ডেস্ক রিপোর্ট :
বাঁহাতি পেসার মারুফ মৃধার তোপে দুইশ’র নিচে থামতে হলো ভারতকে। জবাবে ৩৪ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ল বাংলাদেশ। শঙ্কা উড়িয়ে এরপর দলকে টানলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান আরিফুল ইসলাম। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান আহরার আমিন। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতকে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠল টাইগার যুবারা।
দুবাইতে আজ ১৫ ডিসেম্বর শুক্রবার আসরের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে লো স্কোরিং ম্যাচে ভারতকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪২.২ ওভারে মাত্র ১৮৮ রানে অলআউট হয় ভারতীয়রা। লক্ষ্য তাড়ায় ৪৩ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে ১৮৯ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালের টিকিট পেয়েছে তারা। এর আগে ২০১৯ সালের প্রতিযোগিতায় ভারতের কাছে হেরেই রানার্সআপ হয়েছিল বাংলাদেশ।
অথচ যুব এশিয়া কাপের গত ৯ আসরে আটবারের চ্যাম্পিয়ন ছিল ভারত। এর মধ্যে কেবল ২০১৭ সালে ফাইনালে উঠতে পারেনি তারা। ওইবার গ্রুপ পর্বে বিদায় নিয়েছিল দলটি। আর দশম আসরে এসে আরেকবার ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হলো তারা। তাদের নবম শিরোপার স্বপ্ন ভেঙে দিল বাংলাদেশের যুবারা।
একই সময়ে শুরু হওয়া আসরের প্রথম সেমিতে চমক দেখিয়ে জিতে শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে জায়গা করে নিয়েছে আয়োজক সংযুক্ত আরব আমিরাত। রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে তারা পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছে ১১ রানে। আমিরাতের করা ১৯৩ রানের জবাবে শক্ত অবস্থান থেকে পথ হারিয়ে পাকিস্তানিরা থামে ১৮২ রানে। আগামী রোববার ফাইনালে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও আমিরাত।
প্রতিপক্ষের ইনিংসের প্রথম তিনটি উইকেটই যায় মারুফের ঝুলিতে। শেষদিকে বল হাতে ফিরে আরও একবার উচ্ছ্বাস করেন তিনি। সব মিলিয়ে ৪ উইকেট নিতে ১০ ওভারে তিনি দেন ৪১ রান। চারে নামা আরিফুল অল্পের জন্য সেঞ্চুরিবঞ্চিত হন। ৯০ বলের আক্রমণাত্মক ইনিংসে তিনি করেন ৯৪ রান। তার ব্যাট থেকে ৯ চারের সঙ্গে আসে ৪ ছক্কা। ব্যাটিংয়ের শুরুতে ভারত কেঁপে ওঠে মারুফের তীব্র আঘাতে। ডানহাতি পেসার রোহানাত দৌলা বর্ষণ উইকেট শিকারে যুক্ত হলে মহাবিপর্যয়ে পড়ে তারা। এরপর মুশির খান ও মুরুগান অভিষেকের ফিফটিতে তিন অঙ্কের নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা এড়ায় দলটি।
তবে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যটা নাগালের মধ্যেই রাখে বাংলাদেশ। বর্ষণ ৭ ওভারে ৩৯ রানের বিনিময়ে পান ২ উইকেট। অফ স্পিনার শেখ পারভেজ জীবন ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আঁটসাঁট বোলিং উপহার দেন। ৮.৪ ওভারে ২৯ রানে তার শিকার নিচের সারির ২ উইকেট। মাঝে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু পাইয়ে দেন অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি। মুশির ও অভিষেকের ৮৪ রানের জুটি ভাঙেন বাঁহাতি বোলিং অলরাউন্ডার। বাকিটি রানআউট। প্রথম ওভারেই উইকেট হারিয়ে ধাক্কা খায় আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। টাইগার পেসারদের তোপ সামলানোর কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছিল না তারা। একের পর এক ব্যাটার সাজঘরে ফেরায় ১৬তম ওভারে দলীয় ৬১ রানে পতন হয় তাদের ষষ্ঠ উইকেটের।
