চলারপথে রিপোর্ট :
শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের আয়োজনে আজ ১৫ ডিসেম্বর শুক্রবার সকালে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকাল ১১ টায় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সহ-সভাপতি নিয়াজ মুহাম্মদ খাঁন বিটুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি খ.আ.ম রশিদুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আরজু, সাহিত্য একাডেমীর সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের গবেষক কবি জয়দুল হোসেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আহবায়ক অ্যাডভোকেট আবদুন নূর, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দীপক চৌধুরী বাপ্পী, সাবেক-সহ-সভাপতি সৈয়দ আকরাম হোসেন, সাবেক-সহ-সভাপতি মফিজুর রহমান লিমন, প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিহাব উদ্দিন বিপু, সাবেক কোষাধ্যক্ষ মোঃ আশিকুল ইসলাম, জিটিভির জেলা প্রতিনিধি জহির রায়হান, যমুনা টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম, এশিয়ান টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার হাবিবুর রহমান পারভেজ। স্বাগত বক্তব্য প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, পাকিস্তানী শাসকরা যুদ্ধে তাদের নিশ্চিত পরাজয় আঁচ করতে পেরে বিজয়ের মাত্র দুইদিন আগে বাংলাদেশকে মেধাশুন্য করার জন্য দেশের সূর্যসন্তান বুদ্ধিজীবীদেরকে হত্যা করেছে। কিন্তু আমাদের দূর্ভাগ্য স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে আমাদের দেশে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা করা হয়নি। এখনো হয়নি রাজাকারদের তালিকা। বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ বলেন, মহান স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও এখন নতুন করে মুক্তিযোদ্ধা বানানো হচ্ছে।
বক্তারা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মীদের ভূমিকা ছিলো অপরিসীম। সাংবাদিকরা পাকিস্তানী শাসকদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠন করেছিলেন।
বক্তারা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মুক্তিযোদ্ধারা দীর্ঘ ৯ মাস পাকিস্তানী সেনাদের সাথে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে এই দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। কিন্তু যে স্বপ্ন ও আকাক্সক্ষা নিয়ে এই দেশকে স্বাধীন করা হয়েছিলো, সেই স্বপ্ন এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। স্বাধীন দেশে এখনো বৈষম্য রয়ে গেছে। দেশে দিন দিন কোটিপতির সংখ্যা বাড়ছে। বক্তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি অসাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যহীন দেশ গঠনে সবাইকে দেশেপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে একসাথে কাজ করার আহবান জানান।
বক্তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে বধ্যভূমি চিহ্নিত করা, শহিদ বুদ্ধিজীবীদের পূর্নাঙ্গ তালিকা, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারদের তালিকা তৈরীর করার আহবান জানান।
আলোচনার সভার আগে শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সকল মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন বেলাল, সংস্কৃতি ও তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোজাম্মেল চৌধুরী, একাত্তর টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি জালাল উদ্দিন রুমি, খোলা কাগজের জেলা প্রতিনিধি রতন, জাগো নিউজের জেলা প্রতিনিধি আবুল হাসনাত রাফি, দেশ িেটিভর জেলা প্রতিনিধি মেহেদি নূর পরশ, দৈনিক বাংলার জেলা প্রতিনিধি মাজহারুল করিম অভি, প্রতিদিনের বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি ইফতেয়ার রিফাত, আমার সময়ের জেলা প্রতিনিধি আল-মামুন, বাংলাদেশের আলোর জেলা প্রতিনিধি মাঈনুদ্দিন রুবেল, চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ দাস প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
লায়ন্স ক্লাব অব ঢাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্যোগে ফ্রি ডায়াবেটিস চেক-আপ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
আজ ১১ অক্টোবর শুক্রবার সকালে শহরের বর্ডার বাজারে ব্রাদার্স ক্লাব প্রাঙ্গনে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন।
ক্লাবের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট লায়ন প্রফেসর ডাঃ মো রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ক্লাব সেক্রেটারি লায়ন এটিএম ফয়েজুল কবির এমজেএফ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ক্লাব ট্রেজারার লায়ন শরিফুল হক, যুগ্ম ট্রেজারার লায়ন স্বপন কুমার দেবনাথ, লিও এডভাইজর লায়ন আর্কিটেক্ট মো রুবেল মিয়া। সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১ টা পর্যন্ত ১২৫ জনের ডায়াবেটিস চেক-আপ করা হয়। এই কাজে সহযোগিতা করেন ঐশী, আরশী, আরিয়ান, মুতাসিম বিল্লাহ ও আবুল খায়ের। এছাড়াও স্থানীয় বয়োজেষ্ঠ্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন উর্ধ্বগতি, সংসদ বাতিল এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১ দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কালো পতাকা মিছিল করেছে জেলা বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা।
দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ ৩০ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকেলে শহরের কান্দিপাড়া এলাকা থেকে কালো পতাকা হাতে একটি মিছিল বের হয়। পরে মিছিলটি মাদ্রাসা মোড় গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির একাংশের সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম সিরাজ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য আসাদুজ্জামান শাহীন, সাবেক শিশু বিষয়ক সম্পাদক আল আমিন লিটন, কুমিল্লা বিভাগীয় যুবদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি তাজুল ইসলাম, জেলা স্বেচ্ছাসবক দলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলীপ, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহিনুর রহমান শাহিন, সদস্য সচিব সমীর চক্রবর্তীসহ দলের নেতাকর্মীরা।
বক্তব্যে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের মানুষ ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে গত ৭ জানুয়ারীর জতীয় সংসদ নির্বাচনকে বর্জন করেছে। এটি একটি ডামি নির্বাচন। তাই এই নির্বাচন বাতিল করে দেশের মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে সেজন্য নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবি জানান তারা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গাঁজাসহ দুই নারী মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ।
আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার সকালে শহরের ডাকবাংলো মোড় থেকে তাকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন, লাকি বেগম (২৫) ও শান্তা আক্তার (১৮)।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন জানান, ডাকবাংলো মোড় এলাকায় মাদক কেনা বেচা হচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সকাল ৬টার দিকে সেখানে অভিযান চালিয়ে দুই নারী ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে।
এ সময় তাদের সাথে থাকা ব্যাগ তল্লাশী করে ১০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ক্রমেই চাঙ্গা হয়ে উঠেছে আবাসন ব্যবসা। অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি ও পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভেবে মানুষ এখন ফ্ল্যাটমুখী। গত ৫ বছরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আবাসন ব্যবসা।
তবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে রড, সিমেন্টসহ নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে ফ্ল্যাটের দাম। প্রতিবছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে বিক্রি হচ্ছে কমপক্ষে তিনশত ফ্ল্যাট। যার বাজার মূল্য প্রায় একশত পঁচিশ কোটি টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক বছরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে জায়গার দাম বেড়েছে কয়েক গুন। নিম্ন আয়ের লোকেরা তাদের চাহিদামতো শহরে জায়গা কিনে বাড়ি করতে পারছেন না, তাই তারা ফ্ল্যাটের দিকেই ঝুঁকছেন। আবার অনেক প্রবাসীরাও তাদের সন্তানের লেখাপড়ার সুবিধার্থে শহরে ফ্ল্যাট কিনছেন।
এছাড়াও জায়গা কিনে বাড়ি নির্মান করা বিরাট ঝামেলার কাজ ও বাড়ি নির্মানে পৌরসভার অনুমোদন পাওয়া আগের চেয়ে কঠিন হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানুষ এখন ফ্ল্যাটমুখী হচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ১০ বছর আগেই আবাসন ব্যবসা শুরু হয়। তবে মানুষ বর্তমানে ফ্ল্যাটমুখী হওয়ায় গত ৫ বছর ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবাসন ব্যবসা চাঙ্গা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ফ্ল্যাটের মালিক বলেন, শহরে জায়গার দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার কারণে জায়গা কিনে বাড়ি করতে পারবোনা বুঝে ফ্ল্যাট কিনেছি। তাছাড়া ফ্ল্যাটে রয়েছে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা।
কয়েক ফ্ল্যাট মালিক বলেন, বর্তমানে শহরে বাড়ি নির্মাণের জন্য জায়গা-জমি কেনা, নির্মাণ সামগ্রী রাখার জায়গার অভাব এবং ভবন নির্মাণে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে অনুমোদন নেওয়াসহ নানা জটিলতার কারনে আমরা ফ্ল্যাট কিনেছি।
আবার অনেক বাড়ির মালিক নিজেরা একটু আরাম-আয়েশে ও বিলাসী জীবনযাপনের জন্য তাদের বাড়ি আবাসন ব্যবসায়ীদেরকে (ডেভলাপার) দিয়ে দিচ্ছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলাকা ও জায়গার অবস্থান ভেদে আবাসন ব্যবসায়ীদের (ডেভলাপারদের) ৬০ ভাগ, জায়গার মালিকের ৪০ ভাগ, ডেভলাপারদের ৫৫ ভাগ, জায়গার মালিকের ৪৫ ভাগ, ডেভলাপারদের ৫০ ভাগ, জায়গার মালিকের ৫০ ভাগ হারে জায়গার মালিকরা তাদের জায়গা আবাসন ব্যবসায়ীদেরকে দিয়ে দিচ্ছেন।
আবাসন ব্যবসায়ীরা ওই জায়গা নিয়ে দুই ইউনিট, তিন ইউনিট ও চার ইউনিটের ৬তলা, ৮তলা, ১০তলা, ১২তলা ভবন নির্মান করছেন। তবে গত কয়েক বছর ধরে পৌরসভা থেকে ৬ তলার উঁচু ভবনের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছেনা।
জেলা শহরের মৌলভীপাড়া, হালদারপাড়া, বাগানবাড়ি, পাইকপাড়া, কাজীপাড়া, কাউতলী ও মুন্সেফপাড়া এলাকায় ফ্ল্যাটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।বর্তমানে এলাকা ও জায়গার অবস্থান ভেদে ফ্ল্যাটের প্রতি স্কয়ার ফুটের মূল্য ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা। যা আগে ছিল ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত।
শহরের হালদারপাড়ার বাসিন্দা বকুল মিয়া বলেন, শহরে জায়গার দাম খুবই বেশী। তাই তিনি সাড়ে চার হাজার টাকা স্কয়ারফুট দামে ১হাজার ২শত স্কয়ারফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। দুই ইউনিটের ৮তলা বিশিষ্ট ভবনটিতে লিফট, জেনারেটর, পানিসহ সকল সুবিধা রয়েছে। তবে গ্যাস নেই। তিনি সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করেন।
শহরের পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা মোঃ আল-আমিন বলেন, শহরে জায়গার দাম বেশী। তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে শহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন। শহরে জায়গা কিনে তার পক্ষে বাড়ি করা সম্ভব নয় বিধায় তিনি গ্রামে কিছু জায়গা-জমি বিক্রি করে ৩৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। তিনি জানান, তার বাসায়ও গ্যাস নেই। তিনিও সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি স্কুলের একজন শিক্ষক জানান, তিনি আশুগঞ্জের একটি সরকারি স্কুলে চাকুরি করেন। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার কথা চিন্তা করে গত ১০/১২ বছর ধরে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে শহরের মুন্সেফপাড়ায় ১হাজার ২শত স্কয়ারফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন।
সেলিম মিয়া নামে একজন প্রবাসী জানান, তার বাড়ি নবীনগর উপজেলায়। ছেলেমেয়েদর লেখাপড়ার কথা চিন্তা করে তিনি শহরের বাগানবাড়ি এলাকায় সাড়ে চার হাজার টাকা স্কয়ারফুট দামে ১০৫০ স্কয়ারফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন।
শহরের কাজীপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমগীর জানান, শহরের প্রতিটি মহল্লাতেই এখন চড়া দামে জায়গা বিক্রি হচ্ছে। ফলে জায়গা কিনে বাড়ি নির্মাণ করা মধ্যবিত্তদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই মানুষ এখন ফ্ল্যাটের দিকে ঝুঁকছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কলেজ শিক্ষক জানান, শহরে জায়গার দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা তিন বন্ধু মিলে বছর পাচেক আগে হালদারপাড়া এলাকায় এক বাড়ির মালিকের কাছ থেকে অর্ধেক অর্ধেক হারে ৪ শতক জায়গা নিয়ে তাতে দুই ইউনিটের ৬তলা ভবন নির্মান করেছেন। তারা তিন বন্ধু পেয়েছেন ৬টি ফ্ল্যাট ও মালিক পেয়েছেন ৬টি ফ্ল্যাট। এতে তারা লাভবান হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরে কমপক্ষে ১৫ থেকে প্রতিষ্ঠান আবাসন ব্যবসার সাথে জড়িত। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ঠিকাদারও আছেন। আবার ৭/৮জন যুবক মিলেও আবাসন ব্যবসা করছেন। এলাকা ভেদে ও জায়গার অবস্থান বুঝে জায়গার মালিকদের সাথে চুক্তি করেন আবাসন ব্যবসায়ীরা। আবাসন ব্যবসায়ীদের (ডেভলাপারদের) ৬০ ভাগ, জায়গার মালিকের ৪০ ভাগ, ডেভলাপারদের ৫৫ ভাগ, জায়গার মালিকের ৪৫ ভাগ, ডেভলাপারদের ৫০ ভাগ, জায়গার মালিকের ৫০ ভাগ হারে জায়গার মালিকরা তাদের জায়গা আবাসন ব্যবসায়ীদেরকে দিয়ে দিচ্ছেন। ভবন নির্মানের সকল খরচ বহন করেন আবাসান ব্যবসায়ীরা। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে আবাসন রেডি হওয়া পর্যন্ত জায়গার মালিক অন্য যে বাসায় ভাড়া থাকেন সেই ভাড়াও পরিশোধ করেন আবাসন ব্যবসায়ীরা।
কয়েকজন আবাসন ব্যবসায়ী জানান, ভবন নির্মাণের জন্য পৌরসভা থেকে নকশা অনুমোদন নিতে হয়। যে স্থানে ভবন নির্মাণ করা হবে- তার পাশে ১৪ থেকে ১৬ ফুট পর্যন্ত রাস্তা থাকলেই ছয়তলা বিশিষ্ট ভবনের অনুমোদন দেয়া হয়। তারা জানান, পৌর শহরের অধিকাংশ এলাকাতেই এই আকারের রাস্তা নেই। এজন্য ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত বিদ্যমান বিধি শিথিল করার দাবি জানান তারা।
আবাসন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রফিক কনস্ট্রাকশনের মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, “ মানুষ বাড়ি নির্মাণের ঝামেলা এড়াতে ফ্ল্যাটের দিকে ঝুঁকছেন। সবাই চান ঝামেলামুক্ত আবাসন। আমরা মানুষকে সকল সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ফ্ল্যাট দিচ্ছি। এছাড়া মধ্যবিত্তরা কিস্তির মাধ্যমেও ফ্ল্যাট কিনতে পারছেন।
আবাসন ব্যবসায়ী মোঃ কাদেরউজ্জামান বলেন, “ রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের কারনে রড, সিমেন্টসহ নির্র্মান সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন ফ্ল্যাট তৈরিতে খরচ পড়ছে বেশি। প্রতি স্কয়ারফুটে এখন খরচ পড়ছে আড়াই হাজার টাকার মতো। তাছাড়া ছয়তলার বেশি উচ্চতার ভবনের অনুমোদন দিচ্ছেনা পৌরসভা। এসব কারণে ফ্ল্যাটের দাম কিছুটা বেশি’।
আবাসন ব্যবসায়ী এম.কে. বিল্ডার্সের মালিক কামরুল ইসলাম বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে বছরে আড়াইশ থেকে তিনশ ফ্ল্যাট বিক্রি হচ্ছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে এই চাহিদা। কিন্তু জায়গা স্বল্পতা এবং ছয়তলার বেশি উচ্চতার ভবন তৈরির অনুমোদন না থাকায় আমরা ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী ফ্ল্যাট দিতে পারছি না। তিনি বলেন, শহরের অধিকাংশ এলাকায় ১৬ ফুটের রাস্তা নেই।
তিনি বলেন, ভবন নির্মাণের জন্য বিদ্যমান বিধি যদি কিছুটা শিথিল করে ছয়তলার অধিক উচ্চতার ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়, তাহলে ফ্ল্যাট বিক্রি বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ হবে। পাশাপাশি ক্রেতারা তুলনামূলক কম দামে ফ্ল্যাট কিনতে পারবেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র মিসেস নায়ার কবির বলেন, সর্বনিম্ন ১৪ ফুটের রাস্তা থাকলেই ছয়তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ করা যাবে। তবে এটি পৌরসভার কোনো বিধি নয়। সরকার থেকেই এটি নির্ধানর করা হয়েছে। মূলত মানুষের হাঁটাচলা এবং যানবাহন যেন স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে- সেজন্যই এই বিধান করা হয়েছে। এক্ষেত্রে পৌরসভার কিছু করার নেই।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা প্রশাসন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আয়োজনে “মাদক দ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী” আন্তর্জাতিক দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে র্যালি, আলোচনা সভা ও পুরষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠিত হয়।
আজ ১৪ জুলাই রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট জেসমিন সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ বেলায়েত হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) বিল্লাল হোসেন, এনএস আইয়ের উপ-পরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জুলফিকার হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপ-পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন হতে হবে। সন্তানের প্রতি সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। সমাজ ও দেশকে বাঁচাতে আমাদেরকে মাদক নির্মূল করতে হবে। আলোচনা শেষে চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। এর আগে এক বর্ণাঢ্য র্যালি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের রাস্তা প্রদক্ষিণ করে। র্যালিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ গ্রহণ করে।