নবীনগরে নিখোঁজের পরদিন নদীতে মিললো শিশুর মরদেহ

নবীনগর, 5 December 2023, 970 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলায় মেঘনা নদীতে নিখোঁজের একদিন পর জুলেখা আক্তার (৭) নামে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছেন দমকল বাহিনীর সদস্যরা।

banner

আজ ৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের ধরাভাঙ্গা গ্রামে এমপিটিলা এলাকা থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

জুলেখা বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মরিচাকান্দি গ্রামের সুজন মিয়ার মেয়ে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১ ডিসেম্বর শুক্রবার শিশুটি তার মায়ের সঙ্গে উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের ধরাভাঙ্গা গ্রামে তার নানা হান্নান মিয়ার বাড়িতে বেড়াতে আসে। ৪ ডিসেম্বর সোমবার দুপুর ১টায় শিশুটি বাড়ির পাশে মেঘনা নদীতে বড় বোনের সাথে গোসল করতে যায়। গোসলে নেমে ডুব দিয়ে আর ওপরে ওঠেনি জুলেখা। স্থানীয়রা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাননি। পরে স্থানীয় লোকজন ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়।

সলিমগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাউসার মাতব্বর জানান, নৌ-পুলিশের একটি টিম ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেছে। মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Leave a Reply

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বহিস্কার

চলারপথে রিপোর্ট : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা Read more

আখাউড়ায় অবৈধ চায়না রিং জাল ধ্বংস

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় তিতাস নদীতে অভিযান পরিচালনা Read more

রেলপথে মাদক পাচার প্রতিরোধে রেলওয়ে পুলিশের…

চলারপথে রিপোর্ট : মাদক চোরাচালান, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ দমন Read more

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির…

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান Read more

বাঞ্ছারামপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি

চলারপথে রিপোর্ট : ৬ দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য Read more

সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক : সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল Read more

রাইস কুকারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়ের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক : মাগুরার সদর উপজেলার টিলা গ্রামে রাইস কুকারে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

চলারপথে রিপোর্ট : সরকারি মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় Read more

নাসিরনগরে মৎস্য আড়তে অভিযান, নিষিদ্ধ পিরানহা…

চলারপথে রিপোর্ট : বিক্রির জন্য রাখা নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ জব্দ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন চাঁদাবাজ গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাটিহাতা (বিশ্বরোড) গোলচত্বর নামক এলাকায় চাঁদাবাজির Read more

সড়ক মেরামতের সপ্তাহ না পেরোতেই উঠে…

চলারপথে রিপোর্ট : সড়ক মেরামতের এক সপ্তাহ না পেরোতেই ইতিমধ্যে Read more

কসবায় গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ২৪ জুন মঙ্গলবার সকালে এস আই Read more

নূরজাহানপুর আশ্রয়ণের ঘর ২০ হাজারে বিক্রি

নবীনগর, 31 January 2023, 1680 Views,

নবীনগর প্রতিনিধি :
জনপ্রতি ২ শতাংশ জমি ও প্রতিটি ঘর নির্মাণে সরকার বরাদ্দ দিয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। তবে সুবিধাভোগীরা সে ঘর বিক্রি করে দিচ্ছেন মাত্র ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায়। নবীনগরে ভূমিহীনদের জন্য দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর এভাবে বেচাকেনা চলছে। বরাদ্দের তালিকা প্রণয়নে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী। তবে প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

banner

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের নূরজাহানপুর গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৯৫টি ঘরের মধ্যে ছয়টি বিক্রি হয়ে গেছে। অন্তত ৩০টিতে ঝুঁলছে তালা। কিনে নেওয়া ব্যক্তিরা ঘরে বসবাস করছেন। গত রোববার সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, প্রকল্পের ২ নম্বর গলির ৩ নম্বর ঘর বরাদ্দ পান মৃত আফছার উদ্দিনের স্ত্রী সাধনের নেছা। তাঁর ছেলে রুবেল মিয়া স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকায় শাহনাজ বেগমের কাছে বিক্রি করে দেন। রুবেল মিয়া বলেন, টাকার প্রয়োজনে ঘরটি বিক্রি করেছেন তাঁরা।

গলির ২ নম্বর ঘর বরাদ্দ পান গাজী মদনের স্ত্রী জুলেখা বেগম। ৩৫ হাজার টাকায় ইমন মিয়ার স্ত্রী রহিমা বেগম ঘরটি কিনেছেন। ৯ নম্বর ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন মৃত ফজলুল মিয়ার স্ত্রী হেনা বেগম। তাঁর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকায় কিনে ঘরে বসবাস করছেন মৃত হামিদ মিয়ার স্ত্রী নাজমা বেগম। ১৭ নম্বর ঘর বরাদ্দ পাওয়া ধরাভাঙা গ্রামের হাবিব মিয়া ২২ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন থোল্লাকান্দি গ্রামের নার্গিস বেগমের কাছে। বড়িকান্দি গ্রামের ইকবাল হোসেন ১ নম্বর গলির ৯ নম্বর ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন। তিনি ৩৫ হাজার টাকায় একই গ্রামের কালন মিয়ার ছেলে মো. মোক্তার হোসেনের কাছে বিক্রি করেছেন।

২ নম্বর গলির বাম পাশের ৯ নম্বর ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন জমেলা বেগম। এ ঘর ৩০ হাজার টাকায় কিনে বসবাস করছেন হক মিয়া ও তাঁর পরিবার। এদিন প্রকল্পের প্রায় ৩০টি ঘর তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। অন্য বাসিন্দারা জানান, বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিরা ঘরে থাকেন না, আসেনও না। আর বসবাসকারী ব্যক্তিরা টাকা দিয়ে ঘর কেনার কথা স্বীকার করে জানান, তাঁদের কোনো বাড়িঘর নেই। আবেদন করেও ঘর বরাদ্দ পাননি। এ জন্য স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ঘর কিনে বসবাস করছেন।

২ নম্বর গলির ১৭ নম্বর ঘর কিনে মালিক হওয়া অসহায় নারগিস বেগম বলেন, তাঁর ঘরবাড়ি নেই। কষ্ট করে ২২ হাজার টাকা জোগাড় করে তিনি হাবিব মিয়ার কাছ থেকে ঘর কেনেন। তাঁর নামে দলিল করে দেবে বলে জানিয়েছে। ২ নম্বর গলির ২ নম্বর ঘর কেনা মালিক রহিমা বেগম বলেন, বরাদ্দের জন্য আবেদন করেও ঘর না পেয়ে কিনেছেন।

এ ছাড়া মোক্তার হোসেন, নাজমা বেগম, হক মিয়া ও শাহনাজ বেগমও ঘর কেনার কথা স্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে ঘর বিক্রি করা সুবিধাভোগী কাউকে না পাওয়ায় তাঁদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। বড়িকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. লাল মিয়ার মোবাইল ফোন নম্বরে কল দিলেও তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। খুদেবার্তা পাঠালেও কোনো জবাব দেননি তিনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত নন। তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে সুপারিশ করা হবে।

স্থানীয় সংবাদকর্মী আক্তার হোসেন বলেন, ঘরগুলো বিক্রি হয়েছে। অনেকে আবার থাকেন না। অনেকের বাড়িঘর আছে। অথচ ভূমি ও ঘরহীন অনেকে বরাদ্দ পাননি। ঘর বরাদ্দের ব্যাপারে অনিয়ম হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানালেও আমলে নেননি।
এ বিষয়ে বড়িকান্দি ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা রোকসানা বেগম পরে কথা বলবেন বলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, এটি ইউএনও ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাজ। এ বিষয়ে তাঁরাই ভালো জানেন। তিনি তালিকা অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা জাহান বলেন, তদন্তে এর সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একরামুল ছিদ্দিক বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি বিষয়টি অবগত হয়েছেন। বড়িকান্দি ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে সত্যতা যাচাই করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

নবীনগরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলো ছড়াচ্ছে গুঞ্জন পাঠাগার