সপ্তম উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন মুশির ও অভিষেক। তাদের ব্যাটে দুইশর কাছাকাছি পর্যন্ত যেতে পারে ভারত। ছয়ে নামা মুশির ৩ চারে ৬১ বলে করেন ৫০ রান। আটে নামা অভিষেকের ব্যাট থেকে ৬ চার ও ২ ছয়ে আসে ৭৪ বলে ৬২ রান। ভারতের ইনিংসের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান আসে অতিরিক্ত খাত থেকে। বাই, লেগ বাই ও ওয়াইড মিলিয়ে ২০ রান পায় তারা। এছাড়া, দুই অঙ্কে যেতে পারেন দলটির আর মাত্র তিন খেলোয়াড়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বিহাইর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মাঠে ২৩ ডিসেম্বর সকালে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ৬ টিমের মাসব্যাপী প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আজ ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়।এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মেসার্স মোক্তার ব্রিকস লিমিটেড, মেসার্স মুক্তার বিল্টার্স লিমিটেড, মেসার্স মুক্তার ওয়েল মিল এন্ড স্টক হাউস লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী, বিশিষ্ট সমাজ সেবক মোঃ মোক্তার হোসেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন,খেলা ধুলার মাধ্যমে যুবকরা বিকশিত হয়।খেলা ধুলার মাধ্যমে যুবকরা মাদকের করাল গ্রাস থেকে বিরত থাকবে আর এই যুবকরাই একদিন দেশের সেরা খেলোয়াড় হিসবে খ্যাতি লাভ করবে।তারা দেশর বিভিন্ন জায়গায় খেলে আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুনাম বয়ে আনবে বলে আমার বিশ্বাস।এই ক্রিকেট খেলার আয়োজন করেছি, যাতে উঠতি বয়সের যুবকরা বিপদগামী না হয় বিভিন্ন অপকর্মের দিকে না ঝুকতে পারে।উক্ত অনুষ্ঠানে সাবেক ইউপি সদস্য সাদেকুর রহমানের সভাপতিত্বে শেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা যুবলীগের সদস্য ইসমাইল হোসেন হান্নান,ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী খায়রুল আলম, নাটাই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগীতিক সম্পাদক মোঃ শাহানুর মিয়া,ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক আবু হানিফ,জেলা তাতী দলের সাধারন সম্পাদক হাজী আরিফুর রহমান প্রমুখ।বাংলা টাইগার একাদশ ও মিজান একাদশ ফাইনাল খেলায় ।বাংলা টাইগার একাদশ জয়ী লাভ করে প্রথম পুরস্কার গ্রহন করেন।উক্ত খেলার আয়োজনে ছিলেন, আজহার, সোহেল, হানিফ, সুমন, সালাউদ্দিন, মিজান, মনির, নজরুল, রাজিব, অনিক, রাকিব হাসান প্রমূখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেছেন, আজকের ছোট্ট-ছোট্ট সোনামনিরা আগামী দিনে বাংলাদেশের অভিভাক হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধূলার বিকল্প নেই। প্রশিক্ষনের মেধা ভবিষতে দেশের জন্য বিলিয়ে দিবে। আশা করি আজকের ক্ষুদে খেলোয়াড়গন আগামী দিন জাতীয় পর্যায়ে যাবে।
