চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ৪ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্য শোকাবহ দিন। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১১ ছাত্রলীগ নেতাসহ ১২জনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। দিবসটি উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ২০১১ সালের এইদিন বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের উপ-নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামীলীগ নেতা বর্তমানে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এম.পি’র সফর সঙ্গী হয়ে টুঙ্গীপাড়া জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারত শেষে ঢাকায় ফেরার পথে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার সলিলদিয়ায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ১২ সন্তান।
এরা হচ্ছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী আলম শান্ত (৩১), সরকারি কলেজের সাবেক এজিএস আরিফুল ইসলাম বাবু (৩০), জেলা ছাত্রলীগ নেতা শওকত হোসেন লিয়েন (২৮), মোর্শেদ আলম (২৯), শাহজাহান রহমতুল্লাহ রুমেল (২৮), অ্যাডভোকেট জিয়াউল আমিন রিয়াদ (২৯), শেখ রায়হান উদ্দিন (২৮), হাফেজ আব্দুল্লাহ মাসুদ তানভীর (২৯), মোঃ ইমরানুর রেজা ইমরান (২৮), নূরুল আসিফ চৌধুরী (২৮) ও মিজানুর রহমান (৩৫)। পরদিন ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মোঃ আলমগীর (২৮)।
পরবর্তীতে শহরের পৌর মুক্ত মঞ্চের প্রধান ফটকের সামনে তাদের স্মরণে একটি স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে টিসিবির নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রয় শুরু হয়েছে।
আজ ৩ এপ্রিল বুধবার সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে নিম্ন আয়ের কার্ডধারী মানুষের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে এ বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম শেখ। এই কর্মসূচিতে প্রত্যেক কার্ডধারী পাচ্ছেন ২ কেজি করে মসুর ডাল, ২ লিটার সয়াবিন তেল, ৫ কেজি চাল ও ১ কেজি ছোলা বুট। মসুর ডাল ৬০ টাকা কেজি, সয়াবিন তেল ১০০ টাকা লিটার, চাল ৩০ টাকা ও চিনি ৭০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। টিসিবির পণ্য হাতে পেয়ে আয়শা বেগম বলেন, বর্তমান বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য অনেক বেশি। এই ঊর্ধ্বগতির বাজারে স্বল্প মূল্যে তেল, ডাল, চিনি ও চাল পেয়ে অনেক খুশি। সরকার সব সময় যেন আরো কিছু নিত্য পণ্য যোগ করে স্বল্পমূল্যে আমাদের প্রদান করে, সে দাবি জানাই। মুক্তার ও রফিক টিসিবির পণ্য হাতে পেয়ে বলেন, রমজান মাসে সরকার আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে এই স্বল্পমূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস দেওয়ায় অনেক উপকার হয়েছে।
সদর ইউএনও মোহাম্মদ সেলিম শেখ জানান, সদর উপজেলার নিম্ন আয় ও সুবিধাবঞ্চিত কার্ডধারী মানুষের মাঝে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। পৌরসভায় ৪ হাজার ৯৫২ জনসহ সদর উপজেলায় ১৬ হাজার ৬১৮ জন নিম্ন আয়ের কার্ডধারী মানুষের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির এ পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। পৌরসভার সদর উপজেলা পরিষদ চত্বর, কালভৈরব, কারখানাঘাট আনন্দবাজার ও শেরপুর ঈদগাহ মাঠে চারটি স্থানে এই টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হয়। তিনি আরো বলেন, এই কার্যক্রমটি খুবই জনবান্ধব। নিম্ন আয়ের মানুষরা যেন সঠিকভাবে এই পণ্য পান, সে জন্য জোরদারভাবে তদারকি করা হচ্ছে। কোনো ডিলার দুর্নীতি করলে তার বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
জাতিসংঘ ঘোষতি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ র্অজনে কাজ করা পিস অ্যান্ড হারমোনি ট্রাস্ট-এর অঙ্গীকার; পৃথিবীর সকল বিপন্ন, জীবন্ত ও লুপ্ত ভাষা পুনরোদ্ধার, রক্ষা ও বিকাশে অবদান রাখা অন্যতম অভীস্ট। এ অঙ্গীকার ও অভীস্ট বাস্তবায়ন প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সহজতম উপায়ে ক্রীড়া-বিনোদনের মাধ্যমে পৃথিবীর সকল মাতৃভাষা পৃথিবীর সকল ভাষাভাষী মানুষকে শেখানোর প্রয়াসে পিস অ্যান্ড হারমোনি ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেছে পৃথিবীর র্সবপ্রথম মাতৃভাষা স্কুল।
মাতৃভাষা স্কুলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের জন্য বৈচিত্র্যর্পূণ প্রস্তুতি নিচ্ছি। এর ধারাবাহিকতায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইতিহাস ঐতিহ্য সংস্কৃতির সাথে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সংযোগ ঘটানোর প্রয়াস চলছে। ভারতের শিল্পকলা বিশেষ করে সঙ্গীত, নৃত্য ও নাটক কাশে ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়রে অর্ন্তভুক্ত ভারতের সর্বপ্রথম রাষ্ট্রীয় একাডেমি সঙ্গীত নাটক একাডেমির জেনারেল কাউন্সিলের সদস্য ও মেঘালয়ের শিলং এর গীতাঞ্জলি ডান্স একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা মিসেস মনিকা চন্দ পিস অ্যান্ড হারমোনি ট্রাস্টের আমন্ত্রণে ২৮ থেকে ৩০ জুলাই ৩ (তিন) দিনের সফরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসেছেন। প্রথম দিন ২৮ জুলাই সড়কপথে ও ২৯ জুলাই জলপথে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী স্থান সমূহ অবলোকন করেন।
আজ ৩০ জুলাই রবিবার প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের এই বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পাইকপাড়াস্থ ট্রাস্টের সহযোগি প্রতিষ্ঠান মাদার ল্যাংগুয়েজ স্কুলের হল রুমে সংবর্ধনা ও শিল্পী মাহমুদ শরীফ খানের পরিচালনায় মসলিন কাপড়ে হ্যান্ড-পেইন্ট শীর্ষক ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়। প্রধান সমন্বয়কারী আবু নাসের সবাইকে মাদার ল্যাঙগুয়েজ বোর্ড প্রদর্শন করেন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে মনিকা চন্দ-এর সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাংস্কৃতিক সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শুভেচ্ছা বিনিময়সহ ভারত বাংলাদেশর ভাষা সংস্কৃতি বিষয়ে মত বিনিময় করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বরেণ্য কবি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিস এন্ড হারমোনি ট্রাস্ট ও মাদার ল্যাংগুয়েজ স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা কবি আনিস মুহম্মদ। সার্বিক কার্যক্রম তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানের হেড অব ক্রিয়েটিভ আশরাফ পিকো।
প্রতিষ্ঠানের হেড অব সিভিক এ্যাঙ্গেজমেন্ট আল আমীন শাহীনের সঞ্চালনায় আলোচনা করেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট শিপন চন্দ্র সিংহ, পৌর কাউন্সিলর মিজান আনছারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন, প্রেস ক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি দৈনিক কুরুলিয়ার সম্পাদক ইব্রাহিম খান সাদাত, আখাউড়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোঃ মানিক মিয়া, ভাষা সাহিত্য অনুশীলন কেন্দ্রের পরিচালক ওসমান গণি সজিব, কমরেড নজরুল ইসলাম, তিতাস বার্তার সম্পাদক আব্দুল মতিন শানু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সদস্য সচিব সঞ্জিব ভট্টাচার্য, সাংস্কৃতিক সংগঠক হাবিবুর রহমান পারভেজ, সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনের সংঙ্গীত প্রশিক্ষক রওনক সুলতানা পারভিন, অংকুর শিশু কিশোর সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আনিছুল হক রিপন প্রমুখ। কবিতা আবৃত্তি করেন রাবেয়া জাহান তিন্নি, শারমীন আক্তার, নুসরাত জেরিন, বাংলাদেশ টেলিভিশনের নৃত্য পরিচালক জিয়া আমিন এর পরিচালনায় নৃত্য পরিবেশন করেন নৌশিন ইকরা, রিধা