পরপর ৩ জুমা না আদায় করলে যা হয়

ধর্ম, 24 April 2025, 242 Views,

ইসলাম ডেস্ক :
জুমার দিনের মর্যাদা ও গুরুত্ব ইসলামে অপরিসীম। এই দিনকে আল্লাহ তাআলা সপ্তাহের অন্য সব দিনের চেয়ে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। কোরআন ও হাদিসে জুমার দিনের ফজিলত ও তাৎপর্য সম্পর্কে বিশেষভাবে উল্লেখ রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘হে মুমিনগণ, জুমার দিন যখন নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) এগিয়ে যাও এবং যাবতীয় কাজকর্ম ছেড়ে দাও। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমা)

banner

হাদিসে রসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন।’ (ইবনে মাজাহ ১০৯৮)

হজরত আউস ইবনে আউস (রা.) বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করাবে এবং নিজেও ভালোভাবে গোসল করবে, ওয়াক্ত হওয়ার সাথে সাথে মসজিদে হেঁটে আসবে, ইমামের কাছাকাছি বসবে, খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং কোনো অনর্থক কাজ করবে না, সে মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপে এক বছর নফল রোজা ও নামাজের সওয়াব পাবে।’ (আবু দাউদ ৩৪৫)

তবে ফজিলতের পাশাপাশি জুমার নামাজ আদায় না করলে রয়েছে কঠিন শাস্তির হুঁশিয়ারি। রসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে পরপর তিনটি জুমা পরিত্যাগ করে, আল্লাহ তাআলা তার অন্তরে মোহর এঁটে দেন।’ (বুখারি ১০৫২; তিরমিজি ৫০২, মুসলিম ১৯৯৯)

একটি হাদিসে হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি পরপর তিনটি জুমা পরিত্যাগ করে, সে ইসলামকে পেছনের দিকে নিক্ষেপ করল।’ (মুসলিম)

তবে কিছু শ্রেণির লোক জুমার নামাজে উপস্থিত না হলে তারা দোষী নয়। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘চার শ্রেণির লোক ব্যতীত জুমার নামাজ ত্যাগ করা কবিরা গোনাহ: ক্রীতদাস, স্ত্রীলোক, অপ্রাপ্তবয়স্ক বালক, মুসাফির ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তি।’ (আবু দাউদ)

নামাজ প্রসঙ্গে হজরত উমর (রা.) বলতেন, ‘নামাজ ত্যাগকারী নির্ঘাত কাফের।’ (বায়হাকি ১৫৫৯, ৬২৯১)। হজরত আলি (রা.) বলেন, ‘যে নামাজ পড়ে না, সে কাফের।’ (বায়হাকি ৬২৯১)

কোরআন ও হাদিসের বিভিন্ন দলিল থেকে বোঝা যায়, ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ত্যাগ করা বড় কুফরি এবং ইসলাম নষ্টকারী কাজ। তাই জুমা ও প্রতিদিনের ফরজ নামাজ যথাসময়ে আদায়ের প্রতি গুরুত্ব দেয়া প্রত্যেক মুসলিমের জন্য অপরিহার্য।

Leave a Reply

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১০জন…

অনলাইন ডেস্ক : মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও Read more

কানাডায় বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

মুমিনুল হক : কানাডার টরেন্টোতে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। Read more

ইসরায়েলকে ধরাশায়ী ইতালির

অনলাইন ডেস্ক : বিশ্বকাপ বাছাইয় পর্বের ম্যাচে ৮ সেপ্টেম্বর সোমবার Read more

রেলওয়ে স্টেশনে এসি বিস্ফোরণে সিগন্যাল অচল…

চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন সিগন্যাল কেবিনে এয়ারকন্ডিশন Read more

নারীদের অজু-গোসল নামাজ-রোজার গুরুত্বপূর্ণ মাসয়ালা

ধর্ম, 11 February 2025, 477 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ইবাদত, পর্দা, পবিত্রতা, সাজ-সজ্জা ইত্যাদি বিষয়ে কিছু ভিন্নতা রয়েছে নারীদের। শরিয়তের বিধি-বিধান পালনের ক্ষেত্রে আলাদা এসব মাসয়ালা জানা নারীদের জন্য জরুরি। নিচে এ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু মাসায়েল তুলে ধরা হলো।

banner

অজু-গোসলে নারীদের যেসব মাসয়ালা জানা জরুরি
* শিশুকে দুধ পান করানোর কারণে অজু ভঙ্গ হবে না। তবে নামাজ অবস্থায় কোনো শিশু দুধ পান করে নিলে নামাজ ভেঙে যাবে। (আদ্দুররুল মুখতার: ১/৬২৫)

* দুগ্ধপায়ী ছোট বাচ্চা মুখ ভরে বমি করলে তা বড় মানুষের মতোই নাপাক এবং তা কাপড়ে পড়লে ধৌত করতে হবে। মুখ ভরে বমি না করলে তা নাপাক হবে না। (আদ্দুররুল মুখতার: ১/১৩৭)

* অজু-গোসলের সময় মহিলাদের নাক-ফুলের ছিদ্রে পানি পৌঁছানো জরুরি। (আল মুহিতুল বুরহানি: ১/৮০)

* ফরজ গোসলে মহিলাদের চুল খোলা থাকলে পুরো চুল ধোয়া ফরজ। আর বাঁধা থাকলে পুরো চুল ধোয়া ফরজ নয়। কেবল চুলের গোঁড়ায় পানি পৌঁছানোই যথেষ্ট। (শরহু মুশকিলিল আসার, হা. : ৩৮৫৪)

* ফরজ গোসলে মহিলাদের লজ্জাস্থানের বহিরাংশে পানি পৌঁছালে ফরজ আদায় হয়ে যায়। অভ্যন্তরীণ অংশে পানি পৌঁছানো জরুরি নয়। আর রোজা অবস্থায় মহিলাদের ভেতরাংশে যেন পানি না পৌঁছে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে, কেননা ভেতরে যাওয়ার দ্বারা রোজা ভেঙে যাবে। (রদ্দুল মুহতার: ১/১৫২)

* গর্ভাবস্থায় সন্তান হওয়ার আগে শেষের দিনগুলোতে মাঝেমধ্যে ঘুমের মধ্যে পানি বের হয়ে মহিলাদের শরীর ও কাপড় নষ্ট হয়ে যায়, এতে মহিলার ওপর গোসল ফরজ হবে না, তবে অজু ভেঙে যাবে এবং নির্গত পানি থেকে শরীর ও কাপড় পবিত্র করে নামাজ পড়তে হবে। কেননা সেগুলো নাপাক। (আদ্দুররুল মুখতার: ১/১৫৯, ইমদাদুল ফতোয়া: ১/১০৭)

* যেসব নারী ধাতুরোগে আক্রান্ত, তাদের অজু নষ্ট হওয়ার ভয়ে যদি কেউ টিস্যু বা তুলা ধাতু আসার রাস্তায় এমনভাবে রাখে, যাতে ধাতু বাইরে আসতে না পারে, তাহলে এমতাবস্থায় সব ইবাদত আদায় করতে কোনো অসুবিধা হবে না। বরং এটিই রোগীর জন্য উত্তম পন্থা। হ্যাঁ, তুলা বা টিস্যু পেপারের বহিরাংশ যদি ভিজে যায়, তাহলে অজু নষ্ট হয়ে যাবে। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/১০)

