দেশবাসীকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 31 December 2023, 808 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খ্রিষ্টীয় নতুন বছর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, ‘আজ আমরা যে সময়কে পেছনে ফেলে নতুন দিনের আলোয় উদ্ভাসিত হতে যাচ্ছি, সে সময়ের যাবতীয় অর্জন আমাদের সম্মুখ যাত্রার শক্তিশালী সোপান হিসেবে কাজ করছে। তাই নতুন বছরের এই মাহেন্দ্রক্ষণ সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নতুন নতুন সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে উন্নতির নতুন শিখরে আরোহণের সোপান রচনা করার অনুপ্রেরণা।’

banner

খ্রিষ্টীয় নতুন বছর-২০২৪ উপলক্ষে আজ ৩১ ডিসেম্বর রবিবার দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘নতুন বছরে মানুষে-মানুষে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরো জোরদার হোক, সকল সংকট দূরীভূত হোক, সকল সংকীর্ণতা পরাভূত হোক এবং সকলের জীবনে আসুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি এই প্রার্থনা করি।’

২০২৩ সাল বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নের এক স্বর্ণযুগ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা গত ২০২২ সালের ২৫ জুন নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর সেতুতে রেল যোগাযোগের শুভ উদ্বোধন করেছি। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা-আগারগাঁও রুটে মেট্রোরেল চালুর পর ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল সেবা সম্প্রসারণ করেছি।’

আমাদের অন্যান্য মেগা ও মাঝারিসহ সকল অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজও পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু করেছি। ৫ অক্টোবর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জ্বালানি সরবরাহ করেছি। ফলে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় পারমাণবিক জ্বালানি ব্যবহারকারী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। ৭ অক্টোবর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল এবং ১৯ অক্টোবর দেশের ৩৯টি জেলায় ১৫০টি সেতু এবং ১৪টি ওভারপাস একসাথে উদ্বোধন করেছি। ২৮ অক্টোবর দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম চট্টগ্রামে কর্ণফুলি নদীর তলদেশে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দিয়েছি। ১১ নভেম্বর দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ঢাকা-কক্সবাজার সরাসরি রেল চালু করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করে। আমরা ২০০৮ সালের নির্বাচন হতে পরপর তিন দফা জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে গত ১৫ বছরে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধন করেছি।

তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের অর্থনীতিও কিছুটা মন্থর হয়েছিল। সেই ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক অবরোধ ও পাল্টা অবরোধ সারা পৃথিবীতে নিরীহ মানুষের জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এরই মধ্যে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছি। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই দেশের যেকোনো সংকট আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমরা প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সাথে ছিটমহল বিনিময় করেছি। মিয়ানমারে গণহত্যা থেকে আত্মরক্ষার্থে পালিয়ে আসা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছি। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দেশের ৩৩টি জেলাকে ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেছি। শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় নিয়ে এসেছি। প্রায় ১৮ হাজার ৫০০ কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং বিনামূল্যে ৩০ প্রকারের ঔষধ দিচ্ছি। ২ কোটি ১০ লাখ কৃষককে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড প্রদান করেছি। ২ কোটি ৫৩ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি-উপবৃত্তি দিচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট চারটি ক্যাটেগরিতে ১০ কোটি মানুষের জন্য সার্বজনীন পেনশন চালু করেছি। আওয়ামী লীগ সরকার ২০১০ সাল থেকে বছরের প্রথম দিন ছাত্রছাত্রীদের হাতে বিনামূল্যে বই পৌঁছে দিচ্ছে। এই বই উৎসব বাংলাদেশে ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপনের ক্ষেত্রেও এক নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে।

‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’ বাস্তবায়ন শুরু করেছি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী দক্ষ জনসম্পদ সৃষ্টি করছি এবং গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছি। ২০২১ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের সময় জাতিসংঘ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ ঘোষণা করেছে। আমরা ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলেই দেশের উন্নয়ন হয় এবং জনগণের মঙ্গল হয়। কারণ, একমাত্র আওয়ামী লীগই স্বাধীনতার সুমহান আদর্শকে ধারণ করে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করে।

দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন আমরা মানুষের সার্বিক কল্যাণে আত্মনিয়োগ করি, অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিহত করে মানুষের জানমাল ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করি এবং সর্বোপরি গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের মহান নেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর নেতৃত্বে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানিদের পরাজিত করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় অর্জন করি। স্বাধীনতা অর্জনের পর মাত্র নয় মাসেই তিনি আমাদের একটি সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ সংবিধান অনুযায়ী স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং ৭ এপ্রিল প্রথম অধিবেশন বসেছিল। ২০২৩ সালের ৬ এপ্রিল মহান জাতীয় সংসদের ৫০ বছরপূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষ্যে ২২তম/বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই অধিবেশনে আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শূন্য হাতে সদ্যস্বাধীন দেশকে যুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ থেকে টেনে তুলেছিলেন। তখন ব্যাংকে কোন রিজার্ভ মানি ছিল না, কোনো কারেন্সি নোট ছিল না। সেই অবস্থায় গণতন্ত্রের মজবুত ভিত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করেছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সরকার গঠনের পর ১৯৭৩ সালের ১ জুলাই থেকে প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরেই তিনি বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করেছিলেন এবং জাতিসংঘ সেই স্বীকৃতি দিয়েছিল।বাসস

Leave a Reply

কোটি টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ

চলারপথে রিপোর্ট : ফেনীর পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলার সীমান্ত এলাকা Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বীজ, সার ও গাছের চারা…

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে সরাইল Read more

ইখলাস মানুষের হৃদয়ে সৃষ্টি হয়

আল্লামা মাহ্‌মূদুল হাসান : ইখলাস মানুষের দিলে সৃষ্টি হয়। আর Read more

প্রাথমিক তদন্তেই ভুয়া মামলার আসামিরা রেহাই…

অনলাইন ডেস্ক : উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ফৌজদারি কার্যবিধির একটি সংশোধন Read more

গাজীপুরে শফিক, তারিক, পাপনের ১০ তলা…

জায়েদুল কবির ভাঙ্গি, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর : গাজীপুর সদরের চান্দনা Read more

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা পরিষদ…

অনলাইন ডেস্ক : বরগুনার পাথরঘাটায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা Read more

ইসরাইলি হামলায় একদিনে আরো ৮১ ফিলিস্তিনি…

অনলাইন ডেস্ক : গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৮১জন ফিলিস্তিনি Read more

কৃষি বীজ সংরক্ষণাগার ভেঙে দোকান নির্মাণের…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের দেলি Read more

মিথ্যা মামলা করলে কী কী শাস্তি?

অনলাইন ডেস্ক : দেশের অন্যতম আলোচিত বিষয় হলো মিথ্যা মামলা। Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বহিস্কার

চলারপথে রিপোর্ট : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা Read more

আখাউড়ায় অবৈধ চায়না রিং জাল ধ্বংস

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় তিতাস নদীতে অভিযান পরিচালনা Read more

রেলপথে মাদক পাচার প্রতিরোধে রেলওয়ে পুলিশের…

চলারপথে রিপোর্ট : মাদক চোরাচালান, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ দমন Read more

বেশি দামে আলু-পেঁয়াজ বিক্রি, ২ ব্যবসায়ীকে জরিমানা

জাতীয়, 23 September 2023, 886 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে আলু, পেঁয়াজ বিক্রির দায়ে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে দুই ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

banner

আজ ২৩ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার ঝিটকা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এ জরিমানা করা হয়।

নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তর মানিকগঞ্জ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল।

আসাদুজ্জামান রুমেল জানান, ক্রয় রশিদ সংরক্ষণ না করে সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশি দামে আলু ও পেঁয়াজ বিক্রি করার অপরাধে ঝিটকা বাজার এলাকার অনন্ত ভাণ্ডারকে পাঁচ হাজার ও দুদু বেপারীকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

মাঠের তথ্য অনুযায়ী ইউএনও-ওসিদের বদলির সিদ্ধান্ত : ইসি

জাতীয়, রাজনীতি, 2 December 2023, 1142 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে , বিভিন্ন জেলায় সংসদ নির্বাচনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে যে তথ্য পেয়েছে তার ভিত্তিতেই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) রদবদলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

banner

আজ ২ ডিসেম্বর শনিবার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।

ওসি ও ইউএনওদের রদবদল সরকার চেয়েছে, না কি আপনারা চেয়েছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি নির্বাচন কমিশন চেয়েছে। আমাদের কমিশনাররা গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন জেলা ও অঞ্চল পর্যায়ে সফর করেছেন। তাদের যে ফাইন্ডিংস, তার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন বসে গত ৩০ নভেম্বর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কেন এমন সিদ্ধান্ত- এমন প্রশ্নের জবাবে অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, নির্বাচন কমিশনারদের কাছে মাঠ পর্যায় থেকে যে তথ্য পেয়েছেন তার ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কমিশন অনুভব করেছে এ বদলি দরকার।

কী ধরনের তথ্য পেয়েছেন তারা- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, সব তথ্য তো ওপেনলি বলা হয় না। নির্বাচন কমিশনাররা মাঠ পর্যায় থেকে যেসব তথ্য পেয়েছে, বিভিন্ন প্রার্থী কিংবা বিভিন্ন কোয়াটার থেকে যে তথ্য এসেছে, তার ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত। তারা মনে করেছে যে, বদলি করা প্রয়োজন।

একজন নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন, বড় আকারে রদবদল করা হলে পুলিশ-প্রশাসনে একটা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হতে পারে, এর দায়ভার ইসি কেন নেবে? আর একটা কথা বলেছিলেন, একশ কোটি টাকা ব্যয় হবে, এ টাকা কে দেবে- এমন বিষয় সামনে আনলে তিনি বলেন, একশ কোটি টাকা কেন ব্যয় হবে? তাহলে ওই কমিশনারের কাছে জানতে চাইতে হবে।

জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) বদলির কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না- জানতে চাইলে অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত আমার জানা নেই। পরে যদি কোনো সিদ্ধান্ত হয়, তখন বলতে পারবো। যদি নির্বাচন কমিশন বসে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, সেক্ষেত্রে এটা হতে পারে। এটা অস্বাভাবিক কিছু না।

রদবদলের ক্ষেত্রে কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরির সুযোগ আছে কি না- এমন প্রশ্নে এ কর্মকর্তা বলেন, আমি মনে করি নেই। একজন কর্মচারী যে উপজেলা বা জেলায় দায়িত্ব পালন করুক না কেন, তিনি সুষ্ঠুভাবেই দায়িত্ব পালন করবেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থীর নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে মেসেজ দিয়েছি। এটা পুলিশের ঊর্ধ্বতনদের ও আমাদের রিটার্নিং অফিসারদের বলেছি। জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব এসেছিলেন, সব বিষয়ে তাদের মেসেজ দেওয়া হয়েছে। কেউ যেন নিরাপত্তার কোনো ঘাটতিতে না ভোগেন। এরপরও যদি কারও গাফিলতিতে কিছু হয়, তার বিরুদ্ধে ইসি খুব স্ট্রং ব্যবস্থা নেবে।

সব প্রার্থীদের বডিগার্ড দেওয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা তো সম্ভব হবে না। এতো বডিগার্ড দেওয়া যাবে না। তবে নিরাপত্তার দায়িত্ব তো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। তারা যেন তা নিশ্চিত করতে পারে, সেটাই আমাদের কাম্য।

কতগুলো দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে- এমন প্রশ্নে অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, আমাদের নিবন্ধিত যে ৪৪টি রাজনৈতিক দল আছে, তার মধ্যে ২৯টি দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপ পিপলস নামে একটি দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, যেটি আমাদের নিবন্ধিত দল নয়। আমাদের কাছে যে তথ্য আছে আমরা দুই হাজার ৭১২ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল করেছি।

পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়নপত্র জমা দেয়নি এবং একটি স্থানে ডাবল জমা দেওয়ার তথ্য জেনেছি- এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আমাদের কাছে যে তথ্য আছে, আওয়ামী লীগ থেকে ৩০৪ জন মনোনয়ন ফরম নিয়েছে।

যে পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয়নি, সেখানে কী হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, ওখানে স্বতন্ত্র হিসেবে পূরণ করেনি সে। মনোনয়নপত্রে আওয়ামী লীগ লেখা আছে। সেটা বাছাইয়ের সময় দেখা যাবে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় একটি স্বতন্ত্র হিসেবে, আরেকটি দলীয় হিসেবে পূরণ করতে হয়। তিনি (সংশ্লিষ্ট প্রার্থী) দলীয় হিসেবে পূরণ করেছেন বলে রিটার্নিং কর্মকর্তা আমাদের জানিয়েছেন। পরে তার বৈধতা বা অবৈধতা সেটা বাছাইয়ের সময় নির্ধারিত হবে।

ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাছাই চলবে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে আগামী ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি।

এজেন্সির জন্য হজযাত্রীদের কোটা কমিয়েছে সৌদি

আন্তর্জাতিক, জাতীয়, 28 January 2024, 1415 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
সরাসরি হজে পাঠানোর ক্ষেত্রে হজ এজেন্সির জন্য সর্বনিম্ন হজযাত্রীর কোটা কমিয়েছে সৌদি সরকার। ৫০০ জন থেকে ওই কোটা ২৫০ জনে নামিয়ে আনা হয়েছে। ফলে যেসব এজেন্সির হজযাত্রী ২৫০ জন হবে তারা এখন সরাসরি হজে লোক পাঠাতে পারবে।

banner

সম্প্রতি বাংলাদেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি সরকার সরাসরি হজযাত্রী পাঠাতে কোটা কমানোর এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ২৭ জানুয়ারি শনিবার হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এবং এজেন্সিগুলোকে এটি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ২৯ নভেম্বর ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে হজ এজেন্সিগুলোকে জানানো হয়, সৌদি সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিজরি ১৪৪৫/২০২৪ সনের হজ মৌসুমে অনুমোদিত প্রতিটি হজ এজেন্সির সর্বনিম্ন ৫০০ জন হজযাত্রী থাকলে ওই এজেন্সি সৌদি আরবে সরাসরি হজযাত্রী পাঠাতে পারবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কোটা কমানোর চিঠিতে জানিয়েছে, সৌদি সরকার ২০২৪ সালের হজের জন্য বাংলাদেশসহ সব দেশের হজ এজেন্সির সর্বনিম্ন কোটা প্রথমে দুই হাজার জন এবং পরবর্তী সময়ে ৫০০ জন নির্ধারণ করে পত্র দেয়। সর্বনিম্ন কোটা ৫০০ জনের পরিবর্তে আগের মতো বাংলাদেশের সব এজেন্সিকে হজযাত্রী পাঠানোর সুযোগ দেওয়ার জন্য ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক সৌদি সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।

এতে আরও বলা হয়, ধর্মমন্ত্রীর নির্দেশে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার সর্বশেষ গত ২৪ জানুয়ারি সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার আবদুল ফাত্তাহ সুলেমান মাশাত এবং হজ অ্যাফেয়ার্স অফিসের মহাপরিচালক ড. বদর আলসোলামির সঙ্গে টেলিফোনে কোটার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য অনুরোধ জানান।

অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ জানুয়ারি ভাইস মিনিস্টারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের হজ এজেন্সির সর্বনিম্ন কোটা ৫০০ জনের পরিবর্তে ২৫০ জন নির্ধারণের কথা ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে জানানো হয়।

এ ক্ষুদে বার্তার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী কোনো হজ এজেন্সি ২৫০ জন হজযাত্রী থাকলে সরাসরি সৌদি আরবে পাঠাতে পারবে। যেসব এজেন্সির হজযাত্রীর সংখ্যা ২৫০-এর কম সেসব এজেন্সিকে অন্য এজেন্সির সঙ্গে সমন্বয় করে লিড এজেন্সি নির্ধারণ করে হজযাত্রী পাঠাতে হবে বলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে জানানো হয়।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন (১৪৪৫ হিজরি সনের ৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৪ সালেও বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমের কোটা ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি এজেন্সির কোটায় এক লাখ ১৭ হাজার জন হজ পালন করতে পারবেন বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।

এবার হজে যেতে সরকারি-বেসরকারি হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয় গত ১৫ নভেম্বর। গত ১০ ডিসেম্বর নিবন্ধন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নিবন্ধনে সাড়া না পাওয়ায় তিন দফা সময় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ বাড়ানো নিবন্ধনের সময় আগামী ১ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে।

পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু কমানোর লক্ষ্যে সচেতনতামূলক সভা

জাতীয়, 15 May 2023, 1428 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
সম্প্রতি পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তা রোধকল্পে সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১৫ মে সোমবার সকালে ইন্দুরকানী উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ সভার আয়োজন করা হয়। এতে উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদের সকল সদস্য রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ এবং স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।

banner

ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুন্নেসা খানমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সচেতনতামূলক এ সভায় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং জনপ্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।

এ সময় বক্তারা পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর বিভিন্ন কারণ তুলে ধরার পাশাপাশি সেগুলো সমাধানের উপায় সম্পর্কে আলোচনা করেন। তবে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু সংখ্যা কমানোর লক্ষ্যে শিশুদের সাঁতার শেখানোসহ পরিবারের সদস্যদের সচেতন হওয়ার প্রতি জোর দেন বক্তারা।

মাদ্রাসার শিক্ষকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে সরকার : শিক্ষামন্ত্রী

জাতীয়, 17 January 2024, 773 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
দ্বীনি শিক্ষার প্রসারে জামিয়া (আলীয়া) মাদরাসার শিক্ষকদের সঙ্গে সরকার আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় বলেন, নৈতিকতা ও সত্যিকারের দ্বীনি শিক্ষা যেনও আমরা মানুষের মধ্যে দেই। বাংলাদেশে অনেক সমস্যা, অনেক বৈষম্য ও চ্যালেঞ্জ। এবং এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সত্যিকারের দ্বীনি শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।

banner

মাদরাসার উন্নয়নে সরকার বড় বড় প্রকল্প নিচ্ছে, বিল্ডিং হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আজ বুধবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে দেশের সর্ববৃহৎ ফাযিল/কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষদের সঙ্গে মতবিনিময়সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সত্যিকারের দ্বীনি শিক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী ইসলামিক আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি আমাদের যারা আলেম-ওলামা আছেন তাদের প্রতি সব সময় অনুরোধ করেন গবেষণা করতে।

গবেষণার করে আমাদের দ্বীনি ব্যবস্থায় এজমা, কিয়াস করে, বাহাস করে আমরা যাতে প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি সেই লক্ষে কাজ করবে সরকার। এই লক্ষ্যে সরকার জামিয়া (আলিয়া) মাদরাসার শিক্ষকদের সঙ্গে আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।’

এখনো আমরা অনেক বেশি অর্থডক্স এবং অপ্রচলিত বা কনভেনশনাল জায়গায় আছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর অনেক দেশ আমাদের ধর্মতত্ত্ব, ইসলামি দ্বীনি জ্ঞান অনেক বেশি এগিয়ে নিয়েছেন। সেটা মানুষের অধিকার হোক, জাকাত বা ট্যাক্স কীভাবে দেবে সে বিষয়ে হোক, এই বিষয়গুলিতে আরো গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।

জ্ঞানী লোকরা নানান ধরনের গবেষণা, লব্ধ ফতোয়া দিয়েছেন। এই গবেষণার জন্য ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় সৃষ্টি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষদের অধিক মনোযোগী হতে হবে। যারা সমাজে খতিব হবেন বা ইমামতি করবেন, তারা সমাজের নেতা। শুধু ধর্মীয় নেতা নন, সমাজেরও নেতা।

তারা সেই সমাজে প্রভাব বিস্তার করেন। তাদের মাধ্যমে আমরা নানান বিষয় সাধারণ জনগণকে শেখাতে পারি। সেটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, দক্ষতানির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা বা নিষ্ঠাবান হওয়ার কথা বলি। একটি সময় ছিল মসজিদ ভিত্তিক শিক্ষা দেওয়া হত। কিন্তু আমরা সে পথে হাঁটতে পারিনি। বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, ইমাম সবাই যেন সম্মিলিত উদ্যোগে একসঙ্গে কাজ করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’