মিয়ানমার সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে বিজিবি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

জাতীয়, 27 January 2024, 401 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
মিয়ানমার সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা সতর্ক রয়েছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন।

আজ ২৭ জানুয়া‌রি শ‌নিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

এর আগে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের পাঁচ সদস্যের এক‌টি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, মিয়ানমার সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনা চলছে। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে আমাদের সীমান্তরক্ষীরা (বিজিবি) সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।

হাছান মাহমুদ জানান, রোহিঙ্গা ইস্যুতে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমরা মনে করি, রোহিঙ্গাদের সেখানে ফিরে যাওয়াই একমাত্র সমাধান। তারাও আমাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে একমত। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের পাশে আছে। আমরা মনে করি, রোহিঙ্গাদের ফেরাতে তাদের প্রচেষ্টা ও চাপ অব্যাহত থাকবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা মামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যাকায় ইসরায়েলের নৃশংস গণহত্যা বন্ধের রায়কে আমরা স্বাগত জানাই। এই মামলা দক্ষিণ আফ্রিকাকে আমরা আগেই সমর্থন দিয়েছি।

শ‌নিবার পাঁচদিনের সফরে বাংলা‌দেশে এসেছে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের পাঁচ সদস্যের এক‌টি প্রতি‌নি‌ধিদল। যুক্তরাজ্যের সাবেক টেক অ্যান্ড ডিজিটাল ইকোনমিবিষয়ক মন্ত্রী পল স্কলি এমপির নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের সংসদীয় প্রতিনিধিদলে রয়েছেন লেবার পার্টির এমপি বীরেন্দ্র শর্মা, নিল কোয়েল ও অ্যান্ড্রু ওয়েস্টার্ন।

এছাড়া প্রতিনিধিদলে রয়েছেন হাউস অব কমন্সের বিরোধীদলীয় হুইপ ও সিনিয়র সংসদীয় সহকারী ডমিনিক মফিট, কুইন্স কমনওয়েলথ ট্রাস্টের উপদেষ্টা জিল্লুর হোসেন ও কানেক্টের সিইও ড.ইভেলিনা বানিয়ালিভা।

সফরের প্রথম দিন শনিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য বৈঠক করে প্রতিনিধিদল।

Leave a Reply

ঈদুল ফিতরে ৫ দিন, ঈদুল আযহায়…

অনলাইন ডেস্ক : আগামী বছরের (২০২৫ সাল) সরকারি ছুটির তালিকা Read more

৩০ লাখ টাকা করে পাবে ছাত্র…

অনলাইন ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য Read more
ফাইল ছবি

২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা প্রকাশ

অনলাইন ডেস্ক : ২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন করেছে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভূমিকম্প ও অগ্নিকান্ড বিষয়ক মহড়া…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দূর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দেশীয় অস্ত্র-নগদ টাকা উদ্ধারসহ দুই…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ২৪ ঘন্টায় গ্রেফতারী পরোয়ানার আসামীসহ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অনির্দিষ্টকালের জন্য…

চলারপথে রিপোর্ট : পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তাদের বরখাস্তের প্রতিবাদে ও Read more

আন্দোলনে নিহত তানজিল মাহমুদ সুজয় এইচএসসি…

চলারপথে রিপোর্ট : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর Read more

পল্লীবিদ্যুতের ১০ জেলা কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুৎ, বিদ্যুৎ…

চলারপথে রিপোর্ট : বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কয়েকটি জেলার ১০ Read more
ফাইল ছবি

শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারে ট্রাইব্যুনালের পরোয়ানা

অনলাইন ডেস্ক : পদত্যাগের পর দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী Read more

ভারত ৪৬ রানে অলআউট

অনলাইন ডেস্ক : ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে দাপট দেখিয়েছিল ভারত। Read more

কসবায় ২০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিদ্যুৎ…

চলারপথে রিপোর্ট : অস্ত্র মামলায় ২০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত মো. মোস্তাফিজুর Read more
ফাইল ছবি

৮ জাতীয় দিবস বাতিল করে আদেশ…

অনলাইন ডেস্ক : আটটি জাতীয় দিবস বাতিল করে আদেশ জারি Read more

বাংলাদেশ কিছুটা স্বস্তির জন্য আইএমএফের ঋণ নিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 30 April 2023, 925 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ কিছুটা স্বস্তির জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ নিয়েছে।

ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার বিকেলে দ্য রিজ-কার্লটন হোটেলের সভাকক্ষে আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন, ‘আমরা কিছুটা স্বস্তির জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ নিয়েছি।’

আইএমএফ সম্প্রতি বাংলাদেশের জন্যে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতির ব্যাপক প্রশংসা করেছেন আইএমএফের এমডি, যা কভিড-১৯ মহামারির পরে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করে তুলেছে।

ড. মোমেন আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে উদ্ধৃত করে বলেন, ‘বিশ্বে বাংলাদেশ একটি রোল মডেল (সামগ্রিক উন্নয়নের পরিপ্রেক্ষিতে) কারণ, দেশটি এমনকি করোনা মহামারির পরও অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে পেরেছে।’

আইএমএফ প্রধান বলেন, সকল প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মতো নেতৃত্ব প্রয়োজন।

তিনি বলেন, অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন ও দক্ষ যোগাযোগ এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার মাধ্যমে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।

এছাড়া, ক্রিস্টালিনা কভিড-১৯ মহামারিকালে সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখারও প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁর দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকারের নানা উদ্যোগ সম্পর্কে আইএমএফ প্রধানকে অবহিত করেন। তিনি বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন একদিনে হয়নি, বরং এটি দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার ফল।’

শেখ হাসিনা বলেন, পট পরিবর্তনের পর কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি যেভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন চেয়েছেন সেভাবে তাঁর পরিকল্পনা করেন এবং ২০০৯ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করেন।

তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা এবং নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের পদক্ষেপ সম্পর্কে আইএমএফ প্রধানকে অবহিত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় আইএমএফের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতেও সমর্থন অব্যাহত রাখবে বলে আশা করেন।

ব্রিফিংকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ বলেন, গত ১৪ বছরে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আইএমএফ সবসময় বাংলাদেশের পাশে থেকেছে ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছে এবং দেশটি কখনই এর থেকে বিচ্যুত হয়নি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কর্মসূচি নিয়ে আইএমএফের সাথে কাজ করছে, যা বাংলাদেশ মাত্র দু’সপ্তাহের আলোচনার মাধ্যমে পেয়েছে, যদিও অনেক দেশ বছরে পর বছর ধরে আলোচনা চালিয়েও পায় না।

আইএমএফ প্রধানকে উদ্ধৃত করে রউফ বলেন, ‘আইএমএফ ভবিষ্যতে এই ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।’

ব্রিফিংকালে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : বাসস

ভাগিনার লাশ দেখেই হার্ট অ্যাটাক করে মামার মৃত্যু

জাতীয়, 29 September 2023, 544 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে স্কুল শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম সজলের (৪১) লাশ দেখে তার মামা আবু সাইদের (৫০) মৃত্যুবরণ করার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার দুপুর এবং সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।

মৃত্যুবরণ করা রাশেদুল ইসলাম সজল মৃত বজলুর রহমানে ছেলে। তিনি গোদনাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। আর আবু সাঈদ মৃত ফজলুল হকের ছেলে। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। তারা দুজনই সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকার বাসিন্দা। সম্পর্কে তারা মামা-ভাগ্নে।

পরিবারসূত্রে জানা যায়, রাশেদুল ইসলাম সজল তার বন্ধুদের সঙ্গে আজ সকালে ফরিদপুরে বেড়াতে যান। সেখানে দুপুর আনুমানিক ২টার সময়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। পরবর্তীতে তার সঙ্গে থাকা বন্ধুরা তার মৃতদেহ তার নিজ বাসায় নিয়ে আসে। মরদেহ দাফনের কার্যক্রমের জন্যে গোসল করানোকালে হঠাৎ তার ছোট মামা আবু সাইদ লাশটি দেখা মাত্রই হার্ট অ্যাটাক করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

মৃত ওই স্কুল শিক্ষকের বন্ধু রিপন মাহমুদ আকাশ বলেন, তাদের মামা-ভাগ্নের মধ্যে অনেক ভালো সম্পর্ক ছিল। তাই তার ভাগ্নের এমন মৃত্যু মামা সহ্য করতে পারেননি। আজ রাত ১০টায় ওই এলাকার কেন্দ্রীয় ধনকুন্ডা জামে মসজিদের সামনে জানাযা শেষে একসঙ্গে দুজনের লাশ দাফন করা হয়।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, ঘটনাটি আমি শুনেছি। এই ঘটনায় আমি মর্মাহত। নিহতদের পরিবারের প্রতি আমি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

আজ ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস

জাতীয়, 16 May 2023, 1057 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস আজ। ৪৭ বছর আগে ১৯৭৬ সালের এই দিনে (১৬ মে) মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে ভারত নির্মিত ফারাক্কা বাঁধের প্রতিবাদ এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পদ্মা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে ফারাক্কা অভিমুখে লাখো জনতার লংমার্চ অনুষ্ঠিত হয়। লংমার্চ শেষে কানসাট হাইস্কুল মাঠে বিশাল সমাবেশে বক্তব্য দেন মওলানা ভাসানী। সেই থেকে ১৬ মে ফারাক্কা দিবস নামে পরিচিতি লাভ করে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ১৮ কিলোমিটার উজানে ১৯৭৫ সালে ভারত ফারাক্কা বাঁধ উদ্বোধন করে। এর প্রতিবাদে মওলানা ভাসানীর লংমার্চ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলে। সে সময় চুক্তি অনুযায়ী, পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি পূরণ না হওয়ায় মরূকরণের দিকে যাচ্ছিল বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল। যদিও সে অবস্থার এখনও পরিবর্তন হয়নি।

১৯৯৬ সালে ভারত-বাংলাদেশের ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি অনুযায়ী খরা মৌসুমে জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে বাংলাদেশকে ৩৫ হাজার কিউসেক পানি দেওয়ার কথা। কিন্তু বাংলাদেশ সে পানি পায়নি।

পাউবোর কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, এ বছর উজানে মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় পদ্মা নদীতে পানি বেড়েছে। পরিবেশবিদ ও সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক শাহনেওয়াজ সালাম বলেন, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য এখনও হুমকির মুখে। এসব থেকে রক্ষা পেতে নতুন করে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি হওয়া দরকার।

এদিকে ফারাক্কা দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস যে কোনো অধিকার আদায়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আগুন নিয়ে খেলতে গেলে হাত পুড়বেই : প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 20 December 2023, 434 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রথম নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আজ ২০ ডিসেম্বর বুধবার বিকেলে লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতিতে সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে তিনি বক্তৃতা দেন। সিলেটবাসীকে সালাম ও বিজয়ের মাসের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি আগুন নিয়ে খেলে। তারা জানে না আগুনে হাত দিলে আগুনেই হাত পুড়ে যায়। লন্ডনে বসে হুকুম দেয়। আর এদেশে বসে তাবেদার লোক মানুষ পোড়ায়।

তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচন করতে দিতে চায় না। কিন্তু এত সহজ নয় যে, সরকার সহজে পড়ে যাবে। যারা খুনি তারাই নির্বাচন বানচাল করতে চায়। তাদের প্রতিহত করতে হবে।

আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি আদায় করে বলেন, এ নৌকায় ভোট দিয়ে মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। কেউ ভয় পাবেন না। নির্বাচনে ভোট দিতে যাবেন।

তিনি বলেন, সিলেটের যে কুপ খনন করে খালেদা জিয়ার আমলে গ্যাস পাওয়া যায়নি, সেই কুপে এখন গ্যাস ও তেল পেয়েছি। আল্লাহ জন বুঝে ধন দেন। ২০০১ সালে আমাদের ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি। কারণ আমেরিকা চেয়েছিল তাদের কাছে গ্যাস বিক্রি করতে। আমি তা করিনি। তখন ভোট কারচুপির মাধ্যমে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসেছে।

সিলেটের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে শুরু করে সিলটবাসী আমার সঙ্গে আছেন। আমি বারবার সিলেটে এসেছি। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে সিলেটবাসীকে পাশে থাকার আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, সুরমা নদীসহ সব নদী খনন কাজ শুরু করা হয়েছে। নতুন রেলস্টেশন করে দিয়েছি। সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-বাদাঘাট এবং সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ছয় ও চার লেন হচ্ছে। ওসমানী বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজ হচ্ছে। আধুনিক সিলেট গড়ার কাজ চলছে। সিলেটে মেট্রোরেল চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। একশ শয্যার বার্ন ইউনিট ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সিলেটের মানুষ সবসময় আমাদের পাশে রয়েছে। আমিও পাশে আছি। স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট অর্থনীতির জন্য আমরা লড়াই করছি।

বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে বক্তৃতা শুরু করে ৪টা ৫৫ মিনিটে শেষ করেন প্রধানমন্ত্রী। ৩৫ মিনিটের বক্তৃতায় তিনি বলেন, আমরা দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা দিয়েছি। তারা কি দিয়েছে। বারবার সংবিধান লঙ্ঘন ও জাতির পিতাকে হত্যা করে ক্ষমতায় এসেছে। কোনো কাজ করেনি। শুধু ভোগের জন্য তারা ক্ষমতায় এসেছে।

বিকেল ৩টা ১০ মিনিটের দিকে প্রধানমন্ত্রী সমাবেশের মঞ্চে পৌঁছার পর স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে সরকারি আলিয়া মাদরাসার মাঠ। তার বক্তব্যের আগে শীর্ষ কয়েকজন নেতা বক্তব্য দেন। দীর্ঘ ৩৫ মিনিটের বক্তব্যকালে শেখ হাসিনা বলেন, কেউ আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না। আমরা এগিয়ে যাবো ইনশাল্লাহ।

তিনি বলেন, আমরা ৮ লাখ ৪১ হাজার মানুষকে ঘর দিয়েছি। প্রতিবন্ধী ও বিধবাদের ভাতা দিচ্ছি। ৩৬ লাখ নারীকে এ ভাতা দেওয়া হচ্ছে। আমরা চাই দেশকে এগিয়ে নিতে আর তারা (বিএনপি-জামায়াত) এগিয়ে নিতে দিতে চায় না।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মাঝে যেমন ছিল নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস তেমনি তার বক্তব্য শোনার জন্য ছিল নীরবতা। মাঠে স্থান সংকুলান না হওয়ায় আশপাশের এলাকায় অবস্থান করেন বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। নিরাপত্তার কারণে চারপাশের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় ভোগান্তির শিকার হন অনেকে। বিশেষ করে একমাত্র মাঠের পশ্চিম দিকে প্রবেশের স্থান রাখায় মিছিল নিয়ে আসা নেতাকর্মীদের মাঠে প্রবেশে বেগ পেতে হয়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা বিএনপিকে চাই না। খালেদা জিয়াকে চাই না, তারেক রহমানকে চাই না। এরা মানুষ মারে। এরা মানুষ না, দানব। এদেরকে প্রতিহত করতে হবে। এদের বাংলাদেশে রাখা যাবে না।

খেলা হবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির ধর্মঘট ভুয়া, রাজনীতি ভুয়া। তারা বলেছিল ডিসেম্বরে খালেদা জিয়া দেশ চালাবে, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবেন। কিন্তু অনেকে পালিয়েছেন। বিএনপি লালকার্ড পেয়ে গেছে।

নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে এবং জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, প্রেসিডয়াম সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছো হক, সিটি মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, ইনাম আহমদ চৌধুরী, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, প্রবাসী কল্যাণ, বৈদেশিক ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ, বন, পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, আবু জাহির এমপি, হাবিবুর রহমান এমপি, মুহিবুর রহমান মানিক এমপি প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, আব্দুর রাজ্জাক, শেখ হেলাল প্রমুখ।

সিলেটের নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বুধবার সকাল ১১টা ৩৫ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে ওসমানী বিমানবন্দর পৌঁছান। দুপুরে হযরত শাহজালাল ও শাহপরান (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন। সিলেট সার্কিট হাউসে অবস্থানের পর বিকেলে সমাবেশের মঞ্চে পৌঁছান। ওই সময় শিল্পীরা ‘বাবা শাহ জালালের দেশ সিলেট ভূমিরে…ও কোন মেস্ত্ররি নাও বানাইছে কেমন দেখা যায়’…গান দুটি পরিবেশন করেন।

প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তা ছিল নগরজুড়ে। সমাবেশস্থলের পার্শ্ববর্তী চৌহাট্টা মোড় থেকে আম্বরখানা, জিন্দাবাজার, রিকাবি বাজার সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পাশের মাজার এলাকার রাস্তাও বন্ধ রাখা হয়। নগরীর প্রত্যেক প্রবেশ মুখ থেকে বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা এবং সংসদ সদস্য প্রার্থীদের সমর্থকরা মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে যোগ দেন। তাদের পরনে রঙিন গেঞ্জি ও মাথায় ক্যাপ ছিল।

বঙ্গবন্ধু অবিচার মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিয়েছিলেন: আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

জাতীয়, 29 February 2024, 301 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রধান বাহক ছিলেন। তিনি গণতান্ত্রিক সমাজের ভিত্তি হিসেবে স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

পাশাপাশি তিনি সমাজের প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর ন্যায়বিচারের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে আইনি সহায়তা প্রদানের গুরুত্ব অনুধাবন করেন এবং সমাজে অবিচার ও অসমতা মোকাবিলায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন।

আজ ২৯ ফেব্রুয়ারি বুধবার রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ‘স্ট্রেংদেনিং ক্যাপাসিটি অব জুডিসিয়াল সিস্টেম ফর চাইল্ড প্রোটেকশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় শিশু সংবেদনশীল আদালত কক্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।

ন্যায়বিচার ও সমতার নীতির প্রতি বঙ্গবন্ধুর অতুলনীয় দূরদৃষ্টি, সাহস ও নিষ্ঠা বাঙালি জাতির অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথপ্রদর্শক উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রথমেই নব্য স্বাধীন দেশের আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠাকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন, যাতে সকলের নাগরিক অধিকার সু-প্রতিষ্ঠিত হয় ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়।

আইনমন্ত্রী বলেন, নতুন অভিযাত্রায় বঙ্গবন্ধু বিশ্বমানের একটি সংবিধান প্রণয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন এবং মাত্র ১০ মাসের মধ্যে তা সম্ভব করে তুলেছিলেন। এই সংবিধানে গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের নীতি নির্ধারণ করা হয়, যা দেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থার শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করে।

মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে বঙ্গবন্ধু সংবিধান প্রণয়ন ছাড়াও সকল নাগরিকের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিভিন্ন আইনের সংস্কার ও নতুন নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে আইনমন্ত্রী বলেন, শিশুদের নাগরিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, স্বাস্থ্য এবং সাংস্কৃতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় ১৯৮৯ সালে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ প্রণয়ন করা হয়। এরও ১৫ বছর আগে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শিশু আইন প্রণয়ন করেন, যা বাংলাদেশে শিশু অধিকার ও শিশু সুরক্ষার ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে।

আনিসুল হক আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুদের কল্যাণে যুগান্তকারী বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে অতুলনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বে ২০১৩ সালে শিশু আইন প্রণয়ন করা হয়, যা শিশুদের সুরক্ষা, অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য একটি আইনি কাঠামোর ভিত্তি স্থাপন করেছে। শিশুদের কল্যাণ ও সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর অক্লান্ত প্রচেষ্টা আমাদের সকলের নিকট অনুসরণীয় এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তাঁর সরকারের আমলে প্রণীত শিশু আইনের বিভিন্ন ধারায় আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশু, আইনের সংস্পর্শে আসা শিশু ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুর অধিকার রক্ষাসহ শিশুর বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধে পদক্ষেপ গ্রহণের কার্যকর বিধান সন্নিবেশ করা হয়েছে। এই আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণে পর্যাপ্ত লজিস্টিক সাপোর্ট, পৃথক আদালত কক্ষ, উপযুক্ত পরিবেশ এবং প্রশিক্ষিত জনবল প্রয়োজন। একই সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রাসঙ্গিক জ্ঞান ও দক্ষতাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

অনুষ্ঠানে ইউনিসেফ বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ শেলডন ইয়েট বলেন, ইউনিসেফ সুরক্ষা ও পরিচর্যার প্রয়োজন রয়েছে, এমন সকল শিশুর ক্ষেত্রে অপ্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার প্রয়োগে বিশ্বাস করে। আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশুদের স্বাধীনতা হরণ এবং আটকাবস্থা শুধু শেষ উপায় এবং যতটা সম্ভব কম সময়ের জন্য ব্যবহার করা উচিত।

আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রকল্প পরিচালক শেখ হুমায়ুন করীর বক্তৃতা করেন।