জেলা ক্রীড়া অফিস আয়োজিত আজ ৩১ জানুয়ারি বুধবার বেলা ১২টায় নিয়াজ মোহাম্মদ স্টেডিয়ামে বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচি ২০২৩-২৪ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পর্যায়ে অনুর্ধ্ব-১৬ বালক ও বালিকাদের মাস ব্যাপী এ্যাথলেটিক্স প্রশিক্ষণের সমাপনী ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
জেলা ক্রীড়া অফিসার মাহমুদা আক্তারের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, বিশিষ্ট শিল্পপতি ও কবি দেওয়ান মারুফ, ফুটবল প্রশিক্ষণের কোচ মোঃ রিপন মিয়া, এ্যাথলেটিক্স এর কোচ দিলিপ চন্দ্র দাস।
অনুষ্ঠানটি সার্বিক পরিচালনা করেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ সভাপতি মোঃ আবুল কাসেম। এসময় অনুর্ধ্ব-১৬ বালক ও বালিকা এ্যাথলেটিক্স ও ফুটবল প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি সনদ বিতরণ করেন।
স্পোর্টস ডেস্ক :
‘১৪ সংখ্যাটা খারাপ নয়’ -ম্যাচশেষে বলছিলেন ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশম। ১৪ তার চোখে খারাপ না লাগারই কথা।
কেননা ১৪-০ ব্যবধানেই যে জিব্রাল্টারকে গতকাল উড়িয়ে দিয়েছে তার দল। তুলে নিয়েছেন নিজেদের ইতিহাস ও ইউরো বাছাইয়ে সবচেয়ে বড় জয়।
গোলবন্যার ম্যাচে ফ্রান্সের হয়ে গোলের খাতায় নাম লেখান ৯ জন ফুটবলার। এর মধ্যে হ্যাটট্রিকের দেখা পান কিলিয়ান এমবাপ্পে। জোড়া গোল করেন অলিভিয়ে জিরু ও কিংসলি কোমান। একটি গোল করে ফ্রান্সের হয়ে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার মালিক হন ওয়ারেন জের-এমেরি। ১৭ বছর বয়সী এই ফুটবলারের অভিষেক হয়েছে আজ। তিনি ছাড়াও একটি করে গোল করেছেন মার্কাস থুরাম, জনাথন ক্লস, ইউসুফ ফোফানা, আদ্রিয়ান রাবিওঁ, ওসমান দেম্বেলে।
গতকালের আগে ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় জয় এসেছিল ১৯৯৫ সালে। আজারবাইজানকে সেবার ১০-০ গোলে হারিয়েছিল তারা। এছাড়া ইউরো বাছাইয়ে সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ডটি ছিল জার্মানির। ২০০৬ সালে সান মারিনোকে ১৩-০ গোলে হারায় তারা।
ফ্রান্সের কাছে রেকর্ড হারানো রাতটা ভালোভাবে কাটেনি জার্মানদের। ঘরের মাঠে প্রীতি ম্যাচে ৩-২ গোলে হেরেছে তুরস্কের কাছে। পঞ্চম মিনিটে কাই হাভার্ৎজের গোলে এগিয়ে গেলেও প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই পিছিয়ে পড়ে ২-১ ব্যবধানে। বিরতির পর ৪৮ মিনিটে সমতা ফেরান নিকলাস ফুলক্রুগ। তবে ৭০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে তুরস্ককে জয়সূচক গোলটি এনে দেন ইউসুফ সারি।
অনলাইন ডেস্ক :
গুণী অভিনেতা প্রবীর মিত্র মারা গেছেন। সংকটাপন্ন অবস্থায় তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। ৫ জানুয়ারি রবিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন অভিনেতা মিশা সওদাগর। প্রবীর মিত্র ছিলেন ধর্মান্তরিত মুসলিম। তার পরিবর্তিত নাম ছিল হাসান ইমাম।
ঢাকাই সিনেমার প্রবীণ অভিনেতা ‘রঙিন নবাব’ খ্যাত প্রবীর মিত্র (৮৩) মারা গেছেন। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ৫ জানুয়ারি রবিবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই বর্ষীয়ান অভিনেতার মৃত্যু হয়। ধর্মান্তরিত প্রবীর মিত্রের মুসলিম নাম হাসান ইমাম।
প্রবীর মিত্রের ছেলে মিথুন মিত্র জানিয়েছেন, ৬ জানুয়ারি সোমবার বাদ জোহর এফডিসিতে বাবার প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর নেওয়া হবে চ্যানেলে আইতে, সেখানে আরেক জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে বাবাকে দাফন করা হবে।
নানা শারীরিক জটিলতা নিয়ে গেল ২২ ডিসেম্বর থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন প্রবীর মিত্র।
বিয়ের সময় ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন প্রবীর মিত্র। ওই সময় তার নাম রাখা হয় হাসান ইমাম। প্রবীর মিত্রের স্ত্রী অজান্তা মিত্র মারা যান ২০০০ সালে। তার তিন ছেলে মিথুন মিত্র, সিফাত ইসলাম, সামিউল ইসলাম। এক মেয়ে ফেরদৌস পারভীন। এদের মাঝে সামিউল মারা গেছেন।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রবীর মিত্র ‘লালকুটি’ থিয়েটার গ্রুপে অভিনয়ের মাধ্যমে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে ‘জলছবি’ শিরোনামে সিনেমার মধ্য দিয়েছে বড়পর্দায় তার অভিষেক হয়। ক্যারিয়ারের শুরুতে নায়ক চরিত্রে দেখা গেলেও বেশির ভাগ সিনেমায় চরিত্রাভিনেতা হিসেবে দেখা মিলেছে তার।
অভিনয়ের বাইরে প্রবীর মিত্র ষাটের দশকে ঢাকা ফার্স্ট ডিভিশন ক্রিকেট খেলেছেন, ছিলেন অধিনায়ক। একই সময় তিনি ফার্স্ট ডিভিশন হকি খেলেছেন ফায়ার সার্ভিসের হয়ে। এ ছাড়া কামাল স্পোর্টিংয়ের হয়ে সেকেন্ড ডিভিশন ফুটবলও খেলেছেন।
সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় অভিনয় শুরু করেন প্রবীর মিত্র। এইচ আকবর পরিচালত ‘জলছবি’ সিনেমাতে চিকিৎসকের চরিত্রের মধ্যে দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে সূচনা হয় তার। এরপর একই পরিচালকের ‘জীবন তৃষ্ণা’ সিনেমায় মূল চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেছে ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘চাবুক’, ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’সহ বেশ কিছু চলচ্চিত্রে।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তার পুরস্কার ভাগ্য প্রসন্ন নয়। কেবল ‘বড় ভালো লোক ছিল’ সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব চরিত্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
দিনের শুরুটা ভালো না হলেও পরবর্তীতে বোলার ও ব্যাটারদের দুর্দান্ত নৈপুন্যে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ৯ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৭০ রানের বড় ব্যবধানে এগিয়ে থেকে চালকের আসনে বসে গেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ।
আজ ১৫ জুন বৃহস্পিতবার সকালে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩৮২ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এরপর আফগানিস্তানকে প্রথম ইনিংসে ১৪৬ রানে গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশের বোলাররা। এতে প্রথম ইনিংস থেকে টাইগাররা ২৩৬ রানের লিড পেলে ফলো-অনে পড়ে আফগানিস্তান। কিন্তু আফগানিস্তানকে ফলো-অন না করিয়ে ম্যাচের তৃতীয় ইনিংসে দ্বিতীয়বারের মত ব্যাট হাতে নেমে দ্বিতীয় দিন শেষে ১ উইকেটে ১৩৪ রান করে বড় লিড দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশ।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম দিন শেষে ৭৯ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৬২ রান করেছিলো বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্ত ১৪৬, মাহমুদুল হাসান জয় ৭৬ রানে আউট হন। দিন শেষে মুশফিকুর রহিম ৪১ ও মেহেদি হাসান মিরাজ ৪৩ রানে অপরাজিত ছিলেন।
আজ, দ্বিতীয় দিন ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশের পরের দিকের ব্যাটাররা। বাকী ৫ উইকেটে মাত্র ২০ রান যোগ করতে পারে বাংলাদেশ। ৯ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় টাইগাররা। এরমধ্যে ৩টিই নেন আফগানিস্তানের হয়ে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা নিজাত মাসুদ।
মুশফিক ৭৬ বলে ৪টি চারে ৪৭ ও মিরাজ ৮টি চারে ৮০ বলে ৪৮ রানে আউট হন। লোয়ার অর্ডারে তাসকিন আহমেদ ২, তাইজুল শূন্য, শরিফুল ইসলাম ৬ রানে আউট হন। বল হাতে আফগানদের পক্ষে সেরা বোলার ছিলেন প্রথম দিন ২ উইকেট নেয়া মাসুদ। ১৬ ওভারে ৭৯ রানে ৫ উইকেট নেন তিনি।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে খেলতে নেমে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আফগানিস্তানের দুই ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান ও আব্দুল মালিক। ৫ ওভারে ১৭ রান তুলে ফেলেন তারা। অবশ্য দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে বিচ্ছিন্ন হতে পারতেন জাদরান ও মালিক। শরিফুলের বলে লিটনের হাতে জীবন পান জাদরান।
জীবন পেয়ে সুবিধা করতে পারেননি জাদরান। ষষ্ঠ ওভারে শরিফুলের শিকার হন তিনি। ৬ রান করেন জাদরান। এরপর আফগানিস্তানের উপর চাপ বাড়ান আরেক পেসার এবাদত। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে আফগানদের ২ উইকেট তুলে নেন এবাদত। মালিককে ১৭ ও রহমত শাহকে ৯ রানে শিকার করেন এবাদত। এতে ৩ উইকেটে ৩৫ রান নিয়ে বিরতিতে যায় আফগানিস্তান।
বিরতি থেকে ফিরে আফগানিস্তান শিবিরে দ্বিতীয়বারের মত আঘাত হানেন শরিফুল। অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শাহিদিকে ৯ রানে থামান তিনি। এতে ৫১ রানে ৪ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। এ অবস্থায় দলের হাল ধরে বাংলাদেশের বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন আফসার জাজাই ও নাসির জামাল। জুটিতে ৭৩ বলে ৬৫ রান তুলে উইকেটে সেট হয়ে যান তারা। এ অবস্থায় জুটি ভাঙ্গতে মরিয়া ছিলো বাংলাদেশ।
অবশেষে দলীয় ১১৬ রানে জামালকে লেগ বিফোর আউট করে বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন মিরাজ। ৬টি চারে ৩৫ রান করেন জামাল।
মিরাজের ব্রেক-থ্রুর পর আফগানিস্তানকে চেপে ধরেন এবাদত ও তাইজুল। এতে ৩৯ ওভারে ১৪৬ রানে শেষ হয় আফগানদের প্রথম ইনিংস। আফগানদের পক্ষে জাজাই সর্বোচ্চ ৩৬ ও জানাত ২৩ রান করেন।
এবাদত ৪৭ রানে ৪টি, শরিফুল ২৮ রানে, তাইজুল ৭ রানে এবং মিরাজ ১৫ রানে ২টি করে উইকেট নেন। ইনিংসে ২ উইকেট নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৫০ ও মিরপুরের ভেন্যুতে ৫০ শিকার পূর্ণ করেন মিরাজ।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৩৮২ রানের জবাবে ১৪৬ রানে অলআউট হয়ে ফলো-অনে পড়ে আফগানিস্তান। কিন্তু আফগানদের ফলো-অন না করিয়ে ম্যাচের ২৩৬ রানে এগিয়ে থেকে তৃতীয় ইনিংসে আবারও ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ।
জাকির হাসানকে নিয়ে ইনিংস শুরু করে প্রথম ওভারের শেষ বলে ক্যাচ দিয়ে জীবন পান মাহমুদুল হাসান জয়। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে আফগানিস্তানের বাঁ-হাতি স্পিনার আমির হামজার বলে আউট হন ৪টি চারে ১৩ বলে ১৭ রান করা জয়।
দলীয় ১৮ রানে জয়ের বিদায়ের পর জাকিরকে নিয়ে ওয়ানডে স্টাইলে খেলেছেন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যক্তিগত ৯ রানে জীবন পেয়ে আহমাদজাইর করা ১৮তম ওভারে শেষ চার বলে চারটি বাউন্ডারি মারেন শান্ত।
ইনিংসের ২১তম ওভারে বাউন্ডারি মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান জাকির। পরের ওভারের প্রথম বলে চারের সহায়তায় টেস্টে চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি করেন শান্ত। হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে অবিচ্ছিন্ন থেকে দিন শেষ করেন জাকির ও শান্ত। দু’জনই ৬৪ বল করে খেলে সমান ৫৪ রানেই অপরাজিত আছেন। জাকির ৬টি ও শান্ত ৮টি চার মারেন।
স্কোর কার্ড (টস-আফগানিস্তান)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস (প্রথম দিন শেষে ৩৬২/৫, ৭৯ ওভার, মুশফিক ৪১*, মিরাজ ৪৩*) :
মাহমুদুল হাসান ক ইব্রাহিম ব রহমত ৭৬
জাকির হাসান ক আফসার ব নিজাত ১
নাজমুল হোসেন শান্ত ক নাসির ব হামজা ১৪৬
মোমিনুল হক ক আফসার ব নিজাত ১৫
মুশফিকুর রহিম ক জামাল ব মাসুদ ৪৭
লিটন দাস ক ইব্রাহিম ব জহির ৯
মিরাজ ক হামজা ব আমাদজাই ৪৮
তাসকিন এলবিডব্লু ব আজাদজাই ২
তাইজুল ক মালিক ব নিজাত ০
করিফুল বোল্ড মাসুদ ৬
এবাদত অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (বা-৮, লে বা-১, নো-১৬, ও-৭) ৩২
মোট (অলআউট, ৮৬ ওভার) ৩৮২
উইকেট পতন : ১/৬ (জাকির), ২/২১৮ (মাহমুদুল), ৩/২৫৬ (মোমিনুল), ৪/২৭১ (শান্ত), ৫/২৯০ (লিটন), ৬/৩৭৩ (মিরাজ), ৭/৩৭৫ (মুশফিক), ৮/৩৭৫ (তাইজুল), ৯/৩৭৭ (তাসকিন), ১০/৩৮২ (শরিফুল)।
আফগানিস্তান বোলিং :
আহমদজাই : ১০-১-৩৯-২ (নো-১),
মাসুদ : ১৬-২-৭৯-৫ (ও-১, নো-৪),
জানাত : ১১-৩-৩৩-০ (ও-১),
জহির : ১৬-০-৯৮-১ (ও-১, নো-৮),
হামজা : ২৪-১-৮৫-১ (নো-৩),
শাহিদি : ৩-০-৯-০
রহমত : ৬-১-৩০-১।
আফগানিস্তান প্রথম ইনিংস :
জাদরান ক লিটন ব শরিফুল ৬
মালিক ক জাকির ব এবাদত ১৭
রহমত ক তাসকিন ব এবাদত ৯
শাহিদি ক মিরাজ ব শরিফুল ৯
জামাল এলবিডব্লু ব মিরাজ ৩৫
জাজাই ক শরিফুল ব এবাদত ৩৬
জানাত স্টাম্প লিটন ব মিরাজ ২৩
হামজা ক মোমিনুল ব এবাদত ৬
আহমাদজাই ক লিটন ব তাইজুল ০
মাসুদ ক জাকির ব তাইজুল ০
জহির অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (লে বা-১, নো-৪) ৫
মোট (অলআউট, ৩৯ ওভার) ১৪৬
উইকেট পতন : ১/১৮ (জাদরান), ২/২৪ (মালিক), ৩/৩৫ (রহমত), ৪/৫১ (শাহিদি), ৫/১১৬ (জামাল), ৬/১১৬ (জাজাই), ৭/১২৮ (হামজা), ৮/১৪০ (আহমাদজাই), ৯/১৪৬ (মাসুদ), ১০/১৪৬ (জানাত)।
বাংলাদেশ বোলিং :
তাসকিন : ৭-০-৪৮-০ (নো-৪),
শরিফুল : ৮-২-২৮-২,
এবাদত : ১০-১-৪৭-৪,
তাইজুল : ৫-০-৭-২,
মিরাজ : ৯-১-১৫-২।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস :
মাহমুদুল হাসান ক জাদরান ব হামজা ১৭
জাকির হাসান অপরাজিত ৫৪
নাজমুল হোসেন শান্ত অপরাজিত ৫৪
অতিরিক্ত (নো-৩, ও-৬) ৯
মোট (১ উইকেট, ২৩ ওভার) ১৩৪
উইকেট পতন : ১/১৮ (জয়)।
আফগানিস্তান বোলিং :
আহমদজাই : ৫-০-৩৪-০,
মাসুদ : ৩.৫-০-৩০-০ (নো-৩),
হামজা : ৬.১-০-২৭-১,
জানাত : ৪-০-২৪-০ (ও-২),
জহির : ৪-০-১৯-০।