চলারপথে রিপোর্ট :
ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়ে নাটকীয় বৈঠক ও কুমিল্লা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় কাফনের কাপড় পড়ে বিক্ষোভ করেছে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর শিক্ষার্থীরা।
আজ ১৮ এপ্রিল শুক্রবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার ইসলামপুর এলাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাস থেকে এই বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। মিছিলটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ইসলামপুর এলাকার বিভিন্ন পয়েন্ট প্রদক্ষিণ করে। পরে মহাসড়কের এক পাশে বসে তারা প্রতিবাদ জানায়। এ সময় মহাসড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক থাকে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মোঃ জামিল আহম্মেদ সিয়াম, মোহাম্মদ সাগর, সহকারি প্রতিনিধি এহসান এলাহি রাতুল। এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, যে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে তা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি। এই দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। গতকাল ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়ে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সাথে নাটক করা হয়েছে। তাই এখন আর এসি রুমে বসে বৈঠক করে কোন সিদ্ধান্ত হবে না বরং সিদ্ধান্ত হবে রাজপথে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছয় দফা দাবি বাস্তবায়িত না হলে আরো কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
চলারপথে রিপোর্ট :
চলমান বন্যায় ৪ উপজেলার ৮৬০টি পুকুরের অন্তত ৭৫৬ টন মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে সাড়ে ১৮ থেকে ১৯ কোটি টাকার বেশি লোকসান হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আখাউড়া উপজেলার খামারিসহ মাছ ব্যবসায়ীরা। তবে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় পুকুর, দিঘি ও খামারের সংখ্যা ২ হাজার ৩৪৮। এগুলোর মোট আয়তন ৬২১ হেক্টর। এসব জলাশয়ে প্রায় ৫০০ ব্যবসায়ী মাছ চাষ করেন। আর চাষির সংখ্যা ২ হাজার ১০৭। বন্যায় ১২১ দশমিক ৮৬ হেক্টর আয়তনের ৪৩০টি দিঘি, খামার ও পুকুরের সব মাছ পানিতে ভেসে গেছে। ৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা মূল্যের মোট ৪৫৬ টন মাছ পানিতে ভেসে গেছে। আর ১ কোটি ১৫ লাখ পোনা পানিতে ভেসে গেছে, যার বাজারমূল্য ৩ কোটি টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যবসায়ীর ১০ লাখ টাকার অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আখাউড়ার মোগড়া ইউনিয়নের নিলাখাদ গ্রামের খামারি বলেন, ‘বন্যায় যে ক্ষতি হয়েছে, তা সামলে ওঠা অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। বন্যার পানিতে পাঁচ কোটি টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এই ক্ষতি কীভাবে পূরণ করব, বুঝতে পারছি না।’
বন্যার পানিতে প্রায় দেড় কোটি টাকার মাছ ভেসে যাওয়ার দাবি করেছেন কর্ণেল বাজারের বাসিন্দা বাছির মিয়া। তিনি বলেন, পুকুরে মাছ মাত্র বড় হয়েছিল। কয়েক দিনের মধ্যেই বাজারে বিক্রি করতেন। কিন্তু বন্যার পানিতে সব মাছ ভেসে দেড় কোটি টাকার লোকসান হয়েছে।
মোগড়া গ্রামের বাসিন্দা দুলাল মিয়া বলেন, ‘পানি কমলেও আমার পুকুরে আর মাছ নেই। যা মাছ ছিল সব পানিতে ভেসে গেছে। প্রায় এক কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে।’
এ বিষয়ে ক্ষয়ক্ষতি-সংক্রান্ত প্রাথমিক একটি তালিকা করেছে আখাউড়া উপজেলার মৎস্য কার্যালয়।
আখাউড়া উপজেলার মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, বড় ব্যবসায়ীরা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ইউনিয়ন পর্যায়ে খামারিদের ক্ষতির তালিকা করা হচ্ছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।
এদিকে কসবা উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় বন্যার পানিতে ২০০ পুকুর, দিঘি ও খামারের মাছ ভেসে গেছে। এগুলোর আয়তন ৩৮ হেক্টর। ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার বড় মাছ ও ১০ লাখ টাকার পোনা পানিতে ভেসে গেছে। বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি অবকাঠামো ভেঙে মোট ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও আখাউড়া উপজেলা মৎস্য কার্যালয় জানিয়েছে, সদর উপজেলায় ৬০ হেক্টর আয়তনের ১৪৫টি পুকুর, দিঘি ও খামারের মাছ ভেসে গেছে। ১৫ লাখ টাকা মূল্যের ১২ লাখ পোনা ও ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকার বড় মাছ পানিতে ভেসে গেছে। অবকাঠামো ভেঙে যাওয়াসহ বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ায় মোট ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বিজয়নগর উপজেলায় ১১ হেক্টর আয়তনের ৮৫টি পুকুর, দিঘি ও খামারের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। ১৩ লাখ টাকা মূল্যের ১ লাখ পোনা ও ৪০ লাখ টাকার বড় মাছ পানিতে ভেসে গেছে। বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি অবকাঠামো ভেঙে যাওয়ায় মোট ৫৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবির বলেন, বন্যার পানিতে ৮৬০টি পুকুর প্লাবিত হয়ে সাড়ে ১৮ থেকে ১৯ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। খামারি ও ব্যবসায়ী মিলিয়ে ৮৬০ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
