‘টেনশনহীন’ ৩২ আসনে নৌকার প্রার্থী

রাজনীতি, 8 December 2023, 322 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে বিএনপি ও তার সঙ্গীরা ছাড়া প্রায় ২৯টি রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে। এরই মধ্যে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ, জমা দেওয়া ও বাছাইয়ের কাজ শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। সারা দেশের ৩২টি আসনে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী ছাড়া তেমন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নেই। নামমাত্র কয়েকটি দল অংশ নেওয়ায় নৌকার প্রার্থীরা ‘টেনশনহীন’ ভাবেই সময় পার করছেন।

৩২ আসনের প্রতিযোগিতামূলক স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। সেখানে নামমাত্র ভোটে বিজয় নিশ্চিত হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এখানে দলীয় কোনো বিষয় নেই, এটা নির্বাচন কমিশনের বিষয়। কমিশন আচরণবিধি অনুযায়ী চলছে। প্রার্থীরা আদালত পর্যন্ত যেতে পারে। সেখানে আলটিমেটলি যে সিদ্ধান্তে আসবে সেটার ওপর আমাদের কোনো হাত নেই। এ ব্যাপারে বাধাগ্রস্ত করার কোনো প্রক্রিয়াতে আমরা নেই।

জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী বিভিন্ন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও দলের প্রভাবশালী নেতার আসনে দলীয় কোনো নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেননি। তার মধ্যে ৩২টি আসন রয়েছে। এসব আসনে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই।

সেগুলো হচ্ছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪. কুমিল্লা-৯ ও কুমিল্লা-১০, নোয়াখালী-৫, চট্টগ্রাম-৭, ৯ ও ১৩, কক্সবাজার-২, পঞ্চগড়-২, মাগুরা-১, বাগেরহাট-১, পটুয়াখালী-১, শরীয়তপুর-৩, সিলেট-৪ ও ৬, কিশোরগঞ্জ-৪, মানিকগঞ্জ-৩, ঢাকা-১, ঢাকা-৯, ঢাকা ১৫, নারায়ণগঞ্জ-৫, মাদারীপুর-১ ও ২, টাঙ্গাইল-১, টাঙ্গাইল ৮, ময়মনসিংহ-৯, ভোলা-২, বরিশাল-১, ঝালকাঠি-২, বগুড়া-৫ সিরাজগঞ্জ-২ এবং পাবনা-৫ আসন।

এসব আসনের মধ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর অন্যতম সদস্য আমির হোসেন আমু, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শেখ হেলাল উদ্দিন, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ক ম রুহুল হক, সাবের হোসেন চৌধুরী, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের আসন। এছাড়া আরো বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর আসনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রার্থীরা আদালতে গেছেন। আদালতের রায় কী হয় সেটা তো আমরা বলতে পারি না। আগামী ১৭ তারিখের আগে এ ব্যাপারে মন্তব্য না করাই ভালো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিবিহীন ভোটে ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন আওয়ামী লীগ, তাদের জোট ও সমমনা দলের প্রার্থীরা। এবার বিনা প্রতিদ্বদ্বিতায় জয়ী হওয়া ঠেকাতে ‘ডামি’ প্রার্থী রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের চাপ প্রয়োগ না করতে দলীয় প্রার্থীদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কিন্তু দলীয় প্রধানের এমন নির্দেশনার পরও প্রভাবশালী নেতারা নামমাত্র ‘ডামি’ প্রার্থী দিয়েছেন। যাকে কেউ চিনেও না। যার নাম কেউ কখনো শুনেনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ নভেম্বর গণভবনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন-প্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন দলটির সভাপতি। সেখানে নির্বাচনকে উৎসব ও প্রতিযোগিতামূলক করতে নৌকার প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা অন্যান্য দলের কেউ প্রার্থী হলে সহযোগিতা ও উৎসাহ দেওয়ার জন্য দলীয় নেতাদের নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে নির্বাচনের সময় ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসারও নির্দেশ দেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা-১৫ আসনের এক নেতা বলেন, এই আসনে বর্তমান এমপি কী যোগ্য? আর কেউ নেই। অবশ্যই আছে। অনেকেই নৌকার সঙ্গে লড়তে চান। কিন্তু কাউকেই করতে দেওয়া হচ্ছে না। নিজেদের মধ্যে বিজয় রাখতেই এই কৌশল নিয়েছেন দলীয় প্রার্থীরা। আর নেত্রী তো ‘ডামি’ প্রার্থীর কথা বলেছেন, ঢাকার অধিকাংশ আসনে অচেনা মুখকেই ‘ডামি’ প্রার্থী করা হয়েছে। নেত্রী যে উদ্দেশ্যে বলেছেন, নেতারা তার উল্টো করেছেন।

Leave a Reply

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ৮৩…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও সঠিক প্রক্রিয়ায় ৮৩জন Read more

জননিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত…

চলারপথে রিপোর্ট : জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত একান্ত Read more

বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : বিজয়নগর উপজেলা থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ১ Read more

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুরে ১৪৪ ধারা…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ও Read more

বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও Read more
ফাইল ছবি

আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞাতনামা Read more

আখাউড়ায় বিনামূল্যে ধান বীজ বিতরণ চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া উপজেলায় Read more

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় আবু বাক্কার নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : কুয়েতে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় শেখ আবু বাক্কার (৩৪) Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাস উল্টে যাত্রী নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলায় বাস উল্টে গোপী কান্ত ঘোষ Read more

ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশার Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের বিতর্ক প্রতিযোগিতা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের ৩৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে Read more

ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই পাচারকারী গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ১হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গোপাল রায় Read more

কারচুপির চেষ্টা হলে ভোট বন্ধ: সিইসি

জাতীয়, রাজনীতি, 23 December 2023, 673 Views,

চলারপথে ডেস্ক :
একটা ভোটও কারচুপির চেষ্টা হলে তাৎক্ষণিক ভোট বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

আজ ২৩ ডিসেম্বর শনিবার বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আচরণবিধি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একটা ভোটও কারচুপির চেষ্টা করা হলে ভোট বন্ধ করে দেওয়া হবে। নানা কারণে এবার ভোট নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। বিভিন্ন দেশ কথা বলেছ, আমাদের দেশ নিয়ে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট করার দাবি আছে বিদেশিদের। প্রার্থীদের সহায়তায় জাতীয় নির্বাচন সফল করতে চাই।

সিইসি বলেন, নির্বাচনে পক্ষপাতীত্বের কোনো সুযোগ নেই। অনেকে বলেন প্রশাসন সরকারি দলের পক্ষপাতিত্ব করেন। এটা আসলে সঠিক নয়। সবাই সচেতন থাকলে এবং চোখ কান খোলা রাখলে এটা বোঝা যাবে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, প্রচারণার সময় কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে। নির্বাচন কমিশন থেকে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ভোটের মাঠে অনিয়ম করতেই হবে, এই বিশ্বাস থেকে প্রার্থীদের বেরিয়ে আসার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের বলব সিস্টেমের ওপর আস্থা রাখুন। ভোটারদেরই ভোট দিতে হবে, অন্য কেউ দিয়ে দেবে এটা হবে না। রিটার্নিং কর্মকর্তা ভোট পাল্টাতে পারে না। কেন্দ্রে কেন্দ্রে ফল ঘোষণা হয়। প্রার্থীরা ঘরে বসেই জানতে পারেন ফলাফল।

মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কমিশনের সচিব, বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, নির্বাচন কমিশনের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

দ্রব্যমূল্য শিগগিরই নিয়ন্ত্রণে আসবে : সেতুমন্ত্রী

রাজনীতি, 27 January 2024, 267 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
বর্তমান সরকারের নানামুখী উদ্দ্যগে শিগগিরই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ সংকটে পড়লে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হৃদয়ে আঘাত লাগে। সামনে পবিত্র রমজান মাস, অচিরেই আমরা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব। আস্থা হারাবেন না। বিএনপি’র কথায় কান দেবেন না।’

ওবায়দুল কাদের আজ ২৭ জানুয়ারি শনিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশে একথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এই সমাবেশের আয়োজন করে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সঞ্চলনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক প্রমুখ।

বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিদেশিদের ভয় দেখান? ৪১.৮ শতাংশ ভোটারের ভোটে সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকার জনগণের সরকার, নির্বাচিত সরকার। যেখানে ২৮টি দল অংশ নিয়েছে।

তিনি বলেন, সরকারকে যারা বিদেশিদের ভয় দেখায়, তাদের দেশপ্রেম নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। চীন-ভারত-রাশিয়া আমাদের বন্ধু হতে পারে, কিন্তু আমাদের সরকারকে কোনো বিদেশি শক্তি ক্ষমতায় বসায়নি। দেশের মানুষের বিপুল ভোটে এ সরকার নির্বাচিত হয়েছে। শেখ হাসিনা মহান আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পান না।

বিএনপির আন্দোলন কবে হবে- প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৫ বছর গেল, সামনে আরও ৫ বছর। লন্ডনের তারেক রহমানে আর কারো আস্থা নেই। নেতাকর্মীরা এখন আর তারেকের ফরমায়েশে কান দেয় না। আগামী ৩০ জানুয়ারি বিএনপির কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচির দিনও সারা দেশে নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, কালো পতাকা মানে শোকের মিছিল। এ আরেক ভুয়া কর্মসূচি। ৩০ তারিখে আবার ডেকেছে, সেটাও ভুয়া। আপনারা সবাই ৩০ জানুয়ারি সকাল থেকে মাঠে থাকবেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ৩০ তারিখ পতাকা হাতে ‘শান্তি, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন’ সমাবেশে অংশ নেবেন। তারা সতর্ক পাহারায় থাকবেন।

বিএনপিকে ‘অপ-সাম্প্রদায়িক শক্তি’ হিসেবে অভিহিত করে- ওবায়দুল কাদের বলেন, এদের আমরা আর বাড়তে দিতে পারি না, এদের রুখতে হবে। স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে এদের মোকাবিলা করতে হবে।

তিনি বলেন, নির্বাচনের খেলা শেষ, এখন খেলা রাজনীতির। দুর্নীতির বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধেও খেলা হবে। খেলা হবে হরতাল ও আগুন-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। ৩০ তারিখ আবার কালো পতাকা মিছিল। সে দিন আপনারা লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে গণতন্ত্র, শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করবেন।

সমাবেশে বক্তব্য প্রদানকালে বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কালো পতাকা কাকে দেখাবে? বিএনপির উচিত ছিল, নেতারা যারা ব্যর্থ কর্মসূচি দিয়েছে, তাদের কালো পতাকা দেখিয়ে তৃণমূল নেতাদের নেতৃত্বে নিয়ে আসা। এখন বিএনপিকে আগামী পাঁচ বছর নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য এমন কোনো হীন কাজ নেই, যা তারা (বিএনপি) করেনি। বিদেশি ষড়যন্ত্রসহ সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করেছি। আজকে আমাদের আনন্দের দিন, পঞ্চমবারের মতো আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আবার সরকার এসেছে। এতে দক্ষিণ আওয়ামী লীগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

আন্তর্জাতিক বিশ্ব এই সরকারকে সমর্থন জানাচ্ছে জানিয়ে কামরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ করার প্রত্যয় নিয়ে শেখ হাসিনা এগিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি নির্বাচনে না এসে, নির্বাচন বন্ধ করার চেষ্টা করে, মানুষ পুড়িয়ে মেরে যে অপরাধ করেছে- সে অপরাধের বোধ তাদের হবে। তারা হয় তাদের ভুল স্বীকার করে রাজনীতি থেকে বিদায় নেবে, না হয় জনগণের কাছে ভুল স্বীকার করে আবার রাজনীতিতে আসবে।

জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে বিএনপিকে কালো পতাকা দেখিয়ে দিয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধান শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে নির্বাচিত করেছে। বিএনপি কালো পতাকা কাকে দেখাতে চায়? জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে বিএনপিকে কালো পতাকা দেখিয়ে দিয়েছে। তাদের আন্দোলনে বিদেশিরা সাড়া দেয়নি। দেশের জনগণ তাদের কালো পতাকা দেখিয়েছে।

মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, নির্বাচন কোনো দল বয়কট করলে কিছু যায় আসে না। নির্বাচনে এই দেশের জনগণের অংশগ্রহণ বলে দেয় তাদের ষড়যন্ত্র বানচাল হয়ে গেছে। যতক্ষণ জনগণ থাকে ততক্ষণ বানচাল করার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশের মানুষ উন্নয়ন চায়, এই অপশক্তির বিলীন দেখতে চায়। সূত্র : বাসস

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয়টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ৫৪ প্রার্থী

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাজনীতি, 30 November 2023, 617 Views,
ফাইল ছবি

চলারপথে রিপোর্ট :

দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৬টি আসনে ৫৪ জন প্রার্থী মনোয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১-(নাসিরনগর) ৯ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য বি.এম. ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম।

বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রোমা আক্তার ও বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ.টি.এম মনিরুজ্জামান সরকার।

জাতীয় পার্টি থেকে শাহানুল করিম, সদ্য বহিস্কৃত বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা (স্বতন্ত্র প্রার্থী) সৈয়দ এ.কে এমরামুজ্জামান, জাকের পার্টির জাকির হোসেন চৌধুরী, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের ইসলাম উদ্দিন, ওয়ার্কার্স পার্টির মোহাম্মদ বকুল হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নান।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) ১০ প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। প্রার্থীরা হলেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য শাহজাহান আলম সাজু, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈনউদ্দিন মঈন (বিদ্রোহী স্বতন্ত্র), অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ (জাতীয় পার্টি), অ্যাড. জিয়াউল হক মৃধা (স্বতন্ত্র), ছৈয়দ জাফরুল কদ্দুস (বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন), মাইনুল হাসান, (তৃণমূল বিএনপি), রাজ্জাক হোসেন (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি), আবুল হাসনাত (ইসলামী ঐক্যজোট), জহিরুল ইসলাম জুয়েল (জাকের পার্টি), কাজী মাসুদ আহম্মেদ (বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি)।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩-(সদর-বিজয়নগর) আসন:এই আসনে মোট ১২ জন মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, ফিরোজুর রহমান ওলিও (বিদ্রোহী স্বতন্ত্র), রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া (জাতীয় পার্টি), সেলিম কবির (জাকের পার্টি), সৈয়দ নূরে আজম ( ইসলামী ফ্রন্ট), আব্দুর রহমান খান ওমর (জাসদ), মাওলানা মজিবুর রহমান হামিদি (বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন), জহিরুল হক চৌধুরী (স্বতন্ত্র), কাজী জাহাঙ্গীর (স্বতন্ত্র), সৈয়দ মাহমুদুল হক আক্কাস (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি), সোহেল মোল্লা (বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি), জামাল রানা (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন)।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪-(কসবা-আখাউড়া) ৬ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী দুইবারের সংসদ সদস্য ও আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। তারেক এ.আদেল (জাতীয় পার্টি), জাহাঙ্গীর আলম (জাকের পার্টি), শাহীন খান (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি), বজলুর রহমান মিলন (বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টি), সৈয়দ জাফরুল কদ্দুস (বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন)।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর): ১১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের ফয়জুর রহমান বাদল মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে একই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (বিদ্রোহী) হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম মমিনুল হক সাঈদ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের ধর্ম বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার নজরুল ইসলাম ভূইয়া মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া অন্য প্রার্থীরা হলেন, মোবারক হোসেন দুলু (জাতীয় পার্টি), অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আক্তার হোসেন সাঈদ (জাসদ), মেহেদী হাসান (ইসলামী ঐক্যজোট) মো. জামাল সরকার (বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি), মো. মোস্তাক (স্বতন্ত্র), মো.জামসেদ মিয়া (জাকের পার্টি) ও ছৈয়দ জাফরুল কদ্দুস বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, মুফতী হাবিবুর রহমান (তৃণমূল বিএনপি)।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬-(বাঞ্ছারামপুর) এ আসনে মোট ৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। এরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ.বি তাজুল ইসলাম। অ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেন (জাতীয় পার্টি), আব্দুর আজিজ (জাকের পার্টি), সফিকুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), কবির মিয়া (বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি), সফিকুল ইসলাম (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি)।

বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধীদের আশ্রয়স্থল: সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী

নবীনগর, রাজনীতি, 14 July 2023, 1310 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বিএনপির কর্মকাণ্ডে সমালোচনা করে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ হোসেন বলেছেন, বিএনপি মানে বগুড়া-নোয়াখালী পার্টি। এটি কোনো রাজনৈতিক দল নয়।

এটি স্বাধীনতাবিরোধীদের আশ্রয়স্থল। বড় আশা করে তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগাযোগ করেছিল। তারা এসে ঘুরেও গেছে। তাদের একটিই প্রশ্ন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। আমরাও চাইছি সেটা। এখন তারা বিপদে পড়ে গেছে। ভাঙচুর ও জ্বালাও-পোড়াও থেকে তাদের বের হয়ে আসতেই হবে।
আজ ১৪ জুলাই শুক্রবার বিকেলে নবীনগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে স্থানীয় রাজনৈতিক-সংস্কৃতিকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিম বলেন, বিএনপি নির্বাচনকে বানচাল করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে যদি নির্বাচন করতে ব্যর্থ হই তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকার জাতির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হবে। সুতরাং নির্বাচন সময়মতো হবে। সেই নির্বাচনে জনমত কাজে লাগিয়ে কীভাবে আমরা আবারও সরকার গঠন করতে পারি- সেই চেষ্টা করা আমাদের সবার দায়িত্ব।

নবীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন- উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সুজিত কুমার দেব, জেলা পরিষদের সদস্য নাসির উদ্দিন ও সংস্কৃতিকর্মী শুকলা রানী ভট্টাচার্য প্রমুখ। মতবিনিময় সভা শেষে পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

দাফন সম্পন্ন
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের লক্ষীমুড়া গ্রামের নিহত হারুন মিয়ার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। রোববার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় মনিপুর বন্দরবাজার বালুর মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় স্থানীয় হারুন মিয়ার আত্মীয় স্বজনসহ সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে। এর আগে শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে হারুন মিয়া নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরদিন দুপুরে ময়নাতদন্তের পর হারুন মিয়ার মরদেহে এসে পৌঁছায় তার নিজ এলাকায়। মরদেহ পৌঁছার পর থেকেই স্থানীদের ভিড় বাড়ে তার বাড়িতে। এরপর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন, বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজু আহমেদ, পত্তন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ নেতা হৃদয় আহমেদ জালাল, সাবেক মেম্বার সেলিম মিয়া, হোসেন মিয়া, মাওলানা সিরাজ আকরামসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা। নিহত হারুন মিয়ার ভাতিজা সোহেল বলেন, দুধ মিয়া সরাসরি করিম মিয়ার পক্ষে নিয়েছে। যার কারণে আমার চাচা হারুন মিয়া হত্যার শিকার হয়েছে। আমার চাচার হত্যার সাথে দুধ মিয়া জড়িত। দুধ মিয়াসহ যারা আমার চাচাকে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসির দাবি জানাই।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ জানান, শান্তিপূর্ণ ভাবে হারুন মিয়ার জানাযা সম্পন্ন হয়েছে। এলাকায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অভিযুক্ত আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে তিনি জানান।