কসবায় মাদ্রাসা ছাত্রী হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার

কসবা, 15 January 2024, 498 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় নিমবাড়ী গ্রামে মাদ্রাসা ছাত্রী হোসনে আরা রত্মা ( ১৪) হত্যাকান্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামি রতন ভূইয়াকে গ্রেফতার করেছে কসবা থানা পুলিশ।

১৪ জানুয়ারি রবিবার রাতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় কসবা থানা পুলিশ পাশ্ববর্তী মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাস ষ্ট্যান্ড এলাকা থেকে রতন মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রতন মিয়া উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের নিমবাড়ী গ্রামের মৃত সুদন ভূঁইয়ার ছেলে।

আজ ১৫ জানুয়ারি সোমবার দুপুরে মাদ্রাসাকৃত রতন মিয়াকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, গত ১০ জানুয়ারি মাদরাসা ছাত্রী হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের পিতা বাদি হয়ে কসবা থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলা হওয়ার পর পলাতক আসামীদের খুঁজতে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নেয়া হয়। রবিবার রাত প্রায় নয়টার দিকে পাশ্ববর্তী মুরাদনগর উপজেলার কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের কোম্পানীগঞ্জ বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় তার অবস্থান সনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামী রতন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।

কসবা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রাজু আহাম্মেদ জানান, মাদরাসা ছাত্রী হোসনে আরা হত্যাকান্ডে মামলার প্রধান আসামী রতন ভূইয়াকে মাদ্রাসা করতে সক্ষম হয়েছি।

সোমবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মূল ঘটনা উৎঘাটন করতে আদালতের নিকট ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।

Leave a Reply

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ৮৩…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও সঠিক প্রক্রিয়ায় ৮৩জন Read more

জননিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত…

চলারপথে রিপোর্ট : জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত একান্ত Read more

বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : বিজয়নগর উপজেলা থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ১ Read more

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুরে ১৪৪ ধারা…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ও Read more

বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও Read more
ফাইল ছবি

আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞাতনামা Read more

আখাউড়ায় বিনামূল্যে ধান বীজ বিতরণ চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া উপজেলায় Read more

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় আবু বাক্কার নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : কুয়েতে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় শেখ আবু বাক্কার (৩৪) Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাস উল্টে যাত্রী নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলায় বাস উল্টে গোপী কান্ত ঘোষ Read more

ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশার Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের বিতর্ক প্রতিযোগিতা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের ৩৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে Read more

ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই পাচারকারী গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ১হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গোপাল রায় Read more

কসবায় পলিথিনে মোড়ানে ৯ কেজি গাঁজাসহ যুবক আটক

কসবা, 9 July 2024, 184 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
কসবায় খড়ের গাদার নিচ থেকে পলিথিনে মোড়ানে ৯ কেজি গাঁজাসহ একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

৮জুলাই সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউপির কেয়াইর গুচ্ছগ্রাম থেকে গাঁজাসহ রৌশন মিয়াকে আটক করা হয়। আটক রৌশন মিয়া কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউপির নোয়াগাঁও গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে।

কসবা থানার ওসি রাজু আহাম্মেদ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার খাড়েরা ইউপির কেয়াইর গুচ্ছগ্রামে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে গুচ্ছগ্রাম থেকে রৌশন মিয়াকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে গুচ্ছগ্রামের ২১৯ নম্বর ঘরের পাশে খড়ের গাদার নিচে ছোট ছোট পলিথিনে মোড়ানে ৯ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। তিনি একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ ৬ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

কসবা, 8 September 2023, 656 Views,

চলারথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৪৩ কেজি গাঁজা, ১হাজার ৮০০শত পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ১৫ বোতল ফেন্সিডিলসহ ৬ মাদক ব্যাবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর।

আজ ৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ভোরে ও বৃহস্পতিবার রাতে জেলার কসবা উপজেলার জাজিসার, একই উপজেলার রানিয়ারা ও বিনাউটি এবং সদর উপজেলার উজানিশার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন কসবা উপজেলার জাজিসার গ্রামের খাদিজা আক্তার স্বপ্না (২১), একই এলাকার রবিউল হাসান (২২), নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার দুলালপুর গ্রামের লিজা আক্তার (২৮), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের রাজু ভৌমিক (২৫), ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার উজানিসার গ্রামের মোসলেম ভূইয়া (৪৮) ও তার স্ত্রী রুনা বেগম (৩৫)।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মহিউদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে উপজেলার জাজিসার গ্রামের উত্তরপাড়ায় সুমন মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১২৫ কেজি গাঁজাসহ সুমন মিয়ার স্ত্রী খাদিজা আক্তার স্বপ্না ও রবিউল হাসানকে গ্রেফতার করা হয়।

এছাড়া বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার রানিয়ারা গ্রামে অভিযান চালিয়ে ৬ কেজি গাঁজাসহ লিজা আক্তার ও রাত ১০টার দিকে উপজেলার বিনাউটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১ হাজার ৮০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ রাজু ভৌমিককে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় কসবা থানায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহকারি পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলার উজানিসার গ্রামের মোসলের ভূঁইয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১২ কেজি গাঁজা এবং ১৫ বোতল ফেন্সিডিলসহ মোসলেম ভূঁইয়া এবং তার স্ত্রী রুনা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেমকে (৭৩) রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামে নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। পারিবারিক সূত্র জানায়, আবুল হাশেম দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। গত শনিবার রাতে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। গতকাল রোববার দুপুরে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের মাঠে তাকে নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীনের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. ইসমত আলী, সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৫ ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

আজ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

আখাউড়া, কসবা, জাতীয়, নাসিরনগর, বিজয়নগর, রাজনীতি, সরাইল, 9 January 2023, 6028 Views,
স্টাফ রিপোর্টার:
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। এর আগে ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি কারাগারে দীর্ঘ ৯ মাস কারাভোগের পর মুক্তি লাভ করেন তিনি। পরে তিনি পাকিস্তান থেকে লন্ডন যান। তারপর দিল্লী হয়ে ঢাকা ফেরেন বঙ্গবন্ধু। দিবসটি পালন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধু সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবহিত পর পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে তাকে গ্রেফতার করে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে আটক রাখা হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে নয় মাস যুদ্ধের পর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে জাতি বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ গ্রহণ করে।
জাতির পিতা পাকিস্তান থেকে ছাড়া পান ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি ভোর রাতে ইংরেজি হিসেবে ৮ জানুয়ারি। এদিন বঙ্গবন্ধু ও ড. কামাল হোসেনকে বিমানে তুলে দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় তারা পৌঁছান লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে। বেলা ১০টার পর থেকে বঙ্গবন্ধু কথা বলেন, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ, তাজউদ্দিন আহমদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ অনেকের সঙ্গে। পরে ব্রিটেনের বিমান বাহিনীর একটি বিমানে করে পরের দিন ৯ জানুয়ারি দেশের পথে যাত্রা করেন।
১০ জানুয়ারি সকালেই তিনি নামেন দিল্লীতে। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, সমগ্র মন্ত্রিসভা, শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান এবং অন্যান্য অতিথি ও সেদেশের জনগণের কাছ থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা লাভ করেন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু ভারতের নেতৃবৃন্দ এবং জনগণের কাছে তাদের অকৃপণ সাহায্যের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করেছিলেন ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা হিসেবে।’
এদিন বেলা ১টা ৪১ মিনিটে তিনি ঢাকা এসে পৌঁছেন। চূড়ান্ত বিজয়ের পর ১০ জানুয়ারি বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে প্রাণঢালা সংবর্ধনা জানানোর জন্য প্রাণবন্ত অপেক্ষায় ছিল। আনন্দে আত্মহারা লাখ লাখ মানুষ ঢাকা বিমান বন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত তাঁকে স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনা জানান। বিকাল পাঁচটায় রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লাখ লোকের উপস্থিতিতে তিনি ভাষণ দেন। পরের দিন দৈনিক ইত্তেফাক, সংবাদসহ বিভিন্ন পত্রিকায় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে এভাবেই লিখা হয়- ‘স্বদেশের মাটি ছুঁয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের নির্মাতা শিশুর মতো আবেগে আকুল হলেন। আনন্দ-বেদনার অশ্রুধারা নামলো তার দু’চোখ বেয়ে। প্রিয় নেতাকে ফিরে পেয়ে সেদিন সাড়ে সাত কোটি বাঙালি আনন্দাশ্রুতে সিক্ত হয়ে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে তোলে বাংলার আকাশ-বাতাস।’
জনগণ নন্দিত শেখ মুজিব সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাঁড়িয়ে তাঁর ঐতিহাসিক ধ্রুপদি বক্তৃতায় বলেন, ‘যে মাটিকে আমি এত ভালবাসি, যে মানুষকে আমি এত ভালবাসি, যে জাতিকে আমি এত ভালবাসি, আমি জানতাম না সে বাংলায় আমি যেতে পারবো কিনা। আজ আমি বাংলায় ফিরে এসেছি বাংলার ভাইয়েদের কাছে, মায়েদের কাছে, বোনদের কাছে। বাংলা আমার স্বাধীন, বাংলাদেশ আজ স্বাধীন। সশ্রদ্ধ চিত্তে তিনি সবার ত্যাগের কথা স্মরণ করেন এবং সবাইকে দেশ গড়ার কাজে উদ্বুদ্ধ করে বলেন, ‘আজ থেকে আমার অনুরোধ, আজ থেকে আমার আদেশ, আজ থেকে আমার হুকুম ভাই হিসেবে, নেতা হিসেবে নয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়। আমি তোমাদের ভাই, তোমরা আমার ভাই। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না পায়, এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়, এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এদেশের যুবক যারা আছে তারা চাকরি না পায়। মুক্তিবাহিনী, ছাত্র সমাজ তোমাদের মোবারকবাদ জানাই তোমরা গেরিলা হয়েছো, তোমরা রক্ত দিয়েছো, রক্ত বৃথা যাবে না, রক্ত বৃথা যায় নাই।
বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘একটা কথা-আজ থেকে বাংলায় যেন আর চুরি-ডাকাতি না হয়। বাংলায় যেন আর লুটতরাজ না হয়। বাংলায় যারা অন্য লোক আছে অন্য দেশের লোক, পশ্চিম পাকিস্তানের লোক বাংলায় কথা বলে না, তাদের বলছি তোমরা বাঙালি হয়ে যাও। আর আমি আমার ভাইদের বলছি তাদের উপর হাত তুলো না আমরা মানুষ, মানুষ ভালোবাসি। ‘তবে যারা দালালি করেছে যারা আমার লোকদের ঘরে ঢুকে হত্যা করেছে তাদের বিচার হবে এবং শাস্তি হবে’ উল্লেখ করে জাতির পিতা বলেন, ‘তাদের বাংলার স্বাধীন সরকারের হাতে ছেড়ে দেন, একজনকেও ক্ষমা করা হবে না। তবে আমি চাই স্বাধীন দেশে স্বাধীন আদালতে বিচার হয়ে এদের শাস্তি হবে। আমি দেখিয়ে দিতে চাই দুনিয়ার কাছে শান্তিপূর্ণ বাঙালি রক্ত দিতে জানে, শান্তিপূর্ণ বাঙালি শান্তি বজায় রাখতেও জানে।’ বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমায় আপনারা পেয়েছেন। আমি আসছি। জানতাম না আমার ফাঁসির হুকুম হয়ে গেছে। আমার সেলের পাশে আমার জন্য কবর খোড়া হয়েছিলো। আমি প্রস্তুত হয়েছিলাম, বলেছিলাম আমি বাঙালি, আমি মানুষ, আমি মুসলমান, মুসলমান একবার মরে দুইবার মরে না। আমি বলেছিলাম, আমার মৃত্যু আসে যদি আমি হাসতে হাসতে যাবো। আমার বাঙালি জাতকে অপমান করে যাবো না, তোমাদের কাছে ক্ষমা চাইবো না। এবং যাবার সময় বলে যাবো জয় বাংলা, স্বাধীন বাংলা, বাঙালি আমার জাতি, বাংলা আমার ভাষা, বাংলার মাটি আমার স্থান।’
বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী সরকার তাঁর নির্দেশিত যুদ্ধ পরিচালনা করে। নয় মাসের যুদ্ধের এক পর্যায়ে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ চূড়ান্ত রূপ নিতে শুরু করে। ধীরে ধীরে স্বাধীনতা অর্জনের পথে মুক্তিযোদ্ধা, জনতা ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণ তীব্র হয়। জয় তখন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় মাত্র। একই সাথে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তোলা হয় প্রবাসী সরকারের নেতৃত্বে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হলে পাকিস্তানী বর্বর শাসকগোষ্ঠী বাধ্য হয় তাঁকে সসম্মানে মুক্তি দিতে।
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। এর আগে সরকার পরিচালনা করে অস্থায়ী প্রবাসী সরকার। ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ২৩ সদস্য বিশিষ্ট আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে। ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ জারিকৃত প্রেসিডেন্সিয়াল আদেশ বলে গণপরিষদ গঠন করে নভেম্বর মাসের মধ্যেই দেশের জন্য একটি সংবিধান উপহার দেয়া হয় এবং যা ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়। বাসস।

আমরা সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী: আইনমন্ত্রী

কসবা, জাতীয়, 6 January 2023, 2062 Views,

স্টাফ রিপোর্টার:
স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষতি হয় বর্তমান সরকার এমন কিছু করেনি বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেছেন, এই আইন সাংবাদিকদের স্বাধীনতা হরণের জন্য নয়। সাইবার ক্রাইমকে আইনের আওতায় আনার জন্য করা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে গতকাল শুক্রবার দুপুরে কসবা প্রেসক্লাবের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন আনিসুল হক। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাবেদ রহিম বিজন।
আলোচনা সভায় মন্ত্রী বলেন, আমরা বাংলাদেশের সংবিধানে বিশ্বাসী, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। আমরা স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। আমরা কখনো চাইনা বাংলাদেশের সাংবাদিকতার স্বাধীনতা খর্ব হোক। জামিনের বিষয়ে সরকার নিম্ন আদালতে হস্তক্ষেপ করেছে, বিরোধী দলগুলোর এমন অভিযোগ সাংবাদিকেরা আইনমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, এটা ঠিক নয়। সরকার আদালতে হস্তক্ষেপ করে না। নিম্ন আদালতে বেল (জামিন) না পেলে মহানগর দায়রা আদালতে যাবে। তা ছাড়া ওখানে না হলে হাইকোর্টে যাবে, এটাই নিয়ম।
তত্ত্বাবধায়ক বা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করে যাচ্ছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। কিন্তু আইনমন্ত্রীর সাফ কথা, সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন হবে। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নাই। আনিসুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সংবিধান অনুযায়ী যে সময় উল্লেখ আছে, সেই সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধানে যা নাই, তা হবে না। কেয়ারটেকার সংবিধান নেই, তা অবৈধ। সবাই নির্বাচনে আসেন। জনগণ যাকে চায়, তাকে ভোট দেবে। নেত্রী শেখ হাসিনার কারণে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে, পরিষ্কার পানি ঘোলা করবেন না।
কসবা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবদুল হান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কসবা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদুল কাওছার ভূঁইয়া, কসবা পৌরসভার মেয়র গোলাম হাক্কানী, সাবেক মেয়র এমরান উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ, কসবা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মনির হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনিসুল হক ভূঁইয়া, রুহুল আমিন ভূঁইয়া, কসবা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সফিকুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রলীগ আহ্বায়ক আফজাল হোসেন।