মাইলস্টোনের তিন শিক্ষক সাহসিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত: প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস

জাতীয়, 19 August 2025, 138 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরী, মাসুকা বেগম ও মাহফুজা খানম মানবতা ও সাহসিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে জাতির কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আজ ১৯ আগস্ট মঙ্গলবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিমান দুর্ঘটনায় নিহত তিন শিক্ষক পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতকালে তিনি এ কথা বলেন।

banner

এসময় উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরীর স্বামী মনসুর হেলাল, দুই ছেলে আদিল রশিদ ও আয়ান রশিদ, বোন মেহেতাজ চৌধুরী, ভাই মুনাফ মজিব চৌধুরী ও নিকট আত্মীয় কাওসার হোসেন চৌধুরী; শিক্ষক মাসুকা বেগমের বোন পাপড়ি রহমান ও ভগ্নিপতি খলিলুর রহমান এবং শিক্ষক মাহফুজা খাতুনের মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা, বোন মুরশিদা খাতুন, ভাগ্নে মো. মাইদুল ইসলাম ও নিকট আত্মীয় হুমায়ূন কবির।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বেশ কিছুদিন পার হলেও এই স্মৃতি এখনো সবার মধ্যে দগদগে হয়ে আছে। আমি ঘটনা জানামাত্রই আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আপনারা যে দুঃসময়ের মধ্যে ছিলেন, সেসময়ে দেখা করা সমীচীন হতো না। আমরা আপনাদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করতে পারি, কিন্তু এই দুঃসহ স্মৃতি মুছে দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। তবে এটুকু বলতে পারি, এ শোক আপনাদের একার নয়। জাতি হিসেবে আমরা এই শোককে ধারণ করি। এসময় তিন শিক্ষক পরিবারের কাছে তাঁদের স্মৃতিকথা শুনতে চান প্রধান উপদেষ্টা।

শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরীর স্বামী মনসুর হেলাল বলেন, তাঁকে যখন হাসপাতালে নেয়া হচ্ছিল তখন ফোনে আমার সাথে কথা হয়। সেদিন বার্ন ইনস্টিটিউটে যে দৃশ্য দেখেছি, তা ভাষায় বর্ণনা করার মতো নয়। জীবনে যেন কারো সেই অভিজ্ঞতা না হয়। তাঁকে দেখলাম, একপাশ পুরোটা পুড়ে গেছে। সেখানে (বার্ন ইনস্টিটিউট) কয়েকজন সামান্য দগ্ধ বাচ্চা চিকিৎসা নিতে নিতে বলল, “মিসই আমাদের টেনে টেনে বের করে আনল! মিস তো সুস্থ ছিল! এমন হলো কেন! তুমি বের হয়ে এলে না কেন? তোমার নিজের দুই সন্তানের কথা একবারও ভাবলে না?” সে আমাকে বলল, ওরাও তো আমার সন্তান। ওদের একা রেখে আমি কী করে চলে আসি?” পৃথিবীর সকল মানুষ ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে তার জন্য দোয়া করেছে। সবার জন্যই সে নিবেদিত প্রাণ ছিল।

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ২৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ১৪ই আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন শিক্ষক মাহফুজা খাতুন। মায়ের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা।

আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, মা অনেকখানি সুস্থ হয়ে উঠেছিল। আমি ভেবেছিলাম, মা’কে নিয়ে বাড়ি ফিরব। মা’কে যেদিন হুইলচেয়ারে বসাই সেদিন মনে হলো আমি বিশ্বজয় করেছি। মা ছাড়া একেকটা দিন আমার স্বপ্নের মতো মনে হয়। আমার তো বাবা নেই, এখন মাও চলে গেল। আমি এতিম হয়ে গেলাম। এখন পর্যন্ত নিজের বাসায় ফিরতে পারিনি। মা ছাড়া সে বাসায় ফিরব কী করে?

