ইখলাস মানুষের হৃদয়ে সৃষ্টি হয়

ধর্ম, 30 June 2025, 41 Views,

আল্লামা মাহ্‌মূদুল হাসান :
ইখলাস মানুষের দিলে সৃষ্টি হয়। আর দিল মানুষের আয়ত্তের বাইরে। মানুষের অন্তরে বিভিন্ন খেয়াল আসতে পারে, তাতে করার কিছুই নেই। কিন্তু বাহ্যিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তো আমাদের নিয়ন্ত্রণে। ইচ্ছা করলে তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। চোখ আমার নিয়ন্ত্রণে, ইচ্ছা করলে দেখতে পারি, না-ও দেখতে পারি। হাত আমার নিয়ন্ত্রণে, ইচ্ছা করলে ধরতে পারি, না-ও ধরতে পারি। চোখ যেহেতু আমার নিয়ন্ত্রণে তাই নামাজের সময় সিজদার স্থানে চোখ রাখতে বলা হয়েছে। রুকু করার সময় চোখকে দুপায়ের ওপর রাখতে বলা হয়েছে। বসা অবস্থায় দৃষ্টি কোলের দিকে থাকবে। সালামের সময় দৃষ্টি কাঁধ পর্যন্ত যাবে। বাহ্যিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ঠিক রাখার বিষয়টি মানুষের নিয়ন্ত্রণে; কিন্তু নামাজের সময় অন্তরে অনেক খেয়াল আসে, তা ফেরানোর মতো ক্ষমতা মানুষের নেই। তাই নামাজের মধ্যে অন্য কোনো খেয়াল আসতে পারবে না-শরিয়ত এমন কোনো শর্তারোপ করেনি। শরিয়ত বলেছে, দিলের মধ্যে ইখলাস তৈরি কর। নম্রতা ও একাগ্রতা আনয়ন কর। যেহেতু অন্তরের ওপর মানুষের নিয়ন্ত্রণ নেই, তাই নামাজে ইখলাস ও খুশু-খুজুকে ফরজ করা হয়নি। কারণ এটা মানুষের ক্ষমতার বাইরে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক বলেছেন, ‘আল্লাহপাক মানুষের ওপর ক্ষমতাবহির্ভূত কোনো হুকুম চাপিয়ে দেন না।’ তবে দিলের মধ্যে খুশু-খুজু তৈরি করার নির্দেশ আল্লাহপাক দিয়েছেন এবং এর নিয়ম-পদ্ধতিও তিনি বলে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তোমার নিয়ন্ত্রণাধীন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তথা হাত-পা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ কর! তাহলে এর প্রতিক্রিয়াস্বরূপ তোমার অন্তরে ইখলাস ও তাওয়ায়ু সৃষ্টি হবে। সুন্নত তরিকায় আমল করলে প্রিয়তম রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুশি হবেন। অন্তরে খুশু-খুজু সৃষ্টি করার জন্য সুন্নত মোতাবেক আমল করা জরুরি। খুশু-খুজু ও একাগ্রতা মানুষের নিয়ন্ত্রণে হলে ইসলামি শরিয়তে এটাকে ফরজ করা হতো। কারণ খুশু-খুজু ও ইখলাস হচ্ছে নামাজের আত্মা। কিন্তু যেহেতু ইখলাস ও খুশু-খুজু মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে, তাই এটাকে ফরজ করা হয়নি। কোনো কোনো ইমাম বলেছেন, নামাজে খুশু-খুজু ফরজ। ইমাম গাজ্জালি রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর লিখিত ‘কিমিয়ায়ে সায়াদাত’ ও ‘ইহ্ইয়ায়ে উলুমুদ্দীনে’ লিখেছেন, নামাজে খুশু-খুজু ফরজ। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তিনি বলেছেন, আমার ভুল হয়ে গেছে। কারণ খুশু-খুজু মানুষের দিলের ব্যাপার। তাই খুশু-খুজুকে যদি ফরজ বলা হয়, তাহলে খুশু-খুজু না এলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। অতএব আমি আমার আগের কথা প্রত্যাহার করলাম। এখন আমি বলছি, নামাজে খুশু-খুজু হচ্ছে মুস্তাহাব।
নামাজ শুরু করার আগে নিয়ত করতে হয়, কিন্তু নিয়ত কী জিনিস, তা অনেকেই জানে না। ফলে তারা পেরেশানি ভোগ করে থাকে। অনেকে আরবিতে সশব্দে নিয়ত করে। অথচ আরবিতে নিয়ত করার সময় তাদের উচ্চারিত আরবি বাক্য ভুল হয়ে যায়। এ ছাড়া নিয়ত হলো দিলের ব্যাপার; মুখের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। যেমন জুমার নামাজ পড়তে এসে নিয়ত করলাম, আমি ইমাম সাহেবের পেছনে ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করছি, আল্লাহু আকবার-এতে ফজরের ফরজ আদায় হবে না, জুমার নামাজই আদায় হবে। মুখে যা নিয়ত করেছি, তা হবে না। এমনিভাবে কেউ যদি রমজান মাসে নফল রোজার নিয়ত করে, তাহলেও রমজানের ফরজ রোজা আদায় হবে। নিয়ত খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কিন্তু তা আদায় করা অত্যন্ত সহজ। শুধু মনে মনে খেয়াল করাই যথেষ্ট। সেখানে উচ্চারণের কোনো প্রশ্ন নেই। তবে যদি অন্তরের নিয়তের সঙ্গে মুখের উচ্চারণও সহিহ হয়, তাহলে খুব ভালো। এ ছাড়া মুক্তাদি যদি এ নিয়ত করে যে ইমাম সাহেব যে নামাজ আদায় করছেন, আমিও সেই নামাজ আদায় করছি, তবু তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে।
কোনো কোনো চটি বইয়ের মধ্যে লেখা আছে নামাজে আরবিতে নিয়ত করা বেদাত। কারণ কিছু লোক মনে করেন যে আরবিতে নিয়ত না করলে নামাজ আদায় হবে না। এ কথাটি বিভ্রান্তিকর। আসল মাসয়ালা হলো কেউ যদি কোনো মুস্তাহাব আমলকে ওয়াজিব মনে করে কিংবা ওয়াজিবকে ফরজ মনে করে, তাহলে সেটা করা নিষেধ। এতে সমাজের মধ্যে মাসয়ালার পজিশন নষ্ট হয়ে যায়। এসব ভুলভ্রান্তির মূল কারণ হলো মাসয়ালা সম্পর্কে সঠিক ইলম না থাকা। আমাদের অবস্থা এই যে ঈদ কিংবা জানাজায় ইমাম সাহেব যদি নামাজের নিয়ত বলে দেন, তবে তো ভালো, আর যদি নিয়ত না বলে দেন, তো মুসল্লিদের হইচই ও সমালোচনা করতে শোনা যায় যে হুজুর আরবিতে নামাজের নিয়তটিও বলে দিলেন না। কারও যদি আগে থেকে নিয়ত মুখস্থ থাকে, তাহলে তো সহজেই মুখস্থ বলতে পারবে। আর যদি আগ থেকে মুখস্থ না থাকে, তাহলে কি এ সময়ে ইমাম সাহেবের মুখে একবার শুনে নিয়ত মুখস্থ করা সম্ভব? এ কথা সত্য যে মুসলমান হিসেবে আরবি ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি ও আকর্ষণ থাকা স্বাভাবিক। তবে উচিত হলো সময় সুযোগে আরবি নিয়ত মুখস্থ করে নেওয়া। শুধু আরবি মুখস্থ নয়, বরং অর্থসহ শিখে নেওয়া উচিত।
লেখক : আমির, আল হাইআতুল উলয়া ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ

banner

Leave a Reply

ইখলাস মানুষের হৃদয়ে সৃষ্টি হয়

আল্লামা মাহ্‌মূদুল হাসান : ইখলাস মানুষের দিলে সৃষ্টি হয়। আর Read more

প্রাথমিক তদন্তেই ভুয়া মামলার আসামিরা রেহাই…

অনলাইন ডেস্ক : উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ফৌজদারি কার্যবিধির একটি সংশোধন Read more

গাজীপুরে শফিক, তারিক, পাপনের ১০ তলা…

জায়েদুল কবির ভাঙ্গি, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর : গাজীপুর সদরের চান্দনা Read more

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা পরিষদ…

অনলাইন ডেস্ক : বরগুনার পাথরঘাটায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা Read more

ইসরাইলি হামলায় একদিনে আরো ৮১ ফিলিস্তিনি…

অনলাইন ডেস্ক : গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৮১জন ফিলিস্তিনি Read more

কৃষি বীজ সংরক্ষণাগার ভেঙে দোকান নির্মাণের…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের দেলি Read more

মিথ্যা মামলা করলে কী কী শাস্তি?

অনলাইন ডেস্ক : দেশের অন্যতম আলোচিত বিষয় হলো মিথ্যা মামলা। Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বহিস্কার

চলারপথে রিপোর্ট : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা Read more

আখাউড়ায় অবৈধ চায়না রিং জাল ধ্বংস

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় তিতাস নদীতে অভিযান পরিচালনা Read more

রেলপথে মাদক পাচার প্রতিরোধে রেলওয়ে পুলিশের…

চলারপথে রিপোর্ট : মাদক চোরাচালান, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ দমন Read more

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির…

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান Read more

বাঞ্ছারামপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি

চলারপথে রিপোর্ট : ৬ দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য Read more

বাংলাদেশে ৭ জুন ঈদুল আজহা

জাতীয়, ধর্ম, 29 May 2025, 263 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশের আকাশে ২৮ মে বুধবার পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ২৯ মে বৃহস্পতিবার ১৪৪৬ হিজরি সনের জিলহজ মাস গণনা শুরু হবে। জিলহজ মাসের ১০ তারিখ, অর্থাৎ ৭ জুন বাংলাদেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে।

banner

২৮ মে বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। সভায় দেশের বিভিন্ন জেলা প্রশাসন, আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাঠ পর্যায়ের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে চাঁদ দেখা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চাঁদ দেখা যাওয়ার তথ্য জানাতে টেলিফোন ও ফ্যাক্স নম্বর খোলা রাখা হয়েছিল। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চাঁদ দেখা যাওয়ার তথ্য আসায় দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে।

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব, চাঁদ দেখা কমিটির সদস্যরাসহ ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

রমজানের পরে ইবাদেতের সবচেয়ে বড় মৌসুম হলো জিলহজের প্রথম দশক। রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহর নিকট অন্য যেকোনো সময়ের আমলের চেয়ে জিলহজের প্রথম দশকের আমল অধিক প্রিয় [সহিহ বুখারি]।

কোরআন অবমাননায় ডেনমার্কে প্রথম মামলা

আন্তর্জাতিক, ধর্ম, 25 January 2025, 745 Views,

অনলাইন ডেস্ক
পবিত্র কোরআন অবমাননার দায়ে প্রথমবারের মতো মামলা হয়েছে ইউরোপের স্ক্যান্ডিনেভিয়া অঞ্চলের দেশ ডেনমার্কে। গতকাল শুক্রবার রাজধানী কোপেনহেগেনের একটি আদালতে দুই ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে মামলাটি হয়।

banner

মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্তরা গত জুনে কোপেনহেগেনে একটি জনসমাগমপূর্ণ স্থানে পবিত্র কোরআনের অবমাননার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। যেখানে তারা এ কাজটি করেছিলেন, সেখানে বিশ্বের নানা দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের লোকজন ছিলেন। অভিযুক্তদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে তাদের ধর্মীয় অনুভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে।

ডেনমার্কের জাতীয় ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে এই সংবাদ। তবে কোপেনহেগেনের কোন আদালতে মামলা হয়েছে তা জানানো হয়নি। সেই সঙ্গে অভিযুক্তদের নাম-পরিচয়ও গোপন রেখেছে সংবাদমাধ্যমগুলো।

কোপেনহেগেনের শীর্ষ প্রসিকিউটর লাইস-লোটে নিলাস এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এ ঘটনা ঘটেছিল একদম প্রকাশ্যে এবং বহুসংখ্যক মানুষের সামনে। পাশাপাশি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এ ঘটনার লাইভ সম্প্রচারও হয়েছিল। মামলার মূল কারণ এটিই।”

তবে কোন আদালতে এ মামলা হয়েছে, তা তিনিও নিশ্চিত করেননি।

২০২৩ সালের জুন-জুলাই মাসে ডেনমার্কে একাধিক কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটে। তবে দেশটির প্রচলিত আইনে এ ধরনের তৎপরতা অপরাধের তালিকাভুক্ত না হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা সে সময় সম্ভব হয়নি।

কিন্তু এ ঘটনায় মুসলিম বিশ্বের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো তীব্র নিন্দা ও সমালোচনা শুরুর করার পর বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার সিদ্ধান্ত নেয় ডেনমার্ক সরকার। এর ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর একটি আইন পাস ডেনমার্কের পার্লামেন্ট। সেই আইনে প্রকাশ্যে ও জনসমক্ষে কোরআন পোড়ানো, ছেঁড়া বা কোনও ধরনের অবমাননা করা এবং তার ভিডিওধারণকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, ব্যারন’স, দ্য ট্রুথ ইন্টারন্যাশনাল, এএফপি, ডন

সন্তানকে কত দিন মাতৃদুগ্ধ দেওয়া যায়

ধর্ম, 18 February 2025, 322 Views,

মাইমুনা আক্তার:
সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সন্তানকে মাতৃদুগ্ধ পান করানো প্রত্যেক মায়ের কর্তব্য। কারণ মহান আল্লাহ মায়ের দুধে শিশুর বেড়ে ওঠার সব উপাদান দিয়েছেন। যেমন- আমিষ, চর্বি, ভিটামিন, রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান, পানি, সহজ পাচ্যকারী উপাদান ইত্যাদি সুষমভাবে থাকে মাতৃদুগ্ধে। ফলে মায়ের বুকের দুধ খাওয়া শিশু সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে বেড়ে ওঠে। পাশাপাশি তাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও অনেক বেশি থাকে। এর ফলে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, অপুষ্টিজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা পায়। শারীরির সুস্থতার পাশাপাশি শিশুর মানসিক বিকাশেও মায়ের দুধের ভূমিকা অনবদ্য। এ ছাড়া মায়ের সুস্থতা যেমন— স্তন ক্যান্সার ও ওভারিয়ান ক্যান্সার প্রতিরোধে সন্তানকে সঠিকভাবে মায়ের দুধ পান করানোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রত্যেক মায়ের উচিত সন্তান জন্মলাভের পর থেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাকে নিয়মমাফিক দুধ পান করানো। অনেকে আবার না জেনে কোরআনের নির্ধারিত সময়সীমা পার হয়ে যাওয়ার পরও সন্তানকে বুকের দুধ পান করান। অথচ পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ সন্তানকে মাতৃদুগ্ধ পান করানোর নির্দিষ্ট একটি সীমারেখা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘মাতাগণ নিজেদের বাচ্চাদেরকে পূর্ণ দুই বছর স্তন্যদান করবে, যদি দুধ খাওয়ার পূর্ণ মেয়াদ সমাপ্ত করতে চায়। (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৩৩) তাফসিরবিদরা বলেন, এ আয়াত থেকে বোঝা যায় যে সন্তানকে দুধ পান করানো ওয়াজিব এবং আরো বোঝা গেল যে বিশেষ ওজর ছাড়া স্তন্যদান থেকে বিরত থাকার অবকাশ নেই। (মাআরেফুল কুরআন, তাফসিরে মাযহারি, কুরতুবি, জামিউ আহকামিসসিগার : ১/১২৩) অনেক মা সন্তানকে তিন-চার বছরও দুধ খাওয়ান। আবার অনেকে আড়াই বছর খাওয়ানো যায় মনে করে এই মেয়াদ পূর্ণ করেন। এটা ভুল। সন্তান অনূর্ধ্ব দুই বছর মায়ের বুকের দুধ খেতে পারবে। দুই বছরের বেশি বয়সী সন্তানকে দুধ পান করানো নাজায়েজ। দুই বছর দুধ পান করানোর বিষয়টি উল্লিখিত আয়াতে রয়েছে। এ ছাড়া আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, ‘মায়ের দুধ পানের সময় দুই বছরই।’ (সুনানে দারাকুতনি : ৪/১৭৪, তাফসিরে মাযহারি : ১/৩২৩, মাজমাউল আনহুর : ১/৫৫২, আত্তাসহিহ ওয়াত্তারজিহ ৩৩৫, ফাতহুল কাদির : ৩/৩০৭-৩০৯) তাই প্রত্যেক মায়ের দায়িত্ব সন্তানের দুই বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই তাকে অন্যান্য খাবারে অভ্যস্ত করা, যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাকে মায়ের দুধ দেওয়া বন্ধ করা যায়।

banner

মহানবী(সা:) কে কটুক্তির প্রতিবাদে আশুগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল

আশুগঞ্জ, ধর্ম, 4 October 2024, 955 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ভারতীয় পুরোহিতের কটূক্তি এবং সেই বক্তব্যকে বিজেপির এক নেতার সমর্থন দেওয়ার প্রতিবাদে আশুগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

banner

আজ ৪ অক্টোবর শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে আশুগঞ্জ উপজেলা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত ও ছাত্র জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিলটি বের আশুগঞ্জ রেলগেইট হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার গোল চত্বর এসে মিছিলটি শেষ করে শুরু হয় প্রতিবাদ সমাবেশ।

প্রতিবাদ সমাবেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আহ্বায়ক এফরান সিদ্দিকি ঈশানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মুফতি রেদোয়ান হোসেন আল কাদ্বেরীর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি বক্তব্য রাখেন আশুগঞ্জ উপজেলা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতে সভাপতি অধ্যক্ষ আলহাজ্ব কাজী মোঃ মহিউদ্দিন মোল্লা।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন মাওলানা জোবায়ের আল মাহমুদ, মাওলানা শফিকুল ইসলাম, ক্বারী আল আমিন আল ক্বাদেরী, ফখরুল ইসলাম নিহামী, খন্দকার আনিসুর রহমান আল ক্বাদেরী, খন্দকার বাবুল শাহ, মিজানুল রহমান, সোহাগ মিয়া, জোবায়েদ মোল্লা, নুর মোহাম্মদ জামান, আলাউদ্দিন আহম্মেদ, ফয়সাল আহমেদ, মোহাম্মদ মারুফ, আদিব, শ্রাবণ, রাসেল ইসলাম, মারুফ খান, রাহাদ, আমানত উল্লাহ, মোহাম্মদ মোহন, ফাহিমসহ বিশেষ ব্যক্তিবর্গ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘গত আগস্ট মাসে রাসুল (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করেন ভারতের মহারাষ্ট্রের হিন্দু পুরোহিত রামগিরি মহারাজ। তাঁকে সমর্থন করেছেন বিজেপির বিধায়ক নীতেশ রানে। এ দু’জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হলেও এখনো রাজ্য সরকার তাঁদের গ্রেফতার করেনি। এর প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে মহারাষ্ট্রের মুসলিম জনতা। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। মহানবীকে অবমাননাকারীদের গ্রেফতার করে সঠিক বিচারের দাবি জানাই।’

পবিত্র শবে মেরাজ ২৭ জানুয়ারি

জাতীয়, ধর্ম, 1 January 2025, 816 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশের আকাশে ১৪৪৬ হিজরি সনের পবিত্র রজব মাসের চাঁদ দেখা গেছে। তাই আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে পবিত্র রজব মাস গণনা করা হবে। আর, শবে মেরাজ পালিত হবে আগামী ২৭ জানুয়ারি দিবাগত রাতে। আজ ১ জানুয়ারি বুধবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মোকাররমের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।

banner

সভায় ১৪৪৬ হিজরি সনের পবিত্র রজব মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়সমূহ, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়।

এ সময় সভায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) আব্দুর ছালাম খান, তথ্য অধিদফতরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. নিজামূল কবীর, বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসনের প্রশাসক মো. ফখরুল ইসলাম, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. ফরিদ উদ্দিন, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুর রহমান খান, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মো. আবদুল মালেক, বাংলাদেশ টেলিভিশনের অতিরিক্ত পরিচালক মো. রুহূল আমিন, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুহাম্মদ মিজানুর রহমান,সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার প্রধান মাওলানা অধ্যক্ষ মিঞা মো. নূরুল হক, লালবাগ শাহী জামে মসজিদের সানি খতিব মুফতি আফনান মুহাম্মাদ, চকবাজার শাহী জামে মসজিদের খতিব মুফতি শেখ নাঈম রেজওয়ান উপস্থিত ছিলেন।