অনলাইন ডেস্ক :
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ‘সেন্টার কালচারাল মুসলমান ইডিএফর উদ্যোগে ঈদ পুনর্মিলনী ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। বণার্ঢ্য আয়োজনে প্যারিসের উপকণ্ঠ স্তা-তে এই আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কমিউনিটি মসজিদ ও কালচারাল সেন্টারের হলরুম পরিণত হয় প্রবাসীদের মিলমেলায়। দুই পর্বের এই অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিলো অন্যতম আকর্ষণ।
সাংস্কৃতিক বিভাগের সহকারী পরিচালক সাংবাদিক মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম ও শিল্পী ওমর ফারুকের যৌথ পরিচালনায় প্যারিস শিল্পী গোষ্ঠী ও প্যারিস থিয়েটারের যৌথ পরিবেশনায় গান, কবিতা আবৃত্তি, দর্শক পর্ব ও নাটিকায় মুগ্ধ হয়েছেন প্রবাসীরা।
প্রথম পর্বের অনুষ্ঠানে ইমরান আহমেদের পরিচালনায় ও গোলাম ফারুক ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে কুরআনে হাকীম থেকে তেলাওয়াত করেন হাফেজ কারী বেলায়েত হোসাইন খান। বক্তব্য রাখেন সেন্টার সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সালাহউদ্দিন, সিসিএএম সভাপতি নুরুল ইসলাম, ঈদ অনুভূতি ব্যক্ত করেন তোফায়েল শিপু, সাকিব সিদ্দিকী, সোহেল আহমেদ, হাবীবুল্লাহ বাহার, সাইফুর রহমান, নাজমুল ইসলাম কোরেশি প্রমুখ প্রবাসীরা।
হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে :
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে নিউইয়র্কের জ্যামাইকার স্থানীয় এক রেষ্টুরেন্টে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলন দিবস স্মরণে ও দিবসটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপনের দাবিতে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে ।
জেএসডি যুক্তরাষ্ট্রের আহবায়ক এনামুল হায়দার এর সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন দলটির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সরোয়ার হোসাইন, মুলধারার রাজনীতিবিদ ও নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম, মুলধারার রাজনীতিবিদ এডভোকেট মুজিবুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর ভূইঁয়া, সিনিয়র সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম, সাংবাদিক রিমন ইসলাম, দলটির কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির প্রবাস বিষয়ক সম্পাদক আবদুল মালেক, চৌমুহানী সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি আবদুল মান্নান, জেএসডি যুক্তরাষ্ট্রের যুগ্ম আহবায়ক জাকির হোসেন স্বপন,যুগ্ম আহবায়ক তছলিম উদ্দিন খান, আরজু হাজারী, মোহসিনুর রহমান সবুজ, দলটির যুক্তরাষ্ট্র এর অন্যতম নেতা গাজী আযম বাদল,শরীফ উদ্দিন, সাবেক ছাত্র নেতা গোলাম ফারুক, আজিজুল হক সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা সভার শুরুতেই দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার সদ্য প্রয়াত স্ত্রী নাসিমা আক্তার, দলটির নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মাষ্টার আবুল কালাম সহ দলের সকল শহীদ ও প্রয়াত নেতাদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট কাল নীরবতা পালনসহ বিশেষভাবে দোয়া করা হয়।