চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। আজ ৮ ডিসেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা শহরের পশ্চিম পাইকপাড়ায় নিউ স্কয়ার জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ওই হাসপাতালের অভিযুক্ত চিকিৎসক ওবায়দুল হক গাঢাকা দিয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের কাজিরখলা গ্রামের বাসিন্দা নবজাতকের বাবা শাহিদুল আলম জীবন বলেন, আমার স্ত্রী নূরুন্নাহার প্রথমবারের মতো গর্ভবতী হয়। গত ৫ ডিসেম্বর সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে নিউ স্কয়ার জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেয় সে। জন্মের পর শিশুটি অনেকটা সুস্থ ছিল। পরবর্তীতে শারীরিক লক্ষণ কিছুটা খারাপ দেখা গেলে একই হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক ওবায়দুল হককে দেখানো হয়। তার পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা চলছিল। তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। কিন্তু চিকিৎসক ওবায়দুল হক আমাদের বলে যাচ্ছিলেন নবজাতকের শারীরিক অবস্থা ভালো।
তিনি বলেন, শিশুর অবস্থা খারাপ রেখেই তিনি আমাদের রিলিজ দিয়ে দিচ্ছিলেন। এই অবস্থায় আমার নবজাতক সন্তানকে অন্য একটি বেসরকারি শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে চিকিৎসক জানিয়েছেন, ‘ওই হাসপাতালের চিকিৎসক অবহেলা করেছেন। নবজাতকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আরো আগেই ইনকিউবেটরে রাখা উচিৎ ছিল।’ পরে শিশু হাসপাতালে ইনকিউবেটরে রাখা অবস্থায় আমার প্রথম সন্তানটি মারা গেলো।
তিনি আরো বলেন, চিকিৎসকের অবহেলায় আমার সন্তান মারা গেছে। পরে স্কয়ার হাসপাতালে গিয়ে ওই চিকিৎসককে পাইনি। আমি এই ঘটনায় অভিযোগ দেবো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিশু রোগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আকতার হোসেন বলেন, শিশুটির জন্মের সময় ওজন কম হয়েছে এবং তার ইনফেকশন হয়েছিল। এই অবস্থায় সঙ্গে সঙ্গে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো উচিৎ ছিল। সেই হাসপাতালে থাকায় নবজাতকের অবস্থা খারাপ হয়। পরবর্তীতে শিশু হাসপাতালে নিয়ে আসার আধা ঘণ্টার ভেতর নবজাতকটি মারা যায়।
এ বিষয়ে জানতে নিউ স্কয়ার জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের শিশু চিকিৎসক ওবায়দুল হকের চেম্বারে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. একরাম উল্লাহ বলেন, আমাকে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে ট্রাফিকের দায়িত্ব¡ পালন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আজ সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে যানজট নিরসনের জন্য কাজ করতে দেখা গেছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। এর পাশাপাশি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থীরাও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ট্রাফিক জ্যাম নিরসনকল্পে জেলা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ করে যাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কে অবস্থান নিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন শিক্ষার্থীরা। কারও হাতে লাঠি, কারও মুখে বাঁশি। ট্রাফিক পুলিশের মতো ইশারা-ইঙ্গিতের মাধ্যমে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছেন তারা। এদিকে, রাস্তায় পুলিশ প্রশাসনকে দেখা যায়নি। তবে সতর্ক অবস্থায় দেখা গিয়েছে সেনাবাহিনীদের। শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা সকাল থেকেই মেড্ডা থেকে অবস্থান করি নিজ উদ্যোগে। যাতে যানজট না হয় সেদিকের খেয়াল রাখার জন্য আমাদের এই উদ্যোগ। তারা বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে গোটা শহরে কোনো ট্রাফিক পুলিশ নেই। এ অবস্থায় শহরবাসীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা আমাদের দায়িত্ব। এই দায়িত্ব বোধ থেকে আমরা সড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণে নেমেছি। ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা দায়িত্বে না আসা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা এই কাজ চালিয়ে যাবে। একজন পথচারী বলেন, মনে হচ্ছে দেশটি নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। এই স্বাধীনতার জন্য আমরা খুবই খুশি দীর্ঘ ১৫ বছর অপেক্ষার পর এই দিনটি পেয়েছি। সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাস্তায় যানজট নিরসনের জন্য কাজ করছে। এতেও আরও বেশি ভালো লাগছে।
একজন রিকশা চালক বলেন, দেশটা নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। যাদের কারণে দেশ স্বাধীন হলো তারা আজ আবার ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে দেখে খুব ভালো লাগছে। প্রসঙ্গত: গত ৫ আগস্ট সোমবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর থেকে শহরে জনগণের ঢল নামে, বিভিন্ন জায়গায় আনন্দ উল্লাসসহ মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা যায়।
চলারপথে রিপোর্ট :
অন্তিম শয়ানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি। আজ ৯ মার্চ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শহরের শেরপুর গোরস্থানে দাফন করা হয় তাকে। এরআগে শহরের লোকনাথ ময়দানে বাদ মাগরিব নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মো. শাখাওয়াত হোসেন, জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদসহ শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং সর্বস্তরের মানুষ যোগ দেন।
