ম্যাচ চলাকালীন আম্পায়ার গাজী সোহেল অসুস্থ হয়ে পড়লেন

খেলাধুলা, 9 April 2025, 121 Views,

অনলাইন ডেস্ক
প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলতে গিয়ে তামিম ইকবালের ঘটনার রেশ না কাটতে এবার বিকেএসপিতে ম্যাচ চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন আম্পায়ার গাজী সোহেল। আজ ৯ এপ্রিল বুধবার বসুন্ধরা ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল) মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব এবং অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের মধ্যকার ম্যাচে দায়িত্ব পালন করার সময় অস্বস্তি নিয়ে উঠে যান তিনি।

banner

এ নিয়ে ম্যাচ রেফারি দেবব্রত পাল প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘মাঠে আসার পরই অসুস্থ অনুভব করছিলেন। পরে আর মাঠে নামেননি। তাঁর পরিবর্তে রিজার্ভ আম্পায়ার এখন দায়িত্ব পালন করছে।’

আম্পায়ার্স কমিটিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অসুস্থ বোধ করায় বিকেএসপির হাসপাতালে গিয়েছেন গাজী সোহেল। এরপর সেখানে তার প্রেশার ও পালস চেক করা হয়। প্রেশার ঠিক থাকলেও পালস একটু বেড়ে যাওয়াতেই অসুস্থ বোধ করছিলেন তিনি। এখন ভালো আছেন গাজী সোহেল।

আন্তর্জাতিক ম্যাচেও নিয়মিত আম্পায়ারিং করতে দেখা যায় গাজী সোহেলকে। এখন পর্যন্ত ৮ ওয়ানডে ও ৩১ টি-টোয়েন্টিতে আম্পায়ারিংয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এর আগে গত ২৪ মার্চ বিকেএসপিতে শাইনপুকুরের বিপক্ষে ম্যাচ চলাকালীন মোহামেডানের ওপেনার তামিম ইকবাল অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে সাভারের কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। সেখানে হার্টে ব্লক ধরা পড়ায় রিং পরানো হয় তামিমকে। এখন কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে চেকআপের জন্য বর্তমানে সিঙ্গাপুরে আছেন।

Leave a Reply

ইটালি প্রবাসী দিদারের মা আনোয়ারা বেগমের…

শফিকুল ইসলাম বাদল : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর Read more

কসবায় মায়ের অভিযোগে ছেলের কারাদণ্ড

চলারপথে রিপোর্ট : মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে Read more
ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : পুকুরের পানিতে ডুবে ইসরাত জাহান নোভা (৯) Read more

ইরান কখনও আপোস করবে না: আয়াতুল্লাহ…

অনলাইন ডেস্ক : জায়নবাদীদের সাথে ইরান কখনও আপোস করবে না Read more
ফাইল ছবি

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পাঁচ দিনের…

অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর শাহবাগ ও পল্টন মডেল থানার পৃথক Read more
ফাইল ছবি

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে…

অনলাইন ডেস্ক : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার এবং আহতদের কল্যাণ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক…

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর Read more

কারাগারে হাজতির মৃত্যু

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে জুনায়েদ মিয়া (৩২) নামে Read more

আখাউড়ায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা

চলারপথে রিপোর্ট : কৃষকদের সেচ দক্ষতা বাড়াতে পানি ব্যবহারকারী গ্রুপের Read more

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ১১তম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য: রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের Read more

স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে…

অনলাইন ডেস্ক : স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে অনশন Read more

ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানালো ২১…

অনলাইন ডেস্ক : ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে মিশরসহ ২১টি Read more

ইনিংস ব্যবধানে জিতে সিরিজে সমতা বাংলাদেশের

খেলাধুলা, 30 April 2025, 136 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
প্রায় দেড় বছর পর দেশের মাটিতে টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টে জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ও ১০৬ রানে হারিয়ে সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করল টাইগাররা। ঘরের মাঠে ১৭ মাস ও পাঁচটি টেস্টে জয়বিহীন থাকার হতাশা ভুলিয়ে দিল এই দুর্দান্ত সাফল্য।

banner

চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিন ছিল আজ। যেখানে মেহেদী হাসান মিরাজের দারুণ সেঞ্চুরিতে ভর করে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪৪৪ রান করে বাংলাদেশ। ২১৭ রানের লিড পায় স্বাগতিকরা।

এরপর মিরাজ ও তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণি জাদুর কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করে জিম্বাবুয়ে। মিরাজের ৫ উইকেট আর তাইজুলের ৩ উইকেটে বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে পাঠানো তো দূরের কথা, থামে ১১১ রানে। এতে বাংলাদেশ জিতল ইনিংস ও ১০৬ রানে। এতে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজ শেষ হলো ১-১ সমতায়।

আজ বুধবার ৭ উইকেটে ২৯১ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করেছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে সব কয়টি উইকেট হারিয়ে ৪৪৪ রান করে টাইগাররা। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১২০ রান করেন সাদমান ইসলাম। এ ছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০৪ রান করেন মিরাজ।

এর আগে, প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ে ২২৭ রানে অলআউট হয়েছিল।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সিক্সার্স ক্রিকেট প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ

খেলাধুলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 16 January 2025, 500 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
“এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলায় প্রতিপাদ্য মধ্যে দিয়ে আজ ১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা থেকে দিনব্যাপী তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে ক্রীড়া পরিদপ্তর কর্তৃক বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জেলা ক্রীড়া অফিসের ব্যবস্থাপনায় অনুর্ধ্ব-১৬ জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া অফিস আয়োজিত সিক্সার্স ক্রিকেট প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান নিয়াজ মোহাম্মদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।

banner

উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোঃ সাইফুল ইসলাম।

জেলা ক্রীড়া অফিসার মাহমুদা আক্তারের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে বক্তব্যে রাখেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সামছুর রহমান, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মাহফুজা আখতার।

আনিছুল হক রিপনের উপস্থাপনায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দায়িত্ব প্রাপ্ত কোচ রুহুল কুদ্দুছ শামীম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ক্রিকেট কোচিং একাডেমীর কোচ মোঃ শামীম ভূইয়া, ক্রিকেট আম্পায়ার মোঃ আজিম, মোঃ বাবু, মোঃ কামাল, বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস্ স্কুল এন্ড কলেজের ক্রীড়া শিক্ষক মোঃ আব্বাস উদ্দিন, বিশিষ্ট ফুটবলার ইয়াকুব।

এসময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় এবং রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদেরকে দেশ ও পৃথিবীর সাথে নিজেকেও বদলাতে হবে তাহলেই আমাদের সফলতা আসবে।

তিনি বলেন, আমাদের সমাজ থেকে ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করতে হবে এবং মাদকের মতো বিভিন্ন কুফল থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা, শরীরচর্চা, সাংস্কৃতিক চর্চার মধ্য দিয়ে উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে যখন গড়ে তুলতে পারবো তখনই আমরা দেশ এবং পৃথিবী বদলাতে পারবো। তারুণ্যে উৎসবের এই ক্রিকেট প্রতিযোগিতা ১১টি দল অংশ গ্রহণ করেন। দিনব্যাপী খেলা শেষে বিজয়ী এবং রানার্স আপদের মাঝে পুরস্কার বিতরন করা হয়।

তীরে এসে তরী ডোবাল বাংলাদেশ

খেলাধুলা, 20 January 2025, 282 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নেপালকে ৫ উইকেটে হারিয়ে দারুণ শুরু করে বাংলাদেশ। টাইগ্রেস মেয়েরা আজ দ্বিতীয় ম্যাচে শক্তিশালী দল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামে। এই ম্যাচ জিততে পারলেই পরের পর্বের টিকিট কাটবে বাংলাদেশ। এমন ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ৯১ রানের পুঁজি পায় টাইগ্রেস মেয়েরা। স্লো উইকেটে অল্প পুঁজি নিয়েও জয়ের আশা জাগিয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তীরে এসে দুই উইকেটের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় সুমাইয়া আক্তারের দলকে।

banner

টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে অজি মেয়েদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে টাইগ্রেস মেয়েরা। দলীয় ১৮ রান তুলতেই টপ অর্ডারের ৩ উইকেট হারিয়ে বসে সুমাইয়ার দল। এদিন রান সংগ্রহে ব্যর্থ হন, আগের দিন নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশকে চাপ থেকে মুক্ত করা অধিনায়ক সুমাইয়া আক্তার এবং সাদিয়া।

তবে অজিদের বিপক্ষে সহ-অধিনায়ক আফিয়া আসিমা ইরার ব্যাটে লড়ার পুঁজি দাঁড় করায় বাংলাদেশ। ইনিংসের শেষ বলে রানআউট হওয়ার আগে ৩৪ বলে ২৯ রান করেন ইরা। সুমাইয়া সুবর্ণার ব্যাটে আসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩ রান। আর কেউ দুঅঙ্ক ছুঁতে পারেননি। তাতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৯১ রানের স্বল্প পুঁজি পায় বাংলাদেশ।

স্বল্প পুঁজির জন্য রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো পায় অস্ট্রেলিয়া। তবে দলীয় ৫০ রনে দ্বিতীয় উইকেট হারাতেই ছন্দপতন হয় অজিদের। টাইগ্রেসদের ক্ষুরধার বোলিংয়ের সামনে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে, মন্থর হয়ে যায় রানের গতিও। একপর্যায়ে পাহাড়সম চাপ তৈরি করে বাংলাদেশ। তবে স্বল্প পুঁজির জন্য শেষ পর্যন্ত তীরে এসে তরী ডোবাল বাংলাদেশ। অজিরা ৮ উইকেট হারিয়ে ৪ বল হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছায়।

বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত

খেলাধুলা, 30 June 2024, 601 Views,

স্পোটর্স ডেস্ক :
৩০ বলে প্রয়োজন ছিল ৩০ রান। হাইনরিখ ক্লাসেন এক ওভারেই ম্যাচটাকে নিয়ে আসেন প্রায় দক্ষিণ আফ্রিকার হাতের মুঠোয়। ভারতের করা টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের দলীয় সর্বোচ্চ ৭ উইকেটে ১৭৬ রানও তখন সহজ লক্ষ্য মনে হচ্ছিল। কিন্তু যশপ্রীত বুমরা তাদের সেই সহজ কাজটাকেই কঠিন করে তোলেন অবিশ্বাস্য বোলিংয়ে। ডেথ ওভারে ২ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়ে শেষ ওভারে সমীকরণটা কমিয়ে আনেন ১৬ রানে।

banner

হার্দিক পান্ডিয়ার করা ওই ওভারের প্রথম বলটা ছিল ফুলটস। স্ট্রাইকে থাকা ডেভিড মিলার ঠিকঠাক মেরেছিলেনও। কিন্তু লং অফ বাউন্ডারিতে থাকা সূর্যকুমার যাদবের অবিশ্বাস্য রিলে ক্যাচে নিশ্চিত ছক্কাটাই হয়ে যায় আউট। জয় তখন উল্টো ভারতের হাতের মুঠোয়, টি–টোয়েন্টি শ্রেষ্ঠত্বের মুকুটটা আবার মাথায় উঠল বলে। শেষ ওভারে হার্দিক পান্ডিয়া সেই সুযোগ হাতছাড়া হতে দেননি। ওভারের পঞ্চম বলে কাগিসো রাবাদাকে আউট করলেন। শেষ ওভারে মাত্র ৮ রান দিলে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস শেষ হয় ৮ উইকেটে ১৬৯ রানে। ৭ রানের জয়ে ১৭ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল ভারত। প্রথম শিরোপা ২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে।

ডেভিড মিলারের অবিশ্বাস্য চোখজোড়া দেখে মনের কথাগুলো আন্দাজ করা যায় এমন। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রীড়াঙ্গনে এখন প্রবাদটা বেশ পরিচিত।
দেশটির রেসলার ড্রিসুস ডু প্লেসিস কথাটা জনপ্রিয় করেছেন সম্প্রতি, অবশ্যই নিজেদের যন্ত্রণা বোঝাতে।

কিন্তু সূর্যকুমার যাদব কী ভাবছিলেন? শেষ ওভারে যখন ১৬ রান দরকার, অসহনীয় চাপ তখন ঘিরে থাকার কথা। এর মধ্যে বলটা ধরে ভেতরে রাখলেন সূর্য, নিজে বাউন্ডারির বাইরে গিয়ে ফিরে এসে নিলেন ক্যাচটা। আউট হলেন মিলার, নিশ্চিত হলো ভারতের বিশ্বকাপও।

অসহনীয় চাপ, বহুবার কাছে গিয়েও শিরোপা না জিততে পারার আফসোস, এত এত প্রত্যাশার শেষে দুঃখের কান্না; ভারতও কি কম ভুগেছে একটি বিশ্বকাপের জন্য? এক দশক অথবা তারও বেশি সময় আগে বিশ্বকাপ জেতা হয়েছিল তাদের। ২০১১ সালে ওয়াংখেড়েতে ‘ফিনিশেস থিংস অব ইন স্টাইল’ করে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন মাহেন্দ্র সিং ধোনি। এরপর এবার। মাঝে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ছাড়া নেই আন্তর্জাতিক কোনো শিরোপাও। ক্রিকেট প্রায় ধর্ম যেখানে, তাদের জন্য কতটা হতাশার, ওই যন্ত্রণাই বা কে জানতে চেয়েছে এতদিন!

শনিবার রাতে বার্বাডোজে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ রানে হারিয়েছে ভারত। শুরুতে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান করে ভারত। ওই রান তাড়া করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রানের বেশি করতে পারেনি প্রোটিয়ারা।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম আট বলের পাঁচটিতেই বাউন্ডারি পায় ভারত। মার্কো ইয়ানসেনের করা প্রথম ওভারে তিনটি বাউন্ডারি হাঁকান বিরাট কোহলি, আসে ১৫ রান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে সবচেয়ে খরুচে প্রথম ওভার করেন ইয়ানসেন।

পরের ওভারে স্পিনার কেশভ মাহারাজকে নিয়ে আসেন প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। তাকে প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকান রোহিত। এক বল ডট দেওয়ার পরেরটিতেই উইকেট এনে দেন মাহারাজ। তাকে সুইপ করতে গেলে বল কিছুটা শূন্যে ভেসে ছিল, স্কয়ার লেগে নিচু হওয়া ক্যাচ দারুণভাবে নেন হেনরিখ ক্লাসেন। ৫ বলে ৯ রান করে ফিরতে হয় রোহিতকে।

মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলে আউট হয়ে যান ঋষভ পান্তও। সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটের আগায় লেগে বল উপরে উঠে যায়, সহজ ক্যাচ নেন কুইন্টন ডি কক। ২ বলে শূন্য রান করে আউট হন পান্ত। ভালো শুরুর পর হুট করেই খেই হারায় ভারত।

তাদের বিপদ আরও বাড়ে পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে সূর্যকুমার যাদব আউট হলে। কাগিসো রাবাদার বলে ফাইন লেগে তার ক্যাচ নেন ক্লাসেন। ৪ বলে ৩ রান করে ফেরত যান সূর্য। এরপর পাঁচে অক্ষর প্যাটেলকে পাঠায় ভারত। তাদের এই কৌশল কাজে লাগে ভালোভাবেই।

বিরাট কোহলিকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস টানেন অক্ষর। সুযোগ পেলেই ছক্কা হাঁকিয়ে রানের চাকাও সচল রাখেন। কোহলির সঙ্গে তার জুটি ছাড়িয়ে যায় পঞ্চাশ রান। কিন্তু নিজের হাফ সেঞ্চুরি ছুতে পারেননি তিনি। অক্ষরের অলসতা ও কুইন্টন ডি ককের চতুরতায় কোহলির সঙ্গে তার জুটি ভাঙে।

রাবাদার বলে ফ্লিক করতে যান কোহলি। কিন্তু ঠিকঠাক টাইমিং হয়নি, বল থাকে উইকেটরক্ষকের কাছাকাছি। এর মধ্যে রান নেওয়ার চেষ্টা করেন অক্ষর, কিন্তু কোহলি ফিরিয়ে দেন তাকে। ফেরার জন্য যথেষ্ট সময় পেলেও দ্রুততা ছিল না অক্ষরের। উইকেটরক্ষকের জায়গা থেকে সরাসরি থ্রোতে নন স্ট্রাইক প্রান্তে স্টাম্প ভাঙেন ডি কক। ৩১ বলে ১টি চার ও চারটি ছক্কায় ৪৭ রান করে সাজঘরে ফেরত যান অক্ষর।

তার বিদায়ের পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কোহলি। এই টুর্নামেন্টে প্রথমবার এই মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। আগের সাত ইনিংসে স্রেফ ৭৫ রান করেছিলেন, দুবার আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। ফাইনালে ৪৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন কোহলি।

ফিফটি পাওয়ার পর কিছুটা চালিয়ে খেলার চেষ্টা করেন কোহলি। হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পরের ১১ বলে ১৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে। মার্কো ইয়ানসেনের আগের বলে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। পরেরটি একটু স্লো করেন তিনি, এবার পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন রাবাদার হাতে।

কোহলির সঙ্গে পরে পঞ্চাশ পেরোনো জুটি হয়েছিল দুবেরও। ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতে আউট হন দুবে। ১৬ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। শেষ বলে জাদেজাও আউট হন। তবে ততক্ষণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান করে ফেলেছে ভারত। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করা অস্ট্রেলিয়ার ১৭৩ রান টপকে তারা করে ১৭৬ রান।

রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই স্বস্তি উবে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার। ভারতের হয়ে কাজটি যার করার কথা ছিল, করেছেন তিনিই। দুর্দান্ত এক ডেলেভারিতে রেজা হেনরিকসকে বোল্ড করে সাজঘরে ফিরিয়ে দেন জাসপ্রিত বুমরাহ। ৫ বল খেলে ৪ রান করে আউট হন রেজা।

দ্বিতীয় উইকেটের জন্যও খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি ভারতকে। আর্শদ্বীপের করা পরের ওভারে মার্করাম ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলকে টেনে তোলেন ডি কক, তার সঙ্গী হন ক্রিস্তিয়ান স্টাবস। পাওয়ার প্লের শুরুতে চাপে পড়া দলকে ছয় ওভারে ৪২ রান এনে দেন তারা।

যখন মনে হচ্ছিল স্টাবস-ডি কক জুটি জমে গেছে নবম ওভারে গিয়ে তখনই দুজনের জুটি ভাঙে। অক্ষরকে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান স্টাবস। ২১ বলে ৩১ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি, ভাঙে ৩৮ বলে ৫৮ রানের জুটি। তার আউট হওয়ার পর হতাশায় নিজের ব্যাটে ঘুষি মারেন ডি কক।

কিন্তু তার পরের সঙ্গীকে নিয়েও দারুণভাবেই দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন তিনি। ভারতের ভয়ও বাড়তে থাকে। স্পিনের বিপক্ষে ভয়ঙ্কর ক্লাসেন নিজের সামর্থ্যের জানান দিতে শুরু করেন। কিন্তু এর আগেই সাজঘরে ফেরেন ডি কক। আর্শদ্বীপ সিংয়ের শর্ট বল তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনের কাছে কুলদ্বীপ যাদবের হাতে ক্যাচ দেন ডি কক। ওই বলের আগেই তাকে নেওয়া হয়েছিল পেছনে।

এরপর উইকেটে এসে ক্লাসেনের সঙ্গী হন ডেভিড মিলার। আরও একবার দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসকে নতুন প্রাণ দেন তিনি। এমনকি ম্যাচটাও নিয়ে আসেন হাতের মুঠোয়। শুরুটা হয় কুলদ্বীপের করা ১৪তম ওভারে। শেষ দুই বলে চার ও ছক্কা হাঁকান মিলার।

পরের ওভারে আসা অক্ষরকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুরু করেন ক্লাসেন। এরপর ওই ওভারে দুটি ছক্কা ও একটি চার হাঁকান তিনি। ওই ওভার থেকে আসে ২৪ রান। এই ওভারের আগে ৬ ওভারে দরকার ছিল ৫৪ রানের। অক্ষরের ওভারের পর সেটি হয়ে যায় ৩০ বলে ৩০ রান।

কিন্তু এই জায়গা থেকেও ম্যাচ আরও একবার মোড় নেয় উল্টোপথে। ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলানো ম্যাচে প্রাণ ফেরান হার্দিক পান্ডিয়া। তার করা ১৭তম ওভার শুরুর আগে কিছুটা সময় ব্যয় করে ভারত। মোমেন্টাম বদলে দেওয়ার চেষ্টা করেন, সেটি তারা পারেনও। পান্ডিয়ার অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ক্লাসেন। ২৭ বলে ২ চার ও ৫টি ছক্কায় ৫২ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি।

ক্লাসেনের বিদায়ের পর অনুমিতভাবেই কঠিন হয়ে পড়ে ম্যাচ। ১৮তম ওভারে এসে দুই রান দিয়ে ইয়ানসেনের উইকেট তুলে নেন বুমরাহ। পরের ওভারে ৪ রান দেন আর্শদ্বীপ। শেষ ওভারে ১৬ রানের সমীকরণ আসে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে।

তাদের জন্য তখনও সবচেয়ে বড় ভরসা মিলার। ৩০ বলে ৩০ থেকে ৬ বলে ১৬ রানের সমীকরণে চলে আসা ম্যাচেও তাদের একমাত্র আশা। কিন্তু প্রথম বলেই সেটি শেষ হয়ে যায়। হার্দিকের ফুলটস এগিয়ে এসে তুলে মেরেছিলেন মিলার। কিন্তু বাউন্ডারি লাইনে তখনই ওই অবিশ্বাস্য ক্যাচ নেন সূর্যকুমার।

এরপর বাকি পাঁচ বলে কেবল ৯ রানই করতে পেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আরও একবার ‘এত কাছে তবুও কত দূরে’র গল্প লেখা হয়েছে তাদের সঙ্গে। ভারতের বহু বহু অপেক্ষার ইতি ঘটেছে এক জয়ে। হয়তো সরেছে শত কোটির চাপিয়ে দেওয়া ভীষণ এক চাপও, শিরোপা না জেতার; দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ভারতও বলতে পারে ‘আমরা যা জানি, তারা তো জানে না’!

ভারত: ২০ ওভারে ১৭৬/৭
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৬৯/৮
ফল: ভারত ৭ রানে জয়ী

জয়ে ফাইনাল পর্ব শুরু আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের

খেলাধুলা, 5 February 2025, 259 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
জয় দিয়ে লাতিন আমেরিকা অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল পর্ব শুরু করেছে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল। চিলিকে ২-১ গোলে আর্জেন্টিনা আর উরুগুয়েকে ১-০ গোলে হারিয়েছে ব্রাজিল।

banner

৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার ভেনেজুয়েলার অলিম্পিক স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার হয়ে গোল করেন সুবিয়াব্রে (৩৫ মিনিটে) ও রুবার্তো (৪২ মিনিটে)। অন্যদিকে চিলির হয়ে একমাত্র গোলটি রোসেল (৬১ মিনিটে)।

একই দিনে ভেনেজুয়েলার অন্য একটি স্টেডিয়ামে ফাইনাল পর্বের প্রথম ম্যাচ খেলে ব্রাজিল – উরুগুয়ে। এই ম্যাচের ভাগ্যনির্ধারণী গোলটি করেন ব্রাজিলের পেদ্রাে (৭৪ মিনিটে)।

লাতিন আমেরিকা অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ মূলত ২০২৫ ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব হিসেবে খেলা হয়। গ্রুপ পর্বে দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে ১০টি দল খেলেছে। প্রতি গ্রুপের সেরা ৩ দল উঠেছে ফাইনাল পর্বে।

ফাইনাল পর্বে কোনো গ্রুপ নেই। প্রতিটি দল রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে প্রত্যেকের বিপক্ষে একটি ম্যাচ খেলবে। পয়েন্টের হিসেবে সেরা ৪ দল যাবে বিশ্বকাপের মূল পর্বে। আয়োজক দেশ হিসেবে খেলবে চিলি।

চিলি যদি ফাইনাল পর্বের খেলা শেষে সেরা ৪ দলের মধ্যে নিজেদের ধরে রাখতে পারে, তাহলে পঞ্চম দলটিও বিশ্বকাপের মূল পর্বে কোয়ালিফাই করবে।