চলারপথে রিপোর্ট :
৩ হাজার ৫২৫ পিস ইয়াবাসহ ৩ নারী মাদক কারবারিকে আটক করেছে র্যাব। আজ ১৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপাল ফ্লাইওভার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইয়াবা ট্যাবলেট সহ তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার মুছনী গ্রামের ইউনুছ এর মেয়ে জোছনা মনি (২১), কক্সবাজার সদর উপজেলার বাজারঘাটা গ্রামের মৃত জহির আহমেদের মেয়ে রিয়া মনি (২২), টেকনাফের আলিকালি গ্রামের মুত্তুল হোসেনের মেয়ে সায়মন জনি (২০)।
র্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্প জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে কতিপয় মাদক কারবারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন মহিপালস্থ ফ্লাইওভারের নীচে রাস্তার উপর ইয়াবা ট্যাবলেট ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য অবস্থান করছে। র্যাবের একটি দল ওইস্থানে উপস্থিত হওয়া মাত্রই র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ৩ মাদক কারবারি কৌশলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। র্যাব সদস্যরা তাদের আটক করে। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ, তল্লাশি করে ভ্যানিটি ব্যাগ ও শপিং ব্যাগের ভিতরে বিশেষ কায়দায় রক্ষিত ১৮টি নীল রংয়ের পলিপ্যাকের ভেতর থেকে ৩ হাজার ৫শত ২৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
আটককৃতরা র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন সুকৌশলে ইয়াবা ট্যাবলেট কক্সবাজার জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হতে স্বল্পমূল্যে সংগ্রহ করে পরবর্তীতে ফেনীসহ আশেপাশের জেলার বিভিন্ন মাদক কারবারি ও সেবনকারীদের নিকট অধিক মূল্যে বিক্রি করে আসছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
চলতি মাসের প্রথমদিন থেকে শুরু হয়েছে ট্রেনের টিকিট কাটার নতুন নিয়ম। জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও জন্ম নিবন্ধন দিয়ে নিবন্ধন করে ট্রেনের টিকিট কাটা বাধ্যতামূলক করা হয়। নতুন এ নিয়মে গত দু’দিনে রেলওয়ের আয় কমে গেছে? তাই স্ট্যান্ডিং টিকিট (আসনবিহীন) ক্রয় করতে এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে?
আজ ৩ মার্চ শুক্রবার সকালে এ তথ্য জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারী কবির হোসেন তালুকদার। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে স্ট্যান্ডিং টিকিট ক্রয় উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে? অনলাইন ও অফলাইনে সার্ভার উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। স্ট্যান্ডিং টিকিট ক্রয় করতে এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধন লাগবে না। এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে আমাদের মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে?
তিনি আরও জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যাত্রীদের জন্যে ৯৩৯টি আসন রয়েছে। প্রতিদিন এ স্টেশন থেকে গড়ে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। প্রতি মাসে কোটি টাকার বেশি সরকার এ স্টেশন থেকে আয় করছে? নিবন্ধন করে টিকিট ক্রয়ে বাধ্যবাধকতা করায় কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছে? এতে করে যাত্রী কমে যাওয়ায় গত দুদিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন চার লাখ টাকা রাজস্ব হারিয়েছে।
সূত্র জানায়, অনলাইন বা স্টেশন থেকে নতুন নিয়মে আসনসহ ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধনের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হচ্ছে। বিদেশিদের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট দিয়ে নিবন্ধন করে টিকিট কাটতে হবে। টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ, বিনা টিকিটে ভ্রমণে জরিমানা করা ও ভাড়া আদায় সহজ করার জন্য এমন ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ফুলসজ্জিত গাড়িবহর ও সহকর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে অবসরে গেলেন কনস্টেবল মো. মিজানুর রহমান। গতকাল রবিবার দীর্ঘ ৪০ বছরের কর্মজীবন শেষ করে অবসরে যান তিনি। বিকালে অন্যরকম এক আয়োজনের মাধ্যমে তাকে বিদায় জানিয়েছেন কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া থানার ওসি শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেলসহ থানা পুলিশের কর্মকর্তা-সদস্যরা।
বিদায়ের আগে থানায় এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা শেষে পুলিশ সদস্য মিজানুর রহমানের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় তার হাতে সম্মাননা স্মারক ও উপহার সামগ্রী তুলে দেন থানা পুলিশের সদস্যরা।
শেষ মুহূর্তে ফুল দিয়ে সজ্জিত থানা পুলিশের গাড়িবহরের মাধ্যমে তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। বিদায়বেলায় এমন সম্মাননায় অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন মিজান।
কনস্টেবল মো. মিজানুর রহমানের বাড়ি কুমিল্লা সদর উপজেলার শাসনগাছা এলাকায়। তিনি ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। এর মধ্যে তিনি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চাকরি করেছেন। দীর্ঘ ৪০ বছরের চাকরি জীবন শেষে ব্রাহ্মণপাড়া থানা থেকে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
কনস্টেবল মিজানুর রহমান বলেন, আমার সর্বস্ব দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সম্মান অক্ষুণ্ণ রেখে জনসাধারণের সেবা করেছি। অবসরকালে কর্মস্থল ব্রাহ্মণপাড়া থানার ওসি স্যার ও সব সহকর্মীরা সুন্দর একটি আয়োজনের মাধ্যমে আমাকে বিদায় দিয়েছেন। এতে গর্ববোধ করছি।
ওসি শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল বলেন, আমরা একসঙ্গে থাকার স্মৃতিকে অন্তরে লালন করে একজন পুলিশ সদস্যকে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে বিদায় দিতে পেরেছি। পুলিশের প্রত্যেক সদস্যকে অবসরকালে এভাবেই বিদায় দেওয়া উচিত।
চলারপথে ডেস্ক :
বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিটিং ব্যবস্থায় তিনটি সেবা অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছে। এর আওতায় জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) যাচাইপূর্বক ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হচ্ছে ১ মার্চ বুধবার।
তিনটি সেবার মধ্যে রয়েছে, জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ের মাধ্যমে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিটিং, টিকিট চেকিং ব্যবস্থায় পস (পয়েন্ট অব সেলস) মেশিনের প্রবর্তন এবং অনলাইনের মাধ্যমে কেনা টিকিট অনলাইনেই ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা।
রেল কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এতে কমবে টিকিট কালোবাজারি এবং যাত্রীদের ভোগান্তি। রেলওয়ে সূত্র বলছে, যাত্রীসেবা বাড়াতে ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ শীর্ষক স্লোগানকে সামনে রেখে ও বাংলাদেশ সরকারের লক্ষ্য অনুযায়ী ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে টিকিটিং ব্যবস্থায় এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে।
১ মার্চ থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিটিং ব্যবস্থায় সাতটি শর্ত জুড়ে যাচ্ছে।
১। ১২-১৮ বছর বয়সী যাত্রীরা পিতা বা মাতার নাম ও এনআইডি দ্বারা নিবন্ধনকৃত রেলওয়ে অ্যাকাউন্ট অথবা জন্মনিবন্ধন নম্বর দিয়ে এবং জন্মনিবন্ধন সনদ আপলোড করার মাধ্যমে নিবন্ধনকৃত অ্যাকাউন্ট দিয়ে পৃথক/এককভাবে টিকিট কিনতে পারবে। এরূপ ক্ষেত্রে টিকিটের ওপরে মুদ্রিত নামের সঙ্গে যাত্রীর সম্পর্ক যাচাইয়ের জন্য ভ্রমণকালে বাধ্যতামূলকভাবে জন্মনিবন্ধন সনদের ফটোকপি সঙ্গে রাখতে হবে।
২। বিদেশি নাগরিকেরা পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে এবং পাসপোর্টের ছবি আপলোড করার মাধ্যমে নিবন্ধন সম্পন্ন করবেন।
৩। সফলভাবে এনআইডি/ পাসপোর্ট/ জন্মনিবন্ধন যাচাইপূর্বক নিবন্ধন ব্যতিত কোনো যাত্রী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট কিনতে পারবেন না।
৪। ভ্রমণকালে যাত্রীকে অবশ্যই নিজস্ব এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি অথবা পাসপোর্ট/ ছবি সম্বলিত আইডি কার্ড সাথে রাখতে হবে।
৫। পরিচয়পত্রের সঙ্গে টিকিটের ওপরে মুদ্রিত যাত্রীর তথ্য না মিললে যাত্রীকে বিনা টিকিটে ভ্রমণের দায়ে অভিযুক্ত করা হবে এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৬। যাত্রীরা ২০২৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পরিচয়পত্র/ জন্ম নিবন্ধন/ পাসপোর্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের সিস্টেমে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন।
৭। দেশের বিভাগীয় শহরের রেলস্টেশন ও আন্তঃনগর ট্রেনের প্রারম্ভিক স্টেশনসমূহে সর্বসাধারণের নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করার জন্য একটি করে হেল্পডেস্ক স্থাপন করা হবে।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রেলভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
চলারপথে রিপোর্ট :
কুমিল্লায় বজ্রপাতে নুর ইসলাম (৪০) নামের এক কৃষি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আজ ১০ সেপ্টেম্বর রবিবার দুপুরে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার আমড়াতলী ইউনিয়নের যশপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নুর ইসলাম কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার বড়লই গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
আমড়াতলী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার কামাল উদ্দিন এতথ্য নিশ্চিত করে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি জানান, যশপুর গ্রামের মঞ্জিল মিয়ার কৃষিজমিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন নুর ইসলাম। দুপুর ১টার দিকে হঠাৎ বজ্রপাতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। তার মৃত্যুর খবর পরিবারকে জানানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আব্দুল কাদের চিতই পিঠা বিক্রি করে মাসে আয় করেন লাখ টাকা। পিঠা বিক্রি শুরু করেন রিক্সা চালানো বাদ দিয়ে। প্রতিমাসে লাখ টাকা আয় করে হয়ে যান সফল উদ্যোক্তা। স্বামী-স্ত্রী দুইজন মিলে পিঠা বিক্রি করে তিনি এখন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। একসাথে তিনি সাতটি চুলায় পিঠা তৈরি করেন, পিঠা বানানোর কৌশল দেথে মুগ্ধ লোকজন।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার পুটাইল ইউনিয়নের গোকুল নগর গ্রামের ওসমান গনির হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান আব্দুল কাদের। রিক্সা চালিয়ে অতিকষ্টে চলতো তার সংসার। এক পিঠা বিক্রেতার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে ২০১২ সালে স্ত্রী রুবি আক্তারকে সাথে নিয়ে শুরু করেন পিঠা বিক্রি । মানিকগঞ্জ বাজারের উত্তর পারে রাস্তার পাশে বসে তিনি পিঠা বিক্রি করেন। শুরুতে একটু কমহলেও এখন মাসে আয় করেন লক্ষ টাকা।
আব্দুল কাদের জানান, প্রতিদিন ৯০০-১০০০ পিঠা বিক্রি হয়। প্রতিটি পিঠা দশ টাকা দরে বিক্রি হয়। প্রতি পিঠায় কমপক্ষে লাভ হয় তিন টাকার মতো। কাদের পিঠা বিক্রি করেই নউখন্ডা এলাকায় সাড়ে পাঁচ শতক জমি ক্রয় করে নির্মাণ করেছেন বাড়ি। তিনি দুই কন্যা সন্তানের জনক। তারা স্কুলে লেখাপড়া করে। ভেজাল মুক্ত পিঠার সাথে দেয়া হয় ধনেপাতা, সরিষাবাটা, শুটকি ভর্তাসহ বিভিন্ন ভর্তা। বিভিন্ন ভর্তা দিয়ে মজাদার এই চিতই পিঠা খেতে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক ভিড় করেন আব্দুল কাদেরের দোকানে। বিকেল ৩টা থেকে রাত ১২টা নাগাদ বিক্রি হয় এই পিঠা। রাতেই বিক্রি বেশি হয়। পিঠা খেতে হয় সিরিয়াল ধরে। গরম গরম পিঠা দোকানে বসে খাওয়া শেষে পরিবারের জন্যও অনেকে নিয়ে যায়। দেখা যায়, পিঠার জন্য লোকজন অপেক্ষা করছেন। কেউ আবার বসে খাচ্ছেন, কেউ বা বসার জায়গা না পেয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই সাবার করছে পিঠা।
আব্দুল কাদের ছাড়াও আজিজুল হক, ফরমান আলীসহ জেলায় শতাধিক লোক চিতই পিঠা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। কেউ কেউ ভাপা পিঠাও বিক্রি করেন। আসল খেজুরের গুড় সংকট হওয়ায় ভাপা পিঠার কদর খুব বেশী নেই। শহরের রিজার্ভ ট্যাংকের পাশে বসে আজিজুলও প্রতিদিন পাঁচশত পিঠা বিক্রি করেন বলে জানান। আজিজুলও মাসে আয় করে থাকেন চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা। জেলায় শতাধিক লোক পিঠা বিক্রির সাথে জড়িত। জানা যায়, তারা প্রতিজন ৫ থেকে ৬শত পিঠা বিক্রি করে থাকেন। তাদের দেয়া তথ্য মতে জেলায় প্রতিদিন প্রায় ৫ লক্ষ টাকার চেতই পিঠা বিক্রি হয়।