২০ আগস্ট রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া ইমিগ্রেশন-সংলগ্ন খাল দিয়ে ভারতে থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি আসতে শুরু করে। এরপর আখাউড়া উপজেলাসহ পর্যায়ক্রমে কসবা উপজেলায় বন্যা দেখা দেয়।
স্টাফ রিপোর্টার:
গৌরব ও অহংকারের ১৬ ডিসেম্বর বাঙ্গালী জাতির মহান বিজয় দিবস। বিজয় দিবসে জাতি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করবে স্বাধীনতার স্বপ্নপুরুষ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, জীবন উৎসর্গকারী ও যুদ্ধাহত বীর সন্তানদের, যাঁদের ত্যাগে অর্জিত হয়েছে আমাদের কাঙ্খিত বিজয়; জাতি অর্জন করেছে লাল সবুজ পতাকা এবং স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষে মহান বিজয় দিবস-২০২২ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। আজ প্রত্যুষে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ফারুকী পার্কে ৫০ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে- ফারুকী পার্কস্থ স্মৃতিসৌধে সরকারি-বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত বিভাগ/সংস্থা সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনতা কর্তৃক স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পন, সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি, বেসরকারি স্বায়ত্ব শাসিত এবং বেসরকারি ভবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবে জেলা প্রশাসন। এ সময় কুচকাওয়াজ ও অভিবাদন গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে ১০টায় একই মাঠে মোরগ লড়াই ও বেলা ১১টায় কারাতে প্রতিযোগিতা, একই মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদেরকে সংবর্ধনা প্রদান এবং জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে বেলা ১১টায়। বেলা সাড়ে ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া মূক ও বধির নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সরকারি শিশু পরিবারের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর জেলার সকল মসজিদে বাদ জোহর জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা এবং মুক্তিযুদ্ধে শহিদ ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়সমূহে সুবিধাজনক সময়ে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি এদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সকল সরকারি হাসপাতাল, শিশু সদন, জেলখানা, এতিমখানা ও শিশু পরিবারে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। বিকেল আড়াটায় ব্রাহ্মণবড়িয়া নিয়াজ মুহাম্মদ স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন একাদশ বনাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা ও মুক্তিযোদ্ধা একাদশ দলের মধ্যে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। বিকাল ৩টায় সরকারি মডেল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরষ্কার বিতরণ করা হবে। বিকেল সাড়ে ৫টায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হবে।
মহান এ দিবসের সকল অনুষ্ঠানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশপ্রেমি মানুষের স্ববান্ধব উপস্থিতি কামনা করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম।
অনুরূপ কর্মসূচি জেলার সকল উপজেলায় পালিত হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিজয়নগরে জমকালো আয়োজনে বিজয়নগর ডায়াবেটিস সমিতির উদ্বোধন করা হয়েছে৷
২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর বাজারে অবস্থিত ৩ স্টার প্লাজার তিনতলায় অবস্থিত ডায়াবেটিস সমিতির উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম।
বিজয়নগর ডায়াবেটিস সমিতির উদ্বোধন করেন বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মাছুম৷
বিজয়নগর ডায়াবেটিস সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. জয় লাল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ও কোষাধ্যক্ষ হাফেজ মুহাম্মদ সেলিম ভূইয়ার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বিজয়নগর উপজেলার আহবায়ক জমির হোসেন দস্তগীর, বিজয়নগর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. আবু সাঈদ সরকার, হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের আর এম ও ডা. মো. সুমন ভূইয়া, বিজয়নগর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আফরোজা বেগম, বিজয়নগর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াদুল হক বাবু, বিজয়নগর বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. কাজী ইকবাল হোসেন৷
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে সকলে মঙ্গল কামনা করে দোয়া করা হয় ৷দোয়া পরিচালনা করেন হাফেজ সেলিম ভুইয়া৷
এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যালসের রিপ্রেজেনটেটিভ ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি কর্মকর্তা ও আমন্ত্রিত অতিথিসহ সবাই উপস্থিত ছিলেন৷
চলারপথে রিপোর্ট :
বিজয়নগরে আবু লাল (৬০) নামের এক নৈশপ্রহরীকে হত্যা করে রবি মোবাইল কোম্পানীর টাওয়ারের ব্যাটারি চুরি করে নিয়ে গেছে চোরেরা।
আজ ১৮ জুলাই মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের রবি মোবাইল টাওয়ারের কক্ষ থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আবু লালের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আবু লাল ওই এলাকার আবদুল জব্বার ভূঁইয়ার ছেলে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ বলেন, আবু লাল রবি মোবাইল কোম্পানির টাওয়ারের নৈশ প্রহরি ছিলেন। সেখানে রাতের কোন এক সময় চোরেরা হানা দিয়ে টাওয়ারের কক্ষের জানালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে আবু লালের হাত-পা বেঁধে তাকে হত্যা করে মোবাইল টাওয়ারের ব্যাটারি চুরি করে নিয়ে যায়।
নিহতের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। আবু লালের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে, কিভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলা যাবেনা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগরে পূর্ব শত্রুতার জেরে নোয়াবাড়ী গোষ্ঠীর সাথে মেম্বার গোষ্ঠীর সংঘর্ষে ৩ পুলিশ সদস্যসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকাল সাড়ে ৭ টায় উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের বুল্লা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ আনতে ৪ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এসময় কমপক্ষে ১৫টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকার হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আহতদের মধ্যে ৪৭ জন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। কয়েকজনকে ভর্তি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য কাউসার আহমেদও রয়েছেন। বিভিন্ন স্থান ও জেলা সদর হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ৩৩জনকে আটক করে পুলিশ।
চিকিৎসা নেওয়া আহতরা হলেন, কাউসার (৪২), মুখলেস (২৯), মোহন (২৫), জহুরুল হক (৩২), আব্দুল্লাহ (২৫), ছোট্ট মিয়া (৫৫), মিলন মিয়া (২৩), রিপন মিয়া (২৯), জাকির মিয়া (২৮), রিপন মিয়া (২২), আব্বাস আলি (৪৫), তানভীর (২২), আশু মিয়া (৪২), শফিকুল (৩২), রফিক (৩৮), জসিম (৩২), রিপন (২৮), আবু লাল (৪০), কাউসার (১৪), আবন মিয়া (৩০), জয়নাল (৪০), লুৎফুর (৩০), সাদেকুল (৪০), নাজমুল (২০), ওহিদ (৪০), তারেক (২০), রামিত (৩০), জসিম (২০), সিরাজ (৪৫), কুশনাহার (৪০), রাসেল (১৪), নাসির মিয়া (৪৫), ফায়েজ মিয়া (৩০), বিল্লাল মিয়া (৩৫), আব্দুল্লাহ (২৭), আবু তাহের (৯০), মোশাররফ (৩০), সাকিব (১৮), মিলন (২৮), মনা মিয়া (১৮), নাঈম (১৫), হাকিম (৩০), শামীম (৩০), আবুল হোসেন (৩৫), মোজাম্মেল (২৫), মামুন (৩৫), আজগর (৪০)। তবে কারো অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়।
স্থানীয়রা জানায়, ইউপি নির্বাচন পরবর্তী বিরোধ নিয়ে স্থানীয় নোয়াব আলী গোষ্ঠীর সাথে কাউসার মেম্বার গোষ্ঠী, হাড়িবাড়ি, মোড়াবাড়ি, উত্তরপাড়া, সৈদা বাড়ি, হাজী গোষ্ঠী, মাইঝ গাঁও গোষ্ঠীসহ অন্তত ৭ টি গোষ্ঠীর সাথে বিরোধ চলে আসছিল। গত ৬ মাস আগে কাউসার মেম্বারের মেয়ে নোয়াব আলী গোষ্ঠীর আব্দুল আহাদের ছেলে মহসীনের সাথে পালিয়ে যায়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে আবারো বিরোধ দেখা দেয়। এরই জের ধরে বুধবার উভয় গোষ্ঠীর লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় কাউসার মেম্বার গোষ্ঠীর পক্ষে হাজী গোষ্ঠী, মাইঝ গাঁও গোষ্ঠীসহ অন্তত ৭ টি গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িয়ে যায়। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। আহতদের জেলা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
সংঘর্ষ চলাকালে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মফিজ মাস্টার, জনাব আলী, জাহাঙ্গীর, বিল্লাল মিয়া, শের আলী, নূর আলী, আন্দর আলী, ইয়াসিন, হাসেম উদ্দিনসহ ১৫টি বাড়ি ভাংচুর করা হয়। এসময় লুটপাট চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরশাদুল ইসলাম বলেন, মেয়ে সংক্রান্ত একটি বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে তারা সংঘর্ষে বাধে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়। ফের সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে বিজয়নগর থানা পুলিশ এলাকা থেকে ১০ জন ও সদর থানা পুলিশের সহায়তায় জেলা সদর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিতে আসা ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.বিল্লাল হোসেন। পুলিশ বাদী হয়ে পুলিশের উপর হামলার ঘটনা ও সংঘর্ষের ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।