জায়েদুল কবির ভাঙ্গি, গাজীপুর :
পুরান ঢাকার বংশালের বাসিন্দা ইসহাক সরকার। তিনি জানান, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় তার বিরুদ্ধে ৩৬৫টি মামলা হয়েছে এবং প্রায় ১০ বছর বিভিন্ন সময়ে কারাবন্দী ছিলেন।
বিএনপির বিগত আন্দোলন গুলোতে ইসহাক সরকারের ভূমিকা ছিল মাঠে সরব। দিনের পর দিন তিনি রাস্তায় আন্দোলন চালিয়েছেন। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ত্যাগী ছাত্রনেতা ইসহাক সরকারের ফেরারী জীবন চিত্র নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল।
তিনি আরো জানান, পুরান ঢাকায় একটি লিজকৃত সম্পত্তি, যা একসময় আওয়ামী লীগ নেতা হাজী সেলিম দখল করেছিল, সেটি তিনি পুনরুদ্ধার করেন এবং এর আয়ে তিনি দলের নিখোঁজ-নিহত নেতাকর্মীদের পরিবারকে সহায়তা করেন।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, ‘‘৯৬ সালের শেষের দিকে ঘটনা। বরিশাল জেলা সফরের উদ্দেশে সদরঘাটের দিকে আসছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। তখন কয়েক শতাধিক কর্মী সমেত মিছিল- শ্লোগানে সদর এলাকা মুখর করে তোলেন ৩৪নং ওয়ার্ডের ছাত্রদল নেতা ইসহাক সরকার। পাশেই গাড়িতে বসেছিলেন তৎকালীন ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি প্রয়াত নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু। মধ্যরাতে এতো বড় শোডাউন দেখে ইসহাক সরকারকে কাছে ডাকেন তিনি। জিজ্ঞেস করেন নাম-পরিচয়। অনুরোধ করেন নয়াপল্টন কার্যালয়ে যাওয়ার। পরের দিনই হাজির হন নয়াপল্টনে। রাজনীতির প্রতি আগ্রহ দেখে তাৎক্ষণিকভাবেই তাকে কোতোয়ালি থানার দায়িত্ব দেন পিন্টু। এরপর থেকেই তার বিরুদ্ধে ঝড়ের গতি দায়ের হয় মামলা। শুরু হয় কারাগার আর ফেরারী জীবন। তার জন্য নির্যাতিত হয় পরিবারের অন্য সদস্যরাও। তবুও পিছু হটেননি। ছাড়েননি রাজনীতি। শত নির্যাতনেও তিনিছিলেন অবিচল। ওয়ার্ড থেকে থানার দায়িত্ব পেয়েই নেমে পড়েন রাজপথে। নিয়মিত অংশ নিতেন মিছিল-মিটিংয়ে। আধাবেলা হরতাল দিলে পুরান ঢাকায় পালন করতেন রাত পর্যন্ত। ৯৮ সালে রমনা পার্কে ছাত্রদলের কর্মসূচিতে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। ওই কর্মসূচিতে শতাধিক ছাত্রদল কর্মী নিয়ে অংশ নেন তিনি। মিছিল নিয়ে মৎস্য ভবনের মোড় আসতেই ৩৬ জন কর্মীসহ তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। থানা হাজতে খালি গায়ে তাদের বসিয়ে রাখা হয়। পরদিন তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ছোটভাই খাবার দিতে গেলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। দেড় মাস পর জামিনে মুক্তি পান তিনি।
এক রনাঙ্গনের বীর যোদ্ধার রাজনৈতিক জীবন : বিগত সময় থেকে স্বৈরাচারী ও বাকশালী সরকারের বিরুদ্ধে সবসময় প্রতিবাদ করে আসছেন রাজপথের আলোচিত নেতা ও আন্দোলন সংগ্রামের অগ্নিপুরুষ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এর সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদল এর সাবেক সংগ্রামী সভাপতি ইসহাক সরকার।
ওয়ান ইলেভেন এর কঠিন সময়েরও অনেক আগে থেকে রাজপথে লড়াইকরে আসছেন এই অগ্নিপুরুষ। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে তাঁকে বহুবার হতে হয়েছে কারা-নির্যাতিত। বিগত হাসিনা সরকারের (১৯৯৬-২০০১) আন্দোলনে দেশের তৎকালীন ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৫২ মামলায় ৩ বছর কারাবন্দী ছিলেন তারই বড় ভাই আন্দোলন সংগ্রামের সাহসী নেতা “ইয়াকুব সরকার”। রাজপথের বীর নেতা, আড়াইশোর বেশি অর্থাৎ ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসে সর্বাধিক মিথ্যামামলার আসামী “ইসহাক সরকার”।