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, একাত্তরের অগ্নিঝরা মার্চের দ্বিতীয় তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল। সবুজ জমিনের ওপর লাল বৃত্তের মাঝখানে সোনালি মানচিত্রখচিত পতাকা। নিউক্লিয়াসের সিদ্ধান্তে সেদিন পতাকাটি উত্তোলন করেন ঐসময়কার ডাকসু’র ভিপি ও সাবেক মন্ত্রী এবং জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ, অন্যায়, অত্যাচার, অবিচারের বিরুদ্ধে তৎকালীন ডাকসু নেতাদের উদ্যোগে সাড়া দিয়েছিলেন আমজনতা। প্রকৃতপক্ষে সেদিনের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়েই বাঙালি ছাত্র-জনতা স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্নিমন্ত্রে উজ্জীবিত হয় এবং স্বাধীনতা অর্জনের পথে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় স্বাধীনতার পর প্রত্যেক সরকারই এই ঐতিহাসিক দিনটিকে অবহেলা আর অবজ্ঞা করে রাষ্ট্রীয়ভাবে মর্যাদা দেয়নি। তেমনিভাবে ঐতিহাসিক ৩রা মার্চকেও প্রতিটি সরকারই শুধুমাত্র রাজনৈতিক হীনমন্যতার রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দেয়নি।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন যুগ্ম আহবায়ক সামছু উদ্দিন আহমেদ শামীম।
৩ মার্চ ১৯৭১ স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াসের সিদ্ধান্তে ঐদিন পল্টন ময়দানে ছাত্র জনতার সমাবেশে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন তৎকালীন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাজাহান সিরাজ।
তাই আজকের আলোচনা সভা থেকে জুলাই ‘২৪ গণ আন্দোলনের ফসল বতর্মান সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি, ঐতিহাসিক ২ ও ৩ মার্চকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করার জন্য এবং অন্যান্য দিবসের সাথে এ দুটো দিবসকেও পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য।তবেই নতুন প্রজণ্ম সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে।আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে ইফতার এবং নৈশভোজে আপ্যায়ন করা হয় ।
অনলাইন ডেস্ক :
ব্যাপক উৎসাহ–উদ্দীপনা আর উৎসবের মধ্য দিয়ে বাংলা নতুন বছর ১৪৩২ বরণ করে নেয় কানাডার সাস্কাচুয়ান প্রদেশের সাস্কাটুনের প্রবাসী বাংনাদেশিরা। ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সাস্কাটুনের বাংলাদেশিরা সর্বজনীন এ উৎসবে অংশ নিয়ে বর্ষবরণে মেতে ওঠেন। সাস্কাটুনের বেথেলহেম ক্যাথলিক স্কুলে সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। মঙ্গল শোভাযাত্রায় বাংলার চিরচেনা সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। পাঁচ শতাধিক বাংলাদেশি শীতের শেষে এই অনুষ্ঠানে যেন নতুন করে নিজেদের ফিরে পেয়েছে। ফুচকা, চটপটি, ঝাল মুড়ি, বিভিন্ন পিঠাপুলির পাশাপাশি শাড়ি আর নানা রকমের জুয়েলারির দোকানে আড্ডায় মেতে উঠেন।
মেলায় যাইরে গানের তালের সাথে উপস্থিত দর্শকেরা যেমন নিজেদের সেই চিরচেনা বাংলায় ফিরে যেতে চায় ঠিক তেমনি বিদেশের মাটিতে নিজেদের শেকড়কে চেনাতে চায় পরবর্তী প্রজন্মকে। বাংলাদেশি কমিউনিটি এসোসিয়েশন অফ সাস্কাচুয়ান (বিকাশ) এর উদ্যোগে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় সাস্কাটুনের মেয়র সিনথিয়া মেরি ব্লক, সাস্কাটুনের পুলিশ চিফ ক্যাম ম্যাকব্রিড, বিকাশের সভাপতি খান আরিফ ওয়াহিদ বক্তব্য রাখেন।
হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে :
বিশ্বব্যাপী আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ব্যাপক প্রসারে ইউরোপ-আমেরিকা সহ সারা বিশ্বেরই চোখ এখন আইটি খাতে। এরই ধারাবাহিকতায় আমেরিকার বিভিন্ন স্বনামধন্য আইটি সেক্টরে কাজ করা অসংখ্য বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত আমেরিকান আইটি ও সফটওয়্যার বিশেষজ্ঞরা এই খাতে বাংলদেশের সম্ভাবনার দরজা আরো ব্যাপক পরিসরে উন্মোচনের জন্য গভীর আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে এসেছে!
এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত আইটি বিশেষজ্ঞ গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব নেটওয়ার্ক বিশিষ্ট আইটি বিশেষজ্ঞ মিজান চৌধুরী এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্বনামধন্য বাংলাদেশী আইটি প্রতিষ্ঠান আইডাটাকোর ইমফোটেকের সিইও ও নিউইয়র্কের বোর্ড অব এডুকেশনে কর্মরত সিনিয়র আইটি বিশেষজ্ঞ আহমেদ সোহেল সম্প্রতি নিউইয়র্কে অন্যান্য আইটি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আমেরিকান-বাংলাদেশী টেক কোয়ালিশন (বিএটিসি) নামে একটি আইটি সংগঠন গঠন করেন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার এক সাধারণ সভায় সংগঠনের একটি কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়েছে। নিউইয়র্কের জামাইকায় অবস্থিত মেহমান রেস্টুরেন্টে এক অনুষ্ঠানে এ কার্যকরী কমিটি সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট হিসাবে সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত হয়েছেন মিজান চৌধুরী. প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন আহমেদ সোহেল, এই কার্যকরী কমিটির অন্যান্য সদস্য হলেন সিনিয়র সহসভাপতি – ড মোহাম্মদ শফি চৌধুরী, সহসভাপতি- মাহফুজ রহমান, সহসভাপতি-রায়ান তাজ, যুগ্ম সম্পাদক-রাশেদুল আলম রিমেল, যুগ্ম সম্পাদক-সাদাত হোসেন, কোষাধ্যক্ষ- তোরিকুল ইসলাম, সহকারী কোষাধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন, সংগঠনিক সম্পাদক-মাহমুদুল হাসান, প্রকল্প ব্যবস্থাপক-রাব্বি আরমান, মিডিয়া ও প্রচার সম্পাদক-মো. আজাদ, সদস্যপদ বিষয়ক চেয়ারম্যান-আসাদুজ্জামান চৌধুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য – সংগীত সাহা, আনিসুর রহমান, মো. সামদানি, মো. আব্দুল করিম।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত আইটি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত এই সংগঠনের পরিচিতি অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আইটি বিশেষজ্ঞ ও কমিটির নব নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক আহমেদ সোহেল। সভাপতিত্ব করেন আইটি বিশেষজ্ঞ ও কমিটির নব নির্বাচিত সভাপতি মিজান চৌধুরী।
বিশেষ আলোচনা সভায় উপিস্থিত বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত আমেরিকান আইটি বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশি-আমেরিকানদের মধ্যে সংযোগ গড়ে তোলার জন্য একটি টেকসই প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করেন যেখানে তারা আইসিটি (ICT) ক্ষেত্রে একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা, মেন্টরশিপ ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারবেন।এক্ষেত্রে তারা নিকট ভবিষতে একটি আইটি ওয়ার্কশপ আয়োজনের ব্যাপারেও মতামত ব্যাক্ত করেন। পাশাপাশি কমিউনিটির স্টার্টআপ ও উদ্যোক্তাদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, যেখানে তারা তাদের আইডিয়া উপস্থাপন করতে পারবেন এবং আইটি বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে মতামত পেতে পারেন।
বাংলাদেশি এবং আমেরিকান প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মধ্যে জ্ঞান বিনিময় ও ব্যবসায়িক সুযোগ বৃদ্ধির জন্য সহযোগিতা উন্নীত করার ব্যাপারেও তারা গুরুত্বআরোপ করেন। নবগঠিত ব্যাতিক্রমী এই আইটি সংগঠনটি বাংলাদেশি-আমেরিকানদের আইটি খাতে উৎসাহী করতে আইটি খাতে চাকরির বিজ্ঞপ্তি, প্রশিক্ষণ সেশন এবং নেতৃত্ব উন্নয়ন কর্মসূচিসহ পেশাগত অগ্রগতির জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অর্জনে ফ্রি সার্ভিস দেয়ার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
২৬তম অস্ট্রেলিয়ান জাতীয় স্কাউট জাম্বুরিতে অংশ নিয়েছেন ৬ জন প্রবাসী স্কাউট লিডার। ৬ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত জাম্বুরিতে ৩৩টি দেশের স্কাউট প্রতিনিধি দল যোগদান করছেন।
জাম্বুরিতে ১২ জানুয়ারি রবিবার বাংলাদেশ স্কাউটস ফাউন্ডেশনের সদস্য ও বাইসাইকেলে বিশ্ব ভ্রমণকারী মো. আলাউদ্দিন আলোক (উডব্যাজার) এর নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি বাংলাদেশি স্কাউটার প্রতিনিধি দল অংশ নেন। টিমের অন্য সদস্যরা হলেন মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান এএলটি, সরদার মোহাম্মদ খালেদ পিএস পিআরএস, মোঃ দেলোয়ার হোসেন উডব্যাজার ও সদস্য, বাংলাদেশ স্কাউটস ফাউন্ডেশন, সরকারী তিতুমীর কলেজের সাবেক সিনিয়র রোভার মেট আব্দুল করিম ভূঁইয়া এবং মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বাপ্পী।
মো. আলাউদ্দিন আলোক জানান, পৃথিবীর ১৭৪টি দেশকে নিয়ে গঠিত বিশ্ব স্কাউট সংস্থা। এর প্রতিটি দেশের স্কাউটরা বিশ্বভ্রাতৃত্ত্বের বন্ধনে আবদ্ধ। বিশ্ব ব্যক্তিত্বের এই বন্ধনকে সুদৃঢ় করতে এবং পারস্পরিক ভাবের আদান প্রদান করতে জাম্বুরিতে অংশগ্রহণ একটি সুবর্ণ সুযোগ। এই জাম্বুরিতে অংশগ্রহণ করে আমরা সুযোগ পেয়েছি বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার।
হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে :
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে নতুন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আসেফ বারী টুটুল। জ্যাকসন হাইটসের সবচেয়ে পরিচিত ভবনগুলোর মধ্যে একটি, ‘ব্রুসন ভবন’, এখন থেকে পরিচিত হবে ‘বারী টাওয়ার’ নামে। এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে, কারণ এটি শুধু ভবনের নাম বা মালিকানার পরিবর্তন নয়, বরং প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির উন্নয়ন এবং স্বপ্ন পূরণের এক উদাহরণ। এ সংবাদ পরিবেশন করেছেন সাইয়েম শুভ।
বাংলাদেশি ও মূলধারার ব্যবসায়ীদের অফিসে ঠাসা জ্যাকসন হাইটসের প্রাণকেন্দ্র ৩৭তম এভিনিউ, ৭৩ ও ৭৪ স্ট্রিটের সংযোগস্থলে অবস্থিত ৭৪-০৯ ঠিকানার বিখ্যাত ‘ব্রুসন বিল্ডিং’টি ছিলো একটি আধুনিক অফিস ভবন, যা দীর্ঘ ইতিহাস এবং পুনর্জাগরণের প্রতীক হিসেবে আজও দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে।
১৯৪৯ সালে নির্মিত এই ভবনটি ২০১৬ সালে আধুনিক রূপে পুনর্গঠন করা হয়। এই বিশাল ভবনটি সম্প্রতি কিনে নিয়েছেন আসেফ বারী ও তাঁর সহধর্মিণী মুনমুন হাসিনা বারী। ২০২৫ সালের ২৪ জানুয়ারি ভবনটির ক্রয় ও হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এ উপলক্ষ্যে বারী পরিবার আয়োজন করে এক দোয়া মাহফিলের। এতে উপস্থিত ছিলেন বারী গ্রুপের কর্মকর্তাবৃন্দ, বাংলাদেশ থেকে আগত মুনমুন হাসিনা বারীর বাবা হুমায়ুন কবির চৌধুরী, এবং মা সালেহা কবির চৌধুরী।
জ্যাকসন হাইটস একটি বৈচিত্র্যময় ও সংস্কৃতিমণ্ডিত এলাকা হিসেবে পরিচিত। ব্রুসন বিল্ডিংয়ের এই এলাকায় অবস্থানই তার অন্যতম বড় সম্পদ। আশেপাশে রয়েছে অসংখ্য রেস্তোরাঁ, ক্যাফে, দোকান, এবং সাংস্কৃতিক আকর্ষণ। যা শুধু অফিস কর্মচারী নয়, ক্লায়েন্টদের জন্যও এক বিশেষ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। ভবনটি ৭৪ স্ট্রিট-ব্রডওয়ে স্টেশন থেকে কয়েক মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত, যা ৭ ট্রেনের মাধ্যমে ম্যানহাটনসহ কুইন্সের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সহজ যোগাযোগ নিশ্চিত করে। এই সুবিধাটি ব্যবসার জন্য চমৎকার এক সংযোগ স্থাপন করেছে।
