চলারপথে রিপোর্ট :
৮ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিন সকাল ৯টার দিকে মুজিবনগর সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল জোনের প্রধান জহুর আহমেদ চৌধুরী স্থানীয় পুরাতন কাচারী প্রাঙ্গনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা দেন।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা আওয়ামীলীগ ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কর্মসূচি গ্রহন করা হয়েছে। জেলা আওয়ামীলীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শুক্রবার সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিকে পুষ্পস্তক অর্পন ও বেলা ১১টায় স্থানীয় আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনের মিলনায়তনে আলোচনা সভা।
জেলা প্রশাসনের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ১০টায় শহরের কাউতলীতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামফলক সম্বলিত স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তক অর্পন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে শত্রুমুক্ত করতে ৩০ নভেম্বর থেকে জেলার আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় মিত্রবাহিনী পাকবাহিনীর ওপর বেপরোয়া আক্রমণ চালাতে থাকে। ১ ডিসেম্বর আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় ২০ পাকিস্তানী সৈন্য নিহত হয়। ৩ ডিসেম্বর আখাউড়ার আজমপুরে প্রচন্ড যুদ্ধ হয়। সেখানে ১১ পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। শহীদ হন ৩ মুক্তিযোদ্ধা।
এরই মধ্যে বিজয়নগর উপজেলার মেরাশানী, সিঙ্গারবিল, মুকুন্দপুর, হরষপুর, আখাউড়া উপজেলার আজমপুর, রাজাপুর এলাকা মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে আসে।
৪ ডিসেম্বর পাক হানাদাররা পিছু হটতে থাকলে আখাউড়া অনেকটাই শত্রুমুক্ত হয়। এখানে রেলওয়ে স্টেশনের যুদ্ধে পাক বাহিনীর দু’শতাধিক সেনা হতাহত হয়। ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়।
এরপর চলতে থাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত করার প্রস্তুতি। মুক্তিবাহিনীর একটি অংশ কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে এবং মিত্রবাহিনীর ৫৭তম মাউন্ট ডিভিশন রেজিমেন্টের সদস্যরা আখাউড়া-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেললাইন ও উজানিসার সড়ক দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে।
শহরের চারিদিকে মুক্তিবাহিনী অবস্থান নিতে থাকায় ৬ ডিসেম্বর পাক সেনারা পালিয়ে যাওয়ার সময় রাজাকারদের সহায়তায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজের অধ্যাপক কে. এম লুৎফুর রহমানসহ জেলা কারাগারে আটক অর্ধশত বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষকে চোখ বেঁধে শহরের করুলিয়া খালের পাড়ে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।
৭ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে পাকিস্তানীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ছেড়ে আশুগঞ্জের দিকে পালাতে থাকে। পরে ৮ ডিসেম্বর কোনও ধরনের প্রতিরোধ ছাড়াই ব্রাহ্মণবাড়িয়া শত্রুমুক্ত হয়।
৮ ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে মুজিবনগর সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল যুদ্ধের পরিচালনাকারী জহুর আহমেদ চৌধুরী স্থানীয় পুরাতন কাচারী প্রাঙ্গনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। একই দিন সন্ধ্যায় জেলার সরাইল উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে শফিকুল ইসলাম শফিক হত্যা মামলার ৩ আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। নিহত শফিকুল ইসলাম সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের ঘাটুরা গ্রামের গৌতমপাড়ার ধন মিয়া খন্দকারের ছেলে। শফিক পেশায় একজন ট্রাক চালক ছিলেন।
গতকাল সোমবার রাতে জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের ঘাটুরা গ্রামের খোরশেদ আলীর ছেলে মোঃ কাছম আলী (৫৫), কাছম আলীর ছেলে মোঃ জামান মিয়া (২৭) ও একই গ্রামের মোঃ ডাক্তার আলীর ছেলে মোঃ রিয়াদ মিয়া (২০)।
আজ ৯ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব-৯, সিলেট ক্যাম্পের মিডিয়া অফিসার সহকারি পুলিশ সুপার মোঃ মশিহুর রহমান সোহেল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত ৩ নভেম্বর শুক্রবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার গৌতমপাড়া গ্রামে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে শফিকুল ইসলাম শফিকের চাচাতো ভাই বাকপ্রতিবন্ধী মোঃ আবদুল্লাহর সাথে কাছম আলীর পক্ষের লোকজনের প্রথমে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জেরে পরদিন ৪ নভেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় কাছম আলীর লোকজন শফিকুল ইসলাম শফিকে ঘাটুরা পেট্টোল পাম্পের সামনে একা পেয়ে এলোপাথারি মারধোর ও ছুরিকাঘাত করে।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শফিককে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় শফিকের ভাই বাদী হয়ে কাছম আলীকে প্রধান আসামী করে চারজনের নাম উল্লেখ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতারকৃতদেরকে সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৬৪তম বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আজ ৪ মার্চ শনিবার সকাল ১০টায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ রুহুল আমিন। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম শেখ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার জুলফিকার হোসেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দি ব্লুমিং ফ্লাওয়ার স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, আমেরিকা প্রবাসী বিশিষ্ট সমাজসেবক তাজুল ইসলাম বাবু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক মাজেদুল ইসলাম, আনন্দময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু জামাল, রামকানাই হাই একাডেমির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য আশিকুর রহমান পাঠান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদপত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম শাহজাদা, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য মোঃ তাজুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুর রকিব।
ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শেষে পুরস্কার বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সৃজনশীল কর্মকান্ডের মাধ্যমে নিজেদের আগামী দিনের যোগ্য নাগরিক হয়ে ওঠতে হবে। তিনি বলেন, খেলাধুলা করলে মনের পরিতৃপ্তির পাশাপাশি সুস্থ সবল থাকা সম্ভব। আজ যারা বিজয়ী হবে তারা আগামীতে আরো ভালো করার চেষ্টা করবে, আর যারা বিজিত হবে তারা বিজয়ী হরার চেষ্টা করবে।
উল্লেখ্য, ৬৫টি ইভেন্টে এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাজীপাড়া থেকে ১৫ বছর বয়সী এক স্কুল ছাত্রীকে অপহরনের ১০দিন পর ওই স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করেছে র্যাব-৯-এর সিপিসি-১ হবিগঞ্জের সদস্যরা। আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের আনোয়ারপুর গ্রাম থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় অপহরণকারী বোরহান উদ্দিন (২৮)কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত বোরহান উদ্দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার ভাটামাথা গ্রামের রফিক মিয়ার ছেলে।
ভিটটিম সদর উপজেলার একটি স্কুলের ছাত্রী। তার বাড়ি সদর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামে। দুপুরে উদ্ধারকরা স্কুল ছাত্রীকে র্যাবের পক্ষ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় হস্তান্তর করার পর পুলিশ ওই স্কুল ছাত্রীকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রেরন করে। শুক্রবার বিকেলে র্যাব সিপিসি-১-হবিগঞ্জ থেকে পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ওই স্কুল ছাত্রীর বাবা র্যাব-৯-এর ব্রাহ্মণবাড়িয়া ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগে করে জানায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাত ১১ টার সময় তার কন্যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাজীপাড়া থেকে অটোরিক্সা দিয়ে শহরের কাউতলী যাওয়ার পর কাউতলী গ্রামের গলিপথে যাওয়ার পর বোরহান উদ্দিনসহ তার অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন সহযোগী দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রের ভয়ে দেখিয়ে তার কন্যাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে তিনি এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা ও র্যাব-৯-এর সিপিসি-১ হবিগঞ্জ ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব সদস্যরা ওই স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধারে অভিযানে ও ছায়া তদন্ত শুরু করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের আনোয়ারপুর গ্রাম থেকে স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার ও অপহরণকারী বোরহান উদ্দিন (২৮)কে গ্রেফতার করা হয়।
এ ব্যাপারে র্যাব-৯-এর সিপিসি-১-হবিগঞ্জ ক্যাম্পের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোহাম্মদ নাহিদ হাসান সাংবাদিকদের জানান, গ্রেফতারকৃত বোরহান উদ্দিন বিবাহিত ও তিন সন্তানের জনক। তিনি একজন লেবাসধারি ইমাম। তিনি সদর উপজেলার একটি মসজিদে ইমামতি করেন। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ওই ছাত্রীকে নানাভাবে ফুসলানোর চেষ্টা করে আসছিলেন। তাকে ফুসলাতে না পেরে পরবর্তীতে সহযোগীদের নিয়ে তাকে অপহরণ করেন।
গ্রেফতারকৃত বোরহান উদ্দিন প্রকৃতপক্ষে একজন অপহরণকারী ও ধর্ষক। এর আগেও সে ১০ বছরের এক শিশুকে অপহরণ ও ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত হন। তার বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এ- একটি ধর্ষণ ও অপহরণ মামলা চলমান রয়েছে। (মামলা নং- নাঃ শিঃ ২৪৪/১৯ ইং ও আখাউড়া থানার মামলা নং-০১, তারিখ ০১/০২/২০১৯ইং জিআর-৩৭/১৯)। ওই মামলায় সে দীর্ঘ ১১ মাস হাজতবাস করে জামিনে মুক্ত পেয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে আবারো একই ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ সোহরাব আল হোসাইন বলেন, শুক্রবার দুপুরে র্যাবের পক্ষ থেকে উদ্ধার করা স্কুল ছাত্রী ও গ্রেফতারকৃত বোরহান উদ্দিনকে সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে ভিকটিমকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ও বোরহান উদ্দিনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গোসল করতে গিয়ে ডোবার পানিতে ডুবে আব্দুর রাহিম নামে এক প্রতিবন্ধী শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
আজ ২৭ এপ্রিল শনিবার বিকেল ৫টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের বড়হরণ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত রাহিম (১১) ঐ গ্রামের সবুর মিয়ার ছেলে।
মৃতের চাচা আলী আজম জানান, আব্দুর রাহিম বিকেলে বাড়ির পাশে ডোবায় গোসল করতে গিয়ে ডুবে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন৷ রাহিম প্রতিবন্ধী ছিলো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি মো. আসলাম হোসেন জানান, বিকেলে ডোবাতে ডুবে একটি প্রতিবন্ধী শিশু মারা গেছে। লাশ জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে রাখা আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
আজ ২ অক্টোবর সোমবার সকাল ৮.২৫ মিনিটে তিনি শহরের বাগানবাড়ি এলাকায় তাঁর শ্বশুর বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। তিনি স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে সন্তানসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন রেখে যান।
আল-মামুন সরকারের শ্যালক তানভীর আহমেদ জানান, সোমবার সকাল সাতটার দিকে তিনি ঘুম থেকে উঠে শৌচাগারে যান। পরে আবার ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তাঁর স্ত্রী জিনাত আখতার তাঁকে ডাক দেন। কিন্তু তাঁর কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে চিকিৎসক ডাকলে তিনি এসে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আল-মামুন সরকার দীর্ঘদিন ধরে হার্ট, কিডনি, ফুসফুসসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী আল-মামুন সরকার দশম শ্রেনীতে পড়ার সময় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও জেলা কৃষকলীগের আহবায়ক ছিলেন। ১৯৯৩ সালে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
“নির্লোভ রাজনীতিবিদ ও সাদা মনের মানুষ হিসেবে পরিচিত আল-মামুন সরকার বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনার সাথে যুক্ত ছিলেন। সমাজসেবায় তিনি রাষ্ট্রীয়ভাবে মানবকল্যান পদক লাভ করেন।
এদিকে আল-মামুন সরকারের মৃত্যুর খবর শুনে সকালেই তার বাড়িতে ছুটে যান স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ, পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবির, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজুর রহমান, আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা, নবীনগর পৌরসভার মেয়র শিব শংকর দাস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বাদ আছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ঈদগাহ ময়দানে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে জানাজার আগে মরহুমের কর্মময় জীবনের প্রতি সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আহমদ হোসেন, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এমপি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী এমপি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অবঃ) এ.বি তাজুল ইসলাম এমপি, জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, মরহুমের শ্যালক তানভীর আহমেদ। নামাজে জানাযায় ইমামতি করেন জেলা জামে মসজিদের খতিব সিগবাতুল্লাহ নূর। নামাজে জানাযার আগে জেলা পুলিশের একটি দল রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন করে।
পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবি সংগঠনের পক্ষ থেকে মরহুমের কফিনে পুষ্পস্তক অর্পন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে শহরের শেরপুর কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে তার লাশ দাফন করা হয়।
এদিকে আল-মামুন সরকারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এমপি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী এমপি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসনের এমপি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অবঃ) এ.বি তাজুল ইসলাম এমপি, জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবির, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।