নবীনগর, 24 July 2023, 1237 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলো ছড়াচ্ছে গুঞ্জন পাঠাগার। মাত্র ৩টি বই নিয়ে যাত্রা করা গুঞ্জন পাঠাগারে এখন বইয়ের সংখ্যা ১০ হাজার। গ্রামের দরিদ্র শিক্ষার্থীরা এই পাঠাগারের বই দিয়ে পড়াশুনা করে। ২০০৪ সালের ৩০ মার্চ ছোট একটি টিনের একচালা ঘরে যাত্রা শুরু করা পাঠাগারটি এখন ১ তলা বিশিষ্ট ভবন।

banner

গুঞ্জন পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা স্বপন মিয়া (৩২)। তিনি নবীনগর উপজেলার সুহাতা গ্রামের মরহুম স্বপন মিয়ার ছেলে। বর্তমানে স্বপন মিয়া জেলার কসবা উপজেলার একটি বেসরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক।

স্থানীয়রা জানান, ছোট বেলা থেকেই বইয়ের প্রতি আগ্রহ ছিলো স্বপন মিয়ার। ২০০৪ সালে স্বপন মিয়া যখন ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র তখনই তিনি তার বাড়ির একটি টিনের ঘরে মাত্র তিনটি বই দিয়ে পাঠাগারটি চালু করেন। পাঠাগারের নামকরন করেন “গুঞ্জন পাঠাগার”। প্রায় ১৯ বছরে পাঠাগারটি এখন ১০ হাজার বইয়ে সমৃদ্ধ একটি পাঠাগার। পাঠাগারে গ্রামের ছেলে মেয়েরা এক সাথে স্কুল-কলেজের পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন লেখকের বই পড়তে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাত্র দেড় বছর বয়সে পিতাকে হারান স্বপন মিয়া। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তিনি। বাবার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেন মা রাজিয়া খাতুন। তিনি মাটি কাটার কাজ করে সন্তানদের খুবই কষ্টে লালন-পালন করেন। স্বপনের দুই ভাই রিকশা চালক।

স্বপন মিয়া যখন গ্রামের একটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র তখনই একটি পাঠাগার গড়ার চিন্তা মাথায় আসে তার। তখন তিনি পরিবারের সদস্যদের অমতে একটি এনজিও থেকে ৮ হাজার টাকা ঋন নিয়ে বাড়ির জায়গায় একটি ছোট একচালা টিনের ঘর তৈরী করে মাত্র তিনটি বই দিয়ে গুঞ্জন পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেন।

পাঠাগারটি নিয়ে স্বপনের পরিবারে অশান্তি নেমে আসে। বড় দুই ভাই তাকে শর্ত দেন, পরিবারে থাকতে হলে পাঠাগার ছাড়তে হবে। কিন্তু স্বপন পরিবারকে ছেড়ে পাঠাগারকে আকড়ে ধরে রাখেন। পরবর্তীতে স্বপনের মা রাজিয়া খাতুন স্বপনকে সম্মতি দেন।

এক পর্যায়ে নিজের পড়াশুনা, সংসার আর পাঠাগার দেখাশুনা করতে স্বপন মিয়া দিন-মজুরি শুরু করেন। পথে ঘাটে ফেরি করে পান-সিগারেটসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করেন তিনি। তবুও পাঠাগারটি বন্ধ করেননি।

উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি।

পরে তিনি মায়ের কাছ থেকে পাওয়া সোয়া ২ শতাংশ জায়গা পাঠাগারের নামে দান করে সেখানে ঋণের টাকায় একতলা বিশিষ্ট পাকা ভবন করেন। পাঠাগারেই রাত্রিযাপন করেন তিনি। কলেজ থেকে যে টাকা বেতন পান, তার বেশির ভাগই ব্যয় করেন এই পাঠাগারে।

বর্তমানে প্রতি শুক্রবারে পাঠচক্র বসে পাঠাগারে। সেখানে শিশু-কিশোরদের জন্য আয়োজন করা হয় সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগীতার।

নবীনগর উপজেলার সুহাতা গ্রামের রমজান জানান, তার পরিবার আর্থিকভাবে স্বচ্ছল না হওয়ায় অষ্টম শ্রেনীতে পড়ার সময় তার পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। বাধ্য হয়ে তিনি বাবার সাথে কৃষি কাজ শুরু করেন। খবর পেয়ে স্বপন তাকে গুঞ্জন পাঠাগারে নিয়ে আসেন। এই পাঠাগারে থাকা বই দিয়েই নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যান। অনার্স শেষ করে বর্তমানে তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে মাস্টার্স করছেন।

নবীনগর উপজেলার ভোলাচং উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাওহীদ জাহান চৌধুরী জানায়, সে নিয়মিত গুঞ্জন পাঠাগারে গিয়ে বই পড়ে সে। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি সবধরনের বই আছে এখানে। এছাড়া তার কয়েকজন সহপাঠীও পাঠাগারে এসে বই পড়ে।

উপজেলার কৃষ্ণনগর আবদুল জব্বার স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক রোকসানা জেবিন মলি জানান, গুঞ্জন পাঠাগারের মনোরম পরিবেশ যে কাউকেই মুগ্ধ করবে। পাঠাগারটি জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে সবার মাঝে।

পাঠাগারে নিয়মিত আসা পাঠক ও কসবা উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা তুহিন কান্তি দাস বলেন, নবীনগর তথা পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্য আলোর দিশারী হয়ে দাঁড়িয়েছে গুঞ্জন পাঠাগারটি। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠি ও বঞ্চিত শিশু-কিশোরদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিতে কাজ করছে পাঠাগারটি।

পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা স্বপন মিয়া বলেন, পাঠাগারটি সমৃদ্ধ করতে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও অনেক ব্যক্তি তাকে সহায়তা করেছেন। যার জন্য তিনি পাঠাগারটিকে একচালা টিনের ঘর থেকে পাকা ভবন তৈরি করতে পেরেছেন।

তিনি বলেন, ‘সমাজে আমার মতো অনেকেই আছে- যারা বই কিনে পড়তে পারে না। অর্থের অভাবে অনেক শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। তাদের কথা চিন্তা করেই পাঠাগারটি করা হয়েছে। এই পাঠাগারের জন্য আমাকে পরিবার থেকে আলাদা হতে হয়েছিল। অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। আমি রাস্তায় ফেরী করে পান-সিগারেট বিক্রি করেছি। তবুও পাঠাগারটি বন্ধ হতে দেইনি।

তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত এই পাঠাগারের বই পড়ে অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলে ভর্তি হয়েছে। সুহাতা গ্রাম আলোকিত হয়েছে গুঞ্জন পাঠাগারের আলোতে। আমি চাই জ্ঞানের এই আলো ছড়িয়ে পড়–ক সবখানে।

এ ব্যাপারে নবীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, পাঠাগারের জন্য স্বপন তার নিজের ব্যক্তি জীবনের সবকিছু ত্যাগ করেছে। গুঞ্জন পাঠাগার শুধু জ্ঞানের আলোই ছড়াচ্ছে না, ছেলে-মেয়েদের মাদক থেকেও দূরে রাখতে সহায়তা করছে। বই পড়ার কারণে মেধার বিকাশ হচ্ছে, জ্ঞানের পরিধি বাড়ছে।

নবীনগরে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করলেন একেএম মামুন

নবীনগর, 24 August 2024, 524 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক কে এম মামুন অর রশীদ আজ ২৪ আগস্ট শনিবার নবীনগর প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। এসময় তিনি দেশে বন্যা কবলিত মানুষের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে সকলকে তাদের পাশে দাঁড়াবার আহবান জানান।

banner

আলোচনা কালে তিনি আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরে বলেন, এই ফ্যাসিবাদি দলটি রাষ্টের প্রতিটি স্তম্ভ ও প্রতিটি সেক্টরকে দুর্নীতির আতুড়ঘর বানিয়েছে। তাদের দুঃশাসনে পঙ্গু হওয়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সময় প্রয়োজন।

তিনি অন্তর্বর্তীকালিন সরকার রাষ্ট্রের সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটা যৌক্তিক সময়ের নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের মধ্যে দিয়ে জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন বলে প্রত্যাশা করেন।

তিনি বলেন, আমি আমার জন্মভূমি নবীনগরে তৃণমুল রাজনীতি থেকে উঠে এসে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে এসেছি। আমি নবীনগরবাসির পাশে থাকতে চাই। আমি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। বিএনপি বড় দল হিসাবে গ্রুপিং থাকবে, প্রতিযোগিতা থাকবে, গ্রুপিং না থাকলে নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন হয় না ঠিক কিন্তু দলের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আমরা ঐক্যবদ্ধ। দল যাকেই মনোনয়ন দিবে তার পক্ষেই আমরা কাজ করব। মতবিনিময়কালে তিনি প্রেসক্লাবের উন্নয়নে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে দাতা সদস্য হওয়ার ঘোষণা দেন।

প্রেসক্লাবের সভাপতি শ্যামা প্রসাদ চক্রবর্তী শ্যামল মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন।

সাধারণ সম্পাদক সাইদুল আলম সৌরাফের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সাদেকুল হক সাদির, উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক জহিরুল হক জুরু মিয়া, কৃষক দলের সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন বাবুল, পৌর কৃষক দলের সদস্য সচিব আনোয়ার খান, বিএনপি নেতা রাজন দে, কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আব্দুর রহিম ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।

নবীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় নারীর মৃত্যু

নবীনগর, 11 February 2025, 261 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে মোটরসাইকেল ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সার মুখোমুখি সংঘর্ষে এক নারী নিহত হয়েছে। আজ ১১ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার রাধিকা-নবীনগর আঞ্চলিক সড়কের রাধিকা নামক এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত বেবি দেবনাথ (৩৩) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্চারামপুর উপজেলার দশমী গ্রামের তাপস দেবনাথের স্ত্রী। এ ঘটনায় আরো দুইজন আহত হয়েছেন।

banner

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নবীনগর থানার সাব ইন্সপেক্টর আব্দুল মোনাস জানান, মঙ্গলবার দুপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি নবীনগরের দিকে যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে নবীনগর-রাধিকা আঞ্চলিক সড়কের রাধিকা এলাকায় অপরদিক থেকে দ্রুতগতিতে আসা একটি মোটরসাইকেলের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বেবি দেবনাথকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় এক শিশুসহ দুইজন আহত হয়েছেন। অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলটিকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উত্তর লক্ষ্মীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ফ্রী ব্লাড গ্রুপ ক্যাম্পিং অনুষ্ঠিত

নবীনগর, 7 January 2023, 1651 Views,

ব্লাড ফর বাইশ মৌজার উদ্যোগে

স্টাফ রিপোর্টার:
নবীনগর উপজেলার সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ব্লাড ফর বাইশ মৌজা’র উদ্যোগে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অচি মেমোরিয়াল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সার্বিক সহযোগিতায় ফ্রী ব্লাড গ্রুপ নির্ণয় ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টায় উত্তর লক্ষ্মীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ক্যাম্পিং এর আওতায় পাঁচ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকার জনসাধারণের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করা হয়।
উত্তর লক্ষ্মীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি আবু কাউছার সরকারের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাইশ মৌজা যুব সংগঠনের সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম খাঁন, বিশেষ অতিথি ছিলেন লায়ন ফিরোজুর রহমান স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নিয়াজ মোহাম্মদ কাজল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর নাগরিক ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতি এম. নাঈমুর রহমান। এলাকার জনসাধারণকে রক্তদানে উৎসাহিত করতে বক্তব্য রাখেন ব্লাড ফর বাইশ মৌজার স্বপ্নদ্রষ্টা মোঃ শুভ খান, জনি রানা, কাজী শাহান শাহ্ রাসেল, এ.কে. এম জয়দুল হক, ফরিদ উদ্দিন, আনহার আহমেদ সাব্বির রহমান, সোহেল রানা, শাকিল খান, ইয়াসিন সরকার শুভ প্রমুখ।
ক্যাম্পইন শেষে ব্লাড ফর বাইশ মৌজার স্বপ্নদ্রষ্টা শুভ খানকে বিদায়ী সম্মাননা স্মারক এবং সহযোগী সংগঠন নবীনগর স্বেচ্ছাসেবী ব্লাড ফাউন্ডেশন ও রক্তদাতাদের সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়।