অনলাইন ডেস্ক :
সাফ উইমেন’স অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে শেষ মুহূর্তের গোলে নেপালকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। দুই লাল কার্ড, গোল-বন্যা এবং নাটকীয় শেষ মুহূর্ত সব মিলিয়ে কিংস অ্যারেনায় রোমাঞ্চ ছড়ায় পুরো ৯০ মিনিট। শিখা জাহান ও সাগরিকার গোলে প্রথমার্ধেই ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয়ার্ধে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন সাগরিকা। সংখ্যাগত ঘাটতির সুযোগ কাজে লাগিয়ে সমতায় ফেরে নেপাল। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে তৃষ্ণা রানীর গোলে জয় ছিনিয়ে নেয় পিটার জেমস বাটলারের শিষ্যরা।
প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক খেলা উপহার দেয় বাংলাদেশ। ১৪তম মিনিটে সাগরিকার পাস থেকে মুনকি আক্তারের শট প্রতিহত হলে ফিরতি বলে জাল খুঁজে নেন শিখা জাহান। এরপর ৩৬তম মিনিটে গোলরক্ষকের ভুলে পাওয়া বল টোকা দিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সাগরিকা।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে নেপালের ফরোয়ার্ড মিনার শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক স্বর্ণা রানী মন্ডল। ফলে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে একাধিক সুযোগ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। ৫৫তম মিনিটে সাগরিকা ও নেপালের সিমরান ফাউলের জেরে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। উত্তেজিত পরিস্থিতি সামাল দিতে দুজনকেই লাল কার্ড দেখান রেফারি।
একজন কম নিয়ে খেলতে থাকা বাংলাদেশ একটু পরেই গোল হজম করে। জয়নবের ফাউলে পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোল করেন নেপালের আনিশা রায়। ৮৬তম মিনিটে মিনা দেউবার গোলে সমতায় ফেরে তারা।
যোগ করা সময়েও একাধিকবার হুমকিতে পড়ে বাংলাদেশের ডিফেন্স। তবে অতিরিক্ত সময়ের একদম শেষ মুহূর্তে উমহেলা মারমার পাস থেকে দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে জয়সূচক গোল করেন তৃষ্ণা রানী। ওই গোলেই বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ জয় নিশ্চিত হয়।
এ জয়ে টানা দুই ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। এর আগে সাগরিকার হ্যাটট্রিকে শ্রীলঙ্কাকে ৯-১ গোলে হারিয়ে আসর শুরু করেছিল তারা।
আগামী মঙ্গলবার নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ভুটানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। নেপালের বিপক্ষে লাল কার্ড পাওয়া সাগরিকা অবশ্য ওই ম্যাচে খেলতে পারবেন না।
অনলাইন ডেস্ক :
রাঙামাটি রিজিয়ন টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্টে ভোলকান ক্লাব বিজয়ী হয়েছে। রাঙামাটি রিজিয়নের পৃষ্টপোষকতা ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার ব্যবস্থাপনায় মারি স্টেডিয়ামে আজ ২৬ জানুয়ারি রবিবার দুপুর ২টায় এ টুর্ণামেন্টে বিজয়ীদের আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার তুলে দেন রাঙামাটি সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শওকত ওসমান।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. হাবিব উল্লাহ’র সভাপতিত্বে এতে রাঙামাটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমীন, রাঙামাটি সদর সেনা জোনের কমান্ডার লে. কর্ণেল এরশাদুল হোসেন চৌধুরী, রাঙামাটি সেনা রিজিয়নের লে. কর্ণেল মো. মাহাতাব, রাঙামাটি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মামুনুর রশিদ মামুন ও রাঙামাটি জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আব্দুল আলীম উপস্থিত ছিলেন।
রাঙামাটি রিজিয়ন টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্টকে দু’টি গ্রুপে বিভক্ত করে মোট- ২০ দল অংশগ্রহণ করেন। এরই মধ্যে ফাইনালে মুখোমুখি হয় ভোলকান ক্লাব ও আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদ। অবশেষে আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদকে হারিয়ে বিজয়ী হয় ভোলকান ক্লাব। এ সময় চ্যাম্পিয়নদের ট্রফির পাশাপাশি নগদ ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার হিসেবে তুলে দেওয়া হয়। একই সাথে রানার আপদের দেওয়া হয় ট্রফিসহ নগদ ৪০ হাজার টাকা।
এছাড়া সেরা বোলারকে ৫ হাজার, সেরা ব্যাটসম্যানকে ৫ হাজার ও ম্যান অব দ্যা সিরিজকে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়া হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মরহুম আব্দুস সালাম স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে ১২ টি দল নিয়ে জমকালো আয়োজন মধ্য দিয়ে ডে-নাইট সার্কেল ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট গতকাল ২৫ জানুয়ারি শনিবার রাতে উদ্বোধন হয়েছে।
ফুলবাড়িয়া মাঠে ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ তৈমুর।
মরহুম আব্দুস সালাম স্মৃতি পরিষদের পরিচালক তারেকুল ইসলাম তারেকের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, ড. আব্দুল মতিন সেলিম।
আমন্ত্রিত অতিথিরা বলেন, দেশের নবীন তরুণ যুব সমাজকে খেলাধুলাতে বেশি বেশি অংশগ্রহণ করতে হবে। তাহলে যুব সমাজ মাদক থেকে মুক্ত থাকবে। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই। প্রতিটি মানুষকে মাদকবিরোধী সোচ্চার হতে হবে। যুব সমাজ হচ্ছে আগামী দিনের ভবিষ্যত। মাদক থেকে সকলকে দূরে থাকতে হবে। এ আয়োজনকে অতিথিরা সাধুবাদ জানিয়েছেন।
এ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট আরো উপস্থিত ছিলেন, বিলাল উদ্দিন, সুমন মিয়া, মো. তুহিন, মো. রানা, সবুজ মিয়া, মোঃ নাসিম, আরাফাত মিয়া, ওসমান গণি, শেখ আশিকুর রহমান পিয়াস ও মো. উৎস প্রমুখ। উদ্বোধনীয় খেলায় উত্তর শেরপুর যুব সংঘের সাথে কুটি ইউনিয়ন একাদশ মুখোমুখি হন।
কুটি ইউনিয়ন প্রথমে ব্যাট করে উত্তর শেরপুর যুব সংঘকে ৬৭ রানের টার্গেট দিলে তারা ব্যাট করে ৮ উইকেটে জয় লাভ করে। এ টুর্ণামেন্টে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ১২টি দল অংশগ্রহণ করবেন।
অনলাইন ডেস্ক :
বিপিএলের প্রথম কোয়ালিফায়ারে চিটাগাং কিংসকে ৯ উইকেটে হারিয়ে সবার আগে ফাইনালে উঠলো ফরচুন বরিশাল। ১৪৯ রানের জবাবে খেলতে নেমে ১৭.২ ওভারে এক উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় তামিম ইকবালের দল। আজ ৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ ওভার ৩ বলে দলীয় ৩৪ রানে ৪ উইকেট হারায় চিটাগাং। কাইল মায়ার্সের করা ইনিংসের প্রথম বলে ৪ মারার পর দ্বিতীয় বলেই বোল্ড হন পাকিস্তানি ব্যাটার খাওয়াজা নাফে। তৃতীয় ওভারে গ্রাহাম ক্লার্ককেও ফেরান মায়ার্স। চতুর্থ ওভারে মোহাম্মদ আলীর শিকার হয়ে আউট হন অধিনায়ক মোহাম্মদ মিথুন। ক্রিজে থিতু হতে পারেননি হায়দার আলীও। ৭ রান করে ফেরেন ইবাদত হোসেনের বলে।
শুরুর সেই বিপর্যয়ের পর দ্রুতই হাল ধরেন পারভেজ হোসেন ইমন ও শামীম হোসেন পাটোয়ারী। পঞ্চম উইকেটে ৪৮ বলে ৭৭ রানের জুটি গড়েন তারা। চতুর্দশ ওভারে রিশাদ হোসেনের শিকার হয়ে ইমন ফিরলে ভাঙে সে জুটি। ৩৬ বলে ৩৬ রান করে আউট হয়েছেন ইমন।
ইমনের বিদায়ের পর একাই লড়াই করেছেন শামীম। দলীয় ১৪৪ রানে মোহাম্মদ আলীর বলে রিভার্স স্কুপ করতে গিয়ে ইবাদত হোসেনের হাতে ক্যাচ দেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। প্যাভিলিয়নে ফেরত যাওয়ার আগে ৪ ছক্কা ও ৯ চারে ৪৭ বলে ৭৯ রানের ইনিংস খেলে গেছেন তিনি। চিটাগাং কিংসের হয়ে এদিন ৫ উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ আলী। এর চারটি উইকেট নিয়েছেন ১৯তম ওভারে। দুই উইকেট পেয়েছেন কাইল মায়ার্স। একটি করে উইকেট পেয়েছেন ইবাদত হোসেন ও রিশাদ হোসেন।
জবাবে খেলতে নেমে ভালোভাবেই শুরু করে বরিশাল। দলীয় ৫৫ রানে তামিমের উইকেটের পতন হয়। তিনি ২৯ রানে আউট হন। পরে বাকি পথ ডেভিড মালানকে নিয়ে পারি দেন আরেক ওপেনার তাওহীদ হৃদয়। ৮২ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। আর মালান ৩৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।
স্পোর্টস ডেস্ক :
ফুটবল ইতিহাসে একমাত্র দল হিসেবে টানা তিনটি বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছে স্পেন। তাদের সে রেকর্ডে ভাগ বসানোর পথে শেষ ধাপে এসে পৌঁছাল আর্জেন্টিনা। কোপা আমেরিকায় ফাইনালের এই ধাপটা এখন পাড়ি দিতে পারলেই স্পেনের অনন্য সেই কীর্তিতে উচ্চারিত হবে লিওনেল মেসি-আনহেল দি মারিয়াদের নামও। আর্জেন্টিনা তা পারবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে।
কানাডার বিপক্ষে জয়টা প্রত্যাশিতই ছিল। মাঠের পারফরম্যান্সেও দেখা গেল দাপুটে আর্জেন্টিনার পুরো চিত্র। স্কোরলাইন যদিও বলছে আর্জেন্টিনা ম্যাচ জিতেছে ২-০ গোলের ব্যবধানে। তবে নব্বই মিনিটের খেলায় আলবিসেলেস্তেরা ছিল আরও বেশি পরিণত। কোপা আমেরিকা এবং বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা খেললেন চ্যাম্পিয়নদের মতোই। তাতে টানা দ্বিতীয়বার এবং শেষ আট কোপায় ৬ষ্ঠবার ফাইনালে চলে গেল আর্জেন্টিনা।
২০১৫ সাল থেকেই কোপা আমেরিকার ফাইনালে নিয়মিত মুখ আর্জেন্টিনা। মাঝে বাদ গিয়েছিল শুধু ২০১৯ সালের কোপা আমেরিকা। যেবারে সেমিফাইনালে ব্রাজিলের কাছে হেরে সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল আলবিসেলেস্তেদের। এরপর ২০২১ সালে শিরোপাটাই জয় করে তারা। এবার তাদের সামনে সুযোগ টানা দুইবার কোপা আমেরিকা জয়ের। যে জয় পেলে ফুটবলের বিরল এক রেকর্ডে নাম উঠবে আর্জেন্টিনার।
দুই মহাদেশীয় আসর আর এক বিশ্বকাপ টানা জয়ের কীর্তি এর আগে আছে কেবল স্পেনের। ২০০৮ সালের ইউরো, ২০১০ বিশ্বকাপ এবং ২০১২ সালের ইউরো জয় করেছিল স্পেন। এবার সেই সুযোগ আর্জেন্টিনার সামনে। আগামীকালের উরুগুয়ে ও কলম্বিয়া ম্যাচের জয়ী দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোরে ফাইনালে নামবে লিওনেল মেসির দল।
ম্যাচের প্রথমদিকে অবশ্য খানিক ভুগতে হয়েছে মেসিদের। কানাডার আক্রমণ এদিন শুরুতে বারবার বিব্রত করেছে আর্জেন্টিনাকে। যদিও ম্যাচে ফিরে আসতে ২০ মিনিটের বেশি সময় নেয়নি কোপার বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ২১ মিনিটেই পেয়ে যায় নিজেদের প্রথম গোল। মাঝমাঠ থেকে রদ্রিগো ডি পলের লম্বা পাস। সেটা ধরে এক ডিফেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে স্কোরশিটে নাম তুললেন হুলিয়ান আলভারেজ। দিয়েগো ফোরলান, রোমারিও ও মেসির পর চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে কোপা আমেরিকা ও বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে গোল করলেন আর্জেন্টাইন নাম্বার নাইন।
ডি মারিয়া এদিন ছিলেন ডানপ্রান্তে। ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসে আরও একবার দেখা গেল মেসির সঙ্গে তার দুর্দান্ত বোঝাপড়া। দুজনের রসায়নে পুরো আসরের তুলনায় মেসি ছিলেন আরও বেশি উজ্জ্বল। ম্যাচের ৪৪ মিনিটে গোল পেয়েও যেতে পারতেন। এক ডিফেন্ডারকে ডামি করে গোলমুখে শট নিয়েছিলেন। অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় সেটা।
ম্যাচের ৫১ মিনিটে নিজের কাঙ্ক্ষিত গোল পেয়ে যান লিওনেল মেসি। জটলার মাঝে এনজো ফার্নান্দেজের শটে পা ছুঁইয়ে বলের দিক পরিবর্তন করেন লা পুলগা। বল জড়ায় জালে। অফসাইডের অভিযোগ ছিল। তবে কানাডার রক্ষণের এক খেলোয়াড় ডিফেন্স লাইনের অনেকটাই নিচে ছিলেন। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি বাতিল করেন অফসাইডের আবেদন। এই গোলের সুবাদে বেশকিছু রেকর্ডও নিজের করেছেন মেসি।
ব্রাজিলের জিজিনিয়োর পর দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে ৬টি ভিন্ন ভিন্ন কোপায় গোল পেয়েছেন এলএমটেন। এছাড়া নিজের ১৮৬তম ম্যাচে এসে পেয়েছেন ১০৯তম আন্তর্জাতিক গোল। ইরানের আলী দাঈয়ের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশি গোলের টালিতে দুইয়ে আছেন মেসি। আর এক গোল পেলেই ছাড়িয়ে যাবেন তাকে।
দুই গোল ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার পরও অবশ্য হাল ছাড়েনি কানাডা। যদিও ৬৮ মিনিটে পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে পড়ে তাদের। পায়ের চোটে মাঠ ছাড়েন কানাডা তারকা আলফোন্সো ডেভিস। ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে এসে গোলের সুযোগটাও পেয়ে যায় তারা। ৮৯ মিনিটে তানি ওলুয়াসারির বক্সের মাথা থেকে নেওয়া শট দুর্দান্তভাবে পা দিয়ে ঠেকান আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজ।
সবশেষ ১০ বছরে আর্জেন্টিনা খেলবে তাদের ৬ষ্ঠ মেজর ফাইনাল। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপের পর ৩ বিশ্বকাপের মাঝে দুবার। আর ২০১৯ ব্যতীত ৪র্থ কোপা আমেরিকার ফাইনাল খেলতে নামবে আর্জেন্টাইনরা। সবশেষ ৩ বছরে দুর্দান্ত সাফল্য পাওয়া দলটার সামনে তাই এখন ইতিহাস গড়ার হাতছানি।
স্পোটর্স ডেস্ক :
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে উঠল আফগানিস্তান। শান্ত বাহিনীকে ৮ রানে হারিয়েছে রশিদ-নবিরা। নাটকে ভরা ম্যাচটি। শেষে বাংলাদেশের জন্য জমা হলো হতাশা, যেন বরাবরের মতোই। সেমিফাইনালে যাওয়ার সমীকরণ মেলানোর মতো ব্যাটই করছিল বাংলাদেশ, কিন্তু হুট করে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এসে থামিয়ে দিলেন ওই চেষ্টা। পরে ম্যাচই হারতে হলো। এর আগে বোলাররা করেছিলেন দুর্দান্ত।
আজ ২৫ জুন মঙ্গলবার আর্নেস ভ্যাল স্টেডিয়ামে বৃষ্টি আইনে আফগানিস্তানের কাছে ৮ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান করে আফগানিস্তান। পরে ওই রান তাড়া করতে নেমে ১০৫ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে ১২ ওভার ১ বলে জিততে পারলে সেমিফাইনালে যেতো তারা।
কিন্তু জয় তুলে নিয়ে বাংলাদেশের জয়ের অপেক্ষায় থাকা আরেক দল অস্ট্রেলিয়াকে বিদায় করে সেমিতে চলে গেছে আফগানরা। এবারই প্রথম এমন কীর্তি গড়লো তারা। সেমিফাইনালে ২৭ জুন দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে আফগানিস্তান। একই দিনে অন্য সেমিতে ভারতের মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড।
টস হেরে বাংলাদেশের হয়ে বোলিংয়ের শুরুটা করেন তানজিম হাসান সাকিব। প্রথম ওভারে ৩ রান দেন তিনি। পরের ওভারে তাসকিন আহমেদ দেন দুই রান। এই দুজনের করা প্রথম চার ওভারে আসে ২১ রান।
পঞ্চম ওভারে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে আসেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সাফল্যও প্রায় এনে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার করা তৃতীয় বলে ইবরাহিম জাদরানের ক্যাচ ছেড়ে দেন তাওহীদ হৃদয়। শর্ট কাভারে দাঁড়িয়ে থাকা তার কাছে বল গিয়েছিল বেশ দ্রুত। হাতে জমিয়ে রাখতে পারেনননি হৃদয়।
পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ২৭ রান তুলতে পারেন দুই ওপেনার। এরপরও অবশ্য থামেননি তারা। ১০ ওভারে ৫৮ রান তুলে চায়ের বিরতিতে যায় আফগানিস্তান। ফেরার পরই অবশ্য তারা হারিয়ে ফেলে উইকেট। লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনকে এনেই সফল হন শান্ত।
১৮ বলে ২৯ রান করে রিশাদের বলে তানজিম হাসান সাকিবের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরত গেছেন ইবরাহিম জাদরানের। অনেকটুকু দৌড়ে এসে ক্যাচ নেন তানজিম। আগে থেকেই চাপে থাকা আফগানিস্তান খেই হারায় উইকেট হারানোর পর।
ইবরাহিম ফেরার পরের ওভারে এসে মেডেন দেন তাসকিন আহমেদ। রিশাদ নিজের তৃতীয় ওভারে এসে দুটি চার হজম করেন। তবে আরও একবার ম্যাচের মোড় ঘুরে এই লেগ স্পিনারের হাত ধরেই। অবশ্য গুরবাজের সঙ্গে গড়ে উঠা আজমতউল্লাহর জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান।
তার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ নেন লিটন দাস। শুরুতে আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। ১২ বলে ১০ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় আজমতউল্লাহকে। ১৭তম ওভার করতে এসে দুই উইকেট তুলে নেন রিশাদ। দুটিতেই ক্যাচ নেন সৌম্য সরকার।
তার করা অনেক বাইরের বলে তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে পৌঁছাতে পারেননি গুরবাজ। ৫৫ বলে ৪৩ রান করে আউট হন তিনি। তার করা চতুর্থ বলে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন সৌম্য। এবার ৩ বলে ৪ রান করে সাজঘরে ফেরত যান গুলবাদিন নাইব।
পরের ওভারে এসে মোহাম্মদ নবীকেও আউট করেন তাসকিন। এই ওভারে টানা পাঁচটি ডট বল করে শেষটিতে ছক্কা হজম করেন তাসকিন। ১৯তম ওভারে মোস্তাফিজ দেন এক রান। কিন্তু তানজিম সাকিবের করা শেষ ওভারে ১৫ রান নেন রশিদ খান। ইনিংসের শেষে বৃষ্টি এলেও সেটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।
রান তাড়ায় নেমে সেমিতে উঠার সমীকরণ মেলানোর লড়াইয়ে নামে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই আসে ১৩ রান। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারে গিয়েই হারিয়ে ফেলে উইকেট। ৩ বলে শূন্য রানে নাভিন উল হকের বলে এলবিডব্লিউ হন তানজিদ হাসান তামিম। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি।
পরের ওভারে আরও কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ে বাংলাদেশ। টানা দুই বলে আউট হয়ে যান নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসান। ৫ বলে ৫ রান করে ডিপ মিডউইকেটে মোহাম্মদ নবীর হাতে ক্যাচ দেন শান্ত। নাভিন উল হকের পরের বলে তার হাতেই ক্যাচ দেন সাকিব আল হাসান। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগালেও সেটি করতে পারেননি নাভিন।
মাঝে বৃষ্টিতে বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়। তবে বাংলাদেশের সেমির সমীকরণ মেলানোর চেষ্টা অব্যাহত থাকে। সৌম্য সরকারের সঙ্গে লিটন দাসের জুটিও লম্বা হতে দেননি রশিদ খান। ১০ বলে ১০ রান করা সৌম্যকে বোল্ড করেন তিনি।
এরপরও উইকেটে এসে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তাওহীদ হৃদয়। তারও ব্যাটে ঠিকঠাক টাইমিং হচ্ছিল না, তবুও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ৯ বলে ১৪ রান করে হৃদয় আউট রশিদ খানের বলে বাউন্ডারির কাছে ক্যাচ দিয়ে।
তার আউটের পরই হুট করে বাংলাদেশের ইনেন্ট বদলে যায়। নূর আহমেদের ১০ম ওভারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ পাঁচটি ডট দেন, হাঁকান কেবল একটি বাউন্ডারি! এমনকি তার মধ্যে কতটা চেষ্টা ছিল, প্রশ্ন উঠতে পারে সেটি নিয়েও।
এরপরের ওভারে আসেন রশিদ খান। বাংলাদেশের সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনার শেষ তো বটেই, ম্যাচ হারের শঙ্কাও ভর করে এই ওভারে। পঞ্চম বলে রিয়াদের ব্যাট ছুয়ে উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ ইশহাকের হাতে যায়। আম্পায়ার আউট দেননি। পরে বদলি ইশহাকের কথায় রিভিউ নিয়ে সফল হয়ে যান রশিদ। পরের বলেই রিশাদ হয়ে যান বোল্ড।
বৃষ্টিতে এক ওভার কমে আস ম্যাচের দৈর্ঘ্য। একপ্রান্তে যখন উইকেট পড়ছে, তখন আরেকদিকে বাংলাদেশের জন্য ভরসা হয়ে থাকেন লিটন। তার দিকে তখন তাকিয়ে ছিল অস্ট্রেলিয়াও। কারণ বাংলাদেশ জিতলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হতো তাদের।
কিন্তু লিটন আর স্ট্রাইকেই আসতে পারেননি। ১৮তম ওভারে তাসকিনকে বোল্ড করার পরের বলেই এলবিডব্লিউ হন মোস্তাফিজুর রহমান। উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো আফগানিস্তানের ডাগ আউট। কারো চোখে দেখা মেলে জলেরও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
আফগানিস্তান : ২০ ওভার ১১৫/৫
বাংলাদেশ : ১৭.৫ ওভার ১০৫
ফল : আফগানিস্তান বৃষ্টি আইনে ৮ রানে জয়ী ।