শিক্ষক মাসুকা বেগমের ভগ্নিপতি খলিলুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনায় আহত হয়ে অনেক দিন ধরেই তাঁর বোন অসুস্থ। চোখে কিছুটা কম দেখেন। মাসুকা সবসময় তাঁর বাবা ও বোনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত, তাঁদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চটুকু দেওয়ার চেষ্টা ছিল। বাবাকে নিয়মিত হাতখরচ পাঠাত। আমার ছেলে-মেয়েদের ও নিজের সন্তানের মতো মনে করত। প্রতিদিন তাঁদের সঙ্গে ওর কথা হতো। আমরা আর তার স্কুল—এই ছিল তাঁর জীবন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তাঁদের কথা শুনতে কষ্ট লাগে। একইসঙ্গে গর্ববোধ হয় যে আমাদের দেশে এমন নাগরিক আছে যারা অন্যের জীবন বাঁচাতে আগুনে ঝাঁপ দিয়েছে। মানবতার এই দৃষ্টান্ত তারা প্রমাণ করে গেছে। আমরা ক্ষুদ্র মানব ছিলাম, তারা আমাদের বড় করেছে। সবার ভেতরে নাড়া দিয়েছে। সবাই এটা নিজের মধ্যে অনুভব করেছে যে, “আমি যদি সেই অবস্থানে থাকতাম, আমি কী করতাম? আমি কি জীবনের পরোয়া না করে এভাবে ছোট শিশুদের প্রাণ বাঁচাতে আত্মবিসর্জন দিতাম?” এই প্রশ্ন সবার মনে এসেছে। এই শিক্ষকগণ আমাদের গর্ব, আমাদের আদর্শ। তাঁদের স্মৃতি আমাদের ধরে রাখতে হবে। এজন্য যা কিছু করা প্রয়োজন, আমাদের তা করব।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ প্রমুখ।

Leave a Reply

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১০জন…

অনলাইন ডেস্ক : মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও Read more

কানাডায় বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

মুমিনুল হক : কানাডার টরেন্টোতে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। Read more

নবীনগর মহাসড়কে ১২ কিলোমিটার যানজট

জাতীয়, 27 June 2023, 1157 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ঈদ উপলক্ষে সাভারের সড়কগুলোতে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। আজ ২৭ জুন মঙ্গলবার রাত ৮টার পর নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে চক্রবর্তী পর্যন্ত অন্তত ১২ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। যেখানে থেমে থেমে চলছে যানবাহন।

banner

এদিকে, অন্যবারের মতো এবারও যাত্রীদের অভিযোগ, গন্তব্যে পৌঁছাতে গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া।

আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের পোশাককারখানা ছুটি হওয়ায় বিকেলে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল এলাকায় জড়ো হন উত্তরবঙ্গের যাত্রীরা। পারিবার-পরিজন নিয়ে যাত্রীবাহী বাসে চড়েন কেউ কেউ। কেউ আবার বাস না পেয়ে চড়ে বসেছেন মালবাহী ট্রাকে। তাতেও গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।

শুধু বাইপাইল নয়, যানবাহনের দীর্ঘ সাড়ির সঙ্গে এমন চিত্র ছিল ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিন বাজার, হেমায়েতপুর, সাভার বাসস্ট্যান্ড, নবীনগর, নয়ারহাট আর আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কের আশুলিয়া, জিরাবো, জামগড়া পয়েন্টেও।

বগুড়াগামী যাত্রী ইলিয়াস রুমেল ও সামসুল জানান, সরকারের বেধে দেয়াও ভাড়া কেউ মানছে না। যে যেভাবে পারছে ভাড়া হাঁকাচ্ছে। অসহায় হয়ে পড়েছেন যাত্রীরা। কেউ কেউ ভাড়ার দাপটের কারণে ঝুঁকি নিয়ে চড়ে বসছেন ট্রাকে।

ঢাকার গাবতলী থেকে ছেড়ে আসা শ্যমলী পরিবহনের চালক শাহজালাল বলেন, রাজধানী থেকে বের হতে কিছুটা যানবাহনের চাপ ছিল। এছাড়া বাইপাইলে কিছুটা আর চন্দ্রা ঢুকতে যানবাহনের জটলায় পড়তে হয়েছে। তবে কোথাও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়নি।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সড়কগুলোর প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। শুধু তাই নয় কোথাও যানজটের খবর পেলেই মোবাইল টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন।

