বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ শ্রমিক নেবে জাপান

জাতীয়, 29 May 2025, 123 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে অন্তত এক লাখ শ্রমিক নিয়োগের কথা জানিয়েছে জাপানি কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীরা। আজ ২৯ মে বৃহস্পতিবার টোকিওতে ‘বাংলাদেশ সেমিনার অন হিউম্যান রিসোর্সেস’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, জাপানে বাংলাদেশিদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রয়োজনীয় সব কিছু করবে। এটা আমার জন্য সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ও প্রেরণার দিন। এটি শুধু কাজ করার জন্য নয়, বরং জাপানকে জানারও দ্বার উন্মোচন করবে বাংলাদেশের মানুষের জন্য।

banner

সেমিনারে প্রধান উপদেষ্টা দুটি সমঝোতা স্মারকের সাক্ষী হন। প্রথমটি বাংলাদেশের ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি) ও কাইকম ড্রিম স্ট্রিট (কেডিএস)-এর মধ্যে, যার একটি জাপান-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগ; দ্বিতীয়টি বিএমইটি ও জাপানের ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভস (জাপানে ৬৫টির বেশি কোম্পানির একটি ফেডারেশন) এবং জেবিবিআরএ (জাপান বাংলা ব্রিজ রিক্রুটিং এজেন্সি)-র মধ্যে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই অনুষ্ঠানটি একটি দ্বার উন্মোচনের প্রতীক। তিনি উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশ ১৮ কোটি মানুষের দেশ, যার অর্ধেকই ২৭ বছরের নিচে। সরকারের কাজ হলো তাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া।

শিজুওকার কর্মপরিবেশ উন্নয়ন সমবায়ের তত্ত্বাবধায়ক সংস্থার প্রতিনিধি পরিচালক মিতসুরু মাতসুশিতা বলেন, অনেক জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশিদের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করছে এবং তিনি বিশ্বাস করেন যে এই ধারা অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশি মেধাবীদের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের প্রতিভা লালন করা আমাদের দায়িত্ব।

এনবিসিসি চেয়ারম্যান মিকিও কেসাগায়ামা স্মরণ করেন যে প্রায় ১৪ বছর আগে অধ্যাপক ইউনূস জাপানে এসেছিলেন এবং ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে নারীদের সহায়তার গল্প বলেছিলেন।

তিনি বলেন, আমাদের ফেডারেশন তরুণ ও দক্ষ শ্রমিকের জন্য বাংলাদেশকে একটি সম্ভাবনাময় উৎস হিসেবে দেখছে। তারা উভয় দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে। আগামী পাঁচ বছরে আমরা এক লাখ বাংলাদেশি শ্রমিককে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।

ওয়াতামি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট মিকি ওয়াতানাবে জানান, বাংলাদেশে তাদের প্রতিষ্ঠিত একটি স্কুল প্রতিবছর ১৫০০ শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেয়, এবং তারা এই সংখ্যা ৩০০০-এ উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে। বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষা গ্রহণকারীরা জাপানের চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে পারবে।

জাপান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেইনি অ্যান্ড স্কিল্ড ওয়ার্কার কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (জেইটিসিও) চেয়ারম্যান হিরোআকি ইয়াগি জাপানের শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখনও ভাষা শিক্ষকের ঘাটতি রয়েছে।

জাপানের স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের (এমএইচএলডব্লিউ) প্রতিমন্ত্রী নিকি হিরোবুমি বলেন, জাপানে জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে এবং সে কারণে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সহায়তা প্রয়োজন হবে। এটি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, জাপানের জন্যও একটি আশাব্যঞ্জক দিক হতে পারে।

স্বাগত বক্তব্যে জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে জাপানে শ্রমিক সংকট এক কোটি ১০ লাখ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। বাংলাদেশ এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আরও দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে পারে। সূত্র-বাসস

Leave a Reply

ইটালি প্রবাসী দিদারের মা আনোয়ারা বেগমের…

শফিকুল ইসলাম বাদল : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর Read more

কসবায় মায়ের অভিযোগে ছেলের কারাদণ্ড

চলারপথে রিপোর্ট : মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে Read more
ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : পুকুরের পানিতে ডুবে ইসরাত জাহান নোভা (৯) Read more

ইরান কখনও আপোস করবে না: আয়াতুল্লাহ…

অনলাইন ডেস্ক : জায়নবাদীদের সাথে ইরান কখনও আপোস করবে না Read more
ফাইল ছবি

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পাঁচ দিনের…

অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর শাহবাগ ও পল্টন মডেল থানার পৃথক Read more
ফাইল ছবি

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে…

অনলাইন ডেস্ক : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার এবং আহতদের কল্যাণ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক…

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর Read more

কারাগারে হাজতির মৃত্যু

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে জুনায়েদ মিয়া (৩২) নামে Read more

আখাউড়ায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা

চলারপথে রিপোর্ট : কৃষকদের সেচ দক্ষতা বাড়াতে পানি ব্যবহারকারী গ্রুপের Read more

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ১১তম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য: রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের Read more

স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে…

অনলাইন ডেস্ক : স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে অনশন Read more

ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানালো ২১…

অনলাইন ডেস্ক : ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে মিশরসহ ২১টি Read more

এক্সপ্রেসওয়েতে উঠলে মনে হয় ইউরোপ, নামলেই গরিব: কাদের

জাতীয়, রাজনীতি, 22 October 2023, 1135 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘এয়ারপোর্ট থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠলে ঢাকাকে মনে হয় ইউরোপ। আর নামলেই আমাদের বাসগুলো দেখলে মনে হয় গরিব গরিব চেহারা। জীর্ণ, মুড়ির টিন চলছে। গায়ে লেখা- আল্লাহর নামে চলিলাম। মালিক সমিতিকে বলব, এসব গাড়ি কীভাবে চলে ঢাকা শহরে?’

banner

আজ ২২ অক্টোবর রবিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নিরাপদ সড়ক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।

সড়ক পরিবহন বাস্তবায়নের প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সড়ক পরিবহন আইন করলাম। কিন্তু বাস্তবায়নপ্রক্রিয়া এত বিলম্বিত করেছি, দুঃখজনক। আইন আছে, প্রয়োগ নাই, এমন আইনের দরকার কী?’

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান, বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি শাহাবুদ্দিন খান, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-র চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী।

পলিথিনের শপিং ব্যাগ উৎপাদনের বিরুদ্ধে ১ নভেম্বর থেকে অভিযান : উপদেষ্টা রিজওয়ানা

জাতীয়, 1 October 2024, 328 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
পলিথিনের শপিং ব্যাগ উৎপাদনের বিরুদ্ধে আগামী ১ নভেম্বর থেকে সারাদেশে অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। আজ ১ অক্টোবর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে একটি সুপারশপে পলিথিনের ব্যাগের পরিবর্তে পাটের ব্যাগ ব্যবহার কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, পলিথিনের শপিং ব্যাগ উৎপাদন যতদিন পর্যন্ত পুরোপুরি বন্ধ না হয় ততদিন এ অভিযান চলবে? একটি বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞার বাস্তব প্রয়োগ শুরু করেছি? একবার বছর দুয়েকের জন্য প্রয়োগ হয়েছিল? মার্কেট মনিটরিংয়ের মাধ্যমে পলিথিন প্রায় উঠে গিয়েছিল? তারপর আর মার্কেট মনিটরিং ছিল না, এটা আবার ফেরত এসেছে?

banner

তিনি বলেন, সুপারশপের মালিকেরা এবং তাদের যে অ্যাসোসিয়েশন আছে তারা খুব খুশি মনে এটি (পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ) করতে রাজি হয়েছেন? কারণ, তারা এর বিপদটা বোঝেন? তাদের নিজেদের সন্তানদের জন্যও এটি একটি ভালো কাজ?

পরিবেশ উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা পাট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি? যৌথভাবে এই ক্যাম্পেইনটা করছি? যেন পলিথিনের শপিং ব্যাগ উঠে যায়? আস্তে আস্তে পাট এবং কাপড় বা পুরনো কাপড় যেগুলো আমরা ফেলে দিই সেগুলোর রি-ইউজ (পুনর্ব্যবহার) করে ব্যাগ হিসেবে ব্যবহার করতে পারি?

