অনলাইন ডেস্ক :
নতুন সরকার গঠনের পের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব এবং সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রথম সভা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সভায় তিনি দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে আনাসহ একগুচ্ছ বার্তা দিয়েছেন।
আজ ৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সকাল ১০টা থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টার বৈঠকে শেখ হাসিনা মানুষের জীবনমান স্বাচ্ছন্দ্য ও সুন্দর করতে দ্রব্যমূল্য কমানোর ওপর জোর দিয়েছেন। প্রথমে নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কথা স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
বৈঠক শেষে বিকেলে সচিবালয়ে ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সচিবদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, দায়িত্ব পালনে আত্মপ্রত্যয়, আত্মবিশ্বাস ও আত্মসম্মান সমুন্নত রেখে যেন নিজ নিজ ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করি।
মাহবুব হোসেন আরও বলেন, আমরা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও আসন্ন রমজানের প্রস্তুতি নিয়ে অবহিত করেছি। খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতি, কৃষি উৎপাদন ও সার ব্যবস্থাপনা; কর্মমুখী শিক্ষা, নতুন পাঠ্যক্রম ও কর্মসংস্থান; বিদ্যুৎ সরবরাহ ও জ্বালানি নিরাপত্তা, আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ, উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও আর্থিক খাতের দক্ষতা বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বইমেলা জেলার বাইরে উপজেলা পর্যায়ে নিতে বলেছেন। পর্যটন শিল্পের জন্য যা যা করা প্রয়োজন সে নির্দেশনা দিয়েছেন।
সংসদ কার্যক্রমে সহযোগিতা
সংসদ কার্যক্রমে আমরা যেন সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করি। বিশেষ করে প্রশ্নেত্তর পর্বে। প্রশ্নেত্তর লেখা বা সম্পূরক প্রশ্নের উত্তর যেন যথাযথভাবে উপস্থাপন করি। যেদিন যে মন্ত্রণালয়ের প্রশ্নোত্তর থাকবে সেদিন যেন ওই মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি সংসদে উপস্থিত থাকেন। কর্মকর্তাদের সংসদ কার্যাবিধি সম্পর্কে অবহিত হতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
ইশতেহার বাস্তবায়নের নির্দেশনা
১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছিলেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এটার ধারাবাহিকতায় এবার ইশতেহার দিয়েছেন। ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ করতে যাচ্ছেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের পথে নিয়ে যাচ্ছেন আমাদের। তারই ধারাবাহিকতা রয়েছে। জনগণ রায় দিয়েছে, দল নির্বাচিত হয়েছে, সরকার গঠন করেছেন, তাই নির্বাচনী ইশতেহারটাই হবে ৫ বছরে সরকার পরিচালনার মূল নীতির দলিল। এই দলিল বাস্তবায়নের জন্য উনি আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।
ইশতেহার বাস্তবায়ন সমন্বয়ের দায়িত্ব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ করবে। নির্বাচনী ইশতেহারে ১১টি অগ্রাধিকার কার্যক্রম আছে, ৩০০টির বেশি অঙ্গীকার আছে, সেগুলো ম্যাপিং করা হবে। এরপর কোন মন্ত্রণালয়ের কি কাজ সেটি চিহ্নিত করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সেই কাজগুলো করবে। কাজগুলো যাতে ঠিকমত মনিটর করা হয় সেজন্য বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি, সিটিজেন চার্টার, রাইট টু ইনফরমেশন এবং সুশাসনের যেসব টুলস আছে সেখানে নির্বাচনী ইশতেহারের অঙ্গীকারগুলো ইন্ডিগেট করতে বলা হয়েছে, যাতে করে বাৎসরিকভিত্তিতে মনিটরিং করতে সুবিধা হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ‘শক্ত ব্যবস্থা’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে উনি (প্রধানমন্ত্রী) নজরদারি করতে বলেছেন। নজরদারির ক্ষেত্রে উনি একটা সুনির্দিষ্ট এরিয়ার কথা বলেছেন যে, অনেক সময় আমাদের দ্রব্যমূল্যের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ে চাঁদাবাজির প্রসঙ্গ আসে, নিউজ আসে। এটির ক্ষেত্রে উনি সংশ্লিষ্ট সকলেকে খুবই শক্তভাবে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন যেন এটি কোথাও না হয়।
আইনশৃঙ্খলার ক্ষেত্রে একটি বিষয়ের দিকে নজর দিতে বলেছেন। বিশেষ করে ছিনতাই, কিশোরগ্যাং বা এ রকম যে সব অপরাধ হচ্ছে সেক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ে কমিটি গঠন করে নজর দিতে বলেছেন।
প্রধানমন্ত্রী জিজ্ঞেস করবেন- প্রকল্পে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হচ্ছে কি না?
প্রধানমন্ত্রী প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে খুবই সতর্কতা ও বাছাইয়ের কথা বলেছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যে প্রকল্পগুলো জনগণের কল্যাণে ব্যবহৃত হবে, জনগণ উপকার পাবে সেদিকে উনি মনোযোগ দিতে বলেছেন। উনি বলেছেন যে উনার মূল লক্ষ্য হলো জনমানুষের অবস্থার উন্নতি। এরকম নয় যে মানুষকে দেখানো। জনমানুষের কল্যাণ হচ্ছে কি না, তাদের ভাগ্য পরিবর্তন হচ্ছে কি না- এটি উনি জিজ্ঞাসা করবেন প্রকল্প উপস্থাপনের সময়, জানতে চাইবেন যে কীভাবে এটি জনগণকে বেনিফিট দেবে। সেভাবে যেন প্রকল্পগুলো বাছাই করি। চলমান যে প্রকল্পগুলো আছে সেগুলো তিনি দ্রুত শেষ করার নির্দেশা দিয়েছেন।
মূদ্রাস্ফীতি নিয়ে নির্দেশনা
উনি মূদ্রাস্ফীতির কথা বলেছেন। মূদ্রাস্ফীতি আমাদের জিডিবি গ্রথের নিচে থাকতে হবে। সেটি করার জন্য উনি কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
আয়করের আওতা বাড়ানোর নির্দেশ
একটা বড় নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, উনি বলেছেন যে এখনও বিরাট সংখ্যক ব্যক্তি যাদের আয়কর দেওয়ার কথা তারা আয়করের আওতায় আসেনি। তাদের যেন আয়করের আওতায় আনা হয় সেজন্য জোরালো নির্দেশ দিয়েছেন।
বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হলে ‘ভালোভাবে নেবেন না’
বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য পদক্ষেপ নিতে বলেছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অহেতুক যেন তারা হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে নজর রাখতে বলেছেন। বিনিয়োগ আসতে কোনো জটিলতা হলে তার নজরে যেন নেওয়া হয়। উনি ভালো চোখে দেখবেন না কোনো কারণে যদি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়, উনি ভালোভাবে নেবেন না।
পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি হলে শক্ত ব্যবস্থা
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে উনি (প্রধানমন্ত্রী) নজরদারি করতে বলেছেন। নজরদারির ক্ষেত্রে উনি একটা সুনির্দিষ্ট এরিয়ার কথা বলেছেন যে, অনেক সময় আমাদের দ্রব্যমূল্যের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ে চাঁদাবাজির প্রসঙ্গ আসে, নিউজ আসে। এটির ক্ষেত্রে উনি সংশ্লিষ্ট সকলেকে খুবই শক্তভাবে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন যে এটি যেন কোথাও না হয়।
সরকারি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে মিতব্যয়ী হওয়ার নির্দেশ
সরকারি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে মিতব্যয়ী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অহেতুক যেন আমরা ব্যয় না করি। প্রত্যেক অর্থের পিছনে যেন ভেলু পাই।
কৃষিজাত পণ্যের রপ্তানি সুবিধা
আমরা গার্মেন্টেসের ক্ষেত্রে যে সুযোগ-সুবিধা পাই কৃষিজাত পণ্য, চামড়া এবং পাটজাত পণ্যে একই রকম সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য নির্দেশনরা দিয়েছেন এবং কাজ করতে বলেছেন। গার্মেন্টেসের ক্ষেত্রে একটা বড় অংশ আমদানি করতে হয়। একটা বড় অংশ চলে যায় আমদানির ক্ষেত্রে। এই তিন পণ্যে আমাদের স্থানীয়ভাবে কাঁচামাল আছে। সুতরাং এখানে ভেলু অ্যাড অনেক বেশি হবে।
নতুন বাজার
রপ্তানি বাজারের ক্ষেত্রে নতুন বাজার খুঁজতে হবে। মধ্যপ্রাচ্য, পূর্ব ইউরোপ, পূর্ব এশিয়া এবং আফ্রিকায় যেন বাজার খুঁজি, বিশেষ করে ওষুধ, পোশাক, খাদ্য, কৃষিজাত পণ্য, পাটজাতপণ্যের। এক্ষেত্রে সহযোগিতার প্রয়োজন হলে যেন সহায়তা দেওয়া হয়। খাদ্য উৎপাদনে নজর দিতে বলেছেন।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ব্যবহারের সাশ্রয়ী হতে হবে
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য বলেছেন। বিশেষ করে সেচ মৌসুমে সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে বলেছেন। কোনোভাবে যেন সেচ মৌসুম বাধাগ্রস্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেছেন। সেচের ক্ষেত্রে সোলার এনার্জি ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছেন। ব্লু-ইকোনমির জন্য সামুদ্রিক যে ব্লক আছে সেখানে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বলেছেন।
কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্ব
কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়েছেন। এখন যে প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি হয়েছে সেগুলোর যেন সর্বোচ্চ ব্যবহার হয়, কোয়ালিটি প্রশিক্ষণ হয়। সার্ভিস সেক্টরে প্রশিক্ষণের জন্য বিশেষ নজর দিতে বলেছেন। আমাদের যে পর্যটন আছে শুধু বাংলাদেশে না, সারা বিশ্বেই প্রশিক্ষিত জনবল দরকার। সেজন্য উনি বিশেষ উদ্যোগ নিতে বলেছেন।
উন্নয়নের যেন ধারাবাহিকতা থাকে
ইতোমধ্যে উনি যে উন্নয়ন করেছেন সেটির যেন ধারাবাহিকতা থাকে। সাসটেইন থাকে। এটির দিকে খেয়াল রেখে নতুন প্রকল্প বা কার্যক্রম নিতে বলেছেন। ইতোমধ্যে যেগুলো করেছেন সেগুলো যেন হারিয়ে না যায়।
শূন্য পদ পূরণ ও পদোন্নতি
শূন্য পদ পূরণের জন্য উদ্যোগ নিতে বলেছেন এবং সময়মতো পদোন্নতির জন্য বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। আশ্রয়ণ প্রকল্পে যারা আছেন প্রয়োজনে তাদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিশেষ উদ্যোগ নিতে বলেছেন।
তিন ফসলি জমি যেন নষ্ট না হয়
প্রধানমন্ত্রী খাদ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা উন্নত রাখার জন্য বলেছেন। এখন যে ক্যাপাসিটি আছে তা বৃদ্ধির জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। খাদ্য সংরক্ষণ ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পের ক্ষেত্রেও সুবিধা দেওয়ার জন্য বলেছেন। তিন ফসলি জমি যেন কোনো অবস্থাতেই নষ্ট না হয়। সেখানে কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করা যাবে না।
জলাধার ভরাট নয়
জলাধার ভরাট করা যাবে না। জলাধার অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে। কোনো অস্থাতেই নদীর ধারাবাহিকতা বা প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। সেচের ক্ষেত্রে ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহারের জন্য বলা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন শুধু দুদকের দায়িত্ব নয়
দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। দুর্নীতির ব্যাপারে জিরো টলারেন্সের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। এও বলেছেন যে দুর্নীতি দমনের দায়িত্ব শুধু দুদকের নয়। প্রত্যেক মন্ত্রণালয় ও সচিবদেরও দায়িত্ব আছে দুর্নীতি নিরসন, লাঘব করার জন্য যে সার্ভিস পয়েন্ট আছে সেখানে নজরদারির জন্য। যে প্রক্রিয়া নেওয়া যায় সে প্রক্রিয়া নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
নতুন শিক্ষাক্রমে ভুলভ্রান্তি থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা
নতুন পাঠ্যক্রমের বিষয়ে কিছু বলা হয়েছে কি না- প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নতুন যে শিক্ষাক্রম নেওয়া হয়েছে তা প্রচলিত শিক্ষাক্রম নয়। তা থেকে ভিন্ন একটা। এই বাস্তবতা আমাদেরকে মানতে হবে। আমরা যারা বিশেষজ্ঞ তারা প্রচলিত পাঠ্যক্রমে শিক্ষা পেয়েছি। নতুন যে পাঠ্যক্রম রচনা করতে হবে সে ব্যাপারে প্রশিক্ষত লোক খুব বেশি আছে তা কিন্তু নয়। যারা আছেন, তাদের কাজ হচ্ছে- উনি বলেছেন, যদি কোনো ভুল ভ্রান্তি, যদি কোনো তথ্যগত বা কোনো একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় তাহলে দ্রুত যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। উনি বলেছেন, কোনো বিলম্ব হবে না। কোনো গ্যাপ তৈরি হলে যেন যথাযথভাবে পর্যালোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে বলেছেন।
১৬টি আইন অগ্রাধিকার
উনি নির্দেশনা দিয়েছেন, গত সংসদে যে আইন পাস হয়নি সেগুলো দ্রুত মন্ত্রিসভায় এনে যেন সংসদে পাঠাই। সামরিক আমলে ১৬৬টি আইনের বিকল্প আইন করার জন্য উচ্চ আদালত থেকে বলা হয়েছিল, সেখানে ১৬টি আইন বাকি আছে। এ ব্যাপারে অগ্রাধিকার দিয়ে যেন কাজ করি সে নির্দেশনা দিয়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
মাসে ৫০ টাকায় সপ্তাহে ৬দিন ময়লা আর্বজনা সংগ্রহ করা হবে। সেই ময়লা নেয়া হবে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ডাম্পিং স্টেশনে । পৌরসভার ৩ ও ৯ নং ওয়ার্ডের বাসা বাড়ির গৃহস্থালির উচ্ছিষ্ট আর্বজনা সংগ্রহের জন্য ভ্যান কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।
আজ ৭ মে রবিবার বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘গৃহস্থালির ময়লা ব্যবস্থাপনা পৌরসভার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের চুয়াডাঙ্গায় আজ থেকে সুন্দর একটি কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।
প্রধানন্ত্রী যে স্মার্ট বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছেন, তা বাস্তবায়নে পরিচ্ছন্ন জেলা প্রয়োজন। আমি আশা করবো, ধিরে ধিরে প্রত্যেকটা ওয়ার্ডে এটি চালু হবে। জেলার সব পৌরসভা ও প্রতিষ্ঠানে এটি বাস্তবায়ন হবে। এর মধ্যমেই আমরা একটি পরিচ্ছন্ন, পরিষ্কার ও চমৎকার চুয়াডাঙ্গা উপহার দিবো।’ চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. একেএম সাইফুর রশিদ বলেন, এই শুরুটা সরকারি কলেজ থেকে শুরু হওয়ায় আমি আনন্দিত। আমরা পরিশুদ্ধ মানুষ হতে চাই। ড্রেননগুলো একটু পরিষ্কার করার জন্য অনুরোধ জানাবো।
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গির আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. একেএম সাইফুর রশিদ, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আলামিন, সাধারণ সম্পাদক রাজিব হাসান কচি, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সাধারণ স¤পাদক বিপুল আশরাফ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ স¤পাদক ইসলাম রাকিব।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শামিম ভূইয়া জানান, জেলা প্রশাসক স্যার আসার পর বার বার তাগিদ দিয়েছেন। এই জেলার উন্নয়নে আমরা পাইলট প্রকল্প হিসেবে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার দুটি ওয়ার্ডে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করছি। মাসে ৫০ টাকায় সপ্তাহে ৬দিন ময়লা আর্বজনা সংগ্রহ করা হবে। সেই ময়লা চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ডাম্পিং স্টেশনে নেয়া হবে। আমরা চমৎকার চুয়াডাঙ্গার প্রত্যাশায় আছি।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মহলদার ইমরান, ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান চাঁদ। এ সময় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, প্রকৌশলী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