গত ৬ মার্চ রাত সোয়া ১১টার দিকে ভারতের মুম্বাই টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন রিয়াজ উদ্দিন জামি।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫০ বছর। সাংবাদিক জামি গত বছরের আগস্ট মাস থেকে দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারে ভুগছিলেন। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফায় ভারতের মুম্বাইয়ে যান চিকিৎসার জন্য।
১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রথম দৈনিক ‘দৈনিক ব্রাহ্মণবাড়িয়া’র মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেন জামি। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টুয়েন্টিফোর ও দৈনিক জনকন্ঠে ব্রাহ্মণবাড়িয়াস্থ স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন। জামি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার মহেষপুর গ্রামের অধ্যাপক আব্দুস শহিদ ও ফাতেমা বেগমের দ্বিতীয় ছেলে। মৃত্যুকালে রিয়াজ উদ্দিন জামি স্ত্রী, দুই পুত্র সন্তান, দুই ভাই ও ৫ বোনসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
তার মৃত্যুতে বিভিন্ন সংগঠন শোক প্রকাশ এবং মরদেহে পুস্পস্তবক অর্পন করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মধ্যে দিয়ে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তক অর্পন ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। ২৬ মার্চ মঙ্গলবার ভোরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসটির শুভ সূচনা করা হয়।
পরে স্থানীয় ফারুকী পার্কের শহীদ স্মৃতিসৌধে জেলা প্রশাসনের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসনের পক্ষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, জেলা পুলিশের পক্ষে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন।
পরে পুলিশের একটি চৌকষ দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন। পরে শহীদ স্মৃতিসৌধ সর্বস্তরের মানুষের জন্য উম্মুক্ত করা হলে জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষে দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, পৌরসভার পক্ষে মেয়র মিসেস নায়ার কবীর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি,ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনিট, জেলা পরিষদ, সড়ক ও জনপথ বিভাগসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তক অর্পন করা হয়।
স্মৃতিসৌধে আসা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ভ‚ঞা বলেন, আমাদের দাবি ২৫ মার্চ কালরাত্রিকে গণহত্যা দিবসটি হিসেবে আর্ন্তজাতিকভাবে স্বীকৃতি দেয়া ও জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে সকলকে একযোগে কাজ করা।
এদিকে সকাল সাড়ে ৮টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিয়াজ মুহাম্মদ স্টেডিয়ামে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। কুচকাওয়াজ শেষে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ডিসপ্লে প্রদর্শন করে। ডিসপ্লেতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহি পুতুল নাচসহ ইতিহাস ঐতিহ্য ও মহান স্বাধীনতার সংগ্রামের দৃশ্য তুলে ধরা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা ছাত্রদলের দুই পক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ ১২ জুন সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় শহরের বিরাসার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষ চলাকালে অর্ধশত ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কারও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
পুলিশ ও ছাত্রদল সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি ভেঙে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এ নিয়ে নতুন ও পুরাতন কমিটির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। এ ঘটনায় নতুন কমিটির আহ্বায়ক শাহীনুর রহমানের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। আজ সোমবার নতুন আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ আনন্দ মিছিল করার জন্য বিরাসার এলাকায় জড়ো হয়। এ সময় পুরাতন কমিটির আহ্বায়ক ফুজায়েল চৌধুরী ও অন্য নেতৃবৃন্দ একই স্থানে এলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, কমিটি নিয়ে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। একপক্ষ আরেক পক্ষকে লক্ষ্য করে ককটেল ছুড়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
তারুণ্যের উৎসব উদযাপন উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ আয়োজিত পিঠা উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন অত্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু জাফর মোহাম্মদ আরিফ হোসেন।
কলেজের রসায়ন বিভাগীয় প্রধান ও পিঠা উৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর আব্দুল কাদের আলম শাহ্’র সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মোহাম্মদ আবু হানিফ প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, তারুণ্য হচ্ছে আমাদের বিশাল একটা শক্তি। আগামীতে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে তরুণরাই সহযোগিতা করবে। পিঠা উৎসবে ১৫টি স্টলে প্রায় শতাধিক দেশীয় পিঠা প্রদর্শন করা হয়। এর মধ্যে পাপড়ি, ঝিনুক, তালেক কোন, নারিকেল পিঠা, পাক্কন, রেশমী, ঝিল মিল, ডিম সুন্দরী অন্যতম। পরে অতিথিরা বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।