ঢাকা জেলা উত্তর ট্রাফিক ইনচার্জ (টিআই) জাহিদুল ইসলাম বলেন, সড়কের যানজট নিয়ন্ত্রণ রাখতে আমরা চেষ্টা করছি। বাড়তি ভাড়ার কেউ অভিযোগ করলে সেটা আমলে নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।

আমাদের ভোট চুরির প্রয়োজন হয় না : প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 1 January 2024, 810 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত আমরা ক্ষমতায় ছিলাম এবং আছি। আমাদের সময় ধারাবাহিকভাবে গণতন্ত্র অব্যাহত আছে। আমরা শিক্ষা, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান সব কিছুর জন্য কাজ করে মানুষের হৃদয় জয় করে তাদের ভোট পাই। আমাদের ভোট চুরির প্রয়োজন হয় না।

banner

আজ ১ জানুয়ারি সোমবার বিকেলে ঢাকায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। রাজধানীর ধানমণ্ডির কলাবাগান ক্রীড়া চক্র মাঠে জনসভাটি অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।

বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে তারা নির্বাচন বর্জন করছে, বর্জন করাটা খুব স্বাভাবিক।

ভোট চুরি করতে পারে না, নির্বাচন করবে না। কারণ এর আগে তো ভোট চুরি করে অভ্যস্ত, চুরি করা ভোট দিয়েই তো তাদের সৃষ্টি। ক্ষমতা দখল, ক্ষমতা চুরি, ভোট চুরি এ ছাড়া তো তারা আর কিছু পারে না। সে জন্য নির্বাচন করতে চায় না, নির্বাচন বানচাল করবে।’
শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া, নির্বাচন বন্ধ করার সাহস নেই। তবে তাদের অগ্নিসন্ত্রাসের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, এটা আমার কথা না, হাইকোর্টের আদেশ আছে, হাইকোর্টের রায় আছে যে ওই বিএনপি জিয়াউর রহমানের ক্ষমতা দখল অবৈধ, এরশাদের ক্ষমতা দখল অবৈধ। তারাই ভোট চুরি করে, তারাই ভোট চুরি ছাড়া জিততে পারে না। ২০০৮-এর নির্বাচনে সেটা প্রমাণিত সত্য।

এখন আবার তারা নির্বাচন বানচাল করতে চায়, কেন নির্বাচন বানচাল করবে?’
ঢাকায় ১৫টি নির্বাচনী আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি এই ১৫টা রত্ন আপনাদের সামনে তুলে দিলাম। তারা আপনাদের সেবা করবে, ঢাকার মানুষের সেবা করবে।’

জনসভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সংসদে বিল পাস : খাদ্যদ্রব্যের অবৈধ মজুতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

জাতীয়, 5 July 2023, 1139 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
সরকারের নির্ধারণ করে দেওয়া পরিমাণের চেয়ে বেশি খাদ্যদ্রব্য মজুত করলে যাবজ্জীবন বা সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। আর এই অপরাধ হবে অজামিনযোগ্য। কাল্পনিক নামে খাদ্যদ্রব্য বিপণনও অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত হবে।

banner

আজ ৫ জুলাই বুধবার এসব বিধান রেখে ‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) বিল, ২০২৩’ উত্থাপণ করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর বিরোধী সদস্যদের দেওয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করা হয়। ১৯৫৬ সালের ফুড (স্পেশাল কোর্ট) অ্যাক্ট এবং ১৯৭৯ সালের ফুডগ্রেইনস সাপ্লাই (প্রিভেনশন অব প্রিজুডিশিয়াল অ্যাকটিভিটি) অর্ডিন্যান্স বাতিল করে নতুন এ আইন করা হচ্ছে।

বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম বলেন, এই বিলের মাধ্যমে চালের পোলিশিং বন্ধ করতে পারলে চার লাখ মেট্রিক টন চালের অপচয় রোধ করা যাবে। তিনি বলেন, বাজারে মিনিকেট চাল বিক্রি হলেও এই জাতের কোনো ধান বা চালের অস্তিত্ব নেই।

গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, কাঁচা মরিচের কেজি ১০০০ টাকা হওয়ার পর ভারত থেকে তড়িঘড়ি করে তা আমদানি করা হয়েছে। তাহলে আমরা কিভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলাম। এই থেকেই বোঝা যায়, দেশে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। যদিও বিষয়টি ভাল বলতে পারবেন মন্ত্রী। কারণ, তিনি নিজেই একজন বড় মাপের গুদাম ব্যবসায়ী। মোকাব্বির খান বলেন, খাদ্যে উদ্বৃত্ত নিয়ে আমরা গর্ববোধ করলেও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে পারিনি। ফলে যে কারণে দেশের প্রায় সকল মানুষ কোনো না কোনো ব্যধিতে আক্রান্ত। এজন্য তিনি রাষ্ট্রের নীতিতে বড় ধরণের পরিবর্তন আনার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।

জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান বিলের সাজাসংক্রান্ত ধারার সমালোচনা করে বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি প্রমাণ করতে পারেন যে, তিনি আর্থিক বা অন্য কোনো প্রকার লাভের উদ্দেশ্য ছাড়া মজুত করেছিলেন, তাহলে তিনি সর্বোচ্চ তিন মাস কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এই ধরণের আইন কোথাও শোনা যায়নি। অপরাধ না করলেও তাকে সাজা ভোগ করতে হবে।

জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, এটা একটা ভয়াবহ আইন। এই আইনের আওতায় যে কাউকে যে কোনো সময়ে ধরা যাবে। ঘুষের একটা মহোৎসব শুরু হবে দেশে। যে কাউকে ধরে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়ে দেওয়া যাবে। এই আইনের ফলে দেশের কৃষকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াবে। কৃষকরা ভাল দাম পাওয়ার আশায় অনেক সময় মজুত করেন। তারাও এই আইনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তিনি আইনের সাজা কমানোর জন্য মন্ত্রীকে পরামর্শ দেন।

এসব সমালোচনার জবাবে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, বর্তমান সরকার কৃষকবান্ধব। কৃষকদের নানা প্রণোদনা এই সরকার দিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, প্রকৃত মজুতদারদের চিহ্নিত করা সহজ বিষয়। কৃষকদের ওপরে এই আইন প্রয়োগের কোনো আশঙ্কা নেই। এই আইনের অধীনে প্রণীত বিধিমালায় এ বিষয়ে আরও পরিষ্কার করা হবে। মন্ত্রী বলেন, বিশেষ ক্ষমতা আইন এখনো বিদ্যমান রয়েছে। তাতে মজুতদারদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসি দেওয়ার সুযোগ থাকলেও সরকার সেই পথে হাটেনি। বোরো মওসুমের ভালো ফলনের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী এবার চাল আমদানির প্রয়োজন হবে না বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এসময় মন্ত্রী বলেন, একজন সদস্য আমাকে গুদাম ব্যবসায়ী বলেছেন। প্রকৃতপক্ষে তার কোনো গুদাম নেই-এমন দাবি করে মন্ত্রী বলেন, কেউ যদি আমার গুদাম থাকার প্রমাণ করতে পারেন, তাকে ওই গুদাম নিবন্ধ করে দেওয়া হবে।

বিলে খাদ্যদ্রব্যের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, চাল, ধান, গম, আটা, ভুট্টাসহ যেকোনো প্রকার দানাদার খাদ্যদ্রব্য। বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি সরকার নির্ধারিত পরিমাণের বেশি পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য মজুত করলে বা মজুতসংক্রান্ত সরকারের কোনো নির্দেশনা অমান্য করলে, তা হবে অপরাধ। এর শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড। তবে এ ধরনের অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি প্রমাণ করতে পারেন যে, তিনি আর্থিক বা অন্য কোনো প্রকার লাভের উদ্দেশ্য ছাড়া মজুত করেছিলেন, তাহলে তিনি সর্বোচ্চ তিন মাস কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এই অপরাধ হবে অজামিনযোগ্য।

