চলারপথে রিপোর্ট :
কৃষি জমি থেকে ভেকু দিয়ে অবৈধভাবে মাটি কাটার দায়ে মোঃ এরশাদ (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে ১০ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সাথে মাটি ভর্তি ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। আজ ২৬ এপ্রিল শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধরন্তি বিল এলাকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মোশারফ হোসাইনের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এই দণ্ডাদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত এরশাদ নেত্রকোনা জেলার দূর্গাপুর উপজেলার শঙ্করপুর গ্রামের রহমত আলীর ছেলে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসাইন জানান, কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধরন্তি বিল এলাকায় একদল মানুষ কৃষি জমি থেকে ভেকু দিয়ে অবৈধভাবে মাটি কেটে ট্রাকে ভরছিল। এই সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান টের পেয়ে অপরাধীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের একটি দল একজন অপরাধীকে আটক করে। এইসময় একটি মাটি ভর্তি ট্রাক জব্দ করা হয়। পরে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ লঙ্ঘনের দায়ে উক্ত আইনের ১৫(১) ধারায় এজনকে ১০ দিন বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। অভিযানে সরাইল থানার পুলিশ সদস্যর উপস্থিত ছিল।
চলারপথে রিপোর্ট :
২৪ হেক্টরেরও অধিক ইরিবোরো ধানের জমি ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। কৃষি অফিস বলছেন, পোকা মাকড় জীবাণুর আক্রমণ বা ব্লাস্ট রোগ।
কৃষকরা বলছেন, ধানে চাল আসার আগেই ছড়াগুলো জ্বলে পুড়ে লালচে হয়ে ঝরে পড়ছে। কোথাও সাদা পাউডারের মতো হয়ে যাচ্ছে। উপজেলার জয়ধরকান্দি, দেওড়া, মলাইশ, নিয়ামতপুর, ধাউরিয়া, চুণ্টা, বিটঘর গ্রামের ফসলি মাঠে ও কালিকচ্ছের ধর্মতীর্থ এলাকায় আকাশী হাওর বিলে বি আর-২৮ ধানের জমিতে এ রোগ দেখা দিয়েছে।
সরাইল উপজেলা কৃষি অফিস ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরাইল উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে ইরিবোরো ধানের চাষ হয়েছে। এরমধ্যে ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ২৪ হেক্টর জমি। তবে কৃষকদের দেয়া তথ্য মতে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৫-৪০ হেক্টর জমির ধান। অধিকাংশ এলাকায় বিআর-২৮ জাতের ধান আক্রান্ত হয়েছে। এই জাতের ধান চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করে কৃষি অফিস। কারণ এগুলো অনেক পুরাতন মডেল।
তাই ২৮ জাতের ধানে দ্রুত পোকা মাকড় ও জীবাণু আক্রমণ করে ক্ষতি করে থাকে। এর পরিবর্তে নতুন উন্নত জাতের ধান এখন বিআর-৮৮, ৮৯ জাত। জয়ধরকান্দি গ্রামের কৃষক সেলিম মিয়া (৪০) ও ইমরান মিয়া (৩৫) বলেন, বিঘা প্রতি ৭-৮ হাজার টাকা খরচ করেছি। চোখের সামনে সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। ধানে এখনো চাল হয়নি। এরই মধ্যে ছড়া লাল বা সাদা রঙ ধারণ করে নিচ দিয়ে ভেঙে পড়ে যাচ্ছে। আবার সাদা পাউডারের মতো হয়ে পড়ছে। এই এলাকায় শতাধিক বিঘা জমি আক্রান্ত হয়েছে। কেটে আনলে হাঁস মোরগের খাবার হবে। গ্রামের দোকানদার থেকে ১০ কেজি ওজনের বীজ ধানের প্যাকেট ৬ থেকে ৭শ’ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছিলাম। প্যাকেটের উপরে লেখা ছিল ‘কুমিল্লা’ও ‘চুয়াডাঙ্গা’। ধান নেই তারপরও এক কানি জমি কাটতে ৩৬শ’ টাকা লাগে। এবার কি খেয়ে বাঁচবো জানি না? দেওড়া গ্রামের কৃষক মো. জয়নাল মিয়া, ধাউরিয়া গ্রামের কৃষক ক্ষিরোদ মজুমদার, লিল মহন সরকার, নিরঞ্জন সরকার, জগদিশ সরকার বলেন, আমাদের এখানে প্রায় দেড় শতাধিক বিঘা জমি শেষ। এখন কেটে গরুকে খাওয়ানো হচ্ছে। কালিকচ্ছ বাজারের ‘কৃষকবন্ধু’ দোকানের মালিক মো. সেলিম মিয়া বলেন, গত কয়েকদিন ধরে স্থানীয় কৃষকরা লাইন ধরে পোকা মাকড় ধ্বংস ও আগাছা নাশক ওষুধ ক্রয় করছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. একরাম হোসেন ২৮-২৯ জাতের ধান আক্রান্ত হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, অনেক পুরাতন হওয়ায় প্রকৃতিগতভাবেই এই জাতের ধানে জীবাণু আক্রমণ করে থাকে। এই ধান চাষে আমরা কৃষকদের নিরুৎসাহিত করে থাকি। লেটেস্ট ও ভালো বীজ হচ্ছে ৮৮, ৮৯ জাতের ধান। আমরা প্রণোদনায়ও আধুনিক বীজ দিয়ে থাকি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) সংসদীয় আসন থেকে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হতে চান ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ডাঃ আশীষ কুমার চক্রবর্তী।
আজ ১৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি নিজে প্রার্থী হওয়ার কথা ঘোষনা করেন। সংবাদ সম্মেলন আশীষ কুমার চক্রবর্তী লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
লিখিত বক্তব্যে ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ২০০২ সালে মিশন হাসপাতালে কাজ করার সময় থেকেই আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিকসহ জনকল্যাণমূলক কর্মকান্ডে ব্যাপকভাবে জড়িয়ে পড়ি। বর্তমানে আমি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য, ঢাকাস্থ ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইউনিভার্সেল মেডিকেল সার্ভিসেস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ঢাকাস্থ সরাইল সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ করছি।
তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সহ আমার নির্বাচনী এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২- (সরাইল-আশুগঞ্জ)সহ বিভিন্ন স্থানে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে ব্যাপকভাবে কাজ করে আসছি।
মৌলবাদীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বিজয়ের ৪০ বছর পূর্তিতে বিজয়ানন্দ এবং বৈশাখী সংগীত উৎসব সহ সর্বশেষ ঢাকার বাইরে প্রথমবারের মতো ৭ মার্চের জয় বাংলা কনসার্ট ছিল দেশের সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আরেক বিপ্লব। সেগুলোর প্রত্যেকটিতেই নেতৃত্ব দিয়েছি আমি।
তিনি বলেন, গত ১০ বছর ধরে আমার বাড়ি সরাইলে উদযাপিত হয়ে আসছে আমার প্রয়াত বাবার নামে “আশুতোষ চক্রবর্তী স্মারক শিক্ষা বৃত্তি”। বৃত্তিটি এই অঞ্চলের – ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার প্রতি গভীর মনোযোগী হতে উৎসাহিত করেছে। এই বৃত্তিতে প্রতিবছরই সরাইল ও আশুগঞ্জের সেরা স্কুলগুলোর ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেনীর মেধাবী শিক্ষার্থীদের এককালীন ক্রেস্ট, মেডেল, সার্টিফিকেট ও আর্থিক প্রণোদনা দেয়া হয়।
ডাঃ আশীষ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘আমাকে যোগ্য মনে করে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন দিলে অবহেলিত এলাকার আমূল পরিবর্তন আসবে বলে বিশ্বাস করি। সকল শ্রেণির মানুষের মানোনয়ন হবে বলে আমার নির্বাচনী অঙ্গীকার।
তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন।
এ সময় সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ঠাকুর রাব্বি, সরাইলের ত্রিতাল সংগঠনের সঞ্জিব দেবনাথ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
মাঘের এই হাড় কাঁপানো শীতে মাঝে মধ্যেই থমকে যাচ্ছে জনজীবন। মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন কোন রকমে শীত নিবারণ করছেন। অসহায় দরিদ্র লোকজনের অবস্থা খুবই করূন। তীব্র এই শীতে ভবঘুরে ও ছিন্নমূল মানুষদের দিনরাত যাচ্ছে সীমাহীন কষ্টে। আর সেই শীতার্থ মানুষদের পাশে কম্বল নিয়ে দাঁড়িয়েছেন সরাইলের ইউএনও মো. মেজবাউল আলম ভূঁইয়া। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ইউএনও কম্বল নিয়ে নেমে পড়েন সরাইল সদরের বিভিন্ন সড়কে ও মহল্লায়। ঘুরে ফিরে তিনি দরিদ্র অসহায় ছিন্নমূল নারী পুরূষদের পড়িয়ে দেন কম্বল। সড়ক বা মার্কেটের সামনে স্বামী স্ত্রী আদরের সন্তানদের জড়িয়ে ধরে ঘুমুচ্ছে। ঘুমের মধ্যেই হাড় কাঁপানো শীতে কাঁপছে সকলেই। এমন অনেক পরিবারের সদস্যদের কম্বল পড়িয়ে দিয়েছেন। শীতে জবুতবু লোকজন কম্বলের উষ্ণতায় আবেগ আপ্লোত হয়ে পড়েন।
এক বৃদ্ধ জানতে চান কম্বল কে দিয়েছে? ইউএনও বলেন, কম্বল দিয়েছেন সরকার।
আমি সরকারের প্রতিনিধি হয়ে আপনাদের মাঝে বিতরণ করছি। আল্লাহ বলে ওই বৃদ্ধ হাসিনা ও ইউএনও’র জন্য দোয়া করতে থাকেন। এভাবে কুট্টাপাড়া মোড়, হাসপাতালের মোড় ও কালিকচ্ছ এলাকায় রাত সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত ঘুরে শীতার্ত মানুষদের কম্বল দিয়েছেন। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাউল আলম ভূঁইয়া বলেন, এটা দরিদ্র অসহায় শীতার্থ মানুষদের জন্য সরকারের একটা প্রচেষ্টা। কেউ শীতে কষ্ট করবেন না। আমাদের প্রচেষ্টা আরো কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলায় গলায় ফাঁস দিয়ে সজীব মিয়া (২৯) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করা অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম কুট্টাপাড়া গ্রামের তার নিজ বাড়ির ঘরের তীরের সাথে দড়ি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।মৃত সজীব উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম কুট্টাপাড়া গ্রামের প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মনির মিয়ার ছেলে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যায় তার নিজ ঘরের দরজা ভিতর দিক থেকে বন্ধ থাকায় পরিবারের লোকজন দরজা ভেঙ্গে সজীবকে ঝুলন্ত অবস্থান দেখতে পান।
সজীব দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন বলে পারিবারিক ভাবে জানা যায়। পরে পুলিশকে সংবাদ দিলে ঘটনাস্থল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সজীব গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। কারো কোন অভিযোগ না থাকায় লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে চার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত শনিবার ও শুক্রবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ৫ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের আবদুল হাকিম মোতাঈদের ছেলে সুবেল মোতাঈদ (২৫), একই ইউনিয়নের মোঃ আবু ছিদ্দিকের ছেলে মোঃ রাসেল মিয়া (২৪), হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার শাহপুর গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার ছেলে মিজান মিয়া ও একই উপজেলার বেঙ্গাডোবা গ্রামের অহিদুল্লাহর ছেলে মোঃ আনু মিয়া।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসলাম হোসেন জানান, শনিবার রাতে উপজেলার উচালিয়াপাড়া এলাকা ৫ কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী মিজান মিয়া আনু মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অপরদিকে শুক্রবার রাতে উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের জলিল শাহ’র মাজারের পশ্চিম পাশ থেকে ২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মাদক ব্যবসায়ী সুবেল মোতাঈদ ও রাসেল মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। গত শনিবার তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।