চলারপথে রিপোর্ট :
জেলার সরাইলে চোর সন্দেহে এক কিশোরকে দড়ি দিয়ে বেধে পেটানোর ঘটনায় আব্দুল লতিফ (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ ১৮ এপ্রিল শুক্রবার তাকে গ্রেফতার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার বাদে অরুয়াইল গ্রামের এক কিশোরকে চোর সন্দেহে দড়ি দিয়ে বেঁধে ৮-১০ জন মিলে মারধর করেন। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করতে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাকিবুল হাসান বলেন, চোর সন্দেহে এক কিশোরকে লাঠি দিয়ে পেটানোর একটি ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ অভিযোগে পুলিশ আব্দুল লতিফকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় মারধরের শিকার কিশোরের ভাই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে স্বর্গীয় ‘আশুতোষ চক্রবর্তী স্মারক শিক্ষাবৃত্তি-২০২৪’ পেল ১০০ মেধাবী শিক্ষার্থী।
আজ ১৩ জুলাই শনিবার ইউনিভার্সেল কলেজ হাসপাতাল ঢাকা এর শিক্ষা সামাজিক উদ্যোগে সরাইল উপজেলা কমপ্লেক্সের স্বাধীনতা হলে এক অনাঢ়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সরাইল ও আশুগঞ্জের ১৩ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০০ মেধাবী শিক্ষার্থীকে এ শিক্ষাবৃত্তি দেয়া হয়েছে। তাদের দশম আয়োজনে ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির পরীক্ষায় মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অর্জনকারীদের পাশাপাশি অসহায় দরিদ্র শিক্ষার্থীরাও স্থান পেয়েছে। উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি হয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখায় স্থানীয় কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনাও দেয়া হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আশুতোষ চক্রবর্তীর স্ত্রী পুষ্ফ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা।
জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক, প্রভাষক ও বাচিক শিল্পী মো. মনির হোসেনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন-বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানের প্রধান উদ্যোক্তা ডা: আশীষ কুমার চক্রবর্তী।
বক্তব্য রাখেন- প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক-২ মো. শহীদুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাথাওয়াত হোসেন বিপিএম (সেবা), প্রথম যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. নজরুল ইসলাম, সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়া, সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) মো. রাকিবুল হাসান, সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম ও সরাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ আলী।
সভায় উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি, শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি এমন একটি মহৎ আয়োজনের মাধ্যমে বৃত্তি প্রদান করে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করায় ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, শিক্ষা ছাড়া পৃথিবীতে কোন জাতিই উন্নতি করতে পারে না। তাই আমাদেরকে অবশ্যই শিক্ষা ব্যবস্থার উপর আরো গুরুত্ব দিতে হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে পাঠ গ্রহন ও পড়ালেখায় অধিক মনোযোগি হয় সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। মাদক ও বাল্যবিয়েকে না বলতে হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
হতদরিদ্রদের মাঝে উন্নত জাতের বাছুর বিতরণ প্রকল্পের নামে বরাদ্দ ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্প অনুযায়ী সুফলভোগী ১০ জন নারীকে একটি করে বাছুর দেওয়ার কথা থাকলেও শুধু ফটোসেশন করার চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। গরুর বাছুর দেওয়ার কথা বলে ডেকে এনে শুধু ফটোসেশন করায় হতাশ ওই সকল দুঃস্থ নারীরা। ফটোসেশনের দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও তাদের গরুর বাছুর বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। প্রকল্পের টাকা পুরোটাই কৌশলে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের রেলবাজার এলাকার মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থা নামের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক এম এস আলম বাবলুর বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করছেন।
ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীরা জানান, গত ৩০ ডিসেম্বর সকালে বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের (বিএনএফ) আর্থিক সহায়তায় মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থা এনজিও’র উদ্যোগে দশজন দুস্থ নারীকে বাছুর দেওয়ার কথা বলে রেলবাজারে নিয়ে আসা হয়। নিজের পরিচিত একটি খামার থেকে দশটি বাছুর গাড়িতে করে নিয়ে আসেন এনজিওটির নির্বাহী পরিচালক এম এস আলম বাবলু। এরপর এলাকার কিছু ব্যক্তিকে তার বাসভবন সংলগ্ন এনজিও’র সামনে ডেকে এনে দশজন নারীকে দাঁড় করিয়ে গরু দেওয়ার ফটোসেশন করেন।
পরে ওই দুস্থ নারীদের বাছুর না দিয়ে খিচুড়ি-ডিম খাইয়ে বিদায় করা হয়। এরপর বাছুরগুলো আবার একই গাড়িতে করে একই খামারে ফেরত দিয়ে আসা হয়। সেখানে উপস্থিত অনেকেই গরু প্রদানের বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী পরিচালক বাবলু জানান পরে দেওয়া হবে।
কুবিরদিয়ার মাঠপাড়া গ্রামের আলম হোসেনের মেয়ে খুশি খাতুন স্বামী পরিত্যক্তা হওয়ার পর বাবার বাড়িতে এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে বসবাস করেন। অন্যের বাড়িতে ও মাঠে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাতেন। তিনি বলেন, ’প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা বলে আমাকে ডেকে নিয়ে যায় ওই এনজিওর লোকজন। বাছুর হাতে ধরিয়ে ছবি তোলেন তারা, কিন্তু আমাকে বাছুর দেয় নাই। বলছে, এবার অন্য এলাকার লোকদের দেব, পরেরবার তোমাকে দেব। পরে খিচুরি খাওয়ার পর বাড়িতে চলে আসি। তবে এর আগে একবার আমাকে একটা ছাগল দিয়েছিল বাবলু কাকা। তবে সেজন্য আমার কাছ থেকে নগদ ১৩০০ টাকাও নিয়েছিল।’
অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করা অপর এক নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমাদের গাভী দেবার কথা বলে ট্রেনিংয়ে ডেকে নিয়ে যান এনজিওর লোকজন। ট্রেনিং শেষে আমাদের বাছুর হাতে দিয়ে ছবি তুলে বাড়িতে ফেরত পাঠিয়েছেন। তারা বলছেন, এখন না, পরে বাছুর দেব। সেখানে আমরা দশজন ছিলাম, এখন পর্যন্ত বাছুর পাইনি।’
যে গাড়িতে বাছুরগুলো বহন করা হয়, সেই গাড়ি চালক শুভ দাস বলেন, ‘ওইদিন আমার গাড়ি নিয়ে মথুরাপুর এলাকার একটি গরুর খামার থেকে ১০টা বাছুর নিয়ে রেলবাজার বাবলু সাহেবের বাসার সামনে নিয়ে যাই, পরে অনুষ্ঠান শেষে ওখান থেকে ওই বাছুরগুলো আবার মথুরাপুরের ওই খামারে ফেরত নিয়ে যাই। কেন নিল আবার কেনইবা ফেরত পাঠালো আমি জানি না।’
এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, ‘আমাকে ওই অনুষ্ঠানে অতিথি করা হয়েছিল। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে যেতে পারিনি। প্রকল্পটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা নেই। যদি শুধু ফটোসেশন করা হয় তদন্তসাপেক্ষে প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হবে।’
বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের (বিএনএফ) উপ-মহাব্যবস্থাপক (কর্মসূচি) মোস্তফা কামাল ভূঞা বলেন, ‘বিশেষ প্রকল্পের আওতায় মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থা নামের এনজিওকে আমরা ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। তার মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৩ লাখ টাকা দিয়েছি। কার্যক্রমে সন্তোষজনক হলে বাকি ২ লাখ টাকা দেওয়া হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের রিপোর্টে ইউএনও’র প্রত্যয়ন লাগবে। কয়েক দিনের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। এখনও তার রিপোর্ট হাতে পাইনি। আমরা বিষয়টি পর্যক্ষেণ করছি। রিপোর্ট আসার পর যাচাই-বাছাই করে দেখব, ঘাপলা পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক এম এস আলম বাবলু বলেন, ‘স্থানীয় রাজনীতির স্বীকার আমি। আমি কোনো খামার থেকে গরু আনি নাই। আমি শরৎনগর হাট থেকে বাছুর কিনেছি। যার রশিদ আমার কাছে আছে।’
এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন
চলারপথে রিপোর্ট :
যৌথ বাহিনীর অভিযানে মাদক, ডাকাতির সরঞ্জামসহ সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য নাজমুল মোল্লা (২১)কে আটক করা হয়েছে। চাঁদপুর মতলব উত্তরে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
আজ ৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার দুপুরে উপজেলার বেলতলি লঞ্চঘাট এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। আটককৃত ডাকাত সদস্য বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া থানার গৈলা এলাকার খোরশেদ মোল্লার ছেলে। সন্ধ্যায় চাঁদপুর আর্মি ক্যাম্প থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, লেফটেন্যান্ট জাবিদ হাসানের নেতৃত্বে গোপন সংবাদে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে শট গানের ৬টি কার্তুজ, ১০পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, নগদ ২লাখ ১৬ হাজার ৫০০টাকা, ৬টি বুলেট প্রুফ জ্যাকেট, ৮টি লাইফ জ্যাকেট, একটি গাঁজা মাপার মেশিন, ৪০পিস কলকি, দুটি লাইট, ৪টি হেলমেট, একটি লেজার লাইট, একটি চাঁদা সংগ্রহের বই, ৪টি মোবাইল ফোন ও একটি বিদেশী মদের বোতল উদ্ধার করা হয়।
আর্মি ক্যাম্পের অপারেশন অফিসার লেফটেন্যান্ট জাবিদ হাসান বলেন, সংঘবদ্ধ ডাকাত দলকে ধরতে দিনব্যাপী তাদের বিভিন্ন আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। তথ্য সংগ্রহ ও মামলা দায়ের চলমান আছে। আইন শৃঙ্খলার জন্য হুমকি স্বরূপ সকলকেই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এছাড়াও একাধিক ডাকাত সদস্যের নামে মামলা দায়ের চলমান রয়েছে। আটক ডাকাতের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
অনলাইন ডেস্ক :
দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে ২ যুবক নিহত হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে আরো দুইজন। আজ ১ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে শিবচর-জাজিরা সীমান্তবর্তী কুতুবপুর সাহেববাজার নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কুতুবপুর সাহেববাজার এলাকার শাজাহান তালুকদারের ছেলে মিঠু তালুকদার, শরীয়তপুরের জাজিরা কলম ঢালীকান্দির বাবুল ঢালীর ছেলে হৃদয় ঢালী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানান, পদ্মা সেতু এক্সপ্রেসওয়ের নাওডোবা গোলচত্বর থেকে কুতুবপুরের সাহেববাজার এলাকামুখি সড়কে বিপরীতমুখী বেপরোয়া দুটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই যুবক নিহত হয়েছে, গুরুতর আহত অবস্থায় অপর দুই যুবক।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ বলেন, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই জনের নিহতের খবর পাওয়া গেছে। দুর্ঘটনার স্থানটি শিবচর-জাজিরার সীমান্তবর্তী কুতুবপুর সাহেববাজার এলাকার। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
বিশেষ প্রতিনিধি :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচন আগামী ১ ফেব্রুয়ারি । নির্বাচনে বিএনপির দলছুট নেতা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াসহ চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের মধ্যে টাকা ও শিক্ষায় আবদুস সাত্তার এবং মামলার দিক থেকে এগিয়ে আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু আসিফ আহমেদ। চার বছরে সাত্তারের নগদ টাকার পরিমাণ বেড়েছে তিন গুণের বেশি।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রার্থীদের মধ্যে আবদুস সাত্তার ছাড়া বাকি তিন প্রার্থী আগে কখনো সংসদীয় নির্বাচনে অংশ নেননি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য উপনির্বাচন উপলক্ষে জমা দেওয়া হলফনামা ঘেঁটে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