বিলে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন ও বিপণনসংক্রান্ত কিছু অপরাধ চিহ্নিত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কোনো অনুমোদিত জাতের খাদ্যশস্য থেকে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যকে ওই রূপ জাতের উপজাত পণ্য হিসেবে উল্লেখ না করে ভিন্ন বা কাল্পনিক নামে বিপণন করলে তা হবে অপরাধ। খাদ্যদ্রব্যের মধ্য থেকে স্বাভাবিক উপাদানকে সম্পূর্ণ বা আংশিক অপসারণ বা পরিবর্তন করে উৎপাদন বা বিপণন করলে সেটিও অপরাধ হবে। এ ছাড়া খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কৃত্রিম উপাদান মিশ্রণ করে উৎপাদন ও বিপণন করলে সেটিও হবে অপরাধ। লাইসেন্স ছাড়া বা মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স দিয়ে ব্যবসা চললেও তা অপরাধ হবে। আর এসব অপরাধের জন্য দুই বছর কারাদণ্ড অথবা অন্যূন ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে।

বিলে আরও বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন–সম্পর্কিত কোনো মিথ্যা তথ্য বা বিবৃতি তৈরি, মুদ্রণ, প্রকাশ, প্রচার বা বিতরণ করলে তা হবে একটি অপরাধ। এর সাজা হবে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড।

বিলে উল্লেখ করা হয়েছে, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আদালত থাকবে। এই আদালত ‘খাদ্যদ্রব্য বিশেষ আদালত’ নামে অভিহিত হবেন। এই আইনের অধীন কিছু অপরাধের বিচার ভ্রাম্যমাণ আদালতেও করা যাবে।

দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 12 April 2023, 1539 Views,
ফাইল ছবি

চলারপথে ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তাঁর দলের নেতাদের আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে দলকে আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি যে কোনো ধরনের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে বলেছেন।

banner

তিনি বলেন, ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে। অনেকেই এমন গতিতে একটি দেশের অগ্রগতি চায় না, তাই তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাজ করছে।’

আওয়ামী লীগের সারা দেশের জেলা শাখার নেতাকর্মীরা আজ ১২ এপ্রিল বুধবার গণভবনে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

এ সময় সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। খবর বাসসের

তিনি বলেন, তাঁর সরকার ২০০৯ সাল থেকে টানা তিন মেয়াদে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর পরিশ্রমের কারণে দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালের ৪১ শতাংশ থেকে ২০২৩ সালে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে এবং অতি-দরিদ্রের হার ২৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে।

তিনি বলেন, তাঁর সরকার দ্রুততম সময়ে দারিদ্র্যের হার আরও দুই বা তিন শতাংশ কমিয়ে আনার প্রচেষ্টাকে আরও গতিশীল করবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো অতি-দারিদ্রতা থাকবে না।’ তিনি আরো বলেন, তাঁর সরকার বিনা খরচে বাড়ি প্রদান, স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া এবং দেশবাসীর অবস্থার পরিবর্তনের জন্য শিক্ষার হার বৃদ্ধিসহ সবকিছুই করছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তাঁর দল ক্ষমতায় এলে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়।

জাতীয় নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে উল্লেখ করে তিনি আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করে জনগণের কল্যাণে আরও সম্মিলিতভাবে কাজ করার জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমরা চাই আওয়ামী লীগের সংগঠন আরও শক্তিশালী হোক।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন করেছেন- উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাই আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি দলীয় নেতা কর্মীদের স্মরণ করিয়ে দেন যে- দেশ ও জনগণের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করতে হবে। কারণ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মতো রাজনৈতিক দলগুলো সামরিক স্বৈরশাসকের পকেট থেকে গঠিত হয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মতো দল মাটি ও মানুষের দল নয়।

গত ১৪ বছরে দেশের সার্বিক উন্নয়নের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও বাসস্থানের মতো প্রতিটি খাতে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছে।

পদ্মা সেতুর সুফল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ পেলেও বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছেন না বলে প্রধানমন্ত্রী বিএনপি নেতা ও তাদের সমমনাদের কঠোর সমালোচনা করেন।

তিনি আরো বলেন, ‘তারা কোনো উন্নয়ন দেখছে না। তারা প্রতিদিনই এমনকি রমজানের দিনেও উচ্চকণ্ঠে মিথ্যা কথা বলছে। কেন তারা এমন করছে আমি তা বুঝতে পারছি না।’

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, তাঁর সরকার জনগণের জন্য কাজ করেছে আর এ কারণেই জনগণ তাঁর দলকে ভোট দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কোনো ভোট কারচুপির প্রয়োজন নেই, কারণ তারা সবসময় জনগণের সেবা করে তাদের আস্থা অর্জন করে ক্ষমতায় আসে। আওয়ামী লীগ কখনোই ভোট ছাড়া ক্ষমতায় আসে না।’

তিনি বলেন, ‘যারা নির্বাচনের কথা বলছে, তারা বন্দুকের মুখে ক্ষমতায় এসেছে।তাই, জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি, এ নির্বাচনে বিএনপি পেয়েছিল ২৯ আসন।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘বিএনপি এখনও তাদের আগের অবস্থানে অটল রয়েছে। অথচ দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করে আওয়ামী লীগ তার অবস্থানকে আরও এগিয়ে নিয়ে গেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভয়াল রাতে বাবা-মা, ভাইসহ সর্বস্ব হারানোর পর তিনি দেশবাসীকে নিজের কাছের মানুষ ভেবে তাদের জন্য কাজ করছেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণই আমার পরিবার। আমি যা কিছু করেছি তা মানুষের জন্য করেছি।’

সবকিছু হারিয়ে দেশে ফিরে আসার পর আশ্রয় দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী দেশবাসী ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা (দলের লোকজন) আমার পাশে থাকলে আমি জনগণের জন্য কাজ করতে পারবো।’

আগুনে প্রাণ গেল সাংবাদিক অভিশ্রুতি ও তুষার হাওলাদার

জাতীয়, 1 March 2024, 810 Views,

অনলাইন ডেস্ক:
রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবনে ভয়াবহ আগুনে মারা গেছেন অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে এক সাংবাদিক। তিনি কাজ করতেন দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ নামে একটি সংবাদমাধ্যমে।

banner

আজ ১ মার্চ শুক্রবার বার্তা টোয়েন্টিফোরে যোগ দেওয়ার কথা ছিল অভিশ্রুতির। অভিশ্রুতি নির্বাচন বিট করতেন।

জানা গেছে, ২০১৫ সালে এসএসসি ও ২০১৭ সালে এইচএসসি পাস করেন অভিশ্রুতি। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

অভিশ্রুতির মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়ে গণমাধ্যমকে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের চিফ রিপোর্টার গোলাম রাব্বানি বলেন, সে (অভিশ্রুতি) গত জানুয়ারি পর্যন্ত দ্য রিপোর্টের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার ছিলেন। জানুয়ারিতে সে চাকরি ছেড়ে দেন। চাকরিরত অবস্থায় অভিশ্রুতি নির্বাচন কমিশন বিট করতেন। তিনি ইডেন মহিলা কলেজে স্নাতক পরীক্ষা দিয়েছেন। ঢাকার মৌচাকের সিআইডি অফিসের বিপরীতে একটি মেসে থাকতেন তিনি।

সাংবাদিক তুষার হাওলাদারের বাড়ি ফিরতে দেরি হওয়ার কথা ছিল, এদিকে আবার বাসার মূল গেইট বন্ধ হয়ে যায় রাত ১১টাতেই। তাই ছেলের যাতে বাসায় ঢুকতে সমস্যা না হয় সেজন্য বাড়িওয়ালার কাছ থেকে চাবি নিয়ে রেখেছিলেন তুষারের বাবা। রাত থেকে সকাল পর্যন্তও তুষারের মোবাইলে ফোন দিয়ে সাড়া পাননি তার বাবা। পরে পুলিশের ফোনে জানতে পারেন, ছেলের লাশ পড়ে আছে মর্গে।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত বহুতল ভবনে আগুন লাগে। এতে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।