চলারপথে রিপোর্ট :
শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধদের মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দগ্ধ অবস্থায় দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ ১৪ জানুয়ারি রবিবার সকালে রমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাসরিন বেগম (৩৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। নাসরিন বেগম রংপুর নগরের তাজহাট এলাকার বাসিন্দা।
এর আগের দিন শনিবার সকালে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার বাসিন্দা আমেনা বেগম (৬০) সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি উপজেলার গোয়ালু গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের স্ত্রী। বর্তমানে হাসপাতালের বার্ন ইউনিট এবং সার্জারি, শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডে ৪২ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা গেছে, কনকনে শীতে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে গিয়ে ৪৪ জন দগ্ধ রোগীর মধ্যে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে রংপুরসহ আশপাশের জেলা-উপজেলা থেকে এসব দগ্ধ রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে অগ্নিদগ্ধ দুজন রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আ. ম. আখতারুজ্জামান।
অনলাইন ডেস্ক :
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, চুকনগর বধ্যভূমি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
আজ ৬ জুলাই শনিবার দুপুরে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর বধ্যভূমি প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আমরা একাত্তর’ এর উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক বাঙালির ওপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞের সঠিক তথ্য তুলে ধরতে হবে। তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করতে উৎসাহিত করতে হবে। পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক বাঙালির ওপর পরিচালিত হত্যাযজ্ঞ এদেশের একটি গোষ্ঠী স্বীকার করতে চায় না। তারা জাতীয় সংগীত গাইতে ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে অনীহা প্রকাশ করে। তারা স্বাধীনতা বিরোধী ও দেশবিরোধী নানা ধরনের চক্রান্তে লিপ্ত। তাদের সব চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, দেশের বর্তমান উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে আরও সমুন্নত করতে হবে, তার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
বধ্যভূমি সংরক্ষণে সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে চুকনগর ছিল ভারতে যাওয়ার অন্যতম প্রধান পথ। বিভিন্ন এলাকা থেকে ভারতে পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশে আগত ১০ থেকে ২০ হাজার মানুষকে ১৯৭১ সালের ২০ মে এখানে হত্যা করে তাদের লাশ স্থানীয় ভদ্রা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। ইতিহাসে এমন পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের নজির বিরল। শুধু চুকনগর নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি হানাদার গোষ্ঠী এমন হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে যার বেশিরভাগই এখনও পর্যন্ত অজানা। প্রয়োজনীয় গবেষণা ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে এসব তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে। তরুণ প্রজন্মের কাছে এসব ইতিহাস সঠিকভাবে তুলে ধরতে হবে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এসব বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও সংস্কারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে মন্ত্রী বধ্যভূমির মূল বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিনের সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডুমুরিয়া উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম মানিক, জেলা কমান্ডার মাহবুবুর রহমান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবীরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রজন্ম ৭১ এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে মাহবুব জামান ও হেলাল ফয়েজী, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন প্রমুখ। সমাবেশে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মন্ত্রী ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ এর সব সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। দলীয় কার্যক্রম গতিশীল এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে তারা দলের নেতা কর্মীদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন।
