের উত্থান হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।’
জেলা ঈদগাহ মাঠে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন জেলা জামে মসজিদের খতিব মুফতি সিবগাতুল্লাহ নূর। পরে নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে মুনাজাত করা হয়।
এবার জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১ হাজার ৩০০ ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ৭৮০টি ঈদগাহ মাঠ এবং ৫১০টি মসজিদে ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। ঈদ জামাতকে ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
চলারপথে রিপোর্ট :
জয়পুরহাটের দূর্গাপুরে পরকীয়ার জেরে স্বামী হত্যার দায়ে স্ত্রী জ্যোৎস্না বেগম ও তার প্রেমিককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেকেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আজ ১১ মার্চ সোমবার বেলা ১১টায় জেলা অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম এ রায় দেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, জেলার আক্কেলপুর উপজেলার ইসমাইলপুর গ্রামের বাসিন্দা জামিরুল ইসলাম ক্ষেতলাল উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের জ্যোৎস্নাকে বিয়ে করে ঘরজামাই থাকতেন।
র মধ্যে একই উপজেলার দাশড়া গ্রামের শাহীন মিয়ার সঙ্গে জ্যোৎস্না বেগমের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর জেরে ২০১৫ সালের ৯ নভেম্বর বিকেলে প্রেমিক শাহীনকে সঙ্গে নিয়ে স্বামী জামিরুল ইসলামকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন জ্যোৎস্না বেগম।
এ ঘটনায় নিহতের চাচা ছানাউল ইসলাম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত আজ এই রায় দেন।
অনলাইন ডেস্ক :
ভারতব্যাপী মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে প্রতিবাদী সংগীতযাত্রা ‘সং মার্চ’ শুরু করেছে জাতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। আজ ২৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটায় পল্টনের মুক্তাঙ্গন থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়।
মুক্তাঙ্গন থেকে পিকআপভ্যানে করে ইসলামী সংগীত পরিবেশন করতে করতে সংগীত যাত্রা শুরু করেন জাতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সদস্যরা। এই ‘সং মার্চ’ থেকে ভারতব্যাপী মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদে ভারতীয় দূতাবাসে প্রতিবাদলিপি দেবেন তারা।
‘সং মার্চ’ পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জাতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি কবি মুহিব খান বলেন, ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর থেকে সারা ভারতজুড়ে নানা সময়ে নানা স্থানে নানাভাবে সেখানকার মুসলমানদের ওপর হত্যা, গুম, ধর্ষণ, ধ্বংসযজ্ঞ, উচ্ছেদ ও লাঞ্ছনাসহ নানারকম নির্যাতন সংঘটিত হয়ে আসছে। বিশেষ করে ১৯৯২ সালে অযোধ্যায় ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা থেকে নিয়ে ২০০২ সালে গুজরাটের নৃশংস মুসলিম হত্যা ও ধর্ষণযজ্ঞ, ২০১৩ সালে মুজাফফরাবাদের মুসলিম হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ, ২০২০ সালে দিল্লিজুড়ে মুসলিম হত্যা ও মসজিদসহ বিভিন্ন মুসলিম ঐতিহাসিক স্থাপত্যকলা ধ্বংসযজ্ঞ, সর্বশেষ ভারতীয় মুসলিম জনগোষ্ঠীর সম্পদ হরণ ও প্রতিকার হননের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে ভারতের পার্লামেন্টে গৃহীত ওয়াকফ আইন সংশোধন বিলকে কেন্দ্র করে ভারতীয় মুসলমানদের ওপর যে নিধন ও নির্যাতন চলছে আমরা বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর অঙ্গ ও অংশ হিসেবে এবং আধুনিক বিশ্বের মানবতাবাদী সভ্য মানুষ হিসেবে এসবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
কবি মুহিব খান আরো বলেন, আমরা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভারতের ধর্মান্ধ উগ্রবাদী গোষ্ঠীর ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী সন্ত্রাসী কার্যক্রম এবং কখনো কখনো এসব কর্মকাণ্ডে ভারত সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পৃষ্ঠপোষকতার বিরুদ্ধে শ্লোগান, সংগীত এবং সুস্পষ্ট বক্তব্যের মাধ্যমে দেশ ও বিশ্বকে জানিয়ে দিতে চাই যে, ভারতসহ পৃথিবীর যেকোনো ভূখণ্ডে নির্যাতিত মুসলমানদের পাশে আমরা আছি। শুধু মুসলিমরাই নন, নির্যাতন অন্যায় ও অমানবিকতার শিকার যেকোনো মানুষের পক্ষেই আমাদের অবস্থান। আমরা ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনারের মাধ্যমে ভারতীয় মুসলিমদের নাগরিক অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার, সামাজিক অধিকার, সাংস্কৃতিক অধিকার এবং নিজ ধর্মীয় অনুশাসন পালনের পূর্ণাঙ্গ অধিকার নিশ্চিত করতে এবং ভারতীয় মুসলমানদের সামগ্রিক নিরাপত্তা ও মর্যাদা সুরক্ষায় সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নিতে ভারত সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাচ্ছি।
কবি মুহিব খান বলেন, আমরা উগ্রতা ও সহিংসতায় বিশ্বাসী নই। আমরা চাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। আমরা চাই ধর্মান্ধ উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের পতন। আমরা চাই পৃথিবীর সব দেশের সব মানুষ নিজেদের ন্যায্য অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকুক। আমরা চাই বিশ্ব মানবতা এবং প্রতিটি মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতার বিজয় হোক।
অনলাইন ডেস্ক :
অতিবৃষ্টিতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে চলন্ত অটোরিকশার ওপর আকাশ মণি গাছ ভেঙে পড়েছে। এতে চালকসহ দুজন আহত হয়েছেন।
আজ ৫ আগস্ট শনিবার সকাল ১০টার দিকে সড়কের তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এতে সড়কে প্রায় ৩ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। দুপুর ১টার দিকে গাছটি সরিয়ে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ফায়ার সার্ভিসের রাঙ্গুনিয়া স্টেশনের টিম লিডার জাহেদুল ইসলাম জানান, দেড় ঘন্টারও অধিক সময়ের চেষ্টায় গাছটি অপসারণ করা হয়। আহত চালককে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, গত কয়েক বছর ধরে সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কের পাশের ঝুঁকিপূর্ণ গাছ উপড়ে পড়ছে। সড়কে হেলে পড়া গাছে ধাক্কা খেয়ে বাসের ছাদে থাকা এক যাত্রী মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে কয়েকবছর আগে। অ্যাম্বুল্যান্সে মরা গাছের ঢাল পড়ে স্বজনসহ রোগী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
চট্টগ্রাম–কাপ্তাই বাস মিনি বাস ওর্য়াকাস ইউনিয়নের সভাপতি আকদুল কুদ্দুছ জানান, এ সড়কে এ ধরনের অনেক গাছ রয়েছে। এসব গাছের কারণে এ সড়কে যান চলাচল ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ঘটনায় যাঁদের গণহারে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলার আসামি করা হয়েছে—এমন নিরপরাধ ব্যক্তিদের ভুয়া মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে দেশে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ (কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিওর)-এর ১৭৩ ধারায় ‘অন্তর্বর্তীকালীন তদন্ত প্রতিবেদন ইত্যাদি’ শিরোনামে নতুন একটি বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
এসংক্রান্ত একটি পরিপত্র শিগগিরই জারি করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এটি কার্যকর হলে নিরপরাধ ব্যক্তিদের দ্রুতই মুক্তির ব্যবস্থা করা হবে।
সূত্র আরো জানায়, প্রস্তাবিত পরিপত্রে ভুয়া মামলা থেকে নিরপরাধ ব্যক্তিদের অব্যাহতি দিতে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে আইন উপদেষ্টা/আইনমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি, মেট্রোপলিটন এলাকার জন্য মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এবং জেলা পর্যায়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে তিনটি কমিটি গঠন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই কমিটিগুলোই মামলা থেকে নিরপরাধ ব্যক্তিদের অব্যাহতি দিতে চূড়ান্ত সুপারিশ দেবে।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আইন অধিশাখার প্রধান কাজী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ঘটনায় যাদের গণহারে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলার আসামি করা হয়েছে এবং তা তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে—এমন ব্যক্তিদের ভুয়া মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে সিআরপিসিতে নতুন ধারা হয়েছে। সেটি কার্যকর করতে শিগগিরই পরিপত্র জারি করো হবে।
সূত্র জানায়, সিআরপিসির ১৭৩-এর নতুন ধারায় বলা হয়েছে:
১. অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন তলব : এখন থেকে মামলার তদন্ত চলাকালে যেকোনো পর্যায়ে পুলিশ কমিশনার, জেলার পুলিশ সুপার বা সমমর্যাদার কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তদন্তকারী কর্মকর্তাকে মামলার অগ্রগতির বিষয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারবেন।
২. অব্যাহতি : অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদনে যদি কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে সেই প্রতিবেদন আদালতে (ম্যাজিস্ট্রেট বা ট্রাইব্যুনাল) দাখিল করা যাবে। আদালত ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সন্তুষ্ট হলে সেই ব্যক্তিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে পারবেন।
৩. পুনরায় অন্তর্ভুক্তির সুযোগ : অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তি অব্যাহতি পেলেও সেটি চূড়ান্ত নয়।
যদি তদন্ত শেষে সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত ও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে পুলিশ প্রতিবেদনে (ধারা ১৭৩ অনুযায়ী) তার নাম পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করতে কোনো বাধা থাকবে না। উল্লিখিত ধারার আওতায় যেসব প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে তা চুলচেরা বিশ্লেষণ ও যাচাই-বাছাই করতেই মূলত তিনটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, প্রচলিত আইনে মামলা হওয়ার পর তদন্ত করে প্রমাণ পেলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ওই ঘটনায় অভিযোগপত্র দাখিল করে। ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮-এর ১৭৩ ধারায় মামলার তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ ধারায় পুলিশকে যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত শেষ করতে বলা হলেও কোনো সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি।
এতে বেশির ভাগ মামলার তদন্ত শেষ করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে মাসের পর মাস এমনকি বছরের পর বছর পর্যন্ত সময় নেন তদন্ত কর্মকর্তারা। এর বাইরে রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী বিভিন্ন মহলের চাপেও তদন্তে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হয়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ, মামলার তদন্ত হয় এজাহারে (এফআইআর) থাকা অপরাধের অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে। তদন্ত শুরু হলে মামলার এজাহারে নাম থাকা অনেক আসামি সেই অপরাধে জড়িত ছিলেন না বলে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে নিশ্চিত হওয়া যায়। তবে আইনগত সীমাবদ্ধতার কারণে পুলিশি প্রতিবেদন দেওয়ার আগে তাঁকে দায়মুক্তি দেওয়ার সুযোগ থাকে না। আবার পুরো ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে পুলিশও প্রতিবেদন দিতে পারে না। এতে অনেক নিরপরাধ ব্যক্তির হয়রানির ক্ষেত্র তৈরি হয়। সরকার ও পুলিশের পক্ষ থেকে নিরপরাধ ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করতে নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা উপেক্ষিত থাকছে। তদন্তে মামলার অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনের বিধান যোগ করে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮-এর অধিকতর সংশোধন করে প্রণীত অধ্যাদেশ গত ১০ জুলাই গেজেট জারি হয়েছে।
এর আগে গত ২৯ জুন ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ। ওই দিন বৈঠকের পর আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘সরকারের কিছু জিনিস নিয়ে আমরা নিজেরাই বিব্রত। একটা হচ্ছে ভুয়া বা মিথ্যা মামলা করা; আরেকটা হচ্ছে মামলার ঘটনা সত্যি, কিন্তু সেখানে অনেক লোককে আসামি করে মামলা বাণিজ্য করা। সে জন্য আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিআরপিসিতে একটা গুরুত্বপূর্ণ চেঞ্জ এনেছি। আশা করছি, পুলিশ প্রশাসন ও আদালত যেসব মামলায় গ্রেপ্তার বাণিজ্য হচ্ছে, মামলা বাণিজ্য হচ্ছে, যাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্তে কোনো রকম প্রমাণ পাওয়া যাবে না, তাদের বিচার শুরুর আগেই মামলার তালিকা থেকে বাদ দিতে পারবে। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কেউ যদি ভুয়া মামলা বা হয়রানিমূলক মামলার শিকার হন, তাঁদের বিচার শুরুর আগেই রেহাই দেওয়া।’ সূত্র : কালের কণ্ঠ
অনলাইন ডেস্ক :
সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে (৩৮) গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা তাকে গ্রেফতার করে। চিন্ময়কে গ্রেফতার করার কথা গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক। তিনি বলেন, পুলিশের একটি অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে ডিবি গ্রেফতার করেছে। যারা আবেদন করেছে, তাদের কাছে তাঁকে হস্তান্তর করা হবে।
সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ কুমার হালদার বলেন, সোমবার বিকেলে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে নিয়ে যায় ডিবি। তাঁর ঢাকা থেকে বিমানে চট্টগ্রামে যাওয়ার কথা ছিল।
বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস এই মঞ্চেরও মুখপাত্র। ওই সমাবেশের পরপরই চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ এনে চট্টগ্রামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন বিএনপি নেতা ফিরোজ খান (পরে বহিষ্কৃত)।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট নামে দুটি সংগঠন ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের’ ব্যানারে কর্মসূচি পালন শুরু করে। নতুন এই জোটের মুখপাত্র করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। কয়েক দিন এই জোট আট দফা দাবিতে রংপুরে সমাবেশ করেছে।
অন্যদিকে, সম্প্রতি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে বহিষ্কার করেছে ইসকন (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) বাংলাদেশ।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ঢাকায় গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় আদালতে হাজির করা হবে। এ মামলায় তিনিসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন।
গত ৩১ অক্টোবর ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় করা এ মামলায় চিম্ময় দাসসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছিল। মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হওয়ার পর নগরের নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্টে স্তম্ভের ওপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা একটি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে, যা এখনো সেখানে রয়েছে৷ ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে লালদীঘির মাঠে একটি মহাসমাবেশ হয়। চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারো মানুষ ওই সমাবেশে যোগ দেন। ওই দিন চন্দন কুমারসহ ৯ জন আসামির ইন্ধনে বাকি আসামিরা নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্ট স্তম্ভ ও আশপাশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর ধর্মীয় গোষ্ঠী ইসকনের গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করে সেখানে স্থাপন করে দেয়। এ নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এ মামলার পর ইসকন প্রবর্তক ধাম অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রসঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি মামলাটি সনাতনীদের আট দফা দাবি আদায়ের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা হিসেবে আখ্যা দেন। ওই বিবৃতিতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বলেন, আমাদের আন্দোলন ৫ আগস্টের পর সনাতনীদের ওপর চালানো হামলা-নির্যাতনের প্রতিবাদে, এই আন্দোলন বর্তমান সরকার কিংবা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নয়।’