চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলায় মেঘনা নদীতে নিখোঁজের একদিন পর জুলেখা আক্তার (৭) নামে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছেন দমকল বাহিনীর সদস্যরা।
আজ ৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের ধরাভাঙ্গা গ্রামে এমপিটিলা এলাকা থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
জুলেখা বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মরিচাকান্দি গ্রামের সুজন মিয়ার মেয়ে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১ ডিসেম্বর শুক্রবার শিশুটি তার মায়ের সঙ্গে উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের ধরাভাঙ্গা গ্রামে তার নানা হান্নান মিয়ার বাড়িতে বেড়াতে আসে। ৪ ডিসেম্বর সোমবার দুপুর ১টায় শিশুটি বাড়ির পাশে মেঘনা নদীতে বড় বোনের সাথে গোসল করতে যায়। গোসলে নেমে ডুব দিয়ে আর ওপরে ওঠেনি জুলেখা। স্থানীয়রা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাননি। পরে স্থানীয় লোকজন ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়।
সলিমগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাউসার মাতব্বর জানান, নৌ-পুলিশের একটি টিম ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেছে। মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে মাইশা আফরিন সুবর্ণা (১৪) নামের এক কিশোরী বিয়ের তিনমাসের মাথায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রোববার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে কিশোরীর মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মাইশা আফরিন সুবর্ণা উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের বীরপাশা গ্রামের নাসির উদ্দিনের মেয়ে। নাসির উদ্দিন বলেন, তার কিশোরী মেয়ে সুবর্ণা অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পার্শ্ববর্তী বিন্নিঘাট এলাকার ইদ্রিস মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (২২) তার মেয়েকে পছন্দ করতেন। পরে পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য তার মেয়ে সুবর্ণাকে অত্যাচার করতো মনির। বিয়ের সময় মনিরকে ১ লাখ টাকা যৌতুক দেওয়ার পর সে আরও যৌতুককের টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে তার মেয়েকে তালাক দিবে একথা বলেন মনির। সে কথা শুনে সুবর্ণা শনিবার বিকেলে শোবার ঘরের বাশের তীরের সাথে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। তিনি আরও বলেন, মনিরের চাপের কারণে তার মেয়ে সুবর্ণাকে বিয়ে দিতে হয়। মনিরের কারনে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এ ব্যাপারে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এক কিশোরী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মরদেহ উদ্ধারের পর জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছি। থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে ছেলের চুরির অপবাদ সহ্য করতে না পেরে কেরির বড়ি খেয়ে বাবা অহেদ মিয়া আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ৩১ জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার নাটঘর ইউনিয়নের কুড়িঘর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, নান্দুরা গ্রাম থেকে গরু চুরি করে গত ৩০ জুলাই বুধবার দুপুরে শালগাঁও কালিসিমা বাজারে বিক্রি করতে গেলে গরুসহ ধরা পড়েন গরু চোর সুহেল মিয়া। পরে তাকে আটক করে স্থানীয় লোকজন মারধর করেন।
সুহেল চুরি করতে গিয়ে ধরা খাওয়ার পর তার পরিবার নিয়ে স্থানীয় লোকজন নানা কটূক্তি করেন। সেই অপমান সহ্য করতে না পেরে কেরির বড়ি খেয়ে আত্মহত্যা করেন বাবা অহেদ মিয়া। তারা আরো জানায়, সে এর পূর্বেও একাধিকবার চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন। পরিবারের সদস্যরা তাকে চার মাস কুমিল্লা মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করে চিকিৎসা করান। সেখান থেকে এসে পুনরায় সে চুরি করা শুরু করেন।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহীনূর ইসলাম জানান, এ বিষয়ে নিহত পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মধ্যে দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে খারঘর গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। খারঘর গণকবর বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে আজ ১০ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার নবীনগর বড়াইল ইউনিয়নের পাগলা নদীর তীরে স্থাপিত খারঘর গণকবরের স্মৃতি ৭১ “স্মৃতিস্তম্ভ”এ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পন করে শহীদদের শ্রদ্ধা জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ গ্রামবাসীর স্মরণে পুলিশের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
পরে নবীনগর উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের পক্ষে শহীদদের স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তক অর্পনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর ফরহাদ শামীম। পরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, নবীনগর থানা পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, শহীদ পরিবারের সদস্য সহ স্থানীয় গ্রামবাসী শহীদদেরকে শ্রদ্ধা জানান।
পরে স্মৃতিচারণ করে বীরমুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ১৯৭১ সালে যারা শহীদ হয়েছেন তাদেরকে আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী সেনারা এখানেই ৪৩জন নিরস্ত্র মানুষকে ধরে নিয়ে গণহত্যা করা হয়েছিলো। আমরা শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করি।
উপজেলার বড়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন বলেন, ১৯৭১ সালে ১০ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পাকিস্তানী বাহিনী পাগলা নদী দিয়ে স্টীমারে করে খারঘর গ্রামে হানা দেয়।
এ সময় সোহরাওয়ার্দী নামে এক মুক্তিযোদ্ধা পাক বাহিনীরকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে। পরে পাকিস্তানী বাহিনী গ্রামের মধ্যে নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। এ সময় তাদের হামলায় মুক্তিযোদ্ধাসহ ৪৩জন গ্রামবাসী শহীদ হন।
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন, ১৯৭১ সালে ১০ অক্টোবর খারঘরের এই জায়গায় পাকিস্তানী বাহিনীর সাথে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়েছিলো। সেই যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাসহ ৪৩জন শহীদ হয়েছিলেন। আজকে আমরা সরকারের পক্ষ থেকে সেসব শহীদদের আমরা শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করি। পরে শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১০ অক্টোবর খারঘর গ্রামে গণহত্যা চালিয়েছিলো পাকিস্তানী বাহিনী। তারা মুক্তিযোদ্ধাসহ ৪৩ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে নির্বিচারে হত্যা করেন।
এর পর থেকে প্রতিবছর ১০ অক্টোবর দিনটিকে খারঘর গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে খারঘর গণকবর বাস্তবায়ন কমিটি।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে প্রথমবারের মতো সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র সহযোগিতায়, বাংলা একাডেমির সমন্বয়ে উপজেলা সাহিত্য মেলা-২০২৩ উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ও আগামীকাল শুক্রবার এ সাহিত্য মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ফিতা কাটার মাধ্যমে উপজেলা সাহিত্য মেলার শুভ সূচনা হয়। এরপর মনোমুগ্ধকর বাউল সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
আজ ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবার নবীনগর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে, উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে দুই দিনব্যাপী সাহিত্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নবীনগর পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট শিব শংকর দাস। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল ছিদ্দিক। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন নবীনগর শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় সাহা।
উপজেলার সাংবাদিক, শিক্ষকসহ কবি, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের উত্তরীয় পরিয়ে দেন উপস্থিত অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদা জাহান, নবীনগর সরকারি কলেজের প্রভাষক রাশেদুল হক (রাশেদ), কুমিল্লা নজরুল ইনস্টিটিউটে পরিচালক আল আমিন, জেলা কালচার একাডেমির পরিচালক মনিরুজ্জামান মনির, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোকাররম হোসেন, নবীনগর সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু মুসা, সহকারী প্রধান শিক্ষক কাজী ওয়াজেদ উল্লাহ, স্বজনের প্রধান উপদেষ্টা আবু কামাল খন্দকার, গুঞ্জন পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা দিনমজুর স্বপন মিয়া প্রমুখ।
মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিকসহ উপজেলার কবি, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে রয়েছে প্রবন্ধ পাঠ, আলোচনা সভা, লেখক কর্মশালা, স্থানীয় লেখকদের স্বরচিত কবিতা পাঠ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
চলারপথে রিপোর্ট :
কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক কে এম মামুন অর রশীদ আজ ২৪ আগস্ট শনিবার নবীনগর প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। এসময় তিনি দেশে বন্যা কবলিত মানুষের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে সকলকে তাদের পাশে দাঁড়াবার আহবান জানান।
আলোচনা কালে তিনি আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরে বলেন, এই ফ্যাসিবাদি দলটি রাষ্টের প্রতিটি স্তম্ভ ও প্রতিটি সেক্টরকে দুর্নীতির আতুড়ঘর বানিয়েছে। তাদের দুঃশাসনে পঙ্গু হওয়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সময় প্রয়োজন।
তিনি অন্তর্বর্তীকালিন সরকার রাষ্ট্রের সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটা যৌক্তিক সময়ের নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের মধ্যে দিয়ে জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন বলে প্রত্যাশা করেন।
তিনি বলেন, আমি আমার জন্মভূমি নবীনগরে তৃণমুল রাজনীতি থেকে উঠে এসে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে এসেছি। আমি নবীনগরবাসির পাশে থাকতে চাই। আমি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। বিএনপি বড় দল হিসাবে গ্রুপিং থাকবে, প্রতিযোগিতা থাকবে, গ্রুপিং না থাকলে নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন হয় না ঠিক কিন্তু দলের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আমরা ঐক্যবদ্ধ। দল যাকেই মনোনয়ন দিবে তার পক্ষেই আমরা কাজ করব। মতবিনিময়কালে তিনি প্রেসক্লাবের উন্নয়নে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে দাতা সদস্য হওয়ার ঘোষণা দেন।
প্রেসক্লাবের সভাপতি শ্যামা প্রসাদ চক্রবর্তী শ্যামল মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সাধারণ সম্পাদক সাইদুল আলম সৌরাফের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সাদেকুল হক সাদির, উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক জহিরুল হক জুরু মিয়া, কৃষক দলের সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন বাবুল, পৌর কৃষক দলের সদস্য সচিব আনোয়ার খান, বিএনপি নেতা রাজন দে, কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আব্দুর রহিম ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।