দুপুরে মন্ত্রী খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সাতক্ষীরা সড়ক ও সিটি বাইপাসকে সংযুক্ত করে সংযোগ সড়কসহ তিনটি লিংক রোড নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন।
খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য এস এম কামাল হোসেন, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রুনু রেজা, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবীরুল ইসলাম, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম মিরাজুল ইসলাম, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হকসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, জিওবি এবং খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের যৌথ অর্থায়নে ৭১৭ কোটি ৮০ লাখ ২১ হাজার টাকা ব্যয়ে উল্লিখিত প্রকল্পের আওতায় তিনটি লিংক রোড নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় নিরালা আবাসিক এলাকা থেকে সিটি বাইপাস পর্যন্ত ২.৫ কিলোমিটার (প্রথম লিঙ্ক রোড), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রায় মহল পর্যন্ত সংযোগ সড়ক ৪.৯০ কিলোমিটার (দ্বিতীয় লিংক রোড) এবং বাস্তুহারা থেকে পুরাতন সাতক্ষীরা সড়ক সংযোগ সড়ক ২.৭০ কিলোমিটার (তৃতীয় লিংক রোড) মোট ১০.১০ কিলোমিটার দুই লাইন বিশিষ্ট সড়ক নির্মাণ করা হবে। ২০২৫ সালে ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
ঈদযাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে করতে এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাবের তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম। আজ ২৭ মার্চ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে গৃহীদ পদক্ষেপ সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান তিনি।
কর্ণেল মো. মাহবুব আলম বলেন, আর কয়েকদিন পরই ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হবে। আমরা র্যাব সদর দপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক এই ঈদ নির্বিঘ্ন করতে তিন স্তরের নিরাপত্তা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছি। প্রথম স্তরে বাসস্ট্যান্ড বা যেসব জনবহুল শপিংসেন্টার আছে সেসব স্থানে এবং এর আশপাশে আমাদের ২৪টি পেট্রোল টিল টহল কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
তিনি আরো বলেন, দ্বিতীয় স্তরে বাসস্ট্যান্ড বা অন্য যেসব শপিংসেন্টার আছে যেখানে ছিনতাই বা অজ্ঞানপার্টি বা মলমপার্টি- এ ধরনের চক্রগুলো সক্রিয় সে সমস্ত এলাকায় আমাদের সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত আছে এবং আমরা যে কোনো ধরনের তথ্য পেলে প্রাথমিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। তৃতীয় পর্যায়ে আমাদের কাছে স্ট্রাইকিং মোবাইল রিজার্ভ থাকছে যেখানে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে কোনো স্থানে যদি অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায় বেশি ভাড়া আদায় করা ও চাঁদাবাজির কোনো সিন্ডিকেট যদি আমরা আইডেন্টিফাই করতে পারি অথবা অন্য কোনো পরিস্থিতি সেক্ষেত্রে আমাদের স্ট্রাইকিং ফোর্স স্বল্প সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হবে। আপাতত এভাবেই আমাদের নিরাপত্তা প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে।
মো. মাহবুব আলম বলেন, আমরা সবাই যাতে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারি তার জন্য আমাদের সাধারণ মানুষের কাছে দুইটা অনুরোধ থাকবে। আপনারা যখন ঢাকা থেকে আপনাদের নিজ গৃহের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তখন ঢাকায় আপনাদের যে আবাসস্থল আছে সেখানে আপনার পক্ষে যতটুকু সম্ভব ততটা আপনি নিশ্চিত করে যাবেন। আর দ্বিতীয়ত যেটা সেটা হচ্ছে আপনি পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চলাচল করার সময় কারও সাথে সখ্য না গড়ে অথবা অপরিচিত কারও কাছ থেকে যেন আমরা কোনো কিছু না খাই। যেটার কারণে সাধারণত আমরা মলমপার্টি ও অজ্ঞানপার্টির খপ্পরে পড়ি। এই ব্যাপারে যেন আমরা সতর্ক থাকি। এই দুইটা অনুরোধ আমাদের পক্ষ থেকে সাধারণ জনগণের প্রতি থাকবে। আর তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ঈদের আগে এবং পরে আমাদের র্যাব এখনো মাঠে আছে আছে এবং সবসময় মাঠে থাকবে।
ঈদে ফাঁকা রাজধানীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, আপাতত আমাদের নিরাপত্তা বাসস্ট্যান্ড এবং বিপণিবিতানকেন্দ্রিক। যখন ঢাকা শহর আরেকটু ফাঁকা হয়ে যাবে তখন আমাদের আবাসিক এলাকাগুলোতে টহল কার্যক্রম বাড়াবো।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ় প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, দেশবাসীর ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনি-মিনি খেলতে দেওয়া হবে না, আন্দোলন নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই।
তিনি বলেন, ‘সামান্য আন্দোলন দেখে ভয় পাবেন না; যতক্ষণ জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে ততক্ষণ ভয়ের কিছু নেই। আমরা অগ্নিসংযোগ-সন্ত্রাসকে আর বরদাস্ত করব না। এটা কখনই মেনে নেওয়া হবে না।’
জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস উপলক্ষে আজ ৩১ জুলাই সোমবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পুরস্কার-২০২৩’ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব একথা বলেন। খবর বাসসের।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আন্দোলনে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কাউকে ছিনি-মিনি খেলতে দেব না।’
তিনি বলেন, ‘একটি কথা মনে রাখবেন, যারা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সমর্থন দেয়নি, তাদের মনের শত্রুতা এখনো কাটেনি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘তবে আমরা সামনে এগিয়ে যাচ্ছি এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে থাকবে।’
তিনি বলেন, জীবনে সমস্যা আসবে এটা স্বাভাবিক, তবে সমস্যা কাটিয়ে উঠতে হলে মনোবল ও শক্তি প্রয়োজন।
শেখ হাসিনা বলেন, এই শক্তি (মনোবল) নিয়ে এগিয়ে গেলে ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আমি এটি বিশ্বাস করি।
তিনি আরও বলেন, সরকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করছে, এমনকি দুস্থ সম্প্রদায়েরও। তাই দ্রব্যমূল্য নিয়ে দুর্দশা গ্রামীণ এলাকায় প্রায় নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা সরকারি কর্মচারীদের জনগণের পাশে দাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, জনগণের সেবা করা তাদের দায়িত্ব।পাশাপাশি তিনি সরকারী কর্মকর্তাদের সর্বদা উদ্ভাবনী ধারণা খুঁজে বের করার এবং তাদের নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে ব্যবহার করে দেশকে আধুনিক প্রযুক্তির যুগে এগিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এইচএন আশেকুর রহমান ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য দেন জনপ্রশাসন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী।
চলারপথে রিপোর্ট :
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, কৃষকের অধিকার রক্ষায় কৃষকবান্ধব একটি রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে।
আজ ৪ মে শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা কৃষক লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পায়না। উৎপাদন খরচ বেশি হওয়া সত্ত্বেও প্রকৃত কৃষক কৃষিপণ্যের উপযুক্ত মূল্য পায় না। কৃষক সংগঠন শক্তিশালী না হওয়ায় তারা তাদের দাবি-দাওয়া সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেনা। এজন্য কৃষকের অধিকার রক্ষার স্বার্থে একটি কৃষিবান্ধব রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলা প্রয়োজন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষক লীগ হতে পারে কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী একটি রাজনৈতিক শক্তি।
তিনি আরো বলেন, যারা মুখে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলে অথচ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কাজ করে এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে যাদের সখ্য তাদেরকে এড়িয়ে চলতে হবে। সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি নৌকার পক্ষে কাজ করতে হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষক লীগের আসন্ন সম্মেলন সফল করতে এবং একটি গতিশীল সংগঠন গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি দক্ষ, যোগ্য ও কর্মঠ লোকের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন শুধু চেহারা দেখে নয় কর্মকাণ্ড দেখে কমিটি গঠন করতে হবে। যারা দলের জন্য কাজ করবে এবং শ্রম দিবে তাদেরকে কমিটিতে স্থান দিতে হবে।
গত ২৯ জুলাই ২০২২ খ্রিস্টাব্দে গঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষক লীগের এটা দ্বিতীয় বর্ধিত সভা। সভায় বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হেজবুল বাহার রানা আগামী ২০ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ সাদেকুর রহমান শরীফ এর সভাপতিত্বে আয়োজিত এ বিশেষ বর্ধিত সভা উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট সমীর চন্দ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মোঃ হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ নাজির মিয়া, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার মজিবুর রহমান মিয়াজী প্রমুখ। সভায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সকল উপজেলার কৃষক লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস কমিয়ে গবেষণায় মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, পাবনাতেই হবে দ্বিতীয় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র।
আজ ১১ মার্চ সোমবার প্রধানমন্ত্রী তাঁর কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ, এনএসটি ফেলোশিপ এবং বিশেষ গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণায় বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডাক্তার সাহেবরা প্র্যাকটিস করেন, টাকা কামাই করেন, গবেষণার দিকে বেশি যান না।
ঠিক? কয়েকজন ডাক্তার আছেন, আমি সামনাসামনি জিজ্ঞাসা করছি। এখন গবেষণার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।’
চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘গবেষণায় গুরুত্ব দিলে দেশের মানুষ আরো সুস্থ হবে, সবল হবে, মেধাবীরা আরো মেধা বিকাশের সুযোগ পাবে। গবেষণা অপরিহার্য। স্বাস্থ্য বিষয়ে যাঁরা গবেষণা করবেন, তাঁদের বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হবে।’
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সব ক্ষেত্রেই যে গবেষণার বিকল্প নেই, সে কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘কৃষিতে গবেষণা করে আজকে আমরা শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ না, বাংলাদেশে এখন আমাদের ফল, ফুল, মূল, এমনকি টিউলিপ, যেটা শীতের দেশ ছাড়া হয় না, সেই টিউলিপও বাংলাদেশে হচ্ছে। স্ট্রবেরিও বাংলাদেশে হচ্ছে। সবই গবেষণার ফসল। গবেষণা আমাদের নতুন দুয়ার খুলে দেয়। আর বাংলাদেশের মাটি হচ্ছে সোনার মাটি, যা লাগানো যায় সেটাই হয়। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।’
চিকিৎসকদের তিনি বলেন, ‘যাঁরা সরকারি চাকরি করছেন, তাঁরা প্রাইভেট প্র্যাকটিসটা একটু কমিয়ে দিয়ে গবেষণার দিকে মনোযোগ দেন। যাঁরা গবেষণা করবেন, তাঁদের উত্সাহ দেওয়ার জন্য যা প্রয়োজন আমরা করব।
গবেষণাটা আমাদের খুব দরকার। বিজ্ঞান এবং স্বাস্থ্য বিজ্ঞান, এই দুইটার ওপর আমাদের গবেষণায় সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা চাই, আমাদের গবেষণায় আরো বেশি লোক মনোযোগী হবেন। গবেষকদের কোনো অসুবিধা থাকলে সেটা কিভাবে দূর করা যায়, সে ব্যাপারে আমাদের সরকার সব সময় অত্যন্ত আন্তরিক।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে গবেষণার জন্য যে টাকা আমরা অনুদান হিসেবে দিচ্ছি, মনে রাখতে হবে, এই টাকাটা বাংলাদেশের জনগণের টাকা। জনগণের টাকা জনগণের কল্যাণে যেন লাগে। কারণ গবেষণা থেকে যেটা উদ্ভাবন হবে, সেটা কিন্তু জনগণের কাজে লাগবে। সেই কথাটাই মাথায় রাখতে হবে। আমি মনে করি তরুণের যে মেধাশক্তি, সেটা বিকাশের মধ্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।’
অনূর্ধ্ব-১৬ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতায় বাংলাদেশের মেয়েদের অভিনন্দন জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ষোলর নিচে যারা (মেয়ে), তারা তো ভারতকে তিন গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন। তাদেরকে আমি ডাকব এবং তাদের ডেকে প্রাইজমানি দিয়ে উত্সাহিত করব।’
১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের যে উল্টো যাত্রা শুরু হয়েছিল সেই ইতিহাসও অনুষ্ঠানে মনে করিয়ে দেন তাঁর মেয়ে শেখ হাসিনা।
দেশের দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও পাবনার রূপপুরে করা হবে উল্লেখ করে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয়টির কাজ যাতে শুরু করা যায় সেই ব্যাপারে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছি। আরেকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চেষ্টা করেছিলাম দক্ষিণে। কিন্তু সেখানের মাটি এত নরম, প্রতিটি দ্বীপে আমরা অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেছি। আসলে সেখানে করা বোধ হয় সম্ভব নয়। তবে এখন যেখানে আমরা বিদ্যুৎকেন্দ্র করেছি সেটার কাজ সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয়টাও আমরা এই পাবনাতে, এই রূপপুরেই করতে পারব।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটার কাজ যখন শেষ হবে সঙ্গে সঙ্গে আমরা যেন দ্বিতীয়টার কাজ শুরু করতে পারি, এখন থেকে আমাদের সেই প্রস্তুতি নিতে হবে। তা ছাড়া বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ আমরা উেক্ষপণ করেছি এবং স্যাটেলাইট-২ উেক্ষপণেও আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।’
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ মালেক।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন।