অনলাইন ডেস্ক :
অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে গানে গানে বাংলা পুরনো বছরকে বিদায় এবং নতুন বছরকে বরণ করে নেয় অগ্রণী স্কুল এন্ড কলেজ অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়ার সংস্কৃতি দল। চৈত্র সংক্রান্তি ১৪৩১ এবং বর্ষবরণ ১৪৩২ উদযাপন করে দলের সক্রিয় দশ জন সদস্য।
পহেলা বৈশাখ শুধুই বাঙালির। এই দিনে সে তার অস্তিত্বের জানান দেয় প্রাণে প্রাণে, উৎসবে। বিশ্বকে বলে দেয়-আমি বাংলাদেশি, আমি বাঙালি; আমার আছে গর্বের ইতিহাস। সংকল্প জানায় এক নতুন আগামীর; অতীত বেদনাকে ভুলে প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাওয়ার। এ জাতির সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব পহেলা বৈশাখ। বিগত বছরের জরাকে দূরে ঠেলে আজ বাংলাভাষীদের স্বপ্ন দেখার দিন, নতুন আলোয় অবগাহনের দিন, আনন্দে মেতে উঠারও দিন।
নতুন বছরে শুভেচ্ছা বাণী এবং মঙ্গল কামনার সাথে, ’এসো হে বৈশাখ-‘ গানটির কোরাস পরিবেশন করে অমিয়া মতিন, শাফিনাজ আমিন, মাহবুবা কান্তা, মাফরুহা আলম, শ্রাবন্তী কাজী, নাইয়ারা কেয়াসী, তনিমা আলী, তনিমা তাবাসসুম, সূচনা চৌধুরী ও দিলশাদ রহমান। অপরাহ্নের এ আয়োজনে ভোজে ছিল বাঙ্গালীর চিরাচরিত ভর্তা-ব্যঞ্জন এবং পিঠা-পুলি-পায়েস- মুড়ি-মুড়কি। ষোলো আনা বাঙ্গালীয়ানায় প্রবাসের রবিবারটি সাদা-লাল এবং নকশী সাজে জমে উঠেছিল।
হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে :
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক এবং ঔপন্যাসিক শিব্বীর আহমেদ এর নতুন বই রোমান্টিক থ্রিলার ‘পেন্টাগন বাহিনী’ এখন পাওয়া যাচ্ছে। বইটি প্রকাশ করেছে দেশের শীর্ষ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অনন্যা। বইমেলায় অনন্যা প্যাভিলিয়ান ২৭ এ বইটি পাওয়া যাবে। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন ঋষি ধ্রুব এষ। ১২৮ পৃষ্ঠার সুপারন্যাচারাল, ক্রাইম, রোমাঞ্চ এবং অ্যাডভেঞ্চারে ভরা থ্রিলার বইটির বিক্রয় মূল্য ৩শত টাকা। এটি লেখকের ৩৯তম বই।
এছাড়াও লেখকের প্রকাশিত বই প্রেমের উপন্যাস ‘বালিকার বুকের ঘ্রাণ’, থ্রিলার ‘সাইকো সিরাজ’, ফ্যান্টাসি এবং স্পিরিচুয়াল থ্রিলার ‘হিরো সমগ্র’ শিশুদের জন্য শিক্ষণীয় গল্পের বই ‘ধামি করবে বিয়ে’ বইগুলো পাওয়া যাবে বইমেলায়। লেখকের প্রকাশিত বইগুলো অনন্যা প্যাভিলিয়ন ২৭, সময় প্যাভিলিয়ন ২১ এবং নালন্দা প্যাভিলিয়ান ৩৩ এ পাওয়া যাবে।
শিব্বীর আহমেদ কুমিল্লা-৯ আসনের (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) সাবেক প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য, জাতীয় সংসদের সাবেক সদস্য গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশের সংবিধান স্বাক্ষরকারী মরহুম আলহাজ জালাল আহমেদ’র সন্তান। তিনি ম্যানেজম্যান্টে মাস্টার অব কমার্স (এমকম) এবং সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এ মাস্টার অব সফটওয়ার সিষ্টেম (এমএসএস) ডিগ্রি অর্জন করেন।
সাংবাদিকতা, সাহিত্য, সাংস্কৃতিক, কমিউনিটি সেবা এবং কর্মক্ষেত্রে বিশেষ আবদানের জন্য তিনি ক্লোজআপ ওয়ান অ্যাওয়ার্ড, ফোবানা অ্যাওয়ার্ড, গুড সিটিজেন অ্যাওয়ার্ড, একতারা অ্যাওয়ার্ড, বাংলা নববর্ষ সম্মাননা সহ নানা অ্যাওয়ার্ড লাভ করেছেন। তিনি একজন সু-লেখক, সাংবাদিক, সংবাদ বিশ্লেষেক, কথাসাহিত্যিক এবং ঔপন্যাসিক হিসাবে দেশে-বিদেশে সুপরিচিত।
হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে :
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল – জে এস ডি যুক্তরাষ্ট্র শাখার উপদেষ্টা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীরমুক্তিযোদ্ধা মাষ্টার আবুল কালাম (৭৫)চিকিৎসাধীন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে শহরেরএকটি হাসপাতালে গতকাল ৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গণমাধ্যমকে সংবাদ জানিয়েছেন সামসুল আহমেদ শামীম। বীর মুক্তিযোদ্ধা মাষ্টার আবুল কালাম এর নামাজে জানাযা ৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার নিউইয়র্ক শহরের1404 newkirk avenue, Brooklyn বেলাল মসজিদে বাদ জুমা অনুষ্ঠিত হবে।
পরিবারের ও দলের পক্ষ তার নামাজে জানাযায় উপস্থিত হওয়ার সকলের প্রতি অনুরোধ করা হচ্ছে।
গত ২৯ ডিসেম্বর মাষ্টার আবুল কালাম স্বস্ত্রীক দেশে যান। ২৯ জানুযারি দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ফেরার পথে, নিউইয়র্কে বিমানবন্দরে বিমান অবতরণের সাথে সাথেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর বিমানবন্দর থেকে জরুরি গাড়ির মাধ্যমে হাসপাতালে নেয়া হয়,আর সেখান থেকেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরপারে পাড়ি জমালেন রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার আবুল কালাম।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল – জে এস ডি, যুক্তরাষ্ট্র এর পক্ষ থেকে মরহুমের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়।
মৃত্যকালে তিনি স্ত্রী, ছেলে, দুই মেয়ে নাতি – নাতনিসহ অসংখ্য সহযোদ্ধা, বন্ধু – বান্ধব রেখে গেছেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধের এ বীর সেনানী স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে, স্বাধীন দেশের উপযোগী শাসন ব্যবস্থা কায়েমসহ শ্রমজীবী কর্মজীবী পেশাজীবীদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অধিকার ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সংগ্রামে আজীবন সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে গেছেন। এজন্য তিনি বিভিন্ন সরকারের সময়ে জেল জুলুমের পাশাপাশি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তিনি দীর্ঘ সময় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বৃহত্তর নোয়াখালী সমিতির নির্বাচিত কোষাধ্যক্ষ হিসাবে অত্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সহিত দায়িত্ব পালন করেন।
মাষ্টার আবুল কালাম এর মৃত্যুতে নিউইয়র্কে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে শোকের ছায়া বিরাজ করছে। বীর মুক্তিযোদ্ধারা মাষ্টার আবুল কালামের মৃত্যুতে জেএসএফ’র পক্ষ থেকে হাজী আনোয়ার হোসেন লিটন গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশি কানাডিয়ান তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। একাকীত্ব, বর্ণবৈষম্য, অর্থনৈতিক চাপ, অভিভাবকত্বের সমস্যা, শিক্ষাগত চাপ এবং প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহারের মতো বিভিন্ন কারণে তরুণরা মানসিক সমস্যায় ভুগছে। এই বিষয়ে সচেতনতা তৈরি ও সমাধানের পথ খুঁজতে বেঙ্গলি ইনফরমেশন অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসেস (বিআইইএস) একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে।
কানাডার স্থানীয় সময় ১৭ জানুয়ারি সংগঠনের ডেনফোর্থস্থ অফিসে আয়োজিত ‘বাংলাদেশি কানাডিয়ান তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের চ্যালেঞ্জ এবং উত্তরণের পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বিআইইএস-এর নির্বাহী পরিচালক ইমাম উদ্দিনের সঞ্চালনায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট নিজাম উদ্দিন।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর, সোশ্যাল ওয়ার্কার নেসার আহমেদ, বিআইইএস-এর জেনারেল সেক্রেটারি ড. মাহতাব শাওন, বাংলাদেশি চিকিৎসক হুমায়রা তাহিতি, ব্যবসায়ী আজিম উদ্দিন আহমেদ, তরুণদের প্রতিনিধি ফাতেমা সরকার, উন্নয়ন কর্মী রীনা সেন গুপ্তা এবং বিআইইএস-এর পরিচালক গোলাম মোস্তফা।
বিআইইএস প্রেসিডেন্ট নিজাম উদ্দিন তার মূল বক্তব্যে উল্লেখ করেন, মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যাগুলো লুকিয়ে রাখা, অভিভাবকত্বের অভাব, ভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর চ্যালেঞ্জ এবং সচেতনতার অভাব তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের মূল কারণ। তিনি কমিউনিটি-ভিত্তিক মেন্টাল হেলথ প্রোগ্রাম চালু, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং কালচারালি উপযোগী সেবা প্রদান করার সুপারিশ করেন।
সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর শিক্ষাকার্যক্রমে পড়াশোনার চাপ অনেক তরুণকে হতাশাগ্রস্ত করছে। তিনি অভিভাবকদের প্রতি সন্তানদের সমস্যা গভীরভাবে বোঝার এবং তাদের পাশে থাকার আহ্বান জানান। ব্যবসায়ী আজিম উদ্দিন আহমেদ মানসিক স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় পলিসি লেভেলে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সোশ্যাল ওয়ার্কার নেসার আহমেদ উল্লেখ করেন, কমিউনিটির মধ্যে এখনও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়টি গ্রহণযোগ্য নয়। তরুণদের জন্য কার্যকর কাউন্সেলিং সেবা এবং কমিউনিটি রিসোর্স ব্যবহারের ওপর জোর দেন তিনি।
তরুণদের প্রতিনিধি ফাতেমা সরকার বলেন, অভিভাবকরা আমাদের বোঝেন না, ভয় দেখান। তাদের উচিৎ আমাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ হওয়া এবং মন খুলে কথা বলার পরিবেশ তৈরি করা।
সবশেষে, বক্তারা বাংলাদেশি কানাডিয়ান তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে কমিউনিটি সংগঠনগুলোর সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।
অনলাইন ডেস্ক :
পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে বাংলাদেশি দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৭ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সাওজছে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আহতরা।
ব্যক্তিগত সমস্যার জের ধরে ১২ জানুয়ারি রবিবার স্থানীয় সময় বিকেলে এই হামলার ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন তারেক আহমেদ, সুমন (মিলফোন্তেজ), সামসুজ্জামান, গ্লিলমান, জামিল, জুবেল।
হামলার ব্যাপারে লিসবন প্রবাসী আব্দুস সালাম বলেন, আমি যতদূর জানি পর্তুগালের বেজা শহর বিএনপির সিনিয়র সভাপতি কামিল আহমেদ জন্মদিনের দাওয়াত দেওয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে এবং লিসবনে এই নিয়ে দুই পক্ষের কথা কাটাকাটির এক সময়ে সংঘর্ষ হয়।
এ বিষয়ে পর্তুগাল বিএনপির সদস্য সচিব ছায়েফ আহমেদ সুইটের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসীর ছাড় নেই। যারা এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাতে জড়িত কেউই পর্তুগাল বিএনপির কোন পদধারী নেতৃবৃন্দ না। তবে এই ঘটনায় পর্তুগাল বিএনপির কেউ এই রকম সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জরিত হলে সাংগঠনিক ভাবে যথাযত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, দুই পক্ষের এই হামলার ঘটনায় পর্তুগালের বাংলাদেশ কমিউনিটিতে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পাশাপাশি বাংলাদেশি এলাকায় রুয়াদো বেনফর্মোসোতে সারা দিন পর্তুগীজ টিভি চ্যানেল ও পুলিশের উপস্থিতি চোখে পরার মতো।
সুন্দর ভবিষ্যৎ ও উন্নত জীবনের আশায় স্বপ্নবাজ তরুণরা দেশ ছেড়ে প্রবাসে পাড়ি জমাচ্ছেন। অনেকেই মনে করেন ইউরোপের কোনো দেশে পৌঁছে গেলেই ভাগ্যের চাকা বদলে যাবে। তাইতো পছন্দের শীর্ষে থাকা ইউরোপের পথেই পাড়ি জমাচ্ছেন তরুণরা। তবে বৈধ পথে ইউরোপ যাত্রা অনেকটা সোনার হরিণ পাওয়ার মতোই। নানা জটিলতা ও বৈধভাবে কোনো উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়েই অবৈধ পথ বেছে নিচ্ছেন অনেক তরুণ। আর দালালের খপ্পড়ে পড়ে এ পথে পাড়ি দিয়ে কেউ কেউ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারলেও অনেকেরই হচ্ছে সর্বনাশ।
অবৈধভাবে সমুদ্রপথে বা বিভিন্ন দেশের ঝুঁকিপূর্ণ সীমানা পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশের সময় প্রায়ই জীবন হারাচ্ছেন স্বপ্নবাজ তরুণরা। অনেকেই নিখোঁজও হচ্ছেন। তাদেরই দু’জন মাসুদ রানা (২২) ও পাবেল আমদে (২৫)। অবৈধপথে ইউরোপে পাড়ি দিতে গিয়ে ২ বছর ধরে নিখোঁজ রয়েছেন তারা। একই গ্রামের মাসুদ ও পাবেল ইরান-তুরস্ক হয়ে ইউরোপের দেশ গ্রিসে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন।
নিখোঁজরা হলেন হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের সাতাইহাল গ্রামের চুনু মিয়ার ছেলে পাবেল আহমেদ ও একই গ্রামের দলাই মিয়ার ছেলে মাসুদ রানা।
নিখোঁঁজ মাসুদের স্বজনরা জানান, পরিবারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে তারা কয়েকজন অভিবাসন প্রত্যাশী ইউরোপের দেশ গ্রিসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে দুবাই থেকে জাহাজে ইরান পৌঁছান। ইরানে কয়েকদিন অবস্থানের পর ২০২৩ সালের ২৩ জানুয়ারি পাহাড়ি পথ বেয়ে ইরান থেকে তুরস্কে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এক সাথে ১০ জন বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশি মোট ২৪ জন নাগরিক ছিলেন তাদের দলে। উঁচু-নিচু পাহাড়, মরুভূমি আর বরফে ঢাকা দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে তুরস্ক সীমান্ত অতিক্রম তরার সময় তারা নিখোঁজ হন। এরপর থেকে মাসুদের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।
অপর নিখোঁজ পাবেলের স্বজনরা জানান, পাবেলসহ ৩৫ জন যুবক ইরান থেকে তুরস্কের পথে যাত্রা শুরু করে। তুরস্ক সীমান্ত অতিক্রম করার সময় দালাল চক্রের সদস্যরা রাতের অন্ধকারে পাহাড়-পর্বত মরুভূমি আর বরফে ঢাকা দুর্গম রাস্তা পাড়ি দিয়ে তুরস্কে প্রবেশকালে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ক্যাম্পের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালায়। এ সময় ৮ জন যুবক একদিকে লুকিয়ে পড়ে এবং অন্যদিকে ২৭ জন যুবকের সঙ্গে পাবেল দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এরপর থেকে পাবেল নিখোঁজ হয়। পাবেলের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
নিখোঁজ পাবেলের মামা সাইফুর রহমান তালুকদার জানান, ‘পাবেল দেশের বাইরে যাওয়ার কিছুদিন আগে তার ছোট ভাই শাহ ফাহিম ও তার মা নাজমা তালুকদার মারা যান। নিজের পরিবারকে প্রতিষ্ঠিত করতে ইউরোপ যাওয়ার চিন্তা করে পাবেল। ৪ ভাই বোনের মধ্যে পাবেল সবার বড়।’
তিনি কাঁন্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘পাবেলের মা মারা যাওয়ার পর আমাদের কাছেই সে বড় হয়েছে, মা হারা পাবেলকে অনেক কষ্ট করে লালন-পালন করেছি। ইরান অবস্থানকালে ও তুরস্ক যাওয়ার আগে আমার সঙ্গে ভাগিনার কথা হয়েছে। সে দোয়া চেয়ে বলেছিল, মামা আমি পৌঁছে ফোন দিব, কিন্তু আর তাকে ফোনে পাইনি। তার সঙ্গে থাকা সঙ্গীদের তথ্য অনুযায়ী, পুলিশ তাদের দেখে অভিযান চালালে যে যার মতো দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এরপর থেকে পাবেলের আর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।’
নিখোঁজের ২ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি পাবেল ও মাসুদের। আজও তাদের অপেক্ষায় আছেন স্বজনরা।
মৃত্যু ঝুঁকির পথ বেয়ে ইরান-তুরস্ক সীমান্ত পাড়ি দেয়া আল-আমিন আহমেদ নামে অভিবাসী জানান, ‘ইরান হতে তুরস্ক সীমান্ত অতিক্রম করা অনেকটা মরণ ফাঁদের মতো। সীমান্তপথ পাড়ি দেওয়া অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ, অনেক উঁচু-নিচু পাহাড় অতিক্রম করতে হয়, পাশাপাশি মরুভূমি আর বরফে ঢাকা দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হয়। রাতের অন্ধকারে কোনো ধরনের আলো ছাড়াই দালাল চক্রের সদস্যদের পিছনে-পিছনে যেতে হয়। কখনো দীর্ঘপথ মরুভূমি, আবার কোনো কোনো সময় উঁচু-নিচু পাহাড় কিংবা বরফে ঢাকা ঝুঁকিপূর্ণ পথ। মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করতে হয়। আর সীমান্তে আটক হলে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়।
অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘বর্তমানে বৈধ পথে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব বিপদজ্জনক পথে বিদেশে পাড়ি না জমানোর অনুরোধ। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন