উন্নয়নের স্বার্থে জনগণ নৌকায় ভোট দেবে : ক্যাপ্টেন অব. তাজ

বাঞ্চারামপুর, 25 December 2023, 579 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে মানুষের কল্যাণে কাজ করেছে। দেশের জনগণ উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে নৌকায় ভোট দেবে। আজ ২৫ ডিসেম্বর সোমবার পাহায়িাকান্দি এবং দরিয়াদৌলত ইউনিয়নের কান্দু শাহ-এর মাজার মাঠে উঠান বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেই জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তনে সকল সেক্টরের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন।

গরিব মানুষের কল্যাণে সরকারি ভাতা প্রদান এবং সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। গ্রামের মানুষ নাগরিক সুবিধা পাচ্ছে। উন্নয়নের সুফল তৃণমূল পর্যায়ের মানুষও উপভোগ করছে। দেশের গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী ভিত্তির উপর দাঁড়িয়েছে।

ডিজিটাল সেবা এখন জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। ব্যাংকিং সেবা পাচ্ছে দ্রুত এবং নিরাপদে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার দেশের স্বপ্নের পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, পায়রা সমুদ্র বন্দর, কর্ণফুলী টানেলসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বে সমাদৃত।

তিনি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করে পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত করছে।’

পাহাড়িয়াকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি প্রিন্সিপাল আবুল খায়ের দুলাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল ইলসাম, উপজেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি সায়েদুল ইসলাম বকুল ভূইয়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. কবির হোসেন, ছয়ফুল্লাকান্দি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম তুষার, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী জাদিদ আল রহমান জনি, বাঞ্ছারামপুর পৌর মেয়র তফাজ্জল হোসেন, বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি মাহমুদুল হাসান ভূইয়া, শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক সৈয়দ মো. আজিজ, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এম.এস. রানা, সাধারণ সম্পাদক আ. রাজ্জাক, পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি হিমেল সরকার, সাধার্ণ সম্পাদক সামুয়েল আহমেদ, সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক আশিকুল ইসলাম মাসুদ প্রমুখ।

Leave a Reply

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ৮৩…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও সঠিক প্রক্রিয়ায় ৮৩জন Read more

জননিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত…

চলারপথে রিপোর্ট : জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত একান্ত Read more

বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : বিজয়নগর উপজেলা থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ১ Read more

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুরে ১৪৪ ধারা…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ও Read more

বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও Read more
ফাইল ছবি

আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞাতনামা Read more

আখাউড়ায় বিনামূল্যে ধান বীজ বিতরণ চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া উপজেলায় Read more

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় আবু বাক্কার নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : কুয়েতে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় শেখ আবু বাক্কার (৩৪) Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাস উল্টে যাত্রী নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলায় বাস উল্টে গোপী কান্ত ঘোষ Read more

ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশার Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের বিতর্ক প্রতিযোগিতা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের ৩৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে Read more

ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই পাচারকারী গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ১হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গোপাল রায় Read more

১৯৮৬ সাল থেকে বাঞ্ছারামপুরে নৌকার মাঝি ক্যাপ্টেন তাজ

বাঞ্চারামপুর, 28 November 2023, 568 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনে অষ্টমবারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম। টানা ৩৮ বছর ধরে এই আসনে নৌকার মাঝি তিনি। জেলার ৬টি আসনের মধ্যে তিনিই একমাত্র প্রার্থী, যিনি টানা ৩৮ বছর ধরে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম ১৯৮৬ সাল প্রথম নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। এরপর থেকে প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। ২০০৮ সালে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মনোনীত হন। তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন দীর্ঘদিন।

তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৩ ও ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৮৬, ১৯৯১ ও ২০০১ সালে তিনি নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম বলেন, বাঞ্ছারামপুর আওয়ামী লীগ মানে ক্যাপ্টেন তাজুল। তার বিকল্প এখনো বাঞ্ছারামপুরে নেই। তার নেতৃত্বে বাঞ্ছারামপুরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।

ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম বলেন, আমি বাঞ্ছারামপুরের মানুষের জন্য কাজ করি। আমি সাধারণ পরিবারের সন্তান। মানুষের সুখ-দুঃখ বুঝি। বাঞ্ছারামপুরে যা উন্নয়ন দরকার সেটা আমি করার চেষ্টা করেছি। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার উপর আস্থা রেখে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন।

সেতুর জায়গায় অবৈধ দোকানপাট

জাতীয়, বাঞ্চারামপুর, 29 April 2023, 1906 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
তিতাস নদীর ওপর নির্মিত শেখ হাসিনা ওয়াই সেতুর কোটি টাকার জমি দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করা হয়েছে। আরো দোকানঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে দোকানপাট নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় সেতুর জায়গা দখলমুক্ত করতে ইউএনওর কাছে আবেদন করেছেন হোমনা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আহসান উল্লাহ নামে এক ব্যবসায়ী। গত ১৫ মার্চ আবেদন করলেও রহস্যজনক কারণে বন্ধ হচ্ছে না দোকান নির্মাণের কাজ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর ও কুমিল্লার হোমনা উপজেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ রক্ষা করতে নির্মাণ করা হয় শেখ হাসিনা ওয়াই সেতু। এই সেতুর নিচের এলজিইডির জায়গায় দোকানঘর তুলে দখল করে নিয়েছেন কয়েকজন ব্যক্তি। কয়েকজন ব্যক্তি দোকানঘর নির্মাণ করে দখল কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বাধা দিতে গেলে উল্টো হুমকি-ধমকি ও মিথ্যা মামলার ভয় দেখানোর ঘটনা ঘটছে। সেতুর পিলার ঘেঁষে দোকানপাট নির্মাণ করার কারণে বহু বছরের পুরোনো রামকৃষ্ণপুর বাজারে যাওয়ার রাস্তা বন্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন কি, মানুষের চলাচলের রাস্তাও বন্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বুধবার সরেজমিন দেখা গেছে, সেতুর নিচে সরকারি জমি দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করছে ১২-১৫ জন। পিলার ঘেঁষে এসব দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি, দোকান নির্মাণে ভূমি অফিস থেকে বাধা দেওয়া হলেও মানছে না কেউ।

অভিযোগদাতা আহসান উল্লাহ বলেন, ‘রামকৃষ্ণপুর গ্রামের শাহ আলম এলজিইডির জায়গা দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করছেন। এতে আমার ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, হাঁস-মুরগি ও গরুবাজারের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই আমি বাদী হয়ে ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেছি। ভূমি অফিস থেকে বাধা দিলেও মানছেন না শাহ আলম গংরা।’

জানা গেছে, ১০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দেশের একমাত্র ওয়াই আকৃতির শেখ হাসিনা তিতাস সেতুটি ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করা হয়। আগে সেতুটি দেখার জন্য আসতেন দর্শনার্থীরা। কিন্তু সেতুর জায়গা দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করায় সৌন্দর্য ফিকে হয়ে গেছে। দখলদারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবারের ঈদের সময় সেতু এলাকায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা।

স্থানীয়দের জোর দাবি, ভূমিখেকোদের কবল থেকে জমি উদ্ধার করে রামকৃষ্ণপুর বাজার রক্ষা ও সেতুর সৌন্দর্য ফিরিয়ে দেওয়া হোক।

রামকৃষ্ণপুর বাজারের ইজারাদার সফিকুল ইসলাম আকন্দ বলেন, সেতুটি নির্মাণের পরে বাঞ্ছারামপুর, হোমনা ও মুরাদনগরে যাতায়াতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসছে। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বিষয়টিকে পুঁজি করে সেতুর জায়গা দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করছেন রামকৃষ্ণপুর গ্রামের শাহ আলম। এ কারণে আমি ইজারা নিয়েও গরুবাজার বসাতে জায়গা পারছি না। অবৈধ দখল বন্ধ না হলে সেতুর দুই পাশের আরও জায়গা বেহাত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে শাহ আলম বলেন, ‘শুধু আমি না, অনেকেই দোকানঘর নির্মাণ করে দখল করছেন। তাদের দেখে আমিও দোকানঘর নির্মাণ করেছি। সরকারের প্রয়োজন হলে জায়গা ছেড়ে দেব।’

চান্দেরচর ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) আমান উল্লাহ জানান, উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নির্দেশে সরকারি জমি দখলকারী শাহ আলমকে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু বাধা অমান্য করে দোকানঘর নির্মাণ করছে।

হোমনা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামের ভাষ্য, সেতুর জায়গা অধিগ্রহণ করেছে এলজিইডি বিভাগ। জমির মূল্যও পরিশোধ করা হয়েছে। এ জমি দখল করতে দেওয়া হবে না।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইউসুফ হাসান জানান, অভিযোগ পেয়ে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের মাধ্যমে নিষেধ করা হয়েছে। সমস্ত স্থাপনার তালিকা করে উচ্ছেদ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমার দাবি, অভিযোগ পেয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জমিটি এলজিইডি বিভাগের হওয়ায় সরাসরি ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব হচ্ছে। দখল বন্ধ না হলে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, ওয়াই সেতুর নিচের বাঞ্ছারামপুর অংশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। হোমনা অংশে অবৈধ দখলদার থাকলে তা দ্রুত অপসারণ করার জন্য হোমনা উপজেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করা হবে।

সাবেক প্রতিমন্ত্রী তাজুল ইসলামের ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

বাঞ্চারামপুর, 21 August 2024, 150 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলামকে ২১ মাস আগে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা এক মামলায় রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আজ ২১ আগস্ট বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চতুর্থ আদালতের বিচারক সাদেকুর রহমান তাঁর ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ক্যাপ্টেন (অব.) তাজুল ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি ২০০৮ সাল থেকে টানা চার মেয়াদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। এর আগে তিনি ১৯৯৬ সালে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৯ সালের শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রিসভার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। একই সঙ্গে তিনি দলটির মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদকও ছিলেন। পরে কমিটি থেকে বাদ পড়েন। গতকাল ২০ আগস্ট মঙ্গলবার রাতে তাজুল ইসলামকে রাজধানীর বনশ্রী এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ।

পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৯ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুরে মিছিল বের করাকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষ চলাকালে উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রফিকুল পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি।

এ ঘটনায় ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর বাঞ্ছারামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আফজাল হোসেন বাদী হয়ে ৩০২ ধারাসহ (হত্যা) বিভিন্ন ধারায় বিএনপির ১৭ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১২০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওই মামলার এজাহারে সাবেক সংসদ সদস্য তাজুলের নাম নেই, তবে এই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ দুপুরে রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ।

জানতে চাইলে জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদল নেতা নিহত হওয়ার ঘটনায় পেছন থেকে ইন্ধনদাতা হিসেবে তাজুল ইসলামের জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। এ কারণে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে তাঁকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

ওসি সহিদুল ইসলাম বলেন, ওই মামলায় জেলা গোয়েন্দা শাখার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল আহমেদ ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আদালতে ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। এর আগে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে তিনি ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁকে ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, আজ দুপুরে তাজুল ইসলামকে পুলিশের বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চতুর্থ আদালতে তোলা হয়। এ সময় আদালতের ভেতর বিএনপির আইনজীবীরা ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদনের জন্য হইচই করেন। আওয়ামী লীগের চারজন আইনজীবী সেখানে উপস্থিত হলেও পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় কোনো কথা বলেননি। একপর্যায়ে তাঁরা এজলাস ত্যাগ করে চলে যান। তিনটায় আদালতের রায়ের পর প্রিজন ভ্যানে তুলে পুলিশ তাঁকে আদালত থেকে নিয়ে যায়। এ সময় বিএনপির আইনজীবীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন।

কয়েকজন আইনজীবী বলেন, আদালত প্রথমে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আইনজীবীদের হইচইয়ের কারণে পরে ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কামরুজ্জামান মামুন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেকুল ইসলাম খান ও জেলা ‍যুবদলের সহ-সভাপতি আইনজীবী আবদুর রহিম বলেন, ছাত্রদল নেতা রফিকুল হত্যা মামলায় তাজুল ইসলামের ইন্ধন রয়েছে। সে সময় থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ গ্রহণ করেনি। আদালতে পুলিশসহ ৬০ জনের বেশি আসামি করে মামলা দিলেও তা খারিজ হয়ে যায়।

এদিকে তাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের খবরে আজ দুপুরে বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আনন্দমিছিল করেছে উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দুপুরে উপজেলার মুসা মার্কেট থেকে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের নেতাকর্মীরা আনন্দমিছিল বের করে উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করেন।

এতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল মহসিন, সদস্য সাখাওয়াত হোসেন, আবদুল করিম, দেলোয়ার হোসেন, আবদুল করিম, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ প্রমুখ।

বাঞ্ছারামপুরে স্বামীকে হত্যার অভিযোগে স্ত্রীর যাবজ্জীবন : ভায়রার মৃত্যুদণ্ড

বাঞ্চারামপুর, 23 September 2024, 89 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পরকীয়ার জেরে বাচ্চু মিয়া হত্যা মামলায় ভায়রা ভাইকে মৃত্যুদণ্ড ও স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ ২৩ সেপ্টেম্বর সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা দায়রা জজ শারমিন নিগার এই রায় প্রদান করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বাড়াইলচর গ্রামের তুজু মিয়া মোল্লার ছেলে রফিকুল ইসলাম। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী রিনা বেগমকে। একই সাথে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ের ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রফিকুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেওয়া হয়। রিনা বেগমকে ফের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মামলার নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বড়াইলচর গ্রামের হারিছ মিয়ার ছেলে পেঁয়াজ, রসুন ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়ার লাশ খল্লা গ্রামের কলাবাগানে পাওয়া যায়। এ ঘটনায় বাচ্চু মিয়ার ভাই আলমগীর মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে বাঞ্ছারামপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। প্রথমে থানা পুলিশ ও পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) মামলার তদন্ত করে।

তদন্ত শেষে আদালতে দায়ের করা অভিযোগপত্রে (চার্জশিট) উল্লেখ করা হয়, রফিকুল ইসলাম এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। বাচ্চু মিয়াকে একটি মোটরসাইকেলে করে নির্জনস্থানে নিয়ে প্রথমে গলায় গামছা পেঁচিয়ে ও পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাচ্চু মিয়ার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। মূলত বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী রিনা বেগমের সঙ্গে রফিকুল ইসলামের পরকীয়ার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। রফিকুল ইসলাম রীনা বেগমের খালাতো বোনের জামাই।

পরকীয়া চলা অবস্থায় রিনাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন রফিকুল। তখন রিনা জানান বাচ্চুকে খুন করতে পারলে তাকে বিয়ে করবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী রফিকুল এ হত্যাকাণ্ড ঘটায় এবং ঘটনার পর অন্যদের মতো বাচ্চু মিয়াকে খুঁজতে থাকে। এলাকার লোকজন সন্দেহবশত ওই দুজনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পরে তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

নারীদের ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণ

আখাউড়া, কসবা, নবীনগর, বাঞ্চারামপুর, বিজয়নগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 12 December 2022, 5336 Views,

স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বাধীনতা কাপ মহিলা ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণ সোমবার দুপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গভ. মডেল গার্লস উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে খেলো বাংলাদেশে স্পোর্টস সোসাইটি ও ভারত-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মৈত্রী পরিষদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। খেলো বাংলাদেশে স্পোর্টস সোসাইটি’র প্রধান উপদেষ্টা আ. ফ. ম কাউসার এমরানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাবেদ রহিম বিজন। বিশেষ অতিথি ছিলেন, গভ. মডেল গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষক পারভীন আক্তার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি দীপক চৌধুরী বাপ্পী, সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ পাল বাবু, প্রেসক্লাবের সাবেক আইসিটি সম্পাদক মুজিবুর রহমান খান, ভারত-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মৈত্রী পরিষদ এর সভাপতি করবী চক্রবর্তী, সাধারন সম্পাদক সঞ্জয় দাস। সুষ্মিতা সাহার সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য দেন খেলো বাংলাদেশে স্পোর্টস সোসাইটির সাধারন সম্পাদক শিশির সিকদার।


ব্যাডমিন্টন খেলায় এককে রূপালী চ্যাম্পিয়ন, অনিতা রানার আপ হন। দ্বৈতে রূপালী ও নন্দিনি চ্যাম্পিয়ন এবং জান্নাত ও লিটা রানার আপ হন। এককে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ রূপালী ও দ্বৈতে জান্নাত। অতিথিরা খেলোয়ারড়দের হাতে নগদ টাকা ও ক্রেস্ট তুলে দেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, ‘খেলো স্পোর্টস সোসাইটি নারীদের নিয়ে ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন খেলার মতো যেসব আয়োজন করছে সত্যিই প্রশংসনীয়। নারীদেরকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদেরকে সুযোগ করে দিতে হবে। নারীরা এখন সমানতালে এগিয়ে চলছে’।