চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩-(সদর-বিজয়নগর) আসনের বিজয়নগরে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপির নৌকা প্রতীকের পোষ্টার ছিড়ে ফেলার দায়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমানের (কাঁচি প্রতিক) সমর্থক আক্কাছ ভূইয়াকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ ২০ ডিসেম্বর বুধবার দুপুরে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মেহেদি হাসান শাওন উপজেলার আউলিয়া বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অভিযুক্ত আক্কাছ ভূঁইয়াকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে তা আদায় করেন। অর্থদন্ডপ্রাপ্ত আক্কাছ ভূঁইয়া উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মধু ভূইয়ার ছেলে।
এ ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মেহেদি হাসান শাওন বলেন, দুপুরে উপজেলার আউলিয়া বাজার এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যান থেকে রাস্তার উপর টানানো (ঝুলন্ত) নৌকা প্রতীকের পোষ্টার ছিড়ছিলো কাঁচি প্রতীকের সমর্থক আক্কাছ ভূঁইয়া।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ অনুসারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অভিযুক্ত আক্কাছ ভূঁইয়া পোষ্টার ছিঁড়ার কথা স্বীকার করায় ৭(২) ধারা লঙ্ঘনের অপরাধে ১৮(১) ধারা অনুসারে আক্কাছ ভূঁইয়াকে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করে তা আদায় করা হয়। অভিযুক্ত আক্কাছ ভূঁইয়া ভবিষ্যতে আচরণ বিধিমালা প্রতিপালনের বিষয়ে সতর্ক থাকবেন মর্মে জানান।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসাদুল ইসলামসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তানভীর ভূঁইয়া ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ ৩০ অক্টোবর সোমবার সকাল পৌনে ৬টার দিকে জেলা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো (৬৫) বছর।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই কণ্যাসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন রেখে যান। বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, তানভীর ভূঁইয়া বেশ কয়েক মাস ধরে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ছিলেন। গত দুই সপ্তাহ আগে তিনি অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে জেলা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আইসিসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকালে তিনি মারা যান।
তিনি বলেন, তানভীর ভূঁইয়া গত কয়েক মাস ধরে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ছিলেন। দুই সপ্তাহ আগে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে জেলা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে আইসিসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকালে তিনি মারা যান।
এদিকে সোমবার বাদ জোহর শহরের লোকনাথ উদ্যান (টেংকেরপাড়) জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে মরহুমের প্রথম জানাযার নামাজ ও বাদ আসর তার নিজের গ্রাম বিজয় উপজেলার চর-ইসলামপুরে দ্বিতীয় নামাজে জানাযা শেষে তার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য, বিজয়নগর উপজেলার চর-ইসলামপুরের বাসিন্দা বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিজয়নগরে ভিন্ন কৌশলে ভারতে শিশু পাচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঈদের দিন বেলা ১১টায় দেওয়ান বাজারে আইসক্রিম আনতে গেলে দুই শিশুকে অটোরিক্সা দিয়ে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তুলে নিয়ে যায় পাচারকারী চক্র। দুই শিশুর নাম সুবর্ণা আক্তার (৯) ও মাফিয়া আক্তার (৮)।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের নিদারাবাদ গ্রামের রিপন মিয়ার মেয়ে সুবর্ণা ও মামুন মিয়ার মেয়ে মাফিয়া। সুবিধাজনক স্থানে শিশু দুটিকে পানিতে ওষুধ মিশিয়ে অজ্ঞান করে পাহাড়পুর ইউনিয়নের মনিপুর এলাকায় ভারতীয় সীমান্তে পাচার করার উদ্দেশ্যে নেয়। সেখানে একটি কুঁড়ে ঘরে তাদের আটকে রাখে। পরে জ্ঞান ফিরলে ভয়ভীতি দেখায়, যাতে চিৎকার না করে।
এদিকে দুই শিশুর বাবা-মা তাদেরকে খুঁজে না পেয়ে তাৎক্ষণিক বিজয়নগর থানায় জানান এবং এলাকায় মাইকিং ও স্যোশাল মিডিয়ায় শিশুদের ছবিসহ প্রচার করেন।
পাচারকারীর চক্র জনতার উপস্থিতি টের পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে এলাকার লোকজন শিশু দুটিকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। দুই শিশুর বর্ণনা অনুযায়ী অটোরিক্সাকে পাশের সোনামোড়া গ্রামের একটি অটোগ্যারেজে খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে চালককে খোঁজ করলে তিনি দৌড়ে পালান এবং লোকজন তাকে চিনতে পারেন।
এ নিয়ে শনিবার ১ জুলাই বিজয়নগর থানায় সুবর্ণা আক্তারের বাবা মো. রিপন মিয়া বাদী হয়ে ওই অটোরিক্সা চালক উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের বামুটিয়া গ্রামের মৃত সফর আলীর ছেলে তকদির হোসেন প্রকাশ তছর আলীর (৪৮) নামে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রাজু আহম্মেদ বলেন, এ বিষয়ে আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিজয়নগরে পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে ৪০জন আহত হয়েছে। এসময় দাঙ্গাবাজরা বেশ কিছু বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাংচুর চালায়।
আজ ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর এলাকায় ঘন্টাব্যাপী এই সংঘর্ষ চলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সা. এর দিন চম্পকনগর ইউনিয়নের সাটিরপাড়া গ্রাম থেকে দৌলত বাড়ি দরবার শরিফের পীর সৈয়দ নাঈম হুজুর ও মাজেদুল হাসানের নেতৃত্বে একটি জশনে জুলুসের মিছিল বের হয়। মিছিলটি চম্পকনগর গ্রামে পৌঁছলে তাবলীগ জামায়াত নেতা রহমত উল্লাহর সমর্থনে ওই গ্রামের লোকজন তাতে বাঁধা দিয়ে কামাল নামে এক ব্যক্তিকে মারধোর করে। এরই জের ধরে বৃহষ্পতিবার সকাল ৮টায় সাটিরপাড়া, ইছাপুরা ও খাদুরাইল গ্রামের লোকজন চম্পকনগর গ্রামে হামলা চালায়।
এসময় চম্পকনগর গ্রামের পক্ষে গেরাগাঁও ও নুরপুর গ্রামের লোকজনও সংঘর্ষে অংশ জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয়পক্ষের সহশ্রাধিক লোকজন রামদা, বল্লম, চাইনিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ৫ ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৪০জন আহত হয়েছে। এসময় দাঙ্গাবাজরা প্রতিপক্ষের বাড়িঘর-দোকানপাট ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ মোঃ মাছুম মিয়া জানান, হাসপাতালে ৩০ জনের উপরে চিকিৎসা নিয়েছেন। গেরাগাঁও গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, জশনে জুলুসের র্যালী নিয়ে ঈদে মিলাদুন নবী সা. এর দিনের ঝামেলাকে কেন্দ্র করে গতকাল বৃহষ্পতিবার ফের সংঘর্ষ হয়। সড়কের পাশে বাড়ি হওয়ায় আমার ঘরসহ অনেকের বাড়ি ঘর ব্যাপক ভাংচুর চালায় দাঙ্গাবাজরা। বিজয়নগর থানার সদর সার্কেল বিল্লাল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।