এই বিল্ডিংয়ের নতুন সংস্করণটি আধুনিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত, যা আধুনিক অফিস ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় সকল সুবিধা অন্তর্ভুক্ত করেছে। ভবনের ইন্টেরিয়র ডিজাইন অত্যাধুনিক, যা ব্যবসায়িক কার্যক্রমের জন্য একদম উপযোগী। ভবনটি বৈচিত্র্যময় ব্যবহারের জন্য আদর্শ এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক হাব হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ভবনটি শুধু একটি ইমারত নয়, এটি জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্যও একটি পরিচিত নাম। এটি একটি পেশাদারদের ব্যবসায়িক হাব, যেখানে অনেক বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান এবং মূলধারার বিভিন্ন কোম্পানি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির কাছে আস্থা ও গৌরবের প্রতীক ছিল। এই ভবনের মালিকানা পরিবর্তনের খবরে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে এক নতুন আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
আসেফ বারী টুটুল, যিনি বারী গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা, নিশ্চিত করেছেন যে, “বারী টাওয়ারের চতুর্থ তলা হবে বারী হোম কেয়ার এবং প্রবাসের জনপ্রিয় সাপ্তাহিক পত্রিকা “বাংলা পোস্ট” এর নতুন অফিস। তিনি বলেন, “দু-এক মাসের মধ্যেই আমরা বারী গ্রুপের সকল কার্যক্রম নতুনভাবে এই ভবন থেকে পরিচালনা শুরু করবো। আমার এবং আমার পরিবারের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আপনারা সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন, যাতে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে পারি।”
নিউইয়র্কের মতো প্রতিযোগিতাপূর্ণ শহরে দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করা এক বিরল অর্জন। রংপুরের সন্তান আসেফ বারী টুটুল সেই বিরল উদাহরণগুলোর মধ্যে অন্যতম। কেবল ব্যবসায়ী হিসেবেই নয়, তিনি তাঁর কর্মনিষ্ঠা, মানবিক মূল্যবোধ, এবং নেতৃত্বগুণ দিয়ে নিউইয়র্কের প্রবাসী বাংলাদেশি সমাজে নিজেকে এক আদর্শ ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি তাঁর সাফল্যকে সবসময় কমিউনিটির উন্নয়নের জন্য কাজে লাগিয়েছেন। তিনি বলেন, “এটি শুধু আমার বা আমার পরিবারের জন্য নয়, বরং পুরো কমিউনিটির জন্য একটি অর্জন। আমাদের সবার জন্য এটি গর্বের বিষয়।” বারী গ্রুপ ভবিষ্যতে তাদের কার্যক্রম প্রসারের জন্য বারী টাওয়ারকে একটি ব্যবসায়িক এবং সামাজিক হাব হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে।
আসেফ বারী টুটুল জানান, “ভবিষ্যতে এখানে একটি গ্র্যান্ড ওপেনিং অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে, যেখানে কমিউনিটির সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হল সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে কমিউনিটির জন্য কাজ করা। সবার দোয়া আমাদের শক্তি যোগায়। আশা করছি, এই নতুন যাত্রা আমাদের এবং কমিউনিটির জন্য আরও নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে।” আসেফ বারী জানান, ভবনের ব্যবস্থাপনায় এমন কিছু পরিবর্তন আনা হবে, যা বাংলাদেশি কমিউনিটির মার্কিন মূলধারার সঙ্গে আরও গভীর সংযোগ স্থাপন করবে।”
আসেফ বারীর সাফল্যের গল্প শুধু তাঁর একার নয়। এটি একটি পরিবারের সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রতিচ্ছবি। তাঁর জীবনসঙ্গী মুনমুন হাসিনা বারী এবং তাদের তিন সন্তান আদিব বারী, সাবাহ বারী, এবং মাহি বারী নিজেদের মেধা ও শ্রম দিয়ে বারী গ্রুপকে একটি সুপরিচিত নাম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহযোগিতা করেছেন। বারী গ্রুপের নেতৃত্বে প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির উন্নয়ন এবং দেশের সামাজিক অগ্রগতির জন্য তারা নানা গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। শীঘ্রই তিনি নিউইয়র্ক বাংলাদেশি আমেরিকান লায়ন্স ক্লাবের ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বে সামাজিক কর্মকাণ্ড থেকে শুরু করে বিভিন্ন দাতব্য কার্যক্রমে লায়ন্স ক্লাব ইতিমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।