অনলাইন ডেস্ক :
ওয়াশিংটনের পুলিশ প্রধান স্মিথ একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সন্দেহভাজন হামলাকারী শিকাগোর বাসিন্দা। তার বয়স ৩০ বছর। নাম ইলিয়াস রদ্রিগেজ। জাদুঘরের বাইরে তাকে পায়চারি করতে দেখা গিয়েছিল। এরপর সে চারজনের একটি দলের উপর গুলি চালায়। এতে ওই যুগল নিহত হন।
গতকাল বুধবার ওয়াশিংটন, ডিসির ক্যাপিটাল ইহুদি জাদুঘরে গুলি চালানোর ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ইলিয়াস রদ্রিগেজকে শনাক্ত করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে তার বয়স ৩০ বছর এবং সে শিকাগোর বাসিন্দা। পুলিশ আরো নিশ্চিত করেছে যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে তার পূর্বে কোনও যোগাযোগ ছিল না। ইহুদি জাদুঘরের একটি অনুষ্ঠানের বাইরে গুলি চালানোর ঘটনায় ইসরায়েলি দূতাবাসের দুই কর্মী নিহত হওয়ার পর এই ঘটনা ঘটল।
ঘটনার কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, কর্মকর্তারা জানান যে তারা এখনও ঘটনার তদন্ত করছেন। ঘটনাস্থলে একটি অস্ত্র পাওয়া গেছে। ওয়াশিংটন পুলিশ প্রধান পামেলা স্মিথ বলেন, আটকের আগে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে জাদুঘরের বাইরে ঘুরতে দেখা গেছে। তিনি বলেন, হেফাজতে থাকা অবস্থায় তিনি ফ্রি প্যালেস্টাইন, ফ্রি প্যালেস্টাইন স্লোগান দিয়েছিলেন।
ওয়াশিংটন ডিসির ডাউনটাউনে একটি ইহুদি জাদুঘরের বাইরে গুলিতে ইসরায়েলি দূতাবাসের দুই কর্মী নিহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী “ফ্রি, ফ্রি প্যালেস্টাইন” বলে চিৎকার করেছে। এই ঘটনাটি বিবিসি সূত্রে জানা গেছে।
নিহতরা একটি তরুণ যুগল, যারা ক্যাপিটাল ইহুদি জাদুঘরে একটি অনুষ্ঠান থেকে বের হওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন বলে ডিসি পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ আরো বলেছে এ ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হচ্ছে।
গতকাল রাত ৯টা ০৫ মিনিটে (স্থানীয় সময়) এই গুলির ঘটনা ঘটে। এই এলাকাটি অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র, জাদুঘর এবং সরকারি ভবন, যার মধ্যে এফবিআই-এর ওয়াশিংটন ফিল্ড অফিসও রয়েছে, দ্বারা বেষ্টিত।
মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগের প্রধান পামেলা স্মিথ বলেছেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তি গুলি চালানোর পর জাদুঘরের ভেতরে প্রবেশ করে এবং নিরাপত্তারক্ষীদের দ্বারা আটক হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত ইয়েচিয়েল লিটার সম্মেলনে জানিয়েছেন যে, নিহত যুগল বিয়ের পরিকল্পনা করছিলেন। লিটার বলেন, পুরুষ ভুক্তভোগী এই সপ্তাহে একটি আংটি কিনেছিলেন এবং জেরুজালেমে তাদের পরিকল্পিত ভ্রমণে প্রস্তাব দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। নিহতদের নাম এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটির প্রধান ক্রিস্টি নোয়েম এক্স-এ পোস্ট করেছেন, “আজ রাতে ওয়াশিংটন ডিসির ইহুদি জাদুঘরের কাছে দুই ইসরায়েলি দূতাবাস কর্মী নির্বোধভাবে নিহত হয়েছেন। দয়া করে ভুক্তভোগীদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করুন। আমরা এই অধম অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনব।”
জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত এ ঘটনাকে “সেমিটিক-বিরোধী সন্ত্রাসের একটি জঘন্য কাজ” বলে অভিহিত করেছেন। রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন এক্স-এ লিখেছেন, “কূটনীতিক এবং ইহুদি সম্প্রদায়কে আঘাত করা একটি লাল রেখা অতিক্রম করা। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে মার্কিন কর্তৃপক্ষ এই অপরাধমূলক কাজের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।”
এই ঘটনার কারণে ব্যাপক পুলিশি প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে এবং শহরের বেশ কয়েকটি প্রধান সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলি দূতাবাসের একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন যে, জাদুঘরের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সময় দুই কর্মীকে কাছ থেকে”গুলি করা হয়েছে। মুখপাত্র তাল নাইম কোহেন বলেছেন, “আমরা স্থানীয় এবং ফেডারেল উভয় স্তরের আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখি যে তারা হামলাকারীকে আটক করবে এবং যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ইসরায়েলের প্রতিনিধি এবং ইহুদি সম্প্রদায়কে রক্ষা করবে।
মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে, হামলার সময় ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত জাদুঘরের অনুষ্ঠানে ছিলেন না। সিবিএস জানিয়েছে, জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির ডিসি ক্যাম্পাসও সাময়িকভাবে লকডাউন করা হয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ-এ পোস্ট করে “ভয়াবহ ডিসি হত্যাকাণ্ড, যা স্পষ্টতই সেমিটিজম-ভিত্তিক” শেষ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তার পোস্টে বলা হয়েছে, “ঘৃণা ও উগ্রবাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো স্থান নেই। ভুক্তভোগীদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা। এমন ঘটনা ঘটতে পারে দেখে খুবই দুঃখিত! ঈশ্বর আপনাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন!”
অনলাইন ডেস্ক :
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চেয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
আজ ৮ মার্চ শুক্রবার ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত বিল্ডিংস অ্যান্ড ক্লাইমেট গ্লোবাল ফোরাম-২০২৪ আয়োজিত মিনিস্টারিয়াল রাউন্ড টেবিল বৈঠকে তিনি এ সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবিলা সম্ভব না। জলবায়ু পরিবর্তন পর্যায়ক্রমের সবার ওপর বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো দুর্যোগপ্রবণ দেশে অধিক মাত্রায় প্রভাব ফেলবে। এর প্রভাব মোকাবিলায় প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা। আর এই আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরিতে এই সেমিনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এ সময় বাংলাদেশ কম কার্বন নিঃসরণকারী দেশ হলেও সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় অন্যতম বলে জানান তিনি।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতা ও গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে ফোরামকে অবহিত করেন। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব অর্থায়নে মুজিব প্রস্পারেটিভ প্লান (২০২২-২০৪১) এর আওতায় ১০০ মিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠন করেছেন বলে মন্ত্রী সভাকে অবহিত করেন।
এই আন্তর্জাতিক কনফারেন্স দুর্যোগ সহনীয় স্থাপনা গড়ে তুলতে নিত্য নতুন ধারণা ও উদ্ভাবন বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
গণপূর্তমন্ত্রী বলেন ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততাসহ বিভিন্ন দুর্যোগ প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হয়ে থাকে। সমীক্ষা মতে, প্রতিবছর দুর্যোগে গড়ে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রায় দুই শতাংশ সমপরিমাণ কমে যায়।
বাংলাদেশের মতো দুর্যোগপ্রবণ দেশের জন্য এ ধরনের সেমিনার যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ ও সহায়ক ভূমিকা পালনের সক্ষম বলে মন্ত্রী মন্তব্য করেন।
সরকার জিটুজি, বিজনেস টু বিজনেস এবং পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে যেকোনো সহযোগিতা গ্রহণের জন্য প্রস্তুত বলে তিনি উল্লেখ করেন।
উন্নয়নশীল দেশের জন্য ২০২১ সালে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ১৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো বাংলাদেশকে ১ বিলিয়ন ইউরো আর্থিক সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় মন্ত্রী ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশসহ অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি)-এর ৩৭টি দেশের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অদম্য সংকল্প ও প্রত্যয়ের মাধ্যমে ছাত্র-জনতা একটি স্বৈরাচারী ও অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা থেকে আমাদের মুক্তি এনে দিয়েছে।
আজ সেপ্টেম্বর ২৭ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে ভাষণে এ কথা বলেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. ইউনূস।
