সুলতানপুরে ভাইয়ের হাতে ভাই নিহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 15 June 2025, 117 Views,

দুলাল মিয়া:

banner

উড়শিউড়ায় মাটির চুলায় রান্না করার সময় ধোঁয়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে বড় ভাই ও ভাতিজার মারধরে মনির হোসেন (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ ১৫ জুন রবিবার রাতে শহরের সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

নিহত মনির ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার উড়শিউড়া এলাকার মোল্লাবাড়ির মৃত খুরশিদ মিয়ার ছেলে। পেশায় একজন দিনমজুর ছিলেন তিনি। তার সাত ও দেড় বছরের দুই ছেলে রয়েছে।

নিহতের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, আজ দুপুরে মনিরের ঘরের সামনে তার বড় ভাই বাবুল মিয়ার স্ত্রী দু’বেলা বেগম মাটির চুলায় রান্না করছিল। এ সময় মাটির চুলার ধোঁয়া মনিরের ঘরে ঢুকে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এ নিয়ে ভাবির সঙ্গে মনিরের কথা কাটাকাটি হয়। এর জেরে মনিরের বড় ভাই বাবুল ও ভাতিজা শাওন মনিরকে বেধড়ক মারধর করে। এক পর্যায়ে লাঠি ও ইট দিয়ে তার মাথায় গুরুতর আঘাত করে। এতে সে গুরুতর আহত হয়। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার অবস্থার উন্নতি না হলে বিকেলে পার্শ্ববর্তী সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্তরা গাঢাকা দেয়।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) জানান, লাশ উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে বিস্তারিত জানা যাবে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

Leave a Reply

ফাইল ছবি

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পাঁচ দিনের…

অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর শাহবাগ ও পল্টন মডেল থানার পৃথক Read more
ফাইল ছবি

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে…

অনলাইন ডেস্ক : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার এবং আহতদের কল্যাণ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক…

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর Read more

কারাগারে হাজতির মৃত্যু

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে জুনায়েদ মিয়া (৩২) নামে Read more

আখাউড়ায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা

চলারপথে রিপোর্ট : কৃষকদের সেচ দক্ষতা বাড়াতে পানি ব্যবহারকারী গ্রুপের Read more

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ১১তম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য: রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের Read more

স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে…

অনলাইন ডেস্ক : স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে অনশন Read more

ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানালো ২১…

অনলাইন ডেস্ক : ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে মিশরসহ ২১টি Read more

জেলা জামায়েত ইসলামের সাবেক আমীর সৈয়দ…

শফিকুল ইসলাম বাদল : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার Read more

আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশনে স্ক্রিনিং বুথ চালু

চলারপথে রিপোর্ট : সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আখাউড়া Read more

ইরানের হামলায় ২০জন ইসরায়েলি নিহত

অনলাইন ডেস্ক : ইসরায়েল এর সাথে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে Read more

সুলতানপুরে ভাইয়ের হাতে ভাই নিহত

দুলাল মিয়া: উড়শিউড়ায় মাটির চুলায় রান্না করার সময় ধোঁয়া নিয়ে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র ৩৬তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 6 March 2023, 1535 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ৬ মার্চ সোমবার বেলা ১১ টায় জামে মসজিদ রোডস্থ চেম্বার ভবনের তৃতীয় তলায় ফরিদ উদ্দিন আহমেদ মিলনায়তনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র ৩৬তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

banner

সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি আলহাজ্ব আজিজুল হক।

সভায় ২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন চেম্বারের সভাপতি আলহাজ্ব আজিজুল হক।

২০২২ সালের অডিট রিপোর্ট উপস্থাপন করেন চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি কাজী জাহাঙ্গীর।

২০২৩ সালের বাজেট উপস্থাপন করেন চেম্বারের সহ-সভাপতি হাজী মোঃ বাবুল মিয়া ও বিগত সভার কার্যবিবরণী পেশ করেন চেম্বারের সচিব মোঃ আজিম উদ্দিন।

সভায় বিগত অর্থ বছরের কার্যবিবরণী, বার্ষিক প্রতিবেদন, অডিট রিপোর্ট, সম্ভাব্য বাজেট উপস্থিত সদস্যদের অকুণ্ঠ সমর্থনে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

অন্যান্যবারের ন্যায় ২০২৩ সালের অডিট রহমান কাসেম এন্ড কোম্পানীকে করার অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি কাজী জাহাঙ্গীর এর মমতাময়ী মাতাসহ জানা অজানা যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের সকলের রুহের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।

সভায় অন্যান্যের উপস্থিত ছিলেন চেম্বারের সাবেক সভাপতি তানজীল আহমেদ, সাবেক ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি সুভাষ চন্দ্র পাল, চেম্বার পরিচালক মোঃ শাহজাহান মিয়া, মোঃ কামাল মিয়া, মোঃ আজিজুর রহমান শামীম, সুব্রত পাল, জাবেদুল ইসলাম সোহাগ, মোঃ জসিম উদ্দিন, তানভীর আহমেদ, মোঃ আল মামুন, মোঃ বাবুল মিয়া, মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ জুয়েল খান, প্রদীপ চন্দ্র সাহা, আলহাজ্ব হারুনুর রশিদসহ চেম্বারের সাধারণ সদস্যবৃন্দ।

সভা পরিচালনা করেন পরিচালক আলহাজ্ব মমিনুল আলম বাবু।

ডিমের দুই আড়ৎদারকে জরিমানা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 16 August 2023, 1010 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ভাউচার সংরক্ষণ না করায় ডিমের দুই আড়ৎদারকে ১৪ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

banner

আজ ১৬ আগস্ট বুধবার দুপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোঃ মেহেদী হাসান শহরের আনন্দ বাজারে অভিযান চালিয়ে এই জরিমানা করেন।

এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল ও ভেজাল পণ্যের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়তই বাজারে অভিযান চালানো হচ্ছে। অভিযানের অংশ হিসেবে বুধবার দুপুরে শহরের আনন্দ বাজারের ডিমের আড়ৎগুলোতে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এ সময় ডিম ক্রমের ভাউচার সংরক্ষণ না করায় ১টি আড়ৎদারকে ৪ হাজার টাকা ও অপর একটি আড়ৎদারকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি তাদেরকে সর্তকও করা হয়। তিনি বলেন, ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

চাঙ্গা হয়ে উঠেছে আবাসন ব্যবসা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 25 July 2023, 1084 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ক্রমেই চাঙ্গা হয়ে উঠেছে আবাসন ব্যবসা। অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি ও পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভেবে মানুষ এখন ফ্ল্যাটমুখী। গত ৫ বছরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আবাসন ব্যবসা।

banner

তবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে রড, সিমেন্টসহ নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে ফ্ল্যাটের দাম। প্রতিবছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে বিক্রি হচ্ছে কমপক্ষে তিনশত ফ্ল্যাট। যার বাজার মূল্য প্রায় একশত পঁচিশ কোটি টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক বছরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে জায়গার দাম বেড়েছে কয়েক গুন। নিম্ন আয়ের লোকেরা তাদের চাহিদামতো শহরে জায়গা কিনে বাড়ি করতে পারছেন না, তাই তারা ফ্ল্যাটের দিকেই ঝুঁকছেন। আবার অনেক প্রবাসীরাও তাদের সন্তানের লেখাপড়ার সুবিধার্থে শহরে ফ্ল্যাট কিনছেন।

এছাড়াও জায়গা কিনে বাড়ি নির্মান করা বিরাট ঝামেলার কাজ ও বাড়ি নির্মানে পৌরসভার অনুমোদন পাওয়া আগের চেয়ে কঠিন হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানুষ এখন ফ্ল্যাটমুখী হচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ১০ বছর আগেই আবাসন ব্যবসা শুরু হয়। তবে মানুষ বর্তমানে ফ্ল্যাটমুখী হওয়ায় গত ৫ বছর ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবাসন ব্যবসা চাঙ্গা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ফ্ল্যাটের মালিক বলেন, শহরে জায়গার দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার কারণে জায়গা কিনে বাড়ি করতে পারবোনা বুঝে ফ্ল্যাট কিনেছি। তাছাড়া ফ্ল্যাটে রয়েছে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা।

কয়েক ফ্ল্যাট মালিক বলেন, বর্তমানে শহরে বাড়ি নির্মাণের জন্য জায়গা-জমি কেনা, নির্মাণ সামগ্রী রাখার জায়গার অভাব এবং ভবন নির্মাণে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে অনুমোদন নেওয়াসহ নানা জটিলতার কারনে আমরা ফ্ল্যাট কিনেছি।

আবার অনেক বাড়ির মালিক নিজেরা একটু আরাম-আয়েশে ও বিলাসী জীবনযাপনের জন্য তাদের বাড়ি আবাসন ব্যবসায়ীদেরকে (ডেভলাপার) দিয়ে দিচ্ছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলাকা ও জায়গার অবস্থান ভেদে আবাসন ব্যবসায়ীদের (ডেভলাপারদের) ৬০ ভাগ, জায়গার মালিকের ৪০ ভাগ, ডেভলাপারদের ৫৫ ভাগ, জায়গার মালিকের ৪৫ ভাগ, ডেভলাপারদের ৫০ ভাগ, জায়গার মালিকের ৫০ ভাগ হারে জায়গার মালিকরা তাদের জায়গা আবাসন ব্যবসায়ীদেরকে দিয়ে দিচ্ছেন।

আবাসন ব্যবসায়ীরা ওই জায়গা নিয়ে দুই ইউনিট, তিন ইউনিট ও চার ইউনিটের ৬তলা, ৮তলা, ১০তলা, ১২তলা ভবন নির্মান করছেন। তবে গত কয়েক বছর ধরে পৌরসভা থেকে ৬ তলার উঁচু ভবনের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছেনা।

জেলা শহরের মৌলভীপাড়া, হালদারপাড়া, বাগানবাড়ি, পাইকপাড়া, কাজীপাড়া, কাউতলী ও মুন্সেফপাড়া এলাকায় ফ্ল্যাটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।বর্তমানে এলাকা ও জায়গার অবস্থান ভেদে ফ্ল্যাটের প্রতি স্কয়ার ফুটের মূল্য ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা। যা আগে ছিল ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত।

শহরের হালদারপাড়ার বাসিন্দা বকুল মিয়া বলেন, শহরে জায়গার দাম খুবই বেশী। তাই তিনি সাড়ে চার হাজার টাকা স্কয়ারফুট দামে ১হাজার ২শত স্কয়ারফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। দুই ইউনিটের ৮তলা বিশিষ্ট ভবনটিতে লিফট, জেনারেটর, পানিসহ সকল সুবিধা রয়েছে। তবে গ্যাস নেই। তিনি সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করেন।

শহরের পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা মোঃ আল-আমিন বলেন, শহরে জায়গার দাম বেশী। তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে শহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন। শহরে জায়গা কিনে তার পক্ষে বাড়ি করা সম্ভব নয় বিধায় তিনি গ্রামে কিছু জায়গা-জমি বিক্রি করে ৩৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। তিনি জানান, তার বাসায়ও গ্যাস নেই। তিনিও সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি স্কুলের একজন শিক্ষক জানান, তিনি আশুগঞ্জের একটি সরকারি স্কুলে চাকুরি করেন। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার কথা চিন্তা করে গত ১০/১২ বছর ধরে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে শহরের মুন্সেফপাড়ায় ১হাজার ২শত স্কয়ারফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন।

সেলিম মিয়া নামে একজন প্রবাসী জানান, তার বাড়ি নবীনগর উপজেলায়। ছেলেমেয়েদর লেখাপড়ার কথা চিন্তা করে তিনি শহরের বাগানবাড়ি এলাকায় সাড়ে চার হাজার টাকা স্কয়ারফুট দামে ১০৫০ স্কয়ারফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন।

শহরের কাজীপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমগীর জানান, শহরের প্রতিটি মহল্লাতেই এখন চড়া দামে জায়গা বিক্রি হচ্ছে। ফলে জায়গা কিনে বাড়ি নির্মাণ করা মধ্যবিত্তদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই মানুষ এখন ফ্ল্যাটের দিকে ঝুঁকছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কলেজ শিক্ষক জানান, শহরে জায়গার দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা তিন বন্ধু মিলে বছর পাচেক আগে হালদারপাড়া এলাকায় এক বাড়ির মালিকের কাছ থেকে অর্ধেক অর্ধেক হারে ৪ শতক জায়গা নিয়ে তাতে দুই ইউনিটের ৬তলা ভবন নির্মান করেছেন। তারা তিন বন্ধু পেয়েছেন ৬টি ফ্ল্যাট ও মালিক পেয়েছেন ৬টি ফ্ল্যাট। এতে তারা লাভবান হয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরে কমপক্ষে ১৫ থেকে প্রতিষ্ঠান আবাসন ব্যবসার সাথে জড়িত। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ঠিকাদারও আছেন। আবার ৭/৮জন যুবক মিলেও আবাসন ব্যবসা করছেন। এলাকা ভেদে ও জায়গার অবস্থান বুঝে জায়গার মালিকদের সাথে চুক্তি করেন আবাসন ব্যবসায়ীরা। আবাসন ব্যবসায়ীদের (ডেভলাপারদের) ৬০ ভাগ, জায়গার মালিকের ৪০ ভাগ, ডেভলাপারদের ৫৫ ভাগ, জায়গার মালিকের ৪৫ ভাগ, ডেভলাপারদের ৫০ ভাগ, জায়গার মালিকের ৫০ ভাগ হারে জায়গার মালিকরা তাদের জায়গা আবাসন ব্যবসায়ীদেরকে দিয়ে দিচ্ছেন। ভবন নির্মানের সকল খরচ বহন করেন আবাসান ব্যবসায়ীরা। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে আবাসন রেডি হওয়া পর্যন্ত জায়গার মালিক অন্য যে বাসায় ভাড়া থাকেন সেই ভাড়াও পরিশোধ করেন আবাসন ব্যবসায়ীরা।

কয়েকজন আবাসন ব্যবসায়ী জানান, ভবন নির্মাণের জন্য পৌরসভা থেকে নকশা অনুমোদন নিতে হয়। যে স্থানে ভবন নির্মাণ করা হবে- তার পাশে ১৪ থেকে ১৬ ফুট পর্যন্ত রাস্তা থাকলেই ছয়তলা বিশিষ্ট ভবনের অনুমোদন দেয়া হয়। তারা জানান, পৌর শহরের অধিকাংশ এলাকাতেই এই আকারের রাস্তা নেই। এজন্য ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত বিদ্যমান বিধি শিথিল করার দাবি জানান তারা।

আবাসন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রফিক কনস্ট্রাকশনের মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, “ মানুষ বাড়ি নির্মাণের ঝামেলা এড়াতে ফ্ল্যাটের দিকে ঝুঁকছেন। সবাই চান ঝামেলামুক্ত আবাসন। আমরা মানুষকে সকল সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ফ্ল্যাট দিচ্ছি। এছাড়া মধ্যবিত্তরা কিস্তির মাধ্যমেও ফ্ল্যাট কিনতে পারছেন।

আবাসন ব্যবসায়ী মোঃ কাদেরউজ্জামান বলেন, “ রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের কারনে রড, সিমেন্টসহ নির্র্মান সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন ফ্ল্যাট তৈরিতে খরচ পড়ছে বেশি। প্রতি স্কয়ারফুটে এখন খরচ পড়ছে আড়াই হাজার টাকার মতো। তাছাড়া ছয়তলার বেশি উচ্চতার ভবনের অনুমোদন দিচ্ছেনা পৌরসভা। এসব কারণে ফ্ল্যাটের দাম কিছুটা বেশি’।

আবাসন ব্যবসায়ী এম.কে. বিল্ডার্সের মালিক কামরুল ইসলাম বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে বছরে আড়াইশ থেকে তিনশ ফ্ল্যাট বিক্রি হচ্ছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে এই চাহিদা। কিন্তু জায়গা স্বল্পতা এবং ছয়তলার বেশি উচ্চতার ভবন তৈরির অনুমোদন না থাকায় আমরা ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী ফ্ল্যাট দিতে পারছি না। তিনি বলেন, শহরের অধিকাংশ এলাকায় ১৬ ফুটের রাস্তা নেই।

তিনি বলেন, ভবন নির্মাণের জন্য বিদ্যমান বিধি যদি কিছুটা শিথিল করে ছয়তলার অধিক উচ্চতার ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়, তাহলে ফ্ল্যাট বিক্রি বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ হবে। পাশাপাশি ক্রেতারা তুলনামূলক কম দামে ফ্ল্যাট কিনতে পারবেন।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র মিসেস নায়ার কবির বলেন, সর্বনিম্ন ১৪ ফুটের রাস্তা থাকলেই ছয়তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ করা যাবে। তবে এটি পৌরসভার কোনো বিধি নয়। সরকার থেকেই এটি নির্ধানর করা হয়েছে। মূলত মানুষের হাঁটাচলা এবং যানবাহন যেন স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে- সেজন্যই এই বিধান করা হয়েছে। এক্ষেত্রে পৌরসভার কিছু করার নেই।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বীরেন্দ্র চন্দ্র দাস আবৃত্তি সম্মান গ্রহণ করলেন আবৃত্তিশিল্পী কাজি মাহতাব সুমন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 9 July 2024, 463 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বীরেন্দ্র চন্দ্র দাস স্মৃতি আবৃত্তি সম্মান গ্রহণ করলেন বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বরেণ্য আবৃত্তিশিল্পী কাজি মাহতাব সুমন।

banner

৮ জুলাই সোমবার রাতে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে তিতাস আবৃত্তি সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে এ সম্মান প্রদান করা হয়। তিতাসপাড়ের কৃতিসন্তান ও ত্রিপুরা রাজ্যের গণমানুষের কবি দিলীপ দাসের জন্মদিন উপলক্ষে এ সম্মান প্রদান করা হয়। এসময় ফুলেল শুভেচ্ছা, উত্তরীয়, সম্মাননা ক্রেস্ট ও নগদ ৫ হাজার টাকা কাজি মাহতাব সুমন এর হাতে তুলে দিয়ে সম্মানিত করা হয়।

তিতাস আবৃত্তি সংগঠন পরিচালক মো মনির হোসেনের সভাপতিত্বে ও সহকারী পরিচালক সুজন সরকার, আবৃত্তিশিল্পী ফাহিমা সুলতানার সঞ্চালনায় এসময় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কবি ও প্রাবন্ধিক শাহ মোহাম্মদ সানাউল হক। আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী উদয়শঙ্কর ভট্টাচার্য, কাকলি গঙ্গোপাধ্যায় ও কবি কৃত্তিবাস চক্রবর্তী।

শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সাহিত্য একাডেমী সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন, সুরসম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন সহসভাপতি কবি আব্দুল মান্নান সরকার, রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ সভাপতি মানবর্দ্ধন পাল, বিটিভি সঙ্গীত পরিচালক আলী মোসাদ্দেক মাসুদ, চেতনায় স্বদেশ গণগ্রন্থাগার সভাপতি কবি আমির হোসেন ও কবি ও গল্পকার আবদুর রহিম।

অনুষ্ঠানে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ করেন কবি মানিক রতন শর্মা, শৌমিক ছাত্তার, সৈম আকবর, হেলাল উদ্দিন হৃদয় ও রুদ্র মোহাম্মদ ইদ্রিস।

অনুষ্ঠানে সংগঠনের সহকারী পরিচালক উত্তম কুমার দাসের সমন্বয়ে কবি দিলীপ দাসের কবিতা থেকে ৪ টি দলীয় আবৃত্তি পরিবেশনা করেন তিতাস আবৃত্তি সংগঠণের ছোট,মধ্যম,বড় ও অভিভাবক দল।

ইতিপূর্বে বরেণ্য আবৃত্তিজন হাসান আরিফ, মীর বরকত ও আশীষ সাহা (ত্রিপুরা) এ সম্মান গ্রহণ করেছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি সভায় মহান বিজয়ের মাস ব্যাপক কলেবরে উদযাপনের সিদ্ধান্ত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 7 December 2023, 797 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
মহান বিজয়ের মাস ব্যাপক কলেবরে উদযাপনের লক্ষ্যে নানান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ।

banner

আজ ৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সভায় এ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।

শহরের হালদারপাড়াস্থ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতি সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।

জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টুর সঞ্চালনায় এসময় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা তাজ মো. ইয়াছিন, মুজিবুর রহমান বাবুল, গোলাম মহিউদ্দিন খান খোকন, অ্যাড. মাহবুবুল আলম খোকন, সৈয়দ মিজানুর রেজা, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, শেখ মো. আনার, সৈয়দ এহতেশামুল বারী তানজিল, সেলিম রেজা হাবিব, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল কালাম ভূঞা, সাধারণ সম্পাদক এমএএইচ মাহবুব আলম, পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি অ্যাড. লোকমান হোসেন (ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান), বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল ওয়াহিদ খান লাভলু, ওয়াসেল সিদ্দিকী, গাজি রতন মিয়া, আবু হোরায়রাহ, জায়েদুল হক, মাহমুদুর রহমান জগলু, কাচন মিয়া, মো. মনির হোসেন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত, জেলা কৃষকলীগ আহবায়ক সাদেকুর রহমান শরীফ, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সাধারণ সম্পাদক সাইদুজ্জামান আরিফ জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শোভন, জেলা মৎস্যজীবী লীগ সভাপতি আবদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শাহ পরান, জেলা তাঁতী লীগ সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দুলাল।