চার বছর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় জমা দেওয়া হলফনামায় সাত্তার জেলা শহরের একতলা পাকা ভবনের মূল্য ১০ লাখ টাকা উল্লেখ করেছিলেন। তবে এবারের হলফনামায় তিনি একই ভবনের মূল্য উল্লেখ করেছেন পাঁচ লাখ টাকা। এ ছাড়া সরাইলে তাঁর ২৭ কানি (৩০ শতকে এক কানি) জমির অর্জনকালীন দাম ২৭ হাজার ও বিয়েতে উপহার পাওয়া ৪০ ভরি সোনার দাম ৪০ হাজার টাকা উল্লেখ করেছেন তিনি।
হলফনামা অনুযায়ী, দু’জন প্রার্থী উচ্চশিক্ষিত। তাঁদের মধ্যে সাত্তার স্নাতকোত্তর ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. আবদুল হামিদ এলএলবি পাস। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ উচ্চমাধ্যমিক ও জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুল ইসলাম স্বশিক্ষিত।
প্রার্থীদের হলফনামায় দেখা গেছে, সাত্তারের পেশা আইনজীবী। তাঁর বিরুদ্ধে ২০০৯ ও ২০১০ সালে মামলা হলেও ২০২১ সালে তা নিষ্পত্তি হয়ে যায়। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে বর্তমানে তাঁর কাছে নগদ ১ কোটি ২ লাখ ৯৯ হাজার ৪৫২ টাকা আছে। কিন্তু একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় তাঁর কাছে নগদ ছিল ৩২ লাখ ৭৯ হাজার ৪৪ টাকা। অর্থাৎ চার বছরে তাঁর নগদ টাকা বেড়েছে ৭০ লাখ ২০ হাজার ৪০৮ টাকা।
গত নির্বাচনের সময় সাত্তারের দুটি ব্যাংকে জমা ছিল ৮ লাখ ৯২ হাজার ৪০৬ টাকা। বর্তমানে ব্যাংকে জমা আছে ১৮ হাজার ৯২২ টাকা। অর্থাৎ চার বছরে ব্যাংকে জমার পরিমাণ কমেছে। এবারের হলফনামায় গাড়ির জায়গায় তিনি ‘প্রযোজ্য নয়’ উল্লেখ করলেও গতবারের হলফনামায় তিনি প্রায় ১৪ লাখ টাকার একটি ১৫০০ সিসির গাড়ির কথা উল্লেখ করেছেন। হলফনামায় সংসদ সদস্য হিসেবে সাত্তার বাৎসরিক সম্মানী ভাতা ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা পেতেন। এবার ব্যবসা থেকে কোনো আয় না দেখালেও গত নির্বাচনের সময় ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ৪ লাখ ৫২ হাজার ৮০৬ টাকা।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী হামিদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। পেশায় তিনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। কৃষি খাত থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ২৫ হাজার ৫০০ টাকা। ব্যবসা থেকে তাঁর ওপর নির্ভরশীলদের আয় পৌনে চার লাখ টাকা। আইন পেশা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৫ লাখ ৭০ হাজার ৭০০ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাঁর জমা আছে ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। নিজের নামে সোনা আছে ৪০ ভরি ও স্ত্রীর নামে আছে ৩৭ ভরি। নিজের নামে মূলধন আছে ২ লাখ ১২ হাজার ৩৮৯ টাকা এবং স্ত্রীর কাছে আছে ২২ লাখ ৯৬ হাজার ৯০০ টাকা। তাঁর ৯০ হাজার টাকা দামের একটি মোটরগাড়ি এবং সরাইলে ১০ বিঘা কৃষিজমি আছে।
আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা চলমান। তাঁর পেশা ব্যবসায়। তাঁর বার্ষিক আয় বাড়ি-অ্যাপার্টমেন্ট-দোকান ও অন্যান্য ভাড়া থেকে ৮ লাখ ৪২ হাজার ২০০ এবং ব্যবসা থেকে ৩৫ লাখ ৭৮ হাজার ১২০ টাকা। তাঁর কাছে নগদ আছে ১০ লাখ ৫২ হাজার টাকা। তাঁর ১৬ লাখ টাকা মূল্যের একটি প্রাইভেট কার, নিজের নামে ১১ লাখ টাকার সোনা এবং স্ত্রীর নামে ৬০ হাজার টাকা ও ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকার আসবাব আছে। আশুগঞ্জে তার ৫ শতাংশ জমির ওপর একটি বাড়ি আছে। প্রিমিয়ার ব্যাংকে ৭৬ কোটি ৪৭ লাখ ৫৬ হাজার ৬৫১ টাকার তাঁর দায়দেনা আছে।
জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুলের নামে মামলা নেই। ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। তাঁর কাছে নগদ ২ লাখ ও ২ লাখ টাকার সোনা আছে। স্ত্রীর কাছে নগদ ২ লাখ ও ২ লাখ টাকার সোনার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর নামে পৈতৃক সম্পত্তি আছে ৩০ শতক। ব্যবসার পুঁজি হিসেবে প্রায় ১৮ লাখ টাকার কথা উল্লেখ করেন তিনি।