চলারপথে রিপোর্ট :
সম্প্রতি মুরাদ হোসেন মুন্না নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার সেজামুড়া গ্রামের এক বাসিন্দাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে স্থানীয়রা।
গতকাল ১০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুরে আউলিয়া বাজারে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ এপ্রিল সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় বিএসএফ সদস্যরা মুরাদ হোসেন মুন্নাকে আটকে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে। এ ঘটনায় স্থানীয় জনগণ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন- জেলা হেফাজত নেতা মাওলানা জুনায়েদ কাসেমী, বিজয়নগর উপজেলা হেফাজতের সভাপতি মাওলানা শফিকুল ইসলাম, বিজয়নগর উপজেলা হেফাজতের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আফজাল হোসাইন, হেফাজত নেতা মুফতি রহমতুল্লাহ কাসেমী, পাহাড়পুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম শিশু মিয়া, বিএনপি নেতা ইয়াহিয়া খান, এনসিপি নেতা জোহান আহমদ ও খাইরুল ইসলাম, ইয়াহিয়া খান, উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আহবায়ক শাহ আলম, উপজেলা সাবেক ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন, ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আহলুস-সুন্নাহ্ ফাউন্ডেশন সুমন হাজারী, রানা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সামাজিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাচ্ছে। সেইসঙ্গে আমরা দোষীদের দ্রুত বিচারের দাবি করছি। বাংলাদেশ সরকারের কাছেও কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানাচ্ছি।
তারা বলেন, বারবার বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনায় বিএসএফের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ ও ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
তারা এ ধরনের হামলা বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
গ্রামীণ ঐতিহ্যকে সামনে রেখে সরাইলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল মনোমুগ্ধকর ও প্রাণবন্ত লাঠি খেলা। ঢাক-ঢোল আর কাঁসার ঝঙ্কারে মুখর ছিল পুরো এলাকা। হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে জমজমাট হয়ে ওঠে আয়োজনটি।
১১ জুলাই শুক্রবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল সদর ইউনিয়নের সৈয়দটুলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় আয়োজিত হয় এই ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা। এতে অংশ নেয় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের লাঠিয়াল বাহিনী। তারা বাদ্যের তালে তালে নেচে-নেচে লাঠির কসরত প্রদর্শন করে। কখনও প্রতিপক্ষের আঘাত ঠেকিয়ে, কখনও পাল্টা আক্রমণে মেতে ওঠে প্রতিযোগীরা।
খেলাকে ঘিরে পুরো এলাকা পরিণত হয় উৎসবমুখর এক আনন্দমেলায়। নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ—সব বয়সী মানুষ ভিড় করে খেলা দেখতে। দর্শকরা করতালির মাধ্যমে লাঠিয়ালদের উৎসাহিত করেন। হারিয়ে যাওয়া এই লোকজ খেলাটি দেখে অনেকেই ফিরে যান শৈশব স্মৃতিতে।
দর্শনার্থীরা জানান, এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে নিয়মিত আয়োজন ও সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন।
খেলার উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণ করেন- প্রধান অতিথি বিএনপির জেলা আইন বিষয়ক সম্পাদক এবং সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান লস্কর তপু। তিনি বলেন, লাঠি খেলা শুধু একটি বিনোদন নয়, এটি আমাদের শিকড়ের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
আয়োজনের সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় শালিসকারক নুরুল হক।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক দুলাল মাহমুদ আলী, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক মিজান মিয়া, সরাইল সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কাজল মেম্বার, উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন মাস্টার, উপজেলা জাসাসের আহ্বায়ক রিপন ঠাকুর, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব মীর ওয়ালীদ সাক্ষাত, শালিসকারক মিজান মিয়া ও সিদ্দিক আলী প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে অংশগ্রহণকারী লাঠিয়ালদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি আধাপাকা ঘরে ফ্রিজের কম্প্রেসার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে দুই পরিবারের নয় জন দগ্ধ হয়েছেন। দগ্ধদের ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। দগ্ধ ব্যক্তিরা হলেন : দিনমজুর তানজিল ইসলাম (৪০), তার স্ত্রী আসমা বেগম (৩৫) ও দুই সন্তান তৃষা আক্তার (১৭) এবং আরাফাত (১৫); দিনমজুর হাসান (৩৫), তার স্ত্রী সালমা বেগম (৩২) ও তাদের তিন সন্তান ইমাম উদ্দিন (১ মাস), জান্নাত (৪) এবং মুনতাহা (১১)।
এ ঘটনা ঘটে শনিবার ভোরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার হিরাজিল গ্রামে। প্রথমে ঘটনাটি গ্যাস লাইন থেকে বিস্ফোরণ বলে জানা গেলেও পরে জানা যায় ফ্রিজের কম্প্রেসার বিস্ফোরণ থেকে আগুন লেগে তারা দগ্ধ হন।
দগ্ধ হাসানের ছোট ভাই রকিবুল বলেন, তার ভাই ও ভায়রা ভাই দিনমজুরের কাজ করতেন। তারা সিদ্ধিরগঞ্জের একটি আধা সেমিপাকা ঘরে পরিবার নিয়ে থাকতেন। রাতে হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে দুই পরিবারের সদস্যরা দগ্ধ হন। পরে তাদের দ্রুত হাসপাতালে আনা হয়।
এ বিষয়ে আদমজী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. মিরন মিয়া বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে ফ্রিজটি পরীক্ষা করেছি। দেখা যায়, ফ্রিজের কম্প্রেসার বিস্ফোরণের ফলে ফেটে গেছে। ওই বিস্ফোরণ থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয় এবং এতে পরিবারের সদস্যরা দগ্ধ হন। আমরা আশপাশে কিংবা ঘরের ভেতরে অন্য কোনো ধরনের গ্যাসের আলামত পাইনি। সবকিছুই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ফ্রিজের কম্প্রেসার থেকেই বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছিল।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক সার্জন ডা. সুলতান মাহমুদ শিকদার জানান, ৯ জন দগ্ধ রোগীকে ভোরে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে হাসানের শরীরের ৪৪ শতাংশ, সালমার ৪৮ শতাংশ, আসমার ৪৮ শতাংশ, তৃষার ৫৩ শতাংশ, জান্নাতের ৪০ শতাংশ, মুনতাহার ৩৭ শতাংশ এবং এক মাস বয়সি ইমামের শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তবে তানজিল ইসলামকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।
জায়েদুল কবির ভাঙ্গি, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর :
রাত পোহালেই ৭ জুন শনিবার পবিত্র ঈদুল আযহা। ঈদযাত্রার শেষ দিনে গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে আজ ৬ জুন শুক্রবার সকাল থেকেই গাড়ি ও মানুষের ঢল নেমেছে।
ফলে আজ ৬ জুন সকালে গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজটের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে ঘরমুখো মানুষকে। সকাল ৭টার দিকে ভোগড়া বাইপাস মোড় ও চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে ফ্লাইওয়ের মধ্যে ঘরমুখো যাত্রীবাহী সকল গাড়ি অনেকটা ঠাঁই দাড়িয়ে রয়েছে দীর্ঘক্ষণ ধরে। যাত্রীদের অনেকেই গাড়ির ভেতরে গরমে অতিষ্ঠ ও দীর্ঘক্ষনের অপেক্ষায় বিরক্ত হয়ে রাস্তা তথা ফ্লাইওয়েতে নেমে যান। কখন গাড়ি চলবে সেই সময় গুনতে থাকেন।
নেত্রকোনাগামী নেত্র পরিবহনের এক বাসযাত্রী আবুল কালাম ৫বছরের শিশুসন্তান নিয়ে শুক্রবার ভোর চার দিকে ঢাকা থেকে রওনা হয়ে সকাল ৭টার দিকে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস মোড়ের ফ্লাইওয়েতে পৌঁছে যানজটের কবলে চল্লিশ মিনিট ধরে বাসে বসে আছেন। তার শিশুসন্তানটি গরমে অতিষ্ঠি হয়ে কান্না শুরু করলে নিচে নেমে অপেক্ষা করতে থাকেন।
ময়মনসিংহ থেকে পিকআপ যোগে মুরগী পরিবহন করে রাজধানী যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী আকরাম হোসেন। তিনি জানান, শুক্রবার সকালে গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকায় পৌঁছানোর চার কিলোমিটার আগে থেকেই যানজটে আটকা পড়েন। যানজটের কবলে পড়ে গরমে ইতোমধ্যে তার ২০টির মতো মুরগী মারা গেছে। বৃহস্পতিবারও একই কারণে তার ১৮টি মুরগী মারা যায়। যানজট মানুষের যেমন ভোগান্তি বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে মানুষ আর্থিক ক্ষতিরও শিকার হচ্ছে।
গাজীপুরের চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় বিকল্প যান মোটরবাইকও যাত্রী পরিবহণ করছে। এখানকার মোটর বাইকচালক জনি জানান, বৃহস্পতিবার যানজটের মধ্যেও যাত্রী নিয়ে চলা গেছে। কিন্তু শুক্রবার সকালে এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে যে চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় খালি দেহ নিয়ে পার হওয়ার মতো অবস্থা নেই। তারপরও বিকল্প পথে যাত্রী নিয়ে তারা যেতে পেরেছেন। কিন্তু অন্য পরিবহণকে দীর্ঘক্ষণ একই জায়গায় দাড়িয়ে থাকতে হয়েছে।
ঢাকার হৃদরোগ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সযোগে রোগী নিয়ে ফিরছিলেন আলী। তিনিও শুক্রবার সকলে গাজীপুরের ভোগড়া ফ্লাইওয়েতে যানজটে আটকা পড়েন। প্রায় চল্লিশ মিনিট একইস্থলে দাঁড়িয়ে থেকে তিনি গালাগালি শুরু করেন পুলিশকে। কিন্তু আশেপাশে কোন পুলিশ ছিলো না। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমরা এ ভোগান্তি থেকে কবে রক্ষা পাব। দীর্ঘক্ষণ গরমের মধ্যে আটকা পড়ে রোগীও অসুস্থ্য হয়ে উঠেছে।