তিনি বলেন, মোট কথা হচ্ছে ক্রমান্বয়ে পলিথিনের শপিং ব্যাগের ওপর বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের দিকে যাওয়া? আমরা সুপারশপ দিয়ে শুরু করেছি? আমরা ক্রমে ক্রমে ঢাকার বাইরে যাবো, এক পর্যায়ে মুদি দোকান ও কাঁচাবাজার থেকে দেশব্যাপী পৌঁছে যাবো?

রিজওয়ানা হাসান বলেন, কাঁচা বাজারের কাজ শুরু হবে ১ নভেম্বর থেকে? সুস্পষ্টভাবে বলা যে, সব ধরনের প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে আমাদের এই যুদ্ধ না, আমাদের কাজটা হচ্ছে শুধু পলিথিনের শপিং ব্যাগের বিরুদ্ধে?

তিনি বলেন, ময়লার বিনের জন্য যে পলিথিন সেটির ওপরেও আপাতত কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই? কারণ, আমরা এখনো বিকল্পে যেতে পারিনি? এখান থেকে কিছু কিনে নেওয়ার সময় ক্রেতারা পলিথিনের ব্যাগ নেবেন না এবং বাসা থেকেও কোনো পলিথিনের ব্যাগ আনবেন না? যত দ্রুত সম্ভব পলিথিনের ব্যাগ আমরা দেশ থেকে সরিয়ে দিতে চাই?

এ উপদেষ্টা আরও বলেন, বর্তমান হিসাবে শুধু পলিথিনের ব্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে? তবে অর্থনীতির একটি বড় জায়গাজুড়ে এটি রয়েছে? রাতারাতি তা বন্ধ করতে পারবো না? কিছু পলিথিন যেগুলো একবার ইউজ করে আমরা ফেলে দিই সেগুলো খালে, নর্দমায় বা সমুদ্রে গিয়ে পড়ে? এগুলো যেন সংবেদনশীল জায়গায় না যায়? আমরা সেন্টমার্টিন থেকে কাজটি শুরু করতে যাচ্ছি? সেন্টমার্টিনের হোটেল মোটেলগুলোকে ওয়ান টাইম প্লাস্টিক ব্যবহার থেকে মুক্ত করা হবে?

বাজার মনিটরিংয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, অনেক বছর ধরে মনিটরিং হয় না? ২০০৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত একবার মার্কেট মনিটরিং হয়েছিল? যার ফলে পলিথিনের ব্যবহার কমে এসেছিল? আমরা এখন ক্রমান্বয়ে মনিটরিংয়ের দিকে যাচ্ছি। আমাদের লোকবলের অভাব আছে? সেজন্য সুপারশপ দিয়ে শুরু করেছি? কারণ, এখানে মনিটরিং করা আমাদের জন্য সুবিধার?

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিন আজ

জাতীয়, 25 May 2023, 1347 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ২৫ মে সাম্যের কবি, বিরহ ও বেদনার কবি, বিদ্রোহের কবি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী। তিনি ছিলেন একাধারে প্রেমিক ও বিদ্রোহী।

banner

উপন্যাস, নাটক, সঙ্গীত আর দর্শনেও নজরুলের অনবদ্য উপস্থিতি বর্ণাঢ্য করেছে বাংলা সাহিত্যকে। কণ্ঠশিল্পী, অভিনেতা, সম্পাদক পরিচয়ের আড়ালে লুকিয়ে থাকা অভিমানী এই মানুষ হৃদয় দিয়ে অনুভব করেছিলেন নিপীড়িত-অসহায়ের আর্তি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার কবিতা কোটি তরুণের রক্তে জ্বালায় স্ফুলিঙ্গ।

অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী এই মানুষটি ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (ইংরেজি সাল অনুযায়ী ২৪ মে ১৮৯৯ সাল) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব-কৈশোর-তারুণ্যের জীবনের পরতে পরতে সংগ্রাম করতে হয়েছে তাকে। জড়িয়েছিলেন নানা পেশায়। ১৯১৭ সালে যোগ দেন সেনাবাহিনীতে। অংশ নেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধেও।

এরই মাঝে তৎকালীন প্রভাবশালী কবি-সাহিত্যিকদের সংস্পর্শে আসেন তিনি। ১৯২২ সালে প্রকাশ করেন ধূমকেতু পত্রিকা। ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ কবিতার জন্য নজরুলকে দেওয়া হয় এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। মাত্র ২২ বছর ব্যাপ্তির লেখক জীবনে তিনি রচনা করেছেন প্রায় ৩ হাজার গান, লিখেছেন অসংখ্য কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস।

সাহিত্যের পাশাপাশি সংগীত ও চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন নজরুল। নিজের পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘ধ্রুব’তে অভিনয়ও করেছিলেন। তাই শুধু কবি পরিচয়েই আবদ্ধ নন নজরুল। আসানসোলের রুটি বানানো ছেলেটা এখনও বিশাল এক প্রতিষ্ঠান। না থেকেও যার উপস্থিতি প্রতিদিন।

১৯৭২ সালে কবি নজরুলকে সপরিবারে নিয়ে আসা হয় স্বাধীন বাংলাদেশে। এরপর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশেই ছিলেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট তৎকালীন পিজি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন এই মহাবিদ্রোহী ও প্রেমিক পুরুষ। কবির ইচ্ছানুসারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে তাকে সমাধিস্থ করা হয়।

র‌্যাবের অভিযানে সরাইল থানার আলোচিত অপহরণ মামলার ভিকটিম উদ্ধার ॥ গ্রেফতার ১

জাতীয়, সরাইল, 1 April 2023, 2663 Views,

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র‌্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের নৃশংস ও ঘৃণ্যতম অপরাধ বিশেষ করে ধর্ষণ, অপহরণ, মাদক উদ্ধার, মানব পাচার, হত্যা মামলা, সন্ত্রাসী, চাদাঁবাজ, জঙ্গি দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। নরহত্যাসহ যে কোন ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে র‌্যাবের প্রতিটি সদস্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে জনসাধারণের জন্য নিরাপদ বাসযোগ্য সমাজ তথা দেশ বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

banner

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ভিকটিম মোছাঃ সাদিয়া আক্তার কালিকচ্ছ কলেজ পাড়া মহিলা মাদ্রাসার নবম শ্রেণীর ছাত্রী। সে তার নানার বাড়ী নোয়াগাঁও (রাজু খার বাড়ী) হতে প্রতিদিন মাদ্র্রাসায় আসা যাওয়া করত। আসামী কৃষ্ণ কর্মকার নোয়াগাঁও গ্রামের জনৈক শাহিন এর ফার্মেসিতে কাজ করত। ভিকটিম মোছাঃ সাদিয়া আক্তার মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে আসামী কৃষ্ণ কর্মকার তাকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল কথাবার্তা বলে উত্যক্ত করতঃ প্রেমের প্রস্তাব দিত। ভিকটিম আসামী কৃষ্ণ কর্মকারের প্রস্তাবে রাজি না হয়ে বাড়িতে তার পিতাকে ঘটনা জানালে তার পিতা আসামী কৃষ্ণ কর্মকারকে সাবধান করে। তারপরেও আসামী কৃষ্ণ কর্মকার ভিকটিমের সাথে কথা বলে নানাভাবে প্রলোভন দেয় এবং আসামীর কথা না শুনলে সে ভিকটিমকে সমাজে কলঙ্কিত করার হুমকি দেয়। আসামী কৃষ্ণ কর্মকারের ভয়ে ভিকটিম ঘটনার আগের দিন নোয়াগাঁও হতে তার নিজ বাড়িতে চলে আসে। ভিকটিম মোছাঃ সাদিয়া আক্তারকে গত ১৬ মার্চ ভোর অনুমান ৫টায় কৃষ্ণ কর্মকার বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ও প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় ভিকটিমের পিতা মোঃ ফারুক মিয়া (৪০) বাদী হয়ে গত ৩০ মার্চ সরাইল থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৭/৫৮, তারিখ-৩০/০৩/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা-৭, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০২০)। আলোচিত এ ঘটনাটি মিডিয়ার মাধ্যমে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভিকটিম মোছাঃ সাদিয়া আক্তারকে উদ্ধার ও অপহরণকারী কৃষ্ণ কর্মকারকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র‌্যাব তার গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে।

এরই ধারাবাহিকতায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাবের একটি আভিযানিক দল গত ৩১ মার্চ ৮টা ৫৫ মিনিটে চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাট থানাধীন বহদ্দারহাট কাঁচা বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিম মোছাঃ সাদিয়া আক্তারকে উদ্ধার ও অপহরণকারী কৃষ্ণ কর্মকার (২৬), পিতা- চিত্ত কর্মকার, সাং- ধিতকুরা (কর্মকার পাড়া), থানা- মাধবপুর, জেলা- হবিগঞ্জ’কে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে, গ্রেফতারকৃত আসামী ও ভিকটিমকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানার মামলা নং-১৭/৫৮ তারিখ-৩০/০৩/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা-৭, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০২০) মূলে হস্তান্তর করা হয়েছে।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি

বেইলী রোডে অগ্নিকান্ড : শাহবাজপুরের একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু : শোকের ছায়া

জাতীয়, সরাইল, 1 March 2024, 1278 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় হতাহতের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলের একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এরা হলেন ইতালি প্রবাসী সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার (৪৫), তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তার (৩৫), দুই মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া (১৫) ও সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর (১২) এবং ছেলে সৈয়দ আব্দুল্লাহ (৭)।

banner

তাদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের শাহবাজপুর গ্রামে।

তারা ঢাকার মগবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। সৈয়দ মোবারক হোসেন ইতালির সাবুনা শহরে ব্যবসা করতেন। সেখানে ৪টি কসমেটিক দোকান পরিচালনা করতেন। তার বড় মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর ইস্পাহানী স্কুলে এবং সৈয়দ আব্দুল্লাহ মগবাজারের একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতেন।

আজ ১ মার্চ শুক্রবার তাদের গ্রামের বাড়িতে আসার কথা ছিল। কিন্তু বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তারা লাশ হয়ে একে একে এ্যাম্বুলেন্স করে গ্রামের নিজ বাড়ির উঠোনে ফিরলেন।

নিহতদের স্বজনরা জানান, সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে মগবাজারে থাকতেন। গত বৃহষ্পতিবার রাতে বেইলী রোডে অগ্নিকান্ড সংঘঠিত হওয়া ভবনটিতে রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন। সেখানেই আগুনে পুড়ে তাদের মৃত্যু হয়। নিহতদের মরদেহ বাড়িতে আসার পর বাদ আসর খন্দকার মসজিদ প্রাঙ্গনে জানাযা শেষে বাড়ির পাশে পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হবে। তাদের মৃত্যুর খবরে শাহবাজপুর ইউনিয়নে শোকের ছায়া নেমে আসে।

ইতালিতে স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন বাংলাদেশি সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার। পরিবারের সবাই ভিসাও হয়েছিল। চলতি মাসে স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে ইতালিতে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু পুরো পরিবার আর ইতালিতে পাড়ি জমানো হলো না। সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয় সন্তান।

নিহত মোবারকের খালাতো ভাই আলমগীর হোসেন জানান, মোবারক প্রথমে সিঙ্গাপুর প্রবাসী ছিলেন। প্রায় ২০ বছর আগে তিনি ইতালি পাড়ি দেন। তার দেশে আসা যাওয়া ছিল। গত দেড় মাস আগে প্রায় দুই বছর পর ইতালি থেকে দেশে ফিরেন মোবারক। স্ত্রী-সন্তানদের ইতালি নিয়ে যাওয়ার জন্য ভিসা ও টিকিটও সংগ্রহ করেছিলেন। আগামী ২০ মার্চ ইতালিতে যাওয়ার দিন নির্ধারিত করেছি।

নিহত মোবারের স্বজন মো. ফয়সাল বলেন, ইতালিতে স্থায়ী ভাবে বসবাসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল পরিবারটি। ভিসাও হয়েছিল। পরিবারের সকলে খেতে যাওয়াটাই কাল হলো তাদের। ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন অপূরণীয় রয়ে গেলো। ওই পরিবারে আর কেউ বেঁচে রইল না।

নিহত সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসারের শ্বশুর একই গ্রামের মুন্সী বাহার উদ্দিন জানান, তার মেয়ের জামাই মোবারক ঢাকার মগবাজার এলাকায় থাকতেন। তার মেয়ে স্বপ্না আক্তার, দুই নাতনি সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া ও সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর এবং একমাত্র নাতি সৈয়দ আব্দুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে রাতের খাবার খেতে ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্তোরায় গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সবাই পুড়ে মারা গেছেন। পুরো পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল।