অনলাইন ডেস্ক :
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় চট্টগ্রামে মামলা হয়েছে ১৪৮টি। এসব মামলায় ঢালাও আসামি করার অভিযোগ ওঠে শুরু থেকেই। তখন তদন্ত চলা অবস্থায় একের পর এক আসামির নাম বাদ দিতে বাদীরা আদালতে আবেদন করছেন বা হলফনামা দিয়ে বলছেন ‘ভুলবশত’ আসামি করা হয়েছে।
আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ৪০ মামলা থেকে ৬৭৫ জন আসামির নাম বাদ দিতে আদালতে গেছেন বাদীরা। এ জন্য তাঁরা ৩৫৪টি আবেদন ও হলফনামা দিয়েছেন। কোনো আবেদনে একজন, কোনোটিতে দুজন আবার কোনো আবেদনে চার-পাঁচজন করে ব্যক্তির নাম মামলা থেকে বাদ দিতে বলেছেন বাদীরা।
আইনজীবীরা বলছেন, এ রকম আবেদন এখনো জমা পড়ছে। হলফনামা দিয়ে ও আবেদন করে বাদীরা বলছেন, এজাহারে ভুলে আসামিদের নাম কে বা কারা লিখে দিয়েছেন। তাই তাঁদের জামিন কিংবা মামলা থেকে নাম বাদ দিতে আপত্তি নেই। বেশির ভাগ আবেদনের ভাষা প্রায় একই রকম।
পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, জুলাই আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় চট্টগ্রাম ও মহানগরে এ পর্যন্ত ১৪৮ মামলা হয়েছে। এসব এজাহারনামীয় আসামির সংখ্যা ১৩ হাজার ২৭ জন। এর বাইরে অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যা অন্তত ৩০ হাজার। এসব মামলায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, সন্ত্রাসী যেমন আসামি আছেন; আবার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন এমন ব্যক্তি, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন পেশার মানুষকেও আসামি করা হয়েছে। এখন মামলা থেকে এ ধরনের ব্যক্তিদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য যেমন আবেদন করছেন অনেক বাদী, পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীর জন্যও আবেদন করা হয়েছে। এর মধ্যে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনও রয়েছেন। মামলা থেকে বাদ দিতে আবেদন করা হয়েছে এমন অন্তত ২০ জনের নাম পাওয়া গেছে যাঁরা আগে থেকে অস্ত্র, মাদক ও চাঁদাবাজি মামলার আসামি।
ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা বলছেন, এসব বাদীর পেছনে কিছু আইনজীবী ও বিএনপির নেতা-কর্মী রয়েছেন। তবে মামলা থেকে রেহাই পেতে টাকা লেনদেনের বিষয়ে ভুক্তভোগীরা কেউ পরিচয় প্রকাশ করে কিছু বলতে রাজি হননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, কিছু কিছু মামলার ক্ষেত্রে শুরুতেই এক দফা ‘বাণিজ্য’ করেছে একটি চক্র। খসড়া এজাহার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে পরে টাকার বিনিময়ে বাদ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ আছে। গত ২ জানুয়ারি গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ‘মামলা-বাণিজ্যের’ ব্যাপারে নগরবাসীকে সতর্ক থাকতে বলেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ।
তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, চট্টগ্রামে দায়ের হওয়া অনেক মামলা সাজানো। অনেক বাদী আসামিদের চেনেন না। মামলার নেপথ্যে বিভিন্ন চক্র কাজ করেছে। এ ধরনের মামলার তদন্ত নিয়ে বেকায়দায় আছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
এক মামলারই ৪৫ জনকে বাদ দেওয়ার আবেদন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত বছরের ১৬ জুলাই চট্টগ্রামের মুরাদপুরে গুলিতে নিহত হন দোকান কর্মচারী মো. ফারুক। এ ঘটনায় তাঁর বাবা ভ্যানচালক মো. দুলাল ২৮ আগস্ট পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। এতে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছিরসহ ২৬৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫০ জনকে আসামি করা হয়।
এর মধ্যে মামলা থেকে আ জ ম নাছিরের নাম বাদ দিতে ৪ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন বাদী। তাতে বলা হয়, বাদীর অজ্ঞাতসারে অন্য কেউ ব্যক্তিগত শত্রুতাবশত মামলায় আ জ ম নাছিরের নাম দিয়েছে। নাছির ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।
বাদীর পক্ষে আদালতে আবেদন পেশ করেন আইনজীবী আখেলুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কাকে মামলার আসামি রাখবে না রাখবে, সেটি বাদীর বিষয়। আদালত বাদীর আবেদন নথিভুক্ত করে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছেন।
এর মাসখানেক পর ৫ ডিসেম্বর একই মামলার আরও সাত আসামির নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করেন বাদী। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর হাসান মুরাদ, গিয়াস উদ্দিন ও মোহাম্মদ হোসেন, বায়েজিদ বোস্তামী থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল নবী ও খুলশী ১৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কায়সার মল্লিক এবং আওয়ামী লীগ কর্মী আজগর আলী ও মো. মানিক।
এর আগে ৭ অক্টোবর সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে মজিবুর রহমানের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করেছিলেন বাদী। এভাবে গত চার মাসে এ মামলা থেকে ৪৫ জনের নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
তবে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ তদন্তে যা পাবে তা-ই প্রতিবেদন দেবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ভুক্তভোগী প্রথম আলোকে বলেন, নাম বাদ দিতে তাঁদের কারও ৩০ হাজার, কারও এক লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়েছে। মামলা চক্রের সদস্যদের মাধ্যমে এসব লেনদেন হয়েছে।
তবে বাদী মো. দুলাল প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, ‘তাড়াহুড়া করে মামলা করেছি, এতে অনেকের নাম এসে গেছে। তাই বাদ দেওয়ার আবেদন করেছি।’ টাকার বিনিময়ে আসামিদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করেছেন, এমন অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
৪০ আসামিকে বাদ দিতে চান আহত সিরাজ
গত বছরের ৪ আগস্ট চট্টগ্রামের তিনপুলের মাথায় আহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২৫৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বিএনপির কর্মী সিরাজ খান। পরে গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরে ৪০ জনের নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করেন তিনি। তাঁদের মধ্যে চাকরিজীবী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ রয়েছেন।
এ বিষয়ে বাদী সিরাজ খান প্রথম আলোর কাছে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তদন্তে যেসব আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।
বাদীর অজান্তে অন্য কেউ আসামি দিয়েছে!
৫ আগস্ট মনসুরাবাদ এলাকায় গুলিতে আহত হন মো. মানিক। ওই ঘটনায় তিনি ২০ নভেম্বর ডবলমুরিং থানায় মামলা করেন। আসামি করেন ১০৮ জনকে। পরে ৩০ ডিসেম্বর তিনি আওয়ামী লীগ নেতা আ জ ম নাছিরসহ ২৬ জনের নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করেন।
আবেদনে বাদী লেখেন, আ জ ম নাছিরের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ নেই। ফায়দা লোটার জন্য সুকৌশলে কেউ নাছিরের নাম ঢুকিয়ে দিয়েছে। বাকি ২৫ জনের নাম বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রেও একই কথা বলেন তিনি। এ বিষয়ে প্রথম আলোকে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি মানিক।
৪ আগস্ট আহত হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে বিএনপির কর্মী এনায়েতুল গণি হাটহাজারী থানায় মামলা করেন ৩০১ জনের বিরুদ্ধে। পরে ২৪ আসামির নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেন তিনি।
মো. সেলিম নামে সিএনজিচালিত অটোরিকশার এক চালক গুলিতে আহত হওয়ার ঘটনায় চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন। পরে ৫১ আসামির মধ্যে ১৮ জনের নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করেন তিনি।
এভাবে অন্তত ৪০ মামলার বাদীরা ৬৭৫ আসামির নাম বাদ দেওয়ার জন্য হলফনামা ও আবেদন দিয়েছেন আদালতে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আদালতে প্রায়ই আসামির নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করছেন বিভিন্ন মামলার বাদী। আদালত তা নথিভুক্ত করে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
প্রকৃত অপরাধীদের বিচার দাবি
গণ-অভ্যুত্থানের ঘটনায় করা মামলায় হয়রানিমূলক আসামি যাচাই-বাছাই করতে চট্টগ্রাম নগর ও জেলায় দুটি কমিটি করা হয়েছে। দুটিরই সদস্য নগর পুলিশ কমিশনার ও জেলা পুলিশ সুপার।
নগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) রইছ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছেন দাবি করে এরই মধ্যে অনেক আসামি আবেদন করেছেন। এগুলো যাচাই-বাছাই করছে কমিটি।
প্রায় অভিন্ন কথা বলেন অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) মো. রাসেল। তিনি বলেন, পুলিশ যা তদন্তে পাবে, তা-ই অভিযোগপত্রে দেবে।
জুলাই আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় করা মামলা নিয়ে এমন আচরণ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) রাসেল আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অনেকে বাণিজ্য করার উদ্দেশ্যে মামলা দিয়েছেন। অনেক নিরপরাধ লোককে আসামি করা হয়েছে, কিন্তু সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়নি। হলেও কিছু বাদী এখন নাম বাদ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে নিরপরাধ ব্যক্তিদের বাদ দেওয়া হোক।’
সূত্র : প্রথম আলো, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
চলারপথে রিপোর্ট :
বিনা টিকিটে ভ্রমণের দায়ে ঢাকাগামী ছয়টি আন্তঃনগর ট্রেনের ৬৩০ জন যাত্রীকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ১ লাখ ২৬ হাজার ৮৫৫ টাকা ভাড়া ও জরিমানা আদায় করেছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে।
গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পশ্চিমাঞ্চল পাকশি বিভাগীয় রেলওয়ের আওতাধীন বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশনে ব্লক চেকিংয়ের মাধ্যমে অভিযান চালানো হয়।
রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, খুলনা থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস, ঢাকা থেকে রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেস, ঢাকা থেকে পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস, পঞ্চগড় থেকে ঢাকাগামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস এবং ঢাকা থেকে রাজশাগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে এই অভিযান চালানো হয়। ব্লক চেকিংয়ের রেলওয়ে স্টেশনগুলো হলো রাজশাহী, ঈশ্বরদী বাইপাস, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম, বড়াল ব্রিজ, উল্লাপাড়া, নাটোর এবং সান্তাহার।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদারের নেতৃত্বে পাকশি বিভাগীয় রেলওয়ের সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা কে এম নুরুল ইসলাম, ভ্রাম্যমাণ পরীক্ষক আব্দুল আলিম বিশ্বাস মিঠু, গোলাম মুস্তফা, প্রবীর কুমার, কামরুল ইসলাম, মঞ্জুরুল হাসানসহ ট্রেনগুলোর পরিচালক (গার্ড) এবং রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এসব অভিযানে অংশ নেন।
অসীম কুমার তালুকদার বলেছেন, সরকারি ছুটির দিনে উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে উপচেপড়া ভিড় থাকে। অনেকে টিকিট ছাড়াই ট্রেনে চড়ে বসেন। আমরা সাধারণত আন্তঃনগর ট্রেনে বিনা টিকিটের যাত্রীদের শাস্তি হিসেবে পরবর্তী স্টেশনে নামিয়ে দিয়ে থাকি। কিন্তু, রেল ভ্রমণ নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যের হওয়ায় তারা নামতে চান না। অনেকেই ভাড়াসহ জরিমানা দিয়েই গন্তব্য পথে যেতে চান।
তিনি জানান, আন্তঃনগর ছয়টি ট্রেনে মধ্যবর্তী স্টেশনে আকস্মিকভাবে অভিযান চালিয়ে ৬৩০ জন যাত্রীর কাছ থেকে ১ লাখ ২৬ হাজার ৮৫৫ টাকা আদায় করা হয়েছে। এর মধ্যে ভাড়া ৯৫ হাজার ১৪৫ টাকা এবং জরিমানা ৩১ হাজার ৭১০ টাকা। অন্যান্য যাত্রীবাহী ট্রেনে অভিযান অব্যাহত আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৫ জন প্রবীণতম নেতাকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করেছে জেলা আওয়ামী লীগ।
আজ ২৩ জুন রবিবার বিকালে শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে জমকালো ও বর্ণাঢ্য এ সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সম্মাননাপ্রাপ্ত সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ভূঞা ও কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি অ্যাড. মকবুল হোসেন তালুকদার।
সম্মাননাপ্রাপ্ত নেতারা হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিউল্লাহ, মুসলিম মিয়া, আবুল কালাম ভূঞা, অ্যাড. হামিদুর রহমান, গোলাম ইসহাক, হেবজুল বারী, নিয়াজ মুহাম্মদ খান, আলী আকবর, আবদুল মতিন দারু, কাজী হারিছুর রহমান, শেখ বোরহান উদ্দিন, আবদুল হাই মাস্টার, কার্তিক চন্দ্র দাস, ফুল মিয়া ভূঞা, মিসেস মিনারা আলম, মিসেস মমতাজ বাশার, মিসেস রেহেনা বেগম রানী, অ্যাড. মকবুল হোসেন তালুকদার, ডা. রাফি উদ্দিন আহমেদ, অ্যাড. আজিজুর রহমান, অসীম কুমার পাল, নজির শাহ, মফিজ উদ্দিন, মো. আবদুর রহিম খান, হাজি মুজিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে সত্তরোর্ধ নেতাদের ফুলের তোড়া, মেডেল, ক্রেস্ট ও শাল উপহার প্রদান করা হয়।
সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি হাজি মুজিবুর রহমান বলেন, ৭৫ এর পর আমার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো। আজ আজীবন সম্মাননা পেয়ে মনে হচ্ছে তখনকার বাড়ি পোড়ানো আজ সম্মান আর মর্যাদা এনে দিয়েছে।
নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ডা. রাফি উদ্দিন বলেন, জীবনভর আওয়ামী লীগ করে বয়সের শেষ সময়ে এসে যে সম্মান জেলা আওয়ামী লীগ দেখালো তা আমৃত্যু প্রেরণা যোগাবে।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, জেলা আওয়ামী লীগ ২৫ জন নেতাকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করে তরুণ প্রজন্মের কাছে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। তারা বুঝতে পারবে দলের প্রতি সবসময় অনুগত থাকলে, অবিচল আস্থা রেখে দলের কাজ করলে একসময় না একসময় সম্মান আসে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড়ো অর্জন স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। আওয়ামী লীগের আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্য দিয়েই আমরা বাংলাদেশ পেয়েছি। আওয়ামী লীগের ইতিহাস লড়াই-সংগ্রাম আর এগিয়ে চলার ইতিহাস। আওয়ামী লীগকে বারবার ধ্বংস করার চেষ্টা হলেও আওয়ামী লীগ পুনরায় স্ফীংসের মতো আকাশে ডানা মেলে উড়ে দেখিয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ পেয়েছি। স্মার্ট বাংলাদেশও প্রতিষ্ঠা করবে আওয়ামী লীগ। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ অগ্রসর চিন্তার আরেক নাম। তাই যতোদিন বৈষম্যহীন সমাজ, ধর্মনিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হবে ততোদিন আওয়ামী লীগের সংগ্রামশীলতা চলবে। তিনি আরো বলেন, প্রিয়নেত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্ব নেই তেমনি আওয়ামী লীগের বিকল্প কোনো রাজনৈতিক শক্তি নেই।
জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে আজীবন সম্মাননা প্রদানের অনুষ্ঠান শুরু হয়। এর আগে সকাল ৬ টায় শহরের হালদারপাড়াস্থ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল সাড়ে ১০ টায় বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপির নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
ডেস্ক রিপোর্ট :
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, দেশের সব ৫০ শয্যার হাসপাতাল ক্রমান্বয়ে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হবে। আজ ১৩ জুলাই শনিবার নীলফামারীতে একটি কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সেবা নিতে এসে কোনো মানুষ যেন হয়রানি না হয়, সেই বিষয়টি কঠোরভাবে তত্ত্বাবধান করা হচ্ছে।’ এ সময় জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান দিয়ে তিনি বলেন, ‘শুধু সরকার সচেষ্ট থাকলেই হবে না, জনগণকেও সচেতন হতে হবে। নিয়মমাফিক চলতে হবে।’ নীলফামারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জমি অধিগ্রহণ সমস্যার সমাধান হয়েছে জানিয়ে সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘শিগগিরই অন্যান্য সমস্যার সমাধান করা হবে।’ এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য সিদ্দিকুল আলম, স্বাস্থ্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাসার মো. খুরশীদ আলম প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ও হাজার হাজার উৎসুক জনতার উপস্থিতে রাউজানের নোয়াজিশপুর ইউনিয়নে ঐতিহ্যবাহী ‘নদিমপুর বলিখেলা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১ জুন বৃহস্পতিবার বিকেলে নদিমপুর-নোয়াজিশপুর এলাকাবাসীর উদ্যোগে নদিমপুর তেঁতুলতলা এলাকায় বিশাল মাঠে এ বলিখেলার আয়োজন করা হয়। বলিখেলায় খ্যতনামা বলিসহ চট্টগ্রামের শতাধিক বলি অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে ফটিকছড়ির মাসুদ রানাকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হন কক্সবাজারের মুহাম্মদ হোসেন।
বলিখেলা দেখতে রাউজান, হাটহাজারী, ফটিকছড়িসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে যান বলিখেলাপ্রেমীরা। বলিখেলার উদ্ধার ও ফাইনাল রাউন্ড শেষে প্রধান অতিথি থেকে বলিখেলার উদ্বোধন ও পুরস্কার প্রদান করেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নোয়াজিশপুর ইউপি চেয়ারম্যান লায়ন এম সরোয়ার্দী সিকদার।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বখতিয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন রয়েল কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার নারায়ণ চন্দ্রনাথ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন চৌধুরী, নেছারুল হক, জমিরুল হক, আলফাজ হোসেন চৌধুরী।
বক্তব্য রাখেন দোস্ত মোহাম্মদ মেম্বার, শফিউল বশর মেম্বার, রাশেদ চৌধুরী, ইউপি সদস্য কাজী জিয়াউর রহমান, শওকত ওসমান চৌধুরী, রাকেশ রায় চৌধুরী, সৈয়দুল হক, আকতার হোসেন চৌধুরী, জসিম উদ্দিন চৌধুরী, আলাউদ্দিন আলম, শফিউল ইসলাম, তাজউদ্দিন খান সোলেমান, কুতুব উদ্দিন সিকদার, তসলিম উদ্দিন সুজন, আবদুল্লাহ আল হারুন, নাহিদুল করিম চৌধুরী, আবদুুল মোতালেব, ফাহিম, রবিউল হোসেন রবিন প্রমুখ।
বলিখেলা উপলক্ষে গ্রামীণ মেলা বসানো হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
বৃষ্টির পানিতে মাছ ধরতে গিয়ে দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে বজ্রপাতে রশিদুল ইসলাম বাবু নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। রশিদুল ইসলাম বাবু (৩৫) চিরিরবন্দর উপজেলার পুনট্টি ইউনিয়নের আমতলীর সাহাপুর গ্রামের ঝাড়পুকুর পাড়ার মোখলেছার রহমানের ছেলে।
আজ ২৪ সেপ্টেম্বর রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চিরিরবন্দর উপজেলার পুনট্টি ইউনিয়নের আমতলীর সাহাপুর গ্রামের ঝাড়পুকুর নামক স্থানে এ বজ্রপাতের ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, রবিবার সকাল ৯টার দিকে রশিদুল ইসলাম বাবু বাড়ির পাশে বৃষ্টির পানিতে মাছ ধরতে যায়। ওইসময় বৃষ্টিসহ বজ্রপাত হলে বজ্রাপাতে ঘটনাস্থলেই রশিদুল ইসলাম বাবু নিহত হন।
চিরিরবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বজলুর রশিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এ কে এম শরীফুল হক বজ্রপাতে নিহত রশিদুল ইসলাম বাবুর পরিবারকে এককালীন ১০ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করেন।