অনলাইন ডেস্ক :
নাইজেরিয়ার মধ্যাঞ্চলীয় বেনু রাজ্যে বন্দুকধারীদের চারটি পৃথক হামলায় অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছেন। অনেকে আহত হয়েছেন। গতকাল রবিবার রেড ক্রসের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
নাইজেরিয়ার জোস থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, গত শনিবার রাতে চারটি গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
মধ্য নাইজেরিয়ায় জমি ব্যবহার নিয়ে যাযাবর গবাদি পশুপালক এবং কৃষকদের মধ্যে সংঘর্ষ সাধারণ ঘটনা। বেনু রাজ্যের রেড ক্রস কর্মকর্তা অ্যান্থনি আবাহ এএফপিকে বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদনে বিভিন্ন হামলায় কমপক্ষে ২৩ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।’
রেড ক্রসের মাঠ পর্যায়ের দুর্যোগ কর্মকর্তাদের তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, উকুমে আটজন, লোগোতে নয়জন, গুমা ও কোয়ান্ডেতে তিনজন করে নিহত এবং আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
পুলিশের এক মুখপাত্র বলেছেন, হামলার বিষয়ে তিনি অবগত নন।
একটি রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ কোম্পানির অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার সেফাস কাঙ্গেহ এএফপিকে বলেন, তিনি তিনটি হত্যার কথা শুনেছেন, যার মধ্যে একটি মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় অতর্কিত হামলায় এক দম্পতি নিহত হয়েছেন।
সাম্প্রতিক কিছু হামলা এমন এলাকায় চালানো হয়েছে যেখানে এক মাস আগেও হামলা হয়েছিল এবং হামলায় কমপক্ষে ৫৬ জন নিহত হয়েছে। ধর্মীয় উত্তেজনায় টালমাটাল এ অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ে সহিংসতা বেড়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
এপ্রিলের শুরুতে পার্শ্ববর্তী মালভূমি রাজ্যে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের দুইটি হামলায় ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রায় ৩০০ শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের ওপর সংঘটিত ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের দায়ে ফ্রান্সের অবসরপ্রাপ্ত শল্যচিকিৎসক সার্জন জোয়েল লে স্কোয়ারনেককে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশের একটি আদালত।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ৭৪ বছর বয়সি স্কোয়ারনেক দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে শত শত রোগীকে নিপীড়ন করেছেন। অনেক ক্ষেত্রেই অস্ত্রোপচারের সময় অচেতন অবস্থায় বা জ্ঞান ফেরার সময় এসব ঘটনা ঘটিয়েছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপি ও রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, লে স্কোয়ারনেক ইতোমধ্যে ২০২০ সালে চার শিশুকে ধর্ষণ ও নিপীড়নের দায়ে ১৫ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে জেল খাটছেন। ওই চার শিশুর মধ্যে তার নিজেরই ভাতিজি ছিল দুইজন।
ফ্রান্স টোয়েন্টি ফোর জানায়, স্কোয়ারনেক ১৯৮৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত পশ্চিম ফ্রান্সের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া অন্তত ২৯৯ জন রোগীকে (যাদের মধ্যে ২৫৬ জন ছিল ১৫ বছরের নিচে) তিনি যৌন নিপীড়ন করেছেন বলে স্বীকার করেছেন।
তার বিরুদ্ধে ১১১টি ধর্ষণ এবং ১৮৯টি যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনা হয়েছিল। যা তাকে ফ্রান্সের ইতিহাসে অন্যতম ‘সিরিয়াল ধর্ষণকারী’ হিসেবে পরিণত করেছে।
জানা যায়, ভুক্তভোগীদের পক্ষে আদালতে মামলা লড়েছেন প্রায় ৬০ জন আইনজীবী।
আদালতে প্রসিকিউটর স্টেফান কেলেনবার্গার সর্বোচ্চ ২০ বছরের কারাদণ্ড চেয়ে বলেন, লে স্কোয়ারনেকের মতো অপরাধীকে কেবল কারাগারে রাখলেই হবে না—কারামুক্তির পরেও যেন তাকে মনস্তাত্ত্বিক তত্ত্বাবধানে রাখা হয়।
এদিকে, আদালতে লে স্কোয়ারনেক বলেন, আমি দয়া চাই না। শুধু চাই, একজন ভালো মানুষ হওয়ার সুযোগ।
তবে তার এ কথাকে অনেকেই কৃত্রিম বলে মনে করেছেন। কারণ তিনি প্রায় প্রতিটি শুনানিতেই একই ধরনের ‘লোক দেখানো’ ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
মামলার তদন্ত সূত্রে এএফপি জানায়, লে স্কোয়ারনেক নিজের অপরাধগুলো নোটবুকে বিস্তারিতভাবে লিখে রাখতেন। সেখানে তিনি ভুক্তভোগীদের নাম, বয়স, ঠিকানা এবং নিপীড়নের বিবরণসহ সবকিছুই লিখে রাখতেন।
এমনকি তিনি নিজেকে ‘একজন বড় ধরনের বিকৃত মানসিকতার পেডোফাইল’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং লিখেছেন, ‘এতে আমি ভীষণ আনন্দিত’।
স্কোয়ারনেক আদালতে আরো বলেন, তিনি মনে করেন তার দুইজন ভুক্তভোগীর মৃত্যুর জন্য তিনি ‘পরোক্ষভাবে দায়ী’।
তাদের একজন হলেন- মাথিস ভিনে, যিনি ২০২১ সালে ওভারডোজে আত্মহত্যা করেন বলে পরিবার দাবি করেছে। অপরজনকে ২০২০ সালে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
থমাস ডেলাবি নামের এক আইনজীবী তাকে বলেন, আপনি ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর পেডোফাইল, শিশু নিপীড়নের জগতে একটি ‘পারমাণবিক বিস্ফোরণ’।
অন্য এক আইনজীবী বলেন, আপনার এ স্বীকারোক্তিতে কোনো অনুতাপ নেই। আপনার মধ্যে তো এতোটুকুও পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
২০০৫ সালে শিশু পর্নোগ্রাফি রাখার দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়া সত্ত্বেও লে স্কোয়ারনেক ২০১৭ সাল পর্যন্ত সার্জন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার কর্মকাণ্ড নিয়ে সহকর্মীরা বহুবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেও কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি।
অন্যদিকে, এএফপি ও রয়টার্স বলছে, এতো বড় কেলেঙ্কারি সত্ত্বেও মামলাটি ফ্রান্সে পর্যাপ্ত মিডিয়া কাভারেজ পায়নি। যা নিয়ে ভুক্তভোগী ও অধিকারকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
মূলত মামলাটি ফরাসি চিকিৎসা ব্যবস্থার এক গভীর গলদকে তুলে ধরেছে—যেখানে একজন দুর্বৃত্ত সার্জন দুই দশক ধরে নিঃশঙ্কভাবে শত শত শিশুকে নিপীড়ন করতে পেরেছে, আর শুধু চেয়ে দেখেছে প্রতিষ্ঠান।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিজিবি দিবসকে স্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে আজ ২০ ডিসেম্বর বুধবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া চেকপোষ্ট সীমান্তের শূণ্য রেখায় বিজিবি-বিএসএফ যৌথ রিট্রিট সিরিমনি প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৬০ বিজিবি সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় বিজিবি আখাউড়া আইসিপি এবং ভারতের ত্রিপুরার ৪২ ব্যাটালিয়ন বিএসএফ আগরতলা আইসিপির মধ্যে যৌথ রিট্রিট সিরিমনি প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিজিবি কুমিল্লা সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল মোঃ শরিফুল ইসলাম মেরাজ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ৬০ বিজিবি সুলতানপুর ব্যাটালিয়েনের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মুহাম্মদ আশিক হাসান উল্লাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, ৬০ বিজিবি সুলতানপুর ব্যাটালিয়েনের উপ-অধিনায়ক মেজর এ এম জাবের বিন জব্বার, পুলিশ সুপার মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, বিএসএফ ৪২ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত কমানডেন্ট কে এস ন্যাগী, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাবেয়া আক্তারসহ বিজিবি ও বিএসএফ এর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অতিথিদের আগমনের পর বন্ধুত্বের সেতু বন্ধনের অংশ হিসেবে বিজিবি-বিএসএফ প্যারেড কন্টিজেন্ট দল চমকমপ্রদ ও মনোমুগ্ধকর প্যারেড প্রদর্শন করেন। বিউগলের সুরের সাথে দুই দেশের জাতীয় পতাকা নমিত করা হয়। এসময় সীমান্তের দুই অংশে শত শত দর্শনার্থী দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্যারেড উপভোগ করেন এবং করতালির মাধ্যমে তাদেরকে অভিনন্দন জানান।
