চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা পাক হানাদার মুক্ত দিবস ৭ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলার দামাল ছেলেরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে নাসিরনগর উপজেলাকে শত্রুমুক্ত করেন। জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা উত্তোলন করে মুক্তিবাহিনীরা।
১৯৭১ সালের ১৫ নভেম্বর পাক হানাদার বাহিনী নাসিরনগর উপজেলায় তাদের বিপুল সংখ্যক সৈন্য ও দেশীয় দোসর, রাজাকার, আলবদর ও আলসামস বাহিনীর সহযোগিতায় গ্রামবাসীর উপর চালায় নিষ্ঠুর অত্যাচার ও নির্যাতন। উপজেলার ফুলপুর, নুরপুর, কুলিকুন্ডা, সিংহগ্রাম ও তিলপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের ঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। পাকবাহিনীর অমানবিক নির্যাতনে বহুলোক নিহত ও আহত হয়। মুক্তিযোদ্ধা ও সংগ্রামী জনতা পাক-বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস লড়াই করে ৭ ডিসেম্বর থানা অভ্যন্তরে (পুলিশ স্টেশন) স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে নাসিরনগরকে পাক-হানাদার মুক্ত করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। আজ ৩০ মার্চ শনিবার বিকেল পাঁচটায় উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের শ্রীঘর গ্রামের পার্শ্ববর্তী ফসলি জমির মাঠে এ ঘটনা ঘটে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: সোহাগ রানা। নিহত আপন বেগম (৩৫) বুড়িশ্বর ইউনিয়নের শ্রীঘর (হাজী বাড়ির) মাহফুজ মিয়ার স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আজ শনিবার বিকেলে হঠাৎ করে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পর থেকে এলাকায় বজ্রসহ বৃষ্টি হতে থাকে। বৃষ্টির মধ্যেই আপন বেগম বাড়ির পাশে ফসলি জমির মাঠ থেকে গরু আনতে যান। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাতে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বুড়িশ্বর ইউনিয়ন পারিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো রুহুল আমিন বলেন, শুনেছি মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে আপন বেগম নামে এক নারী নিহত হয়েছে। তিনি বজ্রপাতের সময় ঘর থেকে বের না হতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করায় স্ত্রী-সন্তানকে অ্যাসিড নিক্ষেপের অপরাধে তিনজনকে আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আজ ১৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এ দণ্ডাদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জেলার নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নের ভলাকুট গ্রামের মৃত আলীম উদ্দিন খানের ছেলে নক্কু খান, মৃত এনাম খানের ছেলে উজ্জল খান, হাফিজ উদ্দিন খানের ছেলে সোহাগ মিয়া। এরমধ্যে সোহাগ ও উজ্জল পলাতক আছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট গ্রামের জহির খান প্রায়ই স্ত্রী সুমা বেগমের ওপর নির্যাতন চালাতেন। এ ঘটনায় তিনি আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। আদালত জহির খানকে কারাগারে পাঠান। এর জেরে জহির খানের স্বজনরা ক্ষুব্ধ হয়ে ২০১৭ সালের ১০ মে সন্ধ্যায় ঘরে ঢুকে সুমা বেগম ও তার ছেলে আকাশ খানের ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ করেন। এ ঘটনায় সুমা বেগম বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে নাসিরনগর থানায় মামলা করেন।
এ বিষয়ে মামলার বাদী সুমা বেগম বলেন, এসিড নিক্ষেপের মত ঘৃণ্য কাজের ঘটনায় আদালত আসামিদের যে দণ্ড দিয়েছেন তাতে আমরা সন্তুষ্ট।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন বিচার প্রক্রিয়ার পর আদালত তাদের দোষী সাব্যস্ত প্রমাণিত করে যে রায় দিয়েছেন তাতে বাদী পক্ষ ন্যায় বিচার পেয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
গ্রাম্য দাঙ্গা রোধে আশুগঞ্জ ও নাসিরনগর উপজেলার ২৫টি গ্রামে অভিযান চালিয়ে প্রায় তিন হাজার দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। ৫ মে শুক্রবার থেকে আজ ৭ মে রবিবার সকাল পর্যন্ত চলা অভিযানে এসব অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তবে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।
এদিকে, এখন থেকে কেউ দেশীয় অস্ত্র বানাতে গেলে তার নাম-ঠিকানা রেখে থানায় পাঠানোর জন্য কামারদের নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ। শনিবার কামারদের নিয়ে সভা করে এ নির্দেশনা দেয় নাসিরনগর থানা পুলিশ।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত এক মাসে নাসিরনগরে বেশ কয়েকটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় কয়েক শ মানুষ আহত হন। এরমধ্যে একজন মারা গেছেন। গ্রাম্য এসব সংঘর্ষ এড়াতে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে নামে পুলিশ। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে কাতরা, সড়কি, রামদা, বল্লম, টেঁটা ও ফলা রয়েছে।
নাসিরনগর থানা পুলিশেরর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকার জানান, অস্ত্র উদ্ধারের পর নতুন করে আর যেন কেউ অস্ত্র বানাতে না পারে সেজন্য কামারদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা করা হয়েছে। কেউ যদি অস্ত্র বানাতে দোকানে যায়, তাহলে তার নাম-ঠিকানা থানায় পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন জানান, সংঘর্ষ এড়াতে প্রতিটি উপজেলায় এ ধরনের অভিযান চালানো হবে। পাশাপাশি মাদক উদ্ধারেও জেলার সীমান্তবর্তী তিন উপজেলায় অভিযান চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসন থেকে নৌকার মনোনয়ন পেতে দলীয় ফরম কিনে জমা দিয়েছেন এক দম্পতি। তাঁরা হলেন কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থবিষয়ক সম্পাদক মো. নাজির মিয়া এবং তাঁর স্ত্রী নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রোমা আক্তার। গতকাল রবিবার দুপুরে তাঁরা নৌকার মনোনয়ন ফরম কিনে শেষ বিকেলে জমা দেন। বিষয়টি আজ ২০ নভেম্বর সোমবার বিকেলে দুজনেই মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন।
দলীয় এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মো. নাজির মিয়া ২০০১ সাল থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য চেষ্টা করে আসছেন। তিনি এলাকায় গণসংযোগ থেকে শুরু করে নানা সামাজিক কর্মকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন। তাঁর স্ত্রী রোমা আক্তারও দলীয় রাজনীতিতে যুক্ত আছেন ছাত্রজীবন থেকেই। রোমা আক্তার নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম নূরের মেয়ে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য এ বি এম ফরহাদ হোসেনসহ দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন মোট ৯ জন। তাঁদের মধ্যে নারী প্রার্থী শুধু একজন।
ছাত্রজীবন থেকে থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত জানিয়ে নাজির মিয়া বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে দলের মনোনয়ন চেয়ে আসছি। আশা করি এবার পাব। আমি এবং আমার স্ত্রী গতকাল দুপুরে মনোনয়ন ফরম কিনে তা পূরণ করে বিকেলেই জমা দিয়েছি।’ স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে মনোনয়ন চাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই এলাকার মানুষের সেবা করতে। দলীয় সভানেত্রী একজন নারী। তিনি নারীদের অগ্রাধিকার দেন। আমাকে কোনো কারণে না দিলেও আশা করি, নারীনেত্রী হিসেবে তাকে (স্ত্রী) দেবেন। এ ছাড়া মনোনয়ন চাওয়া তো তারও অধিকার। সে তার বাবার উত্তরসূরি হিসেবে এলাকার মানুষের সেবা করতে চায়।’
বাবার পথ ধরে মানুষের সেবা করতে চান মন্তব্য করে রোমা আক্তার বলেন, ‘আমাদের দলীয় প্রধান চান নারীরা নেতৃত্বে এগিয়ে আসুক। এ জন্য আমিও প্রার্থী হয়েছি। বাবার উত্তরসূরি হিসেবে এলাকায় আমাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে। আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়েছি আমার স্বামীও চেয়েছেন। আমাদের কাউকেই যদি না দেন দল যাকেই দেবেন, আমরা মেনে নেব। দলের স্বার্থে কাজ করে যাব।’
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনটি নাসিরনগর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এখানকার মোট ভোটার ২ লাখ ৫২ হাজার ৫৪৭ট জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৩ হাজার ১০৯ জন, মহিলা ভোটার ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৩৬ এবং হিজড়া ভোটার ২ জন। এখানে মোট ভোটকেন্দ্র আছে ৭৯টি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা ফরহাদ হোসেন (সংগ্রাম) ও তার স্ত্রীর নগদ অর্থ বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে শেয়ারহোল্ডার ও শেয়ার। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় এ তথ্য উল্লেখ করেছেন তিনি।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামা অনুযায়ী, ফরহাদ হোসেন সংগ্রামের নগদ টাকার পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৭৩ লাখ ৯৯ হাজার ৮৮৯ টাকা। তার স্ত্রীর কোনো নগদ টাকা ছিল না। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, ফরহাদ হোসেন সংগ্রামের নগদ ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৫৬ হাজার ৫৫০ টাকা আছে এবং তার স্ত্রীর আছে ৬৫ লাখ ৬০ হাজার ৮৯৩ টাকা।
২০১৮ সালে সংগ্রামের বন্ড ও ঋণপত্রের শেয়ার ছিল এক কোটি ৪৭ লাখ ২৯ হাজার ৩৮৯ টাকা এবং তার স্ত্রীর নামে ছিল দেড় লাখ টাকার শেয়ার। কিন্তু এবারের হলফনামা অনুযায়ী সংগ্রামের শেয়ার হোল্ডিং ৪ কোটি ও শেয়ার এক কোটি ৪২ লাখ ১৯ হাজার ৪৬৭ টাকা হয়েছে। তার স্ত্রীর শেয়ার হোল্ডিং দেড় লাখের স্থলে গত ৫ বছরের দাঁড়িয়েছে মোট এক কোটি ৩০ লাখ টাকার। এছাড়া ২০১৮ সালে সংগ্রামের স্ত্রীর কোনো স্বর্ণালঙ্কার না থাকলেও গত পাঁচ বছরে ১০০ তোলা স্বর্ণালঙ্কারের মালিক হয়েছেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় সংগ্রামের অন্য বিনিয়োগ ছিল ৯ লাখ ৫০ হাজার ৮০০টাকা। এবারের হলফনামায় তার অন্য মূলধন ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৯৬৯ টাকা ও অন্য বিনিয়োগ ৩৪ লাখ ৫০ হাজার ৮০০ টাকা।
এছাড়া ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা ফরহাদ হোসেন সংগ্রামের দায় ছিল ৭৬ লাখ ৯৮ হাজার ৮১৮ টাকা। এবার নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামায় তার মার্জিন লোন ২২ লাখ ৩১ হাজার ৭৯৭ টাকা ও অফিস ভাড়া বাবদ দায় ৩৭ লাখ ৪২ হাজার ৮৯৮ টাকা।