যার জীবনের অনেকটা সময়ই কেটেছে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে। কারাগারে থাকা অবস্থায় তাকে পিতৃবিয়োগের শোক সংবরণ করতে হয়েছে। আরেক ভাই “ইসমাইল সরকার” যিনি রাজনীতি না করেও ৬০ মামলায় এখন পর্যন্ত ৪ বার কারাবরণ করেছেন। “ইসমাইল” নামের পিছনে শুধুমাত্র সরকার নাম থাকার কারণে তাকে রাজনীতি না করেই হাসিনা বাহিনীর নোংরা ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে।
এই বীরযোদ্ধার; আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটকের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস পাঠকের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছিঃ
১৯৯৬ সালের ২৭ এপ্রিল রাজধানীর রমনা পার্ক থেকে প্রথমবারের মতো আটক হন ইসহাক সরকার। ছাত্রদলের তৎকালীন সভাপতি শহিদউদ্দিন চৌধুরী এনি ও ইসহাক সরকারসহ ছাত্রদলের ৩৪ নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। যার মধ্যে ২২ জনই ছিলেন কোতয়ালি থানা ছাত্রদলের নেতাকর্মী। আটককৃতদের পুলিশ কন্ট্রোল রুমের খোলা মাঠে সারাদিন খালি গায়ে রাখা হয়। পরদিন বাংলাদেশের গণমাধ্যমসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রধান শিরোনাম হয়ঃ ÒTorture on Dhaka University students under police custodz; Sheikh Hasina style”
১৯৯৯ সালে হরতাল চলাকালেবংশাল বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পিকেটিং করার সময় দ্বিতীয়বারের মতো আটক হয় ইসহাক সরকার। ১৭টি মামলা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয় ইসহাককে। কোতয়ালি থানায় রিমান্ডে থাকাকালীন সময়ে খাবার দিতে এসে পুলিশের হাতে আটক হয় তারই সহোদর ইসমাইল সরকার (১৭) ও তাঁর সহযোগী নীরব। ৪ মাস পর জেল থেকে মুক্তি পান ইসহাক সরকার। সেই একই বছরের শেষ দিকে বংশাল বিএনপি কার্যালয়ের ভেতর থেকে ইসহাক সরকার কে পুনরায় আটক করে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ! ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসে প্রথম বারের মতো ১০৭ মামলায় গ্রেফতার হয়ে দেড় বছর কারাবরণ করেন তিনি। কারাগারে থাকাকালীন সময়ে তাঁর বাবার মৃত্যু হলে ৪ ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি নিয়ে বাবার জানাযা ও দাফনে অংশ নিয়ে আবার কারাগারে গমন করেন তিনি।
বাবার জানাযায় ডান্ডা-বেড়ি পরে পুলিশের সাথে অংশ নিতে আসলে, তাঁকে এক নজর দেখার জন্য হাজার হাজার জনতার ঢল নামে। যা পুরাতন ঢাকায় ব্যাপক আলোচিত হয়।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ইসহাক সরকারের মুক্তি কামনা করে বলেনঃ “কারাগারে থাকা অবস্থায় কিছুদিন পূর্বে ইসহাকের পিতার মৃত্যু হয় কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে তাঁকে পিতৃ বিয়োগের শোক সংবরন করতে হচ্ছে। আমি অবিলম্বে ইসহাকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাই।” সব মামলায় জামিনের পর এক এক করে ৫টি নতুন মামলায় কারাগেট থেকে পুনরায় গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। ১০৭ মামলায় কারাগারে থাকার সময় বিএনপির “ঢাকা টু পঞ্চগড়” লংমার্চের ২২ জন ও পথসভায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন “আমার ২৫ বছর বয়সের ছাত্রনেতা ইসহাক সরকারকে ১০৭টি মামলা দেওয়া হয়েছে। এটা ইতিহাসে নজিরবিহীন।”
এরই প্রেক্ষিতে “আর কাউকে জেলগেট থেকে গ্রেফতার করা যাবেনা”-হাইকোর্টের এমন আদেশের পর মুক্তি পান ইসহাক সরকার। কারাগারে থাকার সময় আন্দোলন করতে গিয়ে নিহত হন ইসহাক সরকারের ঘনিষ্ট বন্ধু ও সহচর মামুন, নিরব ও সামসু। এছাড়াও ছাত্রদল কর্মী রুবেল, ওমর ফারুক ও সালাম আন্দোলনে নিহত হন। ইসহাক যখন ১০৭ মামলায় কারাগারে, ঠিক তখনি ২৫টি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রাজনীতি না করা ছোট ভাই ইসমাইল সরকারকে দ্বিতীয় বারের মতো কারাগারে প্রেরণ করা হয়। দুই ছেলে জেলে থাকাকালীন সময়ে তাঁদের মাকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আমন্ত্রনে তাঁর বাড়িতে সাক্ষাত করতে যান গর্বিত সেই মা জননী। ২০০০ সালের প্রথম দিকে ইসমাইল সরকার কে ৩০টি মামলায় আবার গ্রেফতার দেখানো হয়। ২০০৯ সালে হাসিনা সরকার যখন আবার ক্ষমতায় আসে তখন এই বীর পরিবারের উপর নির্যাতনের “নীলনকশা” তৈরি করা হয়। আবার শুরু করে অত্যাচার-নির্যাতন। শুরু হয় আবার একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার নগ্ন পরিকল্পনা। ইসহাক সরকার এর উপর দায়ের করা হয় একের পর এক মিথ্যা মামলা।