এদিকে, সকালে গাজীপুরের টঙ্গীর স্টেশনরোডের উত্তরে চেরেগ আলী এলাকার পর থেকে চান্দনা চৌরাস্তার তেলিপাড়া পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানবাহনের দীর্ঘ সারি লক্ষ্য করা গেছে।
এছাড়া একইসময়ে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকা থেকে চন্দ্রা মোড় পর্যন্ত যানবাহনের দীর্ঘ লাইন রয়েছে। বৃহস্পতিবার বা তার আগে যারা বাড়ি যেতে পারেননি তারা আজ শুক্রবার সকাল থেকে রওনা হয়েছেন। ভোর থেকেই তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয়ে অপেক্ষা করছেন বাস কিংবা গণপরিবহনের জন্য। যে যেভাবে পারছেন ট্রাক কিংবা পিকআপে করেও গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
রংপুর থেকে ছেড়ে আসা বাসের চালক আবুল কাশেম জানান, গতকাল যেসব বাস গাজীপুর থেকে ছেড়ে উত্তরাঞ্চলে গিয়েছিল তারা কালিয়াকৈর-চন্দ্রা মোড়, টাঙ্গাইল এবং যমুনা সেতুর উভয় প্রান্তে ব্যাপক যানজটের কবলে পড়ে। তাই নির্ধারিত সময়ের চাইতেও অধিক সময় লেগেছে গন্তব্যে পৌঁছাতে। এছাড়া যাত্রী নামিয়ে গাজীপুরে ফিরতেও অনেক সময় লেগেছে। যার কারণে আজ শুক্রবার সকাল থেকেই বাসের সংখ্যা তুলনামূলক কমে গেছে।
গাজীপুর মহানগরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. আক্তারুজ্জামান জানিয়েছেন, আজ ভোরে চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় একটি লরি বিকল পয়ে পড়লে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন আটকা পড়ে গাড়ির দীর্ঘ লাইন সৃষ্টি হয় প্রায় এক ঘন্টা পর লরিটি উদ্ধার করলে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। তবে এর এক ঘন্টা পরও গাড়ির চাপ কমেনি। এদিকে মনোযোগ দিতে গিয়ে কারা বেশি ভাড়া নিচ্ছে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি। সকাল সাড়ে ৯টার দিকেও গাজীপুরের চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের প্রচন্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
কালিয়াকৈর পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার পোশাক শ্রমিক অনোয়ার হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার ‘‘কারখানা ছুটি হয়েছে দুপুরে। এরপর শুক্রবার সকালে গ্রামের বাড়ি বগুড়ায় যাওয়ার জন্য অটোরিকশায় চন্দ্রায় যাই৷ সেখানে গিয়ে দেখি হাজার হাজার যাত্রী। কোন বাস-গাড়ি খালি নেই। কখন বাস পাব আর কখন বাড়ি পৌঁছব জানি না।’’ নাওজোর হাইওয়ে পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সওগাতুল আলম বলেন, বৃহস্পতিবার ‘‘দুপুরে কলকারখানা ছুটির পর বিকেলে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মৌচাক, চন্দ্রা মোড় ও সফিপুর এলাকায় যাত্রীদের ঢল নামে। শুক্রবার সকালেও একই অবস্থা চলছে। যানবাহন সঙ্কটে কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে। মহাসড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে।’’
ওসি সওগাতুল আলম বলেন, বৃহস্পতিবারের তুলনায় আজ সকালে সড়কে গণপরিবহন ও যাত্রীসংখ্যা বেড়েছে। তবে যাত্রীর তুলনায় গণপরিবহনের সংখ্যা কম। শুক্রবার সকালে যাত্রীদের একটু চাপ বেশি থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চাপ কমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম জানান, গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তায় সকাল থেকেই যাত্রীদের ভিড় থাকায় যানবাহনের চাপ রয়েছে। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে সেই চাপ কমে আসবে।
স্টাফ রিপোর্টার:
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) আরো ১০টি পণ্যকে মান সনদের আওতায় এনেছে। বিএসটিআই’র সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কাউন্সিলের ৩৭তম সভায় বাধ্যতামূলক মান সনদের তালিকায় ১০টি নতুন পণ্যকে মান সনদের অন্তর্ভূক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রোববার রাজধানীর তেজগাঁওস্থ বিএসটিআই’র প্রাধন কার্যালয়ে এই প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কাউন্সিলের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। শিল্পমন্ত্রী ও বিএসটিআই কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। নতুন যে ১০টি পণ্য মান সনদের আওতায় আনা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ডিসপোজেবল ডায়াপারস, ফেসওয়াস, পেট্রোলয়িাম জেলি, রুটি (ফ্ল্যাটব্রেড/ টরটিলা), এ্যারোসলস, গিজার, শেভিং ফোম/জেল, আই কেয়ার, হেয়ার ডাইস লিকুইড ও শু-পলিশিং লিকুইড। বর্তমানে বিএসটিআই’র বাধ্যতামূলক মান সনদের আওতাভুক্ত পণ্যের সংখ্যা ২২৯টি। বিএসটিআই কাউন্সিলের প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, দ্বিতীয় ভাইস চেয়ারম্যান শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, এ সভায় শিল্প, স্বরাষ্ট্র, অর্থ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট, তথ্য, কৃষি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, তথ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ টেলিভিশন, কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বিসিএসআইআর, আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রক, ইপিবি এবং এমসিসিআই, ক্যাবসহ কাউন্সিলের সদস্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। বিএসটিআই’র মহাপরিচালক ও কাউন্সিলের সদস্য সচিব মোঃ আবদুস সাত্তার এ সভা পরিচালনা করেন।
সভাপতির বক্তৃতায় শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিএসটিআই সকলের জন্য একটি আস্থার জায়গা তৈরি করেছে। পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআইকে আরও সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। অভ্যন্তরীণ বাজার এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে পণ্যের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ করা এবং মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে সহায়ক ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বে হালাল পণ্যের সার্টিফিকেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিএসটিআইকে পণ্যের হালাল সার্টিফিকেশনের ক্ষেত্রে গুণগত মান ঠিক রেখে এগিয়ে যেতে হবে।
জনগণের স্বার্থ রক্ষার্থে প্রয়োজনে বিএসটিআইকে আরও কঠোর ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়ে কাউন্সিলের প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ব্যবসায়ীরা করোনা মহামারিকে পূঁজি করে অতিরিক্ত মুনাফা করেছে। তারা পণ্যে ভেজাল দিচ্ছে, সিন্ডিকেট করছে। তিনি বলেন, ১৭ কোটি মানুষকে রক্ষায় বিএসটিআইকে দায়িত্ব নিতে হবে। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় রেখে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআইকে কাজ করতে হবে।
কাউন্সিল সভার পরে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বিএসটিআই’র ৯১ জন নবনিযুক্ত কর্মকর্তার নিয়োগ, যোগদান এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, বিএসটিআই’র মহাপরিচালক, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনেন্দ্র নাথ সরকারসহ শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বিএসটিআই’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য:
রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন (নবীন বরন) ১৫ জুন রবিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ এর সচিব ডা. মো: সরোয়ার বারীর সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সেন্ট্রাল ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের সাথে অনলাইনে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
সেন্ট্রাল ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম সমাপ্ত হবার পর কলেজ ক্যাম্পাসে নবাগত শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়।
ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাঃ উত্তম কুমার পালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী এর পক্ষে হাসপাতাল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ আশীষ কুমার চক্রবর্ত্তী।
বক্তব্য রাখেন- হসপিটাল এর পরিচালক (মেডিকেল সার্ভিসেস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) অধ্যাপক ডাঃ এ কে মাহবুবুল হক।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ও রেডিওলজি এন্ড ইমেজিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডাঃ মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান ভূঁইয়া।
বক্তারা নবীন শিক্ষার্থীদের ভালো চিকিৎসক হবার পাশাপাশি ভালো মানুষ হবার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকগণ নবাগত দেশী-বিদেশী শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়। এরপর শিক্ষার্থীদের শপথবাক্য পাঠ করান একাডেমিক কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ডাঃ ফজলুল করিম এবং একাডেমিক পাঠ্যসূচি সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করেন মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও ফেজ কো-অর্ডিনেটর গণ অনুষ্ঠানে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস প্রফেশনাল পরীক্ষায় (নভেম্বর ২০২৪) অনার্স মার্ক অর্জনকারী ৪ জন শিক্ষার্থীকে বিশেষ সম্মাননা দেয়া হয়- ধীরাজ স্ট্যানলি (ভারত), সানজিদা কবির ঐশী (বাংলাদেশ), সোনিকা থাপা (নেপাল) ও ওয়ানিমা তাবাসসুম (বাংলাদেশ)।
আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা এবং অভিভাবকগণ নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। এরপর শিক্ষার্থীদের মাঝে উপহার বিতরণ করা হয়।