প্যারেড শেষে বিজিবি কুমিল্লা সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল মোঃ শরিফুল ইসলাম মেরাজ এবং বিএসএফ ৪২ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত কমানডেন্ট কে এস ন্যাগী পরস্পরকে বিজিবি দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে ফুল ও মিষ্টি উপহার দে।
বিএসএফ ৪২ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত কমানডেন্ট কে এস ন্যাগী বিজিবি দিবসে শুভেচ্ছা জানান।
বিজিবি কুমিল্লা সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল মোঃ শরিফুল ইসলাম মেরাজ বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রয়েছে। এ ধরনের অনুষ্ঠান আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সর্ম্পক উন্নয়নের একটি মাধ্যম।
তিনি বলেন, এই এলাকায় বর্তমানে সীমান্ত হত্যা প্রায় শূণ্যের কোটায়। গত এক বছরে একটি সীমান্ত হত্যার ঘটনা ঘটে। এটা আমাদের দ্ইু বাহিনীর মধ্যে যে সুসম্পর্ক তারই বহিঃপ্রকাশ। এ ধরনের অনুষ্ঠান দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন ও মানুষকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
বিএসএফ’র আপত্তিতে আখাউড়া ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিজিবি কুমিল্লা সেক্টর কমান্ডার বলেন, এটা অচিরেই শুরু হয়ে যাবে। মন্ত্রণালয় পর্যায়ে কথাবার্তা চলছে। অচিরেই এ ব্যপারে সিদ্ধান্ত পেয়ে যাবো।
অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে উত্তরের পাহাড়ি অঞ্চলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে নতুন একটি দাবানল। এতে এরই মধ্যে প্রায় ২১ বর্গকিলোমিটার এলাকার গাছপালা ও ঝোপঝাড় পুড়ে গেছে। ২২ জানুয়ারি বুধবার লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির কাস্টেইক লেক এলাকায় এই দাবানলের কারণে হাজারও বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে কর্তৃপক্ষ জরুরি আদেশ জারি করেছে।
দমকলকর্মীরা জানান, কাস্টেইক লেক এলাকায় শুরু হওয়া ‘বিশাল আগুন’ স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনের জন্য তাৎক্ষণিক হুমকি তৈরি করেছে। ওই এলাকায় প্রায় ১৮ হাজার ৬০০ মানুষ বসবাস করেন। দ্রুত ছড়িয়ে পড়া আগুন সেখানে গাছপালা ও ঝোপঝাড় ধ্বংস করে দিচ্ছে।
লস অ্যাঞ্জেলস কাউন্টি শেরিফ বিভাগের রবার্ট জেনসেন স্থানীয়দের দ্রুত এলাকা ত্যাগ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এর আগে পলিসেডস ও ইটন দাবানলে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ ধরনের বিপর্যয় এই এলাকায় আমরা দেখতে চাই না। আপনাকে সরিয়ে নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়ে থাকে, দয়া করে এখনই চলে যান।
সান্তা আনা নামক শুকনো ও শক্তিশালী বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। দমকলকর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ভূমির পাশাপাশি পানিবাহী উড়োজাহাজ থেকেও কাজ করছেন।
আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হলো, তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে আবহাওয়াবিদদের মতে, এই সময়ের ‘রেড ফ্ল্যাগ’ পরিস্থিতি, অর্থাৎ শক্তিশালী বাতাস ও কম আর্দ্রতার কারণে দাবানলের ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি।
লস অ্যাঞ্জেলেস অঞ্চলের ইটন ও পালিসেডস দাবানল কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ক্যালিফোর্নিয়া বন ও অগ্নি সুরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, ইটন দাবানল ৯১ শতাংশ এবং পালিসেডস দাবানল প্রায় ৭০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গত ৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই দাবানলে অন্তত ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, ধ্বংস হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার ঘরবাড়ি।
পরিস্থিতি দেখতে যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য অভিষিক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী শুক্রবার লস অ্যাঞ্জেলেস সফর করবেন বলে জানা গেছে।
বেসরকারি আবহাওয়া পূর্বাভাস সংস্থা আকুওয়েদার জানায়, লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ২৫ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
সূত্র: আল-জাজিরা
অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লোকবল ও অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ দেখভালের দায়িত্বে থাকা তিন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিককে দায়িত্ব ছাড়তে বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের সহযোগীরা। বিষয়টির সঙ্গে সম্পর্কিত দুই আমেরিকান কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। দুদিন পরে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়ে ট্রাম্প যে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহরে ব্যাপক ওলটপালট ঘটাবেন এই নির্দেশনায় সেই ইঙ্গিতই পাওয়া যাচ্ছে। নতুন প্রশাসনের হয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রদবদলের দায়িত্বে থাকে এজেন্সি রিভিউ টিম যে তিন কর্মকর্তাকে পদ ছাড়তে বলেছে, তারা হলেন- ডেরেক হোগান, মার্শা বার্নিকাট ও আলেইনা তেপলিৎজ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনে রাজনৈতিক নিয়োগপ্রাপ্তরা সাধারণত নতুন প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব নেওয়ার পরপর নিজেরাই পদত্যাগ করেন, তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সাধারণত দায়িত্ব চালিয়েই যান। যে তিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে ট্রাম্পের টিম পদ ছাড়তে বলেছে তারা ডেমোক্র্যাট, রিপাবলিকান সব প্রশাসনের আমলেই রাষ্ট্রদূতসহ গুরুত্বপূর্ণ সব দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে বার্নিকাট ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে সাড়ে তিন বছর বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় ২০ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) দুপুরে দেশটির ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প। দায়িত্ব নিয়ে তিনি ‘ডিপ স্টেটকে মুছে ফেলতে’ অনুগত নয় এমন কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করবেন বলে নির্বাচনী প্রচারেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
বার্নিকাটসহ তিন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব ছাড়তে বলা তারই শুরু, বলছেন অনেকে।
ট্রাম্প টিমের নির্দেশনার সঙ্গে পরিচিত এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘‘এটি যে আরও খারাপ কিছুর পটভূমি তৈরি করতে পারে, তা নিয়ে উদ্বেগও আছে’’।
এ প্রসঙ্গে মন্তব্য চাইলে ট্রাম্পের ট্রাঞ্জিশন টিমের এক মুখপাত্র বলেন, আমাদের দেশ ও কর্মঠ মার্কিন নারী-পুরুষকে সবার আগে রাখা নিয়ে ট্রাম্পের যে দৃষ্টিভঙ্গি তার সঙ্গে একাত্মতা পোষণকারী কর্মকর্তা খুঁজে বের করাই প্রশাসনে পরিবর্তন আনার দায়িত্বে থাকা দলের জন্য উপযুক্ত কাজ। আমাদের অনেক ব্যর্থতা রয়েছে, সেগুলো ঠিক করতে হবে এবং এজন্য একই লক্ষ্যে মনোনিবেশকারী একটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ দল প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, কর্মকর্তাদের প্রসঙ্গে দেওয়ার মতো ঘোষণা তার কাছে নেই।
মন্ত্রণালয়টির ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ডেরেক হোগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করছেন। তার কাজ হচ্ছে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন ব্যুরো ও হোয়াইট হাউজের মধ্যে তথ্যের প্রবাহ দেখভাল করা।
বার্নিকাট এখন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মহাপরিচালক এবং ব্যুরো অব গ্লোবাল ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্টের পরিচালক, এই দপ্তর মন্ত্রণালয়ের কর্মীদের নিয়োগ, দায়িত্ব বন্টন ও ক্যারিয়ার উন্নতি দেখভাল করে।
আর সহকারী সেক্রেটারি তেপলিৎজ তিন দশক ধরে দেশে-বিদেশে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দায়িত্ব সামলেছেন।
পদত্যাগের নির্দেশনা নিয়ে এ তিনজনের কেউই রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেননি।
বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন, ট্রাম্পের এবারের প্রশাসন আরও বেশি সংঘাতমূলক পররাষ্ট্র নীতি বেছে নেবে।
২০ জানুয়ারি শপথ নিতে যাওয়া রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট অবশ্য এরই মধ্যে ইউক্রেইন ও রাশিয়ার মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং ইসরায়েলকে আরও সহায়তা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
তিনি গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রভুক্ত করার চেষ্টা ও নেটো মিত্রদেরকে প্রতিরক্ষায় আরও বেশি অর্থ ব্যয়ে তাগাদার মতো কিছু অপ্রচলিত নীতির পক্ষেও অবস্থান নিয়েছেন।তার এসব লক্ষ্য অর্জনে বিরোধিতার বদলে দায়িত্ব নিয়ে কাজ বাস্তবায়ন করতে পারবে এমন কূটনীতিক কর্মীবাহিনীই মূল চালিকাশক্তি হবে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে প্রশাসনে রদবদল ছিল নিয়মিত ঘটনা, গুরুত্বপূর্ণ অনেক পদই হয়ে উঠেছিল মিউজিকাল চেয়ার। তিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে পদত্যাগ করতে বলে ট্রাম্পের টিম যেন আগের ওই মেয়াদের স্মৃতিই ফিরিয়ে আনছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনার সঙ্গে পরিচিত পৃথক দুটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, নতুন প্রশাসন এসিসটেন্ট সেক্রেটারির মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে আরও বেশি রাজনৈতিক নিয়োগ দিতে আগ্রহী। মার্কিন প্রশাসনের এ পদগুলোতে সাধারণত দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ আমলা ও রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের মিশ্রণ দেখা যায়।
২০১৭ থেকে ২০২১ পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প যেসব নীতি নিয়েছিলেন তার অনেকগুলোই দীর্ঘদিন ধরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কাজ করা কর্মকর্তাদের কারণে ‘লাইনচ্যুত’ হয়ে পড়েছিল, ট্রাম্পের সহযোগীদের এমন মনোভাবের কারণে এবার মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদেও ট্রাম্পের টিম আরও রাজনৈতিক নিয়োগে আগ্রহী, বলছে সূত্রগুলো।
এজেন্সি রিভিউ টিম এরই মধ্যে এ পদগুলোতে আগ্রহী প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়াও শুরু করেছে, বলেছে দুটি সূত্র।
অনলাইন ডেস্ক :
সুইডেনের স্টকহোমে অনুষ্ঠিতব্য এ বছরের নোবেল পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে রাশিয়া, বেলারুশ ও ইরানের রাষ্ট্রদূতকে আমন্ত্রণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে আয়োজক নোবেল ফাউন্ডেশন। ওই তিন দেশের রাষ্ট্রদূতকে আমন্ত্রণ জানানোয় ক্ষোভ সঞ্চার হলে এই সিদ্ধান্ত নেয় ফাউন্ডেশন।
এর আগে ২০২২ সালে নোবেল ফাউন্ডেশন নোবেল পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান ও ভোজ সভায় রাশিয়া ও বেলারুশের রাষ্ট্রদূতকে আমন্ত্রণ না জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানায় ফাউন্ডেশন।
যদিও গত বৃহস্পতিবার ফাউন্ডেশন জানিয়েছিল, তারা তাদের পুরোনো রীতি অর্থাৎ সুইডেনে প্রতিনিধিত্বকারী সব দেশকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্তে ফিরে যাবে। তবে এই সিদ্ধান্ত ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয়।
আজ শনিবার ফাউন্ডেশন জানায়, নতুন এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠানের মূল্যবোধ রক্ষায় নোবেল পুরস্কার যে বার্তা বহন করে তা তুলে ধরতে।
এক বিবৃতিতে ফাউন্ডেশন জানায়, ‘আমরা গত বছরের ব্যতিক্রমকে সাধারণ চর্চা হিসেবে আবারও গ্রহণ করতে যাচ্ছি। আর এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে রাশিয়া, বেলারুশ ও ইরানকে স্টকহোমে অনুষ্ঠিতব্য নোবেল পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি না।’