* মহিলাদের ‘হায়েজ’ তথা মাসিক রক্তস্রাবের ওপর শরয়ি বিধানের ক্ষেত্রে সর্বনিম্নে তিন দিন আর ঊর্ধ্বে ১০ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। উল্লিখিত দুই সংখ্যার প্রথমটির কম হলে কিংবা দ্বিতীয়টির বেশি হলে তখন তা ‘ইস্তিহাজা’ বা রোগ হিসেবে ধর্তব্য হয়। আর দুই স্রাবের মাঝখানে ১৫ দিন পবিত্র থাকা আবশ্যক। কারো যদি স্রাবের নির্দিষ্ট অভ্যাস থাকে, আর সে কোনো মাসে অভ্যাসের বিপরীত ১০ দিনের পরও রক্ত দেখতে পায়, তাহলে অভ্যাসের ভেতরে আসা রক্তগুলোকে হায়েজ ধরতে হবে এবং অতিরিক্তগুলোকে ইস্তিহাজা। অনুরূপ কারো যদি এক হায়েজ শেষ হওয়ার পর ১৫ দিনের আগেই আবার রক্ত দেখা দেয়, আর এভাবে কয়েক বছর ধরে চলতে থাকে, তাহলে তার এই অনিয়ম চালু হওয়ার আগের হায়েজের অভ্যাস হিসাব করে ঠিক তার ১৫ দিন পরেই দ্বিতীয় হায়েজের সময় শুরু হবে, মাঝে আসা রক্তগুলোকে ইস্তিহাজা ধরতে হবে। (রদ্দুল মুহতার: ১/২৮৯)

* কোনো কারণে আগের মাসের অভ্যাস খেয়াল না থাকলে দশের বেশি হলে তার বিধান হচ্ছে, যেহেতু হায়েজের শেষ সীমা ১০ দিন, তাই ১০ দিনের পর নিয়মিত নামাজ-রোজা শুরু করবে। এক্ষেত্রে আগের মাসের পরিমাণ খেয়াল না থাকলে খুব চিন্তাভাবনার পর প্রবল ধারণা অনুযায়ী যত দিনের অভ্যাস খেয়াল হবে, ততদিনই হায়েজ হিসেবে গণ্য হবে। (আদ্দুররুল মুখতার: ২/২৮৬)

* সন্তান প্রসবের পর জরায়ু থেকে যে রক্ত আসে, তাকে নিফাসের রক্ত বলা হয়। এর সর্বোচ্চ সীমা ৪০ দিন। এর সর্বনিম্ন সীমা নেই, অল্প কিছুক্ষণও হতে পারে। ‘নিফাস’ অবস্থার সব বিধান মাসিক স্রাবের অনুরূপ। নারীরা মাসিক ও প্রসবজনিত বিশেষ দিনগুলোতে নামাজ-রোজা পালন করতে পারবে না। পরে এসব নামাজের কাজাও নেই, তবে রোজা কাজা করে নিতে হবে। ইস্তিহাজা অবস্থায় শরিয়তের বিধিবিধান যথা—নামাজ, রোজা ইত্যাদি পূর্ণরূপে পালন করতে হবে এবং স্বামী-স্ত্রীর দৈহিক মিলনেও কোনো অসুবিধা নেই। (মাবসুতে সারাখসি: ৩/১৫৪-১৫৫)

* অনুরূপ হায়েজ-নিফাস অবস্থায় সহবাস থেকে বিরত থাকা একান্ত অপরিহার্য। তবে অপারগতাবশত গুনাহ থেকে বাঁচার মানসে হাঁটু থেকে নাভির মধ্যবর্তী অংশ বাদ দিয়ে অন্যান্য অঙ্গ দ্বারা যৌনস্পৃহা নিবারণ করার অবকাশ আছে। (আদ্দুররুল মুখতার: ১/২৯২)

* তদ্রূপ বিশেষ দিনগুলোতে কোরআন শরিফ পড়া এবং স্পর্শ করা জায়েজ নেই। ওই সময় শিক্ষিকারা শিক্ষার্থীদের কোরআন শিক্ষা না দেওয়াই শরিয়তের প্রকৃত বিধান, তথাপি প্রয়োজনবশত একেক শব্দ ভিন্ন ভিন্ন করে শিক্ষা দেওয়া যেতে পারে। তবে ওই অবস্থায় তাদের কোরআন পড়া শোনা যাবে। (ফাতহুল কাদির: ১/১৬৮)

* বই-পুস্তক বা দ্বীনি কিতাবাদি, যেখানে কোরআন শরিফের আয়াতও লিখা থাকে, এ অবস্থায় পড়া বা স্পর্শ করা জায়েজ। তবে কোরআনের আয়াত পড়া বা স্পর্শ করা যাবে না। (রদ্দুল মুহতার: ১/১৭৬)

* তদ্রূপ ওই সময়ে দোয়ার অর্থবহ আয়াত বা সুরা দোয়ার নিয়তে পড়া জায়েজ। যেমন দোয়ার নিয়তে আয়াতুল কুরসি বা সুরায়ে নাস ও ফালাক ইত্যাদি পড়া জায়েজ হবে। (ফাতহুল কাদির: ১/১৬৮, রদ্দুল মুহতার: ১/১৭২, আহসানুল ফতোয়া: ২/৭১)

* ওষুধের মাধ্যমে স্রাবের সময় পিছিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে অভিজ্ঞ ডাক্তার যদি বলেন, ‘এ ধরনের ওষুধ ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হবে না’, তাহলে প্রয়োজনে তা ব্যবহার করা যাবে। (ফতোয়ায়ে রহিমিয়া: ৬/৪০৪)

নারীদের পোশাক ও সাজসজ্জার মাসয়ালা
* পোশাকের মধ্যে শরয়ি নীতিমালা হলো- এমন পোশাক পরবে, যা দ্বারা মাথা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত সারা শরীর ঢেকে যায় এবং কাপড় এতটুকু মোটা হওয়া চাই, যাতে ওপর দিয়ে শরীর দেখা না যায়। নারীরা পুরুষের মতো পোশাক পরিধান করা হারাম। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (স.) অভিশাপ করেছেন ওই সব পুরুষের ওপর, যারা মহিলাদের আকৃতি ধারণ করে এবং ওই সব মহিলাদের ওপর, যারা পুরুষের আকৃতি ধারণ করে।’ (বুখারি: ৫৮৮৫)

* ভ্রু প্লাক, দাঁত চিকন করে মাঝে ফাঁকা করা, শরীর খোদাই করে অঙ্কন করা জায়েজ নেই। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘রাসুলুল্লাহ (স.) অভিশাপ করেছেন ওই সব মহিলার ওপর, যারা নিজের শরীর খোদাই করে ও করায়, যারা ভ্রুর চুল উঠায় ও উঠিয়ে দেয় এবং দাঁত চিকন করে। কেননা তারা সৌন্দর্যের জন্য আল্লাহর সৃষ্টিতে পরিবর্তন করে ফেলে।’ (বুখারি: ৪৮৮৬)

* কোনো মহিলার চেহারায় দাড়ি-মোচ উঠলে তা উপড়ে ফেলা উত্তম। (রদ্দুল মুহতার: ৬/৩৭৩)

* অপ্রয়োজনে মহিলাদের মাথার চুল পুরুষের মতো ছোট করা নাজায়েজ। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/৩৫৮)

* নারীরা হাতে, পায়ে ও গোটা শরীরে মেহেদি দিতে পারবে, বরং তা মোস্তাহাব। তবে এমন কোনো পলিস ব্যবহার করতে পারবে না, যার কারণে অজু-গোসলের পানি শরীরের চামড়ায় পৌঁছে না। নারীরা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হলে এমন পোশাক ও বোরকা পরে বের হবে, যা শালীনতা নির্দেশ করে। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, ‘পুরুষের সাজসজ্জা হলো সুগন্ধি লাগানো, যা আকর্ষণীয় রঙের হবে না। আর নারীদের সাজসজ্জা হলো রংবেরঙের, তবে তার সুগন্ধি যেন বাইরে না ছড়ায়।’ (তিরমিজি: ২৭৮৭)