এ ব্যাপারে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সরকারের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে সংসদে দাড়িয়ে বলেনঃ “ইসহাকের উচিত কোর্টের পাশেই ঘর বানিয়ে থাকার। যেন সকাল হলেই কোর্টে গিয়ে হাজিরা দিতে কষ্ট না হয়।” জীবনের ব্যাপক ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও প্রশাসন ও লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন এই বীরযোদ্ধা। পরিবার ও আত্মীয় স্বজন থেকে অনেক দূরে থাকতে হচ্ছে তাঁকে। এই বীরের আন্দোলন থামাতে ব্যর্থ হয়ে স্বৈরাচার সরকারের দালাল তৎকালীন লালবাগ জোনের পুলিশ কমিশনার হারুন-উর-রশিদ কাপুরুষের মতো সবসময় সরগরম হয়ে থাকা বংশাল বিএনপির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে পুলিশ মোতায়েন করে রাখে। এতো ষড়যন্ত্রের শিকার হওয়ার পরেও অন্যায়ের সাথে আপোষতো দূরের কথা বরং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা থেকে বিন্দুমাত্র বিচলিত হননি এই বীর রণাঙ্গনের যোদ্ধা। অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তাঁদের পরিবারের উপরও চলেছে জালিম হাসিনার পোষা হায়েনালীগ ও তাদের দোসর প্রশাসনের নির্মম বর্বরতা ও নির্যাতন। তাঁদের বাসায় কখনো নিক্ষেপ করা হয় সাউন্ড গ্রেনেড। আবার কখনো করা হয় গুলিবর্ষণ। কিংবা বাসায় তালা ঝুলিয়ে গৃহবন্দী করে রাখা হয় তাঁদের পরিবারের অন্য সদস্যদের। হামলা ও ভাংচুর তো এখন নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানেই শেষ নয় ২০১৩ সালে সরকার বিরোধী আন্দোলন এর সময় একই সাথে ৯ জন কে গুম করা হয় যারা ছিলেন সোহেল চাচা, জহির, পারভেজ, চঞ্চল, সহ ইসহাক সরকার এর হাতে গড়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদল এর সাহসী নেতা কর্মীরা এবং এরই প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ১৮ জুন মঙ্গলবার বিশ্ববিখ্যাত ইংরেজি পত্রিকা দ্যা গার্ডিয়ান তাদের বিশ্বরাজনৈতিক পাতায় ইসহাক সরকারের প্রতিবাদমুখর এক আলোকচিত্র দিয়ে তৈরি করে তাদের মূল প্রচ্ছদ ও প্রতিবেদন! সবশেষে তাঁর গণতন্ত্রের মুক্তির আন্দোলনের অগ্রযাত্রা রুখতে তাঁর নাম নথিভুক্ত করা হয় র্যাব এর ক্রসফায়ার তালিকায়! এতোসব নির্মম নির্যাতনের পরও গণতন্ত্রের স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে যাচ্ছেন তৃণমূল ছাত্রদলের প্রাণপ্রিয় নেতা ইসহাক সরকার।
চলারপথে রিপোর্ট :
পদ্মা সেতুতে এক দিনে রেকর্ড ৪ কোটি ৬০ লাখ ৫৩ হাজার ৩০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে। এ সময় যানবাহন পারাপার হয়েছে ৪৩ হাজার ১৩৭টি। সোমবার রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত এই পরিমাণ টোল আদায় হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পদ্মা সেতু সাইড অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক আমিরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি জানান, মাওয়াপ্রান্তে ২ কোটি ৬৯ লাখ ৫৩ হাজার ৯৫০ টাকা ও জাজিরাপ্রান্তে ১ কোটি ৯০ লাখ ৯৯ হাজার ৩৫০ টাকা টোল আদায় হয়েছে। এর আগে সর্বোচ্চ ৪ কোটি ১৯ লাখ ৩৯ হাজার ৬৫০ টাকা টোল আদায় হয়েছিল স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে।
আমিরুল ইসলাম আরো জানান, পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচল শুরুর পর থেকে মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত ৮০৯ কোটি ৭৮ লাখ ৪০ হাজার ২৫০ টাকার টোল আদায় করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৫৭ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৮ টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
চুনারুঘাট উপজেলার লক্ষীপুর বাজারে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৮টি দোকান ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আর এতে করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দোকান মালিকদের। আজ ১৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার দুপুরে লক্ষীপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ততক্ষণে দোকানে থাকা বেশিরভাগ মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, লক্ষীপুর বাজারে একটি দোকান ঘরে হঠাৎ করেই আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পান তারা। পরে তা আশপাশের দোকানগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় স্থানীয়রা জগ, মগ ও বালতির পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও আগুনের লেলিহান শিখা বাড়তেই থাকে। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ততক্ষণে আগুনে পুড়ে যায় অন্তত ৮টি দোকানের মালামাল। দোকান মালিকদের দাবি আগুনে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাদের। যদিও আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে জানা যায়নি। তবে ব্যবসায়ীদের ধারণা বৈদ্যুতিক সর্টশার্কিট থেকে সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে।
চুনারুঘাট থানার (ওসি) মোঃ রাশেদুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
চলারপথে ডেস্ক :
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আজ ২৯ এপ্রিল শনিবার বিকেলে হাসপাতালে যাবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
দলের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ হিসেবে বিকেল তিনটায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে যাবেন।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। অসুস্থতা বাড়লে মাঝেমধ্যে তাকে হাপাতালে নিতে হচ্ছে।
দুই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া কারাবন্দি ছিলেন। নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত রয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর খালেদাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর এই মামলায় আপিলে তার আরো পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট।
একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন একই আদালত। রায়ে সাত বছরের কারাদণ্ড ছাড়াও খালেদা জিয়াকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারি শুরু হলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে সরকার শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়। এরপর পরিবারের আবেদনে দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ ছয়বার বাড়ানো হয়। সর্বশেষ দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ গত ২৪ মার্চ শেষ হয়। এর আগেই খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছিল।
তার পরিপ্রেক্ষিতে আবারও তার মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানো হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পাওয়ার পর গত ১৯ মার্চ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনে অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের ২৩ জন পরিচালক বেছে নিতে ভোট দিয়েছেন সাধারণ সদস্যরা। চেম্বার গ্রুপে ২৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ভোট হয়েছে কেবল অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের ২৩টি পদে।
আজ ৩১ জুলাই সোমবার সকাল ৯টা থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হয় ভোটগ্রহণ, বিরতিহীন চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
এফবিসিসিআই পরিচালনা পর্ষদের মোট ৮০ জন পরিচালকের মধ্যে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে ১৭ জন করে মোট ৩৪ জন পরিচালক হিসেবে ইতোমধ্যে মনোনীত হয়েছেন।
এর বাইরে জেলা চেম্বার গ্রুপে ২৩ জন এবং খাতভিত্তিক অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপে ২৩টি পদে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চেম্বার গ্রুপের ২৩টি পদের বিপরীতে ২৩টি মনোনয়ন পত্র জমা পড়ায় তারা বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
সে কারণে সোমবার ভোট হচ্ছে কেবল অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের ২৩টি পদে, যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ৪৯ জন।
এর মধ্যে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ প্যানেল থেকে ২৩ জন, সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ প্যানেল থেকে ২৩ জন এবং ৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯৯০ জন। সোমবার কেবল তারাই ভোট দিতে পেরেছেন।
নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান এ মতিন চৌধুরী বলেন, দুপুর পর্যন্ত বেশ সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ চলছে। কেউ কোনো ধরনের অনিয়মের অভিযোগ তোলেননি। ৮/১০ জন ভোটারের বিষয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ আমাদের হাতে এসেছে। আমরা কোর্টের নির্দেশনা ও বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি।
ভোট গণনা করে ২০২৩-২০২৫ মেয়াদের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচিত পরিচালকদের নাম ঘোষণা করা হবে।
নির্বাচিত পরিচালকদের ভোটে ২ আগস্ট এফবিসিসিআই সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ছয়জন সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত হবেন।
২০২১ সালে পদের সমান প্রার্থী থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান পর্ষদের পরিচালকরা। সেই পর্ষদের মৌখিক সমর্থনেই জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে বর্তমান নেতৃত্ব গঠিত হয়েছিল।
আগামী দুই বছরের জন্য সম্ভাব্য সভাপতি হিসেবে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ব্যবসায়ী মাহবুব আলমকে সমর্থন দিচ্ছেন সালমান এফ রহমানসহ সাবেক সভাপতিরা।
মাহবুব আলমের প্যানেলের পাশাপাশি সাবেক সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমের নেতৃত্বে তরুণ ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ নামে আলাদা একটি প্যানেল রয়েছে।
শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, এ ধরনের নির্বাচন হলে সবার সঙ্গে সবার দেখা সাক্ষাৎ হয়। আশা করি, এ ধরনের নির্বাচন অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
৭ ডিসেম্বর নাসিরনগর হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। মুক্ত হয় নাসিরনগর উপজেলা। প্রতি বছরই এ দিনটিতে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে উপজেলা প্রশাসন। ১৯৭১ সালের ১৫ নভেম্বর পাক হানাদার বাহিনী নাসিরনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামবাসীর ওপর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। উপজেলার ফুলপুর, নুরপুর, কুলিকুন্ডা, সিংহগ্রাম ও তিলপাড়া গ্রামের নিরীহ সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার চালোনো হয়। বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়।
মুক্তিযোদ্ধা ও সংগ্রামী জনতা পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে আজকের দিনে নাসিরনগর থানা অভ্যন্তরে (পুলিশ স্টেশন) স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করে।