ভাষণে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে যে যুগান্তকারী পরিবর্তন হয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতেই আজ আমি বিশ্বসম্প্রদায়ের এ মহান সংসদে উপস্থিত হতে পেরেছি। আমাদের গণমানুষের, বিশেষ করে তরুণ সমাজের অফুরান শক্তি আমাদের বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামো ও প্রতিষ্ঠানগুলোর আমূল রূপান্তরের এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। আমাদের ছাত্র ও যুব সমাজের আন্দোলন প্রথমদিকে মূলত ছিল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। পর্যায়ক্রমে তা গণআন্দোলনে রূপ নেয়। এরপর সারা পৃথিবী অবাক বিস্ময়ে দেখেছে কীভাবে সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ একনায়কতন্ত্র, নিপীড়ন, বৈষম্য, অবিচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাজপথ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দৃঢ়ভাবে রুখে দাঁড়িয়েছিল।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, আমাদের ছাত্রজনতা তাদের অদম্য সংকল্প ও প্রত্যয়ের মাধ্যমে একটি স্বৈরাচারী ও অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা থেকে আমাদের মুক্তি এনে দিয়েছে। তাদের এই সম্মিলিত সংকল্পের মধ্যেই আমাদের দেশের ভবিষ্যত নিহিত, যা এ দেশটিকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি দায়িত্বশীল জাতির মর্যাদায় উন্নীত করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এই গণআন্দোলন রাজনৈতিক অধিকার ও উন্নয়নের সুবিধাবঞ্চিত বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। বাংলাদেশের মানুষ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশীদারত্ব চেয়েছিল। আমাদের জনগণ একটি ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে, যার জন্য আমাদের নতুন প্রজন্ম জীবন উৎসর্গ করেছিল। আমাদের এই তরুণরা যে প্রজ্ঞা, সাহস ও প্রত্যয় দেখিয়েছে তা আমাদের অভিভূত করেছে।
বন্দুকের গুলি উপেক্ষা করেও তরুণরা বুক পেতে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবৈধ রাষ্ট্রক্ষমতার বিরুদ্ধে প্রবলভাবে সোচ্চার হয়েছিলেন আমাদের তরুণীরা। স্কুলপড়ুয়া কিশোর-কিশোরীরা নিঃশঙ্ক চিত্তে উৎসর্গ করেছিল তাদের জীবন। শত শত মানুষ চিরতরে হারিয়েছে তাদের দৃষ্টিশক্তি। আমাদের মায়েরা, দিনমজুরেরা ও শহরের অগণিত মানুষ তাদের সন্তানদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নেমেছিলেন রাজপথে। তপ্ত রোদ, বৃষ্টি, মৃত্যুভয় তোয়াক্কা না করে তারা সত্য ও ন্যায়সঙ্গত আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে দীর্ঘকাল রাষ্ট্রযন্ত্রকে পরিচালনা করার অশুভ ষড়যন্ত্র পরাভূত করেছিল। জনগণের এই আন্দোলনে আমাদের জানা মতে আট শতাধিক জীবন আমরা হারিয়েছি স্বৈরাচারী শক্তির হাতে।
অনলাইন ডেস্ক :
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। গুলি, ছুরিকাঘাত ও বোমা হামলায়-ভোট গ্রহণ শুরুর প্রথম চার ঘণ্টার মধ্যেই অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
আজ ৮ জুলাই রবিবার রাজ্যের ২২টি জেলার ৬৩ হাজার ২২৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসন, ৯ হাজার ৭৩০টি পঞ্চায়েত সমিতির আসন এবং ৯২৮টি জেলা পরিষদের আসনে নির্বাচন শুরু হয়।
রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস ও বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এসব সহিংসতার জন্য একে-অপরকে দোষারোপ করেছে।
কলকাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগ থেকেই হামলা, সংঘর্ষ চলছিল। নির্বাচনের দিন এগুলো প্রকট আকার ধারণ করে। রাজ্যের অসংখ্য জায়গায় গুলির ঘটনা ঘটে। কোথাও কোথাও বোমা হামলাও হয়।
আনন্দাবাজার আরও জানিয়েছে, মুর্শিদাবাদে দুই তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তৃণমূল, কংগ্রেস এবং সিপিএমের কর্মীরা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়েও হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। কোচবিহারের ফলিমারি গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোটেরহাট ৪/৩৮ নম্বর বুথে বিজেপির এজেন্টকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। মালদহের মানিকচকে তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগ তোলা হয়েছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। উত্তর দিনাজপুরের চাপড়ায় তৃণমূলের এক কর্মীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে চকমরিচায় দুই আইএসএফ কর্মীকে গুলি করার অভিযোগ তোলা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে ক্ষমতাসীনরা।
এছাড়া কোচবিহারের সিতাইয়ে নির্বাচনের বুথে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ব্যালট প্যাপারও পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
২০২৪ সালে ভারতে হবে লোকসভা নির্বাচন। আর এই নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকা বিজেপি লোকসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গে শক্ত অবস্থান তৈরির চেষ্টা করছে। ফলে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এসব সহিংসতায় নির্বাচনের আগের ৩০ দিনে অন্তত ১৮ জন নিহত হন। নির্বাচনের দিন এ সংখ্যা আরো বেড়েছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, আনন্দবাজার
চলারপথে রিপোর্ট :
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আরজি কর মেডিকেল কলেজের নারী চিকিৎসক মৌমিতাকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে ১৭ আগস্ট শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
আজ দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বেচ্ছাসেবক মকবুল আহমেদ মারুফ, শাহ আলম পালোয়ান, মেহেরুন্নেসা মুনিয়া প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের সময় প্রতিবেশী দেশ ভারতের শিক্ষার্থীরা আমাদের আন্দোলনে সমর্থন জুগিয়েছিল। তাই নৈতিক ও মানবিক কারণে আমরা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। এ সময় বক্তারা ভারতে নারী চিকিৎসককে হত্যা ও ধর্ষণের সাথে জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানান।
চলারপথে ডেস্ক :
বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান সফর করছেন। তিনি সে দেশে ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপার সম্ভাবনা ও সুযোগের কথা তুলে ধরে জাপানি ব্যবসায়ী নেতাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন ।
আজ ২৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকালে জাপানের রাজধানী টোকিও’র একটি হোটেলে বাছাই করা জাপানি ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান। এ সময় দুই দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতি অব্যহত রাখবো এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে সবারজন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবো। আসুন বিনিয়োগ করুন।
বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান জাপানি ব্যবসা ও বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনা মহামারির চাপের মধ্যেও বাংলাদেশ ও জাপানের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে কাজ করা জাপানি কোম্পানির সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েছে, বিশেষ করে ২০১৪ সালে দুই দেশে যখন ‘ব্যাপক অংশীদারিত্ব’ এবং বিগ-বি উদ্যোগে প্রবেশ করি।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, তিনি নিশ্চিত জাপানি ব্যবসায়ীরাও এই ক্রমবর্ধমান এই ধারা অনুসরণ করছেন এবং তারা তাদের বিদ্যমান ব্যবসা সম্প্রসারণ করবেন, বাংলাদেশে নতুন ব্যবসা খুলবেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জাপানে আমাদের দূতাবাস বাংলাদেশে আপনার উদ্যোগকে সহযোগিতা করতে এবং সহজতর করতে প্রস্তুত।
এ সময় জাপানি ব্যবসায়ী নেতাদের আশ্বস্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আমাদের সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো বাংলাদেশে জাপানি বন্ধুদের ব্যবসায়িক প্রচেষ্টাকে সহযোগিতা করতে সব সময় আগ্রহী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিগত ৫ দশকে জাপান-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দৃষ্টান্তমূলক ফল দেখে আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশে জাপানের বড় উদ্যোগ প্রত্যাশা করছি।আশা করি আপনার সার্বিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে। সমাবেশে জাপানি কোম্পানিগুলোর উথাপিত বেশকিছু নিয়ন্ত্রক ও নীতিগত সমস্যা সমাধান করার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশের উদার বাণিজ্য নীতির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের বৈদেশিক বিনিয়োগ ব্যবস্থা সবচেয়ে উদার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিযোগিতামূলক খরচ, প্রচুর মানবসম্পদ, উচ্চ ক্রয়ক্ষমতা, বিশাল অভ্যন্তরীণ ভোক্তা বাজার এবং ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত থাকায় বাংলাদেশ দ্রুত বিনিয়োগের অত্যন্ত আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে।
আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশাধিকার উন্নত করার মাধ্যমে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কেন্দ্র হয়ে উঠতে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সারা দেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল হাই-টেক/সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন করছি। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সংযোগের কেন্দ্র হিসাবে নিজেকে স্থাপন করার জন্য একটি পরিকল্পিত অবকাঠামোগত ভিত্তি তৈরি করছে।
অনুষ্ঠানে জাপানের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিয়ে তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন।