চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় মূল্য তালিকা না থাকায় ২ ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ ২৯ জানুয়ারি সোমবার দুপুরে পৌর শহরের সড়ক বাজারে মুদিমাল ও কাঁচা মালের দোকানীকে ৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাবেয়া আক্তার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত চক্রবর্তী। আদালতকে সহযোগিতা করেন আখাউড়া থানার ওসি (তদন্ত) মো: শফিকুল ইসলামসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নিয়মিত বাজার তদারকির অংশ হিসেবে সোমবার শহরের সড়ক বাজারে মুদিমাল ও কাঁচা মালের দোকানে অভিযান চালানো হয়।
এসময় মূল্য তালিকা না থাকায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে লোকনাথ সবজি ভান্ডারকে ৫ হাজার ও মাসুদ স্টোরকে ৩ হাজার টাকা জরিমানাসহ সর্বমোট ৮ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। অভিযানকালে দোকানীদের বেশি দামে মুদিমাল বিক্রি না করতে মৌখিকভাবেও সতর্ক করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাবেয়া আক্তার বলেন, বাজার স্থিতিশীল রাখতে উপজেলা প্রশাসনের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
চলতি বছরের এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে আজ ২৮ জুলাই শুক্রবার। এবছর আখাউড়া উপজেলায় এসএসসি’র গড় পাশের হার ৫৬.০২%। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৯ জন। দাখিল পরীক্ষায় শতকরা পাসের হার ৭২.৮৭। জিপিএ- ৫ পেয়েছে ৩ জন। এছাড়া একটি ভোকেশনাল টেক্সটাইল স্কুলের পাসের হার ৮৭.৫০%। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ জন। এবার আখাউড়া উপজেলায় ব্যাপক ফল বিপর্যয় ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক-অভিভাবক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। ফলাফল খারাপ হওয়ার জন্য করোনা মহামারির প্রভাব এবং পরীক্ষা কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনকে কারণ হিসেবে দেখছেন শিক্ষা প্রতিষ্টান সংশ্লিষ্টরা।
আখাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এবছর আখাউড়া উপজেলার ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১ হাজার ৭১৭ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছে ৯৬৭জন। শতকরা গড় পাসের হার ৫৬.৩২। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৭ জন। ১০টি জিপিএ-৫ পেয়ে উপজেলায় শীর্ষে রয়েছে ছতুরা চান্দপুর স্কুল এন্ড কলেজ। তাদের পাসের হার ৫৪.৭৮। এরপরে রয়েছে আখাউড়া নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। ১৬৪ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ১২৩ জন। শতকরা গড় ৭৫.০০। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯জন। সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়া সত্বেও ৬টি জিপিএ-৫ পেয়ে ৩য় স্থানে রয়েছে তুলাই শিমুল উচ্চ বিদ্যালয়। তাদের শতকরা গড় পাসের হর ৬০.২৮।
এছাড়া আখাউড়া রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৬৩ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ১২২ জন। শতকরা গড় পাসের হার ৭৪. ০০। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ জন। সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় হয়েও ফলাফলে হতাশ করেছে দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয় থেকে ১৩২ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ৭২ জন। গড় পাসের হার ৫৪.৫৫। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ২ জন।
এছাড়া হীরাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পাসের হার ৫৬.৮২, জিপিএ-৫ পেয়েছে ১জন। শাহপীর কল্লা শহীদ উচ্চ বিদ্যালয়ের গড় পাসের হার ৪১.৯৪, আমোদাবাদ শাহ আলম উচ্চ বিদ্যালয় ৫৪.২৬%, জিপিএ-৫ পেয়েছে ২জন, মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয় ৬১.১১%, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪জন, কর্মমঠ উচ্চ বিদ্যালয় ৫১.৬৯%, জিপিএ-ফাইভ ১জন, মনিয়ন্দ উচ্চ বিদ্যালয় ২৭.২৭%, ছয়গড়িয়া শাহ আলম উচ্চ বিদ্যালয় ১৯.৫০%, নুরপুর রুটি উচ্চ বিদ্যালয় ৪০.০০% গোলখার উচ্চ বিদ্যালয় ৫৩.৭৬% এবং ভাটামাথা উচ্চ বিদ্যালয়ের শতকরা গড় পাসের হার ২৮।
এদিকে উপজেলার ৭টি আলিয়া মাদ্রাসা থেকে ২৫৮ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ১৮৮জন। শতকরা গড়ে ৭২.৮৭। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ জন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেবগ্রামের একজন অভিভাবক বলেন, দেবগ্রাম স্কুলে ঠিকমতো ক্লাশ হয় না। শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখার খোঁজ খবর নেয় না। শিক্ষকদের মধ্যে গ্রæপিং আছে। আন্তরিকভাবে পাঠদান করায় না। যার খেসারত দিচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। তুলাই শিমুল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ সাজ্জাত হোসেন বলেন, এবছর প্রথম বারের মতো পরীক্ষা কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। পরীক্ষার্থীরা ক্যামেরায় অভ্যস্থ না হওয়ায় কিছুটা নার্ভাস হয়ে যায়। ফল খারাপের জন্য আমরা শিক্ষকরাও দায় স্বীকার করি। তবে ভবিষ্যতে যাতে ফল বিপর্যয় না ঘটে সেজন্য ইউএনও স্যার এবং শিক্ষা শিক্ষা অফিসারের নির্দেশ মোতাবেক আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আবুল হোসেন বলেন, করোনা মহামারির জন্য ছেলে মেয়েরা ২ বছর স্কুলে ক্লাশ করতে পারেনি। ফলাফলে এর একটা প্রভাব রয়েছে। তারপরও আমরা শিক্ষকদের নিয়ে বসে ফলাফল পর্যালোচনা করে কিভাবে আরও ভালো করা যায় সে ব্যপারে চেষ্টা করবো।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা বলেন, নকলমুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা হয়েছে। পরীক্ষকরা খাতা কেটেছেন। ফলাফল খারাপ হওয়ার বিষয়ে তারাই ভালো বলতে পারবেন। তবে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেন ভালো ফলাফল করে শিক্ষকরা যাতে অধিকতর দায়িত্ব পালন করে সে বিষয়ে নির্দেশ দিব।
চলারপথে রিপোর্ট :
শীতের সকালের কোয়াশা তখনও কাটেনি। পুব আকাশে সূর্য উঁকি দিচ্ছে একটু একটু করে। এরই মাঝে নদীর পাড়ে অস্থায়ী চুলা করে বড় বড় ডেকচি পেতে শিন্নি রান্নার আয়োজন শুরু হয়। বাবুর্চির সহকারিরা চাল ধুয়ে প্রস্তুত করছে। আর বাচুর্চি চুলায় আগুন ধরানোর চেষ্টা করছে। পাশে দাঁড়িয়ে তদারকি করছেন আয়োজকদের দুজন। সময় বাড়ার সাথে সাথে নদীর পাড়ে মানুষের সমাগম বাড়তে থাকে। সবার চোখে মুখে প্রশান্তি ও আনন্দ উচ্ছাস। আনন্দ চিত্তে সবাই যোগ দিচ্ছেন শিন্নি রান্নায়। যে যেভাবে পারছেন সহযোগিতা করছেন। আজ ২৭ জানুয়ারি শনিবার সকালে আখাউড়া পৌরশহরের খড়মপুর গ্রামবাসীর শতবছরের ঐতিহ্যবাহী গাঁওয়ালা শিন্নি উৎসবে এমন আয়োজন দেখা যায়। কল্লা শহীদ (র.) মাজার শরীফের রওয়াজার পশ্চিমে নদীর পাড়ে এ আয়োজন করা হয়।
গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, রোগব্যাধি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বালা-মুসিবত থেকে পরিত্রাণ পেতে মহান আল্লাহ তায়ালার রহমত লাভের আশায় দীর্ঘ দিন ধরে খড়মপুর গ্রামবাসীর উদ্যোগে শিন্নি উৎসব করা হয়। রান্না করা শিন্নি গরীব দুস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয় এবং গ্রামের বাড়ি বাড়ি নেওয়া হয়। ছেলে-বুড়ো সবাই মনো বাসনায় সেই মিষ্টি খায়। গ্রামের প্রতিটি বাড়ি থেকে চাল, দুধ, গুড়, নগদ অর্থসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম সংগ্রহ করে শিন্নি রান্না করা হয়। প্রতিবছরের ন্যায় এবছর ২১০ কেজি চালের শিন্নি রান্না করা হয়েছে।
