চলারপথে রিপোর্ট :
মহান বিজয়ের ৫২তম বছরের আর এক দিন। এর পরই বাঙালি মেতে উঠবে বাঁধভাঙা উল্লাসে। কিন্তু এই উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে এক রক্তের ইতিহাস।
মৃত্যু, সম্ভ্রমহানি, নির্যাতন, কান্না, ক্ষুধা, ঘরবাড়ি হারানো, শস্যের পোড়া খেত-মুষড়ে পড়া একটা কালের স্মৃতি। ১৯৭১ সালের সেই স্মৃতিকালের একটি ক্ষত বুকের গহিনে আজও হানা দিয়ে যায়।
বিজয়ের ঠিক মাহেন্দ্রক্ষণের আগে জাতি হারায় তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। আজ শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাংলাদেশের মানুষের বেদনাবিধুর দিন।
১৯৭১ সালের এ দিনে দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তার দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস মিলিতভাবে পরিকল্পনা করে বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে।
এ মাটির প্রিয় সেসব সন্তানের লাশের গন্ধ যেন আজও বাতাসে ভাসে। সন্তানহারা মা, স্বামীহারা স্ত্রী, পিতৃহারা সন্তানের করুণ হৃদয়ের কান্না আর রক্তক্ষরণ কেনোদিনও থামার নয়।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালে বাংলার মানুষের ওপর পৃথিবীর ইতিহাসের জঘন্যতম নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। নির্বিচারে বাঙালি হত্যা, মাইলের পর মাইল ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, ভৌত অবকাঠামো ধ্বংস করা, নারীদের সম্ভ্রমহানি-সবকিছুই করেছে তারা। কিন্তু বাঙালির রণকৌশলের কাছে তারা টিকতে পারছিল না।
তাই বাঙালির চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র দুদিন আগে ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামসের সদস্যরা বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিধনে মাঠে নামে।
রাতের অন্ধকারে বাসা অথবা কর্মস্থল থেকে শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে তারা হত্যা করে। এ হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ছিল বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করা।
দেশের নানা জায়গায় হত্যাযজ্ঞ চললেও মূল হত্যাযজ্ঞ চলে রাজধানীর রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে। ঢাকার মিরপুর, রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের লাশ ফেলে রাখা হয়।
১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের পরপরই বুদ্ধিজীবীদের নিকটাত্মীয়রা বধ্যভূমিতে অনেকের লাশ খুঁজে পান। তাদের নিথর দেহজুড়েই ছিল আঘাতের চিহ্ন, চোখ, হাত-পা বাঁধা।
কারও কারও শরীরে একাধিক গুলিও ছিল। ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে অনেককে হত্যা করা হয়েছিল। ক্ষতচিহ্নের কারণে অনেকের লাশ তাদের প্রিয়জনরা শনাক্তও করতে পারেননি।
শহিদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র দেব, অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহমদ, ডা. ফজলে রাব্বী, ডা. মোহাম্মদ মুর্তজা, অধ্যাপক রাশিদুল হাসান, ড. সন্তোষ ভট্টাচার্য, ডা. মোহাম্মদ শফি, সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন, শহীদুল্লা কায়সার, নিজামুদ্দীন আহমদ, খোন্দকার আবু তালেব, আ ন ম গোলাম মোস্তফা, শহীদ সাবের, সৈয়দ নাজমুল হক, জহির রায়হান, আলতাফ মাহমুদ, ড. আবদুল খায়ের, ড. সিরাজুল হক খান, ড. ফয়জল মহী, ডা. আবদুল আলীম চৌধুরী, সেলিনা পারভীন, কবি মেহেরুন্নেসা, গিয়াস উদ্দীন আহমদ প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ভেকু মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে মাটি কেটে বিক্রির অপরাধে পৃথক দুটি অভিযান চালিয়ে তিন মাটি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা বিনতে মতিন। এ সময় একটি ভেকু মেশিন জব্দ করা হয়। গত মঙ্গল ও বুধবার উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের চকুরিয়া ও আজগানা ইউনিয়নের পলাশতলী গ্রামে তিনি এই অভিযান পরিচালনা করেন।
জানা গেছে, পলাশতলী গ্রামে অবৈধভাবে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। খবর পেয়ে বুধবার ইউএনও শাকিলা বিনতে মতিন অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় মাটিকাটার সঙ্গে জড়িত থাকায় ওই গ্রামের আজিজ সিকদারের ছেলে জাহিদুল ইসলামকে ১ লাখ ও বেলতৈল গ্রামের হাকিম সিকদারের ছেলে আনোয়ার সিকদারের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। এর আগে মঙ্গলবার উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের চকুরিয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে মাটি কাটার দায়ে গুনটিয়া গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার ছেলে রাজীব মিয়ার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন তিনি। ইউএনও শাকিলা বিনতে মতিন জানান, অবৈধ মাটি কাটার বিরুদ্ধে তার এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বগুড়ার নন্দীগ্রামে ডাকাতির প্রস্তুুতিকালে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে নন্দীগ্রাম উপজেলার কাথম-কালিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের ভাগবজর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার ও তাদের কাছ থেকে একটি সিএনজিসহ চাকু, লোহার রড উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সিরাজগঞ্জ জেলা সদরের মিরপুর গ্রামের ইব্রাহীম হোসেন (৩৩), সুমন শেখ (২০), আসলাম শেখ (২২) ও জিয়াউল হক শুভ (২০)।
বগুড়ার নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, সোমবার রাতে উপজেলার কাথম-কালিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের ভাগবজর এলাকায় একদল ডাকাতদল ডাকাতির প্রস্তুতি শুরু করে। এমন সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে চারজনকে গ্রেফতার করে। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যাওয়ার মুখে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ তাদের কাছ থেকে দুইটি চাকু, একটি কাঠের বাটযুক্ত লোহার চাকু, দুইটি লোহার রড, তিনটি সাদা রংয়ের নাইলনের রশি এবং একটি সবুজ রংয়ের সিএনজি উদ্ধার করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বগুড়ায় কাগজের ঠোঙায় ওজন জালিয়াতি করায় দুই ফল ব্যবসায়ীকে ১১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আজ ২৪ মার্চ শুক্রবার সকাল ১১ টার দিকে শহরের কাঠালতলায় জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর এ জরিমানা করে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বগুড়ার সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভী জানান, রমজান মসের প্রথম দিনে শহরের কাঠালতলা বাজারে অভিযান চালানো হয়। এই সময় রাজা ফল ভান্ডারের মালিক মো: রাজাকে ৫ হাজার ও আলি ট্রেডার্সের মালিককে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
তিনি আরো জানান, তারা উভয়েই খুচরা ফল ব্যবসায়ী। ফলের সঙ্গে ওজন করে দেওয়া কাগজের ঠোঙার নিচে পৃথক কাগজ দিয়ে দেন তারা। তখন ওই ঠোঙার ওজন ১০০ থেকে আড়াইশ গ্রাম হয়ে যায়। রাজা ফল ফান্ডার এ আলি ট্রেডার্সে এই জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় তাদের জরিমানা করা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
নোয়াখালী পৌর সদরে বাসায় ঢুকে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে গ্রেপ্তার আলতাফ হোসেনের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ ঘটনার যে বর্ণনা দিয়েছে, তা নাকচ করেছে নিহতদের পরিবার।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সুধারাম মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, নিহত নূর নাহার বেগমের সঙ্গে আলতাফের অনৈতিক সম্পর্কের জেরেই এই জোড়া খুন হয়েছে। মা নূর নাহারকে বাঁচাতে গিয়ে খুন হন তাঁর মেয়ে ফাতেমা আজি প্রিয়ন্তী।
তবে আজ ১৫ জুন বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের কাছে পুলিশের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেন নিহত নূর নাহারের স্বামী ফজলে আজিম কচি ও ছেলে রবিউল আলম হৃদয়। তাঁরা ঘটনার অধিকতর তদন্ত দাবি করেছেন।
চাঞ্চল্যকর এ জোড়া খুনের ঘটনায় ফজলে আজিম কচি বুধবার রাতে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে সুধারাম থানায় মামলা করেন। পুলিশ ধৃত আলতাফ হোসেনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রাতেই নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মোসলেহ উদ্দিন মিজানের আদালতে হাজির করে। সেখানে আলতাফ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। সকালে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এ দিন বার্লিংটন মোড় এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, যে দোতলা বাড়িতে হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সেটির গেটে পুলিশের নির্দেশে নিহতদের স্বজনরা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে পার্শ্ববর্তী এলাকা লইয়ার্স কলোনির একটি বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন ফজলে আজিম কচি ও তাঁর নবম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে হৃদয়।
ফজলে আজিম সাংবাদিকদের জানান, বুধবার সন্ধ্যায় যখন পুলিশ সুপার খুনিকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন, সেখানে তাঁরা কথা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাঁদের কথা বলতে দেয়নি।
সংবাদ সম্মেলন শেষে ওসির কক্ষে পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সামনেই তাঁদের বক্তব্য নিয়ে হৃদয় প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছিল, একজন মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে মিথ্যাচার করা ঠিক নয়। এর জবাবে পুলিশ সুপার তাকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আলতাফের বক্তব্য তাঁর মোবাইল ফোনে রয়েছে।
ফজলে আজিম আরো বলেন, পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, জনতার হাতে আটকের পর আলতাফ বাড়িতে আরও দুই ব্যক্তিকে দেখার কথা বলেছেন। ওই দুই ব্যক্তি কারা, সেটি বের করা দরকার। তা ছাড়া ঘটনার আগের দিন এক লোক বাসা ভাড়া নিতে এসেছিল। বাড়ির অপর ভাড়াটিয়ার ফোনে সে ব্যক্তির সঙ্গে আমি কথাও বলেছিলাম। তার বিষয়েও খোঁজ নেওয়া দরকার। তিনি তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে হত্যার অধিকতর তদন্ত এবং বিচার দাবি করেন।
এর আগে হত্যাকাণ্ডের দিন দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মা-মেয়ে খুনের ঘটনায় তিনজন অংশগ্রহণ করে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তাদের মধ্যে একজনকে জনতা ধাওয়া দিয়ে গণধোলাইর পর পুলিশে সোপর্দ করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। পরে অবশ্য পুলিশ সুপারের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ধৃত আলতাফই এই খুন করেছে।
নিহতদের স্বজনের অভিযোগ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুধারাম থানার উপপুলিশ পরিদর্শক প্রমোদ চৌধুরী বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তাই জানানো হয়েছে। তবে তদন্তে আরও নতুন তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে। যদি নতুন কিছু পাওয়া যায় তা পরবর্তী সময়ে জানানো হবে।
সুধারাম থানার ওসি আনোয়ারুল ইসলাম জানান, আসামি আলতাফের কথায় কোনো মিথ্যা আছে কিনা সে বিষয়টি পুলিশ মাথায় রেখে কাজ করছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ছিনতাই করা মালামালসহ দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। ২৪ নভেম্বর শুক্রবার রাত ৮টার দিকে অভিযানটি চালায় র্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের একটি দল।
র্যাব সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের দলটি ভৈরব উপজেলার জগন্নাথপুর মধ্যপাড়ায় অভিযান চালায়। এ সময় দুজনকে গ্রেফতার করে। তারা হলেন ভৈরবের কমলপুর এলাকার জলিল মিয়ার ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২৭) ও জগন্নাথপুর এলাকার মৃত বুলবুল মিয়ার ছেলে রাসের মিয়া (২৫)। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি ল্যাপটপ, একটি মোবাইল ফোনসেট ও নগদ ৭৫০০ টাকা।
র্যাবের স্কোয়াড কমান্ডার মুহা. জাহিদ হাসান গ্রেফতার দুই জনকে ছিনতাইকারীচক্রের সদস্য হিসেবে উল্লেখ করে জানান, তারা দীর্ঘদিন যাবত ছিনতাই করে আসছেন এবং উদ্ধার করা মালামালগুলোও ছিনতাই করে আনা হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন।
পরে তাদেরকে ভৈরব থানায় হস্তান্তর করা হয়।