চলারপথে রিপোর্ট :
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় ১০ লিটার অকটেন তেলে ৪৮০ মিলিলিটার কম দেওয়ায় একটি ফিলিং স্টেশন সিলগালা করে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ ৬ ডিসেম্বর বুধবার উপজেলার বজরা ইউনিয়নের দিঘীরজান এলাকায় মেসার্স আমিন সিএনজি ফিলিং স্টেশনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আহসান হাফিজ এ আদেশ দেন। আদেশে একই সাথে ফিলিং স্টেশনের ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার বেলা ১২টার দিকে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) প্রতিনিধিসহ জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আহসান হাফিজ দিঘীরজান এলাকায় মেসার্স আমিন সিএনজি ফিলিং স্টেশনে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় বিএসটিআইয়ের নির্ধারিত পরিমাপক যন্ত্রে প্রতি ১০ লিটার অকটেনে ৪৮০ মিলিলিটার কম তেল পাওয়া যায় এবং ডিসপ্লে নষ্ট অবস্থায় তেল বিক্রি করতে দেখা যায়। এছাড়া পাম্পটির বিরুদ্ধে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে তেল বিক্রির অভিযোগ পাওয়া যায়। অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করায় আমিন সিএনজি ফিলিং স্টেশনকে ওজন ও পরিমাপ মানদণ্ড আইন ২০১৮ এর ২৯/৪৬ ধারায় ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে ডিস্পেন্সিং ইউনিট সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আহসান হাফিজ বলেন, আইন অনুযায়ী ফিলিং স্টেশনটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। ফিলিং স্টেশন কর্তৃপক্ষ জরিমানার টাকা নগদ পরিশোধ করেছে এবং ভবিষ্যতে এরকম ভুল হবে না বলেছে। নতুন ডিসপ্লে প্রতিস্থাপন ও মেশিন ক্যালিব্রেশন করে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে ডিসপেন্সিং ইউনিট পুনরায় চালু করা যাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ভাঙ্গায় যৌথ অভিযান চালিয়ে ব্যাংকের ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড প্রতারণা ও জালিয়াতি চক্রের পাঁচ সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ।
আজ ১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকেল ৩টার দিকে ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকার এন্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) পুলিশ সুপার (এসপি) ফারহানা ইয়াসমিন বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
এরআগে, একইদিন ভোরে ফরিদপুরের ভাঙ্গার আজিমনগর এলাকায় ঢাকার এন্টি টেররিজম ইউনিট ও ফরিদপুর জেলা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন ভাঙ্গা উপজেলার পাতরাইল বাগবাড়ী দিঘীরপাড় এলাকার লিকু মাতুব্বরের ছেলে সাকিল মাতুব্বর ওরফে শাকিব (২৭), একই এলাকার মৃত আ. রশিদ মৃধার ছেলে শরিফুল মৃধা (৩৭), পাশের পাতরাইল দিঘিরপাড় এলাকার মৃত জয়নাল শেখের ছেলে শাওন শেখ (২০), একই উপজেলার মধ্য পাতরাইল কবিরাজ বাড়ি এলাকার বালাম কবিরাজের ছেলে রাকিব কবিরাজ (২৫) ও পাতরাইল উথলী তালুকদার বাড়ি এলাকার এসকেন তালুকদারের ছেলে জাকির হোসেন তালুকদার (৩৮)।
পুলিশ হেডকোয়ার্টারে এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ) ও ফরিদপুর জেলা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে এটিইউ পুলিশ সুপার (এসপি) ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, প্রতারণাকারী এ চক্রটি শুরুতে বিভিন্ন সরকারি ভাতা, অনুদান ও শিক্ষাবৃত্তি প্রাপ্ত ব্যক্তিদের তালিকা, মোবাইল নম্বরসহ প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন তথ্য অনলাইন থেকে সংগ্রহ করে। এরপর সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা পরিচয়ে তালিকার ব্যক্তিদের মোবাইল নম্বরে ফোন করে। এরপর ওই ব্যক্তিকে তার নাম, জন্ম তারিখ ইত্যাদি বিভিন্ন তথ্য দিয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে। প্রতারকরা তাদের জানায়, ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠালে সময় বেশি লাগবে। এক্ষেত্রে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড যদি থাকে তাহলে দ্রুত টাকা পাঠানো যাবে।
তিনি বলেন, ফলে ভুক্তভোগীরা ফাঁদে পড়ে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড নাম্বার এবং ওটিপিসহ (OTP) সব গোপন তথ্য প্রতারকদের দিয়ে দেয়। পরবর্তীতে প্রতারকরা খুব সহজেই মেটিবাফ্লেডিট কার্ড থেকে টাকা Qpay Bangladesh নামক মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে অন্য কোনো ব্যাংক একাউন্ট, বিকাশ বা নগদে নিয়ে নেয়। এভাবেই বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তারা দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা ও জালিয়াতি করে আসছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) শেখ মো. আব্দুল্লাহ বিন কালাম, এটিইউর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আখিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) তালাত মাহমুদ শাহানশাহ, কোতয়ালী থানার ওসি এম, এ জলিল, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (কোতয়ালী জোন) মো. রাকিবুল ইসলাম, গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ভাঙ্গা জোন) মোহাম্মদ মামুনুর রশীদসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
চলারপথে রিপোর্ট :
‘পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত/ ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে/ নতুন নিশান উড়িয়ে/ দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক/ এই বাংলায় তোমাকে আসতেই হবে হে স্বাধীনতা।’ সত্যিই বাংলায় এসেছে সেই মহার্ঘ্য স্বাধীনতা। আর আজ বাঙালির সেই গৌরবদীপ্ত দিন। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের বুকে স্বাধীন অস্তিত্ব ঘোষণা করেছিল বীর বাঙালি।
বাঙালি জাতির জীবনে ২৬ মার্চ দিনটি একই সঙ্গে গৌরব ও শোকের। বাঙালির ওপর পাকিস্তানি শাসকেরা শোষণ এবং ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর যে আগ্রাসন চালিয়েছিল, এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধিকারের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাঙালিরা। তারা ২৫ মার্চ মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে উঠে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ স্বাধীন করার শপথ গ্রহণ করে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে প্রতিটি বাঙালির মনে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের বীজ রোপিত হয়। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। মৃত্যুপণ লড়াই ও রক্তসমুদ্র পাড়ি দিয়ে বীর বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে জাতীয় ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতা।
প্রতিবছর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে দিবসটি উদযাপন করে গোটা জাতি। বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করে স্বাধীনতার জন্য আত্মদানকারী দেশের বীর সন্তানদের। শ্রদ্ধা জানায় মহান স্বাধীনতার রূপকার বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জাতীয় নেতা, নৃশংস গণহত্যার শিকার লাখো সাধারণ মানুষ এবং সম্ভ্রম হারানো মা-বোনের প্রতি।
এই মহার্ঘ্য স্বাধীনতা অর্জন করতে বাঙালি জাতিকে করতে হয়েছে দীর্ঘ সংগ্রাম, দিতে হয়েছে এক সাগর রক্ত। বঙ্গবন্ধু ধাপে ধাপে পুরো বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের অব্যবহিত পরেই ভাষার প্রশ্নে একাত্ম হয় বাঙালি। ১৯৪৮, বায়ান্ন পেরিয়ে চুয়ান্ন, বাষট্টি, ছেষট্টির পথ বেয়ে আসে ১৯৬৯।
ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে কেঁপে উঠেছিল জেনারেল আইয়ুবের গদি। জনতার সাগরে সৃষ্টি হয়েছিল তাল স্রোতধারা। ‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো’, ‘তোমার আমার ঠিকানা- পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত ছিল গ্রাম-শহর, জনপদ। শত ষড়যন্ত্র ও সামরিক জান্তার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সত্তরের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ।
কিন্তু বাঙালির হাতে শাসনভার দেয়ার বদলে শুরু হয় ষড়যন্ত্র। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার নামে করতে থাকেন কালক্ষেপণ। পর্দার আড়ালে প্রস্তুত হয় হিংস্র কায়দায় বাঙালি হত্যাযজ্ঞের ‘নীলনকশা’।
কিন্তু ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণেই পাওয়া যায় মুক্তির দিকনির্দেশনা। আক্ষরিক অর্থেই তখন পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসন চলছিল বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে। সেই প্রবল প্রদীপ্ত আন্দোলনের জোয়ারে ধীরে ধীরে বাঙালির হৃদয়ে আঁকা হয় একটি লাল-সবুজ পতাকা, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের ছবি।
কিন্তু বাঙালির আবেগ, সংগ্রাম ও মুক্তির আকাক্সক্ষাকে নির্মূল করতে অস্ত্র হাতে নামে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী। শোষিত ও নির্যাতিত মানুষের স্বাধীনতার আকাক্সক্ষাকে রক্তের বন্যায় ডুবিয়ে দিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে শুরু করে নিষ্ঠুর গণহত্যা।
সেই কালরাত্রি থেকেই শুরু হয় মৃত্যু, ধ্বংস, আগুন আর আর্তনাদ, পৈশাচিক বর্বরতা। কিন্তু ওই ঘোরতর অমানিশা ভেদ করেই দেশের আকাশে উদিত হয় স্বাধীনতার চিরভাস্বর সূর্য। ২৬ মার্চের সূচনালগ্নে গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে শত্রুসেনাদের বিতাড়িত করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে জীবনপণ সশস্ত্র লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বীর বাঙালি। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠতম অর্জন- মহান স্বাধীনতা।
চলারপথে ডেস্ক :
বর্তমান সময়ের আলোচিত ব্যক্তিত্ব গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওইয়ান্না ইলাইহি রাজিউন)। জানা যায় ১১ এপ্রিল মঙ্গলবার রাত ১১টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন তার স্ত্রীসহ স্বজন ও দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা। পরে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু একটি গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি স্যারের জীবনের অবসান ঘটেছে।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১টা ১৫ মিনিটে ইন্তেকাল করেছেন। আমরা জানাজা-দাফনের বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবো।’
জানা যায়, মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন বীর সেনানী ও সংগঠন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী চট্টগ্রামের রাউজানে এক মুসলিম পরিবারে তার জন্ম । ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর জন্ম নেয়া মানুষটি ব্যক্তিগত যশখ্যাতি ও সমৃদ্ধির জীবনকে পেছনে ফেলে মুক্তিযুদ্ধের সময় মাটির টানে দেশে ফিরে এসে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত লড়াই করে গেছেন। বাংলাদেশে স্বাস্থ্যখাতের অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি নিরব লড়াই চালিয়ে যান।
অন্যদিকে দেশে রাজনীতির সুস্থধারা ফিরিয়ে আনতেও নিজের অবস্থান থেকে আওয়াজ তুলেছেন বার বার। আর এসব কারণে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে তার বেশ জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করা যায়। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তার অবদানের কথা অজানা ছিল তাদের কাছেও তিনি গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
বাংলাদেশের জন্য অন্তপ্রাণ এই মানুষটির বাবা ছিলেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। রাজধানী ঢাকার বকশীবাজারের নবকুমার স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেছেন তিনি।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৬৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং ১৯৬৭ সালে বিলেতের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস থেকে ভাস্কুলার সার্জারিতে এফআরসিএস প্রাইমারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
জানা যায়, তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর সেনানী ও সংগঠক জাফরুল্লাহ চৌধুরীর লন্ডনে রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে এফআরসিএস পড়ার সময় শুরু হয় স্বাধীনতা যুদ্ধ।
৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যার প্রতিবাদে জনসম্মুখে পাকিস্তানের পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলেন। তারপর বৃটিশ স্বরাষ্ট্র দপ্তর থেকে ‘রাষ্ট্রবিহীন নাগরিকের’ প্রত্যয়নপত্র নিয়ে সংগ্রহ করেন ভারতীয় ভিসা।
দেশের টানে বিলেতের সুখ-সুবিধা ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে লন্ডন থেকে ভারতে এসে আগরতলার মেলাঘরে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে গেরিলা প্রশিক্ষণ নেন।
ভারত থেকে দেশে এসে যোগ দেন সম্মুখ সমরে। গেরিলা যোদ্ধা থেকে হয়ে উঠেন রণাঙ্গনের চিকিৎসক। যুদ্ধাহতদের জন্য খোলেন ফিল্ড হাসপাতাল।
মহান মুক্তিযুদ্ধ শেষে দেশ গড়তে নিজেকে নিয়োজিত করেন বৃটেনে প্রথম বাংলাদেশি সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিডিএমএ)’র প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের বিষয়ে একটি গণমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, আমার পাশে আমার মা থাকবে না, সে দেশে থেকে লাভ আছে? আমার মা বাংলাদেশে ছিল, আমি বিলেতে ছিলাম। আমার মায়ের নির্দেশ ছিল দেশ রক্ষা করো। সে নির্দেশ মেনে আমরা তিন ভাই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি।
যুদ্ধে আহত মুক্তিকামী মানুষকে সেবা দিতে বন্ধু ডা. এমএ মবিনের সহায়তায় ডা. জাফরুল্লাহর গড়ে তোলা ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট ‘বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা পেতেন যুদ্ধে আহতরা।
শুধু তাই নয়, তিনি স্বল্প সময়ের মধ্যে অনেক নারীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য জ্ঞান দান করেন। যা দিয়ে তারা যুদ্ধে আহত রোগীদের সেবা করতেন। ত্রিপুরার ওই ফিল্ড হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করে অগণিত মুক্তিযোদ্ধা ফিরেছিলেন যুদ্ধের ময়দানে। তার এই অভূতপূর্ব সেবা পদ্ধতি পরে বিশ্ববিখ্যাত জার্নাল পেপার ‘ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত হয়।
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীকে বহনকারী যে হেলিকপ্টারটি হামলার শিকার হয়েছিল তাতে অন্যদের মধ্যে ছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের প্রত্যেক মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচলের জন্য পৃথক লেন চেয়ে হাইকোর্টে একটি আবেদন দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি ‘বিশেষ’ ব্যক্তির অপরাধের কারণে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ না করারও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিল সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ ৯ মে মঙ্গলবার পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটে এ সম্পূরক আবেদন করা হয়। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তৈমূর আলম খন্দকার, ইয়ারুল ইসলাম, ব্যারিস্টার মার-ই-য়াম খোন্দকার।
সংশ্লিষ্ট আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, আবু হানিফ হৃদয় নামের যাত্রাবাড়ীর এক বাসিন্দা এ রিট করেন। এর আগেও তিনি এ সংক্রান্ত একটি রিট করেছিলেন। যেটি গত ১৫ জানুয়ারি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করেন হাইকোর্ট।
রিটে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করে সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়। এরপর নতুন করে তিনি একই বিষয়ে আবার রিট করেন।
ওই রিট বিচারাধীন অবস্থায় গত ২২ এপ্রিল উদযাপিত ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পদ্মা সেতু মোটরসাইকেল চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় সরকার যা এখনও কার্যকর রয়েছে। এ পর্যায়ে আগের রিটের সঙ্গে রিটকারী হানিফ হৃদয় হাইকোর্টে সম্পূরক আবেদন দায়ের করেন।
গত বছরের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হয়। পরদিন ২৬ জুন যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। তবে এদিন ভয়াবহ দুর্ঘটনার কারণে পরে এক তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, ২৭ জুন ভোর ৬টা থেকে পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় মোটরসাইকেল চলাচলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদনটি দায়ের করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
মাদারীপুরে কলাগাছিয়া এসিনর্থ উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলাকালীন স্কুলের ফ্যান খুলে পড়ে চারজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আজ ২০ জুন মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলা কেন্দুয়া ইউনিয়নের পশ্চিম কলাগাছিয়া এসিনর্থ উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহতদের উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহত শিক্ষার্থীরা হলো-দশম শ্রেণির হিরামনী, মুনা আক্তার, ইরিনা আক্তার ও সাইমা জাহান। তারা সবাই হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। এদিকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ইরিনা আক্তার, সাইমা জাহান তারা বাসায় ফিরে গেছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের স্কুলের ক্লাস অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১০ মিনিট আগে ঘণ্টা দিলে আমরা পরীক্ষার কক্ষে গিয়ে বসি। তখন হঠাৎ সিলিং ফ্যান খুলে মাথায় পড়ে। এতে আমারা চার থেকে পাঁচজন ছাত্রী আহত হয়েছি। এরপরে কি হয়েছে, তা আমি আর বলতে পারি না। তাৎক্ষণিক আহতদের মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের মধ্যে হীরামনী বেশি অসুস্থ। এতে তার সেলাই লেগেছে। অন্যরা হাতে ও পিঠে আঘাত পেয়েছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আহত শিক্ষার্থী হিরামনীর নানা সামচুল হক মোল্লা বলেন, ‘আমার নাতি খুবই অসুস্থ। তার কপালে আঘাত লেগেছে। সে অনেক অসুস্থ ঠিকমতো কথা বলতে পারে না। আমি এটি মানতে পারতেছি না। কী আজব ঘটনা! একটি বেসরকারি স্কুলের ফ্যান খুলে পড়ে শিক্ষার্থী আহত হবে, এটা ভাবা যায়?’
আহত মুনার বাবা ইদ্রিস মাতুব্বর বলেন, আমার মেয়ে খুবই অসুস্থ। তার হাতে ও মাথায় অনেক আঘাত লেগেছে। এ ঘটনা শিক্ষকদের গাফিলতির কারণে ঘটেছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শান্তি রঞ্জন মন্ডল মুঠোফোনে বলেন, পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১০ মিনিট আগে ঘণ্টা দেওয়া হয়। তারপরে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে প্রবেশ করেন। এর কিছুক্ষণ পর ফ্যান পড়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। এখন তাদের কি অবস্থা, সেটা আমি জানি না।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। যদি কোনো অভিযোগ থাকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।