নারীদের পর্দার মাসয়ালা
* নারীরা স্বামী, পিতা, দাদা, নানা ও এদের বরাবর ওপরের দিকের পূর্বপুরুষ, নিজের ছেলে, নাতি ও এর বরাবর নিচের দিকের সব পুরুষ, আপন ভাই, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই, এসব ভাইয়ের সন্তান, বোনের ছেলে, মামা, চাচা, স্বামীর বাবা, স্বামীর দাদা-নানা ও এদের বরাবর ওপরের পূর্বপুরুষ, স্বামীর আগের ঘরের সন্তান, মেয়ে ও নাতনি জামাই, দাদা-দাদি ও নানা-নানির ভাই এবং দুধ-সম্পর্কীয় এসব স্বজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা জায়েজ। এর বাইরে অন্য পুরুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা জায়েজ নেই। (সুরা নিসা: ২২, ২৩; বুখারি: ২৬৪৫)

* শরিয়তের বিধানমতে, স্বাভাবিক অবস্থায় মহিলারা উল্লিখিত মাহরাম পুরুষের সামনে তার মাথা, মুখমণ্ডল, গলা, পুরো হাত, পায়ের পাতা খুলতে পারবে। অনুরূপ বুক, পায়ের গোছা, বাহু খোলার অনুমতি থাকলেও বিনা প্রয়োজনে না খোলাটাই উত্তম, তবে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা হলে এগুলোও ঢাকা জরুরি। বর্তমান ফিতনার যুগে এ বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। (রদ্দুল মুহতার: ৬/৩৬৭)

* প্রয়োজনে মহিলারা মাহরাম পুরুষের সামনেও বাচ্চাদের দুধ দিতে পারবে, তবে ফিতনার আশঙ্কা হলে তা করবে না। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/৩২৮)

* অতি প্রয়োজনে অনন্যোপায় হলে মাহরাম ছাড়া পরপুরুষের সামনে—যেমন ডাক্তারের সামনে চেহারা ও অন্যান্য অঙ্গ প্রয়োজন অনুপাতে খোলা জায়েজ। (আদ্দুররুল মুখতার: ৬/৩৭০)

* এমন বৃদ্ধ নারী, যাদের প্রতি সাধারণত কামদৃষ্টি যায় না, তারা পরপুরুষের সামনে চেহারা খুলতে পারবেন। পুরুষদের জন্য তাদের দেখা বৈধ। (মাবসুতে সারাখসি: ১০/১৫৪)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম নারীদের তাদের আলাদা মাসয়ালাগুলো জানার ও মেনে চলার তাওফিক দান করুন। নারী-পুরুষ সবাইকে ইসলামি শরিয়তের যাবতীয় বিধি-বিধান মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

যে কাজে নেক আমল নষ্ট হয়

ধর্ম, 24 June 2025, 222 Views,

ইসলাম ডেস্ক :
মানুষের জীবনের সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকারক দিক হলো হিংসা ও অহংকার। হিংসা এবং অহংকার মানুষের শান্তিপূর্ণ জীবনকে করে তুলে বিষময়। হিংসা মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনকে করে তুলে দুর্বিষহ ও বিষময়।

banner

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, আল্লাহর জমিনে তোমরা দম্ভ ভরে চলো না, কেননা তুমি কখনই এ জমিন বিদীর্ণ করে এর নিচে যেতে পারবে না, আর উচ্চতায় তুমি কখনো পর্বতসমানও হতে পারবে না। (সুরা বনী ইসরাইল, আয়াত ৩৭)।

সুরা হুজরাতের ১১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, হে ইমানদারগণ, তোমাদের কোনো সম্প্রদায় যেন অপর কোনো সম্প্রদায়কে বিদ্রুপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রুপকারীদের চেয়েও উত্তম। আর কোনো নারীও যেন অন্য নারীকে বিদ্রুপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রুপকারীদের চেয়েও উত্তম। আর তোমরা একে অপরের নিন্দা করো না এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না।

ইমানের পর মন্দ নামে ডাকা কতই না নিকৃষ্ট। যারা এ আচরণ থেকে ফিরে না আসবে তারা জালেম। আমাদের মনে রাখতে হবে হিংসা-বিদ্বেষ একটি মারাত্মক ব্যাধি। হিংসুক ব্যক্তি যখন হিংসাত্মক কাজে লিপ্ত হয় তখন তাকে পরিত্যাগ করা অবশ্য কর্তব্য।

মানুষ কেন একজন আরেকজনকে হিংসা করে? সমাজবিজ্ঞানীদের দৃষ্টিতে তা হলো- পরশ্রীকাতরতা, শত্রুতা, দাম্ভিকতা, একে অপরকে ঈর্ষা করা, নেতৃত্ব পাওয়া, নিজেকে যোগ্য ভাবা, ব্যক্তিগত সুবিধা হাসিল করা, ক্ষমতা পাওয়া ইত্যাদি।

হিংসুক ব্যক্তি মনে করে সে-ই সমাজে সম্মানিত ও দামি আর সবাই তার চেয়ে নগণ্য। এ জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হিংসা-বিদ্বেষ থেকে এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য পবিত্র কোরআনে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

সুরা ফালাকের ৩ নম্বর আয়াতে বর্ণিত হয়েছে- ‘হিংসুক ব্যক্তির হিংসার অনিষ্ট থেকেও আমি তোমার আশ্রয় চাই, যখন সে হিংসা করে। ’

নবী করিম (সা.) বলেন, ‘তোমরা হিংসা থেকে বেঁচে থাক। কেননা হিংসা নেক আমলকে এমনভাবে ধ্বংস করে দেয়, যেমন আগুন কাঠের টুকরাকে খেয়ে ফেলে। (জ্বালিয়ে দেয়)। (আবু দাউদ, মিশকাত)।

হিংসুটেকে সমাজে কেউ পছন্দ করে না। সবাই তাকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখে। সমাজে সবার সঙ্গে বসবাস করলেও কেউ তাকে ভালো জানে না।

সুরা নিসার ৩৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে মানুষকে যা দিয়েছেন সেজন্য কি তারা তাদের ঈর্ষা করে?

আল্লাহ রাব্বুল আলামিনও ঈর্ষাকারীকে পছন্দ করেন না। কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে অহংকারও অনেক বড় গুনাহের কাজ। আমাদের মনে রাখতে হবে অহংকারের মাধ্যমেই সংঘটিত হয়েছিল প্রথম পাপ।

অহংকারীকে আল্লাহতায়ালা কখনো পছন্দ করেন না। কবিরা গুনাহর মধ্যে অহংকার অন্যতম। আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা বুঝে না বুঝেই অহংকার করি। যা কাম্য নয়। কারণ অহংকাই পতনের মূল।

আল্লাহ বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব, যারা আমার ইবাদত নিয়ে অহংকার করে তারা শিগগিরই অপমানিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। (সুরা মুমিন (৪০), আয়াত ৬০)।

অহংকারবশত ইবলিশ আল্লাহর আদেশ অমান্য করল এবং আদমকে সেজদা না করার দরুন জান্নাত থেকে বহিষ্কৃত হলো।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ঈদগাহ মাঠে ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায়

ধর্ম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 30 March 2025, 448 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশের আকাশে আজ ৩০ মার্চ রবিবার ১৪৪৬ হিজরি সনের পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামীকাল ৩১ মার্চ সোমবার সারা দেশে উদযাপিত হবে মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর।

banner

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদ-উল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে জেলা ঈদগাহ ময়দানে। এতে ইমামতি করবেন – জেলা জামে মসজিদের খতিব মাওলানা সিবগাহতুল্লাহ নূর।

তবে, বৈরী আবহাওয়া থাকলে জেলা জামে মসজিদে নির্ধারিত সময়ে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঈদ জামাত পালনে ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্ততি সম্পন্ন করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন।

এছাড়াও জেলা শহরের ট্যাংকের পর জামে মসজিদ, শেরপুর জামে মসজিদ, কাউতলী নিয়াজ মোহাম্মদ স্টেডিয়ামের আউটার স্টেডিয়াম, ভাদুঘর ফাঁটা পুকুর ঈদগাহ ময়দান, ভাদুঘর শাহী মসজিদ প্রাঙ্গণ, পূর্বমেড্ডা বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদ প্রাঙ্গণ, শরীফপুর ঈদগাহ মাঠ, মধ্যপাড়া ভাওয়াল দিঘীরপাড় মসজিদসহ জেলার ৭৮০টি ঈদগাহ ও ৫১০টি মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

রমজানে বেশি বেশি যে চার আমল করবেন

ধর্ম, 6 March 2025, 304 Views,

ইসলাম ডেস্ক :
বছরের অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় রমজান মাসে মুসলমানরা বেশি ইবাদত করেন। যারা অন্য মাসে নামাজ পড়েন না তাদেরকেও এই মাসে নামাজ পড়তে দেখা যায়। তাই বলা যায় আমল ইবাদতের মাস রমজান।

banner

রমজানের শুরুর দিনগুলোতে মসজিদগুলোতে থাকে উপচেপড়া ভিড়। ধীরে ধীরে মসজিদে আনাগোনা কমে গেলেও প্রাথমিক চিত্রগুলোই রমজান মাসের প্রতিনিধিত্ব করে। এটাই মূলত মুলমানদের রমজানের চিত্র। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবি, পূর্ববর্তী ও বর্তমান অনুসরণীয় আলেম, দ্বীনদ্বার ব্যক্তিরাও আমল ইবাদতে অতিবাহিত করেন রমজান মাস।

কোরআন তিলাওয়াত
আল্লাহ তায়ালা মানব জাতির হেদায়েতের জন্য পবিত্র কোরআন নাজিল করেছেন। এতে মানুষের জীবনযাপনের সব ধরনের বিধি-নিষেধ জানিয়ে দিয়েছেন। রাসূল সা. সাহাবিদের কোরআনের বিধান জানিয়েছেন এবং তিলাওয়াত করেছেন। তিলাওয়াত করতে উৎসাহিত করেছেন।

কোরআন নাজিলের মাসে তিনি কোরআন তিলাওয়াত করতেন বেশি বেশি। তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত এই মাসে বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করা। অন্তত প্রতিদিন এক পৃষ্ঠা বা কিছু সময় হলেও কোরআন তিলাওয়াত করা উচিত।

প্রতি রমজানে রাসুলুল্লাহ (সা.) ও জিবরাইল (আ.) পরস্পরকে কোরআন শোনাতেন। ফাতেমা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘তার পিতা তাকে বলেছে, প্রতি রমজানে জিবরাইল (আ.)-কে একবার কোরআন তেলাওয়াত করে শোনাতেন। কিন্তু মৃত্যুর বছর তিনি তাকে দু’বার কোরআন শোনান।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬২৮৫)

দান-সদকা
কোরআন তিলাওয়াতের পাশাপাশি রমজানে যে আমলটি আরও বেশি বেশি করবেন সেটি হলো, দান ও সদকা। এই আমলগুলো পুরো বছরের আমল হলেও রমজানে বেশি বেশি করা উচিত ফজিলত লাভের আশায়। কারণ, রমজানে যেকোনো আমলের ফজিলত বেড়ে যায়। আল্লাহ তায়ালা আমলের অনেক বেশি প্রতিদান দেন।

রমজানে রাসূল সা.-এর দানের বিবরণ দিতে গিয়ে হজরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন-

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল। তিনি রমজান মাসে সবচেয়ে বেশি দান করতেন যখন জিবরিল আ.-এর সাথে দেখা হত। জিবরিল আ.-এর সাথে দেখা হলে তিনি হয়ে উঠতেন মুক্ত বাতাসের চেয়েও দানশীল। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৮০৩)

ইস্তেগফার পাঠ
ইস্তেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা গুনাহ মাফ করে দেন এবং মযার্দা বৃদ্ধি করেন। রমজানে বেশি ইস্তেগফার পাঠ করা উচিত।

মানুষ শয়তানের ধোঁকা, নফসের প্ররোচনা ও পরিবেশের কারণে গুনাহের কাজে জড়িয়ে থাকে, আর এই গুনাহ থেকে নিজেকে পবিত্র করার বড় মাধ্যম হলো, ইস্তেগফার।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,‘আমি তাদেরকে বলেছি, নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল।’ (সূরা নুহ, আয়াত :১০)

ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তিগফার করে আল্লাহ তায়ালা তার সব সংকট থেকে উত্তরণের ব্যবস্থা করে দেন, তার সব পেরেশানী দূর করে দেন এবং তাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দান করেন, যা সে কল্পনাও করতে পারে না।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস, ১৫১৮)

জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়া
রমজানে মানুষ নেক আমল বেশি বেশি করে এবং করার চেষ্টা করেন। নেক আমলে লিপ্ত থাকার ফলে আল্লাহ তায়ালা সহজেই দোয়া কবুল করেন। মানুষ নিজের প্রয়োজন অনুপাতে আল্লাহর কাছে দোয়া চায়। দোয়া করার সময় আল্লাহ তায়ালার কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি প্রার্থনা করা উচিত।

দুনিয়াবী অনেক প্রয়োজন থাকে আমাদের তবে সব থেকে বড় প্রয়োজন হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তি। যে ব্যক্তি জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করবে তার আর কোনো টেনশন থাকবে না। সাবর উচিত রমজানে আল্লাহ তায়ালা কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি প্রার্থনা করা।

রমজানের রাতে স্ত্রীর সঙ্গে শয্যাযাপন কী জায়েজ?

ধর্ম, 10 March 2025, 297 Views,

ইসলাম ডেস্ক :
আল্লাহ ইরশাদ করেন,

banner

أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَىٰ نِسَائِكُمْ ۚ هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ ۗ عَلِمَ اللَّهُ أَنَّكُمْ كُنتُمْ تَخْتَانُونَ أَنفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنكُمْ ۖ فَالْآنَ بَاشِرُوهُنَّ وَابْتَغُوا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَكُمْ ۚ

অর্থ : রোজার রাতে তোমাদের জন্য স্ত্রী সহবাস হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের জন্য পোশাকের মতো এবং তোমরাও তাদের জন্য পোশাকের মতো। আল্লাহ জানেন তোমরা তোমাদের নিজেদের সঙ্গে অবিচার করছিলে। তিনি তোমাদের তাওবা কবুল করেছেন এবং তোমাদের ক্ষমা করেছেন।

এখন তোমরা তাদের সঙ্গে সহবাস করতে পারবে এবং অনুসন্ধান কোরো মহান আল্লাহ তোমাদের জন্য যা লিখে রেখেছেন। (বাকারাহ, আয়াত : ১৮৭)

উল্লিখিত আয়াত অবতীর্ণের প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে হাদিস শরিফে এসেছে, বারা (রা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, নবী (সা.)-এর যুগে সাহাবীদের আমল ছিল, রোজা রাখার পর ইফতারের সময় হলে যদি ইফতার করার আগেই ঘুমিয়ে পড়েন তাহলে এই রাত ও পরের দিন সূর্যাস্ত না হওয়া পর্যন্ত কিছুই আহার করা যাবে না।

কায়স ইবন সিরমা আনসারি (রা.) একবার রোজা পালন করছিলেন। ইফতারের সময় তিনি স্ত্রীর কাছে এসে বললেন, কোন খাবার আছে? স্ত্রী বলল, নেই।

তবে আপনার জন্য কিছু খুঁজে আনছি।

এদিকে ওই সাহাবি সারাদিন কাজ করে ক্লান্ত থাকায় তার দুই চোখে ঘুম চলে আসে। তার স্ত্রী এসে তাকে ঘুমন্ত দেখে বলল, হায়, আপনিত বঞ্চিত। পরদিন দুপুরে ওই সাহাবি বেঁহুশ হয়ে পড়েন।

নবী (সা.)-এর কাছে বিষয়টি উল্লেখ করা হলে তখন এই আয়াত নাজিল হয়-

(أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَى نِسَائِكُمْ)

অর্থ : ‘রোহার রাত্রে তোমাদের জন্য স্ত্রী সম্ভোগ বৈধ করা হয়েছে।’

তখন এই খবরে সাহাবিরা খুবই আনন্দিত হন। (আবু দাউদ, হাদিস : ২০৩৪)