চলারপথে রিপোর্ট :
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব বলেছেন, আমার যুবদল ও ছাত্রদলের ভাইদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, কিন্তু শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে আমাদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। সেই ইতিহাস আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। আমরা মোল্লা ও মিস্টারের সমন্বয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই।’ গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কর্মীসভায় তিনি এ কথা বলেন। আমেরিকায় আওয়ামী লীগ নেতাদের জীবনযাত্রার প্রসঙ্গ টেনে মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, সেখানে গিয়েই দেখেছি, আওয়ামী লীগের নেতারা রাজকীয় জীবনযাপন করছে। গত ১৭ বছরের লুটপাটের টাকায় তারা বিদেশে বাড়িগাড়ির মালিক হয়েছে। অথচ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সন্তান তারেক রহমান এখনও ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছেন।
আজ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়া বা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণিত অর্থনৈতিক দুর্নীতির তথ্য উপস্থাপন করা যায়নি।
আলেম সমাজের ওপর নিপীড়নের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা গত ১৭ বছর আলেমদের ওপর ভয়াবহ নিপীড়ন চাপিয়েছে। মুফতি আমিনী রহকে প্রায় দুই বছর গৃহবন্দি রেখে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে।”
সরাইল আশুগঞ্জের উন্নয়ন নিয়ে তিনি বলেন, “মুফতি আমিনীর অসম্পূর্ণ স্বপ্ন পূরণ করাই হবে আমার অঙ্গীকার আমি অতিরিক্ত প্রতিশ্রুতি দেব না, তবে এ আশ্বাস দিচ্ছি নির্বাচিত হলে উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দের প্রতিটি টাকা সঠিকভাবে ব্যয় হবে। এক টাকা দুর্নীতি আমি নিজে করব না, অন্য কাউকেও করতে দেব না।”
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় ব্যাটারী চালিত অটোরিকশার এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরো ২ জন আহত হয়েছেন।
সরাইল খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা এস.আই. সারোয়ার হোসেন জানান, শনিবার রাত ৮টার দিকে ঢাকা সিলেট মহাসড়কের উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ইসলামাবাদ (গোগদ) এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম সুজু মিয়া। সে নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা গ্রামের সাহেদ মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রাতে সিলেট থেকে ঢাকাগামী অজ্ঞাত একটি প্রাইভেটকার সরাইল উপজেলার ইসলামাবাদ ব্রিজের উপর ওভারটেক করতে গিয়ে সজোরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে অটোরিকশায় থাকা ৩ যাত্রী ছিটকে পরে গুরুত্বর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সুজু মিয়া নামে একজন মারা যায়। দুর্ঘটনার পর পর প্রাইভেটকারটি পালিয়ে যায়।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইল উপজেলায় বাস উল্টে গোপী কান্ত ঘোষ (৩০) নামে এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। এতে আরো দুজন আহত হয়েছেন।
আজ ১৮ নভেম্বর সোমবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার বৈশামুড়া নামক স্থানে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত গোপী কান্ত নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার লুটিয়া গ্রামের গোবিন্দ ঘোষের ছেলে।
খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মারগুব তৌহিদ জানান, সিলেটগামী মামুন স্পেশাল পরিবহনের বাস সরাইলের বৈশামুড়া এলাকার রাস্তায় উল্টে যায়। এতে বাসের তিন যাত্রী আহত হন। এ অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর গোপী কান্তকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। দুর্ঘটনার পর বাস রেখে চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার বাদ এশা পরমানন্দপুর ঈদগাহ মাঠে চতুর্থ জানাজা শেষে মা-বাবার কবরের পাশে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।
এর আগে আজ ৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার রাত ৩টায় রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞার ছেলে মাইনুল হাসান তুষার বলেন, ‘বাবা দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত রোগে ভুগছিলেন। তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে এক সপ্তাহ আগে এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছিলেন। শুক্রবার রাত ৩টা ২ মিনিটে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।’
এর আগে উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞার প্রথম জানাযা শনিবার সকাল ১১টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হয়। পরে সড়কপথে মরদেহ সরাইল উপজেলা সদরে আনা হয়। শনিবার বাদ আসর সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে মরদেহ নেওয়া হয় অরুয়াইল আব্দুস সাত্তার ডিগ্রি কলেজ মাঠে। বাদ মাগরিব তৃতীয় জানাজা শেষে মরদেহ নেওয়া হয় পরমানন্দপুর গ্রামে। শনিবার বাদ এশা পরমানন্দপুর ঈদগাহ মাঠে চতুর্থ জানাজা শেষে মা-বাবার কবরের পাশে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।
এ দিকে সরাইল সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় জানাজায় অংশ নেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সংসদ সদস্য বি এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার, সরাইল উপজেলা চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, নাসিরনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. রাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজমুল হোসেন, জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা প্রমুখ। এ সময় সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলী আজাদ উপস্থিত ছিলেন। তবে জানাজায় বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ কোনো নেতা উপস্থিত ছিলেন না।
উকিল আব্দুস সাত্তারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি এবং সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আল-মামুন সরকার।
জানা যায়, আব্দুস সাত্তার ভূঞা ১৯৩৯ সালের ১৬ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে আইনজীবী পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতিও ছিলেন।
আব্দুস সাত্তার ভূঞা ১৯৭৯ সালে তৎকালীন কুমিল্লা-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে বিএনপি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে তৎকালীন ৪ দলীয় জোট সরকার থেকে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে আবদুস সাত্তার আইন, মৎস্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরে রাজনৈতিক কার্যক্রমে নিষ্ক্রিয় ছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য হিসেবে জয়লাভ করেন। ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে ২ ফেব্রুয়ারি উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন এ নেতা। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তার পক্ষে নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে পাষন্ড স্বামীর হাতে শেখ তানিয়া বেগম-(৪০) নামে পাঁচ সন্তানের এক জননী খুন হয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই গৃহবধূ মারা যায়। সোমবার রাতে উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের মনিরবাগ গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে ঘাতক স্বামী উজ্জ্বল মিয়া পলাতক রয়েছেন।
নিহতের সন্তান ও স্বজনরা জানান, উজ্জ্বল বিভিন্ন সময় তানিয়ার উপর কোন কারন ছাড়াই মারধর করত। সোমবার রাতে উজ্জ্বল ঘরে এসে দরজা বন্ধ করে তানিয়ার উপর নির্যাতন চালায়। রাতভর তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে ।
এ সময় ছেলে- মেয়েরা বাঁধা দিলে তাদেরকেও মারধর করা হয়। পরে মঙ্গলবার তানিয়ার বড় মেয়ে জয়া ৯৯৯ ফোন দিয়ে পুলিশকে অবগত করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তানিয়াকে আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সার্জারী বিভাগে ভর্তি করে। সেখানে তানিয়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যায়।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, ৯৯৯ খবর পেয়ে তানিয়াকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানে হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘাতক স্বামীকে গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান চলছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১১টায় পরিষদ চত্বর থেকে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মেজবা উল আলম ভূইয়ার নেতৃত্বে শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে। র্যালির পর সরাইল উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মেজবা উল আলম ভূইয়া।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার ইতি বেগম, সরাইল উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন, কালিকচ্ছ পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম মানিক, প্রাইমারি সহকারী শিক্ষক নুরুন্নাহার বেগম, প্রধান শিক্ষক দুলাল চন্দ্র দাস এবং সহকারী শিক্ষক শাহিনুল ইসলাম ঠাকুর।
বক্তারা শিক্ষকদের ভূমিকা ও তাদের অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, শিক্ষকেরা জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। তারা শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের সঠিক পথে পরিচালনার জন্য সর্বদা নিবেদিত রয়েছেন।
এছাড়া, শিক্ষকদের কাজকে সমাজে যথাযথ সম্মান ও মূল্যায়ন করতে হবে। বক্তারা সরকারের শিক্ষানীতি এবং শিক্ষকদের অধিকারের প্রতি নজর দেওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষিকা, মিডিয়া কর্মীসহ অন্যান্য অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। দিবসটি উপলক্ষে বিদ্যালয়ে বিশেষ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়, যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে পারে।