পুকুরের পাড়ে পাড়ে হাজারো সবরি কলার গাছ

আখাউড়া, 23 January 2024, 931 Views,

চলারপথে রিপোর্ট:
বিস্তির্ণ ফসলের মাঠ চারপাশে। জমিতে যাওয়ার মেঠো পথ মাঝখান দিয়ে। পথের এক প্রান্তে গড়ে উঠেছে ছোট্ট বসতি। কৃষক ও কৃষি শ্রমিকরা এ পথ ধরে জমিতে যায়। বসতির লোকজনও এ পথ দিয়ে যাতায়াত করে।

banner

পথের এক পাশে বড় একটি একটি পুকুর। পুকরের চারপাড়ে রয়েছে সহস্রাধিক কলা গাছের বাগান। গাছে গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। কলাপাতার ফাঁক গলে উঁকি দিচ্ছে কলার মোচা। হাওয়ায় দুলছে কচি সবুজ কলাপাতা। এক অপরূপ দৃশ্য নজর কাড়ছে কৃষক, শ্রমিক, পথচারিদের। চলার পথে একটু দাঁড়িয়ে চোখ বুলায় কলাবাগানের দিকে। মাঝে মধ্যে স্থানীয় তরুন-যুবারাও আসে কলাবাগান দেখতে।

আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের ছোট কুড়িপাইকা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার (অব.) জাবেদ ইকবাল খন্দকার ছোট কুড়িপাইকা ফসলি মাঠে বাগানটি করেছেন। ইতোমধ্যে শতাধিক গাছে কলার ছড়া এসেছে। কয়েক ছড়া কলা নিজেরা খেয়েছেন। পাইকাররা এসে বাগান দেখে দরদাম করছেন। ফলন ভালো হওয়ায় তিনি উদ্যোক্তা খুশি। দুই লক্ষাধিক টাকার কলা বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি। বীর মুক্তিযোদ্ধা জাবেদ ইকবাল খন্দকারের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ১ বছর আগে সাড়ে তিন বিঘা অনাবাদি জমিতে পুকুর খনন করেন। পুকুরের চারপাড়ে সবরি জাতের ৪’শ কলা রোপন করেন। সাথে কিছু সাগর ও আনাজি কলা। একটি চারা থেকে ৩/৪টি গাছ হয়েছে। বর্তমানে বাগানে প্রায় ১ হাজার ৩’শ কলা গাছ আছে। প্রায় দেড়শ গাছে কলা এসেছে। আরও আসছে।

কলা গাছের বাগান করার পরিকল্পনার বিষয়ে প্রবীন বীর মুক্তিযোদ্ধা জাবেদ ইকবাল খন্দকার আরও বলেন, আমি জমিতে এসে দেখি কৃষক-শ্রমিকরা রোদের মধ্যে জমিতে কাজ করে। রোদে বসে খাবার খায়। শ্রমিকরা প্রায়ই বলতো এখানে যদি গাছ থাকতো তাহলে তাদের সুবিধা হতো।

এজন্য আমি পুকুর খনন করে পুকুরের চার পাড়ে কলা গাছ রোপন করেছি। ১২টি কাঁঠাল গাছ লাগিয়েছি। শ্রমিকদের বলেছি বাগানে বসে খাবার খাওয়া এবং বিশ্রাম করার জন্য। অনেক সময় ছেলে মেয়েরা এখানে ঘুরতে আসে। বাগান দেখে আনন্দ পায়।

তিনি আরও বলেন, প্রায় ১৩ হাজার টাকার কলার চারা রোপন করেছেন। সবকিছু মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। পুকুরে কাতল, রুইসহ বিভিন্ন জাতের মাছ চাষ করছেন। আশা করছেন দুই লক্ষাধিক টাকার কলা বিক্রি করতে পারবেন। শ্রমিক নিয়ে তিনি নিজেই বাগানোর দেখাশুনা করেন।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কলা গাছে ছোট বড় কলার ছড়া ঝুলছে। পাতার ফাঁক গলে বেরিয়ে আসছে কলার মোচা। পুকুরে মাঝে মাঝে টুপ-টাপ শব্দ করে করে জানান দিচ্ছে মাছেরা আছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা জাবেদ ইকবাল খন্দকারের সৌদি আরব প্রবাসী পুত্র সুমন খন্দকার বলেন। বাবা সব সময় কৃষি কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এতে তিনি আনন্দ পান। আমরা বিদেশ থেকে খোঁজ খবর রাখি। যখন যা প্রয়োজন হয় সহযোগিতা করি। বাগানটি দেখে খুব ভালো লাগছে।

আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া তাবাস্সুম বলেন, ভালোভাবে পরিচর্যা করলে সবগুলো গাছেই কলা আসবে। সবরি কলার ফলন ভালো। রোগ-পোকার আক্রমন কম হয়। অন্যান্য কলার তুলনায় সবরি কলার পুষ্টিগুণ বেশি। আইরনের চাহিদা পূরণ করে।

সবরি কলার বাজার চাহিদাও বেশি। কৃষক আসাদের সাথে যোগাযোগ করতে আমরা তাকে পরামর্শ দিব। আমাদের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাকে বলবো বাগানটি দেখে আসতে।

Leave a Reply

নবীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে প্রাইভেটকার ও ট্রাক্টরের সঙ্গে Read more

প্রতিপক্ষের হামলায় নারী নিহত, দুইজন আটক

চলারপথে রিপোর্ট : তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় খাইরুন Read more

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

দীর্ঘ ২৩ বছর পর ভারত থেকে দেশে ফিরলেন হারিয়ে যাওয়া ফজিলা খাতুন

আখাউড়া, 23 June 2023, 1380 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :

banner

দীর্ঘ প্রায় ২৩ বছর পর নিজ জন্মভূমিতে ফিরলেন হারিয়ে যাওয়া ফজিলা খাতুন নেছা (৫৫)। শুক্রবার দুপুরে ভারতের ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশন আগরতলা থেকে আখাউড়া চেকপোষ্ট দিয়ে তাকে দেশে পাঠায়।

এর আগে তিনি ২০০০ সালে ঝিনাইদহ জেলার নিজ বাড়ি থেকে হারিয়ে যান। ফজিলা খাতুন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিষয়খালি গ্রামের খয়বার আলীর মেয়ে। এদিকে হারিয়ে যাওয়া ফজিলা খাতুনকে গ্রহণ করতে সীমান্তের শূণ্য রেখায় উপস্থিত ছিলেন তার মেয়েসহ স্বজনরা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর মাকে ফিরে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গেন পরেন মেয়ে পিঞ্জিরা আক্তার। মেয়ের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকেন অসুস্থ ফজিলা খাতুন। সীমান্তের শূণ্য রেখায় এসময় হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ দিন পর স্বজনকে ফিরে পেয়ে আনন্দে উচ্ছ্বাসিত হয়ে পড়েন স্বজনরা। তবে অসুস্থতার কারণে ফজিলা কথা বলতে পারেননি। তিনি কিভাবে ভারতে গিয়েছিলেন তাও জানা যায়নি।

সীমান্তের শূন্য রেখায় ফজিল খাতুনের ভাইপো মোঃ শাহজালাল বলেন, ২০২২ সালের আগস্ট মাসে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে জানতে পারি আমার ফুফু ভারতের আগরতায় মানসিক হাসপাতালে আছে। তারপর সরকারের সাথে যোগাযোগ করে ত্রিপুরার হাই কমিশনার আরিফ মোহাম্মদের সহযোগিতায় আজকে ফুফুকে দেশে আনতে পেরেছি।

মাকে ফিরে পেয়ে পিঞ্জিরা আক্তার বলেন, মা যখন হারিয়ে যায় তখন আমার বয়স ১২। শুনেছি মা হারিয়ে গেছে। মাকে অনেক খোঁজাখুজি করেও পাইনি। মা এতদিন আমাদের কাছে মৃত ছিল। আজ জীবিত ফিরে পেয়ে খুব আনন্দ লাগছে।

ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার আরিফ মোহাম্মদ বলেন, দীর্ঘ ২৩ বছর পরে হারিয়ে যাওয়া এক মাকে তার সন্তানের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তিনি নিজ বাড়ি থেকে হারিয়ে যান। তার পরিবারের লোকজন তাকে অনেক খোজাখুজি করেও পায়নি। পরবর্তীতে কোন এক সময় তাকে ত্রিপুরায় পাওয়া যায়। পরে ত্রিপুরার মর্ডাণ সাইক্রিয়াটিক হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে ত্রিপুরা পুলিশ আমাকে তার কথা বলে। আমি বাংলাদেশ সরকারের কাছে তার তথ্য প্রেরণ করে তার নাগরিকত্ব যাচাই করে ভারত সরকারকে অবহিত করি। ভারত সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে আজকে তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। তিনি ত্রিপুরা রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও বলেন, একদিকে যেমন আনন্দের। একই সাথে আমাদেরকে আরও সচেতন হতে হবে।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় হাই কমিশনের প্রথম সচিব মোঃ রেজাউল হক চৌধুরী, মোঃ আল আমিন, ৪২ বিএসএফ আগরতলা আইসিপির কোম্পানী কোমান্ডার ধিবেকান দিমান, আখাউড়া ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ হাসান আহমেদ ভূইয়া, বিজিবি আখাউড়া আইসিপির ইনচার্জ মোঃ শাহআলম, ইমিগ্রেশন পুলিশের এএসআই দেওয়ান মুর্শেদুল হক প্রমুখ।

সেপ্টেম্বরে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের উদ্বোধন: রেলমন্ত্রী

আখাউড়া, জাতীয়, 17 May 2023, 2740 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পের কাজ আগামী জুন মাসেই শেষ হবে। এরপর ট্রায়াল রান শেষে আগামী সেপ্টেম্বরেই রেলপথটি খুলে দেয়া হবে। ভারত ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী রেলপথটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। দু’দেশের মানুষ এই রেলপথের সুবিধা পাবেন।

banner

আজ ১৭ মে বুধবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্তবর্তী শিবনগর এলাকায় আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

রেলপথটির বাণিজ্যিক গুরুত্ব তুলে ধরে রেলমন্ত্রী বলেন, রেলপথটি চালু হলে ভারতের সাথে বাণিজ্যের আরেকটি দ্বার খুলবে। সড়কপথে পণ্য পরিবহনে খরচ বেশি। কিন্তু ট্রেনে পণ্য পরিবহনে খরচ কম হবে। এর সুবিধা দুইদেশের জনগণই পাবে।

তিনি আরো বলেন, এটি চালু হলে বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে ভারতের এ অঞ্চলের ৭টি রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হবে। আপাতত মিটার গেজ ট্রেন দিয়ে এই পথে যোগাযোগ স্থাপিত হবে। রেলের পরিকল্পনা আছে সমস্ত রেল ব্যবস্থাকে ব্রড গেজে রূপান্ত করা হবে। ধীরে ধীরে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ব্রড গেজ করা হবে। এই পরিকল্পনা নিয়ে আমরা কাজ করছি। শিঘ্রই টঙ্গী থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

রেলের উন্নয়নের ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, রেলের পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে আরও ৪/৫টি নতুন ট্রেন দেওয়া হবে। এতে যাত্রী চলাচলে আরও সুবিধা হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক আবু জাফর মিয়া ও প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের কান্ট্রি হেড শরৎ শর্মা, প্রকল্প পরিচালক জাফর উল্লাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ রুহুল আমিন, আখাউড়া ইউএনও অংগ্যজাই মারমা প্রমুখ।

উল্লেখ্য, সাড়ে ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পটির কাজ ২০১৮ সালের জুলাইয় মাসে শুরু হয়। বাংলাদেশ অংশে ৭ কি: মি:। ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এর কাজ পায়। দেড় বছর মেয়াদী প্রকল্পটির মেয়াদ চারদফায় বাড়িয়ে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত করা হয়।

দেশের স্থিতিশীলতা বিএনপির সহ্য হচ্ছে না: আইনমন্ত্রী

আখাউড়া, রাজনীতি, 3 July 2023, 1870 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
জনগণকে সাথে নিয়ে বিশৃঙ্খলাকারীদের প্রতিহত করা হবে মন্তব্য করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আমরা বাংলাদেশে স্বাধীনভাবে এবং স্থিতিশীল জীবন যাপন করছি। এটা বিএনপি-জামাতের সহ্য হচ্ছে না। তারা দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।

banner

পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে আজ ৩ জুলাই সোমবার বিকেলে আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ঈদ পুর্নমিলনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে ‘কোন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে যদি বিএনপির দূর্নীতিবাজরা ক্ষমতায় আসে তাহলে দেশ আর দেশ থাকবে না।’ এসময় তিনি নেতাকর্মীদেরকে জনগণের কাছে যাওয়ার নির্দেশ দেন।

মন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে নিজ নির্বাচনী এলাকা কসবা ও আখাউড়ার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরেন। এসময় আখাউড়া সড়ক বাজারে জনগণের চলাচলের অসুবিধার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।

এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. তাকজিল খলিফা কাজলসহ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

সোলায়মানের মরদেহ দেখতে পারার আকুতি বাবার

আখাউড়া, 23 February 2024, 870 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
জীবিকার তাগিদে তিন বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি দিয়েছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ার দক্ষিণ ইউনিয়নের বীরচন্দ্রপুর গ্রামের আব্দুল হকে ছেলে মো. সোলেমান মিয়া (২৪)। ২২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের রিয়াদে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান সোলায়মান। তার খোঁজ নিতে দু’দিন ধরে বাড়িতে লোকজন আসছেন।

banner

ছবি হাতে বুক চাপড়াচ্ছেন মা। কখনো দু’হাত তুলে বিলাপ করছেন। ছেলের মরদেহ দেখতে পারার আকুতি বাবার কথায়। চোখের কোনে পানি জমা থাকা বাবার শঙ্কা মরদেহ আনতে যে টাকা লাগবে সেটা তিনি পাবেন কোথায়। বোনসহ স্বজনরাও সোলায়মানের শোকে কাতর।

স্থানীয় ও পরিবারের লোকজন জানানা, চার ভাই-বোনের মধ্যে সোলেমান দ্বিতীয়। বাবা দিনমজুর। এখন অসুস্থ। পরিবারের সুখের আমায় বছর তিনেক আগে সৌদিতে যায় সে। এ জন্য পরিবারের লোকজনকে অনেক টাকা ধারদেনা করতে হয়।

এদিকে দেশে আসবেন বলে প্রায় চার মাস আগে মোবাইল ফোনে বিয়ে করেন সোলেমান। এবারের রমজানের আগে বাড়িতে এসে বৌ ঘরে তোলার কথা। স্ত্রীর সঙ্গে সংসার করতে না করতেই, হাতে মেহেদী না মুছতেই সোলেমান পরপারে পাড়ি জমিয়েছে। সোলেমানের মৃত্যুতে পুরো পরিবার দিশেহারা।

কেননা, ধারদেনা করে তিন বছর আগে সৌদিতে যান তিনি। এখনো চার লাখ টাকা পাওনা পরিশোধের বাকি। এখন আবার তার মরদেহ আনতে টাকা লাগার খবরে পরিবারের লোকজন চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
সোলেমানের মা ছেলের ছবি হাতে বারবার বিলাপ করছিলেন, ‘বাপ অসুস্থ দেইক্কা পুলারে মুবাইল ফোনে বিয়া করাইছি। রমজানের আগে বউরে বাড়িত আনলাম অইলে। অহন আমার সব শেষ। আমি পুলার লাশটা দেকতাম চাই। শুনছি লাশ আনতে টেহা লাগবো। এই টেহা আমি পামু কই। সরকার আমডারে সাহাইজ্জ করুক আমার পুতের লাশ দেশে আনার লইগা।

সোলায়মানের প্রতিবেশী ও দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. আব্দুর রহিম জানান, পরিবারটি খুবই দরিদ্র। সোলেমানের টাকায় তাদের সংসার চলতো। বৃহস্পতিবার সকালে তার মৃত্যুর খবর আসে। সোলেমানের মরদেহ দেশে আনতে সরকার সহযোগিতা করবে বলে আশা করছি।

আখাউড়ায় পুলিশ সদস্যের রাজকীয় বিদায়

আখাউড়া, 4 January 2024, 903 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
অবসরের বিষণ্নতা কাটিয়ে ৪০ বছরের কর্মজীবন শেষে রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা পেলেন আখাউড়া থানার পুলিশ সদস্য মো. মুজিবুল আলম ভূঁইয়া। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেনের সার্বিক দিকনির্দেশনায় এই সংবর্ধনা দিলেন আখাউড়া থানার ওসি নূরে আলম।

banner

৩ জানুয়ারি বুধবার সকালে থানা চত্বরে পুলিশ কনস্টেবল মুজিবুল আলম ভূঁইয়ার জন্য এই বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করেন। পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে তাকে সম্মাননা স্মারক ও বিভিন্ন উপহার প্রদান করা হয়।

এ সময় আখাউড়া থানার ওসির গাড়িটি ফুল দিয়ে সাজিয়ে কর্মস্থল থেকে তার নিজ বাস ভবন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার তালতলা গ্রামে পৌঁছে দেওয়া হয়।

এর আগে সহকর্মীরা ভালোবাসার সঙ্গে বিদায় দেন এই পুলিশ সদস্যকে। এ সময় এক আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়।

পুলিশ সুপারের সার্বিক দিকনির্দেশনায় ওসির এমন আয়োজনে খুশিতে আÍহারা পুলিশ কনস্টেবল মুজিবুল আলম ভূঁইয়া। এ আয়োজনে কর্মজীবনের শেষে এক সুখস্মৃতি দিয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।

বিদায়ি অশ্রুসিক্ত পুলিশ কনস্টেবল মুজিবুল আলম ভূঁইয়া জানান, চাকরি জীবনে আমি কখনো দায়িত্বে অবহেলা করিনি। এতোদিন দেখে আসছি বড় বড় পুলিশ কর্মকর্তাদের ঢাকঢোল পিটিয়ে বিদায় দেওয়া হয়। কিন্তু একজন সাধারণ পুলিশ সদস্যকে এভাবে বিদায় জানাবে কল্পনাও করিনি। আমি ধন্য, আমি কৃতজ্ঞ।