চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার জেঠাগ্রাম তা’লীমুল কোরআন ইসলামিয়া মহিলা মাদ্রাসার বার্ষিক প্রতিযোগিতা ও অভিভাবক সম্মেলন আজ ২৯ জানুয়ারি সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকালে মাদ্রাসা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেঠাগ্রাম হাফেজিয়া নুরানীয়া মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল হাফেজ হুসাইন আহমেদ খান।
মাদ্রাসার দাতা সদস্য হাজী শেখ মোহাম্মদ তজু মিয়ার সভাপতিত্বে ও শিক্ষক হাফেজ মোহাম্মদ শাহজাহানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, হাফেজ মাওলানা জসিম রাজা চৌধুরী, মাওলানা মহিউদ্দিন খান, হাজী আবেদুর রহমান, হাজী হাবিবুর রহমান মাষ্টার, মোঃ দারু মিয়া চৌধুরী, শেখ মোঃ আহাদ মিয়া, শেখ মোঃ আজদু মিয়া, মৌলভী ফাইজুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মানোন্নয়নের ব্যাপারে শুধু শিক্ষকদের ওপর নির্ভরশীল হলেই চলবে না, অভিভাবকগণকেও শিক্ষার্থীর প্রতি যত্নশীল হতে হবে এবং সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখতে হবে।
আলোচনা সভা শেষে কোরআন তিলাওয়াত, হিফজুল হাদিস, আরবি, বাংলা ও ইংরেজি বক্তৃতা ও বির্তক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
সঠিক তদারকির অভাবে এবং অযত্ন ও অবহেলায় অস্তিত্ব হারাতে বসেছিল কালের সাক্ষী হয়ে থাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর জমিদার বাড়ি। ৭৫ বছর ধরে বেদখলে ছিল বিশালাকার বাড়িটি।
সম্প্রতি হরিপুর বড় বাড়ি সংরক্ষণে উদ্যোগ নিয়েছে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। অবৈধ দখল উচ্ছেদের পর এবার শীঘ্রই সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
১৮শ শতাব্দীতে জেলার নাসিরনগর উপজেলায় তিতাস নদীর পাড়ে প্রায় ৪৮০ শতাংশ জমিতে জমিদার কৃষ্ণপ্রদাস রায় চৌধুরী ও গৌরীপ্রসাদ রায় চৌধুরী দৃষ্টিনন্দন এ বাড়িটি নির্মাণ করেন।
জানা যায়, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর জমিদার পরিবারের লোকজন বাড়িটিতে কয়েকজন পুরোহিতদের রেখে কলকাতায় চলে যান। এরপর পুরোহিতদের বংশধরদের পাশাপাশি স্থানীয় কিছু মুসলিম পরিবার দখল নিয়ে বসবাস শুরু করেন সেখানে। সেই থেকে প্রায় ৭৫ বছর ধরে বাড়িটি ছিল বেদখলে। এতে বাড়িটি দিনের পর দিন বিলুপ্তির পথে যেতে থাকে। তবে সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বাড়িটির দখলে থাকা পরিবারগুলোকে অন্যত্র পুনর্বাসিত করা হয়। এরপরই নেওয়া হয় বাড়িটি সংস্কারের উদ্যোগ।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, তিতাসের পূর্বপ্রান্তে এত বড় বাড়ি আর কোথাও নেই। কারুকাজ খচিত ৬০টি কক্ষ বিশিষ্ট বাড়িটিতে রং মহল, দরবার হল, নাচ ঘর, পুকুর, খেলার মাঠ, মন্দির ও সীমানা প্রাচীর রয়েছে। তবে এর অনেক অংশ ভেঙে ফাটলও ধরেছে। লাল ইট সুরকির গাঁথুনি দিয়ে তৈরি ভবনের দু’পাশে কৃষ্ণ প্রসাদ রায় চৌধুরী ও গৌরী প্রসাদ রায় চৌধুরীর দুটি সমাধি সুউচ্চ মঠ রয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা এখানে এসে ঘুরে ঘুরে পুরো রাজবাড়ির সৌন্দর্য দেখছেন। অনেকে আবার মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. গোলাপ মিয়া বলেন, হরিপুর রাজবাড়ি এটি আমার জন্মের আগে নির্মিত। এই বাড়িটি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত ছিল। বাড়িটিতে বহিরাগত লোকেরা থাকতেন। তবে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দখলে থাকা বহিরাগতদের আশ্রয়ণ প্রকল্পে জায়গা দিয়ে তাদের উচ্ছেদ করা হয়। আমাদের দাবি, এই বাড়ি যেন পুনঃসংস্কার করে দেয়। তাহলে আমাদের তিতাসের পূর্ব পাড়ে অতীতের একটি স্মৃতি থাকবে।
স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দা আব্দুল জব্বার বলেন, দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে বাড়িটি পরিত্যক্ত। এই বাড়িটি চুনকাঠ ও বীমের উপর দাঁড়িয়ে আছে। যেকোনো সময় একটি বড়ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমি চাই, সরকার যেন দ্রুত এই বাড়িটি সংস্কার করে দেয়। বাড়িটি সংস্কার করে দিলে দর্শনার্থীর সংখ্যা আরো বাড়বে। আমাদের এলাকার উন্নয়ন হবে।
ঘুরতে আসা কয়েকজন পর্যটক বলেন, আমরা হরিপুর জমিদার বাড়ি দেখতে এসেছি। দেখলাম এখানে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে। রাজমহল, রঙমহল, দরমহলসহ প্রতিটি দেওয়ালে বিভিন্ন প্রকার কারুকাজ করানো রয়েছে। বাড়িটি অনেক পুরোনো হওয়ায় জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। তবে বাড়িটির ফটকের সামনে যদি এর ইতিহাস লিখে রাখা হয় তাহলে পর্যটকরা এসে এর সঠিক তথ্য জানতে পারবে। বাড়িটি যদি দ্রুত সংস্কার করা যায় তাহলে ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দেখতে পারবে।
জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, হরিপুর জমিদার একটি দর্শনীয় স্থান। এটা প্রত্নতত্ত্বের একটা গুরুত্ব আছে। জমিদার বাড়িতে যেসব বহিরাগত পরিবার ছিল তাদের আশ্রয়ণ প্রকল্পে জায়গা দিয়ে ওখানে স্থানান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবার ছিল তারা নিজেরাই চলে গেছেন।
বাড়িটি সংস্কারের বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের মহাপরিচালক চন্দন কুমার দে বলেন, আমাদের যে সরকারি রাজস্ব ফান্ড আছে তা থেকে এই বছরই আমরা বাড়িটির সংস্কার কাজ শুরু করব। আমরা প্রকল্প তৈরির চেষ্টা করছি। খুব দ্রুত প্রকল্পটা আমাদের মন্ত্রণালয়ে আমরা পাঠিয়ে দেব। আসা করছি প্রকল্পটা অনুমোদন হলে একটা বড় আকারের কাজ করতে পারব। বাড়িটি যেভাবে আছে আমরা ঠিক সেই ভাবে রেখেই সংস্কার কাজ করব।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালেদ বলেন, প্রত্নতাত্ত্বিক সংরক্ষার একটি আইন বা ব্যবস্থা আছে যা সারা বিশ্বে একই নিয়ম। সেভাবেই আমরা এটি সংস্কার করব।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)’র পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচি -৩ (আরইআর) এর পক্ষ থেকে চেক বিতরণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ১২৮ স্বামী পরিত্যক্তা ও বিধবা নারীর মধ্যে এ চেক বিতরণ করা হয়।
আজ ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন হলরুমে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)’র পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচি -৩ (আরইআর) এর নারী কর্মীদের মাঝে তাদের সঞ্চয়কৃত অর্থের চেক ও সনদ বিতরণ করা হয়। উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সুরুজ্জামানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহালম মিয়া।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম ও উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান। বক্তব্যে উপকার ভোগী নারী হেলেনা বেগম ও গীতা রানী সরকার বলেন, আমরা এখন সমাজের অন্য মানুষের মতই সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারুম। ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার জন্য খরচ করার পাশাপাশি স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য সবজি চাষ, ছাগল পালন এবং খামারের কাজে ব্যবহার করবো। আমরা অনেক খুশি।
উল্লেখ্য, এই প্রকল্পের আওতায় কর্মরত প্রত্যেক মহিলাকে ১ লক্ষ ২০ হাজার ৫শহ ৭২ টাকা করে মোট ১ কোটি ৫৪ লাখ ৩২ হাজার ৮৩২ টাকার চেক পেয়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
‘মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করি বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৫ উদযাপিত হয়েছে।
আজ ১০ মে শনিবার সকালে নাসিরনগর উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের আয়োজনে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে আলোচনা সভা, শিক্ষামূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাজহারুল হুদার সঞ্চালনায় উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসহাক মিয়া। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনা নাছরীন।
এসময় উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার রহিমা খাতুন, সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ কবির হোসেনসহ উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হাতের সুন্দর লেখা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও শিক্ষামূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পরে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে সৌজন্য পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এদিকে অনুষ্ঠান শেষে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের আয়োজনে, ৬৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রজেক্টর ও ৫৩ টি বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনা নাছরীন শিক্ষকদের হাতে প্রজেক্টর ও ল্যাপটপ তুলে দেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার হাওড় এলাকায় দুটি টিউবয়েল বসানো হয়েছে। পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে কিছু গাছের চারা রোপণেরও। ছোট্ট এ উদ্যোগে যেন বড় প্রশান্তির খবর কৃষকদের জন্য। তপ্ত রোদে ধান কাটতে এসে আপাতত টিউবয়েলের পানিতে তারা তৃষ্ণা মিটাতে পারছে। তারা আশায় আছে কাঠফাঁটা রোদে বৃক্ষের ছায়াতলে জিরিয়ে নিয়ে কাজ করতে পারার সময়টুকুর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের পতইর গ্রামের পূর্বপাড়া ছাত্র ও যুব সমাজের কয়েকজন হাওড়ে টিউবয়েল বসানোর উদ্যোগ নেন। এ কাজে এগিয়ে আসেন কয়েকজন প্রবাসী। তাদের উদ্যোগে ইতিমধ্যেই পতই এলাকার হাওড়ে দুটি টিউবয়েল বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।
আজ ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে ধান কাটতে আসা কৃষক ও কৃষি শ্রমিকরা ওই টিউবয়েল থেকে পানি নিতে শুরু করে। অনেকে ওই টিউবয়েলের কাছে বসে খাবারও খায়।
এক কৃষক বলেন, ‘এখন অনেক রোদ। গরমও বেশি। ধান কাটতে এসে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকরা তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়ে। সঙ্গে যেটুকু পানি থাকে তাতেও হয় না। যে কারণে এখানে টিউবয়েল বসানোয় আমাদের অনেক উপকার হলো। আমরা অনেক খুশি হয়েছি টিউবয়েলটি বসানোয়।’
ওই এলাকার বাসিন্দা ও উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত একজন বলেন, ‘আমরা চার-পাঁচজন মিলে এমন একটি উদ্যোগ নেওয়ার কথা মাথায় আনি।
ছাত্র ও যুবসমাজের পাশাপাশি প্রবাসীরা এগিয়ে এলে কাজটি সহজ হয়ে যায়। এখন পর্যন্ত দুটি টিউবয়েল বসানো হয়েছে। আরো একাধিক টিউবয়েল বসানো হবে। এ ছাড়া হাওড় এলাকার কৃষকের বিশ্রামের জন্য কিছু গাছের চারা লাগানোরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে শাহিন মিয়া (৩৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
আজ ৮ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ৮ টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নের লালুয়াটুক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা জানান, সকালে লালুয়াটুক গ্রামের মোঃ সাজু মিয়ার ছেলে মোঃ শাহিন মিয়া বাড়ির পাশে নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইমরানুল হক ভূঁইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।