১০০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ডের ১১৬তম ‘ড্র’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ছয় লাখ টাকার প্রথম পুরস্কার বিজয়ী সিরিজের নম্বর ০৯৩৪০৭৭। আর তিন লাখ ২৫ হাজার টাকার দ্বিতীয় পুরস্কার বিজয়ী সিরিজের নম্বর ০৬২৯২২০।
বুধবার (৩১ জুলাই) ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ ড্র হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগ ঢাকার পরিচালক শিবির বিচিত্র বড়ুয়া।
একক সাধারণ পদ্ধতি তথা প্রত্যেক সিরিজের একই নম্বরে ড্র পরিচালিত হয়। এবার ৮০টি সিরিজের ৪৬টি সাধারণ সংখ্যার মোট ৩ হাজার ৬৮০টি নম্বর পুরস্কারের যোগ্য বিবেচিত হয়েছে।
বর্তমানে প্রচলনযোগ্য ১০০ টাকা মূল্যমানের ৮০টি সিরিজ যথা: কক, কখ, কগ, কঘ, কঙ, কচ, কছ, কজ, কঝ, কঞ, কট, কঠ, কড, কঢ, কথ, কদ, কন, কপ, কফ, কব, কম, কল, কশ, কষ, কস, কহ, খক, খখ, খগ, খঘ, খঙ, খচ, খছ, খজ, খঝ, খঞ, খট, খঠ, খড, খঢ, খথ, খদ, খন, খপ, খফ, খব, খম, খল, খশ, খষ, খস, খহ, গক, গখ, গগ, গঘ, গঙ, গচ, গছ, গজ, গঝ, গঞ, গট, গঠ, গড, গঢ, গথ, গদ, গন, গফ, গব, গম, গল, গশ, গষ, গপ, গস, গহ, ঘক এবং ঘখ এই ‘ড্র’-এর আওতাভুক্ত।
তৃতীয় পুরস্কারের এক লাখ টাকার দুটি বিজয়ী সিরিজ হলো ০০১২২২১ ও ০১৬৮০১৮। চতুর্থ পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা বিজয়ী নম্বর দুটি হলো ০১০১৬৮৬ ও ০৮৬২২৫০। এছাড়া পঞ্চম পুরস্কার বিজয়ী প্রতিটি সিরিজের ৪০টি সংখ্যা ১০ হাজার টাকা করে পাবে।
৪০টি পঞ্চম পুরস্কারের নম্বর
০০২৯৪২৫, ০২২৬৩২০, ০৪৭৩৩৫০, ০৬৫৭৭৬৮, ০৮৫৫২৬৬, ০০৭৪৩১১, ০২৭০৩৭১, ০৫৪৮৩৮৯, ০৬৬৫১৭৯, ০৮৬৬৫৪৭, ০১১০১৯৬, ০৩৯৯৬২৮, ০৫৭৫২৯০, ০৬৯১৮২৫, ০৮৬৭৩০৩, ০১৪৪৩৩৬, ০৪১২৬৮৩, ০৫৭৬০৬৮, ০৭৪১৭১০, ০৮৯১৩১৮, ০১৫৪৯৪২, ০৪৩৬৪৪১, ০৬০৭০৮১, ০৭৭৬৩০৫, ০৯৩৬২৮১, ০১৮৪৬৯৭, ০৪৪৬৩২৯, ০৬৪০৪১৯, ০৮০৬৯৮৩, ০৯৭২১৫৫, ০১৮৫৯২১, ০৪৫৯১৬৭, ০৬৪৬৭০২, ০৮১৫৭৫৫, ০৯৭৫৫২২, ০২০৭১৭৩, ০৪৬৮৮৫৫, ০৬৫৫০৫৬, ০৮৩৫১৭২ ও ০৯৯৫৯০৭।
ড্রয়ের নির্ধারিত তারিখ থেকে ৬০ দিন আগে (বিক্রির তারিখ ধরে ও ড্রয়ের তারিখ বাদ দিয়ে) যেসব প্রাইজবন্ড বিক্রি হয়েছে, সেগুলো এ ড্রয়ের আওতাভুক্ত। আয়কর আইন ২০২৩ এর ১১৮ ধারার নির্দেশনা অনুযায়ী প্রাইজবন্ডে পুরস্কারের অর্থ থেকে ২০ শতাংশ হারে উৎসে কর কর্তন করার বিধান রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সাত ব্যবসায়ীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
আজ ৯ অক্টোবর সোমবার দুপুরে পৌর শহরের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মূল্য তালিকা না থাকা, বি এস টি আই এর অনুমোদন ব্যতীত মালামাল বিক্রি এবং অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাদ্য তৈরি করার দায়ে এ জরিমানা করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শাহ্ সোয়াইব মিয়া। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সেনেটারী কর্মকর্তা মৃনাল চন্দ্র দেবনাথ, কলাপাড়া পুলিশ সদস্যরা।
অর্থদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যবসায়ীরা হলো আমির বেপারী পাঁচ হাজার টাকা, মো.ইব্রাহিম পাঁচ হাজার, আরিফুল ইসলাম দুই হাজার, গাজী আনোয়ার এক হাজার পাঁচশত, আবুবক্কর আড়াই হাজার টাকা, আল মদিনা হোটেল আট হাজার এবং আনিকা হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টকে ছয় হাজার টাকা।
চলারপথে রিপোর্ট :
লক্ষ্মীপুরে বিয়ে বাড়িতে পানি নিয়ে সংঘর্ষে বর-কনেসহ উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৩ জন সদর হাসপাতালে ভর্তি ও অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আজ ১৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিকালে সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের কাঞ্চনিবাজার এলাকার সরকার বাড়িতে ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, চর রুহিতা ইউনিয়নের কাঞ্চনিবাজার এলাকার সরকার বাড়ির হুমায়ুন কবিরের মেয়ে রুমা আক্তার সাথে একই ইউনিয়নের চর রুহিতা গ্রামের হাওলাদার বাড়ির দিন মোহাম্মদের ছেলের সঙ্গে দুই বছর পূর্বে বিয়ে হয়। শুক্রবার বরযাত্রীরা কনের বাড়িতে যায়। ১৩০ জন বরযাত্রীর যাওয়ার কথা থাকলেও কনে পক্ষের দাবি তারা আরও বেশি অতিথি যান। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। একপর্যায়ে বরের দুলাভাই নাসির পানি চাইলে সেটি দিতে দেরি হওয়ায় বর পক্ষের লোকজন চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে। এনিয়ে দুই পক্ষের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে বর কামাল হোসেন, কনে রুমা আক্তার, বরের ভগ্নিপতি জহির হোসেন, কনের নানা আনায়ারুল্লাহ, মামা খোরশেদ, মামা স্বপন, প্রতীবেশি রাসেল, ইমন, বরের আত্মীয় রাসেল ও পারভীনসহ দুই পক্ষের দশজন আহত হয়। এদের মধ্যে রাসেল, জহির, পারভীন লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানা পুলিশ। সামাজিকভাবে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস স্থানীয় জন প্রতিনিধির।
অনলাইন ডেস্ক :
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, আমাদের সমস্ত উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান আছে। কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্থবির হয়নি। রিজার্ভ নিয়েও দেশে কোনো সংকট নেই। আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি রিববার দুপুরে রাজশাহীতে কর্মরত গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দফতর ও সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের দীর্ঘসূত্রিতা সর্বত্রই বিরাজমান। এটা দূরীকরণে বর্তমান মন্ত্রীসভা কাজ করবে। দীর্ঘসূত্রিতা পরিহার করে কীভাবে দ্রুত কাজগুলো করা যায় তা নিয়ে কাজ করবো। আর সুন্দর ও ভালো কাজ করতে গিয়ে হয়তো বিলম্বিত হয়। প্রকল্পে সমন্বয়ের ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে কাজে দীর্ঘসূত্রিতা হয় উল্লেখ করে রাজশাহীর উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর সমন্বয় সাধনে তিনি কাজ করছেন বলে জানান। আরডিএ থেকে অনুমোদন না নিয়ে কেউ আবাসন গড়ে তুললে সেটা বে-আইনি কাজ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এটা দেখার দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের। সুতরাং, জেলা প্রশাসক এটা দেখুক। এরআগে, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিনের সভাপতিত্বে রাজশাহীতে কর্মরত গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দফতর ও সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপূর্তমন্ত্রী।