মনীষা। অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত নৃত্য ব্যক্তিত্ব মনিকা চন্দ বলেন, ভারত-বাংলাদেশের সম্প্রীতির বন্ধন ঐতিহ্যমন্ডিত। পিস এন্ড হারমোনি ট্রাস্টের আমন্ত্রণে বাংলাদেশে এসে আমি খুবই আনন্দিত; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আতিথিয়তায় মুগ্ধ হয়েছি। এখানে এসে আমি ঐতিহ্যবাহী তিতাস নদী ভ্রমণসহ রসুলপুর ও কুরুলিয়া খাল হয়ে বিখ্যাত উপন্যাসিক অদ্বত মল্ল বর্মণের জন্মভিটা দেখার সৌভাগ্য হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে অবস্থিত উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ কালভৈরর বিগ্রহ ও মন্দির পরিদর্শন করেছি। তিতাস পাড়ের সংস্কৃতি-সমৃদ্ধ মানুষের আন্তরিক সান্নিধ্য লাভ করেছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সামাজিক সাংষ্কৃতিক সম্প্রীতির জন্য নিবেদিত এক ঝাঁক তরুণের সাথে আমার সেতুবন্ধন তৈরী হয়েছে। এই অভিজ্ঞতা আমার জীবনের এক অনন্য অধ্যায় হয়ে থাকবে। শান্তির জন্য ভাষা এই শ্লোগানকে ধারণ করে মাদার ল্যাঙগুয়েজ স্কুলের শাখা সর্বভারতে বিস্তারের মাধ্যমে বিশ্ব শান্তির জন্য কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি। তিনি বাংলাদেশ এবং ভারতের সম্প্রীতির বন্ধন আরো শক্তিশালী করার লক্ষ্যে দু’দেশের যৌথ নদীভিত্তিক উৎসব করার পরিকল্পনার কথা জানান। এ ছাড়াও আগামী সেপ্টেম্বর-২০২৪খ্রি. মেঘালয়ে অনুষ্ঠিতব্য সংস্কৃতি উৎসবে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার তিন বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকদের সমন্বয়ে গড়া সংগঠন জেলা অবসরপ্রাপ্ত সম্মিলিত সামরিক বাহিনী কল্যাণ সংস্থার আয়োজনে এক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংগঠনটির আই সি টি সম্পাদক সার্জেন্ট বুরহানের উপস্থাপনায় এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ ওয়াহিদ মিয়ার সভাপতিত্বে আজ ২১ ডিসেম্বর শনিবার সকাল ১১ টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ মিলানায়তনে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, জেলা অবসর প্রাপ্ত সম্মিলিত সামরিক বাহিনী কল্যাণ সংস্থা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রধান উপদেষ্টা লেঃ কর্ণেল (অবঃ) মোঃ জি আর জাহাঙ্গীর (এইসি)।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা আক্তার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আব্দুল মতিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আঃ কাইয়ুম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অবসরপ্রাপ্ত সম্মিলিত সামরিক বাহিনী কল্যাণ সংস্থার সভাপতি ক্যাপ্টেন (অবঃ) মোঃ রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার (অবঃ) মোঃ এনামুল হকসহ প্রমুখ।
সাধারণ সভাকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন উপজেলা থেকে তিন বাহিনীর প্রায় ১৫০ জন অবসর প্রাপ্ত সৈনিক জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এসে যুক্ত হোন।
সংগঠনের পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার (অবঃ) মোঃ এনামুল হক (২১) সদস্যের জেলা কমিটির প্রত্যেকের নাম ঘোষণা করে তাদের পরিচিতি পেশ করেন এবং সংগঠনের কার্যক্রমকে ভবিষ্যতে আরো গতিশীল ও বেগবান করার লক্ষ্যে অতি দ্রতই বিভিন্ন উপজেলার অসমাপ্ত কমিটিগুলো গঠন করার ইচ্ছের কথা জানিয়ে বক্তব্য পেশ করে সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
প্রধান অতিথি লেঃ কর্ণেল (অবঃ) মোঃ জি আর জাহাঙ্গীর (এই সি) তার বক্তব্যে বলেন, সৈনিকরা কখনো অবসরে যায়না। চাকুরী থেকে আমরা অবসর নিতে পারি কিন্তু সত্যিকার সুন্দর সমাজ গঠনে, জাতি গঠনে, একটি সুন্দর স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনে আমরা কখনো পিছিয়ে থাকলে হবেনা। দেশ মাতৃকার কল্যাণে এখানে আমাদের কোন অবসর নেই। বিশেষ অতিথি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আব্দুল মতিন বলেন, আপনাদের এই অনুষ্ঠানে এসে আমি সত্যিই খুব আনন্দিত। আপনাদের সাথে আমাদের বাহিনীরও একটা বিশেষ মিল রয়েছে আর সেটা হলো আপনাদের মতো আমরাও একদিন এমনকি আমিও একদিন চাকুরী জীবনের অবসর টেনে আপনাদের কাতারে গিয়ে শামিল হবো।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা আক্তার ও সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, সচেতন সৈনিক হিসেবে আপনাদের সুশৃংখল জীবন যাপনই আপনাদের সবচেয়ে বড় পরিচয়। সারা জীবন শৃঙ্খলতার মধ্য দিয়ে দেশ মাতৃকার প্রয়োজনে দেশের তরে শ্রম ও ঘাম ঝরিয়ে আপনারা যেভাবে নিজেদের সমর্পণ করেছেন বা সমর্পণ করেন তা আগামী নতুন প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত অনুকরণীয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃতি সন্তান, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্নিপুরুষ বিপ্লবী উল্লাস কর ১৩৮তম জন্মদিন পালিত হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে “উল্লাসকর দত্ত স্মৃতি সংসদ” ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্যোগে রবিবার বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে “উল্লাসকর দত্তের সংগ্রামী জীবন ও স্মৃতি রক্ষার আন্দোলন” শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বিশিষ্ট কবি ও গীতিকার মোঃ আবদুল কুদদূস।
উল্লাসকর দত্ত স্মৃতি সংসদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের গবেষক, কবি জয়দুল হোসেনের সভাপতিত্বে ও ঝিলমিল একাডেমির পরিচালক মনিরুল ইসলাম শ্রাবণের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আলোচক ছিলেন সিপিবির জেলা সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাজিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ (সিলেট অঞ্চল)-এর সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক মোঃ মনির হোসেন।
মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন উল্লাসকর দত্ত স্মৃতি সংসদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম স্বপন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, হঠাৎ করে কেউ বিপ্লবী হয় না। বিপ্লবী হতে হলে দেশ এবং দেশের মানুষকে ভালোবাসতে হয়। বিপ্লবী হতে হলে সাহসী হতে হয়। বিপ্লবী উল্লাসকর দত্ত আজীবন লড়াই করে গেছেন। উল্লাসকর দত্ত ছোটবেলা থেকেই মানুষ এবং মাতৃভূমিকে ভালোবেসেছেন। তিনি ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলনে নানা লড়াই-সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি সশস্ত্র বিপ্লবের পক্ষে ছিলেন।
কারণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন সচতুর ইংরেজদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম ছাড়া পরিপূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব নয়। ব্রিটিশের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে যেয়ে তিনি মামলার শিকার হন। দীর্ঘদিন কারাগারে অবর্ণনীয় নির্যাতন সহ্য করেও দেশ ও বিপ্লবের চেতনা থেকে তিনি একটুও বিরত হননি।
বক্তারা বলেন, উল্লাসকর দত্ত একটি অখন্ড ভারত চেয়েছিলেন। একটি স্বাধীন দেশ চেয়েছিলেন। যে দেশে সকল মানুষ ধর্ম, বর্ণ, জাত-পাতের ভেদাভেদ ভুলে সুখে শান্তিতে বসবাস করবে। উল্লাসকর দত্তের এই মহৎ উদ্দেশ্য আজও সফল হয়নি। তাই উল্লাসকর দত্তের বিপ্লবও শেষ হয়ে যায়নি।
এজন্য উল্লাসকর দত্তের বিপ্লবী ও দেশাত্মবোধের চেতনা আমাদের সবাইকে বুকে ধারণ করে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে। বক্তারা স¤প্রতি উল্লাসকর দত্তের বসত বাড়িটি প্রত্নতত্ত্ব দপ্তরের আওতায় নিয়ে আসায় সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এসময় তারা উল্লাসকর দত্তের বসভিটা বাঘাবাড়িতে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। অনুষ্ঠানে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।