শনিবার সকালে এ উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ পাঠ করা হয়। দোয়া পরিচালনা করে খড়মপুর মাজার মসজিদের খতীব মাওঃ লুৎফুর রহান খান খাদেম। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খড়মপুর মাজার কমিটির সদস্য ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর কাজী লিটন খাদেম, মাজার কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মোবাশে^র খাদেম শিরু, মাজার কমিটির সদস্য আবুল হাসান খান খাদেম, রুস্তম কামরান খাদেম, মোজাম্মেল হক খাদেম, রুজভেল্ট খাদেম, সাকির খাদেম, সাবেক সদস্য সামছুর রহমান খাদেম, শাহ আলম খাদেম, জুটন খাদেম, সফিক খাদেম প্রমুখ।
আয়োজক কাজী লিটন খাদেম বলেন, চাল, গুড়, দুধ, নারিকেল, মধুসহ ১৭টি পদ দিয়ে ২১ ডেকচিতে ২১০ কেজি চালের শিন্নি রান্না করা হয়েছে। দেশের শান্তি শৃঙ্খলা, সমৃদ্ধি এবং রোগব্যাধি থেকে মুক্তির আশায় আল্লাহর রহমত কামনায় শিন্নি করা হয়ে থাকে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আদর আলী (৩০) নামে এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
আজ ১৫ জুলাই সোমবার দুপুরে উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের ইদিলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত আদর আলী ওই গ্রামের নিদু মিয়ার ছেলে।
এ ঘটনায় কামরুল ইসলাম নামে আরো একজন গুরুতর আহত হন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মৃত আদর আলীর স্ত্রী, ১ ছেলে ১ মেয়ে রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আদর আলী দুপুরের দিকে হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি সংলগ্ন একটি ওয়ার্কশপে যান। ওই সময় ওয়ার্কশপের লোকজন সেখানে তাদের মতো করে কাজ করছেন। ওয়ার্কশপের ভেতরে প্রবেশ করতেই হঠাৎ অসাবধানতাবশত বিদ্যুতের তারে তার পা লেগে যায়। ওয়ার্কশপের মালিক কামরুল ইসলাম দেখেতে পেয়ে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। স্থানীয় লোকজন দেখে তাদের উদ্ধার করেন। এ সময় ঘটনাস্থলেই আদর আলী মারা যান।
গুরুতর আহত কমারুলকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নেয়া হলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়। আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এনু মিয়া বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একজন ঘটনাস্থলে মারা যান এবং একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ ও ভারতের বহুল কাঙ্ক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের ট্রায়াল রান বা পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল চলতি মাসেই হচ্ছে। আজ ২২ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আখাউড়-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক (বাংলাদেশ অংশ) মো. আবু জাফর মিয়া গণমাধ্যম কর্মীদের এ কথা জানান।
এর আগে দুপুরে গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে মো. আবু জাফর মিয়ার নেতৃত্বে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট দুদেশের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল গ্যাংকারযোগে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন। সকালে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প ট্রায়াল রান বা পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর কথা থাকলেও অনিবার্য কারণে তা হয়নি। তবে প্রথমবারের মতো গ্যাংকারযোগে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ অংশের প্রকল্প পরিচালক মো. আবু জাফর মিয়া বলেন, আমরা মূলত আজকে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প পরীক্ষামূলক ট্রায়াল করতে আসিনি। এ রেলপথ প্রকল্পের কাজটা দেখতে এসেছি, কাজটা কোন পর্যায়ে আছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯৫ শতাংশের বেশি শেষ হয়েছে এবং শেষপর্যায়ের কাজ চলছে বলে তার দাবি। চলতি মাসের মধ্যেই দুই দেশের গুরুত্বপূর্ণ আখাউড়া-আগরতলা বহুল কাঙ্ক্ষিত রেলপথ প্রকল্পে পরীক্ষামূলক ট্রায়াল রান করা হবে।
এ রেলপথ স্থাপনের মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ আর ত্রিপুরাকে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যবাসীও খুব উচ্ছ্বসিত। আর এর মধ্য দিয়ে দুদেশের মধ্যে কানেক্টিভিটি ও বাণিজ্য জোরালো হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক ও ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রকৌশলী ভাস্কর বকশী বলেন, মঙ্গলবার সকালে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর কথা থাকলেও অনিবার্য কারণবশত তা হয়নি। তবে প্রথমবারের মতো গ্যাংকারযোগে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে এবং চলতি মাসেই আনুষ্ঠানিকভাবে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের ট্রায়াল রান করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারত-বাংলাদেশ রেলওয়ে সংযোগ প্রকল্পটি আখাউড়া-ঢাকা হয়ে আগরতলা এবং কলকাতার মধ্যে ভ্রমণের সময় ও দূরত্ব কমিয়ে দেবে। প্রকল্পটি চালু হলে ৩১ ঘণ্টার পরিবর্তে সময় লাগবে ১০ ঘণ্টা এবং আগরতলা-কলকাতার দূরত্ব ১ হাজার ৬৫০ কিলোমিটার থেকে দূরত্ব কমে দাঁড়াবে মাত্র ৫১৩ কিলোমিটার।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে রেলপথে বাণিজ্যের দ্বার খুলবে, কমবে পরিবহণ খরচ- এমনটাই দাবি করছেন রেলপথ মন্ত্রী ও সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা।
সম্প্রতি আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্প কাজ প্রথমে পরিদর্শন করেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। পরে পরিদর্শন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর। তারা দুজনই জানিয়েছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আখাউড়া থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণের জন্য ২০১৮ সালের ২১ মে ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই প্রকল্পের কাজ শুরু করে। দুই দেশের এ রেলপথের দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার।
এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫৭ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ কোটি টাকা।
২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় এ রেলপথ নির্মাণের বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় ছয়গড়িয়া শাহআলম উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
আজ ১০ জুন সোমবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের ছয়গড়িয়া গ্রামে স্কুল সংলগ্ন সড়কে এ মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধনে কমিটির সদস্য, জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
এলাকাবাসী বলেন, দীর্ঘদিন যাবত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ চারটি পদ শূন্য রয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক পদে দুইবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সেলিনা বেগম নিজের পদ ধরে রাখার জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছেন না। অন্যান্য পদেও নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কৌশলে নিয়োগ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করছেন।
এ ছাড়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়া কমিটির সাবেক সভাপতি ও ভূমিদাতা আবুল বাশার মোবারকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মিথ্যা মামলা করেছেন। তাছাড়া তিনি বর্তমান কমিটির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরীসহ কমিটির তিনজন সদস্যের নামে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন বলেও দাবি করা হয়।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির বর্তমান সদস্য মো. তাজুল ইসলাম, কমিটির সদস্য আবুল বাশার, সাবেক সদস্য সহিদ মিয়া (মেম্বার), আবু তাহের প্রমুখ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোছা. সেলিনা বেগম বলেন, আমি যাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি, তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে অভিযোগ করছে। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা।